সুষ্ঠ জ্ঞান, মানব স্বভাব ও মৌলিক শিক্ষার মানদণ্ডে হিন্দুধর্ম

⌘K
  1. Home
  2. Docs
  3. সুষ্ঠ জ্ঞান, মানব স্বভাব ...
  4. ৪। হিন্দুধর্মে এক ইলাহকে অসংখ্য মূর্তির মাধ্যমে প্রতিকৃতি প্রদানের চিন্তাধারার কিভাবে উদ্ভব ঘটেছিল?

৪। হিন্দুধর্মে এক ইলাহকে অসংখ্য মূর্তির মাধ্যমে প্রতিকৃতি প্রদানের চিন্তাধারার কিভাবে উদ্ভব ঘটেছিল?

বৈদিক যুগের পরে বর্তমান হিন্দুধর্মের প্রধান সমস্যা হল: তারা মনে করত, ইলাহের একাধিক গুণ একাদিক সত্তা দাবিদার।তথা: একাধিক (ইলাহ) দেবতার প্রয়োজন।
তারা আবশ্যক মনে করত, ইলাহের প্রতিটি সিফাতের জন্য একটি মূর্তি রয়েছে, যা সেই ইলাহের প্রতিকৃতি।
সুতরাং তাদের নিকটে সৃষ্টিকর্তা পরিণত হয়েছেন (তিনটি রূপে):
ব্রহ্মা: যিনি বিশ্বজগতের স্রষ্টা।
বিষ্ণু: এ দৃষ্টিতে যে, তিনি বিশ্বজগতের রক্ষক।
এবং শিব: এ দৃষ্টিতে যে, তিনি মহাবিশ্বের ধ্বংসকারী।[১২] এটি একটি অনুমান, যা যুক্তি ও প্রবৃত্তির স্বতঃসিদ্ধতা এবং বেদে যা পাওয়া যায় তার বিরোধিতা করে; কারণ একাধিক গুণ থাকা একাধিক সত্তার থাকার দাবী করে না।
কোন ব্যক্তি একাধারে একজন বুদ্ধিমান, শক্তিশালী এবং সাহিত্যিক হতে পারেন।
সুতরাং একাধিক গুণাবলীর কারণে উক্ত মানুষের বহু সত্তার অধিকারী হওয়া আবশ্যক হয় না।
অতএব একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তি সেই শক্তিশালী, সে নিজেই একজন সাহিত্যিক ।
এবং আল্লাহর জন্য রয়েছে মহান উদাহরণ।
বেদও এই একই সত্যকে নিশ্চিত করে, যেমনটি ঋগবেদে উল্লেখ করা হয়েছে: “তাকে বলা হয়: ইন্দ্র, মিত্র, বায়ূ, তিনি হচ্ছেন মাতরিশ্বা। জ্ঞানীরা এক প্রভুকে বিভিন্ন নামে উল্লেখ করে।” [১৩] আর আল্লাহর (প্রভূর) নামসমূহ এবং গুণাবলী সংক্রান্ত অসংখ্য পাঠ (দলিল) বেদে রয়েছে।
সুতরাং নামসমূহ এবং গুণাবলী একই সত্তার মধ্যে বিদ্যমান থাকতে পারে।
এটিই হচ্ছে প্রথম বেদসমূহ যার উপরে ছিল, সে বিশ্বাস, আর ইসলামী বিশ্বাসও এটাই। সুতরাং আল্লাহ সুবাহানাহু তিনি এক। তাঁর রয়েছে সবচেয়ে সুন্দর নামসমূহ এবং সর্বোচ্চ গুণাবলী। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
﴿وَإِلَٰهُكُمۡ إِلَٰهٞ وَٰحِدٞۖ لَّآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلرَّحۡمَٰنُ ٱلرَّحِيمُ ١٦٣﴾ [البقرة: 163] ”আর তোমাদের ইলাহ্ এক ইলাহ্, দয়াময়, অতি দয়ালু তিনি ছাড়া অন্য কোন সত্য ইলাহ্ নেই।” সূরা আল-বাকারা: ১৬৩।
সুতরাং আল্লাহ, তিনিই রহমান (দয়াময়) এবং রহীম (দয়াময়)।
মহিমান্বিত কুরআনে আল্লাহ তা‘আলা বলছেন:
﴿هُوَ ٱللَّهُ ٱلَّذِي لَآ إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ٱلۡمَلِكُ ٱلۡقُدُّوسُ ٱلسَّلَٰمُ ٱلۡمُؤۡمِنُ ٱلۡمُهَيۡمِنُ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡجَبَّارُ ٱلۡمُتَكَبِّرُۚ سُبۡحَٰنَ ٱللَّهِ عَمَّا يُشۡرِكُونَ٢٣﴾ [الحشر: 23] ”তিনি আল্লাহ্, তিনি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই। তিনিই অধিপতি, মহাপবিত্র, শান্তি-ক্রটিমুক্ত, নিরাপত্তা বিধায়ক, রক্ষক, পরাক্রমশালী, প্রবল, অতীব মহিমান্বিত। তারা যা শরীক স্থির করে আল্লাহ্ তা হতে পবিত্র, মহান।” সূরা আল-হাশর: ২৩।
সুতরাং নামসমূহ এবং গুণাবলীর ভিন্নতা এক আল্লাহর মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
দ্বিতীয় সমস্যাটি হল: বিভিন্ন মূর্তির রূপে প্রভুর গুণাবলীকে মূর্ত করার ধারণা, এ পৌত্তলিকতার ফলে মহাবিশ্বের কোন নিরাপত্তা নেই।
এ কারণে, পবিত্র কুরআন আল্লাহর থেকে এ সমস্ত যাবতীয় পৌত্তলিক ধারণাকে অস্বীকার করে এবং প্রমাণ করে যে, আল্লাহর সাথে অন্যান্য দেবতাদের গ্রহণ করার মাধ্যমে সমগ্র মহাবিশ্বের নিরাপত্তাহীনতা দেখা দেয়।
﴿لَوۡ كَانَ فِيهِمَآ ءَالِهَةٌ إِلَّا ٱللَّهُ لَفَسَدَتَاۚ فَسُبۡحَٰنَ ٱللَّهِ رَبِّ ٱلۡعَرۡشِ عَمَّا يَصِفُونَ٢٢﴾ [الأنبياء: 22] ”যদি এতদুভয়ের (আসমান ও যমীনের) মধ্যে আল্লাহ্ ব্যতীত আরো অনেক ইলাহ থাকত, তাহলে উভয়ই বিশৃংখল হত। অতএব, তারা যা বর্ণনা করে তা থেকে আরশের অধিপতি আল্লাহ্ কতই না পবিত্র।” সূরা আল-আম্বিয়া: ২২।
যদি আল্লাহর সাথে আরো অনেক ইলাহ থাকত, তাহলে আসমানসমূহ ও যমীন বিনষ্ট হয়ে যেত।
﴿وَلَوِ ٱتَّبَعَ ٱلۡحَقُّ أَهۡوَآءَهُمۡ لَفَسَدَتِ ٱلسَّمَٰوَٰتُ وَٱلۡأَرۡضُ وَمَن فِيهِنَّۚ بَلۡ أَتَيۡنَٰهُم بِذِكۡرِهِمۡ فَهُمۡ عَن ذِكۡرِهِم مُّعۡرِضُونَ٧١﴾ [المؤمنون: 71] ”আর হক্ক যদি তাদের কামনা-বাসনার অনুগামী হত তবে বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ত আসমানসমূহ ও যমীন এবং এগুলোতে যা কিছু আছে সবকিছুই। বরং আমরা তাদের কাছে নিয়ে এসেছি তাদের ইজ্জত ও সম্মান সম্বলিত যিকর, কিন্তু তারা তাদের এ যিকর (কুরআন) থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।” সূরা আল-মুমিনূন: ৭১।

    How can we help?