ছয়দিন কি গ্রিক ইহুদিদের হতে কপি করা?

প্রশ্নোত্তর (Q&A)Category: বিজ্ঞানছয়দিন কি গ্রিক ইহুদিদের হতে কপি করা?
Xxx asked 6 months ago
  1. বিভিন্ন  ইসলামিস্ট আর্টিকেল সমূহে কুরআনের ছয় আইয়াম শব্দটাকে একটা অনির্দিষ্ট পিরিয়ড বা ইপোক বলে চালানোর চেষ্টা করা হয়। এইগুলার বর্ননায় তাহির ইবনে আশুর সহ বিভিন্ন মুফাসসির যারা আসলে বৈজ্ঞানিক উতকর্ষতা সাধনের পরে ব্যাপার গুলার গোজামিল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তাদের রেফারেন্স টানা হয়। উক্ত স্কলার উনিশ শতকের একজন আধুনিক স্কলার। তার পূর্ববর্তী স্কলারসমুহ যেমন ইবনে কাসির, ইমাম কুরতুবী এরা বেশিরভাগই তাদের তাফসীর গ্রন্থ সমূহে এই ছয় আইয়ামকে মাত্র ছয় হাজার বছর অথবা মাত্র ৩০০০০ বছর উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া এমন কোন প্রাচীন ক্লাসিকাল এরাবিকের ডিকশনারি পাওয়া যায় না যেখানে আইয়াম শব্দটার অর্থ \\\\\\\"চব্বিশ ঘন্টার দিন \\\\\\\" ব্যাতীত অন্য কিছু আসে। দেখুন আমি চাই এই বিষয়টার একটা সমাধান হউক। তাই আপনাদের দ্বারস্ত হইয়েছি। আর তৃতীয়ত এই ছয় আইয়ামে বা দিনে পৃথিবী সৃষ্টি হবার যে ঘটনা সেটি ইহুদী আর গ্রিক ও রোমান সভ্যতার প্রাচীন  পৌরানিক কাহিনী ও ধর্মগ্রন্থ সমূহে পুন পুন বার ফুটে উঠে। সপ্তম শতকে এই ছয় আইয়ামের ঘটনা কুরআনে ইনক্লুড করা খুব কঠিন কোন কাজ ছিল না কারণ তখন এই মতবাদ গুলাই প্রচলিত ছিল। দ্বিতীয়ত, এই ছয় আইয়ামে যদি পৃথিবী সৃষ্টি হয়েই থেকে থাকে তাহলে প্রতিটি আইয়ামের দৈর্ঘ্য কত?  কারণ সূরা হজ্জে স্পেসিফিকালি বলা হইছে আল্লাহর দিন তোমাদের  গননার এক হাজার বছর, যদি এম৷ হয় তাহলে তা বিজ্ঞানবিরোধী। কারণ বিজ্ঞান মতে ইউনিভার্স সৃষ্টি হতে হাজার বছর নয় কয়েকশ কোটি বছর লেগেছে প্লিজ একটু প্রশ্নগুলার স্পেসিফিক উত্তর দিবেন। 
2 Answers
Ashraful Nafiz Staff answered 6 months ago

এইখানে যে উত্তর দেওয়া হয়েছে ও যে লিংকগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো ভালো করে পড়লে আশা করি উত্তর পেয়ে যাবেন।

তারপরও কিছু কথা বলি, আপনার দাবী তাহির ইবনে আশুর সহ রিসেন্ট টাইমের মুফাস্সিরগণ বিজ্ঞানের সাথে মিলাতে যেয়ে গোজামিল দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আপনার এই দাবির পক্ষে কোন ভেলিড প্রমান আছে নাকি মুর্খদের মত মনে যা এসেছে তাই দাবি করে বসেছেন? ব্রেন কি আপনারা নিজেদের মস্তিষ্ক হতে খুলে অন্য কোথাও লাগিয়ে ঘুরে এই সব প্রমান ছাড়া দাবি করেন নাকি? কোন কিছু দাবি করলে রেফারেন্স সহ দাবি করবেন না হয় আপনাদের মত মেন্টাল পাবলিকদের মত মানুষদের কারনে অনেক সময় ভালো মানুষও বিভ্রান্ত হয় ও প্রশ্ন এপ্রুভ করার সময়ও একটা সমস্যার তৈরি হয়, কে পাগল ও কে ভালো মানুষ তা বুঝতেই ঝামেলার তৈরি হয়ে যায়। আর যে এমন নামে প্রশ্ন করে সে যে মানুসিক রোগীর চাইতে কোন অংশে কম নয় তাতো নতুন করে বলার আর কিছুই রাখে না, চিন্তা করছি কেন এই নামে প্রশ্ন করা কোন ব্যক্তির প্রশ্ন এপ্রুভ হয়েছে!

যাইহোক প্রশ্ন যেহেতু এপ্রুভ হয়েছে সেহেতু উত্তর দিয়েই দিচ্ছি। মুহাম্মদ আত-তহির বিন আশুর বলেছেন. আরবি 'ألْفٌ' (হাজার) শব্দটি অনেকসময় "অনেক" বা "প্রচুর" অর্থেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন, ‘আমি তোমার সহিত হাজার বার সাক্ষাত করেছি’, এবং আল্লাহর বক্তব্য : 'তাদের মধ্যে কেও একজন হাজার বছর বেচে থাকতে চাইতো'। [তাফসিরু ইবনে আশুর, ২১/২১৪] এখানে তিনি ভুল কোথায় বলেছেন? তার প্রমানেও কি ভুল আছে? নাকি বলতে চাচ্ছেন একজন আরবি না জানা বাঙ্গালি একজন আরবি জানা মুফাস্সিরের চাইতে আরবি বেশি জানে?

বাদ দিলাম তার কথা। সমসাময়িক সব তাফসিরকারকের কথাই বাদ দিলাম। তাহলে কি ইবনে কাসির (জন্ম ৭০২), শিহাবুদ্দীন আল কাস্তালানী (জন্ম ৮৫১ হিজরি), আবুস-সউদ মুহাম্মদ ইবনু মুস্তফা আল-আমাদী (জন্ম ৯২৬ হি.), আল খাজেন (জন্ম ৬৭৪ হি.) ইত্যাদি মুফাস্সিরগণ যারা ইয়াওমের মানে সময়কালও হতে পারে বলেছেন তারা কি বিজ্ঞানের সাথে মিলাতে যেয়ে গোজামিল দিয়েছেন? শুধু যে ইবনে আশুরই এমন বলেছেন এই জাতীয় কথাই সম্পূর্ণ মিথ্যা, বিখ্যাত ব্যকরণবিদ ইবনে আল খাবাজ (জন্ম ৬৩৯ হি.) বলেছেন, ‘যদিও দিন দ্বারা মানুষের ২৪ ঘন্টার একদিন বুঝানো হয় কিন্তু কোরআনে দিন দ্বারা নির্দিষ্ট সময়কালও বুঝাতে পারে।’ [কিতাবুত তাওজিহ আল লামি পৃষ্ঠা ১৮৮] এখন কি এনাকেও বলবেন যে বিজ্ঞানের সাথে মিলাতে যেয়ে গোজামিল দিয়েছে?

এই ইয়াওম নিয়ে মতভেদ রয়েছে এটা সত্য, কারো মতে মানুষের ২৪ ঘন্টার দিন, কারো মতে এক হাজার বছরের দিন, কারো মতে ৫০ হাজার বছরের দিন, কারো মতে পর্যায়কাল যার সময় আল্লাহই ভালো জানেন। মতভেদতো থাকতেই পারে, কারন সুস্পষ্ট করে সরাসরি বলা হয় নি এই দিন বলতে আদতে কি বুঝানো হয়েছে। সেহেতু আমাদের কাছে পর্যায়কাল ব্যাখ্যাটাই সবচেয়ে গ্রহনযোগ্য মনে হয় কারন যেমন মুফাস্সিরগণ বলেছেন তখনতো সূর্য ছিল না সেহেতু এই দিন বলতে সময়কাল বুঝানো হয়ে থাকতে পারে, এবং আত তাহির বিন আশুর যেমনটা বলেছেন হাজার বছর বলা দ্বারা প্রচুর বা অনেকও বুঝানো হয়ে থাকে আরবিতে। সেহেতু এসব সময়কাল ব্যাখ্যাটাকে গ্রহনযোগ্য করে তোলে।

বিজ্ঞান বলছে এত এত বছর মহাবিশ্বের, কিছুদিন পর যদি বলে যে না আগে ভুল ছিল মহাবিশ্বের বয়স আরো বেশি অথবা আরো কম তখন কি করবেন? হ্যা? মহাবিশ্বের বিষয়ে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য বিজ্ঞান দিচ্ছে, খুজে দেখেন গত ১ বছরে মহাবিশ্ব নিয়ে পুরাতন বহু মত ভুল প্রমানিত হয়ে গিয়েছে অলরেডি। তাই কোরআনে আল্লাহ ‍সুস্পষ্ট করে যেহেতু বলেন নি এই সময়কালের দৈর্ঘ্য কতটুকু সেহেতু সেটা একমাত্র তিনিই ভালো জানেন, এটাতে নিজ থেকে একটা সময় বলা মুর্খতা ছাড়া আর কিছুই হবে না।

আর বাকি রইল কপির বিষয়টা, আমার কাছে যখন কেউ বলে বাইবেল থেকে কোরআন কপি তখন বিষয়টা বেশ হাস্যকর মনে হয়। কারন যেহেতু তাওরাত, জবুর, ইঞ্জিল আল্লাহই পাঠিয়েছিলেন সেহেতু সেখানের (বর্তমানের বিকৃত কপির) অনেক কিছুই কোরআনের সাথে মিল থাকবে বা থাকতেই পারে সেহেতু মিল থাকলেই সেটাকে কপি বলাটা আসলেই মস্তিষ্কহীনতা মূলক একটি কথা ছাড়া আর কিছুই নয়। আর মূসা ও এর আগের নবীগণ যে গ্রিক সভ্যাতার বহু আগে এসেছিলেন তা অনেকটাই নিশ্চিত বলা যায়, সেহেতু কোরআনের সাথে বাইবেলের কোন কিছুর মিল থাকলে ও সেটা গ্রিকদের সাথেও মিল থাকলে তাকে গ্রিক থেকে কপি বলাটাও বিবেকসম্মত মনে হয় না।

Tahsin Arafat Staff answered 6 months ago
আইয়্যাম শব্দটির একটি উদাহরণ হলো "আইয়্যামে জাহিলিয়্যাহ" বা অজ্ঞতার যুগ, যা এক দিনও বোঝাচ্ছে না, এক হাজার বছরও বোঝাচ্ছে না। সময়কাল বোঝাচ্ছে।
Back to top button