বিবিধ ধর্মসীরাত ও ইতিহাসহাদিস

লাল গরু, থার্ড টেম্পল এবং মসীহ দাজ্জাল

গরু নিয়ে বহু আলাপ আলোচনা চললে চার দিকে। এই বিষয়ে আমাদের এক লেখক বলেছিলেন

“আলোচনা উচিত ছিলো কিভাবে লাল গরুটাকে কুরবানি করা যায়, মাংস খাওয়া যায়। অথচ তারা ব্যস্ত লাল গরুকে ইয়াহূদিরা কাটলে কেয়ামত হবে কি হবে না তা নিয়ে।” – মোহাম্মদ তাহমিদ

যাইহোক বাইবেলের লাল গরু ও কোরআনে বর্ণিত হলুদ গরু নিয়ে অনেকের মাঝে কিছু কনফিউশন দেখা যাচ্ছে, সেইসব দূর করলেই এই লিখা।

বাইবেলে লাল গরু, কুরআনের হলুদ গরুর মধ্যকার ঘটনা ও উদ্দেশ্য মিললেও তা এক নয়

বাইবেলের লাল গরুর সাথে কুরআনে হলুদ গরু ইতিহাস সাদৃশ্য থাকলেও এক নয়:-

আর স্মরণ কর, যখন মূসা তার কওমকে বলল, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা একটি গাভী যবেহ করবে’। তারা বলল, ‘তুমি কি আমাদের সাথে উপহাস করছ’? সে বলল, ‘আমি মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাচ্ছি’। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াত ৬৭)

গরুর রং:-

তারা বলল, ‘তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট দো‘আ কর, তিনি যেন আমাদের জন্য স্পষ্ট করে দেন, কেমন তার রঙ’? সে বলল, ‘নিশ্চয় তিনি বলছেন, নিশ্চয় তা হবে হলুদ রঙের গাভী, তার রঙ উজ্বল, দর্শকদেরকে যা আনন্দ দেবে’।  (সূরাঃ আল বাকারা আয়াত ৬৯)

তাফসির ইবনে কাসীর ২/৬৯ এর ব্যাখ্যায় বলা:-

ইবনে ‘আব্বাস (রাঃ) গাভিটির রং হলদে বলেছেন। (তাফসীর ইবনু আবী হাতিম ১/২২১) তাওরাতে এর রং লাল বর্ণনা করা হয়েছে। সম্ভবতঃ যিনি একে ‘আরবিতে অনুবাদ করেছেন তিনিই ভুল করেছেন। মহান আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।(সংক্ষিপ্ত-পরিসরে তাফসির থেকে এতটুকুই তুলে দেয়া হলো)

কুরবানির গরুটির বৈশিষ্ট্য:-

তারা বলল, ‘তুমি আমাদের জন্য তোমার রবের নিকট দো‘আ কর, তিনি যেন আমাদের জন্য স্পষ্ট করে দেন, তা কেমন? নিশ্চয় গরুটি আমাদের জন্য সন্দেহপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। আর নিশ্চয় আমরা আল্লাহ চাহে তো পথপ্রাপ্ত হব’। সে বলল, ‘নিশ্চয় তিনি বলছেন, ‘নিশ্চয় তা এমন গাভী, যা ব্যবহৃত হয়নি জমি চাষ করায় আর না ক্ষেতে পানি দেয়ায়। সুস্থ যাতে কোন খুঁত নেই’। (সূরাঃ আল বাকারা আয়াত ৭০-৭১)

গরুটি কুরবানির কারণ:-

আর স্মরণ কর, যখন তোমরা একজনকে হত্যা করলে অতঃপর সে ব্যাপারে একে অপরকে দোষারোপ করলে। আর আল্লাহ প্রকাশ করে দিলেন তোমরা যা গোপন করছিলে। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াত ৭২)

অতঃপর আমি বললাম, ‘তোমরা তাকে আঘাত কর গাভীটির (গোশতের) কিছু অংশ দিয়ে। এভাবে আল্লাহ জীবিত করেন মৃতদেরকে। আর তিনি তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনসমূহ দেখান, যাতে তোমরা বুঝ। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াত ৭৩)

এবার আসুন ইহুদিদের প্রচলিত তৌরাত থেকে সেই বিশেষ গরুটিকে জানবো,যাকে কেন্দ্র ইহুদিদের এতো বহুদিনের প্রতীক্ষা ও আলোড়ন

ইহুদিদের বই পরিচিতি:- বাইবেলের দুটি অংশ পুরাতন নিয়ম যা হিব্রু ভাষা কেবল ইহুদিদের জন্য, নতুন নিয়ম যা গ্রিক ভাষা পাণ্ডুলিপি খ্রিস্টানদের জন্য। পুরাতন নিয়মে ১ম পাঁচটি বইকে ইহুদিরা হিব্রুতে তৌরাত কিংবা তৌরাহ এমনকি তানাখও বলে। বাকিগুলো অন্যান্য নবিদের ওপর নাজিলকৃত সহিফা(ছোট পুস্তকসমূহ)

গরুটি রং এবং বৈশিষ্ট্য:-

এর পর মাবুদ মূসা ও হারুনকে বললেন,

“এ হল আমার দেওয়া শরিয়তের একটা ধারা: তোমরা বনি-ইসরাইলদের এমন একটা লাল রঙের গরু তোমাদের কাছে আনতে বলবে যার গায়ে কোন দোষ বা খুঁত নেই এবং যার কাঁধে কখনও জোয়াল চাপানো হয় নি।[1]বাইবেল-তৌরাত অংশ:-গণনাপুস্তক/শুমারি ১৯:১-২,ভার্সন:-কিতাবুল মোকদ্দার্স,বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি

গরুটির রং নিয়ে ইহুদি পণ্ডিতদের মতভেদ:-

হিব্রু তৌরাতে গরুটি লাল বর্ণের রং বুঝাতে হিব্রুতে আদুমাহ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। আরবে তৌরাতের প্রথম আরবি অনুবাদক ও তাফসিরকারক পণ্ডিত সাদিয়া গাওন তার অনুবাদে তিনি এই গরুটিকে আরবিতে “সাফরা” করেছেন। যা মুসলিমদের কুরআনের সূরা বাকারা অনুরূপ। এটা নিয়ে খণ্ডন করতে গিয়ে ইহুদি পণ্ডিত ইউসুফ কাহেফ বলেন-বিশেষ গরুটি লাল হওয়া ক্ষেত্রে অধিক যুক্তিযুক্ত এবং তার বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত।এটা কখনোই আরবিতে সাদিয়া গাওনের উল্লিখিত “সাফরা” অর্থাৎ হলুদ রঙের হতে পারে না। যা তৌরাতে উল্লেখ করা হিব্রু আদুমাহ শব্দের সাথে অমিল।[2]রেফারেন্স-পেরুশেই রাবেইনু সাদিয়া গাঁও আল হাতোরাহ,১৯/২, লেখক:-ইউসুফ কাহেফ

গরুটি কুরবানির কারণ:-

যেখানে কখনও চাষ করা কিংবা বীজ বোনা হয় নি এবং যেখানে একটা নদী বয়ে যাচ্ছে, গরুটিকে তেমন একটা উপত্যকায় তাদের নিয়ে যেতে হবে। সেই উপত্যকায় তারা গরুটি ঘাড় ভেঙে দেবে। তারপর সবচেয়ে কাছের গ্রাম বা শহরের বৃদ্ধ নেতারা সেই ঘাড় ভাংগা বাছুরটার উপর তাদের হাত ধুয়ে ফেলবে। এর পর তারা বলবে, ‘এই রক্তপাত আমরা নিজেরা করি নি এবং হতেও দেখি নি। হে মাবুদ, তোমার মুক্ত করা বনি-ইসরাইলদের তুমি মাফ কর।অমুক লোকটির রক্তপাতের জন্য দায়ী,সুতরাং তুমি তোমার বাকি বান্দাদের দায়ী কোরো না।’ এতে সেই রক্তপাতের দোষ মাফ করা হবে। এইভাবে তোমরা নিজেদের মধ্য থেকে নির্দোষ লোকের রক্তপাতের দোষ মুছে ফেলতে পারবে, কারণ তখন মাবুদের চোখে যা ভাল তা-ই করা হবে।[3]বাইবেল-তৌরাত অংশ:-দ্বিতীয় বিবরণ ২১:৪, ৬-৯, ভার্সন:-কিতাবুল মোকদ্দার্স,বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি

গরুটি তাৎপর্য:-

“যদি সে গরু দিয়ে পোড়ানো-কোরবানী দিতে চায় তবে সেটা হতে হবে একটা নিখুঁত ষাঁড়। মাবুদ যাতে তার উপর সন্তুষ্ট হন সেইজন্য তাকে সেই ষাঁড়টা মিলন-তাম্বুর দরজার কাছে উপস্থিত করতে হবে। পোড়ানো-কোরবানীর জন্য আনা সেই ষাঁড়টার মাথার উপরে সে তার হাত রাখবে; আর সেটা তার জায়গায় তার পাপ মোচনের জন্য কবুল করা হবে।[4]বাইবেল-তৌরাত অংশ:-লেবীয় পুস্তক ১:৩-৬,ভার্সন:-কিতাবুল মোকদ্দার্স,বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি

লাল গরু কুরবানি মাধ্যমে ইহুদিরা পাপ মোচন করার পর ইহুদিরা তাদের মসিহ দাজ্জালের আগমনের সুবাদে 3rd Temple বা ৩য় মন্দির বা উপসনালয় নির্মাণের জন্য বাইতুল আকসাকে ভাঙার প্রয়াস:-

থার্ড টেম্পলের কথা বাইবেলে থাকলেও আকসা ভেংগে তা নির্মাণ তা ভুয়া বাসনা, হাদিসের আলোকে তা ভাংতে পারবে না

নবি দাউদ (আ:) নিজের তত্ত্বাবধানে জেরুজালেমের তার সময়ে মসজিদ সংস্কার করেন, তা হলো বাইতুল মাকদিস (বাইতুল আকসা) এবং নবি সুলাইমান (আ) ২য় তা মসজিদ পুনঃনির্মাণ করেন। ইহুদিরা তাদের পাপের কারণে জেরুজালেম থেকে বিতাড়িত হয়, বর্হিজাতির আক্রমণে দাউদ ও নবি সুলাইমান নির্মিত মসজিদ ভেঙে যায়। মুসলিম শাসনামলে তা পুনঃনির্মাণ হয় আকসা। নবি ঈসাকে পেয়েও ইহুদিরা মাসীহ মানতে নারাজ, কারণ তিনি পিতা ছাড়া জন্ম, তাকে হত্যার চেষ্টা করে, আল্লাহর ইচ্ছায় তা পারেনি। তাই দাজ্জালকে নিজেদের মাসীহ হিসেবে ইহুদিরা চায়। ইহুদিরা জেরুজালেমের সর্বপ্রথম বাইতুল মোকাদ্দাস তথা আকসাকে ভেঙে ৩য় সুলাইমানি হাইকেল বা ৩য় টেম্পল/মসজিদ নির্মাণ করতে চায়।

থার্ডটেম্পলের বিষয়ে ইহুদিদের আজগুবি ভবিষ্যৎ বাণী:-

অনেক জাতির লোক এসে বলবে, “চল, আমরা মাবুদের পাহাড়ে উঠে যাই, চল, ইয়াকুবের আল্লাহ্‌র ঘরে যাই। তিনি আমাদের তাঁর পথ সম্বন্ধে শিক্ষা দেবেন আর আমরা তাঁর পথে চলব।” তারা এই কথা বলবে, কারণ সিয়োন থেকে নির্দেশ দেওয়া হবে আর জেরুজালেম থেকে বের হবে মাবুদের কালাম। তিনি জাতিদের মধ্যে বিচার করে দেবেন; অনেক দেশের লোকদের মধ্যে আপোষ-মীমাংসা করবেন। তারা তাদের তলোয়ার ভেঙে লাঙ্গলের ফাল গড়বে আর বর্শা ভেঙে গড়বে ডাল ছাঁটবার ছুরি। এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে আর তলোয়ার উঠাবে না; তারা আর যুদ্ধ করতে শিখবে না। হে ইয়াকুবের বংশধরেরা, এস; চল, আমরা মাবুদের নূরে চলাফেরা করি।[5]বাইবেল-সহিফা:-ইশাইয়া ২:৩-৫
ভার্সন:-কিতাবুল মোকদ্দার্স,বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি

দাজ্জালকে স্বাগতম জানানোর জন্য,সেই মসজিদ থেকে তারা দাজ্জালকে সাথে নিয়ে বিশ্ব নেতৃত্ব দেওয়ার আশা রাখে,হারিয়ে যাওয়া সুলাইমানের বিশ্ব শাসন রাজ্য ফেরত আনতে চায়, দাজ্জালকে নেতা কিংবা রাজা বানিয়ে। তাদের এই পরিকল্পনা তাদের ইসরায়েলী পত্রিকা এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ইলুমিনাতি নামে ত্রিভুজের এক চোখ প্রতীক হিসেবে দাজ্জালকে প্রচার করে। কেননা দাজ্জালের একচোখ কানা তা হাদিস থেকে সবাই আমরা জানি, দাজ্জাল আরেকটি চোখে দিয়ে দেখলেও তা ত্রুটিপূর্ণ বা ঝাপসা হাদিসের মতান্তরে।

ইহুদিরা একত্রিত হয়ে একটি দেশ গড়ার নামে বিশ্ব শাসন করবে দাজ্জালের আশা নিয়ে সেটা তুলে ধরা হলো তাদের ভাবনা

সেই দিন দীন-দুনিয়ার মালিক তাঁর বেঁচে থাকা বান্দাদের আশেরিয়া থেকে, মিশর ও পথ্রোষ থেকে, ইথিওপিয়া, ইলাম, ব্যাবিলন, হামা ও দ্বীপগুলো থেকে উদ্ধার করে আনবার জন্য দ্বিতীয়বার তাঁর হাত বাড়িয়ে দেবেন। তিনি জাতিদের জন্য একটা নিশান তুলবেন আর বিদেশে বন্দী থাকা বনি-ইসরাইলদের জমায়েত করবেন; এহুদার ছড়িয়ে থাকা লোকদের তিনি দুনিয়ার চারদিক থেকে একত্র করবেন।[6]বাইবেল-সহিফা:-
ইশাইয়া ১১:১১-১২,ভার্সন:-কিতাবুল মোকদ্দার্স,বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি

হে জেরুজালেমের লোকেরা, সেই সময়ে আমি তোমাদের নিয়ে এসে জমায়েত করব। আমি যখন তোমাদের অবস্থা ফিরাব তখন দুনিয়ার সমস্ত জাতির মধ্যে আমি তোমাদের সম্মান ও গৌরবের পাত্র করব, আর তোমরা তা দেখতে পাবে। আমি মাবুদ এই কথা বলছি।”[7]বাইবেল-সহিফা:-সফনিয় ৩:২০,ভার্সন:-কিতাবুল মোকদ্দার্স,বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি

আকসার মর্যাদা ও গুরুত্ব

ঐতিহাসিক আকসা কুরআনে গুরুত্ব প্রদান:-

পবিত্র মহান সে সত্তা, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে নিয়ে গিয়েছেন আল মাসজিদুল হারাম থেকে আল মাসজিদুল আকসা* পর্যন্ত, যার আশপাশে আমি বরকত দিয়েছি, যেন আমি তাকে আমার কিছু নিদর্শন দেখাতে পারি। তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। (সূরাঃ বনী ইসরাঈল, আয়াত ১)

তাফসিরে আবু বকর জাকারিয়ায় এই আয়াতে বাইতুল আকসা দ্বারা যা উদ্দেশ্য করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা করতে যেয়ে বলা হয়েছে:-

সত্য কথা এই যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসরা (মেরাজ) সফর জাগ্রত অবস্থায় করেন; স্বপ্নে নয়। মক্কা মোকাররমা (কাবা) থেকে বাইতুল মোকাদ্দাস (আকসা) পর্যন্ত এ সফর বোরাকযোগে করেন।(সংক্ষিপ্ত)

বাইতুল আকসার নির্মাণকাল:-

কাবা নির্মাণের পর ৪০ বছর ব্যবধানে নির্মাণ।

‎নবি (স) কে জিজ্ঞেস করা হলো-কোন মসজিদটি প্রথম নির্মিত হয় ? তিনি বলেছিলেন, মসজিদুল হারাম,অর্থাৎ কাবা। আমি বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেন, মসজিদুল আকসা। আমি বললাম, এতদুভয়ের মধ্যে ব্যবধান কত? তিনি বললেন, চল্লিশ বছর। আর যমীন তোমার জন্য মসজিদ (সিজদার স্থান)। অতএব যেখানেই সালাতের সময় হবে, সালাত আদায় করবে।[8]সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৬৯০; সনদ সহিহ

আকসার ফজিলত

‎নবি (সাঃ) বলেছেন: সুলাইমান ইবনু দাঊদ বাইতুল মাকদিস মসজিদের কাজ সম্পন্ন করে আল্লাহর কাছে তিনটি বিষয় প্রার্থনা করেন: আল্লাহর বিধানের অনুরূপ সুবিচার, এমন রাজত্ব যা তার পরে আর কাউকে দেয়া হবে না, এবং যে ব্যক্তি বাইতুল মুকাদ্দাস শুধুমাত্র সালাত আদায়ের জন্য আসবে, সে তার গুনাহ হতে সদ্য প্রসূত সন্তানের মত নিষ্পাপ অবস্থায় বের হবে। অতঃপর নবি (সাঃ) বলেন: প্রথম দু’টি তাঁকে দেয়া হয়েছে। আর আমি আশা করি তৃতীয়টি আমাকে দান করা হবে।[9]সহিহ ফাযায়েলে আমল, হাদিস নং ১৪৮; সনদ সহিহ

মুসলিমদের প্রথম কেবলা আকসা:-

বারাআ (ইবনু ‘আযিব) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমরা নবি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ষোল অথবা সতেরো মাসব্যাপী (মাদীনাহ্‌তে) বাইতুল মুকাদ্দাসের (আকসা) দিকে মুখ করে সালাত আদায় করেছি। অতঃপর আল্লাহ তাঁকে কা’বার দিকে ফিরিয়ে দেন।[10]বুখারী পর্ব ৬৫ : /১৮ হাঃ ৪৪৯২, মুসলিম পর্ব ৫ : /২ হাঃ ৫২৫; আল লু’লু ওয়াল মারজান, হাদিস নং ৩০৩; সনদ সহিহ

কেবলা পরিবর্তনের আদেশ:-

আর তুমি যেখান থেকেই বের হও, তোমার চেহারা মাসজিদুল হারামের দিকে ফিরাও। আর নিশ্চয় তা সত্য তোমার রবের পক্ষ থেকে এবং তোমরা যা কর, আল্লাহ তা থেকে গাফিল নন। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ১৪৯)

সর্বোপরি বাইতুল আকসা মুসলিমদের হাতে বিজয় হওয়ার ঘোষনা হাদিসে

বাইতুল মুকাদ্দাস তথা আকসা কেয়ামত পর্যন্ত মুসলিমদের অধীনে থাকা ওয়াদা:-

আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত- রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘আমার উম্মতের একটি দল দামেস্কের প্রবেশপথগুলোতে এবং তার আশপাশে সংগ্রাম করতে এবং বায়তুল মুকাদ্দাস ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে সর্বদা (সত্যের পক্ষে) সংগ্রামরত থাকবে। কিয়ামত পর্যন্ত সত্যের শত্রুরা তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারবে না’[11]মুসান্নাফে আবি ইয়ালা-হাদিস নং ৬৪১৭; Link- https://shamela.ws/book/12520/6444

সময় বলে দিবে হাদিসটি সহিহ নাকি জয়িফের কাতারে দাঁড়াবে,মুহাদ্দিসগণ সনদ যাচাইয়ে নীরব। আল্লাহ পাক! নবিদের এই মসজিদুল আকসাকে রক্ষা করুক ইহুদিদের হাত থেকে যেমনটা সূরা ফীলে বর্ণিত কাবা মতো রক্ষণাবেক্ষণ করেছিলেন-আমিন।

বাইবেলে-সহিফায় ইহুদিদের আগত মসিহ দাজ্জাল:-

দাজ্জাল হবে তৌরাতে/সহিফা নিয়মে ইহুদিদের রাজা হবে, ইহুদিদের এই বাসনা

ইস্রায়েলের পাহাড়গুলির উপরে আমি তাদের একই জাতি করব। তাদের সকলের উপরে একজনই রাজা হবে এবং তারা কখনও দুই জাতি হবে না কিংবা দুই রাজ্যে বিভক্ত হবে না।[12]যিহিষ্কেল 37:22 BCV https://bible.com/bible/2412/ezk.37.22.BCV

আমি ইফ্রয়িমের কাছ থেকে রথ নিয়ে নেব ও জেরুশালেমের যুদ্ধের ঘোড়া, এবং যুদ্ধের ধনুক ভেঙে ফেলা হবে। তিনি জাতিগণের মধ্যে শান্তি ঘোষণা করবেন। তাঁর শাসন সমুদ্র থেকে অপর সমুদ্র পর্যন্ত প্রসারিত হবে এবং নদী থেকে পৃথিবীর শেষ সীমা পর্যন্ত হবে।[13]সখরিয় 9:10 BCV https://bible.com/bible/2412/zec.9.10.BCV

আর তাদের বলো, ‘সার্বভৌম সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ইস্রায়েলীরা যেসব জাতিদের মধ্যে আছে সেখান থেকে আমি তাদের বার করে আনব এবং চারদিক থেকে তাদের জড়ো করে তাদের নিজেদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাব।[14]যিহিষ্কেল 37:21 BCV

    Footnotes

    Footnotes
    1বাইবেল-তৌরাত অংশ:-গণনাপুস্তক/শুমারি ১৯:১-২,ভার্সন:-কিতাবুল মোকদ্দার্স,বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি
    2রেফারেন্স-পেরুশেই রাবেইনু সাদিয়া গাঁও আল হাতোরাহ,১৯/২, লেখক:-ইউসুফ কাহেফ
    3বাইবেল-তৌরাত অংশ:-দ্বিতীয় বিবরণ ২১:৪, ৬-৯, ভার্সন:-কিতাবুল মোকদ্দার্স,বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি
    4বাইবেল-তৌরাত অংশ:-লেবীয় পুস্তক ১:৩-৬,ভার্সন:-কিতাবুল মোকদ্দার্স,বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি
    5বাইবেল-সহিফা:-ইশাইয়া ২:৩-৫
    ভার্সন:-কিতাবুল মোকদ্দার্স,বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি
    6বাইবেল-সহিফা:-
    ইশাইয়া ১১:১১-১২,ভার্সন:-কিতাবুল মোকদ্দার্স,বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি
    7বাইবেল-সহিফা:-সফনিয় ৩:২০,ভার্সন:-কিতাবুল মোকদ্দার্স,বাংলাদেশ বাইবেল সোসাইটি
    8সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৬৯০; সনদ সহিহ
    9সহিহ ফাযায়েলে আমল, হাদিস নং ১৪৮; সনদ সহিহ
    10বুখারী পর্ব ৬৫ : /১৮ হাঃ ৪৪৯২, মুসলিম পর্ব ৫ : /২ হাঃ ৫২৫; আল লু’লু ওয়াল মারজান, হাদিস নং ৩০৩; সনদ সহিহ
    11মুসান্নাফে আবি ইয়ালা-হাদিস নং ৬৪১৭; Link- https://shamela.ws/book/12520/6444
    12যিহিষ্কেল 37:22 BCV https://bible.com/bible/2412/ezk.37.22.BCV
    13সখরিয় 9:10 BCV https://bible.com/bible/2412/zec.9.10.BCV
    14যিহিষ্কেল 37:21 BCV
    Show More
    Back to top button