সুষ্ঠ জ্ঞান, মানব স্বভাব ও মৌলিক শিক্ষার মানদণ্ডে হিন্দুধর্ম

⌘K
  1. Home
  2. Docs
  3. সুষ্ঠ জ্ঞান, মানব স্বভাব ...
  4. ১৬। ইসলাম কেন হিন্দুধর্মকে নাকচ করে?

১৬। ইসলাম কেন হিন্দুধর্মকে নাকচ করে?

বর্তমান হিন্দুধর্ম, এটি কোন ধর্ম, মতবাদ অথবা ধর্ম-বিশ্বাসের দৃষ্টিভঙ্গিও নয়। বরং এটি সন্ন্যাসীদের দর্শন, শিক্ষা, গুপ্ত তন্ত্র এবং অগণিত আচার-সাধনার সাথে বেদের সংমিশ্রণে তৈরী একটি জগাখিচুড়িতে পরিণত হয়েছে।
অতএব, হিন্দুধর্ম কোন একক ধর্মতাত্ত্বিক উপাসনা পদ্ধতি অথবা সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের আচার-সাধনা, অথবা কোন ধর্মীয় অবিচল ব্যবস্থা, অথবা কেন্দ্রীয়ভাবে হিন্দুদেরকে একত্রিত করতে পারে এমন কোন কাঠামোও নয়। তুমি কখনোই সেখানে এমন কিছু পাবে না; বরং আক্ষরিকভাবে তুমি হাজার হাজার সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী ধর্মীয় দলের সামনে নিজেকে খুঁজে পাবে! [৬০] সুতরাং কিভাবে এমন বিকৃত কোন কিছুর দ্বারা আল্লাহর ইবাদাত করা যেতে পারে, যার ব্যাপারে তিনি কোন প্রমাণ অবতরণ করেননি?
এবং কিভাবে ধারণার এমন বিকৃত সংমিশ্রণকে জীবনের উদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে?
এছাড়াও আধুনিক যুগের হিন্দুরা কিভাবে মূর্তিসমূহকে আল্লাহর শারীরিক প্রকাশ হিসেবে ধরে নিয়েছে তা চিন্তা করে দেখ!
যারা মূর্তিসমূহকে তাঁর শারীরিক প্রকাশ হিসেবে গ্রহণ করে এবং তাঁর নিকটবর্তী হওয়ার মাধ্যম গণ্য করে, তাদেরকে মহাশক্তিধর আল্লাহ তাদের কাফের বলেছেন। আল্লাহ সুবহানাহ বলেছেন:
﴿أَلَا لِلَّهِ ٱلدِّينُ ٱلۡخَالِصُۚ وَٱلَّذِينَ ٱتَّخَذُواْ مِن دُونِهِۦٓ أَوۡلِيَآءَ مَا نَعۡبُدُهُمۡ إِلَّا لِيُقَرِّبُونَآ إِلَى ٱللَّهِ زُلۡفَىٰٓ إِنَّ ٱللَّهَ يَحۡكُمُ بَيۡنَهُمۡ فِي مَا هُمۡ فِيهِ يَخۡتَلِفُونَۗ إِنَّ ٱللَّهَ لَا يَهۡدِي مَنۡ هُوَ كَٰذِبٞ كَفَّارٞ٣﴾ [الزمر: 3] “জেনে রাখুন, অবিমিশ্র আনুগত্য আল্লাহরই প্রাপ্য। আর যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যদেরকে অভিভাবকরূপে গ্রহণ করে তারা বলে, ‘আমরা তো এদের ইবাদত এ জন্যে করি যে, এরা আমাদেরকে পরিপূর্ণভাবে আল্লাহর সান্নিধ্যে এনে দেবে।’ তারা যে বিষয়ে নিজেদের মধ্যে মতভেদ করছে নিশ্চয় আল্লাহ তাদের মধ্যে সে ব্যাপারে ফয়সালা করে দেবেন। যে মিথ্যাবাদী ও কাফির, নিশ্চয় আল্লাহ তাকে হিদায়াত দেন না।” সূরা আয-যুমার: ৩।
এবং হিন্দুরা, এই মূর্তিগুলি গ্রহণ করে – আমি আগে যেমন ব্যাখ্যা করেছি- বেদের বিরোধিতা করেছে, এবং তারা তাদের সহজাত প্রকৃতিকে লঙ্ঘন করেছে; কারণ তারা জানে তারা তাদের মূর্তিগুলিকে যেভাবে আল্লাহর শারীরিক প্রকাশ হিসেবে গ্রহণ করেছে, এ মর্মে তাদের কাছে সহজাত কোন প্রমাণ নেই।
﴿أَمَّن يَبۡدَؤُاْ ٱلۡخَلۡقَ ثُمَّ يُعِيدُهُۥ وَمَن يَرۡزُقُكُم مِّنَ ٱلسَّمَآءِ وَٱلۡأَرۡضِۗ أَءِلَٰهٞ مَّعَ ٱللَّهِۚ قُلۡ هَاتُواْ بُرۡهَٰنَكُمۡ إِن كُنتُمۡ صَٰدِقِينَ٦٤﴾ [النمل: 64] “নাকি তিনি, যিনি প্রথম সৃষ্টি করেন, তারপর সেটার পুনরাবৃত্তি করবেন এবং যিনি তোমাদেরকে আসমান ও যমীন থেকে রিযিক দান করেন, আল্লাহর সাথে কি অন্য কোন ইলাহ আছে? বলুন, “তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে তোমাদের প্রমাণ পেশ কর।” সূরা আন-নামল: ৬৪।
আর কোথায় তাদের প্রমাণ!
আর কোথায় তাদের প্রমাণ!
সুতরাং বর্তমান হিন্দুধর্মের সমস্যা হল এটি পৌত্তলিকতাকে অতিরঞ্জিত করে এবং একে ধর্মের একটি স্তম্ভে পরিণত করে।
ফলত সবখানে শুধুই মূর্তি।
আর প্রভু মূর্তির মধ্যে কায়িকভাবে প্রকাশিত।
এবং হিন্দুধর্মে হাজার হাজার মূর্তি, ছবি এবং প্রতিমা রয়েছে।
তাই হিন্দুধর্ম মূর্তি, ভাস্কর্য ও প্রতিমাসমূহের ধর্মে পরিণত হয়েছে।
এছাড়াও বর্তমান হিন্দুধর্ম অস্তিত্বের একাত্মতার মতবাদের কথা বলে।
বর্তমান হিন্দুধর্ম জগতকে অবিনশ্বর বলে থাকে।
এছাড়াও এটি শ্রেণিবৈষম্য প্রতিষ্ঠা করে।
বর্তমান হিন্দুধর্ম মানুষের মধ্যে প্রভুর শারীরিক প্রকাশকে “অবতার” বলে আখ্যা দেয়।
এবং মূর্তি ও প্রতিমার মধ্যে প্রভুর শারীরিক প্রকাশকে “শক্তি” বলে আখ্যা দেয়।
আর বর্তমান হিন্দুধর্ম আত্মার স্থানান্তরের কথা বলে।
বারবার জন্ম নেওয়ার কথা বলে।
এটি পাঁচটি উপাদানসহ এর অনুগামী যাদুবিদ্যা, তাবিজ এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্যদের সাথে সম্পর্কিত হওয়ার কথা বলে।
এই সমস্ত কিছুর জন্যই মূলত ইসলাম হিন্দুধর্মকে প্রত্যাখ্যান করে, কারণ এটি নবীদের শিক্ষাসমূহের লঙ্ঘন করেছে এবং তাওহীদকে ভুলে গেছে।
ইসলাম প্রতিটি হিন্দুকে ইসলামের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে ফিরে আসারে আহ্বান জানায়; কারণ অন্যথায় আল্লাহর নিকটে তাদের কোন পরিত্রাণের উপায় থাকবে না।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
﴿إِنَّ ٱلدِّينَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلۡإِسۡلَٰمُۗ وَمَا ٱخۡتَلَفَ ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَٰبَ إِلَّا مِنۢ بَعۡدِ مَا جَآءَهُمُ ٱلۡعِلۡمُ بَغۡيَۢا بَيۡنَهُمۡۗ وَمَن يَكۡفُرۡ بِـَٔايَٰتِ ٱللَّهِ فَإِنَّ ٱللَّهَ سَرِيعُ ٱلۡحِسَابِ١٩﴾ [آل عمران: 19] “নিশ্চয় আল্লাহর কাছে একমাত্র মনোনীত দীন হচ্ছে ইসলাম।” সূরা আলে ইমরান: ১৯।
তিনি আরো বলেন:
﴿وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ٨٥﴾ [آل عمران: 85] “আর কেউ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন গ্রহণ করতে চাইলে তা কখনো তার পক্ষ থেকে কবুল করা হবে না এবং সে হবে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।” সূরা আলে ইমরান: ৮৫। তিনি আরো বলেন:
﴿حُرِّمَتۡ عَلَيۡكُمُ ٱلۡمَيۡتَةُ وَٱلدَّمُ وَلَحۡمُ ٱلۡخِنزِيرِ وَمَآ أُهِلَّ لِغَيۡرِ ٱللَّهِ بِهِۦ وَٱلۡمُنۡخَنِقَةُ وَٱلۡمَوۡقُوذَةُ وَٱلۡمُتَرَدِّيَةُ وَٱلنَّطِيحَةُ وَمَآ أَكَلَ ٱلسَّبُعُ إِلَّا مَا ذَكَّيۡتُمۡ وَمَا ذُبِحَ عَلَى ٱلنُّصُبِ وَأَن تَسۡتَقۡسِمُواْ بِٱلۡأَزۡلَٰمِۚ ذَٰلِكُمۡ فِسۡقٌۗ ٱلۡيَوۡمَ يَئِسَ ٱلَّذِينَ كَفَرُواْ مِن دِينِكُمۡ فَلَا تَخۡشَوۡهُمۡ وَٱخۡشَوۡنِۚ ٱلۡيَوۡمَ أَكۡمَلۡتُ لَكُمۡ دِينَكُمۡ وَأَتۡمَمۡتُ عَلَيۡكُمۡ نِعۡمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ ٱلۡإِسۡلَٰمَ دِينٗاۚ فَمَنِ ٱضۡطُرَّ فِي مَخۡمَصَةٍ غَيۡرَ مُتَجَانِفٖ لِّإِثۡمٖ فَإِنَّ ٱللَّهَ غَفُورٞ رَّحِيمٞ٣﴾ [المائدة: 3] “আজকের দিন আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পরিপূর্ণ করছি। আর তোমাদের ওপর আমার নিআমতকে সম্পন্ন করছি। আর ইসলামকে তোমাদের জন্য দীন হিসেবে মনোনিত করছি।” সূরা আল-মায়িদাহ: ০৩।
সুতরাং কোন হিন্দু অথবা অন্য যে কোন মানুষের এই দীন (ধর্ম) – ইসলাম- ছাড়া পরিত্রান নেই।
ইসলাম পৃথিবীতে অন্যান্য ধর্মের মধ্যে পরিগণিত কোন ধর্ম নয়, বরং এটি একমাত্র তাওহীদবাদী ধর্ম, যার দাওয়াত সহকারে আল্লাহ সমস্ত নবীকে পাঠিয়েছেন। সকল নবীই এসেছেন মানুষকে তাওহীদের দিকে আহবান জানাতে। আর এ বিশুদ্ধ তাওহীদের উপরে আজ ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম বা মতবাদ অবশিষ্ট নেই, যখন বাকি ধর্মে শিরক (বহু-ঈশ্বরবাদ)-এর একটি অংশ রয়েছে, তা অল্প হোক বা অনেক।
ইসলাম হচ্ছে- অন্যদেরকে বাদ দিয়ে একমাত্র আল্লাহর ইবাদাত করা, তাঁর আদেশসমূহ পালন করা, তাঁর নিষিদ্ধ বস্তুসমূহ পরিত্যাগ করা, তাঁর নির্ধারিত সীমার মধ্যে অবস্থান করা, অতীতে ঘটিত ও ভবিষ্যতে ঘটিতব্য যা কিছু সম্পর্কে তিনি সংবাদ দিয়েছেন তা বিশ্বাস করা, আর সকল ধরণের মূর্তি, প্রতিমা ও প্রতিকৃতি থেকে মুক্ত থাকার নাম।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
﴿سُبۡحَٰنَ رَبِّكَ رَبِّ ٱلۡعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُونَ ١٨٠﴾ [الصافات: 180] “তারা যা আরোপ করে, তা থেকে পবিত্র ও মহান আপনার রব, সকল ক্ষমতার অধিকারী।” সূরা আস-সফফাত: ১৮০।
মূর্তিসমূহের মধ্যে আল্লাহর শারীরিক প্রকাশ ঘটার ব্যাপারে হিন্দুরা যা বলেছে, তা থেকে আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র।
﴿وَسَلَٰمٌ عَلَى ٱلۡمُرۡسَلِينَ١٨١﴾ [الصافات: 181] “আর শান্তি বৰ্ষিত হোক রাসূলদের প্ৰতি!” সূরা আস-সফফাত: ১৮১।
নবীদের উপরে সালাম (শান্তি), যারা মানুষকে তাদের রবের ব্যাপারে পরিচিত করিয়েছেন, তাঁকে সব ধরণের মর্যাদাহানিকর বিষয় থেকে পবিত্র বলে ঘোষণা করেছেন।

    How can we help?