বনু কুরাইজা সংক্রান্ত প্রশ্ন

প্রশ্নোত্তর (Q&A)Category: ইতিহাসবনু কুরাইজা সংক্রান্ত প্রশ্ন
Mike The asked 3 months ago
বনু কুরাইজার ঘটনার পর অর্থাৎ সকল সাবালক পুরুষদের গোপন কেশ দেখে হত্যার পর নারীদের দাসী হওয়ার পর নারীদের ও মায়েদের বিক্রি করা হয়েছিল এক বাজারে এবং শিশুদেরকে মায়েদের থেকে আলাদা করে বিক্রি করা হয়েছিল দূরের অন্য বাজারে। তার টাকা দিয়ে নবী (সা) মুসলিমদের জন্য অনেক অস্ত্র ও তলোওয়ার কিনেছিল। প্রশ্ন এই যে, দাসী অবস্থায় মুসলিমদের অধীনে সেই বনু কুরাইজার নারী ও সন্তান ছাড়া মায়েদের জীবন এবং মা ছাড়া শিশুদের জীবন কীভাবে কেটেছিল? বিশেষ করে বাচ্চা মেয়েদের জীবন। কারণ যেহেতু হাদিসে আছে নাবালিকা দাসীর সাথে সহবাস বৈধ।
1 Answers
Ashraful Nafiz Staff answered 3 months ago

প্রথমত বনু কুরাইজার প্রতি যে সিম্পেতি দেখায় কাফের-মুশরিকরা সে বিষয়ে কিছু বলে নেওয়া যাক। প্রথমত বনু কুরাইজার সব পুরুষকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয় নি, বরং যারা যোদ্ধা ছিল শুধু তাদেরকেই মৃত্যু দন্ড দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয়ত তাদেরকে ইসলামের আইন অনুসারে শাস্তি দেওয়া হয় নি, বরং তাদেরকে তাদের নিজস্ব ধর্মীয় অর্থাৎ ইহুদিদের ধর্মীয় আইন অনুসারে শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। তৃতীয়ত তাদের শাস্তি রাসূল (সা) নিজে নির্ধারণ করেন নি, বরং ইহুদিদেরই একজন বন্ধু যিনি পরবর্তীতে মুসলিম হয়েছিলেন তার কথা অনুসারেই শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। চতুর্থ বিষয় হল তারা নিরপরাধ ছিল না, তারা রাষ্ট্রদ্রোহীতার সাথে জড়িত ছিল। এছাড়া যারা ক্ষমা চেয়ে ইসলাম গ্রহণ করছে তাদেরকে ক্ষমা করা হইছিল।

এখন হয়ত বলবেন অন্যদেরকে কেন শাস্তি দেওয়া হয়েছে, দোষতো নেতাদের ছিল। এর উত্তরও সিম্পল, বাকিরা যদি তাদের লিডারের আনুগত্য না করে মুসলিমদের পক্ষে থাকতো তাহলেতো আর কাউকে শাস্তি দেওয়া হত না, আপনি জানেন আপনার নেতা অন্যায় করতেছে, তারপরও কেন তার অনুগত্য করবেন? যদি অন্যায় কাজে তার আনুগত্য করেন তাহলে কি আপনিও সমান দোষী নন? অন্যায় কাজে আনুগত্য করা কি সেই অন্যায়কে সমর্থন করা নয়?
এই নিয়ে বিস্তারিত দলিল প্রমানসহ পড়ে দেখতে পারেন -

আপনি বললেন, “দাসী হওয়ার পর নারীদের ও মায়েদের বিক্রি করা হয়েছিল এক বাজারে এবং শিশুদেরকে মায়েদের থেকে আলাদা করে বিক্রি করা হয়েছিল দূরের অন্য বাজারে” এই কথার পক্ষে কি কোন দলিল প্রমান রয়েছে আপনার কাছে? আসলে আমি এমন কিছু খুজে পাচ্ছি নাতো তাই, যদি আপনার কাছে গ্রহনযোগ্য কোন দলিল থাকে তাহলে দয়া করে সেটা আমাদেরকে দিয়ে উপকৃত করবেন।

আপনার প্রশ্ন “দাসী অবস্থায় মুসলিমদের অধীনে সেই বনু কুরাইজার নারী ও সন্তান ছাড়া মায়েদের জীবন এবং মা ছাড়া শিশুদের জীবন কীভাবে কেটেছিল?” এই প্রশ্নটা দেখে একটা বিষয়তো পরিষ্কার যে ইসলামে দাস-দাসীদের সাথে কি রকম আচার আচরণ করতে বলা হয়েছে সে বিষয়ে আপনার ন্যূনতম জ্ঞানটুকুও নেই। এটা পড়ে দেখতে পারেন, আশা করি ইসলামে দাস প্রথা নিয়ে মোটামুটি ব্রিফ সামারি পেয়ে যাবেন - https://bn.quora.com/নবী-মোহাম্মদ-কি-দাস/answers/341254980 । আর আরেকটা কথা হল তাদেরকে শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড না দিয়ে যে দাস-দাসী হিসেবে রাখা হয়েছে তা কি তাদের উপর মেহেরবানী করা নয়? কারন দাস-দাসীর মর্যাদা, সম্মান, অধিকার ইসলামে কম দেওয়া হয় নি। এছাড়া ইয়াহুদিদের জন্য এত মায়াকান্না,তো ইয়াহুদিরা তো অনেক ভাল। হাসপাতালের রোগী, বাচ্চা কাচ্চা, সব মেরে সাফ করে দিচ্ছে সেইখানে বনু কুরাইজার ঘটনায় তো মাত্র দাসী আর দাস বানানো হইছিল মাত্র। ইনফ্যাক্ট যুদ্ধে নারী শিশু সবাইকে হত্যা করা লাগবে সেই সমস্ত বহু রেফারেন্স আছে বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টে - https://www.hadithbd.com/books/link/?id=6912

আপনি আরেকটি কথা বলেছেন, “নাবালিকা দাসীর সাথে সহবাস বৈধ।” ইসলাম সম্পর্কে  না জানার দরুন এই জাতীয় কথা বলাই সম্ভব। এই দাবিটি যে হাদিস দেখিয়ে করা হয় আমি সেই হাদিসের ছোট করে ব্যখ্যা দিচ্ছি, আপনারা ফিকহের কিতাবাদিতে এসব বিস্তর আকারে পেয়ে যাবেন,

কম বয়সি দাসি আসলেই নাবালিকা কিনা, সে গর্ভবতি কিনা, কম বয়সি দাসির সাথে আগে কেউ সহবাস করেছিল কিনা এটা নিশ্চিত হতে এই ‘ইসতিবরা’আ’ এর পদ্ধতি। অনেক ইসলাম বিদ্বেষী দাবি করে ৩ মাস ইসতিবরা’আ মানে হল ৩ মাস পর সেই দাসীর সাথে সহবাস করা যাবে, সে অনুপযুক্ত হলে, কিন্তু তাদের এই দাবিটি সঠিক নয়। হাদিসে কোথাও ইসতিবরা’আ - এর পর দাসীর সাথে সহবাস বৈধ হয়ে যায় এই জাতীয় কিছু বলা হয় নি। ওলামাগণ বলেছেন দাসী উপযুক্ত হলে ও তার কোন ক্ষতির সম্ভবনা না থাকলে তার সাথে সহবাস করা বৈধ হবে।

Back to top button