তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বনাস্তিক্যধর্ম

অন্য কোনো ধর্ম সঠিক হলে মুসলিমদের কী হবে?

বেশ অনেক জায়গায় একটা প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি, তা হলো, যদি আমি মৃত্যুর পর দেখি আমি যে ধর্ম মেনেছিলাম তা সত্য নয় বরং অন্য ধর্ম সত্য তাহলে আমার কি হবে?

প্রশ্নটা বেশ ইন্টারেস্টিং বটে। এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে বহু ধর্ম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করলাম, ঘাঁটাঘাঁটি করলাম, অবশেষে উপসংহারেও পৌঁছানোও সম্ভব হল। তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য এই লিখা। এই লিখায় কোন ধর্ম সঠিক আর কোন ধর্ম বেঠিক তা প্রমাণ করতে আমি কিছু লিখছি না, আর বাস্তবে খালি মনে করা, ধরে নেওয়ার জন্যও আমি অন্য ধর্মকে সঠিক মনে করি না, বিশেষ করে হিন্দু ধর্মের মত ধর্মগুলোকেতো একদমই না। বাকি আব্রাহামিক ধর্ম স্রষ্টা হতে আগত হলেও তা পরে বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। তারপরও আমার লিখার উদ্দেশ্যে হচ্ছে অমুসলিমদের পার্সপেক্টিভ থেকে অন্য কোন ধর্ম যদি সঠিক হয় তাহলে মুসলিম হিসেবে আমাদের কি হবে তা উপস্থাপন করা।

নাস্তিক্যবাদ ধর্ম

নাস্তিকদের প্রধান ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বাসই হচ্ছে স্রষ্টার অস্তিত্ব নেই। এখন যেহেতু স্রষ্টা নেই সেহেতু স্বর্গ-নরক, জান্নাত-জাহান্নামেরও কোন কনসেপ্ট নেই। এই ক্ষেত্রে যদি মৃত্যুর পর দেখি নাস্তিক্যবাদ সত্য তাহলেও আমাদের কিছু যায় আসে না, অবশ্যই দেখারও সুযোগ থাকবে না তখন। কারণ তখন আস্তিক থাকলেও যেমন মৃত্যুর পরে আমরা মাটির সাথে মিশে যাব তেমনই নাস্তিক থাকলেও মৃত্যুর পর মাটির সাথেই মিশে যাব। এই ক্ষেত্রে আমি আস্তিক হই বা নাস্তিক হই, যেটাই থাকি না কেন মৃত্যুর পর আমার কোন প্রকার ফায়দা যেমন নেই তেমনই আমাকে কোন প্রকার, ক্ষতি, শাস্তি বা বিপদেও পড়তে হবে না।

নাস্তিক্যবাদী বহু ধর্ম আছে যেমন, নাস্তিকতা, বৌদ্ধ ধর্ম, জৈন ধর্ম, প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানের পূজা করা ধর্ম, সেটানিক ধর্ম, থেরবাদ, বজ্রজান, আত্মাবাদ ইত্যাদি। এগুলো কিছু হয় সরাসরি স্রষ্টাকে অস্বীকার করে অথবা স্রষ্টার কোন কনসেপ্টই এইসব ধর্মের মধ্যে নেই।

বৌদ্ধ ধর্ম

বৌদ্ধ ধর্মে সরাসরি স্পষ্ট ভাবে ঈশ্বরের কথা না থাকলেও স্বর্গ-নরকের কথা ঠিকই রয়েছে।[1]পবিত্র ত্রিপিটকের, অঙ্গুত্তর নিকায় (প্রথম খন্ড), তিক নিপাত, দেবদূত বর্গ, অনুবাদঃ অধ্যাপক সুমঙ্গল বড়ুয়া ; পবিত্র ত্রিপিটকের, মধ্যম নিকায় (তৃতীয় খন্ড), … See Full Note স্রষ্টা যদি নাই থাকে তাহলে স্বর্গ-নরক আসবে কোথা থেকে? আবার গৌতম বুদ্ধ নিজেই নাস্তিকবাদীদেরকে আমগন্ধবাদী বা পঁচাগন্ধ শ্রেণিভুক্ত করেছেন।[2]ত্রিপিটক: সুত্ত পিটক, সুত্ত নিপাত, আমগন্ধং সুত্র ৫ নং শ্লোক, অনুবাদঃ শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির (বনভান্তে) এছাড়া বৌদ্ধ ধর্মে স্রষ্টা সম্পর্কে তেমন আলোচনা না থাকলেও গৌতম বুদ্ধের বহু কথা দ্বারা প্রমাণিত হয় তিনি আস্তিক ছিলেন ও এক স্রষ্টায় বিশ্বাস রাখতেন।[3]ত্রিপিটক, দীর্ঘ নিকায় (দ্বিতীয় খন্ড), মহাপদান সূত্রান্ত (৩)(১)(২), অনুবাদ ভিক্ষু শীলভদ্র ; ত্রিপিটক, সূত্ত পিটকে মধ্যম নিকায় (২য় খন্ড) অনুবাদক পন্ডিত … See Full Note

মুসলিমরাও এক স্রষ্টায় বিশ্বাস করে, ইসলামেও স্বর্গ-নরকের কনসেপ্ট রয়েছে ও সকল প্রকার অন্যায় কাজ হতে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া বৌদ্ধ ধর্মেও কোথাও বলা হয় নি বৌদ্ধ না হলে স্বর্গ পাবে না বা নরকে যাবে, বরং বলা হয়েছে ভবিষ্যতেও বুদ্ধরা আসবেন। এমনকি গৌতম বুদ্ধের মতে তার এক হাজার বছর পর তার ধর্ম বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার কথা (সেহেতু বৌদ্ধ ধর্ম সঠিক হলেও আমাদের কিছু যায় আসে না, কারণ রাসূল (ﷺ) বুদ্ধের প্রায় ১ হাজার বছর পরে এসেছিলেন), হতে পারে বুদ্ধ বুঝিয়েছেন নতুন বুদ্ধের আগমনের মাধ্যমে তার ধর্ম আর গ্রহণযোগ্য থাকবে না বরং সেই বুদ্ধের ধর্ম তখন সঠিক হিসেবে গণ্য হবে। আর বুদ্ধের শিক্ষার সাথেও রাসুলে শিক্ষার বহু মিল রয়েছে। বিস্তারিত জানতে দেখুন।[4]বৌদ্ধধর্মের শেষ বুদ্ধ এবং নবী মুহাম্মদ ﷺ 

বৌদ্ধ ধর্মে যেমন বৌদ্ধ হতেই হবে বলা হয় নি তেমনই স্রষ্টাকে মানতেই হবে বা এক ঈশ্বরকে বা বহু ঈশ্বরকে মানতে হবে এমন কিছুও বলা হয় নি। সেহেতু আমি আস্তিক হই, নাস্তিক হই, হিন্দু হই, খ্রিষ্টান হই যাই হই না কেন বৌদ্ধ ধর্ম সত্য হলেও আমার ইহকাল ও পরকাল কোথাও আমার কিছু হওয়ার কথাই না। বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারে আমাকে শুধু ভালো মানুষ হতে হবে, নীতি-নৈতিকতা ত্যাগ করা যাবে না, কারো অযথা ক্ষতি করা যাবে না, অযথা হত্যা করা যাবে না, নেশা, কিছু বিশেষ প্রাণী খাওয়া যাবে না এই জাতীয় নিয়ম মানতে হবে যা কমবেশি সব ধর্মই শিক্ষা দেয়। এছাড়া গৌতম বুদ্ধ যেখানে নিজে আস্তিক ছিলেন সেহেতু মুসলিমরাতো এই দিক দিয়েও তার অনুসরণ ও আদর্শের আরো কাছাকাছি অবস্থায় রয়েছে। সেহেতু এই ক্ষেত্রেও মুসলিমরা সবচেয়ে নিরাপদ অবস্থানে রয়েছে।

বৌদ্ধ ধর্মও নাস্তিক্যবাদ ধর্মগুলোর একটিই, কিন্তু তারপরও এইটা নিয়ে আলাদা কেন আলোচনা করলাম তা আলোচনা হতে হয়তো বুঝে গিয়েছেন।

একেশ্বরবাদী ধর্ম

খ্রিষ্টধর্ম

যদি দেখি মৃত্যুর পর খ্রিষ্টধর্ম সত্য তাহলেও আমরা অনেক ভাবে বা অনেক কারণে নিরাপদ থাকব। যেমন সাধারণভাবে আমরা এতটুকু নিশ্চিত হতে পেরেছি যে যিশু ও তার উপর নাজিল হওয়া কিতাব এসেছিল শুধু বনি ইসরাইলের জন্য, সমগ্র বিশ্বের জন্য নয়। বিস্তারিত দেখুন[5]কে সর্বজনীন? ; কোনটি মানবজাতির জন্য উন্মুক্ত? ; সমগ্র মানবজাতির জন্য প্রেরিত হয়েছেন কে?

যেহেতু যিশু ও তার উপর আসা কিতাব সমগ্র জাতির জন্য না সেহেতু আমাদের কোন চিন্তা নেই খ্রিষ্টধর্ম সত্য হলেও কারণ সেটা সত্য হলে বনি ইসরাইলিদেরকেই জবাবদিহিতা করতে হবে, আমাদেরকে না।

আবার যদি যীশুকে সমগ্র বিশ্বের জন্য ধরি তাহলেও আরেক ভাবে আমরা রেহাই পাই, নিউ টেস্টামেন্টে বেশ কয়েক জায়গায় বলা হয়েছে যিশু আমাদের পাপের জন্য মৃত্যুবরণ করেছেন, আমাদের পাপ বহন করে, নিজের কাঁধে আমাদের পাপের বোঝা নিয়ে মৃত্যু বরন করেছেন, এইভাবে আমরা রেহাই পাব, পরিত্রাণ পাব, তার রক্তের বিনিময়ে আমরা পাপী হয়েও ধার্মিক হয়েছি।[6]রোমীয় ৫:৬-১০, ১৯-২১, ৮:১; ১ পিতর ২:২৪-২৫; ১ করিন্থীয় ১৫:৩, ২ করিন্থীয় ৫:২১, যোহন ৩:১৬; ইফিষীয় ১:৭, প্রেরিত ৪:১২

অবশ্যই এর অনেক বৈপরীত্যও রয়েছে বাইবেলে। বাইবেলে বিকৃতি ও বৈপরীত্যের অভাব নেই অবশ্যই, তার মধ্যে এটাও একটা। কিন্তু তারপরও অনেক খ্রিষ্টান যেহেতু এইটাতে বিশ্বাস করে সেহেতু আমরাও এটাকে একটি সম্ভবনা হিসাবে নিলাম।

অবশ্যই এই ক্ষেত্রে অনেকে এটা বলতে পারে যে এইটাতো খ্রিষ্টানদের জন্য শুধু। কিন্তু আসলেই কি তাই? আসলে না, বিষয়টা তেমন না। বাইবেলে কোথাও যিশু বা ঈশ্বর বলেনি যীশুকে প্রভু বা এক ঈশ্বরের অরিজিনাল বা বায়োলজিক্যাল আপন পুত্র মানতেই হবে, কারণ বাইবেলে আরো অনেককেই ঈশ্বরের পুত্র বলা হয়েছে, এবং বলা হয়েছে যাদের কাছে ঈশ্বরের বাণী এসেছিল তাদেরকেও ঈশ্বর বলে সম্বোধন করা হয়েছে শাস্ত্রে।[7]খ্রিস্টানদের যুক্তি অনুসারে তাদের ঈশ্বরের অভাব নেই! আরো মজার বিষয় হচ্ছে যিশু খ্রিষ্টান হতে বলেন নি কাউকে, কারণ যিশু, এক ঈশ্বর যাকে খ্রিষ্টানরা যীশুর পিতা বলে, বা পবিত্র আত্মা, বা যিশুর সাহাবিগণের কেউ এই ধর্মের নাম খ্রিষ্টান ধর্ম রাখেনি, নাহি তারা প্রথম নিজেকে খ্রিষ্টান বলে দাবি করেছিল। তাই নাজাত পেতে হলে খ্রিষ্টান হতে হবে এই কথাটাই ভুল, কারণ বাইবেলে কোথাও বলা হয়নি খ্রিষ্টান না হলে নাজাত পাবে না বা স্বর্গে যেতে পারবে না।

বাইবেলের নতুন নিয়মের অনেক জায়গায় বলা হয়েছে যে বিশ্বাস করতে হবে, স্বীকার করতে হবে যে ঈশ্বর শুধু একজন, তার সাথে কারো তুলনা হয় না, তার কোন প্রতিমূর্তি নেই। যিশু মানুষ ও বার্তাবাহক, অন্যন্যা নবিদের মত যিশুকেও নবি হিসেবে সত্য দিয়ে পাঠানো হয়েছে, ঈশ্বরই সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে, সব কিছুর শুরু তিনিই করেছেন, সবকিছুর শেষ তিনিই করবেন, সব কিছুর স্রষ্টা তিনি, যীশুও তার উপাসনা করত, যিশু তার নাম নিয়েই সব অলৌকিক কাজ করতো, যিশু থেকেও তিনি মহান, যিশু ও পবিত্র আত্মা সেই ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে কাজ করত, একমাত্র তিনিই আদি ও অন্ত অর্থাৎ তিনি সব সময় ছিলেন ও সবসময় থাকবেন, একমাত্র তিনিই এবাদতের যোগ্য, একমাত্র তিনিই সব কিছু সম্পর্কে জানেন ইত্যাদি ইত্যাদি।[8]প্রকাশিত বাক্য ১:১, ৮, ৪:৮-১১, ১৫:৩; লুক ৪:৮, ৬:১২, ১০:২৫-২৮, ১১:২০, ১৮:১৯, ২২:৪২, ২৪:১৯, ৩৯-৪২; যোহন ১:৩, ৪, ৩:১৬-১৭, ৪:১৯, ৫:৩০-৩৭, ৬:২৭, ১৪-১৮, ৭:১৬-১৭, ৯:১৭, ২৫, ১০:২৫, ২৯, ৩২, ৩৬, … See Full Note ঠিক একই বিষয় বিশ্বাস করতে বলে ইসলাম, ইসলাম সব নবীর উপর ইমান আনাকে বাধ্যতামূলক করেছে, কিন্তু আমরা এটাও বিশ্বাস করি যে যীশুর বা পূর্বের নবিদের উপর আসা কিতাব পরবর্তীতে বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। যা আসলেই সত্য, এই নিয়ে বহু বই, দলিল, প্রমাণ, ইতিহাস রয়েছে আপনারা খুঁজলে পেয়ে যাবেন। যেহেতু বাইবেলে যা বিশ্বাস করতে বলা হয়েছে তা মুসলিমরা বিশ্বাস করে, সেহেতু আর ভয়েরওতো কোন কারণই নেই! এই ক্ষেত্রেও আমরা মুসলিমরা নাজাত পাওয়ার ক্রাইটেরিয়া পুরন করছি।

ইহুদি ধর্ম

স্রষ্টার উপর বিশ্বাসের দিক দিয়ে যদি ইসলামকে টক্কর দেওয়ার মত কোন ধর্ম থাকে তাহলে বর্তমানে হয়তো ইহুদি ধর্মই একমাত্র ধর্ম যেটা ইসলামে স্রষ্টার বিশ্বাসের সাথে পাল্লা দিয়ে চলার ক্ষমতা রাখে। চলুন এই ধর্ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।

ইহুদি ধর্মেও ঠিক একই রকম বলা হয়েছে স্রষ্টা শুধু একজন, তার কোন শরিক নেই, তিনি এক ও অদ্বিতীয়, তিনিই আদি ও অন্ত।[9]দ্বিতীয় বিবরন ৪/৩৫-৩৯, ৬/৪-৫, ১৩/৪, ১৮/১৫, ৩২/৩৯; যিশাইয় ৬/৩, ৪০/১৮, ২৫, ২৮, ৪৩/১, ৩, ১০-১১, ৪৪/৬-৭ ও ২৪, ৪৫/৫-৬, ১২, ১৮, ২১-২৩, ৪৬/৯-১০, ৬৪/৪; হোসেয়া ১১/৯, ১৩/৪; গীতসংহিতা ৩৩/১১, … See Full Note বড় জোর হলে শুধু পূর্বে আসা নবীগণের উপর ইমান আনতে বলা হয়েছে। আর এই বিষয়গুলো মুসলিমরাও বিশ্বাস করে, মানে ও প্রচার করে, সেহেতু এই ক্ষেত্রেও মুসলিমদের কোন সমস্যার মুখোমুখিই হতে হচ্ছে না।

এই ক্ষেত্রেও আগের মত একটি কথা প্রযোজ্য তা হল বাইবেলে কোথাও বলা হয়নি ইহুদি না হলে নাজাত পাবে না বা জান্নাতে যেতে পারবে না। এমনকি ইহুদি ধর্মেতো যারা ইহুদি না তাদেরকে ইহুদি ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে কোনো উৎসাহই প্রধান করে না।

ইহুদি ধর্মের জন্মের ইতিহাস পড়লেই আমরা বুঝতে পারি ইহুদিরা হল মূলত ইয়াকুব (আ) এর বংশধর। ইয়াকুবের ১২ সন্তান হতে ইহুদিদের ১২টি গোত্র বা গোষ্ঠীর সৃষ্টি হয়। এই ১২ গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত মানুষদেরকেই মূলত বনি ইসরাইল বা ইহুদি বলা হত। সেহেতু বর্তমানে কেউ ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করলেও সে মূলত সেই বংশীয় পরম্পরায় হওয়া প্রকৃত রূপের ইহুদি বলে বিবেচিত হওয়ার কথা না।

যাইহোক, অনেকের মাঝে একটা ভুল ধারণা রয়েছে তা হল ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করা যায় না, এটি একটি ভুল ধারণা, কারণ ইহুদি ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার পথ রয়েছে, যদিও তা বেশ কঠিন (তা শাস্ত্রীয় কিনা তা নিয়েও রয়েছে যথেষ্ট সন্দেহ), এবং এর জন্য বহু শর্ত পূরণ করতে হয়। যার কারণে সাধারণ মানুষের যে কেউ চাইলেই ইহুদি হতে পারে না, এই কারণেই হয়তো ইহুদি ধর্মগ্রহণ করা যায় না বলে ধারণাটির সৃষ্টি হয়েছে। ইহুদি ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার নিয়ম নিয়ে ইহুদিদের বিভিন্ন গোত্রেও বিভিন্ন নিয়ম কানুন রয়েছে কিন্তু তাদের মধ্যে বেসিক কিছু হচ্ছে[10]Converting to Judaism ; Issues in Jewish Ethics: Conversion to Judaism ; Conversion to Judaism

  • রাব্বির (ইহুদি স্কলার) সাথে আলাপ করা
  • ইহুদি ধর্ম, ইতিহাস, রিচুয়ালগুলো সম্পর্কে স্টাডি করা ও তারপর নিশ্চিত হওয়া ইহুদি ধর্ম গ্রহণের বিষয়ে।
  • ছেলেদের ক্ষেত্রে খতনা করা
  • ইহুদি সম্প্রদায়ের জীবনের সাথে জড়িত হওয়া
  • অন্তর থেকে স্রষ্টা ও তাওরাতে বিশ্বাস ও এর সমস্ত আদেশ পালনের সম্মত হওয়া
  • মিকবাহ বা রিচুয়াল বাথ সম্পন্ন করা
  • বেথ দিন বা ইহুদি স্কলারদের আদালতে সব কিছু জানিয়ে ইহুদি হওয়ার অনুমতি নেওয়া (এরা আবার বিভিন্ন শর্ত দিতে পারে, এটা তাদের সেই স্কলারদের উপর নির্ভর করে)
  • কিছু হিব্রু জানা ও হিব্রু নাম রাখা

আমি আগেই বলেছিলাম, ইহুদি ধর্ম এই ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে কোনো উৎসাহ প্রধান করে না, কেন বলেছিলাম আশা করি বুঝেছেন। যাইহোক গোত্র ও স্কলার ভেদে এই প্রথাগুলোর কম বেশি হতে পারে, যেমন বয়স ১৩ এর আগে ইহুদি না হওয়া, ইহুদি মায়ের গর্ভে সন্তান হলে সে ইহুদি হিসেবে গণ্য হবে, পরিবার থেকে অনুমতি নেওয়া, শুধু বিয়ে করার জন্য ইহুদি হওয়া সম্ভব নয় ইত্যাদি। ইহুদি হওয়ার সমস্ত কাজ শেষ করতে করতে অন্তত দেড় থেকে দুই বছরের মত সময় লেগে যায়। বহু যায়গায়তো ইহুদি স্কলারও নেই, সেহেতু আর ইহুদি হওয়ার আর কোন পথই খোলা থাকে না। লক্ষণীয় বিষয়টি হল ইহুদি সম্প্রদায় অনুসারে করা একটি ধর্মান্তর অন্য সম্প্রদায়ের দ্বারা স্বীকৃত নাও হতে পারে। ইহুদি আদালত কর্তৃক শত শত ধর্মান্তরকে (জুডাইজমে) বাতিল করারও ইতিহাস পাওয়া যায়।

এই ধর্ম যদি আসলেই একমাত্র নাজাত পাওয়ার পথ হত তাহলে এটা গ্রহণ করতে এত কঠিন নিয়ম কানুন থাকতো না, এটা একটা কমন সেন্স এর বিষয়। কারণ এত কঠিন নিয়ম কানুনের কারণে সাধারণ মানুষ ইহুদি হতে পারে না, আগ্রহই পায় না তাই সাধারণ মানুষ ইহুদি না হলে সেটাতো তাদের দোষ না বরং সেটা এই ধর্মের বানানো নিয়ম কানুনের দোষ।

কিন্তু একটা বিষয় জেনে রাখা উচিত যে ইহুদি ধর্মে ধর্মান্তর আসলেই বাইবেল বা তাওরাত সমর্থিত কিনা সেটা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ট সন্দেহ। তাওরাত ইসরাঈলীদেরকে ধর্ম বলে না, আজকে ধর্মের জন্য ব্যবহৃত হিব্রু শব্দ, dat এর অর্থ বাইবেলে “আইন”, ‘ধর্ম’ নয়। হিব্রু বাইবেলে ধর্মান্তরিত হওয়ার কোনো উল্লেখ নেই। একজনকে ধর্মান্তরিত করার জন্য আজ বাইবেলে ব্যবহৃত শব্দ, ger , মানে “অপরিচিত”। যা দ্বারা মূলত অ-ইস্রায়েলীয়দের বোঝায়, কিন্তু পরবর্তীতে রাব্বিরা ger ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে “ধর্মান্তরিত” অর্থে। এছাড়া আরো দলিল প্রমাণসহ বিস্তারিত জানতে দেখুন[11]The Truth About Conversions: It is Not Biblical ; Conversion to Judaism

ধরে নি এই ধর্মে কনভার্শনের কোন সিস্টেম নেই সেহেতু আর কোন কথাই থাকছে না। এছাড়া এই ধর্মে কোথাও বলা হয়নি ইহুদি ধর্মই একমাত্র নাজাত পাওয়ার পথ ও ইহুদি না হলে সবাই নরকে যাবে, এর উপর তারা ইহুদি হতেও বলে না, এই ধর্ম অন্যদের মত শুধু এক ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে বলে। সেহেতু এই ধর্ম সঠিক হলেও স্রষ্টা অন্য ধর্মের যারা ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করেনি তাদেরকে শাস্তি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না, যদি এক ইশ্বরকে না মানার কারণে শাস্তি দেয় তাহলে তা যৌক্তিক হলেও হতে পারে, এই ক্ষেত্রেও মুসলিমদের কোন সমস্যাই নেই।

আবার ইহুদি ধর্মেও পরিষ্কার করে বলে দেওয়া হয়েছে এক বিধান সবসময় নাও থাকতে পারে। তাই সবসময় ইহুদি হয়ে থাকতেই হবে বা ইহুদি ধর্মই মানতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই, বরং নতুন নিয়ম যেটা আসবে সেটাকে মানা বাধ্যতামূলক। যেমন ওল্ড টেস্টামেন্টে বলা হয়েছে পরবর্তীতে আরো ভাববাদিগণ (নবী) আসবেন এবং তারা যা বলবে তা মানতেই হবে, গ্রহণ করতেই হবে। সেহেতু এই ধর্ম সঠিক হলেও কিছু যায় আসে না, কারণ পরবর্তীতে যে নবী আসবে তাদেরকে মান্যকরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।[12]একজন ইহুদি পণ্ডিতের সাথে কথোপকথন ; পবিত্র বাইবেল ও মুহাম্মাদ (ﷺ)

শিখ ধর্ম

একেশ্বরবাদ ধর্মের মাঝে আরেকটি হল এই শিখ ধর্ম। বলা হয়ে থাকে বিশ্বে ৫ম বৃহত্তম জনসংখ্যার ধর্ম এটি। মূলত গুরু নানক এই ধর্মের প্রবর্তক। এই ধর্মের ঈশ্বরের কনসেপ্টতো অনেকটা এক ঈশ্বরবাদ ধর্মের সাথে মিলে কিন্তু সম্পূর্ণ না। তারা বিশ্বাস করে স্রষ্টা এমন নন যে তিনি কাউকে দীর্ঘ সময় যাবৎ জাহান্নামের আগুনে জ্বালাতে পারেন। তাদের ধর্মে মৃত্যুর পর স্থায়ী ফিজিক্যাল স্বর্গ ও নরকের কোন কনসেপ্ট নেই। তাদের কাছে স্বর্গ হল যেখানে প্রভুর নাম জপা হয়, মৃত্যুর পর আত্মা প্রভুর কাছেই ফিরে যাবে।[13]The Concept of Heaven and Hell in Gurbani ; Do Sikhs believe in heaven and hell? অবশ্যই মৃত্যুর পরে স্বর্গ ও নরকের অস্তিত্ব না থাকলেও এই ধর্মে অনেকের মতে পুনর্জন্মের কনসেপ্ট রয়েছে, কারমার কনসেপ্ট রয়েছে। তাদের কাছে দুনিয়াতেই স্বর্গ ও দুনিয়াতেই নরক। যারা পাপ করে তারা পুনরায় জন্ম নিয়ে দুনিয়াতেই সব কিছু ভোগ করে নেয়, যে যা করবে তার ফল দুনিয়াতেই ভোগ করবে।[14]Hell Is Real? ; Is there a hell or heaven?

শিখ ধর্ম অনেকটাই লিবারেল টাইপের ধর্ম। তারা দুনিয়ায় স্রষ্টাকে ভালোবাসা ও সকল ভালো কাজকে প্রাধান্য দেয়, মানবসেবা জাতীয় বিষয়াদি তাদের কাছে প্রায়োরিটি পায় বেশি। তারা প্রতিটা ধর্মের সাথে মিলেমিশে থাকাকে প্রেফার করে। তাদের ধর্মে এমন কোন শিক্ষা নেই যে শিখ ধর্ম গ্রহণ না করলে মৃত্যুর পরবর্তী জীবনে কোন শাস্তি পেতে হবে। শিখ ধর্ম এই শিক্ষা দেয় না যে, যারা শিখ ধর্ম গ্রহণ করবে না তারা পরকালে শাস্তি পাবে। পরিবর্তে, শিখ ধর্ম ধার্মিক কর্ম, ধ্যান এবং অন্যের সেবার মাধ্যমে একটি পুণ্যময় জীবনযাপন এবং ঐশ্বরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার গুরুত্বের উপর জোর দেয়। শিখরা ন্যায়বিচার ও কর্মের সার্বজনীন নীতিতে বিশ্বাস করে, যেখানে ব্যক্তিরা তাদের কর্মের জন্য দায়ী এবং সেই অনুযায়ী পরিণতির মুখোমুখি হবে দুনিয়াতেই।

সুতরাং এত আলাপ আলোচনার পর আমরা খুব সহজেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারি যে শিখ ধর্ম সঠিক হলেও মুসলিমদের কোন সমস্যাই নেই, স্বর্গ-নরক যেহেতু নেই সেহেতু আর কি শাস্তি! এছাড়া পাপ করলে শাস্তি পেতে হলেও তা আবার জন্মের মাধ্যমেই পেয়ে যাবে। দীর্ঘ স্থায়ী কোন শাস্তিরতো কনসেপ্টই নেই। মুসলিম হওয়াও এই ধর্মের দৃষ্টিতে কোন সমস্যার না, বরং ইসলাম একেশ্বরবাদী হওয়ায়তো মুসলিমরা আরো কাছাকাছি অবস্থায় রয়েছে এই ধর্মের বিশ্বাসের।

মুশরিকদের ধর্ম

হিন্দু ধর্ম

হিন্দু বা সনাতন ধর্মকে সঠিক বলার মত, মনে করার মত, ধরে নেওয়ার মত, যুক্তির খাতিরেও ধরার মতও আসলেই কোন কারণ, লজিক, দর্শন পাওয়া সম্ভব বলে আমার মনে হয় না। এই ধর্মটা আসলেই এমন এক ধর্ম যার প্রতি এঙ্গেলে এঙ্গেলে ফালতু, উদ্ভট, কান্ডজ্ঞানহীন, লজিক বিরোধী, কমনসেন্স বিরোধী, চরম অশ্লীল ও বেহায়াপনা দিয়ে ভরপুর। তারপরও অমুসলিমসের দৃষ্টিকোণ থেকে যেহেতু লিখা হচ্ছে সেহেতু এটার বিষয়েও বলতে হচ্ছে।

শাস্ত্র অনুসারে বহু হিন্দু স্কলার মত দিয়েছেন এবং বেশিরভাগ হিন্দুর বিশ্বাস হচ্ছে সৃষ্টিজগৎ কখনো ধ্বংস হবে না। এর বার বার পুনসৃষ্টি হবে।

স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতীর ত্রৈতবাদ, রামানুজাচার্য বিশিষ্ট দ্বৈতবাদ ও মাধবাচার্যের দ্বৈতবাদ অনুযায়ী কোনো কিছুই ধ্বংস হবে না। কারণ সৃষ্টির কোনো কিছু ধ্বংস হওয়া মানে ঈশ্বর ধ্বংস হওয়া কারণ সর্বং খলিদং ব্রহ্ম অর্থ ‘সব কিছুই ঈশ্বর’[15]ছান্দোগ্য উপনিষদ ৩.১৪.১। তাই ঈশ্বর কখনোই ধ্বংস হতে পারে না। আর্য সমাজের ত্রৈতবাদ হলো আত্মা, জীব ও প্রকৃতি মিলে এক ঈশ্বর। তাই পৃথিবী ধ্বংস হতে পারে না। আর উপনিষদে সরাসরি বলা হয়েছে ”ব্রহ্ম বৈ পৃথিবী ” অর্থ পৃথিবীই স্বয়ং ঈশ্বর। এখন পৃথিবী ধ্বংস হওয়া মানে ঈশ্বর ধ্বংস হওয়া। এছাড়া বেদে ও গিতায় রয়েছে পরমাত্মা এই জগৎ বার বার রচনা বা সৃষ্টি করেন।[16]যজুর্বেদ ৩১/৪; গীতা ৯/১০; গীতা ২/২২

অসংখ্য প্রমাণ অনুসারে দেখা যায় বৈদিক মত অনুসারে পুনর্জন্ম রয়েছে। পৌরানিকদের মত অনুসারে কিছু সময় স্বর্গ নরকে কাটানোর পর আবার পুনর্জন্ম হবে।[17]যজুর্বেদ ৩১/৪; গীতা ৯/১০, ২/২২, ৮/১৫-১৬; ঋকবেদে ১/২৪/২, ১০/৫৯/৬, ১০/১৬/৩-৫ মনুস্মৃতিতে বলা হয়েছে কোন পাপের জন্য পরবর্তী জন্মে কি রূপে তার পুনর্জন্ম হবে।[18]মনুস্মৃতি ১২:৫৪-৫৫, ৬২-৬৩; পুনর্জন্মের মাধ্যমে পৌত্তলিকতা ধ্বংস! ; পুনর্জন্ম এর সত্যতা – ব্যবচ্ছেদ ; পুনর্জন্ম নিয়ে আর্যদের আক্বীদা (বিশ্বাস) এবং … See Full Note এমনকি আমার সনাতনি ভাইরাতো এর পক্ষে বহু গোজামিল ব্যাখ্যা, দর্শন, বিজ্ঞানও হাজির করে থাকেন। সনাতনিদের মাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয় মত হল বার বার পুনর্জন্ম হবে।[19]BBC ; Rebirth in Hinduism ; Quora ; Quora ; Ved Vaani ; Karma and Reincarnation

অবশ্যই অহিন্দুদেকে গোমরা, জাহিল আরো অনেক কিছু হিন্দু ধর্মে বলা হয়েছে, অহিন্দুদেরকে হত্যা করার কথাও বলা হয়েছে। এগুলো সবই সত্য, কিন্তু অহিন্দুদের যে পুনর্জন্ম হবে না, তারা যে চিরস্থায়ী নরকবাসী হবে এই জাতীয় কোন কথা হিন্দু ধর্মে আছে বলে ফ্রম মুসলিমস এর হিন্দু ধর্ম নিয়ে লেখেন সেই লেখক ভাইরা খুঁজে পান নি। আমি যেহেতু সনাতন ধর্ম সম্পর্কে তেমন জ্ঞান রাখি না সেহেতু তাদের সহায়তায় এই অংশটি লিখছি ও তাদের উপরই নির্ভর করছি। যাইহোক যেহেতু এই জাতীয় কিছু সনাতন ধর্মে বলা নেই বা আমরা পাই নি সেহেতু ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এটাই ধরে নিচ্ছি যে অহিন্দুদেরও পুনর্জন্ম রয়েছে, যার ধরুন একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শাস্তি পেতে হলেও পরবর্তীতে পাপ শুদ্ধির মাধ্যমে অ-হিন্দু হয় মাটির সাথে মিশে যাবে বা পুনর্জন্ম হবে বা স্বর্গে যাওয়া হবে বা যা হওয়ার তা হবে।

কয়েকটি রেফারেন্স উল্লেখ করছি আরো বিশ্বাসযোগ্য হওয়ার জন্য –

যে ব্রাহ্মণকে হত্যাকরে সে কুকুর, শূকর, গাধা, উট, গরু, ছাগল, ভেড়া, হরিণ বা পাখী বা চণ্ডাল বা পুক্কাসের গর্ভে প্রবেশ করে।[20]মনুসংহিতা ১২:৫৫

“যারা পরমাত্মাকে লাভ করতে পারে তাদের পুনর্জন্ম হয় না।”[21]গীতা ৮/১৫

অর্থাৎ পাপীদের পুনর্জন্ম হয়, আর সকল অ-হিন্দুই স্বাভাবিক ভাবে পাপী হওয়ার কথা।

সনাতন ধর্মানুসারে আমরা দুনিয়াতেই নিজের শাস্তি পেয়ে যাচ্ছি। হালকা হোক, পাতলা হোক যেই পরিমান শাস্তিই দেওয়া হোক না কেন অন্তত কাল জাহান্নামে তো জ্বালানো হবে না। অনন্ত কালের দিক দিয়ে বিচার করলে পুনরায় খারাপ অবস্থায় জন্ম হওয়ার পর শুদ্ধী লাভ করে যা হওয়ার তা হবে, তবে অনন্ত কাল জাহান্নাম থাকতেতো হচ্ছে না।

এছাড়া কিট-পতঙ্গ, গরু, ছাগল, হনুমান, শূকর, সাপ ইত্যাদি হওয়ার পরে যে মানুষ থাকা অবস্থার সেনসেইশন থাকবে তার কি প্রমান আছে? সেই প্রকৃতি থেকে আসলাম আবার তার মধ্যেই মিশে গেলাম। যদি মানুষ থাকা অবস্থার সেন্সেশন থাকে তাহলেইতো শাস্তির মত বিষয়টা হবে, তাই নয় কি?

বিলুপ্ত ধর্ম, শাখা-উপশাখা ও প্রকৃতি পূজারী

দুনিয়ায় বহু উপজাতীর ও আঞ্চলিক কিছু ধর্ম রয়েছে যেগুলোতে মূলত প্রকৃতির বিভিন্ন উপাদানের পূজা করা হয়। যেমন চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র, বৃষ্টি ইত্যাদি, অর্থাৎ প্রকৃতির পূজারি। যা নিজেই ধ্বংসযোগ্য তার পূজা করেই কি লাভ, এসব সুস্পষ্ট কমনসেন্স ও ফিতরাত বিরোধী। আবার এসব ধর্মে বেশিরভাগ দেখা যায় নির্দিষ্ট কোন ঐশ্বরীক গ্রন্থ থাকে না, এবং স্বর্গ নরকও দুনিয়ায়ই বিবেচনা করা হয়, আবার বহু জাতি পূণর্জন্ম কনসেপ্টেও বিশ্বাসী। শিন্তো, কাও দাই, ফালুন গং, টেনরিকিও এমন অসংখ্যা তথাকথিত ধর্ম রয়েছে যেখানে পূণর্জন্ম বা দুনিয়ায় স্বর্গ ও নরকের বিধানের কথা বলা হয়েছে।

এছাড়া বহু বিলুপ্ত ধর্মকেও চার হাজারের তালিকায় রেখে এই সংখ্যাটা দাড় করানো হয়েছে, যেমন – প্রাচীন মিশরীয় ধর্ম, সুমেরীয় ধর্ম, ব্যবিলনীয় ধর্ম, প্রাচীন গ্রিক ধর্ম, রোমান ধর্ম, মায়া ধর্ম, ইনকা ধর্ম, আজটেক ধর্ম ইত্যাদি। উইকিপিডিয়ার আরেকটি লিখায় অসংখ্য বিলুপ্ত ধর্মের নাম রয়েছে, সেখানে খুঁজলেই দেখবেন কত সাল হতে কত সাল পর্যন্ত কোন ধর্ম কোথায় ছিল, কখন বিলুপ্ত হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলো সত্য হলেও কিছু যায় আসে না কারন এগুলো গ্রহণ করার মত অবস্থা নেই, আর এগুলো যদি সত্য আসলেই হত তাহলেতো বিলুপ্ত হওয়ার কথাই আসতো না, কারণ ঈশ্বরের ধর্ম বিলুপ্ত হবে এটাতো কল্পনাই করা যায় না। আবার বিভিন্ন ধর্মের শাখা-উপশাখাকেও ধর্ম হিসেবে কনসিডার করা হয়েছে। যেমন ইসলামের শিয়া-সুন্নি, খ্রিষ্টানতের ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্ট, হিন্দু ধর্মের বহু শাখা উপশাখা, বৌদ্ধ ধর্মের বহু নতুন ভার্সন ইত্যাদি ইত্যাদি।[22]List of religions and spiritual traditions

প্রথা, মতবাদ ও ধর্ম

বলা হয়ে থাকে পৃথিবীতে সাড়ে চার হাজারের বেশি ধর্ম রয়েছে, এতগুলোর মধ্যে কোনটা সঠিক? ইসলাম ছাড়া অন্য একটা সঠিক হলে তখন কি হবে? এই যুক্তিটা আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে বেশ হাস্যকর মনে হয়, এর বেশ ভালো কারণ রয়েছে, একটু বিস্তারিত বলি তাহলে হয়তো বুঝতে পারবেন বিষয়টা।

২০১৫ সালে Pew Research এর রিপোর্ট অনুসারে ইসলাম হচ্ছে সবচেয়ে দ্রুত গ্রো করা ধর্ম। এই ধর্মের মানুষ যে হাড়ে বাড়ছে তা যদি একই ভাবে বজায় থাকে তাহলে ভবিষ্যতে একটা সময় আসবে যখন মুসলিমদের জনসংখ্যা অন্য সব ধর্মের মানুষদের থেকে বেশি হবে। ২০১০ এবং ১৫ এর রিপোর্ট অনুসারে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার বেশির ভাগ হল খ্রিষ্টান, মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ এবং এর মধ্যে শুধু ১% বা তারও কম জনসংখ্যার মানুষ নির্দিষ্ট করে অন্য কোন অ্যাক্চুয়াল ধর্মের অনুসারী। ১৬% এর মত মানুষ হল অ্যথিস্ট, ডেইস্ট, এগনস্টিক বা এমন কিছু মানুষ যার ধর্ম-স্রষ্টা কোনটা নিয়েই মাথা ব্যথা নেই। প্রায় ৬% এর মত জনসংখ্যা বিভিন্ন লোকপ্রথার।[23]The Future of World Religions: Population Growth Projections, 2010-2050 ; The Changing Global Religious Landscape ; The Global Religious Landscape ; Religion and the Unaffiliated

বাস্তবে এতগুলো ধর্ম আছে দাবি করার পিছনের কারণটি হচ্ছে তারা যেসব বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ধর্মের তালিকা বানায় তার সাথে সকলে একমত না, মুসলিমরাতো নাই। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, মোট ধর্মের সংখ্যা ১০,০০০ এর কাছাকাছি।[24]Religion Reference.com এ দুটি সূত্রে দুই রকম উপাত্ত ছিল, একটি লিংকে পৃথিবীতে মোট ধর্মের সংখ্যা ৪২০০ এবং অপর লিংকের উপাত্ত অনুসারে তা ৪৩০০ দেওয়া হয়েছিল যদিও তা পরবর্তীতে পুনরায় মূদ্রন করে এক রকম করে দিয়েছে।[25]How Many Religions Are There in the World? এখানে তারা নিজেরাই নিজেরা কনফিউশনে ভুগছে, আমাদেরকে আর কি সঠিক তথ্য দিবে!

এই সোকল্ড সাড়ে চার হাজার ধর্মের মাঝে অসংখ্য ধর্ম হল বিভিন্ন লোকপ্রথা বা লোকধর্ম বা প্রথাগত ধর্ম বা ঐতিহ্যগত ধর্ম, আদিবাসীদের আবার বহু ছিন্ন বিচ্ছিন্ন ধর্ম রয়েছে যা অনেকটাই লোকধর্ম ও প্রকৃতি পূজারি ধর্মগুলোর মতোই। এসব আসলে প্রকৃত অর্থে ধর্ম নয়, এগুলোকে নিছক কিছু প্রথা, কিছু অনুষ্ঠান, সামাজিক কালচার বলা যেতে পারে। এখানে আসলে প্রকৃত স্রষ্টার কেন্দ্রিক কোন কিছু করা হয় না, বরং এখানে মূলত বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তি, বা রূপ কথা, বা প্রাচীন কোন কাহিনি বা বিভিন্ন মাইথলজির দেব-দেবী কেন্দ্রিক বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠান হয়ে থাকে, এসব ধর্মে নাহি নির্দিষ্ট করে প্রকৃত স্রষ্টার কোন কথা রয়েছে, নাহি কোন ধর্মগ্রন্থ, নাকি জান্নাত-জাহান্নাম, নাহি নির্দিষ্ট আইন, বিধিবিধান, নিয়ম কানুন। এসব নিছক কালচার হিসেবেই অনেকে পালন করে। কিন্তু বিভিন্ন জন তারপরও এসবকেও ধর্মের লিস্টে ঢুকিয়েছে। এছাড়া বহু মতবাদ রয়েছে যেমন হিউম্যানিজম, কনফুসীনিজম, প্যান্ডেজম, ডেইজম, সাইনক্রেটিজম ইত্যাদি। আবার বহু লিভারেল ধর্মও পাবেন যা ঐক্যের কথা বলে, যাদের মতে সকলেই সঠিক, সকলেই ঈশ্বরের সন্তুষ্টি পেতে পারে। বহু ঐতিহ্যবাহী ধর্ম রয়েছে যেগুলো বংশ বা জাতি পরম্পরায় চলে আসছে যেখানে নতুন কেউ প্রবেশ করতে পারে না। এগুলোকেও ধর্মের তালিকার সাথে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে। মতবাদ, ধর্ম ও সামাজিক বা লোকপ্রথার মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য রয়েছে, কিন্তু সেগুলোকে সম্পূর্ণ ইগনোর করে সবগুলোকে হ-য-ব-র-ল করে তৈরি করা সো-কল্ড সাড়ে ৪ হাজার সংখ্যার একটা কাল্পনিক ধর্মের সংখ্যা দেখিয়ে সেটার ভিত্তিতে কুযুক্তি পেশ করা হয়, যা কোন সেন্সই মেইক করে না।

এগুলো সত্য হলেও কারো কিছুই যায় আসবে না, সেহেতু এসব মতবাদ ও লোকপ্রথা বা ধর্মগুলোকে বাদ দিলে হয়তো ৩ হাজারের বেশি ধর্ম এমনিতেই গায়েব হয়ে যাবে। আর বাকি যে ধর্মগুলো বাকি থাকে তার মধ্যে মেজর ধর্মগুলো ও নাস্তিক্যবাদী ধর্মগুলো বাদ দিলে, অন্যন্যা ধর্মের লোকজনের পরিমাণ হল সেই ১% বা তারও কম। ধর্মের নামে যে উল্টা পাল্টা মতবাদ, প্রথা, বিলুপ্ত ধর্ম, প্রকৃতির পূজারী ইত্যাদিকে যদি বাদ দেওয়া হয় তাহলে হয়তো এর পরিমাণ ০.৫ থেকেও অনেক কমে যাবে। এই ০. সামথিং মানুষদের ধর্ম যে কতটা সঠিক হতে পারে তা নিয়ে বেশ ভালোই সন্দেহ রয়েছে এবং এর কোনটা সম্পর্কে আমরা বিস্তারিত জানিও না, এমনকি আদৌ সাড়ে ৪ হাজার ধর্ম রয়েছে কিনা সেটা নিয়েও রয়েছে যথেষ্ট সন্দেহ। যদি বর্তমানে কতগুলো প্রকৃত অর্থে ধর্ম রয়েছে যেখানে স্রষ্টার কনসেপ্ট রয়েছে, জান্নাত-জাহান্নামের কনসেপ্ট রয়েছে, বিধি-বিধান রয়েছে এমন ধর্ম খুঁজে দেখা হয় তাহলে হয়তো ৩০/৪০টা ধর্ম পাওয়া যাবে কিনা সেটা নিয়েও রয়েছে যথেষ্ট সন্দেহ।

ইসলাম ধর্ম

এতক্ষণ আমরা জানলাম অন্য ধর্ম সঠিক হলে মুসলিমদের কী হবে। আশা করি এইটুকু পরিষ্কার যে মুসলিমরা কোন না কোন ফাঁকফোকর দিয়ে বেড়িয়ে যেতেই পারবে। কিন্তু প্রশ্ন এসেই যায় যদি তারা মৃত্যুর পর দেখে ইসলাম সঠিক তখন তাদের কি হবে? যাদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছায় নি, যাদের কাছে সবসময় ইসলামকে নেগেটিভ চিত্রে দেখানো হয়েছে যার কারণে তারা সঠিকটা জানতে পারে নি, তারাতো ওজর প্রাপ্ত, তাদেরকে আল্লাহ সরাসরি জাহান্নামে পাঠাবেন না, বরং তাদের পরীক্ষা বিচার দিবসে করা হবে।[26]শুধু ইসলাম গ্রহন না করায় অমুসলিমরা জাহান্নামি হবে কেন?

কিন্তু যারা মোটামুটি দাওয়াত পেয়েছে, বা ইসলাম সম্পর্কে কোন না কোন ভাবে মোটামুটি জেনেছে তাদের কি হবে? তারা কি এমনিতেই নাজাত পেয়ে যাবে? এটা কি জান্নাতি মুমিনদের উপর অন্যায় হবে না? হয়তো এই কারণেই ইসলামে এত বেশি উদারতা দেখায়নি, কারণ ইসলাম ইনসাফেরও ধর্ম বটে। আল্লাহ কোরআন সুস্পষ্ট ভাবে বলেছেন,

নিশ্চয় আল্লাহর নিকট একমাত্র দ্বীন হল ইসলাম। [সূরা আলে ইমরান আয়াত ১৯]

তারা কি আল্লাহর দীনের পরিবর্তে অন্য কিছু তালাশ করছে? অথচ আসমানসমূহ ও যমীনে যা আছে তা তাঁরই আনুগত্য করে ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় এবং তাদেরকে তাঁরই নিকট প্রত্যাবর্তন করা হবে। [সূরা আলে ইমরান আয়াত ৮৩]

আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দীন চায় তবে তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। [সূরা আলে ইমরান আয়াত ৮৫]

অর্থাৎ, ওদের বলা হবে, তারা কোথায় যাদের তোমরা উপাসনা করতে; আল্লাহর পরিবর্তে? ওরা কি তোমাদের সাহায্য করতে আসবে? না ওরা আত্মরক্ষা করতে সক্ষম? অতঃপর ওদের এবং পথভ্রষ্টদের অধােমুখী করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে এবং ইবলীসের বাহিনীর সকলকেও। ওরা সেখানে বিতর্কে লিপ্ত হয়ে বলবে, আল্লাহর শপথ! আমরা তো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই ছিলাম, যখন আমরা তোমাদেরকে বিশ্বজগতের প্রতিপালকের সমকক্ষ গণ্য করতাম।’ [সূরা শুআরা আয়াত ৯২-৯৮]

“আর সামূদ সম্প্রদায়, আমি তাদেরকে সঠিক পথের নির্দেশনা দিয়েছিলাম; কিন্তু তারা সঠিক পথে চলার পরিবর্তে অন্ধ পথে চলাই পছন্দ করেছিল” [সূরা ফুস্সিলাত আয়াত ১৭]

তারাই সে লোক, যারা আখেরাতের বিনিময়ে দুনিয়ার জীবন ক্রয় করে; কাজেই তাদের শাস্তি কিছুমাত্র কমানো হবে না এবং তাদেরকে সাহায্যও করা হবে না। [সুরা বাকারা আয়াত ৮৬]

আল্লাহ মুনাফিক পুরুষ, মুনাফিক নারী ও কাফিরদেরকে জাহান্নামের আগুনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তাতে তারা চিরদিন থাকবে, এটি তাদের জন্য যথেষ্ট। আর আল্লাহ তাদের লা‘নত করেন এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী আযাব।[সূরা আত-তওবাহ আয়াত ৬৮]

    Footnotes

    Footnotes
    1পবিত্র ত্রিপিটকের, অঙ্গুত্তর নিকায় (প্রথম খন্ড), তিক নিপাত, দেবদূত বর্গ, অনুবাদঃ অধ্যাপক সুমঙ্গল বড়ুয়া ; পবিত্র ত্রিপিটকের, মধ্যম নিকায় (তৃতীয় খন্ড), শূণ্যতা বর্গ, দেবদূত সূত্র, অনুবাদঃ শ্রী বিনয়েন্দ্রনাথ চৌধুরী ; ত্রিপিটক: মধ্যম নিকায়, তৃতীয় খন্ড, দেবদূত সূত্র, অনুবাদঃ শ্রী বিনয়েন্দ্রনাথ চৌধুরী
    2ত্রিপিটক: সুত্ত পিটক, সুত্ত নিপাত, আমগন্ধং সুত্র ৫ নং শ্লোক, অনুবাদঃ শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির (বনভান্তে)
    3ত্রিপিটক, দীর্ঘ নিকায় (দ্বিতীয় খন্ড), মহাপদান সূত্রান্ত (৩)(১)(২), অনুবাদ ভিক্ষু শীলভদ্র ; ত্রিপিটক, সূত্ত পিটকে মধ্যম নিকায় (২য় খন্ড) অনুবাদক পন্ডিত শ্রীমৎ ধর্ম্মাধার মহাস্থবির, মহাসঙ্গারব সূ্ত্র (৪৮৫ নং, পৃষ্ঠা নং ৩৪১) ; ত্রিপিটক: মিলিন্দ প্রশ্ন, পঞ্চম রর্গ, অনুবাদঃ পন্ডিত শ্রীমৎ ধর্মাধার মহাস্থবির ; গৌতম বুদ্ধ কি নাস্তিক ছিলেন? নাকি হিন্দুরা ট্যাগ দিয়েছিলো? 
    4বৌদ্ধধর্মের শেষ বুদ্ধ এবং নবী মুহাম্মদ ﷺ 
    5কে সর্বজনীন? ; কোনটি মানবজাতির জন্য উন্মুক্ত? ; সমগ্র মানবজাতির জন্য প্রেরিত হয়েছেন কে?
    6রোমীয় ৫:৬-১০, ১৯-২১, ৮:১; ১ পিতর ২:২৪-২৫; ১ করিন্থীয় ১৫:৩, ২ করিন্থীয় ৫:২১, যোহন ৩:১৬; ইফিষীয় ১:৭, প্রেরিত ৪:১২
    7খ্রিস্টানদের যুক্তি অনুসারে তাদের ঈশ্বরের অভাব নেই!
    8প্রকাশিত বাক্য ১:১, ৮, ৪:৮-১১, ১৫:৩; লুক ৪:৮, ৬:১২, ১০:২৫-২৮, ১১:২০, ১৮:১৯, ২২:৪২, ২৪:১৯, ৩৯-৪২; যোহন ১:৩, ৪, ৩:১৬-১৭, ৪:১৯, ৫:৩০-৩৭, ৬:২৭, ১৪-১৮, ৭:১৬-১৭, ৯:১৭, ২৫, ১০:২৫, ২৯, ৩২, ৩৬, ১২:৪৯ ১৪:১৪-১৬, ২৮, ১৭:৩,১১, ২০:১৭-২১; ১ যোহন ৪:১৪, ৫:১৩; এফিশীয় ৪;৬; মথি ৪:১০, ৫:১৭-১৮, ৬:৯, ৭:২১, ১২:২৮, ১৯:১৬-১৮, ২৩:৯-১০, ২৬:৩৯; নেহেমিয়া ৯:৬; তীমথিয় ২:৫; ১ করিন্থীয় ৪:৬ ৮:৪-৬, ১২:৭-১১; রোমীয় ১:৭, ১০:১৩; ১ পিতর ১:২; গালাতীয় ৪:৮-৯, ৩:২০; বিলাপ ৩:৩৭; প্রেরিত ১০/৪৩ ইত্যাদি
    9দ্বিতীয় বিবরন ৪/৩৫-৩৯, ৬/৪-৫, ১৩/৪, ১৮/১৫, ৩২/৩৯; যিশাইয় ৬/৩, ৪০/১৮, ২৫, ২৮, ৪৩/১, ৩, ১০-১১, ৪৪/৬-৭ ও ২৪, ৪৫/৫-৬, ১২, ১৮, ২১-২৩, ৪৬/৯-১০, ৬৪/৪; হোসেয়া ১১/৯, ১৩/৪; গীতসংহিতা ৩৩/১১, ৮৩/১৮, ৮৬/৮ ও ১০, ৯০/২, ১১৩/৪-৫, ১৩৬/১-৩; আদি পুস্তক ১/১৭; গণনা পুস্তক ২৩/১৯; নেহেমিয়া ৯/৬; ডিওটোরনমি ৬/৪; যাত্রাপুস্তক ৮/১০, ২০/৪, ২২; বংশাবলী-১, ১৭/২০; ২ বংশাবলি ২/৫; ২ শ্যামুয়েল ৭/২২; ১ তীমথিয় ২/৫; ১ করিন্থীয় ৪/৬ ৮/৪-৬, ১২/৭-১১; রোমীয় ১/৭, ১০/১৩; ১ পিতর ১/২; গালাতীয় ৪/৮-৯, ৩/২০ ; মালাখি ২/১০, ৩/৬; হিতোপদেশ ১৯/২১; বিলাপ ৩/৩৭; এফিশীয় ৪/৬; যোনাহ ১/৯, ২/৮-৯; মিখা ৪/৫; হবক্কুক ১/১২, ২/১৮, ১৯; ইয়োব ৪/১৭,১৮, ৯/৩২, ১৫/১৪-১৬; জাখারিয়া ১৩/৯, ১৪/৯; ইত্যাদি
    10Converting to Judaism ; Issues in Jewish Ethics: Conversion to Judaism ; Conversion to Judaism
    11The Truth About Conversions: It is Not Biblical ; Conversion to Judaism
    12একজন ইহুদি পণ্ডিতের সাথে কথোপকথন ; পবিত্র বাইবেল ও মুহাম্মাদ (ﷺ)
    13The Concept of Heaven and Hell in Gurbani ; Do Sikhs believe in heaven and hell?
    14Hell Is Real? ; Is there a hell or heaven?
    15ছান্দোগ্য উপনিষদ ৩.১৪.১
    16যজুর্বেদ ৩১/৪; গীতা ৯/১০; গীতা ২/২২
    17যজুর্বেদ ৩১/৪; গীতা ৯/১০, ২/২২, ৮/১৫-১৬; ঋকবেদে ১/২৪/২, ১০/৫৯/৬, ১০/১৬/৩-৫
    18মনুস্মৃতি ১২:৫৪-৫৫, ৬২-৬৩; পুনর্জন্মের মাধ্যমে পৌত্তলিকতা ধ্বংস! ; পুনর্জন্ম এর সত্যতা – ব্যবচ্ছেদ ; পুনর্জন্ম নিয়ে আর্যদের আক্বীদা (বিশ্বাস) এবং বিভ্রান্তি!
    19BBC ; Rebirth in Hinduism ; Quora ; Quora ; Ved Vaani ; Karma and Reincarnation
    20মনুসংহিতা ১২:৫৫
    21গীতা ৮/১৫
    22List of religions and spiritual traditions
    23The Future of World Religions: Population Growth Projections, 2010-2050 ; The Changing Global Religious Landscape ; The Global Religious Landscape ; Religion and the Unaffiliated
    24Religion
    25How Many Religions Are There in the World?
    26শুধু ইসলাম গ্রহন না করায় অমুসলিমরা জাহান্নামি হবে কেন?
    Show More
    0 0 votes
    Article Rating
    Subscribe
    Notify of
    guest
    0 Comments
    Inline Feedbacks
    View all comments
    Back to top button