ইসলামবিরোধীদের প্রতি জবাবহিন্দুধর্ম

কামধেনু বনাম বোরাক

আপনিও কি কামধেনুর ছবিকে বোরাক ভাবতেন?

বৈদিক কামধেনু বনাম বোরাক

কামধেনু (সংস্কৃত: कामधेनु) বা সুরভি (सुरभि) হচ্ছে ঐশ্বরিক গো-দেবী ও হিন্দুধর্মে তাকে গো-মাতা বা সকল গরুর মাতা হিসাবে বর্ণনা করা হয়। কামধেনু “প্রাচুর্যের গাভী” হিসাবে পরিচিত, যা তার কাছে কামনা করা হয় সে সেই সকল সামগ্রী প্রদান করে। কামধেনুকে প্রায়ই গবাদি পশুর মাতা হিসাবে চিত্রায়িত করা হয়।।
[উপরের ছবিতে কামধেনুকে দেখা যাচ্ছে]

কামধেনু সম্পর্কে পবিত্র বেদে অসংখ্যবার বলা আছেঃ

কামধেনু বনাম বোরাক

নবপ্রসূতা ধেনু প্রসন্ন মনে দূগ্ধ বর্ষণ করতে করতে বৎসের কাছে যায়, যেমনটা স্বামী স্ত্রীর নিকটে যায়।[1]ঋগ্বেদ ১০/১৪৯/৪, রমেশচন্দ্র দত্ত

কামধেনু বনাম বোরাক

তিন প্রকারে দক্ষিনা দেখা যায়-হিরণ্য,ঘৃতাক্ত বস্ত্র ও ধেনু। তার মধ্যে হিরন্য দানে তেজ লাভ,ঘৃত্যাক্ত বস্ত্র দানে পশু লাভ এবং ধেনুদানে কামনা লাভ হয়।[2]কৃষ্ণ যর্জুবেদ ২/৪/১১, হরফ প্রকাশনী, অনুবাদঃ বিজানবিহারী গোস্বামী

কামধেনু বনাম বোরাক

প্রজাপতি চিন্তা করে সৃষ্টির সাধন ভূত বিরাটকে দেখে ছিলেন। তার দ্বারা সমগ্র জগত সৃষ্টি করে ভূত ও ভবিষতরূপে দুটি ভাগ করেন। এ বিরাট তিনি ঋষিদের কাছে প্রকাশ করেননি। জমদগ্নি তপস্য করে সে বিরাটকে দেখতে পান। সে বিরাটের দ্বারা প্রজাপতি পৃশ্নি অর্থাৎ ধেনুস্বরূপ ভোগ সৃষ্টি করেন। পৃশ্নি হচ্ছে কামধেনু যে মন্ত্রের দ্বারা কামধেনু সৃষ্ট তাকে পৃশ্নি বলা হয়।[3]কৃষ্ণ যর্জুবেদ ৩/৩/৫

অন্যদিকে বোরাক চরিত্রে নারীর মুখাবয়বের আদলে আমরা যে প্রাণীটি দেখতে পাই তার সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নাই। পারস্য বা দূর প্রাচ্য অঞ্চলে অঙ্কিত কাল্পনিক চিত্রে “বোরাক”-এর মুখমন্ডল মানুষের আকৃতিতে উপস্থাপন করা হয়, কিন্তু এই বিষয়ে কোনো হাদীস বা ইসলামের প্রাথমিক যুগের নির্ভরযোগ্য প্রামান্য দলিল পাওয়া যায় না। ধারণা করা হয়, এটা সম্ভবতঃ আরবী থেকে ফারসী ভাষায় “… সুন্দর মুখমন্ডলের জীব”-এর ভুল অনুবাদের ফলে হয়েছে, যা পরবর্তীতে ফারসী থেকে ভারতীয় অঞ্চলে এসেছে।

কামধেনুকে প্রায়ই গবাদি পশুর মাতা হিসাবে চিত্রায়িত করা হয়। সাধারণত কামধেনুকে পাখির ডানা, ময়ুরের পেখম এবং নারীর মস্তক ও স্তন সহ শুক্লা গাভী রূপে অঙ্কন করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন অংগে বিভিন্ন দেবদেবীর বাসস্থান। হিন্দুধর্ম অনুসারে সকল গাভী কামধেনুর পার্থিব রূপ। তবে কামধেনুকে স্বকীয় দেবী হিসাবে পূজা করা হয় না ও তার জন্য কোনো নিজস্ব উপাসনালয় নেই। ধার্মিক হিন্দুরা গাভীমাত্রেই পূজা করে কামধেনুর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। হিন্দুধর্মের পুঁথিসমূহে কামধেনুর জন্ম সম্পর্কে বিচিত্র কাহিনী পাওয়া যায়।

মহাভারতের আদি পর্বে উল্লেখ আছে যে অমৃত সন্ধানী দেবতা ও অসুরের করা সমুদ্র মন্থনেই কামধেনু-সুরভির আবির্ভাব হয়েছিল। তাই তাকে দেবতা ও অসুর উভয়ের সন্তান হিসাবে গণ্য করে সপ্তর্ষিকে প্রদান করা হয়েছিল।

কামধেনু
কামধেনু

অনুশাসন পর্বের মতে অমৃত পান করে প্রজাপতি দক্ষর কাছ থেকে সুরভির জন্ম হয়। পরে সুরভি কপিলা নামে পরিচিত একটি গাভীর জন্ম দেয় ও তাকে পৃথিবীর মাতা হিসাবে গণ্য করা হয়। শতপথ ব্রাহ্মণে একই আখ্যান পাওয়া যায়। রামায়ণের আখ্যান অনুসারে সুরভি ঋষি কাশ্যপ ও দক্ষর সন্তান।

মুসলিমদের হাদিস গ্রন্থ সহীহুল-বুখারী হতে অনুবাদ করা একটি হাদীসে “বোরাক” সম্পর্কে বলা হয়েছে:

আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাবী বলেন, আনাস (রাঃ) সম্ভবত তাঁর সম্প্রদায়ের জনৈক মালিক ইবনু সা’সা’আহ্‌ (রাঃ) বলেন যে, ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, একদিন আমি কা’বা শরীফের নিকটে নিদ্রা ও জাগরণের মাঝামাঝি ছিলাম। তখন তিন ব্যক্তির মধ্যবর্তী একজনকে কথা বলতে শুনতে পেলাম। যা হোক তিনি আমার নিকট এসে আমাকে নিয়ে গেলেন। তারপর আমার নিকট একটি স্বর্ণের পাত্র আনা হলো, তাতে যমযমের পানি ছিল। এরপর তিনি আমার বক্ষদেশ এখান থেকে ওখান পর্যন্ত বিদীর্ণ করলেন। বর্ণনাকারী কাতাদাহ্‌ (রহঃ) বলেন, আমি আমার পার্শ্বস্থ একজনকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘এখান থেকে ওখান পর্যন্ত’ বলে কি বুঝাতে চেয়েছেন? তিনি জবাব দিলেন, “বুক থেকে পেটের নীচ পর্যন্ত।” রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, এরপর আমার হৃদপিণ্ডটি বের করা হলো এবং যমযমের পানি দিয়ে তা ধুয়ে পুনরায় যথাস্থানে স্থাপন করে দেয়া হলো। ঈমান ও হিকমাতে আমার হৃদয় পূর্ণ করে দেয়া হলো। এরপর আমার নিকট বুরাক নামের একটি সাদা জন্তু উপস্থিত করা হয়। এটি গাধা থেকে কিছু বড় এবং খচ্চর থেকে ছোট। যতদূর দৃষ্টি যায় একেক পদক্ষেপে সে ততদূর চলে। এর উপর আমাকে আরোহণ করানো হলো। আমরা চললাম এবং দুনিয়ার আসমান পর্যন্ত পৌছলাম। জিবরীল (‘আঃ) দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, কে? তিনি বললেন, জিবরীল। জিজ্ঞস করা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, আমার সাথে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আছেন। দ্বাররক্ষী বললেন, তাঁর কাছে আপনাকে পাঠানো হয়েছিল কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। এরপর দরজা খুলে দিলেন এবং বললেন, মারহাবা! কত সম্মানিত আগন্তুকের আগমন হয়েছে।[4]সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩০৫, হাদিস একাডেমী, ihadis

অপর একটি বর্ণনায় “বোরাক”:

৩০০-(২৫৯/১৬২) শাইবান ইবনু ফার্‌রূখ (রহঃ)…আনাস ইবনু মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমার জন্য বুরাক পাঠানো হল। বুরাক গাধা থেকে বড় এবং খচ্চর থেকে ছোট একটি সাদা রঙের জন্তু। যতদূর দৃষ্টি যায় এক পদক্ষেপে সে ততদূর চলে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি এতে আরোহণ করলাম এবং বাইতুল মাকদাস পর্যন্ত এসে পৌছলাম। তারপর অন্যান্য আম্বিবায়ে কিরাম তাদের বাহনগুলো যে খুঁটির সাথে বাঁধতেন, আমি সে খুঁটির সাথে আমার বাহনটিও বাঁধলাম। তারপর মসজিদে প্রবেশ করলাম ও দু’ রাকাআত সালাত আদায় করে বের হলাম। জিবরীল (আঃ) একটি শরাবের পাত্র এবং একটি দুধের পাত্র নিয়ে আমার কাছে এলেন। আমি দুধ গ্রহণ করলাম। জিবরীল (আঃ) আমাকে বললেন, আপনি ফিতরাহকেই গ্রহণ করলেন।  তারপর জিবরীল (আঃ) আমাকে নিয়ে ঊর্ধ্বলোকে গেলেন এবং আসমান পর্যন্ত পৌছে দ্বার খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি জিবরীল। জিজ্ঞেস কলা হলো, আপনার সাথে কে? বললেন, মুহাম্মাদ। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনাকে কি তাকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? বললেন, হ্যাঁ! পাঠানো হয়েছিল। অতঃপর আমাদের জন্য দরজা খুলে দেয়া হল। সেখানে আমি আদম (আঃ) এর দেখা পাই তিনি আমাকে মুবারাকবাদ জানালেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দু’আ করলেন।  তারপর জিবরীল (আঃ) আমাকে উর্ধ্বলোক নিয়ে চললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। জিজ্ঞেস করা হলো, তাকে কি আনতে পাঠানো হয়েছিল? বললেন, হ্যাঁ! পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেয়া হল। সেখানে আমি ঈসা ইবনু মারইয়াম ও ইয়াহইয়া ইবনু যাকারিয়া (আঃ) দুই খালাত ভাইয়ের দেখা পেলাম। তারা আমাকে মারহাবা বললেন, আমার জন্য কল্যাণের দু’আ করলেন।  তারপর জিবরীল (আঃ) আমাকে নিয়ে ঊর্ধ্বলোকে চললেন এবং তৃতীয় আসমানের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, কে? তিনি বললেন, জিবরীল। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনাকে কি তাকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ! পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেয়া হল। সেখানে ইউসুফ (আঃ) এর দেখা পেলাম। সমুদয় সৌন্দর্যের অর্ধেক দেয়া হয়েছিল তাকে। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দু’আ করলেন।  তারপর জিবরীল (আঃ) আমাকে নিয়ে চতুর্থ আসমানের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, কে? তিনি বললেন, জিবরীল। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনাকে কি তাকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ! পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেয়া হল। সেখানে ইদরীস (আঃ) এর দেখা পেলাম। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দু’আ করলেন। আল্লাহ তা’আল তার সম্পর্কে ইরশাদ করেছেনঃ “এবং আমি তাকে উন্নীত করেছি উচ্চ মর্যাদায়” (সূরাহ আল হাদীদ ৫৭ঃ ১৯)।  তারপর জিবরীল (আঃ) আমাকে নিয়ে পঞ্চম আসমানের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনি কে?” তিনি বললেন, জিবরীল। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনাকে কি তাকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ! পাঠানো হয়েছিল। অতঃপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেয়া হল। সেখানে হারূন (আঃ) এর দেখা পেলাম। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দু’আ করলেন।  তারপর জিবরীল (আঃ) আমাকে নিয়ে ষষ্ঠ আসমানের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, কে? তিনি বললেন, জিবরীল। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন মুহাম্মাদ। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনাকে কি তাকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ! পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেয়া হল। সেখানে মূসা (আঃ) এর দেখা পেলাম। তিনি আমাকে মারহাবা বললেন এবং আমার কল্যাণের জন্য দু’আ করলেন।  তারপর জিবরীল (আঃ) সপ্তম আসমানের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দরজা খুলতে বললেন। জিজ্ঞেস করা হলো, কে? তিনি বললেন, জিবরীল। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনার সাথে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ। জিজ্ঞেস করা হলো, আপনাকে কি তাকে আনতে পাঠানো হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ! পাঠানো হয়েছিল। তারপর আমাদের জন্য দ্বার খুলে দেয়া হল। সেখানে ইবরাহীম (আঃ)-এর দেখা পেলাম। তিনি বাইতুল মামুরে পিঠ ঠেকিয়ে বসে আছে। বাইতুল মামুরে প্রত্যেহ সত্তর হাজার ফেরেশতা তাওয়াফের উদ্দেশে প্রবেশ করেন যারা আর সেখানে পুনরায় ফিরে আসার সুযোগ পান না। তারপর জিবরীল (আঃ) আমাকে সিদরাতুল মুনতাহায় নিয়ে গেলেন। সে বৃক্ষের পাতাগুলো হাতির কানের ন্যায় আর ফলগুলো বড় বড় মটকার মত।  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সে বৃক্ষটিকে যখন আল্লাহর নির্দেশে যা আবূত করে তখন তা পরিবর্তিত হয়ে যায়। সে সৌন্দর্যের বর্ণনা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে কারোর পক্ষে সম্ভব নয়। এরপর আল্লাহ তা’আলা আমার উপর যে ওয়াহী করার তা ওয়াহী করলেন। আমার উপর দিনরাত মোট পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরয করলেন, এরপর আমি মূসা (আঃ) এর কাছে ফিরে আসলাম। তিনি আমাকে বললেন, আপনার প্রতিপালক আপনার উপর কি ফরয করেছেন। আমি বললাম, পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত। তিনি বললেন, আপনার প্রতিপালকের নিকট ফিরে যান এবং একে আরো সহজ করার আবেদন করুন। কেননা আপনার উম্মত এ নির্দেশ পালনে সক্ষম হবে না। আমি বনী ইসরাঈলকে পরীক্ষা করেছি এবং তাদের বিষয়ে আমি অভিজ্ঞতা লাভ করেছি।  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তখন আমি আবার প্রতিপালকের কাছে ফিরে গেলাম এবং বললাম, হে আমার রব! আমার উম্মতের জন্য এ হুকুম সহজ করে দিন। পাঁচ ওয়াক্ত কমিয়ে দেয়া হল। তারপর মূসা (আঃ)-এর নিকট ফিরে এসে বললাম, আমার থেকে পাঁচ ওয়াক্ত কমানো হয়েছে। তিনি বললেন, আপনার উম্মত এও পারবে না। আপনি ফিরে যান এবং আরো সহজ করার আবেদন করুন।  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এভাবে আমি একবার মূসা (আঃ) ও একবার আল্লাহর মাঝে আসা-যাওয়া করতে থাকলাম। শেষে আল্লাহ তা’আলা বললেনঃ হে মুহাম্মাদ! যাও দিন ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত নির্ধারণ করা হল। প্রতি ওয়াক্ত সালাতে দশ ওয়াক্ত সালাতের সমান সাওয়াব রয়েছে। এভাবে (পাঁচ ওয়াক্ত হল) পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাতের সমান। যে ব্যক্তি কোন নেক কাজের নিয়্যাত করল এবং তা কাজে রূপায়িত করতে পারল না, আমি তার জন্য একটি সাওয়াব লিখব; আর তা কাজে রূপায়িত করলে তার জন্য লিখব দশটি সাওয়াব। পক্ষান্তরে যে কোন মন্দ কাজের নিয়্যাত করল অথচ তা কাজে পরিণত করল না তার জন্য কোন গুনাহ লিখা হয় না। আর তা কাজে পরিণত করলে তার উপর লিখা হয় একটি মাত্র গুনাহ।  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তারপর আমি মূসা (আঃ) এর নিকট নেমে এলাম এবং তাকে এ বিষয়ে অবহিত করলাম। তিনি তখন বললেন, প্রতিপালকের কাছে ফিরে যান এবং আরো সহজ করার প্রার্থনা করুন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এ বিষয়টি নিয়ে বারবার আমি আমার প্রতিপালকের নিকট আসা-যাওয়া করেছি, এখন আবার যেতে লজ্জা হচ্ছে।[5]সহিহুল মুসলিম হাদিস একাডেমী ৩০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩০৮, ইসলামিক সেন্টারঃ ৩১৯ http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=47057

তাই বোরাক হিসেবে নারীরূপে যে চিত্রটি এতদিন ধরে দেখে আসছি তা মূলত পূরাণের কামধেনুরই কল্পিত চিত্র যা আমরা মুসলিমরা বোরাক হিসেবে ভুল করে থাকি, বরং ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল করানো হয়ে থাকে।

    Footnotes

    Footnotes
    1ঋগ্বেদ ১০/১৪৯/৪, রমেশচন্দ্র দত্ত
    2কৃষ্ণ যর্জুবেদ ২/৪/১১, হরফ প্রকাশনী, অনুবাদঃ বিজানবিহারী গোস্বামী
    3কৃষ্ণ যর্জুবেদ ৩/৩/৫
    4সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩০৫, হাদিস একাডেমী, ihadis
    5সহিহুল মুসলিম হাদিস একাডেমী ৩০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩০৮, ইসলামিক সেন্টারঃ ৩১৯ http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=47057
    Show More
    0 0 votes
    Article Rating
    Subscribe
    Notify of
    guest
    0 Comments
    Inline Feedbacks
    View all comments
    Back to top button