সুষ্ঠ জ্ঞান, মানব স্বভাব ও মৌলিক শিক্ষার মানদণ্ডে হিন্দুধর্ম

⌘K
  1. Home
  2. Docs
  3. সুষ্ঠ জ্ঞান, মানব স্বভাব ...
  4. ২২। আল্লাহ তা‘আলা কেন মন্দ বা অকল্যাণ সৃষ্টি করেছেন? অথবা অন্য কথায়: একজন মুসলিম কীভাবে ‘মন্দের জটিলতা’ থেকে রক্ষা করবে?

২২। আল্লাহ তা‘আলা কেন মন্দ বা অকল্যাণ সৃষ্টি করেছেন? অথবা অন্য কথায়: একজন মুসলিম কীভাবে ‘মন্দের জটিলতা’ থেকে রক্ষা করবে?

উত্তর: হিন্দুধর্মে মন্দের সমস্যা প্রায় সবচেয়ে বড় সমস্যা এবং হিন্দু ধর্মের দর্শন এ ভিত্তির উপরে প্রতিষ্ঠিত যে, একজন ব্যক্তি মন্দ থেকে মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত নির্জন স্থানে বাস করা উচিত। হিন্দুধর্ম এও মনে করে যে, আগের জীবনে কেউ মন্দ কাজ করেছে বলেই তার ফলস্বরূপ তার পূনরায় জন্ম হয়।
আর এগুলো সবই ভুল। বরং মন্দ পৃথিবীতে খুব সাধারণভাবেই বিদ্যমান: কেননা আমরা শরীআতের বিধান পালনে আদিষ্ট।
কেননা আমরা পরীক্ষার জগতে রয়েছি।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
﴿كُلُّ نَفۡسٖ ذَآئِقَةُ ٱلۡمَوۡتِۗ وَنَبۡلُوكُم بِٱلشَّرِّ وَٱلۡخَيۡرِ فِتۡنَةٗۖ وَإِلَيۡنَا تُرۡجَعُونَ ٣٥﴾ [الأنبياء: 35] “আমরা তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা বিশেষভাবে পরীক্ষা করে থাকি।” সূরা আল-আম্বিয়া: ৩৫।
সুতরাং ভালো-মন্দ থাকবে; কারণ তুমি একজন পরীক্ষার্থী, আর পরীক্ষিত হওয়া তোমার অস্তিত্বের উদ্দেশ্য।
আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
﴿ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلۡمَوۡتَ وَٱلۡحَيَوٰةَ لِيَبۡلُوَكُمۡ أَيُّكُمۡ أَحۡسَنُ عَمَلٗاۚ وَهُوَ ٱلۡعَزِيزُ ٱلۡغَفُورُ ٢﴾ [الملك: 2] “যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন, তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।” সূরাতুল মুলক, আয়াত: ০২।
যতক্ষণ আমরা পরীক্ষা ক্ষেত্রে থাকি, ততক্ষণ সেখানে ফিতনা (সমস্যা) এবং বিপর্যয় থাকা স্বাভাবিক এবং আমাদের মন্দে নিমজ্জিত হওয়াও স্বাভাবিক।
মন্দ কাজ করা, কতক গুনাহ করা, এবং গুনাহে লিপ্ত হওয়ার ক্ষমতা থাকা হচ্ছে, মানব স্বভাবের স্বাভাবিক চাহিদা এবং তাকলীফে ইলাহী ও ইচ্ছা স্বাধীনতার সাধারণ ফলাফল।
মন্দ, বিপর্যয়, মুসিবত এবং লালসার উপস্থিতি, এগুলো সব একজন ভালো মানুষের সবোর্ত্তমটি ও একজন খারাব মানুষের সবচেয়ে নিকৃষ্ট দিকটি বের করে নিয়ে আসে।
মন্দের পাশাপাশি আমরা বাস করি অসংখ্য ভালো বস্তুর মধ্যে।
এবং অগণিত নি‘আমাতের মধ্যে।
আমরা যত বড় বড় উত্তম বা কল্যাণের মধ্যে বেঁচে থাকি, তার পাশে মন্দ খুব সাধারণ ও সামান্য।
পৃথিবীতে যদি কোন মন্দ না থাকত, তাহলে আপনি যেখানে জন্মগ্রহণ করেছেন, সেখান থেকে বের হতেন না!
এবং কোন সভ্যতার অস্তিত্ব থাকত না, কোন শহর, কলকারখানা, বাড়িঘর তৈরি হত না। মানুষের কোন কাজের প্রয়োজন হত না। কোন রোগ প্রতিরোধ, কোন সমস্যা সমাধান বা স্বস্তি নিয়ে আসে এমন কোন ধারণা উদ্ভাবন করার কথা মানুষ ভাবত না!
আর কোন মানুষই প্রকৃতপক্ষে তার জন্মস্থান ছেড়ে অন্যত্র যেত না।
যেহেতু কোন মন্দ কিছু নেই, কোন ঝামেলা নেই, কোন কষ্ট বা বিপর্যয় নেই, কোন ক্লান্তি নেই এবং কোন সমস্যাও নেই যার সমাধান আবিষ্কার করা যেতে পারে!
তাহলে কেনইবা ক্লান্ত হওয়া, রাত জেগে থাকা, চিন্তাভাবনা করা এবং কার্য সম্পাদন করা?
সুতরাং মন্দ একটি অপরিহার্যতা যা এই দুনিয়াতে অনিবার্য!
সুতরাং তুমি চিন্তা কর!
অনেক মানুষ এমন রয়েছে, যাদের উপরে দুর্যোগ এবং মন্দ আপতিত হয়, তারপরে তারা আল্লাহর কাছে ফিরে আসে এবং ধার্মিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। মহিমান্বিত মহান আল্লাহ এবং প্রশংসা কেবল তাঁরই।
সুতরাং আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত বিষয় বা তাকদীরের প্রতিটি বিষয়েই হিকমত এবং কল্যাণ রয়েছে, যদিও বাহ্যিকভাবে কিছু বিষয় মন্দ বা অকল্যাণকর, সংকীর্ণ ও কষ্টকর মনে হয়। তবুও তা পরিশেষে বড় ধরণের ভালো (কল্যাণ) এবং ইলাহী পূর্ণাঙ্গ হিকমত নিয়ে আবির্ভুত হয়।
আর তাই, মন্দ শুধু পরীক্ষিত হওয়ার কারণে, এ কারণে নয় যে, তুমি পূর্ব জন্মে পাপে লিপ্ত ছিলে।

    How can we help?