ইসলামে দাসীর পর্দা এবং কাফেরদের মিথ্যাচার

দাসীর পর্দা ও দাসীর আওরাহ নিয়ে প্রচুর মিথ্যাচার দেখা যায় কাফের মহলে, কয়েক জায়গায় দেখলাম ইসলামে যে স্বাধীন নারী ও নারী দাসীর পর্দা ভিন্ন এটা প্রমাণ করতে অনেকে রীতিমতো বড় বড় রচনা লিখা শুরু করেছে। বিষয়টা বেশ হাস্যকর, কারণ আমরাতো অস্বীকার করি না এটা, বরং স্বীকার করি!
এছাড়া এটা নিয়ে নাস্তিকদেরই বা এত সমস্যা কেন? কারণ মুক্ত চিন্তায়তো সবই জায়েজ, এছাড়া তারা তো এর চাইতে ভালো কোন কিছু প্রচার করেন না, বরং এর চাইতেও জঘন্য নিচ মন মানসিকতার বিষয়কেই সমর্থন ও প্রচার করে থাকে! এই বিষয়ে লিখতে গিয়ে কাফেরদের অনেক আর্টিকেল পড়েছি যেথায় তারা সবসময়ের মত কাটছাঁট, যেগুলো নিয়ে ভুল বুঝাতে পারবে সেই রকম ফাতাওয়া, যইফ ও জাল হাদিস, মিথ্যা কথা ও নিজেদের বানানো নৈতিকতার প্রচার ইত্যাদি কাজ করেছে। এক ইংরেজি আর্টিকেলে দেখলাম এই বিষয়ে, তারা তো সব সীমা পার করে গেছে। সেখানে আরবি থেকে অনুবাদ করে সাথে লিংকও দিয়ে দিয়েছে সবগুলোর। লিংকগুলোতে প্রবেশ করে আমিতো অবাক, তারা আরবি অনুবাদে এত বেশি প্রতারণা ও জালিয়াতি করেছে যা বলার বাহিরে, তারা সেখানে ৯ কে ১ বানিয়েছে আর ১ কে ৯ বানিয়েছে। যাইহোক সবগুলোর জবাব এই লিখা দিয়েছি, আস্তে আস্তে দেখতে পাবেন ইনশাআল্লাহ।
দাসীর আওরা, দাসীদের গায়ে হাত ও দাসীদের স্তন উন্মুক্ত রাখা সংক্রান্ত দলিল পর্যালোচনা
প্রথমতো দাসী ও স্বাধীন নারীর যে পর্দায় ভিন্নতা রয়েছে তা কোরআনের বহু আয়াত ও হাদিস থেকে থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়। কিন্তু দাসীর আওরা কতটুকু এই সংক্রান্ত কোন তথ্য কোরআনে বা গ্রহণযোগ্য হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয় [এটা ইজতিহাদি মাসআলা]।
“দাসীর আওরাহ নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত” – সরাসরি হাদিস?
দাসীর আওরা নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত এই সংক্রান্ত যতগুলো হাদিস রয়েছে যেমন মুসা আল আশাআরী (রা), আব্বাস (রা), আমর ইবনে শুয়াইব (রা) হতে তার কোনোটাই বিশুদ্ধ নয়, সবগুলোই যয়িফ। কিন্তু কিছু আলেম কয়েকটা হাদিসকে হাসান সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সেগুলো নিয়ে আপত্তি করার যথেষ্ট কারণ, দলিল ও প্রমাণ রয়েছে। অর্থাৎ বিশুদ্ধ মত হল হাদিসগুলো যয়িফ।[1]জিলবাব আল-মারআহ ১/৯১-৯২; আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-৩, ৭৩/১১৯; কাশফুল গুমাতি আল আদিলাত আল হিজাব ফিল কিতাব ওয়াল সুন্নাহ, ২য় সংস্করণ, পৃ. ১৩১; তাকরিব আল … See Full Note
অর্থাৎ দাসীর আওরা নিয়ে মতগুলোর সবই ইজতিহাদি, এগুলোর পক্ষে সরাসরি কোরআন ও গ্রহণযোগ্য হাদিস থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় না, ওলামাগন নিজ থেকে গবেষণা করে মত প্রদান করেছেন।
এছাড়া দাসীদের গায়ে হাত দেওয়া, আপত্তিকর স্থানে স্পর্শ করা, স্তন উন্মুক্ত রাখা এই বিষয়ে কাফেররা বেশ কিছু হাদিস পেশ করে থাকে। এগুলো নিয়েও সংক্ষেপে বলছি।
ইবনু উমার (রা) অন্যের দাসীকে সরাসরি স্পর্শ করতেন?
ইবন উমার (রা) এর বাজারে একটি দাসীর দেহের বিভিন্ন স্থানে বা আপত্তিকর স্থানে খারাপ ভাবে স্পর্শ করা সক্রান্ত বর্ণনাগুলোর কোনটিই শতভাগ বিশুদ্ধ নয়, বেশির ভাগই যয়িফ। বাইহাকির একটি হাদিস রয়েছে যেটা সহিহ এবং দলিলযোগ্য।[2]مدى صحة كان ابن عمر إذا اشترى جارية وضع يده بين ثدييها
أخبرَنا أبو الحُسَينِ ابنُ بِشْرانَ العَدلُ ببَغدادَ، أخبرَنا إسماعيلُ ابنُ محمدٍ الصَّفّارُ، حدثنا الحَسَنُ بنُ علىِّ بنِ عَفّانَ، حدثنا ابنُ نُمَيرٍ، عن عُبَيدِ اللهِ بنِ عُمَرَ، عن نافِعٍ، عن ابنِ عُمَرَ، أنَّه كان إذا اشتَرَى جاريَةً، كَشَفَ عن ساقِها ووَضَعَ يَدَه بَينَ ثَديَيها وعَلَى عَجُزِها ، وكأنَّه كان يَضَعُها عَلَيها مِن وراءِ الثَّوبِ.
…নাফে, ইবন উমার (রা) সম্পর্কে বলেন যে তিনি যখন দাসী ক্রয় করেছিলেন, উক্ত দাসীর পা থেকে কিছু পোশাক সরিয়ে ছিলেন এবং তার দুই স্তনের মাঝে ও নিতম্বে নিজের হাত রেখেছিলেন।এবং ব্যাপারটা অনেকটা এমন ছিল যে তিনি তার (দাসির) উপর তার(দাসির) কাপড়ের উপর দিয়ে হাত রাখছিলেন।[3]আবু-বকর আল-বায়হাকী ‘আস-সুনানুল কুবরা'(11/216)।
সেটাতেও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে ওমর (রা) কাপড়ের উপর দিয়ে বুকের মাঝে হাত রেখেছিলেন, স্তনে নয়। এছাড়া যদি তিনি এমনটা করেও থাকেন তাহলেও হাদিস থেকে স্পষ্টই বুঝা যায় উনার দাসীকে ক্রয় করার উদ্দেশ্য ছিল তারপরই তাকে স্পর্শ করেছিলেন।[4]বিস্তারিত দেখুন:- ইবন উমার (রা) এর বাজারে একটি দাসীর দেহের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করা সক্রান্ত বর্ণনার তাহকিক ও এই বর্ণনাটির ব্যাপারে আলোচনা [Archived on 22.5.2023] ; هل … See Full Note
উক্ত হাদিস থেকে কোনোভাবেই প্রমাণিত হয় না যে দাসীর আওরাহ নেই। উক্ত হাদিসের বিধান নিয়ে আলেমগণের মধ্যে ইখতিলাফ ছিলো। বেশিরভাগ আলেম এদিকে গিয়েছেন যে, বিয়ের উদ্দেশ্যে যেমন পাত্রীর চেহারা দেখা জায়েয, তেমনই ক্রয়ের উদ্দেশ্যেও দাসীকে কাপড়ের উপর থেকে বুক-পিঠ ঘুরিয়ে দেখা অর্থাৎ স্পর্শ করা জায়েজ। যেসব জিনিসের মাধ্যমে দাসীর মূল্য নির্ধারিত হয় সেগুলো খুবই সীমাবদ্ধতার সাথে পরীক্ষা করে নেওয়া বৈধ। কারণ এটা ক্রেতার অধিকার, ইসলাম কেনাবেচায় প্রতারণা অনুমোদন করে না; দাসী ক্রয় করা হয় তাকে সুররিয়্যাহ বানানোর জন্য, কিংবা বিয়ে করার জন্য, কিংবা অন্যান্য কাজে, তাই কেনার সময় তাঁর গুণাবলি দেখে নেওয়া ক্রেতার জন্য বৈধ, যেসব কারণে দাসীর ক্রয়মূল্য বেড়ে যায়। কেনার উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে (যেমন কামভাব নিয়ে) স্পর্শ করা জায়েজ নয়।[5]শারহুস সুন্নাহ লিল বাঘাবী আর যে যে ফক্বীহ এই বিধানের বিপরীত বক্তব্য দিয়েছে মূলত এটা ইবনু ওমরের ব্যক্তিগত ভুল হিসেবে ধরেছেন। ইমাম মালিক (রহঃ) শুধুমাত্র হাতের তালু দেখার অনুমতি দিয়েছেন, পা এবং কবজি দেখা তিনি মাকরুহ বলেছেন।[6]আল-বায়ান ওয়াল-তাহসীল ৭/২৯৬[7]যদি আসলেই হারাম হতো কাজটি ইবনু উমার (র:) কখনোই করতেন না, এবং এটা তাঁর নিজের বিপরীতেও যায়। যেখানে বেগানা নারীদেরকে স্পর্শ করা হারাম, হাদিসেতো এমনও এসেছে … See Full Note
আল সারাখসি (রহ) বলেছেন,
“আর যদি সে কোন দাসী কিনতে চায় তবে ইচ্ছা করলেও তার চুল, বুক ও পায়ের দিকে তাকাতে দোষের কিছু নেই, কেননা ক্রয়ের জন্য অর্থের প্রয়োজন হয়, তাই এর পরিমাণ দেখেই জানা যায়। তবে ইচ্ছা করলে(ও) স্পর্শ করা জায়েজ হবে না, ফকীহদের বড় মতামতটি হলো কারণ তার স্পর্শ করার প্রয়োজন নেই, অর্থের পরিমাণ এটা ছাড়াই জানা যায় এবং যেহেতু ইসলামে স্পর্শ করার বিধান দেখার চেয়েও আরও কঠোর।”[8]আল মাবসুতুল সারাখসি ১০/১৬০
এ হাদিস নিয়ে ইসলামওয়ে-এর ফাতাওয়া পাবেন এখানে[9]https://ar.islamway.net/fatwa/61819/حكم-النظر-إلى-الإماء-ولمسهن-بغرض-الشراء এবং এ হাদিস সংক্রান্ত যত আপত্তি করা হয় তাঁর জবাব এখানে।[10]شبهة أن ابن عمر رضى الله عنه إذا إشترى جارية كشف عن ساقها ووضع يده بين ثدييها وعلى عجزه
সাধারণত অন্যের দাসীর দিকে তাকানো অধিকাংশ ওলামাদের মতে মাকরুহ। কিন্তু ফকিহগণ বলেছে যদি কেউ ক্রয় করতে যায় তাহলে তার দিকে তাকানো জায়েজ আছে। কিন্তু শর্ত হল নিয়ত থাকতে হবে অবশ্যই ক্রয় করার, যদি সে শুধু দেখার জন্য যায় তাহলে জায়েজ নেই। তবে দাসীর দিকে দৃষ্টিপাতকে হারাম করা হয়েছে যদি ফিতনার আশঙ্কা থাকে বা সেরকম উদ্দেশ্য থাকে। কিছু কিছু আলেম ইবনে উমারের হাদিসের উপর ভিত্তি করে এটাও বলেছেন যদি ক্রয় করার নিয়ত থাকে তাহলে যাকে ক্রয় করতে চায় তাকে স্পর্শ করা জায়েজ। কিন্তু অনেক ওলামা এটাকেও মাকরুহ বলেছেন, তাদের মতে ক্রয় করতে স্পর্শ করতে হয় না উপর থেকে দেখলেই যথেষ্ট।[11]আল-শারহ আল-কবির ৭/৩৪৩; হাশিয়া আল রাওদুল রুবা ৬/২৩৩; আল জামিউল মাসায়িলি মুদাওয়িন ১৩/৮০৮; আন নাওয়াদির ওয়াল যায়াদাত ৫/২১; আল ফুরুহ লি ইবনে মুফলিহ ৮/১৮২; … See Full Note
উমর (রা) এর দাসীদের চুল তাদের নিজেদের স্তনে বাড়ি খেতো?
উমার (রা) এর দাসীদের চুল উক্ত দাসীদের স্তনে বাড়ি খাওয়া সংক্রান্ত হাদিসটিও বিশুদ্ধ নয়। একটি ছাড়া বাকি সবগুলো সনদ কোন সন্দেহ ছাড়া যয়িফ। একটির সনদে যথেষ্ট ত্রুটি রয়েছে, বিশেষ করে যে অংশ নিয়ে আপত্তি করা হয় সেটা সম্পর্কে অনেকে জয়িফ মন্তব্য করেছে। কিন্তু তারপরও অনেকে হাদিসটাকে হাসান ভুক্ত করার চেষ্টা করেছে। যদি হাদিসটিকে হাসান পর্যায়েরও ধরে নি তারপরও কোন সমস্যা হওয়ার কথা না। কারণ যে অংশটা নিয়ে আপত্তি করা হয় তা মূলত কাফেরদের ভুল অনুবাদের কারণে, তাদের মতে দাসীরা স্তন খোলা রাখতো যার কারণে সেগুলো দোল খেত ও চুল সেগুলোতে গিয়ে লাগতো যা অন্য সাহাবি দেখেছে। কিন্তু সঠিক অনুবাদ দেখলে দেখা যায় দাসীদের স্তন উন্মুক্ত রাখতো ও সেটাতে চুল বাড়ি খেত এমন কোন কিছুই সেই হাদিসে বলা হয়নি। বরং প্রকৃত অনুবাদ অনুসারে বলা হয়েছে তাদের চুল বুকে বাড়ি খেত, এখন সেটা আবৃত নাকি অনাবৃত বা দুলতো কিনা এমন কিছুই বলা হয় নি। বিস্তারিত[12]উমার (রা) এর দাসীদের চুল উক্ত দাসীদের স্তনে বাড়ি খাওয়া সক্রান্ত হাদিসটির গ্রহনযোগ্যতা যাচাই। [Archived on 22.5.2023] ; قول أنس رضي الله عنه عن إماء عمر: ” كُنَّ يَخْدِمْنَنَا كَاشِفَاتٍ … See Full Note
মুআবিয়া (রা) এর দাসীকে বিবস্ত্র অবস্থায় কিনেছিলেন তাঁর একজন দাস?
মুয়াবিয়া (রা) ও বিবস্ত্র দাসী সংক্রান্ত যে হাদিসটি প্রচার করা হয় সেটিও সহিহ হাদিস না বরং যয়িফ। সহিহ হলেও সমস্যা ছিল না কারণ দাসীটি মুআবিয়া (রা) এর নিজের দাসী ছিল।[13] মুয়াবিয়া( (রা) ) ও বিবস্ত্র দাসীর ঘটনা এবং ইসলামবিরোধীদের প্রচারণা
সাহাবাদের সময় দাসীরা স্তন খোলা রেখে চলাফেরা করতেন?
আর রাসূল ﷺ এর সময়, সাহাবাগণের সময় মুসলিম দাসীগণ স্তন উন্মুক্ত রেখে চলাচল করতেন এর পক্ষে কোন শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য প্রমাণ নেই।[14]No authentic evidence that slave women used to walk around bare-breasted – Islamweb Fatwa No: 355954
* একটা অভিযোগ করা হয় যে ইসলামে আগে নারীরা বক্ষদেশ খোলা রাখতো। মূল ঘটনাটি হল এক সময় নারীরা নিজেদের বুক পুরুষদের মত খোলা রেখে বাহিরে বের হয়ে যেত, মাথা চুল খোলা রাখত। জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ আল আনসারি (রা) হতে বর্ণিত, এক সময় আসমা বিনতে ইয়াজিদ (রা) এর সামনে এমন একজন নারী আসলে (বিবস্ত্র) তিনি এর বিরোধিতা করেন ও অনেকটা এমন কিছু বলেন যে, “এতো দেখতে খারাপ দেখায়।” এই ঘটনাটি ঘটার পর সূরা নূর আয়াত ৩১ নাজিল হয়েছে যেখানে নারীদেরকে নিজেকে ঢেকে রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন কিতাবে স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে জাহিলি যুগে নারীরা এমনটা করত তাই আল্লাহ জাহিলিয়া সম্প্রদায়ের নারীদের এই কুপ্রথা বাতিল করেন ও নারীদেরকে নিজেকে ঢেকে রাখার আদেশ করেন, তাই এটাকে হারাম করে আল্লাহ আয়াত নাজিল করেছেন।[15]তাফসির ইবনে কাসির ৬/৪২-৪৬; কিতাব ফাফরু ইলালল্লাহ আল কালামুনি পৃ. ২১৫; কিতাব মাউকিইল ইসলাম সুওয়াল ওয়াযাওয়াব ৫/৭৪৪৭ ফাতাওয়া নং ১১০৫৯; কিতাবুল আসাসি ফি … See Full Note
আরেকটি দলিল দেওয়া হয় ইমাম মালেক (রহ) (মৃ. ১৭৯ হি.) হতে। মালিকি স্কলার ইমাম ইবনে আবি যায়েদ আল কারওয়ানি (মৃ. ৩৮৬ হি.) তার ‘আল-জামেহ’ গ্রন্থে লিখেছেন,
“তিনি (ইমাম মালিক) মদিনার ক্রীতদাসী মহিলাদের নীচের পোশাকের উপরের অংশ (এমনকি খোলা স্তনও) খোলা অবস্থায় বের হওয়ার আচরণকে কঠোরভাবে বিরোধীতা করেছিলেন। তিনি বললেন: “আমি এ বিষয়ে সুলতানের সাথে কথা বলেছি, কিন্তু আমি কোন উত্তর পাইনি।”[16] Slave women did not walk bare-breasted during lifetime of Prophet, sallallaahu ‘alayhi wa sallam – Islamweb Fatwa 367498 [Archived]
লক্ষণীয় বিষয় যে ইমাম মালেক (রহ) ছিলেন একজন তাবে তাবেঈন। ইসলামে দলিল হল কোরআন, রাসূল ﷺ এর হাদিস ও সাহাবিদের আমল, তারপর তাবেঈ ও তাবে তাবেঈনদের আমল। রাসূল ﷺ কে দেখলেই যেমন যে কেউ সাহাবি হয়ে যায় না তেমনই সাহাবিদেরকেও দেখলেই তাবেঈ এবং তাবেঈদেরকে দেখলেই তাবে তাবেঈন হয়ে যায় না। এর জন্য কিছু শর্ত পূরন করতে হয়।
যাইহোক, ইমাম মালেক কোন সাহাবি দাসীকে যদি দেখতেন এমনটা করতে তাহলে তিনি এটাকে দলিল হিসেবে নিতেন, কিন্তু এমনটা হয়নি বরং উনার তাবে তাবেঈন হওয়া, একজন বিজ্ঞ পন্ডিত হওয়া ও বিরোধীতা করাই প্রমাণ করে তারা সাহাবি ছিল না। যা প্রমাণ বহণ করে উক্ত কাজ সাধারণ মানুষের আমল, আর সাধারণ মানুষের আমল দলিল নয়। কেউ কেউ বলে সুলতান নাকি জানতেন যে এটা ইমাম মালিকের ব্যক্তিগত মত, এটা কোরআন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়, তাই নাকি তিনি এ বিষয়টা গুরুত্বের সাথে নেন নি। এই যুক্তিটা শুনতে ভালো লাগলেও এটা মুর্খতাপূর্ণ একটা দাবি। কারণ ইমাম মালিক ছোট কোন আলেম ছিলেন না, একেতো তিনি তাবে তাবেঈ এর উপর যুগ শ্রেষ্ঠ আলেম ও মালেকি মাযহাবের প্রধান ইমাম। উনার একটা ফাতাওয়ায় অনেক কিছু নির্ভর করে। আর উনার মত ব্যক্তিত্বর সামনে সুলতান কীভাবে নিজেকে এত পণ্ডিত মনে করতে পারে ও ভাবতে পারেন এটা উনার ব্যক্তিগত মত ও তা কোরআন হাদিস সমর্থিত না! সুলতান যদি ন্যায় পরায়ণ, সৎ ও জ্ঞানী শাসক হয়ে থাকেন তাহলে এমনটা চিন্তা করার কোন প্রশ্নই আসে না, যদি সুলতান সেই টাইপের হয় তাহলে ভিন্ন কথা।
যাইহোক উপরিউক্ত হাদিসগুলো যে গ্রহণযোগ্য না সেটার সামারি ভিডিও আকারে দেখতে পারেন। আর্টিকেল যদি মাথায় না ঢুকে মিথ্যাবাদীদের, এমনিতেও ঢোকার কথা না, তাই ভিডিও দেখতে পারেন এখানে হাদিস গুলো জইফ হওয়ার কারণগুলো সংক্ষেপে বুঝিয়ে বলা হয়েছে।[17]ইসলামে দাসীর আওরা ও কিছু অপ্রমাণিত রেওয়ায়েত সমূহ, মুফতি শামায়েল নদভী ; উমার (রা) এর যুগে কি দাসীরা পর্দা করলে পেটানো হতো বা নগ্ন হয়ে কাজ করতো মুশফিক … See Full Note
স্বাধীন ও দাসী নারী পর্দা নিয়ে মত ও যে কারণে পার্থক্য
দাসী ও স্বাধীন নারীর পর্দার পার্থক্য নিয়ে বেশ কিছু দলিল পাওয়া যায়। যার মধ্যে অন্যতম দুটি হল কোরআনের আয়াত ও ওমরের হাদিস। কোরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেন,
হে নবী, তুমি তোমার স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে ও মুমিনদের নারীদেরকে বল, ‘তারা যেন তাদের জিলবাবের কিছু অংশ নিজেদের উপর ঝুলিয়ে দেয়, তাদেরকে চেনার ব্যাপারে এটাই সবচেয়ে কাছাকাছি পন্থা হবে। ফলে তাদেরকে কষ্ট দেয়া হবে না। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।সূরা আহযাব, আয়াত ৫৯
আরেকটি দলিল হল ওমর (রা) হতে হাদিস পাওয়া যায়, উমার (রা) ঘোমটা দেয়া একজন দাসীকে দেখতে পেয়ে তাকে প্রহার করলেন। এবং বললেনঃ
“স্বাধীনা নারীর সাদৃশ্য অবলম্বন করো না।”[18]মুসান্নাফ ইবন আবি শায়বা ৬/২৩৬; ইরওয়া আল গালীল ৬/২০৩
কোন কোন বর্ণনায় বলা হয়েছে,
“তোমার মাথা উন্মোচন করো এবং স্বাধীন নারীর অনুকরণ করো না।”[19]কিতাবুল দিরায়াতি ফি তাখরিজ আহাদিস আল হিদায়া ১/১২৪
২টি বা ৩টি সনদেই শুধু প্রহার করার কথাটি পাওয়া যায় বাকিগুলোতে ‘বাধা দিয়েছেন’ বর্ণনা করা হয়েছে।[20]খুলাসাতুল বদর আল মুনির ১/১৫৯; জিলবাল আল মার’আহত পৃ. ৯৯; ইরওয়া আল-গালীল, ৬/২০৪
ওমর (রা) এর থেকে পাওয়া হাদিসগুলোতে কিছু ত্রুটি রয়েছে এমন মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।[21]আহকামুন নাজার ১/২৩০ কিন্তু তারপরও হাদিসগুলো হাসান পর্যায়ের ও কিছু কিছু সনদ বুখারি এবং মুসলিমের শর্তানুসারে সহিহ। তাই গায়ের জোরে হাদিসগুলোকে যয়িফ প্রমাণ করার চেষ্টা করাটা বৃথা।
হাদিসগুলোতে শুধু প্রহার করা পর্যন্ত বর্ণনা পাওয়া যায়। এখন প্রহার বলতে অনেক কিছুই হতে পারে যেমন আস্তে আঘাত করা, থাপ্পড় দেওয়া, শাসন করার উদ্দেশ্যে হালকা প্রহার, কড়াঘাত করা, বেত্রাঘাত করা ইত্যাদি। কিন্তু সেরকম কোন বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায় না। যেহেতু দোষ গুরুতর ছিল না সেহেতু বুঝাই যাচ্ছে বেত্রাঘাত, করাঘাত করার মত কঠিন কিছুতো করা হয়নি, আর মুখে থাপ্পড় মারা স্পষ্টই হারাম। যেহেতু দোষটি গুরুতর কোন দোষ ছিল না, মুখে আঘাত করা হারাম, দাস-দাসীকে মারার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে[22]সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪১৯০ http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=51273 এবং অন্য সনদগুলোতে বাধা দিয়েছেন বর্ণিত হয়েছে সেহেতু আস্তেই আঘাত করেছেন কমন সেন্স এটাই বলে।
একটা উদাহরণ দিয়ে বুঝাই বিষয়টা, আমরা অনেক সময় আমাদের ছোট কেউ ছোটখাটো কোন ভুল করলে বা করতে নিলে আমরা তাকে মৃদু প্রহার করে থামাই, তারপর তাকে বুঝিয়ে বলি। সাধারণত এই প্রহারে কেউ ব্যথা পায় না, মূলত বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এমনটা করা হয় বেশিরভাগ। যেহেতু অন্য সনদে যেহেতু বাধা বর্ণনাটি রয়েছে সেহেতু আমরা ধরেই নিতে পারি এটাও সেইরকম মৃদু প্রহারই হবে, কারণ তিনিতো নফসের গোলাম ছিলেন না, যে সামান্য বিষয়ের জন্য জোড়ে কাউকে আঘাত করবেন, তাও আবার দাস-দাসীকে মারার নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে সুস্পষ্ট হাদিস থাকা সত্ত্বেও। তিনি যদি আসলেই ইসলাম বিদ্বেষী কাফেরদের মত গণ্ডমূর্খ হতেন তাহলে কখনো শাসক বা নির্দিষ্ট ভাবে বললে সফল শাসক হতে পারতেন না। আবার এই একজন দাসীর ঘটনা ছাড়া পুরো হাদিস শাস্ত্রের কোন গ্রন্থে আর কোন (গ্রহণযোগ্য) ঘটনা দেখাতে পারবে না যেখানে ওমর (রা) দাসীদেরকে প্রহার করেছেন এই কারণে।
যাইহোক সকল দলিল প্রমাণ পর্যালোচনা করে মুসলিম উম্মার মধ্যে দাসীর আওরাহ নিয়ে বেশ কয়েকটি মতের প্রচলন দেখা যায়। দাসীর পর্দা নিয়ে আলেমদের মাঝে প্রধানত ২টি মত পাওয়া যায়।
- দাসী ও স্বাধীন নারীর পর্দা এক রকম
- দাসীদের পর্দা স্বাধীন নারীর তুলনায় কম
২য় মতের মধ্যে আবার কতটুকু আওরাহ (যেই অংশে পর্দা ফরজ) তা নিয়েও ৩টি মত রয়েছে।
- সাধারণ অবস্থায় যা দেখা যায় তা ব্যতীত বাকি সব আওরাহ
- পুরুষের ন্যায় আওরাহ
- মাহরাম নারীর ন্যায় আওরাহ
দাসীদের জন্য পর্দার বিধান সহজ করা হয়েছে বহু কারণে। এই ব্যাপারে মুহাম্মদ শফি উসমানি (রহ) (মৃ. ১৩৯৬ হি.) বলেন,
“দাসীদের জন্য মাথা আদতে সতরের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং মুখমণ্ডল খোলার ব্যাপারে তারা স্বাধীন নারীদের অপেক্ষা অধিক সুবিধা প্রাপ্ত। এর কারণ এই যে, তারা প্রভুর আদেশ পালনে নিয়োজিত থাকে। তাই কাজকর্মের জন্য তাদের বাইরে যাওয়ার এবং মুখমণ্ডল খোলার প্রয়োজন বেশি।”[23]তাফসীরে মা-আরেফুল কোরআন ৭/২২১
এছাড়া অন্য বেশ কিছু কিতাবে বলা হয়েছে, দাসীদেরকে অনেক কারণে পর্দা করার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এই ছাড় দেওয়ার কারণগুলো হল[24]আশরাফুল হিদায়া, ইসলামিয়া কুতুবখানা, ৯/৬১৫; আহকামুল কোরআন ৩/৪১০, ৬২৫, ৫/২৪৫; তাফসীর আল-কাশশাফ ৩/৫৬৯; আল-ইস্তিদকার ৮/৫৪১; আল-সারখাসির আল-মাবসুত ১০/১৫১; … See Full Note –
- মনিবের প্রয়োজন সারতে ঘরের বাহিরে যেতে হত
- মনিবের মেহমানদের খেদমত করতে তাদের সামনে উপস্থিত হতে হত
- বিভিন্ন কারণে পর পুরুষদের সামনে যেতে হত
- দাসীরা মাহরাম ছাড়া বাহিরে যাওয়ার অনুমতি ছিল
- অনেক ক্ষেত্রে পুরুষদের মত বিভিন্ন কাজ করতে হত
- মানুষ যেন চিন্তে পারে, পার্থক্য করতে পারে যে তারা দাসী অথবা দুশ্চরিত্রা অথবা পতিতা নয়, বরং তারা ভালো ঘরের ভদ্র, লজ্জাশীল, পর্দাশীল স্বাধীন নারী
বিভিন্ন তাফসিরে দেখা যায় আগে বখাটে লোকজন দাসী, পতিতা, দুশ্চরিত্রা এই জাতীয় নারীদেরকে বিরক্ত করতো, ইভটিজিং করতো, আজেবাজে কথা বলতো, কিন্তু সম্ভ্রান্ত পরিবারের স্বাধীন কোন নারীর সাথে এমন কিছু করার সাহস পেত না। পরে সূরা আহযাবের ৫৯ নম্বর আয়াত ও বিভিন্ন হাদিসে স্বাধীন নারীদেরকে বলা হয়েছে দাসীদের মত রূপ ধারণ না করতে ও মাথা ও মুখ ঢেকে রাখতে, যাতে চিনা যায় তারা কে।[25]তাবাকাত ইবনে সাদ ৮/১৭৬; তাফসির আত তাবারি ২২/৪৬; তাকরীব আত তাহযীব ১/৫২০; কিতাবুল রাদ্দীল মুফহাম ৫১; মাশাহিরিল উলামা আল আমসার ১/৯৬; প্রায় সব তাফসির গ্রন্থেই … See Full Note
* একটি অভিযোগ দেখেছি সেটা হল ‘কোরআন বা হাদিসে কোথাও নাকি বলা হয়নি বিরক্তকারীরা কাফের বা মুনাফিক’। তাদেরকে কাফের বা মুনাফিক বলে সম্বোধন না করা মানেতো এই না যে তারা মুসলিমই ছিল, তারা যদি মু’মিন বান্দাই হত তাহলে তো আর এমন কাজ করতোই না। এছাড়া তাদেরকে মুনাফিক বলেনি এই কথাটিও মিথ্যা। কারণ এর পরের আয়াত সূরা আহযাবের ৬০ নম্বর আয়াতেই আল্লাহ তাদেরকে মুনাফিক বলে সম্বোধন করেছেন।
* আরেকটি অভিযোগ দেখলাম ‘আগে সব নারীকে উত্ত্যক্ত করা হত, কিন্তু কোরআনের আয়াত নাজিলের মাধ্যমে নিষেধের কারণে শুধু দাসীদেরকে উত্ত্যক্ত করা হত ও সম্ভ্রান্ত বা স্বাধীন নারীদেরকে আর বিরক্ত করা হত না।’ এখানে বখাটে লোকগুলো আগ থেকেই সবাইকে বিরক্ত করতো, শুধু সম্ভ্রান্ত পরিবারের কাউকে বিরক্ত করতে সাহস পেত না। তাই আল্লাহ স্বাধীন নারীদেরকে বলেছিলেন চেহারা ঢেকে রাখতে যাতে চিনা যায় কে স্বাধীন ও কে দাসী। যার কারণে তারা স্বাধীন নারীদেরকে আর বিরক্ত করবে না।
* আল্লাহ কিন্তু কোথাও বলেন নি যে দাসীদেরকে বিরক্ত করা যাবে। আর কাফেরদের আরেকটা দাবি, ‘বখাটে লোকদেরকে সতর্ক করা হয় নি’। কিন্তু এটি একটি স্পষ্ট মিথ্যা কথা। তাফসির গ্রন্থগুলোতে বলা হয়েছে, পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ মুনাফিকদেরকে হুঁশিয়ারি বা সতর্কবার্তা দিয়েছেন, যাদের অন্তরে ব্যাধি রয়েছে (ব্যভিচারকারী পুরুষ যারা নারীদের উত্ত্যক্ত করত) ও … অপকর্ম ত্যাগ করে যদি সত্যের দিকে না আসে তাহলে অবশ্যই আল্লাহ নবীকে তাদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাবান করবেন ও তাদেরকে বিতাড়িত করা হবে।…[26]তাফসির ইবনে কাসীর, ই.ফা. ৯/১৮৭-৮৮; তাফসীরে মা-আরেফুল কোরআন, ৭/২২২; তাফসীরে মাজহারী, ৯/৫৬৭-৬৮; তাফসির আত তাবারি ২০/৩২৬-২৮ এই আয়াত পেশ করে আলেমগণ বলেছেন, দাসীদেরকে বিরক্ত করা, তাদেরকে ইভটিজিং করা, অশ্লীল ইঙ্গিত বা কথা বলা জায়েজ নেই, এটা হারাম।[27]আদওয়া’আল-বায়ান ৬/২৪৫
দাসী ও স্বাধীন নারীর পর্দায় পার্থক্য নেই
এই মতটি মূলত আলবানি (রহ) (মৃ. ১৪২০ হি.) এর মত। উনার এই মতের পক্ষে প্রমাণ গুলো দেখতে চাইলে তার ‘জিলবাল আল মার’আহতিল মুসলিমাহ ফি আল কিতাব ওয়াল সুন্নাহ’ কিতাবটি পড়তে পারেন।
শায়েখ নাসিরুদ্দিন আলবানি (রহ) বলেছেন,
আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, কোনো কোনো মুফাসসির যঈফ রেওয়ায়েতগুলোর জন্য ভ্রমে পতিত হয়েছেন। এ জন্য তাঁরা বলেছেন, আয়াতে (আহযাব ৫৯)“মুমিনা নারী” বলে স্বাধীনা নারীদেরকে দাসীদের থেকে আলাদা করা হয়েছে। এবং এর উপর ভিত্তি করে তাঁরা বলেছেন দাসীদেরকে মাথা ও চুল ঢাকতে হবে না। এমনকি কোন কোনো মাযহাবেও বিষয়টি এভাবে অতিরঞ্জিত হয়েছে যে দাসীদের আওরাহ পুরুষদের আওরাহর ন্যায় – নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত! … এবং এ ব্যাপারে কিতাব ও সুন্নাহতে কোনো দলিল নেই।[28]জিলবাব আল মার’আহ ১/৯১-৯২
এই মতটি আলবানি (রহ)-এর দ্বারাই প্রথম উপস্থাপিত হয় নি। শাফেয়ী মাযহাবের প্রথম দিককার স্কলারদের অনেকেই এই মত পোষণ করতেন। যেমন, আলি ইবনে আবু হুরায়রা (রহ) (মৃ. ৩৪৫ হি.)[29]কিতাবুল ইখতিলাফিল আয়িমমাতি লি ইবনে হুবায়রা ১/১০১ , ইমাম আলি ইবনে তাবারি (রহ) (মৃ. ৩৫০ হি.)[30]আল বায়ান ফি মাযহাবিল ইমাম আল শাফেয়ী ২/১১৯। এমনকি হাম্বলী মাযহাবেও এই মতের পক্ষে স্কলারদের বক্তব্য দেখা যায় যেমন হুসাইন আল খারকি (রহ) (মৃ. ৩৩৪ হি.)[31]শারহুল জারকাশী ১/৬২৪
কিন্তু তাদের সাথে আলবানি (রহ) এর পার্থক্য হল তারা মুখ ও মাথা ঢেকে রাখতে হবেনা বলেছেন, কিন্তু আলবানি (রহ) এর মতে স্বাধীন নারীর সাথে দাসীর পর্দার একদমই পার্থক্য নেই, তিনি মানতেন দাসীরাও স্বাধীন নারীর মত পর্দা করবে।
ইমাম কুরতুবি আল শাফেয়ী (রহ) (মৃ. ৬৭১ হি.) বলেন,
সকল স্বাধীন ও দাসী নারীদের জন্য এখন মাথা আবৃত করা এবং নিকাব পড়া ওয়াজিব।[32]কাশফুল গুমাতি আল আদিলাত আল হিজাব ফিল কিতাব ওয়াল সুন্নাহ, ২য় সংস্করণ, পৃ. ১৬৩
দাসী ও স্বাধীন নারীর পর্দায় পার্থক্য রয়েছে
দাসীদের আওরাহ স্বাধীন নারীদের থেকে ভিন্ন ছিল, আর এটাই বিশুদ্ধতম মত ও এটার উপর ইজমা রয়েছে। কিন্তু কতটুকু পার্থক্য তা নিয়ে ওলামাদের মধ্যে অনেক বেশি মতভেদ দেখা যায়। মিথ্যাবাদীরা প্রচার করে যে আওরাহ যতটুকু ততটুকুই ঢাকতে হবে ও বাকিটুকু খোলা রাখতে হবে, স্তন ও বুক ঢেকে রাখতে পারবে না এটাই নাকি বিধান। একদম বেসিক নলেজও যখন থাকে না তখনও হয়ত সুস্থ মস্তিষ্কের কেউ এমন দাবি করবে বলে মনে হয় না।
এখানে একটা বিষয় বুঝতে হবে যে, আওরাহ বলতে শরীরের সেটুকু অংশকে বুঝানো হয় যেটুকু অংশ ঢেকে রাখা ফরজ বা বাধ্যতামূলক।[33]ইবনে মুফলিহ, আল-মুবদি, ১/৩৫৯; কাশশাফুল কিনা ১/৩১২ যেমন পুরুষদের আওরা নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত, অর্থাৎ পুরুষদের জন্য এই তুটুকু অংশ ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু রাসূল (ﷺ) হতে শুরু করে পরবর্তী স্কলারগণের সবাই মোটামুটি শরীরের বেশির ভাগ অংশ ঢেকে রাখা হয় এরকম কাপড় পরিধান করতেন। এই থেকে বুঝা যায় পুরুষদের জন্য সতর বা আওরা যতটুকু ঢেকে রাখা ফরজ শুধু ততটুকু ঢেকে রাখলে তার ফরজ আদায় হয়ে যাবে কিন্তু আমাদের নবী ও অনুসরণীয় ব্যক্তিদের আমল থেকে স্পষ্ট যে শুধু আওরাহ থেকে বেশি ঢেকে রাখাই সর্বোত্তম আমল।
দাসীদের ক্ষেত্রেও বিষয়টা একই রকম। অর্থাৎ দাসীদের যতটুকু আওরাহ ততটুকু বাধ্যতামূলক ঢেকে রাখতেই হবে, কিন্তু তার মানে এই না যে সে নিজের পুরো শরীর ঢেকে রাখতে পারবে না, বরং খোলা রাখা শুধুই জায়েজ। এখন জায়েজ হলেই সব কাজ করা যায় না বা বাধ্যতামুলক করতে হয় না, যেমন তালাক দেওয়া, ভিক্ষা করা জায়েজ, কিছু আলেমদের মতে ওক্টোপাস খাওয়া, দব জাতীয় প্রাণী যাকে দেখতে অনেকটা গুই সাপের মত মনে হয় সেটা খাওয়া, ঘোড়া খাওয়া ইত্যাদি জায়েজ ও হালাল ইত্যাদি। এখন জায়েজ হওয়ায় তালাক দিতেই হবে, ভিক্ষা করতেই হবে, এসব খেতেই হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই ইসলামে।
আইজুলুদ্দিন ইবনে আব্দুল সালাম আল শাফেয়ী (রহ) (মৃ. ৬৬০ হি.) বলেন,
“এমন কোন পোষাক তার (দাস-দাসী) জন্য পড়া বৈধ নয় যা তার ক্ষতি করে, যেমন রুক্ষ পোষাক যা তার ত্বকের ক্ষতি করে, তার জন্য বাধ্যতামূলক নয় খুব বিলাসী ও আরাম আয়েশের কাপড় পরিধান করা। এবং তিনি নিজেকে শুধু দাসের আওরা পর্যন্ত ঢেকে রাখার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে পারবেন না, এমনকি যদি সে তাপ ও ঠান্ডায় আক্রান্ত নাও হন। কারণ এটা (নিজেকে আওরাহ ঢাকা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ করে ফেলা) তার জন্য লজ্জাজনক ও অপমানসূচক।[34]কিতাবুল ঘায়াত ফি ইখতিসারুল নিহায়া ৬/২৪৮
সাধারণ অবস্থায় যা দেখা যায় তা ব্যতীত বাকি সব আওরাহ
শাফেয়ী মাযহাব (১ম মত)
শাফেয়ী মাযহাবে প্রথম থেকেই ৩টি মত প্রচলিত। একটি হল দাসীর আওরাহ স্বাধীন নারীর মত ও শুধু মাথা খোলা জায়েজ, আরেকটি হল হাত, পা, মুখ ও মাথা ছাড়া বাকিটুকু পুরোটাই আওরাহ।
শাফেয়ী মাযহাবের একজন স্কলার আলি ইবনে আবু হুরায়রা (রহ) ছিলেন এই মতের। অর্থাৎ তার মত ছিল দাসীদের আওরাহ একজন স্বাধীন নারীর মত, যেমনটা অন্য স্কলারগণ বলেছেন দাসী ও নারীদের পর্দার মধ্যে পার্থক্য শুধু মাথা ও মুখ খোলা রাখবে।[35]কিতাবুল ইখতিলাফিল আয়িমমাতি লি ইবনে হুবায়রা ১/১০১
শাফেয়ী মাযহাবের আরেক ইমাম আলি ইবনে তাবারি (রহ) বলেন,
“ওমরের (রা) হাদিস অনুসারে তার নগ্নতা একজন স্বাধীন নারীর নগ্নতার মতো, তবে সে তার মাথা উন্মোচন করতে পারে”[36]আল বায়ান ফি মাযহাবিল ইমাম আল শাফেয়ী ২/১১৯
আবু ইসহাক ইবরাহীম ইবন আলী বিন ইউসুফ আল শিরাজী (রহ) (মৃ. ৪৭৬ হি.) বলেন,
“দাসীরদের আওরাহ নিয়ে দুটো মত রয়েছে, প্রথম মত হল তাদের পুরো দেহই আওরাহর অন্তর্ভুক্ত যে স্থানগুলো ঢেকে রাখতে হবে না সে স্থানগুলো ব্যতীত, সেগুলো হচ্ছে মাথা, হাতের কব্জি, পায়ের কিছু অংশ। (২য়টি শাফেয়ী মাযহাবের ২য় মত)”[37]কিতাবুল মাযহাব ফি ফিকহুল ইমাম আল শাফেয়ী- শিরাজী ১/১২৫
ইমাম নববী (রহ) (মৃ. ৬৭৬ হি.) দাসীর আওরাহ নিয়ে মত গুলো বর্ণনা করছেন,
…আর দ্বিতীয়টি, কাজের সময় যেগুলো সাধারণত প্রকাশ পায় না সেগুলো দেখা হারাম। সেগুলো ছাড়া অন্যগুলো হলে হারাম হবে না। (কারণ সেগুলো আওরাহ)
এবং তৃতীয়টি: তিনি একজন স্বাধীন নারীর মতো, এবং এটি দূর্লভ মত এবং আল-গাজালি (রহ) (মৃ. ৫০৫ হি.) ছাড়া অন্য কারো হতে এটি খুব কমই বিদ্যমান।
আমি (ইমাম নববী) বলি, (আল-বায়ান) এর লেখক এবং অন্যরা বলেছেন যে, নারী ক্রীতদাস একটি স্বাধীন নারীর মত, কারণ তা যুগের চাহিদা অনেকের স্বাধীন হওয়ার দৃষ্টিকোন থেকে, এবং এটি সবচেয়ে (দলিলের দিক থেকে) প্রাধান্য প্রাপ্ত প্রমাণ। আল্লাহই ভালো জানেন[38]কিতাব রাওদাতুল তালিবিন ৭/২৩
ইমাম নববী (রহ) আরেক কিতাবে বলেন,
অনেক মুহাদ্দিসিনগণের মতে যেটি সবচেয়ে সঠিক তা হল যে একজন নারী ক্রীতদাসী একজন স্বাধীন নারীর মতো, এবং ঈশ্বরই ভাল জানেন।” তিনি এটির ব্যাখ্যা করে বলেছেন: তাদেরকে স্বাধীন নারীর সাথে শরিক করা হয়েছে কারণ তাদের নারীত্বের বৈশিষ্ট্য এবং ফিতনার ভয়ের কারণে। প্রকৃতপক্ষে, অনেক নারী ক্রীতদাসী আছে যারা স্বাধীন নারীদের চেয়েও অনেক বেশি সুন্দর। তাই তাদের প্রতি ফিতনার ভয় আরো বেশি।[39]মিনহাজুল তালিবিন ২০৪
শাফেয়ী মাযহাবের অন্যান্য আরো আলেম একই বিষয় নিজেদের কিতাবে বর্ণনা করেছেন ও ব্যাখ্যা করেছেন কেন দাসী নারীদের আওরাহ স্বাধীন নারীদের মত বা অনেকটা অনুরূপ, যেমন ইবনুল মুলকিন (রহ) (মৃ. ৮০৪ হি.)[40]আওযা লাতিল মুহতাজ ইলা তাওজিহিল মিনহাজ ১/২২৭, আল কাদি আল হুসাইন (রহ) (মৃ. ৪৬২ হি.)[41]তালিকাত লিল কাদি হুসাইন ২/৮১৬, আব্দুল ওয়াহিদ আল-রুওয়াইনি (রহ) (মৃ. ৫০২ হি.)[42]বাহরুল মাযহাবি লি রুওয়াইনি ২/৯৭, আবু বকর আল শাশী (রহ) (মৃ. ৫০৭ হি.)[43]হালিয়াতিল ওলামা ফি মারিফাত মাযহাহিবুল ফুকাহা ২/৫৪, হাসান আল আমিদি (রহ) (মৃ. ৬৩১ হি.) (তিনি একসময় হাম্বলি ছিলেন, পরে শাফেয়ী হয়ে যান।)[44]আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-২, ৬০/৪৮১; আল-মারদাওয়ি, আল ইনসাফ ফি মারিফাতিল রাজিহ মিনাল খিলাফ ৩/২০৩, ইবনে হাজার আল হাইতামি (রহ) (মৃ. ৯৭৮ হি.) ও শামসুদ্দিন আল রামলি (রহ) (মৃ. ১০০৪ হি.)(তুহফাতুল মুহতাজ ফি শারহুল মিনহাজ ৭/১৯৯; নিহায়াত আল মুহতাজ ইলা শারহুল মিনহাজ ৬/১৯৩)) প্রমুখ ওলামাগণ।
হাম্বলি মাযহাব (১ম মত) এবং অন্যান্য আলেমগণের বক্তব্য
৬০০ হিজরির পর হাম্বলি মাযহাবে এই মতের সমর্থন সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। হাম্বলি মাযহাবের প্রথম হতে আজ অবধি স্কলারগণের মধ্যে মেজরিটি হাম্বলি স্কলার বিশেষ করে সবচেয়ে প্রভাবশালী ইমামগণ এই মত পোষণ করতেন।
কেউ কেউ প্রচার করছে ইবনে তাইমিয়া (রহ) নাকি বলেছেন দাসী ও স্বাধীন নারীর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। এই কথাটা ভুল, ইবনে তাইমিয়া (রহ) ‘দাসী ও স্বাধীন নারীর পর্দায় পার্থক্য রয়েছে’ এই জাতীয় বক্তব্য তিনি নিজের কিতাবের বহু জায়গায় বলেছেন। তার মতে দাসী ও স্বাধীন নারীর পর্দায় পার্থক্য কোরআন ও সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত।[45]শরহ আল-উমদাহ ২/২৭১; মাজমু’ আল-ফাতাওয়ায় ১৫/৩৭২ কিন্তু আওরাহর ক্ষেত্রে ইবনে তাইমিয়া নাভি হতে হাঁটু এই মতের বিরোধিতা করেছেন।[46]মাজমু আল-ফাতাওয়া ২২/১০৯-১২০; আল-ইখতিয়ারাত পৃ. ৪০-৪১
ইবনে তাইমিয়া (রহ) হাম্বলি মাযহাবের প্রথম দিককার ওলামাদের বক্তব্য নকল করে বলেছেন,
২য় কথা, বর্ণিত অঙ্গগুলো আওরাহ (নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত, পেট, বুক, পিঠ ইত্যাদি) যেটা বলেছেন আল কাদি (মৃ. ৫০০ হিজরির আগে) তার আল জামিতে, তার পুত্র আবুল হুসাইন, এবং যা ইমাম আহমদ (মৃ. ২৪১ হি.) দ্বারা সমর্থিত। একই মত আবুল হাসান আমিদি ও পছন্দ করেছেন। এবং এটা আহমদ (রহ) এর কথার সাথেও সাদৃশ্যপূর্ণ ও অধিক সঠিক, কারণ আলী (রা) বলেছেন যে, দাসীর উচিত নামাজের জন্য সেরকম পোশাক পরিধান করা যেভাবে সে বাইরে যায়, এবং এটা সর্বজনবিদিত যে, সে তার স্তন বা পিঠ উন্মুক্ত করে বাইরে বের হয় না।[47]শারহুল উমদাহ ২/২৭৪-২৭৫; শারহুল যারখাশি ১/৬২৩
হাম্বলি মাযহাবের আরেক স্কলার হুসাইন আল খারকি (রহ) বলেন,
“তারা (দাসীর) মাথা ব্যতীত বাকি সব আওরাহ”[48]শারহুল জারকাশী ১/৬২৪
ইবনে তাইমিয়া (রহ) বলেন,
প্রতিষ্ঠিত (অভিমত) হলো, দাসীর আওরাহ স্বাধীনা নারীর আওরাহ ন্যায়। ঠিক যেমনি একজন পুরুষ দাসের আওরাহ স্বাধীন পুরুষের আওরাহর ন্যায়। তবে দায়িত্ব ও কাজকর্মের জন্য স্বাধীনার তুলনায় দাসীর জন্য নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল হয়। তার জন্য রুখসত আছে, (কাজকর্মের জন্য) যতটুকু দরকার, ততটুকু অংশ প্রদর্শন করতে পারবে। তার বুক ও পিঠের ব্যাপারে বিধান হলো, সেগুলো থাকবে প্রতিষ্ঠিত (অভিমত) অনুসারে।[49]শারহুল উমদাহ ২/২৭৫
ইবনে তাইমিয়া (রহ) আরো বলেন,
একজন দাসী ও স্বাধীন নারীর পর্দার পার্থক্য হল নিকাব ও অনুরূপ কিছু, যেমন বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত হয়, এবং যেহেতু পর্দা নেমে আসার আগে, তারা শরীরের আবরণের স্তর ছিল, তাই যখন তিনি স্বাধীন নারীদের আদেশ করেছিলেন নিজেদের পর্দা করা এবং নিজেকে ঢেকে পোশাক পরিধান করার জন্য, দাসী নারীরা যেমন ছিল তেমনই থাকল। কারণ নীতি হল দাসীর আওরাহ স্বাধীন নারীর আওরাহর মতো। …, (প্রয়োজনে) স্বাধীন নারীর তুলনায় পর্দা হ্রাস পায়, তখন যা প্রকাশ করতে হবে তা প্রকাশ করার অনুমতি দেয়, এভাবে একজন স্বাধীন নারীর সাথে তার সাদৃশ্য ছিন্ন করে এবং বৈষম্যমূলক বৈশিষ্ট্যের সৃষ্টি হয়।[50]শারহুল উমদাহ ২/২৭৫
শায়েখ উসাইমিন (রহ) বলেন, ইবনে তাইমিয়া (রহ) বলেন,
‘রাসূল ﷺ এর যুগে দাসীরা যদি স্বাধীন নারীদের মত পর্দা নাও করে থাকতো তাহলেও সমস্যা ছিল না, কারণ তখন ফিতনার আশঙ্কা ছিল কম। এটা যারা বিয়ের আশা রাখে না এমন নারীদের বিধানের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। আল্লাহ বলেন, “আর বৃদ্ধা নারীরা, যারা বিয়ের প্রত্যাশা করে না, তাদের জন্য কোন দোষ নেই, যদি তারা তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে তাদের কিছু পোশাক খুলে রাখে এবং এ থেকে বিরত থাকাই তাদের জন্য উত্তম।”[সূরা নূর আয়াত ৬০] আর বর্তমান সময় রাসূল ﷺ এর আমলের মত নয়, তাই একজন দাসীকে অবশ্যই নিজে সমস্ত শরীর ঢেকে রাখতে হবে। সুন্দর চেহারার তুর্কি দাসী মেয়েদের জন্য, এটি কখনই রসূল ﷺ এর যুগের দাসীদের মতো বিষয়টি এক হতে পারে না, তাই দাসীর জন্য ওয়াজিব হচ্ছে নজর থেকে তার পূর্ণ শরীর ঢেকে করা।…’ তিনি এটিকে ভাল এবং গ্রহণযোগ্য যুক্তি দিয়ে ন্যায্যতা দিয়েছেন এবং বলেছেন: ‘পর্দার উদ্দেশ্য হল নামাজ ব্যতীত যে জিনিস থেকে একজন ব্যক্তি ফিতনার আশঙ্কা করে তা ঢেকে রাখা, এবং এই কারণেই একটি তার আশেপাশে কেউ না থাকলেও তাকে অবশ্যই নামাজে নিজেকে ঢেকে রাখতে হবে, এমনকি যদি সে এমন খালি জায়গায় থাকে যা একমাত্র আল্লাহই দেখতে পান। কিন্তু তাকানোর ক্ষেত্রে মানুষ যেদিকে তাকায় তা ঢেকে রাখা ওয়াজিব।’ তিনি বলেছিল: ‘এর কারণ তার কারণ থেকে ভিন্ন, কারণটি হচ্ছে: ফিতনার ভয়, এবং স্বাধীন নারী ও দাস নারীর মধ্যে এতে কোনো পার্থক্য নেই।’[51]শারহুল মুমতি আলা যাদ আল মুসতাকনি ২/১৫৮
ইবনুল কাইয়্যুম (রহ) বলেছেন,
“একজন মুক্ত, বিকৃত, ‘কুৎসিত বৃদ্ধ নারীর দিকে তাকানো হারাম; এবং অসামান্য সৌন্দর্যের দাসীর দিকে তাকানো জায়েজ’, অতঃপর এই কথাটা যে বলছে সে শরিয়ত প্রণেতার উপর মিথ্যাচার করেছে, আল্লাহ কোথায় (বৃদ্ধার দিতে তাকানো) নিষেধ করলেন এবং কোথায় (দাসীর দিকে তাকানো) অনুমতি দিলেন? এবং মহান আল্লাহ তায়ালা, তিনিতো শুধু বলেছেন {মুমিনদেরকে তাদের দৃষ্টি নত করতে বলুন} এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূল দেখার ক্ষেত্রে ব্যাপকতা বা সীমাবদ্ধতা কোনটাইতো বর্ণনা করেন নি। এখানে সুন্দরী দাসীর দিকে তাকানো যাবেনা বলে শর্ত আরোপ করেন নি কিন্তু যখন কোন দাসীর দিকে তাকানোটা ফিতনার কারণ বা ভয় থাকবে তখন তার দিকে তাকানোটা নিঃসন্দেহে হারাম। এখানে সন্দেহ বা সমস্যা দেখা দেওয়ার কারণটা ছিল বিধানদাতা অপরিচিতদের সামনে স্বাধীন নারীদেরকে তাদের মুখ ঢেকে রাখতে বলেছেন কিন্তু দাসীদের ক্ষেত্রে এই আইন সরাসরি আরোপ করেননি।[52]ইয়ালামাল মুউকিয়িন ২/৮০
শেখ আব্দুল রহমান বিন মোহাম্মদ বিন কাছিম (রহ) (মৃ. ১৩৯২ হি.) বলেন,
“দাসীর দিকে কামনারর দৃষ্টিতে তাকানো জায়েজ নয় (অর্থাৎ তাকে কেনার সময় ও অন্যের দাসীর দিকে)… অতঃপর তিনি দাসীর মাথা উন্মোচন করার বিষয়ে বলেন: অধিকাংশ মানুষের মধ্যে ফিতনার সাধারণতার কারণে আজ এটি উপযুক্ত নয়।”[53]হাশিয়াত আল-রাউদ আল-মুরাব্বা ৬/২৩৪
হিজরি ৬ষ্ঠ শতকের পর হতে জমহুর হাম্বলি ফকিহগণ দাসীর আওরাহ স্বাধীন নারীর মত এবং তার দিকে তাকানো জায়েয নয়, মুখমণ্ডল, হাত-পায়ের কিছু অংশ, মাথা, চুল ব্যতিত এই মতের দিকে ঝুকেছেন।[54]আল-মাওসুআহ আল-ফিকহিয়াহ ৩১/৪৯-৫০; কিতাবু ফাতহুল উলামা ফি দিরাসাত আহাদিস বুলুগুল মারআম, ৪ সংস্করণ, ২/১৬৭; islamqa.info ফাতাওয়া নং 220750, 198645; মাযালাতুল বুহুতুল … See Full Note
সালাফি আলেম তাকি উদ্দিন আল হিলালি (রহ) (মৃ. ১৪০৭ হি.) বলেন,
“দাস নারীর নাভি ও হাঁটুর মধ্যে যা আছে তা ‘আওরাহ’ এ মতবাদের মধ্যে পার্থক্য নেই। তিনি বলেনঃ আমাদের একদল সাহাবী বর্ণনা করেছেন যে, তার ‘আউরা’ কেবল একজন পুরুষের আওরাহ সম্পর্কে বর্ণিত বর্ণনার অনুরূপ। তিনি বললেনঃ এটা বিশেষ করে মাযহাবের জন্য একটা কুৎসিত ও অশ্লীল ভুল। এবং সাধারণভাবে আইন। আহমদের কথা এই বক্তব্য থেকে অনেক দূরে।… এটি বাঞ্ছনীয় যে তারা একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারীর মতো লুকিয়ে থাকবে, ঠিক এক্ষেত্রে।”[55]হাশিয়াতুল রাউদিল মুরাবি ১/৪৯৫
আবু সানাদ মুহাম্মদ (হাফি) বলেন,
স্বাধীন নারীর নগ্নতা এবং দাসীর নগ্নতার মধ্যে পার্থক্য করা সুন্নাতে প্রমাণিত নয়।[56]আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-৩, ৭৩/১১৯
জাহেরি মাযহাবের মত হল হাত ও মাথা ছাড়া বাকি সব কিছুই আওরাহ, তাই সমস্ত দেহ ঢেকে রাখতে হবে।[57]ইবনে হাযম, আল-মুহাল্লা, ৩/২১০; ১০/৩১; আল-মাওসুআহ আল-ফিকহিয়াহ আল ইসলামিয়াহ ২৬/৪৮
জাহেরি মাযহাবের ইমাম ইবনে হাজম (রহ) (মৃ. ৪৫৬ হি.) এর ব্যপারে বলা হয় তিনি দাসী ও স্বাধীন নারীদের পর্দায় পার্থক্য নেই বলেছেন, কিন্তু এটাও ভুল প্রচারণা। বাস্তবে তিনি দাসীর নাভি হতে হাটু পর্যন্ত আওরা, সালাতে পর্দার পার্থক্য এই দুটো মতের বিরোধিতা করেছিলেন। তার মত ছিল দাসী মাথা ও মুখ পুরো শরীর ঢেকে রাখতে হবে (হাত ও পায়ের কিছু অংশ ব্যতীত) এবং সালাতে দাসী ও স্বাধীন নারীর পর্দার কোন পার্থক্য নেই। তাই তিনি বলেছেন,
“নারী ক্রীতদাসী স্বাধীন নারীর মতো; কারণ প্রকৃতি এক এবং সৃষ্টি এক, এবং দাসত্ব তার বাস্তবতার বাইরে একটি নৈমিত্তিক বর্ণনা এবং দাসী এবং স্বাধীন নারীর (আওরাহর) মধ্যে পার্থক্য করার আল্লাহ ও তার রাসূল হতে কোনও প্রমাণ নেই।”[58]আল মুহাল্লা ৩/২১৮-৩২১
ইমাম ইবন হাজম (রহ) আরো বলেন,
“স্বাধীনা নারী ও দাসীদের ব্যাপারে ভিন্নতার ব্যাপারে (যা বলবো-) আল্লাহর দ্বীন এক, সৃষ্টিকূল এবং তাদের তবিয়তও এক। এখানে স্বাধীনা নারী ও দাসীদের ব্যাপারে বিধান এক। যদি না তাদের ব্যাপারে (বিধানে) পার্থক্য সৃষ্টির জন্য কোনো নস (কুরআন-সুন্নাহর বক্তব্য) পাওয়া যায়।”[59]আল মুহাল্লা, ২/২৪৮
জাহেরি মাযহাবের আরেক মুফাস্সির আবু হাইয়ান আন্দালুসি (রহ) (মৃ. ৭৪৫ হি.) বলেন,
“প্রাক ইসলামি যুগে দাসীদের কাছ থেকে যা প্রদর্শিত হত তাহল শুধু মুখমণ্ডল”[60]আল-বাহর আল-মুহীত ৭/২৪০
একটি প্রচারণা চালানো হয় ৬০০ হিজরির আগে নাকি এই মতটি ছিল না। যা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু না, কারণ এতক্ষন আমরা দেখলাম শাফেয়ী ও হাম্বলি মাযহাবের প্রথম মত। যা ৬০০ হিজরির অনেক আগ থেকে পাওয়া যায় এই বিষয়ে।
এইছাড়া এই মত আরো অন্যান্য কিছু কিছু আলেমগণ হতেও পাওয়া যায়। যেমন ইবনে আব্দুল দাহান (রহ) (মৃ. ৫৯২ হি.)[61]তাকবিমিল নাজার ফি মাসায়িল খিলাফিয়াত যায়িয়াত ১/৩২৭ , ইবনে বাজিজা আল মালেকি (রহ) (মৃ. ৬৭৩ হি.)[62]রাওদাতুল মুসতাবিন ফি শারহে কিতাবুল তালকিন ১/৩৫২ এছাড়া দাসীদের আওরাহ মাথা, হাতের কনুই পর্যন্ত ও পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত ছাড়া পুরোটাই যে আওরাহ এই মত আরো উল্লেখ রয়েছে ‘আল-কাফি’ , ‘আল-মুহারর’ , ‘আল-রাইয়াতিন’ , ‘আল-নাজাম’ এবং ‘আল-হাওয়াইন’ ইত্যাদি কিতাবে।[63]আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-২, ৬০/৪৮১; আল-মারদাওয়ি, আল ইনসাফ ফি মারিফাতিল রাজিহ মিনাল খিলাফ ৩/২০৩
ইবনে কাদি (রহ)-এর আল জামি কিতাবের লিখা রয়েছে,
‘দাসীদের ক্ষেত্রে মাথা, কনু পর্যন্ত হাত, গোড়ালি পর্যন্ত পা ব্যতীত বাকি সমস্ত দেহই আওরাহ। একজন পুরুষ যদি ক্রয় করতে চায় তবে একজন ক্রীতদাসীকে তাহলে পোশাকের উপর ঘুরিয়ে দেখা এবং হাত ও পা প্রকাশ করা ঠিক আছে।’[64]কিতাবুল বিনায়াত শারহুল হিদায়া ২/১৩৩; আল মুগনি ২/৩৩২
পুরুষের ন্যায় আওরাহ
সাধারণত মালেকি ফকিহগণ এবং শাফেয়ীদের ও হাম্বলি ফকিহদের একটা অংশের মত হল দাসীদের আওরাহ হল পুরুষের ন্যায়, অর্থাৎ নাভির নীচ হতে হাঁটু পর্যন্ত।[65]কিতাবুল জামি লি মাসায়িলল মুদাওয়ানাত ২/৬১১; কিতাবুল বিনায়াত শারহুল হিদায়া ২/১৩২; আল-মারদাওয়ি, আল ইনসাফ ফি মারিফাতিল রাজিহ মিনাল খিলাফ ৩/২০২; আহকামুল … See Full Note
একটি বাড়তি তথ্য দিয়ে রাখি, হাম্বলি ও শাফেয়ী ফকিহদের অনেকের মতে কোন দাসীর নিজের মালিকের সন্তান জন্ম দিলে তার উপর স্বাধীন নারীর পর্দার বিধান আরোপিত হয়, তখন শুধু মুখ ও মাথা খোলা রাখতে পারবে। এই মত হাসান বসরি (রহ) (মৃ. ১১০ হি.) হতে একটি রেওয়ায়েতের ভিত্তিতে।[66]মাওসুয়াত মাসায়িলিল জুমহুর ফি আল ফিকহুল ইসলাম ১/১৪৫; হালিয়াতিল ওলামা ফি মারিফাত মাযহাহিবুল ফুকাহা ২/৫৪; কাশশাফ আল ফাতাহ ১/১৮২; ওসুআহ আল-ফিকহিয়াহ আল … See Full Note
মালেকি মাযহাব
মালেকি মাযহাবে নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত আওরাহ হলেও তাদের উপর বাধ্যতামূলক যে তারা আওরাহ ছাড়াও নিজের পুরো দেহ ঢেকে রাখবে। তাদের স্তন, পেট, হাত ইত্যাদি প্রকাশ করা মাকরুহে তাহরিমি।(হারাম পর্যায়ের)[67]শারহুল তালকিন ১/৪৭১; মাওয়াহিব আল জালিল ২/১৮০-১৮৪; কিতাব আল ধাখিরাত লিল কারাফি ২/১০৩-১০৪; আল-মাওসুআহ আল-ফিকহিয়াহ আল ইসলামিয়াহ ২৬/৪৮
আশহাব বিন আব্দুল আজিজ (রহ) (মৃ. ২০৪ হি.) সহ আরো অনেকে বর্ণনা করেছেন যে, ইমাম মালিক (রহ) কে জিজ্ঞেস করা হলো, কোনো দাসী নারী যদি বুক খোলা রেখে বাহিরে যায়, আপনি কি তাকে ঘৃণা করবেন? তিনি বললেন,
“হ্যাঁ। এবং এটা করলে আমি তাকে শাস্তি দেবো।”[68]মাওয়াহিব আল জালিল, মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ আল মাগরিবি ১/৫০১; ইবনে আবি যায়েদ, আল নাওয়াজির ওয়াল জিওয়াদাতি, ৪/৬২৪; ইবনে আল কাত্তান, আল নাজার ফি আহকামুল নাজরী … See Full Note
ইমাম হাফিজ ইবনুল কাত্তান (রহ) (মৃ. ৬২৪ হি.) বলেন,
মহান আল্লাহ বলেন, (আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে) নিজের সৌন্দর্য প্রকাশ করার বিষয়ে এটি ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা সকল নারীর জন্য সে স্বাধীন নারী হোক বা দাসী নারী হোক। শুধু স্বাধীন বা আজাদ নারীর জন্য বিষয়টা এমন নয়, এটি নারী বা পুরুষ, অপরিচিত বা আত্মীয়, অথবা জামাই, প্রতিটি সৌন্দর্যতার দৃষ্টিকোণের ক্ষেত্রে ব্যাপক, প্রতিটি প্রকাশ করা না করার ক্ষেত্রে ব্যাপক, প্রতিটি দৃষ্টার ক্ষেত্রে ব্যাপক।
শুধু ২টি ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রাখা হয়েছে, একটি হল সৌন্দর্য যা নির্দিষ্ট করে খাস করা হয়েছে যা তার থেকে প্রকাশ পায়, যতটুকু প্রকাশ করা যায় সেটা প্রত্যেকের জন্য প্রকাশ করা জায়েজ। এবং অন্যটি হল, অন্যান্য যারা দ্রষ্টা রয়েছে তাদের মধ্যে কারা দেখতে পারে সেটা, যেমন আয়াতে বলা হয়েছে…[69]আল নাজার ফি আহকামুল নাজারী পৃ. ১৩৫-১৩৬
ইবনে রুশদ (রহ) (মৃ. ৫২০ হি.) নিজের কিতাবে উল্লেখ করেছেন,
আব্দুল মালেক (রহ) ওয়াদিহাতে বলেন, আমি মদিনায় কোন নারী ক্রীতদাসীকে বাইরে যেতে দেখিনি, যদিও সে সুন্দরী ছিল, তবে তার মাথা, বিনুনি করে বা কোঁকড়ানো চুল খোলা রেখে বের হয়, সে তার মাথায় কোন ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখে না যেন মানুষ বুঝে (সে যে দাসী)। তবে বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মানুষের মধ্যে পাপাচারের সাধারণতার কারণে আজ এটা (মাথা ঢেকে না রাখা) করা উচিত নয়।
অতএব বর্তমান সময়ে যদি একজন সুন্দরী দাসী তার মাথা খোলা রেখে বাজারে বা জনসম্মুখে বের হয়, তাহলে ইমামের উপর দায়িত্ব হল তা প্রতিরোধ করতে হবে, এবং দাসীরা স্বাধীন নারী থেকে ভিন্ন চিনার জন্য যা পরিচিত তা পরিধান করতে হবে। আর যদি মুজার্রাদ হয়ে বের হয় তাহলে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে, আর এটা বলেছেন ইমাম মালেক (রহ) উনার…। মুজার্রাদ দ্বারা উদ্দেশ্য হল যদি সে তার পিঠ, পেট ইত্যাদি খোলা রাখে, আর যদি সে খালি মাথা নিয়ে বের হয় তার জন্য তাহলে এটিতো পূর্বোক্তের উপর ভিত্তি করে তার সুন্নাত। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তৌফিক দান করুক যার কোন শরিক নেই।[70]কিতাবুল বায়ান ওয়াল তাহসিল ১৮/২৩
ইবনে আব্দুল বার (রহ) (মৃ. ৪৬৩ হি.) বলেন,
একজন নারী দাসীর আওরাহ একজন পুরুষের আওরাহর মতো, তবে তার মনিব ব্যতীত তার পোশাকের নিচে যা আছে তা দেখা এবং তার স্তন ও বক্ষ সম্পর্কে চিন্তা করা এবং যা তার যে যে অঙ্গগুলো দেখলে ফিতনার আশঙ্কা থাকে তার ক্ষেত্রেও বিধান একই, তা মাকরুহ হবে। তবে দাসী তার মাথা উন্মোচন করা মুস্তাহাব এবং তার শরীর উন্মোচন করা মাকরুহ।[71]কিতাবুল কাফি ফি ফিকহ আহলুল মাদিনা ১/২৩৮
মালেকি ফকিহগণ বর্ণনা করেন, ‘সে একজন দাসী নারীকে দেখুক অথবা স্বাধীন নারীকে দেখুক, একজন অপরিচিত পুরুষ তাদের থেকে যারা মাহরাম নয় তাদের শুধু চেহারা ও হাত-পায়ের কিছু অংশ দেখতে পারবে। তবে যদি নোংরামি বা কামনা, বাসনা, ফিতনার ভয় থাকে তাহলে সেটাও তার জন্য জায়েজ নয়। তাই তার জন্য তার (অন্যের দাসী বা স্বাধীন নারী যারা মাহরাম নয়) বুক, পাশ, পিঠ বা পায়ের দিকে তাকানো জায়েয নয়।[72]হাসিয়াতুল সাওয়ি আলাল শারহুল সাগির, বিলুগাত আল সালিক লিআকরাবুল মাসালিক ১/২৮৯ এমনই বর্ণনা পাবেন, আবু বকর বিন হাসান বিন আবদুল্লাহ আল-কাশ্নবী (রহ) (মৃ. ১৩৯৭ হি.)[73]আশ হালিল মাদারিক – শারহু ইরশাদুল সালিক ফি মাযহাব ইমাম আল আয়মাত মালিক ১/১৮৩, মাহরামুল দামিরী (রহ) (মৃ. ৮০৫ হি.) এর কিতাবেও।[74]কিতাব তাহবীরুল মুখতাসার, ওয়াহুয়াল শারহুল ওয়াসাতুলি বাহরাম আলী মুখতাসার খলিল ১/২৬৫
শাফেয়ী মাযহাবে (২য় মত)
শাফেয়ী মাযহাবের এই মতে সাধারণত দাসীদের আওরা হল নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত। কিন্তু বাহিরে গেলে, বা কারো সামনে আসলে তার চেয়ে বেশি ঢেকে রাখতে হবে। তখন যা সাধারণ ভাবে খোলা থাকে তা ব্যতীত বাকি সব ঢেকে রাখতে হবে।[75]আল খারশি ১/২৫০-২৫১; আল মুহাযযাব ১/৬৪; আল-মাওসুআহ আল-ফিকহিয়াহ আল ইসলামিয়াহ ২৬/৪৮
ইমাম নববী (রহ) বলেন,
“আমাদের মত হল, দাসীর আওরা একজন পুরুষের আওরাহর চেয়েও বেশি, এবং নারীত্বের ব্যক্তিত্বের কারণে পুরুষের আওরাহর থেকে অতিরিক্তত অংশ অবশ্যই ঢেকে রাখতে হবে।”[76]কিতাব রাওদাতুল তালিবিন ১/২৮৩-৮৪
একই মত উল্লেখ করেছেন শাফেয়ী মাযহাবের অন্যান্য স্কলার যেমন, আবুল কাসিম আল রাফেয়ী (রহ) (মৃ. ৬২৩ হি.), আল ইসনাবী (রহ) (মৃ. ৬৭২ হি.) এছাড়া আরো অনেকে।[77]আল-আজিজ শরহ আল-ওয়াজিজ, শারহুল কবীর লিল আল-রাফি ২/৩৬; কিতাবুল শাওরি বিল আওর পৃ. ৪৪; মাতালিল দাকয়িক ফি তাহরির আল জামি ওয়াল ফাওয়ারিক ২/৮০
ইমাম নববী (রহ) দাসীর আওরাহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে গিয়ে বলেছেন,
“দাসীর দিকে তাকানোর ক্ষেত্রে ৩টি দিক রয়েছে, প্রথমটি আল-বাগাওবি এবং আল-রুয়ানি যা উল্লেখ করেছেন এবং তা সবচেয়ে সঠিক: নাভি এবং হাঁটুর মাঝখানে যা আছে তা দেখা হারাম। অন্য কিছু হারাম নয়, তবে তা মাকরুহ”[78]কিতাব রাওদাতুল তালিবিন ১/২৮৪, ৭/২৩
তাই শাফেয়ী ওলামাদের মত হল ক্রীতদাসীদের বিধান স্বাধীন নারীদের মত, শুধু ক্রীতদাসীদের মাথা, পা, হাতের পাঞ্জা কেবল বাধ্যতামূলক আবরণীয় নয়।[79]তাফসীরে মাজহারী, ৮/৩৯২
ইবনুল মুনজির (রহ) (মৃ. ৩১৮ হি.) বলেন,
“যে দাসীর মালিক সে নয় বা অর্ধ মালিকানাধীন তাহলে যদি সে সুন্দর হয় তাহলে তার দিকে তাকানোটা হারাম হবে, তেমনই ফিতনার আশঙ্কা থাকলে ছোট বাচ্চার দিতে তাকানোও হারাম”[80]আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-২, ৬০/৪৮০; মানার আল সাবিল ২/১৩৮
ইবনে রাসলান (রহ) (মৃ. ৮৪৪ হি.) বলেন,
(অপরিচিতি দাসীকে দেখা) আর এটা তখনই হয় যখন ফিতনা হতে নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকে, অথবা কামনা বাসনা, যৌনতা, ফিতনা তুলনা মুলক কম থাকে। কিন্তু যখন ফিতনার আশঙ্কা থাকে, তখন আয়াত ও হাদিসের আপাত অর্থ হচ্ছে এটি প্রয়োজনের শর্ত নয়। নারীদের (স্বাধীন) ঘর থেকে অনাবৃত চেহারা নিয়ে বের হতে বাঁধা দেওয়ার বিষয়ে মুসলিমদের ঐক্য রয়েছে, বিশেষ করে ফিতনার আশঙ্কা থাকলে। আল-কাদি আয়াজ পণ্ডিতদের থেকে বর্ণনা করেছেন: তার পথে তার মুখ ঢেকে রাখা জরুরী নয়, এবং পুরুষদের উচিত আয়াতটির দিকে তাদের দৃষ্টি নত করা। আল কাদি ইয়াজ আলেমদের থেকে বর্ণনা করেছেন: এইভাবে তার (দাসীর) মুখ ঢেকে রাখা জরুরী নয়, এবং পুরুষদের উচিত আয়াতের প্রতি খেয়াল করে তাদের দৃষ্টি নিচু করা।[81]আউন আল-মাবুদ ১১/১৬২
হাম্বলি মাযহাব (২য় মত)
হাম্বলি মাযহাবের দ্বিতীয় মত হল দাসীর আওরাহ পুরুষের ন্যায়। কিন্তু ইমাম আহমদ (রহ) এই মতের ছিলেন বলে এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না, কিন্তু এর বিপরীতে পাওয়া যায়। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ) কে দাসী নারীর চেহারা ঢেকে রাখার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,
“যদি সে সুন্দরী হয় তাহলে (সে চেহারা ঢেকে রাখাতে কোন) অসুবিধা নেই, ইসহাক বলেন, “এটা বলেছেন কারণ তার এবং অন্যদের উপর ফিতনার আশঙ্কা থাকে।” (এছাড়া তিনি বেশ কয়েক স্থানে মাথা ও মুখ ছাড়া পুরো দেহকে ঢেকে রাখার পক্ষে কথা বলেছেন, উত্তম বলেছেন)।[82]কিতাবুল জামি লিল উলুম আল ইমাম আহমাদ আল ফিকহ ১৩/৩০১
ইবনে কুদামা (রহ) (মৃ. ৬২০ হি.) বলেন,
“যদি দাসী সুন্দরি হয় তাহলে ফিতনায় পতিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাই তার দিতে তাকানো হারাম। এসব দাসীদের ব্যাপারে ইমাম আহমদ বলেন, যদি সে সুন্দরি হয় তাহলে সে নেকাব পড়বে। কারণ নিজের মালিকানাধীন নয় (নিজের দাসী না) এমন কিছু দাসী আছে যাদের দেখলে মনে ফিতনার উদয় হতে পারে।”[83]আল মুগনি ৭/১০৩
শেখ উসাইমিন (রহ) হাম্বলি মাযহাবের এই মতের পক্ষে হওয়ার পরও ইবনে তাইমিয়া (রহ) এর দাসী সম্পর্কে এই কথাটি,
“পর্দার উদ্দেশ্য হল নামাজ ব্যতীত যে জিনিস থেকে একজন ব্যক্তি ফিতনার আশঙ্কা করে তা ঢেকে রাখা। … তাই তাকানোর ক্ষেত্রে মানুষ যেদিকে তাকায় তা ঢেকে রাখা ওয়াজিব। এর কারণ হল, ফিতনার ভয়, এবং স্বাধীন নারী ও দাস নারীর মধ্যে এতে কোনো পার্থক্য নেই।”
নিজের কিতাবে উল্লেখ করে বলেন,
“তিনি যা বলেছেন তা নিঃসন্দেহে সঠিক, এবং তিনিই এর জন্য নির্ধারিত হতে হবে।”[84]কিতাবুল শারহুল মুমতি আলা যাদ আল মুসতাকনি ২/১৫৮
হাম্বলি মাযহাবের পূর্বে বা বর্তমানে যারা দাসীর নাভি হতে হাঁটু আওরাহ বলেছেন তাদের বেশির ভাগের কিতাবে বলা হয়েছে, দাসীর সাধারণত যতটুকু দেখা যায় ততুটুকু আওরাহ নয়। তা হল ঘাড় সহ মাথা, চুল মুখ, কনুই থেকে হাত, পায়ের গোড়ালি হতে পা।[85]শারহুল উমদাহ ২/২৭০; মাসায়েলে আব্দুল্লাহ পৃ. ৬২; আল মুগনী ২/৩৩২; কিতাব তালিকাত ইবনে উসাইমিন আলাল কাফি লি ইবনে কুদামা ১/২৯৫; আল কাফি ফি ফিকহুল ইমাম আহমেদ … See Full Note
উক্ত বক্তব্যগুলোতে যদিও বলা হয়নি যে দাসীগণের বুক আওরাহ বা আওরাহ নয় কিন্তু তাদের বক্তব্য থেকে বুঝা যায় দাসীরা বুক উন্মুক্ত রাখতেন না। এছাড়া হাম্বলি মাযহাবে সাধারণত ফিতনার আশঙ্কার কারণে আগেও দাসীদের নিজেকে ঢেকে রাখার বিধান ছিল। দাসীদের নিরাপত্তা, ফিতনা থেকে বাঁচা ইত্যাদির জন্য তাদের আওরাহ হাঁটু হতে নাভি হলেও পুরো দেহ ঢেকে রাখার ফাতাওয়া পাওয়া যায়।[86]মাজমুউ আল ফাতওয়া ১৫/৩৭৩-৩৭৭; ইলাম আল-মুওয়াকিয়ীন ২/৪৬-৪৭; শারহুল উমদাহ আল ফিকহ, আল রাজিহি ৭/৭; কাশশাফুল কিনা ১/৩১৬
মাহরাম নারীর ন্যায় আওরাহ
হানাফি মাযহাবে
হানাফি ফিকহে সুরাইয়ার আওরাহ একজন মাহরাম নারীর সমান। ইমাম ইবনে আবিদীন (রহ) (মৃ. ১২৫২ হি.) একজন দাসীর আওরা সম্পর্কে বলেছেন যে,
একজন দাসী নারীর আওরাহ মাহরাম নারীর আওরাহর অনুরূপ, যেখানে একজন দাসী-নারীর জন্য এমন কিছু দেখা জায়েয যা মাহরাম নারীর ক্ষেত্রে দেখার অনুমতি রয়েছে।[87]রদ্দুল মুহতার ১/৪০৪-৪০৫
ইমাম আবদুল আল-লাখনবী (রহ) (মৃ. ১৩০৪ হি.) বলেন,
“ফুকাহাগণ ঘোষণা করেছেন যে, একজন পুরুষের জন্য অন্যের ক্রীতদাসীর শরীরের সেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দেখা জায়েয, যেগুলো তার নিজের মাহরাম নারীদের দেখার অনুমতি রয়েছে এবং এটা স্পষ্ট যে তাকে দেখার অনুমতি রয়েছে।”[88]আল সিয়ায়াত ফী কাশফ মাফী শরহুল উয়িকায়া ২/৭১
হানাফি জমহুর স্কলারদের মত হল মাহরাম ও দাসীদের আওরাহ হল পেট, পিঠ, নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত অংশ। অর্থাৎ নারীদের জন্য মাহরামের সামনে সতর হল, মাথা, চুল, গর্দান, কান, হাত, পা, টাখনু, চেহারা, গর্দান সংশ্লিষ্ট সিনার উপরের অংশ ছাড়া বাকিটুকু।[89]আল হিদায়া ৪/৪৬১; আশরাফুল হিদায়া, ইসলামিয়া কুতুবখানা, ৯/৬১৫-১৮; আল-বাহরুল রায়েক ৮/৩৫৫ মুসলিমরাতো আর সেইসব কাফেরদের মত না যারা নিজেদের মা-বোন, খালা-ফুফু, নানী-দাদী ইত্যাদি মাহরামদের দিকে কুদৃষ্টি দেয়। পূর্বে মাহরামদের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা সম্মান আকাশ চুম্বি ছিল এবং ইসলামেতো মাহরামদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক করার শাস্তি সরাসরি মৃত্যুদণ্ড।
লক্ষনীয় বিষয় হল হানাফি মাযহাবে মাহরামদের সামনে সম্পূর্ণ স্তন উন্মুক্ত রাখাকে জায়েজ বলা হয়নি। কারো কারো মতে স্তন আওরাহর অন্তর্ভুক্ত নয় কিন্তু অন্য ওলামাদের মতে স্তন আওরাহর অন্তর্ভুক্ত, সেগুলো উন্মুক্ত রাখা ও মাহরাম বা নন মাহরাম কারো দেখা জায়েজ নেই। অর্থাৎ স্তন, পেট, পিঠ, নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত মাহরামদের সামনে আওরাহ যা ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক এবং এর বাহিরে যা আছে তা আওরাহ নয়। (আর এটাই বেশির ভাগ হানাফি ওলামাদের মত)[90]শারহুল থামেরি ৪/৩৮৫; আল হিদায়া ৪/১০৭; মুখতাসার কুদূরি পৃ. ২৫৯; আল-বাহরুল রায়েক ৮/৩৫৫, হাশিয়া ইবনে আবিদীন ৫/২৫; বাদাই আল-সানাই ৬/৪৮৯; রদ্দুল মুহতার ৯/৫২৭, ৫২৮; … See Full Note
আবু হানিফা (রহ) এর ছাত্র মুহাম্মদ ইবনে হাসান শাইবানী (রহ) (মৃ. ১৮৯ হি.) লিখেছেন,
আর যদি কোন পুরুষ দাসী ক্রয় করতে চায় তবে তার চুল, বুক, পা, পায়ের পাতা ও স্তন দেখতে দোষের কিছু নেই, যদিও তার কামনা চলে আসে। কিন্তু সেগুলোর দিকে তাকানোও মাকরুহ (মাকরুহে তহরীমী) যদি সে কেবল কামনা-বাসনা, লালসার জন্য দাসীর দিকে দেখে, এবং ক্রয় করার কোন উদ্দেশ্য না থাকে।
এবং সে তার এই অঙ্গগুলো স্পর্শ করে যদি ,এই ব্যাপারে পূর্বের ন্যায় রায় দেওয়াটা বিপজ্জনক, কারণ আমি তার কাছে এই জায়গাগুলির কোনটিকে স্পর্শ করা ঘৃণা করি, এমনকি যদিও সে ক্রয় করতে চায়। এই দৃষ্টিকোণ থেকে আগের মাসলার সাথে পার্থক্য রয়েছে, কারণ স্পর্শ করার সাথে দেখা বিষয়টা এক নয়।
(তারপর ইমাম শায়বানী হুরমতে মুসাহারাতের মাসালার বর্ণনা করে বলেন দেখায় এটা সাব্যস্ত হয় না কিন্তু স্পর্শ করায় হয় এবং বলেছেন…)
সেজন্য আমরা যদি তার কামনা চলে আসে তাহলেও তাকানোর ক্ষেত্রে অনুমতি দিয়েছিলাম, এবং আমরা স্পর্শ করাকে মাকরুহ বলেছি যদি সে কামনার আশঙ্কা থাকে। তাই এই দুই মাসালার ক্ষেত্রে একই রকম রায় দেওয়াকে আমরা বিপজ্জনক মনে করেছি।[91]কিতাবুল আসলি মুহাম্মাদ বিন আল হাসান ২/২৪০
ইবনে আবিদীন (রহ) বলেন, ‘অধিকাংশ হানাফিদের মতে দাসীদের স্তনও নন মাহরামদের সামনে উন্মুক্ত করা বৈধ নয়, তাই ঢেকে রাখতে হবে।’ কিন্তু সব রকম ফিতনা, কামনা, বাসনা, লালসা ইত্যাদির আশঙ্কা থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ না থাকে ও এসবের ভয় থাকে, ফিতনার আশঙ্কা থাকে, সেক্ষেত্রে একজন নারী তার মাহরামদের সামনে সম্পূর্ণ পর্দা করা আবশ্যক হবে। যদি এমন কোন ভয় থাকে, তাহলে কোন নারীর জন্য তার বুক, স্তন (যারা স্তনকে আওরাহর অন্তর্ভুক্ত বলেন নি তারাও বলেছেন), হাত, পা ইত্যাদি এমনকি মাহরামদের সামনেও উন্মোচন করা বৈধ হবে না, তেমনই একজন মাহরাম পুরুষের জন্য তার দেহের এই অংশগুলো দেখা বা স্পর্শ করাও জায়েজ হবে না। একইভাবে অবশ্যই দাসী নিজের দেহ ঢেকে রাখতে বাধ্য, কামনার সাথে অপর জনের দাসীর দিকে তাকানো, স্পর্শ করা কোন পুরুষের জন্য বৈধ নয়। এমনকি দাসী ক্রয় করতে গেলেও কামনার বসে কোন নারী দাসীকে স্পর্শ করা বৈধ নয়।[92]আল-লুবাব ফি শরহুল কিতাব, ৩/২১৮; কিতবুল ইখতিয়ার লিতালিলিল মুখতার ৪/১৫৪-১৫৬; কিতাবুল বিনায়াত শারহুল হিদায়া ১২/১৫৫-১৬০; কিতাব আল মাবসুত লিল শাইবানী ১/৪১৮; … See Full Note
যতটুকু পার্থক্য থাকলে যথেষ্ট
ওমর (রা) দাসীকে মুখ ঢাকতে বারন করেছিলেন শুধু। এর ভিত্তিতে চার মাযহাবের জমহুর ওলামাদের মত হল দাসীরা শুধু মাথা, চুল ও মুখ খোলা রাখলেই যথেষ্ট হবে। অর্থাৎ মাথা ও মুখমণ্ডল ঢেকে না রাখলেই (বাকিগুলো ঢেকে রাখলে) যথেষ্ট হবে এটা বুঝার জন্য যে তারা স্বাধীন নারী নয় বরং দাসী।
এই মন্তব্য করেছেন, তাফসিরকারকদের মধ্যে – আত তাবারি[93]তাফসিরুল তারাবি ২০/৩২৪, আবু বকর আল জাসসাস[94]আহকামুল কোরআন ৫/২৪৫, আল জামাখশারি[95]তাফসীর আল-কাশশাফ ৩/৫৬৯, নাফাসী[96]তাফসির আল নাফাসী ৩/৩১৫, ইবনে জুযী আল কালকি[97]তাফসির ইবনে যাজাই, আল তাসহিল লিউলুমুল তানজিল ৩/১৪৪, ইবনে কাসীর[98]তাফসীর ইবনে কাসীর ৩/৫১৯, জালালুদ্দিন সুয়ুতী, জালালুদ্দিন মহল্লী[99]তাফসির আল জালালাইন ১/৫৬০ (রহ)-গণ।
ফকিহদের মধ্যে – আবু ইউসুফ আল-হানাফী[100]আবু ইউসুল আল হানাফি ফিল আসার ১/২৯, শামস আল-দীন, মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ, আল-খতিব আল-শেরবিনি হাল শাফেয়ী[101]আল মুগনিল মুহতাজ ৩/১৩১, ইবরাহীম বিন মুফলিহ আল হাম্বলী[102]আল মুবদিহ ফি শরহুল মাকনাই ১/৩৬১, মুহাম্মাদ বিন কাব আল-কুরাযী[103]ইবনে সাদ ৮/১৭৬, ইবনে তাইমিয়া [104]মাজমু’আল ফাতওয়া ১৫/৩৭২ (রহ)-গণ।
অন্যান্যদের মধ্যে – ইবনে সালাম[105]গারিব আল হাদিস লিল ইবনে সালাম ৩/৩০৫, আল খাত্তাবি[106]গারিব আল হাদিস লিল খাত্তাবি ৩/৩০৫ ও আমাল আল খামিসা (হাফি)[107]কাশফুল গুমাতি আল আদিলাত আল হিজাব ফিল কিতাব ওয়াল সুন্নাহ, ২য় সংস্করণ, পৃ. ১২৯ (রহ)-গণ
আবুল হুসাইন ইয়াহিয়া বিন আবি আল-খায়ের বিন সালেম আল-ওমরানি আল-ইয়ামান আল-শাফিঈ (রহ) বলেন,
দাসীরা সর্বনিম্ন মাথা ডাকবে না, এতে কোন মতভেদ নেই।[108]কিতাবুল বায়াস ফি মাযহাব আল ইমাম আল শাফেয়ী – আল ইমরান ২/১১৮
স্তন খোলা রাখা জায়েজ ফাতাওয়ার জবাব
কিছু আলেম ফাতাওয়া দিয়েছিলেন দাসীরা সাধারণ ভাবে যেকোনো পরিস্থিতিতে স্তন বা বক্ষদেশ উন্মুক্ত রাখতে পারবে। কিন্তু তাদের এই ফাতাওয়া সঠিক নয়, কারণ এটা কোরআন ও হাদিস বিরোধী, সালাফদের আমলেরও বিরোধী, জমহুর ওলামাদের মতের বিরোধী, শালীনতার বিরোধী।
দাসীর আওরাহ প্রায় স্বাধীন নারীদের ন্যায় এই মতের স্কলারদের দৃষ্টিতেতো এই ফাতাওয়া সরাসরি বাতিল। আর যাদের মতে দাসীর আওরাহ নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত তাদের মধ্যেও অধিকাংশের মতে ফিতনার আশঙ্কা, কামনা বাসনা, নিরাপত্তা, লালসা ইত্যাদির ভয়ের কারণে তাদের আওরাহ নাভি হতে হাঁটুর পর্যন্ত হলেও তাদেরকে নিজের পুরো দেহ ঢেকে রাখতে হবে। এই মতের পক্ষে কোরআন থেকেও দলিল রয়েছে। কোরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেছেন,
আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। সূরা নূর আয়াত ৩১
এই আয়াতের তাফসিরে বহু হাদিস দেখা যায় যেখানে এই আয়াত নাজিল হওয়ার সাথে সাথে তখনকার নারীরা নিজেকে ঢেকে ফেলেন।[109]বুখারি ৪৭৫৮-৫৯; আবু দাউদ ৪১০১, ৪১০২ সেইসব হাদিসের কোথাও দাসী ও স্বাধীন নারীর এই ক্ষেত্রে পার্থক্য করার প্রমাণ পাওয়া যায় না। তাই বহু ওলামা বলেছেন দাসীদের সতর বা আওরাহ নাভি থেকে হাঁটু হলেও তাদেরকে নিজের বুক ঢেকে রাখতে হবে। যেমন ইমাম হাফিজ ইবনুল কাত্তান (রহ) এর বক্তব্য উল্লেখ করেছি যেখানে তিনি এই আয়াত বর্ণনা করে বলেছেন এই আয়াত দাসী ও স্বাধীন নারী উভয়ের উপর প্রযোজ্য।[110]আল নাজার ফি আহকামুল নাজরী পৃ. ১৩৫-১৩৬
আবু হাইয়ান আল আন্দালুসি (রহ) বলেন,
“তাঁর ‘ মুমিন নারী ‘ বাণীর আপাত অর্থ স্বাধীন নারী ও দাসী। দাসী নারীদের দ্বারা ফিতনার সম্ভাবনা আরও বেশি কারণ তাদের বিভিন্ন কার্যকলাপ, অবাধ বিচরণ, যা স্বাধীন নারীদের থেকে ভিন্ন। এই আয়াতে নারীদের সাধারণতা (সাধারণ বিধান) থেকে তাদের (দাসীদের) বাদ দিতে স্পষ্ট প্রমাণের প্রয়োজন।”[111]আল বাহরুল মুহীত ৭/২৫০
আলবানি (রহ) এই আয়াতের ক্ষেত্রে যারা দাসী ও স্বাধীন নারীদেরকে আলাদা করার চেষ্টা করেছে তাদের সম্পর্কে বলেন,
আশ্চর্যের বিষয় ছিল যে তিনি এটিকে নবীর সময় বিশ্বাসীদের সুন্নাতের জন্য দায়ী করেছিলেন। এবং যদি এটি একটি সুস্পষ্ট পাঠে সত্য হয়ে থাকে তবে এটি এখতিয়ারের দাবির বৈধতার পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি এবং একটি স্পষ্ট প্রমাণ থাকার কথা যে সর্বশক্তিমান আল্লাহর বাণী (এবং বিশ্বাসী নারীদের) স্বাধীন নারীদের জন্য আলাদা করা হয়েছে। কিন্তু আমি এটার সত্যতার প্রমাণ দেখি না।[112]জিলবাল আল মাহরাতিল মুসলিমাহ, পৃ. ৯৫
কিন্তু তারপরও যারা এই ফাতাওয়া দিয়েছেন তাদের ফাতাওয়া কোরআন বিরোধী বলে অনেক আলেম মন্তব্য করেছেন। যেমন islamqa.info তে আলেমগণ বলেছেন,
“অনেকে একজন অপরিচিত লোকের জন্য দাসীর চুল, বাহু, পা, বুক ও বুকের দিকে তাকানোকে জায়েয বলেছে, যদিও কুরআন বা সুন্নাহ থেকে এর কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না, এবং এটি মহান আল্লাহর বাণীর বিপরীত।”[113] شبهات حول مسائل في الحجاب ، والإجابة عنها
এছাড়া এই বিষয়ে অনেকটা একই রকম মন্তব্য করেছেন আলবানি (রহ)[114]আল জাইফাহ ২/৩৭৩, হা. ৯৫৬
দাসীরা উলঙ্গ হয়ে সালাত আদায় করবে?
সালাতে পোষাক সম্পর্কে ইজমা রয়েছে, সেই ইজমা বর্ণনা করতে গিয়ে ইবনে তাইমিয়া (রহ) বলেন,
আলেমরা একমত যে যে ব্যক্তি উলঙ্গ হয়ে সালাত আদায় করে এবং পোশাক পরিধান করতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও, তাহলে তার নামাজ বাতিল।[115]মাজমু’ আল-ফাতাওয়া ২২/১১৬, ১১৭
ইবনে আব্দুল বার (রহ)-ও এই ইজমাহ বর্ণনা করেছেন,
যে ব্যক্তি পোশাক পরিধান করতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও উলঙ্গ হয়ে সালাত আদায় করে, তার নামাজ বাতিল।[116]আল তামহিদ ৬/৩৭৯
ইজমা যেহেতু কোরআন ও হাদিসের উপর ভিত্তি করেই হয়ে থাকে তাই আর অন্য রেফারেন্স টানছি না। যাইহোক, এখন অনেকের মতে যেহেতু দাসীদের আওরাহ নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত তারা প্রশ্ন করতেই পারে যে তাহলে কি এইটুকু খোলা রেখেই সালাত আদায় করা যাবে কিনা।
প্রথমে একটি হাদিস দেখে আসি, রাসূল ﷺ বলেছেন,
তোমাদের কেউ এক কাপড় পরে এমনভাবে যেন সালাত আদায় না করে যে, তার উভয় কাঁধে এর কোন অংশ নেই।[117]মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, ১/৩৫৩; বুখারী ৩৫৯, ৫১৬; আহমাদ ৭৩১১
এই হাদিসটি উল্লেখ করে শেখ উসাইমিন (রহ) বলেন,
“শর্ত অনুসারে পুরুষের কাঁধ আওরাহ হয় না, তবুও, নবি করীম ﷺ নামাজের সময় এটিকে ঢেকে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন: ‘এতে তার কিছুই করার নেই।’ এটি নির্দেশ করে যে বিধানের ভিত্তি শুধু গোপনাঙ্গকে ঢাকা নয়। (গোপনাঙ্গ ডাকা একটি শর্ত, কিন্তু এটি একমাত্র শর্ত নয়)”
(আরেক স্থানে) “নফল সালাতে শুধু আওরাহ ঢেকে সালাত আদায় যথেষ্ট, কিন্তু বাড়তি কাপড় পরিধান করা সুন্নত। ফরস সালাতে বাড়তি পড়া বাধ্যতামূলক, শুধু আওরা ঢেকে রাখলে সালাত আদায় হলেও গুনা হবে।”[118]শারহুল মুমতি আলা যাদ আল মুসতাকনি ২/১৫০-১৫২, ১৬৭
পুরুষদের আওরাহ নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত, তারপরও এই হাদিসে কাঁধে কাপড় রাখতে বলা হয়েছে। এই থেকেও বুঝা যায় পিঠ ও বুকও ঢেকে রাখতে হবে। কেউ এটা বলতে যাবেন না যে এই হাদিস শুধু পুরুষের জন্য, কারন যেখানে নারীদের পর্দা পুরুষের চাইতে কঠোর সেখানে এই হাদিসের বিধান শুধু পুরুষের জন্য খাস এটা মানাটা কষ্টসাধ্য।
ইবনে তাইমিয়া (রহ) এই হাদিসটি উল্লেখ করে বলেন,
সর্বশক্তিমান আল্লাহ প্রতিটি মসজিদে সাজসজ্জা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন এবং পর্দার বিপরীতে জাতির জামা এবং পোশাক তার অলংকরণের অংশ, আর কারণ রাসূল ﷺ একজন পুরুষের কাঁধে কিছু না রেখে একক পোশাকে সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন, তাহলে তিনি কীভাবে নারী দাসীকে তার পিঠ ও বুক অনাবৃত রেখে সালাত আদায় করার অনুমতি দেবেন? তার কাছ থেকে এর প্রকাশ পুরুষের কাঁধের উন্মোচনের চেয়েও কুৎসিত ও অশ্লীল জেনেও। আর কারণ নীতি হল যে, একজন নারী ক্রীতদাসের আওরাহ যেমন স্বাধীন নারীর মতো, তেমনি একজন দাসের আওরাহ স্বাধীন পুরুষের মতো। … কারণে তাদের পর্দা একজন মুক্ত নারীর পর্দার চেয়ে কিছু কম।… এটি তার মাথা এবং এর চার দিক থেকে এর উপশহরগুলিকে উন্মুক্ত করে অর্জন করা হয়। পিঠ এবং বুকের জন্য এটি আগের (ঢেকে রাখতে হবে) মতোই থাকে।[119]শারহুল উমদাহ ২/২৭৫
আল খামাসি (হাফি) নিজের কিতাবে অনেকটা এরকম কিছু বলেন যে,
বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে প্রচার করা হয় যে ইবনে হাজম মুখ ঢেকে রাখার ক্ষেত্রে স্বাধীন নারী এবং দাসী নারীদের মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে উমর কর্তৃক প্রমাণিতভাবে বর্ণিত তথ্যটি গ্রহণ করেননি! বরং সত্য কথা হল যে ইবনে হাজম যা অস্বীকার করেছেন তা হল,… নারী দাসীকে চুল খুলে নামাজ পড়তে হবে। … তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, উমর (রা) হতে যা বর্ণিত হয়েছে তা হল বাইরে যাওয়ার সময় জিলবাব পরার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে পার্থক্য করার বিষয়ে, নামাজের আওরাহতে বিষয়ে নয়।[120]কাশফুল গুমাতি আল আদিলাত আল হিজাব ফিল কিতাব ওয়াল সুন্নাহ, ২য় সংস্করণ, পৃ. ১২৯
ইবনে হাজম (রহ) নিজের কিতাবে বিভিন্ন জায়গায় বলেছেন, দাসীদের বাহিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীন নারীদের সাথে হিজাব করার পার্থক্য রয়েছে, কিন্তু সালাতের ক্ষেত্রে স্বাধীন নারী ও দাসীদের আওরাহ একই রকম।[121]আল মুহাল্লা ২/২৫২, ৩/২২১-২২২
আলবানি (রহ) বলেন,
“ফিকাহ শাস্ত্রের কিতাবে যা বর্ণিত হয়েছে তা সঠিক নয় যে, নামাজে নারী দাসীর আওরাত পুরুষের মানুষের আওরাতের সমান। একথা সত্য যে, স্বাধীন নারী ও দাস নারীর নামাজে আওরাত একই, কিন্তু (কিছু ওলামাদের মত) স্বাধীন নারী ও দাস নারীর মধ্যে পার্থক্য হলো দাস নারী মুখ খোলা ও স্বাধীন নারীদের ওপর হিজাব (মুখ ঢেকে) থাকা।[122]আল সামারুল মুসতাতাব ফি ফিকহুল সুন্নাত ওয়াল কিতাব ১/৩২৪
ইমাম নববী (রহ) এর মতে, দাসী নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢেকে সালাত আদায় করলে তা বৈধ হবে না। তাকে স্তনও ডাকতে হবে, কারণ সালাতে পর্দা করা একটি শর্ত।[123]কিতাব রাওদাতুল তালিবিন ১/২৮৩-৮৪ আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ)-কে দাসীর সালাত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তর দেন, তিনি মাথা ঢেকে রাখা পছন্দ করেন, কিন্তু মাথা না ঢেকে সালাত পড়লেও অসুবিধা নেই।[124]কিতাবুল জামি লিল উলুম আল ইমাম আহমাদ আল ফিকহ ৬/৪৮ ইমাম মালেক (রহ) বলেন, মুকাতাব, মুদাব্বার এবং মুক্তকৃত ক্রীতদাসীদের কেউ কেউ ও নারী ক্রীতদাসী তার সমস্ত শরীর ঢেকে রাখা পোশাক ছাড়া সালাত আদায় করবে না।[125]কিতাবুল জামি লি মাসায়িলল মুদাওয়ানাত ২/৬১০
ইবনুল জাল্লাব (রহ) (মৃ. ৩৭৮ হি.) বলেন,
“নারী ক্রীতদাসীর আওরাহ পুরুষের আওরাহর মতো, এবং নামাজের সময় তার শরীর অনাবৃত করা তার জন্য অপছন্দনীয় এবং তার জন্য তার মাথা উন্মোচন করা বাঞ্ছনীয়।”[126]কিতাবুল তাফরিহ ফি ফিকহুল ইমাম মালিক বিন আনাস ১/৯০
ইবনে হাজম (রহ) ইবনে তাইমিয়া (রহ) দ্বারা সমর্থিত ইজমার উল্লেখ করেছেন,
তারা একমত যে এমন পোষাক যা দ্বারা দাসীর হাঁটু হতে নাভি সম্পূর্ণ ঢেকে যায় তা পরিধান করে সালাত আদায় করলে তা তার সালাতের জন্য যথেষ্ট হবে। … এবং তারা একমত যে, যদি কোন ক্রীতদাসী তার সালাতের সময় তার চুল এবং তার সমস্ত শরীর ঢেকে রাখে তবে সে তা আদায় করেছে (সঠিক ভাবেই)।[127]ইবন হাযম ফি মারাতিব আল-ইজমা ১/২৯
ওলামাগণ বলেছেন আওরা ২ প্রকার, ১. সালাতের আওরাহ ২. পরপুরুষের সমনে যাওয়ার সময় আওরাহ[128]ফাতহুল ওলামা বিশারহে মুরশিদিল আনাম ১/৩৪-৩৪; আল ফিকহুল হাম্বলি, শারহুল উমদাহ ৪/২৬৮; আলামুল মুকিয়িনান রাব্বিল আলামিন ২/৮০; হাশিয়াত সুলাইমানিল যামাল আলা … See Full Note সালাতের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক যতটুকু আওরাহ ততটুকু পরিধান করে সালাত আদায় করলে তা আদায় হয়ে যাবে, কিন্তু বেশি ঢেকে রাখা উত্তম। একা সালাত আদায় করলে শুধু আওরাহ ঢেকে রাখলেই হবে। কিন্তু মসজিদে বা মানুষের সামনে সালাত আদায় করলে ৫/৬ মাযহাবের অধিকাংশ আলেমদের মতে দাসীদের প্রায় পুরো দেহ ঠেকে রাখতে হবে, যেমনটা আগেই আলোচনা করে এসেছি। আর যারা বলেছেন নাভি হতে হাঁটু পর্যন্ত আওরাহ তাদের ক্ষেত্রে অধিকাংশই ফাতাওয়া দিয়েছেন ফিতনার আশঙ্কার কারণে দেহের বেশিরভাগই ঢেকে রাখতে হবে।
ইবনে তাইমিয়া (রহ) ও একই কথা বলেছেন। একটি হল তাকানোর ক্ষেত্রে আওরাহ ও আরেকটি হল সালাতের ক্ষেত্রে আওরাহ। তাকানোর ক্ষেত্রেতো উপরেই উল্লেখ করা হয়েছে। মসজিদে সালাত আদায় করলে তাকানোর আওরাহ প্রযোজ্য হবে। আর সালাতের ক্ষেত্রে যেহেতু নারীদের বাসায় সালাত পড়া উত্তম সেহেতু নিজ গৃহে এমন খালি জায়গায় সালাত আদায় করলে যেখানে একমাত্র আল্লাহই দেখতে পান, সে অবস্থায় ইজমা অনুসারে দাসীদের হাঁটু হতে নাভি পর্যন্ত ঢেকে রাখলে সালাত হয়ে যাবে, কিন্তু তারপরও ফিতনার আশঙ্কা থেকেই যায়। তাই তিনি আশেপাশে কেউ না থাকলেও দাসীকে অবশ্যই নামাজে নিজের পুরো শরীর ঢেকে রাখতে হবে মত দিয়েছেন।[129]আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-২, ৬০/৪৮০; কিতাবুল শারহুল মুমতি আলা যাদ আল মুসতাকনি ২/১৫৮
আবার কিছু জায়গায় দেখলাম ইবনু হাজম (রহ) এর কিতাব থেকে দলিল দেওয়া হচ্ছে যে, ‘ইমাম আবু হানিফা এটা বলতে লজ্জাবোধ করতেন না যে, দাসীরা নগ্ন হয়ে সালাত আদায় করতে, সে অবস্থায় লোকজন তার স্তন দেখতে পারবে…’
প্রথমত উক্ত কথাটা ইবনে হাজম সরাসরি আবু হানিফার নাম নিয়ে এমন কিছু বলেন নি। অবশ্যই তিনি এমন কিছু বলেছেন হানাফিদেরকে ইঙ্গিত করে। বরং সেখানে আবু হানিফার কথা এই দাবির বিপরীতে দেখানো হয়েছে, আরবি না জানলে যা হয় আরকি।
মূল বিষয়টা ছিল আবু হানিফা (রহ) ও তার ছাত্রদের মত ছিল নারীদের দুধ স্তনে মুখ লাগিয়ে কোন বয়স্ক পরপুরুষ খেতে পারবে না, কারণ তাদের মতে এটা নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা ও রাসূল ﷺ নিজের সাহাবি সেলিম মাওলা আবু হুযায়ফা (রা)-কে তার দুধ মায়ের স্তনে মুখ লাগিয়ে দুধ পান করতে বলেন নি, এবং নারীদের বুকের দুধ শুধু শিশুদের ক্ষুধা নিবারণের জন্য, অতি প্রয়োজন (ক্ষুধা বা তেমন কিছু) ছাড়া বয়স্কদের জন্য জায়েজ নয়।[130]আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-৩, ৮১/৪৬৫; আদ দুররুল মুখতার ৩/৩৯৭ বয়স্ক লোকের স্তন্যপান বিষয়ে আমাদের সাইটের এই লিখাটি পড়ে আসতে পারেন চাইলে –
তো এই মাসলা নিয়ে ইবনে হাজম (রহ) আলোচনা করতে গিয়ে হানাফিদের মতের বিরোধিতা ও খণ্ডন করতে গিয়ে বেশ রাগান্বিত হয়ে কথা বলেন (হানাফিদেরকে ইঙ্গিত),
“তারাই নির্লজ্জের মত বলেন যে, নারী নগ্ন হয়ে নামাজ আদায় করতে পারে এবং লোকেরা তার স্তন ও পাশ দেখতে পায়, এবং মুক্ত নারী ইচ্ছাকৃতভাবে তার যোনির ঠোঁট থেকে বাগলি দিরহামের পরিমাণ প্রকাশ করতে পারে এবং মসজিদে জামাতের মধ্যে যারা আসে ও যায় তারা তা দেখতে পায় এবং সে তার পেটের এক চতুর্থাংশেরও কম প্রকাশ করতে পারে।”[131]আল মুহাল্লা ১০/২১১
এখানে মূলত ইবনে হাজম হানাফিদের উপর একটা অভিযোগ এনেছেন, নিজের ভাষায় হানাফিদের মাসলা উপস্থাপন করে। তিনি এখানে শব্দ নিয়ে খেলা করেছেন, ভুল ব্যাখ্যা করেছেন হানাফিদের মাসলার, যা উনার দ্বারা সুস্পষ্ট ভুল ছিল।
এই বিষয়ে তিনি হানাফি মাযহাবের মাসলা গুলোকে সম্পূর্ণ ভুল ভাবে উপস্থাপন করেছেন। মূলত হানাফিদের মাসলা ছিল নারীদের আওরাহ কতুটুকু সেটা, এবং বাগলি দিরহাম নিয়ে আলোচনা ছিল তারা সালাত আদায় করার সময় অনিচ্ছাকৃত কতটুকু প্রকাশ হয়ে গেলে সালাত নষ্ট হয়ে যাবে ও কতটুকু প্রকাশ পেলে নষ্ট হবে না, সেইরকম কতক্ষণ থাকলে নষ্ট হবে ইত্যাদি।[132]https://shamela.ws/book/13620/168 এক চতুর্থাংশ খোলা রাখার বিষয়টাও একই, কতক্ষণ কতটুকু খোলা থাকলে সালাত নষ্ট হয়ে যাবে সেই বিষয়ের মাসলা গুলোকে ইবনে হাজম নিজের মতো হেরফের করে উপস্থাপন করার কারণে অনেকে ভুল বুঝছে বিষয়টা। অনেকটা একই ধরনের মাসলার আলোচনা হাম্বলি স্কলারদের কিতাবেও রয়েছে।
এই টপিক শেষ করতে চাই উসমান (রা) কে নিয়ে একটি হাদিস দ্বারা,
আয়িশাহ (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ﷺ আমার ঘরে শুয়ে ছিলেন, তার উরু কিংবা পায়ের নলা উন্মুক্ত ছিল। আবূ বকর (রা) এসে অনুমতি চাইলে তিনি তাকে অনুমতি দিলেন এবং এ অবস্থাতে কথপকথন করলেন। তারপর উমার (রা) অনুমতি চাইলে অনুমতি দিলেন এবং এ অবস্থায়ই কথাবার্তা বললেন। উসমান (রা) অনুমতি চাইলেন। রসূলুল্লাহ ﷺ উঠে বসলেন এবং তার কাপড় ঠিক করলেন।…অতঃপর উসমান (রা) এসে কথা বলে চলে যাওয়ার পর আয়িশা (রা) বললেন, আবূ বকর (রা) আসলেন, আপনি তাকে কোন গুরুত্ব দিলেন না ও ভ্রুক্ষেপ করলেন না, উমার (রা) আসলেন আপনি তাকেও কোন গুরুত্ব দিলেন না ও ভ্রূক্ষেপ করলেন না। উসমান (রা) প্রবেশ করতেই আপনি উঠে বসলেন এবং জামা ঠিক করে নিলেন। রসূলুল্লাহ ﷺ বললেনঃ আমি কি সে লোককে লজ্জা করবো না, ফেরেশতারা পর্যন্ত যাকে দেখলে লজ্জা পান।[133]সহিহ মুসলিম ২৪০১; মিশকাত ৬০৬০
উসমান (রা) এমন ছিলেন যে, বাড়ীতে থাকা অবস্থাতেও সব সময় তার দরজা বন্ধ থাকত এবং গোসলের পানি গায়ে ঢালার সময়ও তিনি কাপড় খুলতেন না।[134]আহমাদ ৫৪৩
উপসংহার
সম্পূর্ণ আলোচনায় দেখলাম দাসীর পর্দা রয়েছে, তারা উলঙ্গ হয়ে চলার অনুমতি নেই। আমার এতক্ষণের আলোচনার বিষয়গুলো খুব সংক্ষেপে আরেকটি বার উপস্থাপন করছি পাঠকদের সুবিধার্থে।
দাসীর আওরার পরিমাণ সম্পর্কে কোরআন হাদিস থেকে গ্রহণযোগ্য কোন দলিল পাওয়া যায় না বিধায় এই মাসআলাটি একটি ইজতিহাদি বিষয়। দাসীর পর্দায় পার্থক্য থাকা না থাকা সম্পর্কিত ২ টি মত রয়েছে আবার দাসীর আওরাহ কতটুকু তা নিয়ে ৩টি মত রয়েছে।
‘দাসী ও স্বাধীন নারীর পর্দায় পার্থক্য নেই’ এই মতটি গ্রহণ করলে আর কোন অভিযোগই আর থাকছে না। ’দাসীর আওরাহ সাধারণ ভাবে যা খোলা থাকে তা ব্যতীত সব কিছু‘ এই মত গ্রহণ করলেও আর কোন আপত্তি থাকে না। ‘দাসীর আওরাহ মাহরাম নারীর ন্যায়’ এই মতের বিষয়ে হানাফি মাযহাব অনুসারে ফিতনার আশঙ্কা থাকলে ঢেকে চলা বাধ্যতা মুলক, এছাড়া অধিকাংশ হানাফি স্কলারগণের মতে স্তনও আওরাহর অন্তর্ভুক্ত সেহেতু এই ক্ষেত্রেও আপত্তি করার আর সুযোগ রইল না।
‘আওরাহ পুরুষের ন্যায়’ এই মতটি গ্রহণ করলে মালেকি মাযহাব অনুসারে স্তনও ঢেকে রাখা বাধ্যতা মুলক তা আওরাহর অংশ না হলেও, শাফেয়ী মাযহাব অনুসারে নারী ব্যক্তিত্বের কারণে আওরাহর চেয়ে বেশি অংশ ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক। হাম্বলি মাযহাবের প্রথম সময়ের মত অনুসারে দেহ ঢেকে রাখা উত্তম, কিছু ক্ষেত্রে বা পরিস্থিতি বিবেচনায় বাধ্যতা মুলক। সেহেতু বিধান এমন হলে এই ক্ষেত্রেও আপত্তির আর কোন কারণ রইল না।
সব দলিল ও মাযহাবের বক্তব্য দেখার পর এই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায় যে ‘সাধারণ ভাবে যা খোলা থাকে তা ব্যতীত সব কিছু আওরাহ‘ এই মতটি সবচেয়ে বিশুদ্ধ ও শক্তিশালী মত। অপর দিকে স্তন উন্মুক্ত রাখা যাবে এই ফাতাওয়া ভুল ও তা কোরআন, হাদিস, সালাফদের আমল ও জমহুর ওলামাদের মতের বিরোধী একটি মতামত, তাই তা গ্রহণযোগ্য মত নয়।
ওলামাদের মত হল দাসী শুধু মাথা ও মুখ খোলা রাখলেই যথেষ্ট বাকি সব ঢেকে রাখলেই উত্তম। উলঙ্গ হয়ে সালাত আদায় করলে সালাত কবুল হয় না, জনসম্মুক্ষে সালাত আদায় করলে সম্পূর্ণ ঢেকে সালাত আদায় করতে হবে, তাই এই ক্ষেত্রেও কোন আপত্তি তোলার কিছু থাকছে না।
লেখকঃ আশরাফুল নাফিজ
অনুবাদ এবং ফীক্বহে বিশেষ সহায়তাঃ সালিম উদ্দিন (হাফি)
Footnotes
⇧1 | জিলবাব আল-মারআহ ১/৯১-৯২; আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-৩, ৭৩/১১৯; কাশফুল গুমাতি আল আদিলাত আল হিজাব ফিল কিতাব ওয়াল সুন্নাহ, ২য় সংস্করণ, পৃ. ১৩১; তাকরিব আল তাহজিব ১/১৭৭, ২৭১, ৪৪১; আল জয়িফা ৪২৪, ৯৫৬; সুনানুল কুবরা লিল বাইহাকি ৫/৩২৯; আল-জারহ ওয়াল-তাদীল ৩/২০৮; তাহজিবুল কামাল ৭/২০৮; আল মুগনি ফি আল দায়ফা ১/১৮৭; তারিখ আল কাবির ৩/১৬; ফয়জুল কাদির ৬/২৩; নিল আল আওতার ৬/২৫৫; এই সংক্রান্ত হাদিসগুলোর বিস্তারিত তাহকিক এখানে পাবেন کیا لونڈی کا ستر ناف سے گھٹنوں تک ہے ؟ |
---|---|
⇧2 | مدى صحة كان ابن عمر إذا اشترى جارية وضع يده بين ثدييها |
⇧3 | আবু-বকর আল-বায়হাকী ‘আস-সুনানুল কুবরা'(11/216)। |
⇧4 | বিস্তারিত দেখুন:- ইবন উমার (রা) এর বাজারে একটি দাসীর দেহের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করা সক্রান্ত বর্ণনার তাহকিক ও এই বর্ণনাটির ব্যাপারে আলোচনা [Archived on 22.5.2023] ; هل كان عبد الله ابن عمر يمس صدر الجارية |
⇧5 | শারহুস সুন্নাহ লিল বাঘাবী |
⇧6 | আল-বায়ান ওয়াল-তাহসীল ৭/২৯৬ |
⇧7 | যদি আসলেই হারাম হতো কাজটি ইবনু উমার (র:) কখনোই করতেন না, এবং এটা তাঁর নিজের বিপরীতেও যায়। যেখানে বেগানা নারীদেরকে স্পর্শ করা হারাম, হাদিসেতো এমনও এসেছে কোন নারীকে স্পর্শ করার চেয়ে মাথায় লোহার কিল ঢুকা ভালো।(সহিহ মুসলিম ২৬৫৭; আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ, ২২৬) এবং ইবনে উমার (রা) তিনি সব ক্ষেত্রে রাসূলের কঠোর ভাবে অনুসরণ করতেন, এমনকি তুচ্ছ তুচ্ছ বিষয়েও।(ইবনু বাত্তাহ আল-উকবারী, আল-ইবানাহ’ ১/২৪০-২৪৫). |
⇧8 | আল মাবসুতুল সারাখসি ১০/১৬০ |
⇧9 | https://ar.islamway.net/fatwa/61819/حكم-النظر-إلى-الإماء-ولمسهن-بغرض-الشراء |
⇧10 | شبهة أن ابن عمر رضى الله عنه إذا إشترى جارية كشف عن ساقها ووضع يده بين ثدييها وعلى عجزه |
⇧11 | আল-শারহ আল-কবির ৭/৩৪৩; হাশিয়া আল রাওদুল রুবা ৬/২৩৩; আল জামিউল মাসায়িলি মুদাওয়িন ১৩/৮০৮; আন নাওয়াদির ওয়াল যায়াদাত ৫/২১; আল ফুরুহ লি ইবনে মুফলিহ ৮/১৮২; মুসান্নাফে ইবনে শাইবা ২০২৪৪; মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ৭/২৮৭; আল-মাওসুআহ আল-ফিকহিয়াহ আল ইসলামিয়াহ ২৬/৪৮; শারিয়া আল ইসলাম ১/৪৮; শরহুল মুনতাহা আল ইরাদাত লিল বাহুতি ২/৬২৪; কিতাব ফাতওয়া আল সাবাকাত আল ইসলামিয়াত ২০/৬৫৯, ফতোয়া নং ৬৯৭৩ |
⇧12 | উমার (রা) এর দাসীদের চুল উক্ত দাসীদের স্তনে বাড়ি খাওয়া সক্রান্ত হাদিসটির গ্রহনযোগ্যতা যাচাই। [Archived on 22.5.2023] ; قول أنس رضي الله عنه عن إماء عمر: ” كُنَّ يَخْدِمْنَنَا كَاشِفَاتٍ عَنْ شُعُورِهِنَّ”؟ ; کیا لونڈی کا ستر ناف سے گھٹنوں تک ہے ؟ |
⇧13 | মুয়াবিয়া( (রা) ) ও বিবস্ত্র দাসীর ঘটনা এবং ইসলামবিরোধীদের প্রচারণা |
⇧14 | No authentic evidence that slave women used to walk around bare-breasted – Islamweb Fatwa No: 355954 |
⇧15 | তাফসির ইবনে কাসির ৬/৪২-৪৬; কিতাব ফাফরু ইলালল্লাহ আল কালামুনি পৃ. ২১৫; কিতাব মাউকিইল ইসলাম সুওয়াল ওয়াযাওয়াব ৫/৭৪৪৭ ফাতাওয়া নং ১১০৫৯; কিতাবুল আসাসি ফি তাফসির ৭/৩৭৫৯; হাসানুল উসওয়াত বিমা সাবিত মিন আল্লাহ ওয়া রাসুলিহি ফিল নিসওয়াত পৃ. ১৫১ |
⇧16 | Slave women did not walk bare-breasted during lifetime of Prophet, sallallaahu ‘alayhi wa sallam – Islamweb Fatwa 367498 [Archived] |
⇧17 | ইসলামে দাসীর আওরা ও কিছু অপ্রমাণিত রেওয়ায়েত সমূহ, মুফতি শামায়েল নদভী ; উমার (রা) এর যুগে কি দাসীরা পর্দা করলে পেটানো হতো বা নগ্ন হয়ে কাজ করতো মুশফিক মিনার |
⇧18 | মুসান্নাফ ইবন আবি শায়বা ৬/২৩৬; ইরওয়া আল গালীল ৬/২০৩ |
⇧19 | কিতাবুল দিরায়াতি ফি তাখরিজ আহাদিস আল হিদায়া ১/১২৪ |
⇧20 | খুলাসাতুল বদর আল মুনির ১/১৫৯; জিলবাল আল মার’আহত পৃ. ৯৯; ইরওয়া আল-গালীল, ৬/২০৪ |
⇧21 | আহকামুন নাজার ১/২৩০ |
⇧22 | সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৪১৯০ http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=51273 |
⇧23 | তাফসীরে মা-আরেফুল কোরআন ৭/২২১ |
⇧24 | আশরাফুল হিদায়া, ইসলামিয়া কুতুবখানা, ৯/৬১৫; আহকামুল কোরআন ৩/৪১০, ৬২৫, ৫/২৪৫; তাফসীর আল-কাশশাফ ৩/৫৬৯; আল-ইস্তিদকার ৮/৫৪১; আল-সারখাসির আল-মাবসুত ১০/১৫১; তাফসীরে কবীর ২/৫৯১; তাফসীরে আহসানুল বায়ান পৃ. ৭৪৩ |
⇧25 | তাবাকাত ইবনে সাদ ৮/১৭৬; তাফসির আত তাবারি ২২/৪৬; তাকরীব আত তাহযীব ১/৫২০; কিতাবুল রাদ্দীল মুফহাম ৫১; মাশাহিরিল উলামা আল আমসার ১/৯৬; প্রায় সব তাফসির গ্রন্থেই এটা উল্লেখ রয়েছে |
⇧26 | তাফসির ইবনে কাসীর, ই.ফা. ৯/১৮৭-৮৮; তাফসীরে মা-আরেফুল কোরআন, ৭/২২২; তাফসীরে মাজহারী, ৯/৫৬৭-৬৮; তাফসির আত তাবারি ২০/৩২৬-২৮ |
⇧27 | আদওয়া’আল-বায়ান ৬/২৪৫ |
⇧28 | জিলবাব আল মার’আহ ১/৯১-৯২ |
⇧29, ⇧35 | কিতাবুল ইখতিলাফিল আয়িমমাতি লি ইবনে হুবায়রা ১/১০১ |
⇧30, ⇧36 | আল বায়ান ফি মাযহাবিল ইমাম আল শাফেয়ী ২/১১৯ |
⇧31, ⇧48 | শারহুল জারকাশী ১/৬২৪ |
⇧32 | কাশফুল গুমাতি আল আদিলাত আল হিজাব ফিল কিতাব ওয়াল সুন্নাহ, ২য় সংস্করণ, পৃ. ১৬৩ |
⇧33 | ইবনে মুফলিহ, আল-মুবদি, ১/৩৫৯; কাশশাফুল কিনা ১/৩১২ |
⇧34 | কিতাবুল ঘায়াত ফি ইখতিসারুল নিহায়া ৬/২৪৮ |
⇧37 | কিতাবুল মাযহাব ফি ফিকহুল ইমাম আল শাফেয়ী- শিরাজী ১/১২৫ |
⇧38 | কিতাব রাওদাতুল তালিবিন ৭/২৩ |
⇧39 | মিনহাজুল তালিবিন ২০৪ |
⇧40 | আওযা লাতিল মুহতাজ ইলা তাওজিহিল মিনহাজ ১/২২৭ |
⇧41 | তালিকাত লিল কাদি হুসাইন ২/৮১৬ |
⇧42 | বাহরুল মাযহাবি লি রুওয়াইনি ২/৯৭ |
⇧43 | হালিয়াতিল ওলামা ফি মারিফাত মাযহাহিবুল ফুকাহা ২/৫৪ |
⇧44 | আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-২, ৬০/৪৮১; আল-মারদাওয়ি, আল ইনসাফ ফি মারিফাতিল রাজিহ মিনাল খিলাফ ৩/২০৩ |
⇧45 | শরহ আল-উমদাহ ২/২৭১; মাজমু’ আল-ফাতাওয়ায় ১৫/৩৭২ |
⇧46 | মাজমু আল-ফাতাওয়া ২২/১০৯-১২০; আল-ইখতিয়ারাত পৃ. ৪০-৪১ |
⇧47 | শারহুল উমদাহ ২/২৭৪-২৭৫; শারহুল যারখাশি ১/৬২৩ |
⇧49 | শারহুল উমদাহ ২/২৭৫ |
⇧50 | শারহুল উমদাহ ২/২৭৫ |
⇧51 | শারহুল মুমতি আলা যাদ আল মুসতাকনি ২/১৫৮ |
⇧52 | ইয়ালামাল মুউকিয়িন ২/৮০ |
⇧53 | হাশিয়াত আল-রাউদ আল-মুরাব্বা ৬/২৩৪ |
⇧54 | আল-মাওসুআহ আল-ফিকহিয়াহ ৩১/৪৯-৫০; কিতাবু ফাতহুল উলামা ফি দিরাসাত আহাদিস বুলুগুল মারআম, ৪ সংস্করণ, ২/১৬৭; islamqa.info ফাতাওয়া নং 220750, 198645; মাযালাতুল বুহুতুল ইসলামিয়া ৮৫/৩২৬; আল ইনসাফ ৮/২৭; শারহুল যাদ আল মুস্তাকনি আহদম আল খলিল ১/২৭৬; আল-মারদাওয়ি, আল ইনসাফ ফি মারিফাতিল রাজিহ মিনাল খিলাফ ৩/২০৩ |
⇧55 | হাশিয়াতুল রাউদিল মুরাবি ১/৪৯৫ |
⇧56 | আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-৩, ৭৩/১১৯ |
⇧57 | ইবনে হাযম, আল-মুহাল্লা, ৩/২১০; ১০/৩১; আল-মাওসুআহ আল-ফিকহিয়াহ আল ইসলামিয়াহ ২৬/৪৮ |
⇧58 | আল মুহাল্লা ৩/২১৮-৩২১ |
⇧59 | আল মুহাল্লা, ২/২৪৮ |
⇧60 | আল-বাহর আল-মুহীত ৭/২৪০ |
⇧61 | তাকবিমিল নাজার ফি মাসায়িল খিলাফিয়াত যায়িয়াত ১/৩২৭ |
⇧62 | রাওদাতুল মুসতাবিন ফি শারহে কিতাবুল তালকিন ১/৩৫২ |
⇧63 | আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-২, ৬০/৪৮১; আল-মারদাওয়ি, আল ইনসাফ ফি মারিফাতিল রাজিহ মিনাল খিলাফ ৩/২০৩ |
⇧64 | কিতাবুল বিনায়াত শারহুল হিদায়া ২/১৩৩; আল মুগনি ২/৩৩২ |
⇧65 | কিতাবুল জামি লি মাসায়িলল মুদাওয়ানাত ২/৬১১; কিতাবুল বিনায়াত শারহুল হিদায়া ২/১৩২; আল-মারদাওয়ি, আল ইনসাফ ফি মারিফাতিল রাজিহ মিনাল খিলাফ ৩/২০২; আহকামুল কোরআন লিল ইবনে আরাবি ৩/৩৮৯; আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-৩ ৭৩/১১৯ |
⇧66 | মাওসুয়াত মাসায়িলিল জুমহুর ফি আল ফিকহুল ইসলাম ১/১৪৫; হালিয়াতিল ওলামা ফি মারিফাত মাযহাহিবুল ফুকাহা ২/৫৪; কাশশাফ আল ফাতাহ ১/১৮২; ওসুআহ আল-ফিকহিয়াহ আল ইসলামিয়াহ ২৬/৪৮; শারহুল কাবির আলাল মাকনিয়৩/২১০; তালিক আলাল আদ্দাত শারহুল উমদাহ ১১/৭; কিতাবুল মিন বুহুসি মাহির আল ফাহাল ১৯/১৩; শারহুল জারকাশী ১/৬২৪ |
⇧67 | শারহুল তালকিন ১/৪৭১; মাওয়াহিব আল জালিল ২/১৮০-১৮৪; কিতাব আল ধাখিরাত লিল কারাফি ২/১০৩-১০৪; আল-মাওসুআহ আল-ফিকহিয়াহ আল ইসলামিয়াহ ২৬/৪৮ |
⇧68 | মাওয়াহিব আল জালিল, মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ আল মাগরিবি ১/৫০১; ইবনে আবি যায়েদ, আল নাওয়াজির ওয়াল জিওয়াদাতি, ৪/৬২৪; ইবনে আল কাত্তান, আল নাজার ফি আহকামুল নাজরী পৃ. ১৮৫-১৮৬ |
⇧69 | আল নাজার ফি আহকামুল নাজারী পৃ. ১৩৫-১৩৬ |
⇧70 | কিতাবুল বায়ান ওয়াল তাহসিল ১৮/২৩ |
⇧71 | কিতাবুল কাফি ফি ফিকহ আহলুল মাদিনা ১/২৩৮ |
⇧72 | হাসিয়াতুল সাওয়ি আলাল শারহুল সাগির, বিলুগাত আল সালিক লিআকরাবুল মাসালিক ১/২৮৯ |
⇧73 | আশ হালিল মাদারিক – শারহু ইরশাদুল সালিক ফি মাযহাব ইমাম আল আয়মাত মালিক ১/১৮৩ |
⇧74 | কিতাব তাহবীরুল মুখতাসার, ওয়াহুয়াল শারহুল ওয়াসাতুলি বাহরাম আলী মুখতাসার খলিল ১/২৬৫ |
⇧75 | আল খারশি ১/২৫০-২৫১; আল মুহাযযাব ১/৬৪; আল-মাওসুআহ আল-ফিকহিয়াহ আল ইসলামিয়াহ ২৬/৪৮ |
⇧76, ⇧123 | কিতাব রাওদাতুল তালিবিন ১/২৮৩-৮৪ |
⇧77 | আল-আজিজ শরহ আল-ওয়াজিজ, শারহুল কবীর লিল আল-রাফি ২/৩৬; কিতাবুল শাওরি বিল আওর পৃ. ৪৪; মাতালিল দাকয়িক ফি তাহরির আল জামি ওয়াল ফাওয়ারিক ২/৮০ |
⇧78 | কিতাব রাওদাতুল তালিবিন ১/২৮৪, ৭/২৩ |
⇧79 | তাফসীরে মাজহারী, ৮/৩৯২ |
⇧80 | আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-২, ৬০/৪৮০; মানার আল সাবিল ২/১৩৮ |
⇧81 | আউন আল-মাবুদ ১১/১৬২ |
⇧82 | কিতাবুল জামি লিল উলুম আল ইমাম আহমাদ আল ফিকহ ১৩/৩০১ |
⇧83 | আল মুগনি ৭/১০৩ |
⇧84 | কিতাবুল শারহুল মুমতি আলা যাদ আল মুসতাকনি ২/১৫৮ |
⇧85 | শারহুল উমদাহ ২/২৭০; মাসায়েলে আব্দুল্লাহ পৃ. ৬২; আল মুগনী ২/৩৩২; কিতাব তালিকাত ইবনে উসাইমিন আলাল কাফি লি ইবনে কুদামা ১/২৯৫; আল কাফি ফি ফিকহুল ইমাম আহমেদ ১/২২৭: কিতাবু ফাতহুল উলামা ফি দিরাসাত আহাদিস বুলুগুল মারআম, ৪ সংস্করণ, ২/১৬৫ |
⇧86 | মাজমুউ আল ফাতওয়া ১৫/৩৭৩-৩৭৭; ইলাম আল-মুওয়াকিয়ীন ২/৪৬-৪৭; শারহুল উমদাহ আল ফিকহ, আল রাজিহি ৭/৭; কাশশাফুল কিনা ১/৩১৬ |
⇧87 | রদ্দুল মুহতার ১/৪০৪-৪০৫ |
⇧88 | আল সিয়ায়াত ফী কাশফ মাফী শরহুল উয়িকায়া ২/৭১ |
⇧89 | আল হিদায়া ৪/৪৬১; আশরাফুল হিদায়া, ইসলামিয়া কুতুবখানা, ৯/৬১৫-১৮; আল-বাহরুল রায়েক ৮/৩৫৫ |
⇧90 | শারহুল থামেরি ৪/৩৮৫; আল হিদায়া ৪/১০৭; মুখতাসার কুদূরি পৃ. ২৫৯; আল-বাহরুল রায়েক ৮/৩৫৫, হাশিয়া ইবনে আবিদীন ৫/২৫; বাদাই আল-সানাই ৬/৪৮৯; রদ্দুল মুহতার ৯/৫২৭, ৫২৮; daruliftabirmingham ; আহলে হক মিডিয়া |
⇧91 | কিতাবুল আসলি মুহাম্মাদ বিন আল হাসান ২/২৪০ |
⇧92 | আল-লুবাব ফি শরহুল কিতাব, ৩/২১৮; কিতবুল ইখতিয়ার লিতালিলিল মুখতার ৪/১৫৪-১৫৬; কিতাবুল বিনায়াত শারহুল হিদায়া ১২/১৫৫-১৬০; কিতাব আল মাবসুত লিল শাইবানী ১/৪১৮; আল-বাহরুল রায়েক ১/৪৭৪, ৮/৩৫৫; হাশিয়া ইবনে আবিদীন ৫/২৫; বাদাই আল-সানাই ৬/৪৮৯; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া ৫/৩২৮; ফতোয়ায়ে তাতারখানিয়া ১৮/৯২; Speaking in God’s Name: Islamic Law, Authority and Women, Khaled Abou El Fadl (1 October 2014). Oneworld Publications. p. 525-526 |
⇧93 | তাফসিরুল তারাবি ২০/৩২৪ |
⇧94 | আহকামুল কোরআন ৫/২৪৫ |
⇧95 | তাফসীর আল-কাশশাফ ৩/৫৬৯ |
⇧96 | তাফসির আল নাফাসী ৩/৩১৫ |
⇧97 | তাফসির ইবনে যাজাই, আল তাসহিল লিউলুমুল তানজিল ৩/১৪৪ |
⇧98 | তাফসীর ইবনে কাসীর ৩/৫১৯ |
⇧99 | তাফসির আল জালালাইন ১/৫৬০ |
⇧100 | আবু ইউসুল আল হানাফি ফিল আসার ১/২৯ |
⇧101 | আল মুগনিল মুহতাজ ৩/১৩১ |
⇧102 | আল মুবদিহ ফি শরহুল মাকনাই ১/৩৬১ |
⇧103 | ইবনে সাদ ৮/১৭৬ |
⇧104 | মাজমু’আল ফাতওয়া ১৫/৩৭২ |
⇧105 | গারিব আল হাদিস লিল ইবনে সালাম ৩/৩০৫ |
⇧106 | গারিব আল হাদিস লিল খাত্তাবি ৩/৩০৫ |
⇧107 | কাশফুল গুমাতি আল আদিলাত আল হিজাব ফিল কিতাব ওয়াল সুন্নাহ, ২য় সংস্করণ, পৃ. ১২৯ |
⇧108 | কিতাবুল বায়াস ফি মাযহাব আল ইমাম আল শাফেয়ী – আল ইমরান ২/১১৮ |
⇧109 | বুখারি ৪৭৫৮-৫৯; আবু দাউদ ৪১০১, ৪১০২ |
⇧110 | আল নাজার ফি আহকামুল নাজরী পৃ. ১৩৫-১৩৬ |
⇧111 | আল বাহরুল মুহীত ৭/২৫০ |
⇧112 | জিলবাল আল মাহরাতিল মুসলিমাহ, পৃ. ৯৫ |
⇧113 | شبهات حول مسائل في الحجاب ، والإجابة عنها |
⇧114 | আল জাইফাহ ২/৩৭৩, হা. ৯৫৬ |
⇧115 | মাজমু’ আল-ফাতাওয়া ২২/১১৬, ১১৭ |
⇧116 | আল তামহিদ ৬/৩৭৯ |
⇧117 | মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, ১/৩৫৩; বুখারী ৩৫৯, ৫১৬; আহমাদ ৭৩১১ |
⇧118 | শারহুল মুমতি আলা যাদ আল মুসতাকনি ২/১৫০-১৫২, ১৬৭ |
⇧119 | শারহুল উমদাহ ২/২৭৫ |
⇧120 | কাশফুল গুমাতি আল আদিলাত আল হিজাব ফিল কিতাব ওয়াল সুন্নাহ, ২য় সংস্করণ, পৃ. ১২৯ |
⇧121 | আল মুহাল্লা ২/২৫২, ৩/২২১-২২২ |
⇧122 | আল সামারুল মুসতাতাব ফি ফিকহুল সুন্নাত ওয়াল কিতাব ১/৩২৪ |
⇧124 | কিতাবুল জামি লিল উলুম আল ইমাম আহমাদ আল ফিকহ ৬/৪৮ |
⇧125 | কিতাবুল জামি লি মাসায়িলল মুদাওয়ানাত ২/৬১০ |
⇧126 | কিতাবুল তাফরিহ ফি ফিকহুল ইমাম মালিক বিন আনাস ১/৯০ |
⇧127 | ইবন হাযম ফি মারাতিব আল-ইজমা ১/২৯ |
⇧128 | ফাতহুল ওলামা বিশারহে মুরশিদিল আনাম ১/৩৪-৩৪; আল ফিকহুল হাম্বলি, শারহুল উমদাহ ৪/২৬৮; আলামুল মুকিয়িনান রাব্বিল আলামিন ২/৮০; হাশিয়াত সুলাইমানিল যামাল আলা শারহুল মানহায ২/৪০৮; ফাতহুল আলম লিল শেখ সিদ্দিক হাসান খান ১/৯৭; আল আশবাহু ওয়াল নাজায়ির লিল সুয়ুতি ১/২৪০ |
⇧129 | আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-২, ৬০/৪৮০; কিতাবুল শারহুল মুমতি আলা যাদ আল মুসতাকনি ২/১৫৮ |
⇧130 | আরশীফ মুলতাক্বা আহলিল হাদীছ-৩, ৮১/৪৬৫; আদ দুররুল মুখতার ৩/৩৯৭ |
⇧131 | আল মুহাল্লা ১০/২১১ |
⇧132 | https://shamela.ws/book/13620/168 |
⇧133 | সহিহ মুসলিম ২৪০১; মিশকাত ৬০৬০ |
⇧134 | আহমাদ ৫৪৩ |
নিঃসন্দেহে নাস্তিকদের কুযুক্তি দ্বারা নির্মিত সো called জঘন্য জগৎ যেটার উর্ধে আপনার অনন্য সাধারণ স্কলারলি আর্টিকেল আপাত সেই ক্রন্দসীকে পুরো যবনিকাপাত করে আসিফ মহিউদ্দিন যে বিপর্যস্ত করে ছেড়েছে।
এতগুলো কথা বলে, এতগুলো দলিল দিয়ে, ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে সেই নাস্তিকদের কথাই সত্য প্রমাণিত হলো। হিপোক্রেসির নূন্যতম লেভেল থাকা উচিত। আশ্চর্য!
আপনার আজাইরা ও অকর্ম থাকার মুল্যবান সময় নষ্ট করে আমার এত বড় লিখা সম্পূর্ণটা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পড়ে বা না পড়ে, বুঝে বা না বুঝে এত যটিল এনালাইসিস করে এত মহামুল্যবান এনালাইসিস উপস্থান করে এটার সমালোচনা বা ভুল ধরা জন্য অসংখ্যা অসংখ্যা ধন্যবাদ। আমার এত বড় উপকার করার কারনে আপনার নিকট আমি চিরকৃতজ্ঞ ও চিরঋণী হয়ে থাকব।
যাইহোক তারপরও আমি এই অসাধারন ও ক্রিয়েটিব কমেন্টটার মানে বুঝলাম না। আপনিও কি নিজের ব্রেন খুলে আসাদ নূরের মত কিছু হাটুতে আর কিছু পশ্চাতদেশে রেখে আার্টিক্যাল পড়েছেন নাকি! যদি এমনটা না হয় তাহলে এমন মন্তব্যের কারণটা বুঝলাম না। যদি দয়া করে বুঝাতেন যে নাস্তিকদের কোন অযৌক্তিক ও ইনভেলিড কথাটা সত্য হয়েছে তাহলে আমার অনেক বেশিই উপকার হত।
ইসলাম বিরোধির কাছে ইসলাম শিখা অনেক্ টা চাইনিজ মিডিয়া থেকে আমেরিকা সম্পর্কে জানার মতো