ইসলামখ্রিস্টধর্ম

কোনটি মানবজাতির জন্য উন্মুক্ত? কুরআন নাকি বাইবেল?

আলহামদুলিল্লাহ,
সকল শুকরিয়া একমাত্র মহান আল্লাহর দরবারে। কারন মহান আল্লাহর রহমতে আমি আজ আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লেখা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো ইনশাল্লাহ।
মহান আল্লাহ বলেনঃ

اِنۡ ہُوَ اِلَّا ذِکۡرٌ لِّلۡعٰلَمِیۡنَ ۙ

অর্থঃ এটা (কুরআন) তো কেবল বিশ্ববাসীদের জন্যে উপদেশ,…[1]সূরাঃ আত-তাকভীরঃ ২৭

আজ আমি আমার সকল প্রিয় ভাই ও বোনদের সামনে আমার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লেখা উপস্থাপন করবো। কারন আমাদের জন্য এ লেখাটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারন আমাদের সকল মুসলমান ভাই ও বোন সমাদের প্রতিটি খ্রিস্টান বা অন্য অমুসলিমদের দ্বারা তিরস্কারের পাত্র হচ্ছে যে, তোমরা যে কুরআন অনুসরণ করো বা তোমরা যে কুরআন কে নিজেদের জীবনের সংবিধান মনে করো তা তো তোমাদের জন্য না বরং সেটা আরব জাতির জন্য। কারন তোমরা কি দেখো না যে কুরআন আরবি। আর আরবদের ভাষা হচ্ছে আরবি তার মানে এ কুরআন শুধু আরব জাতির জন্য। তো আমি আমার সকল মুসলমান ভাইদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলবো আপনারা কোনো প্রকার চিন্তা করবেন না। কারন আমাদের পবিত্র কুরআন যে সর্বজনীন বা সকল মানুষ জাতির জন্য তা আমি আমার এ লেখার মাধ্যমে উপস্থাপন করবো ইনশাআল্লাহ।
তো আসুন আমরা সরাসরি আমাদের লেখার মধ্যে প্রবেশ করি।

কুরআন সর্বজনীন হওয়ার ব্যাপারে কুরআন নিজে কি বলে?

এখন থেকে আমাদের কেউ যদি বলে যে কুরআন কি সর্বজনীন তাহলে আমরা বুক উঁচু করে জবাব দিবো যে হ্যা। কারন কুরআন যে সর্বজনীন সেটা আমার কথা না বরং স্বয়ং মহান আল্লাহর কথা। মহান আল্লাহ বলেনঃ

  1. এটা (কুরআন) তো কেবল বিশ্বাবাসীদের জন্যে উপদেশ,[2]সূরা তাকভীরঃ ২৭

  2. আপনার পালনকর্তার বাহিনী সম্পর্কে একমাত্র তিনিই জানেন এটা (কুরআন) তো মানুষের জন্যে উপদেশ বৈ নয়।[3]সূরা মুদ্দাস্সিরঃ ৩১

  3. এটা (কুরআন) খোদাভীরুদের জন্যে অবশ্যই একটি উপদেশ।[4]সূরা হাক্কাহঃ ৪৮

  4. অথচ এই কোরআন তো বিশ্বজগতের জন্যে উপদেশ বৈ নয়।[5]সূরা কলমঃ ৫২

  5. (কুরআন) বুদ্ধিমানদের জন্যে উপদেশ ও হেদায়েত স্বরূপ।[6]সূরা মুমিনঃ ৫৪[7]সূরা যুমারঃ ২১[8]সূরা ছোয়াদঃ ৪৩

  6. এটাকি তাদের জন্যে যথেষ্ট নয় যে, আমি আপনার প্রতি কিতাব (কুরআন) নাযিল করেছি, যা তাদের কাছে পাঠ করা হয়। এতে (কুরআনে) অবশ্যই বিশ্বাসী লোকদের জন্যে রহমত ও উপদেশ আছে।[9]সূরা আনকাবুতঃ ৫১

  7. আপনি এর জন্যে তাদের কাছে কোন বিনিময় চান না। এটা (কুরআন) তো সারা বিশ্বের জন্যে উপদেশ বৈ নয়।[10]সূরা ইউসুফঃ ১০৪

  8. হে মানবজাতি, তোমাদের কাছে উপদেশবানী (কুরআন) এসেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময়, হেদায়েত ও রহমত মুসলমানদের জন্য।[11]সূরা ইউনুসঃ ৫৭

  9. এটি (কুরআন) সারা বিশ্বের জন্যে একটি উপদেশমাত্র।[12]সূরা আনআমঃ ৯০

  10. এই হলো মানুষের জন্য বর্ণনা। আর যারা ভয় করে তাদের জন্য উপদেশবাণী।[13]সূরা ইমরানঃ ১৩৮

  11. (হে নবী) বলে দাও, হে মানবজাতি, সত্য (কুরআন) তোমাদের কাছে পৌঁছে গেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের তরফ থেকে।[14]সূরা ইউনুসঃ ১০৮

  12. হে মানবজাতি! তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সনদ (কুরআন) পৌঁছে গেছে। আর আমি তোমাদের প্রতি প্রকৃষ্ট আলো অবতীর্ণ করেছি।[15]সূরা নিসাঃ ১৭৪

  13. নিশ্চয় যারা গোপন করে, আমি যেসব বিস্তারিত তথ্য এবং হেদায়েতের কথা নাযিল করেছি সকল মানুষের জন্য কিতাবের মধ্যে বিস্তারিত বর্ণনা করার পরও।[16]সূরা বাকারাঃ ১৫৯

  14. রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা সকল মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী।[17]সূরা বাকারাঃ ১৮৫

  15. এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ নিজের আয়াত সমূহ মানুষের জন্য, যাতে তারা বাঁচতে পারে।[18]সূরা বাকারাঃ ১৮৭

  16. নিশ্চয় আমি (হে নবী) আপনার প্রতি সত্য কিতাব (কুরআন) অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি মানুষের মধ্যে ফয়সালা করেন,…[19]সূরা নিসাঃ ১০৫

  17. হে মানবজাতি! তোমাদের পালনকর্তার যথার্থ বাণী (কুরআন) নিয়ে তোমাদের নিকট রসূল এসেছেন, তোমরা তা (কুরআন) মেনে নাও যাতে তোমাদের কল্যাণ হতে পারে।[20]সূরা নিসাঃ ১৭০

  18. এ সকল উদাহরণ আমি মানুষের জন্যে দেই; কিন্তু জ্ঞানীরাই তা বোঝে।[21]সূরা আনকাবুতঃ ৪৩

  19. আমি এই কোরআনে মানুষের জন্য সর্বপ্রকার দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছি। আপনি যদি তাদের কাছে কোন নিদর্শন উপস্থিত করেন, তবে কাফেররা অবশ্যই বলবে, তোমরা সবাই মিথ্যাপন্থী।[22]সূরা রুমঃ ৫৩

  20. আমি এ কোরআনে মানুষের জন্যে সব দৃষ্টান্তই বর্ণনা করেছি, যাতে তারা অনুধাবন করে;…[23]সূরা যুমারঃ ২৭

কুরআন যে সর্বজনীন সে সম্পর্কে আরো রেফারেন্সঃ

  • সূরা যুমারঃ ৪১
  • সূরা জাসিয়াঃ ২০
  • সূরা মুহাম্মাদঃ ৩
  • সূরা হাশরঃ ২১
  • সূরা ইব্রাহিমঃ ১
  • সূরা ফুরকানঃ ১

তো আলহামদুলিল্লাহ আমি কুরআনের আলোকে যথাযথ আয়াত এনে প্রমাণ করেছি যে কুরআন শুধু মাত্র আরবজাতি বা আরবি ভাষা-ভাষী মানুষের জন্য না। বরং আমাদের মহান আল্লাহ এ কুরআন কে পুরো বিশ্ববাসীর জন্য উপদেশবানী করে ও হিদায়াত করে পাঠিয়েছে। আর এখানে কোনো অজুহাত চলবে না যে কুরআন সর্বজনীন না। বরং কুরআন যে সর্বজনীন সে সম্পর্কে কুরআনের উপরের রেফারেন্স গুলোই এনাফ। এর পরেও যদি কেউ বলে কুরআন সর্বজনীন না আমি আমার সকল মুসলমান ভাইদের বলবো আপনারা ধরে নিবেন সে হয় মেন্টাল বা হলে বোকা ছাড়া আর কিছু না। আল্লাহ আমাদের সকল মুসলমান ভাই ও বোনদের হেফাজত করুক পথভ্রষ্ট ও গোমরাহি জাতির থেকে,, আমিন,,।

বাইবেল সর্বজনীন নাকি শুধু মাত্র ইসরায়েল জাতির জন্য?

তো আসুন এবার আমরা দেখবো বাইবেল কি সর্বজনীন নাকি শুধু মাত্র ইসরায়েল জাতির জন্য। বাইবেল যে শুধু মাত্র ইসরায়েল জাতির জন্য ও যিহুদা জাতির জন্য এটা প্রমাণ করতে আমার বেশি কষ্ট করতে হবে না ও বেশি রেফারেন্স দেওয়া লাগবে না শুধু মাত্র একটা রেফারেন্সই যথেষ্ট। তো আসুন দেখা যাক বাইবেল কি বলে তার সম্পর্কেঃ

কিন্তু ঈশ্বর তাঁর লোকদের দোষ দেখাবার জন্য পবিত্র শাস্ত্রে বলেছেন:
প্রভু বলেন, “সময় আসছে যখন আমি ইস্রায়েল ও যিহূদার লোকদের জন্য একটা নতুন ব্যবস্থা স্থাপন করব।

মিসর দেশ থেকে তাদের পূর্বপুরুষদের আমি হাত ধরে বের করে আনবার সময় তাদের জন্য যে ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলাম এই নতুন ব্যবস্থা সেই ব্যবস্থার মত হবে না। তারা আমার সেই ব্যবস্থা মত চলে নি বলে আমি তাদের দিকে মনোযোগ দিই নি।” প্রভু এই কথা বলেন।

প্রভু আরও বলেন, “পরে আমি ইস্রায়েলীয়দের জন্য যে ব্যবস্থা স্থাপন করব। তা হল, আমার আইন-কানুন আমি তাদের মনের মধ্যে রাখব এবং তাদের অন্তরেও তা লিখে রাখব। আমি তাদের ঈশ্বর হব আর তারা আমারই লোক হবে।[24]হিব্রু  ৮.৮-১০

ঈশ্বর এই ব্যবস্থাকে নতুন ঘোষণা করে আগের ব্যবস্থাকে পুরানো বলে অচল করে দিলেন। যা পুরানো এবং অনেক দিনের বলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তা শীঘ্রই অদৃশ্য হয়ে যাবে।[25]হিব্রু ৮.১৩

তো দেখুন আমি আপনাদের সামনে হিব্রুঃ ৮.৮,৯,১০, ও ১৩ ভার্স গুলো উপস্থাপন করেছি। সেখানে খ্রিস্টান ধর্মের গোড়া সাধু পৌল সরাসরি বলতাছে যে বাইবেল বা নতুন নিয়ম / New testament শুধু মাত্র বানী ইসরায়েল বা ইসরায়েল জাতির জন্য। তো এখানে আর কোনো অজুহাত খাটবে না খ্রিস্টানদের যে বাইবেল সর্বজনীন। না বাইবেল সর্বজনীন না। কারন যার বিশ্বাসের উপর বা যার ভিত্তির উপর পুরো খ্রিস্টান ধর্ম দাড়িয়ে আছে সে পৌল বলতাছে বাইবেল বা নতুন নিয়ম শুধু মাত্র বানী ইসরায়েল জন্য। আর বাইবেল বা নতুন নিয়ম যে শুধু মাত্র ইসরায়েল জাতির জন্য হবে সেটাও যিশুর জন্মের অনেক আগেই,, সদাপ্রভু এলোহিম বলেদিয়েছেনঃ

সদাপ্রভু বলছেন, “সময় আসছে যখন আমি ইস্রায়েল ও যিহূদার লোকদের জন্য একটা নতুন ব্যবস্থা স্থাপন করব।

মিসর দেশ থেকে তাদের পূর্বপুরুষদের আমি হাত ধরে বের করে আনবার সময় তাদের জন্য যে ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলাম এই নতুন ব্যবস্থা সেই ব্যবস্থার মত হবে না। আমি যদিও তাদের স্বামীর মত ছিলাম তবুও তারা আমার ব্যবস্থা ভেংগেছিল।
পরে আমি ইস্রায়েলীয়দের জন্য যে ব্যবস্থা স্থাপন করব তা হল, আমার আইন-কানুন আমি তাদের মনের মধ্যে রাখব এবং তাদের অন্তরেও তা লিখে রাখব। আমি তাদের ঈশ্বর হব আর তারা আমারই লোক হবে।[26]যেরিমায়াঃ ৩১. ৩১-৩৩

তো আমরা বাইবেলের পুরাতন নিয়ম ও নতুন নিয়মের রেফারেন্সের উপর ভিত্তি করে বলতাছি বাইবেল কখনো সর্বজনীন ছিলো না আর হবেও না। মহান আল্লাহ আমাদের সবাই কে এসব জিনিস বুঝার তৌফিক দান করুক।

কুরআন সম্পর্কে খ্রিস্টানদের মিথ্যাচার ও তার সমাধান

কুরআন কেন আরবি ভাষাতে নাযিল হলো?

প্রশ্নঃ

১. কুরআন কেন আরবি ভাষাতে নাযিল হলো অন্য ভাষাতে না হয়ে। এটার থেকে কি প্রমান হয় না যে কুরআন সর্বজনীন না?

জবাবঃ আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর প্রশ্ন করার জন্য। আসলে কুরআন আরবি ভাষাতে নাযিল হওয়ার অনেক কারন রয়েছে তার মধ্যে কিছু কারন হলোঃ
১. মুহাম্মাদ সাঃ নিজেই আরবি ভাষী ছিলেন
২. তার সাহাবীরা সবাই ছিলো আরবি ভাষী
৩. তারা যেন কুরআনকে তাদের ভাষাতে বুঝতে পারে ও সেটা পুরো বিশ্ববাসীর কাছে প্রচার করতে পারে সে জন্য।

তো আসুন আমরা উপরের তিনটি পয়েন্ট নিয়ে একটু আলোচনা করি বুঝার ক্ষেত্রে।

মুহাম্মাদ সাঃ নিজেই আরবি ভাষী ছিলেন

তো নবী মুহাম্মাদ সাঃ এর উপরে যদি আরবি ভাষাতে কুরআন নাযিল না হয়ে চায়না ভাষা তে নাযিল তো তাহলে কি তিনি কুরআন বুঝতেন। আমরা বলবো অবশ্যই না। সে কারনেই মহান আল্লাহ কুরআনে বলেছেনঃ

(হে নবী) আমি কোরআনকে আপনার ভাষায় সহজ করে দিয়েছি, যাতে আপনি এর দ্বারা পরহেযগারদেরকে সুসংবাদ দেন এবং কলহকারী সম্প্রদায়কে সতর্ক করেন।[27]সূরা মরিয়মঃ ৯৭[28]সূরা ইব্রাহিমঃ ৪

আরবি ভাষাতে কুরআন নাযিল হয়েছে এ কারনে যে মুহাম্মাদ সাঃ নিজে যেনো কুরআন বুঝে ও বুঝার পড়ে সকল কে সর্তক করতে পারে। এখন তার উপরে আরবিতে কুরআন নাযিল না হয়ে অন্য কোনো ভাষাতে নাযিল হলে তিনি নিজেই বুঝতেন না তো মানুষ কে সর্তক করতো কি ভাবে।

তাঁর সাহাবীগণ সবাই ছিলেন আরবিভাষী

এখানেও ঐ একই দাবি আমাদের। কারন মুহাম্মাদ সাঃ এর সকল সাহাবী ছিলো আরবি ভাষী। সে কারনে মহান আল্লাহ কুরআন কে আরবি ভাষাতে নাযিল করেছেন। যেন তারা বুঝতে পারে তার উপর আমল করতে পারে ও সে বানী যেন সব সময় মনে রাখতে পারে। কারন তারা যে ভাষার সাথে পরিচিত না এমন ভাষাতে কুরআন নাযিল হলে তারা কুরআন বুঝা,মানা, ও মনে রাখা তো দূরের কথা তারা কুরআনের কাছেই আসতো না। কারন মহান আল্লাহ বলেনঃ

আমি আপনার ভাষায় কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি, যাতে তারা স্মরণ রাখে।[29]সূরা দুখানঃ ৫৮[30]সূরা যুখরুফঃ ৩[31]সূরা ত্বহাঃ ১১৩[32]সূরা ইউসুফঃ ২

তাঁরা যেন কুরআনকে তাদের ভাষাতে বুঝতে পারে ও সেটা পুরো বিশ্ববাসীর কাছে প্রচার করতে পারে সে জন্য

আপনার কর্তব্য কেবল প্রচার করা। আমি তাদের রক্ষক করে পাঠাইনি। আপনার কর্তব্য কেবল প্রচার করা।[33]সূরা শূরাঃ ৪৮

আমার প্রতি এ কোরআন অবর্তীর্ণ হয়েছে-যাতে আমি তোমাদেরকে এবং যাদের কাছে এ কোরআন পৌঁছে সবাইকে ভীতি প্রদর্শন করি।[34]সূরা আনআমঃ ১৯

হে রসূল, পৌছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে। আর যদি আপনি এরূপ না করেন, তবে আপনি তাঁর পয়গাম কিছুই পৌছালেন না।[35]সূরা মায়িদাহঃ ৬৭

আসলে আমাদের উপরের দুইটি দাবি অনুযায়ী তিন নাম্বার দাবি সম্পন্ন পরিস্কার যে কুরআন আরবি ভাষাতে নাযিল হওয়া সে সময়ের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। কারন যার উপর কুরআন নাযিল হয়েছে সে ছিলো আরবি ভাষী তার কাছে থেকে যারা কুরআন শুনেছে ও মুখস্থ করেছে তারাও ছিলো আরবি ভাষী। তাই কুরআন আরবিতে নাযিল হওয়া একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কারন যারা এ কুরআনের বানীকে পুরো পৃথিবী বাসীর কাছে পৌঁছে দিবে তাদের ভাষাতেই যদি কুরআন নাযিল না হয়ে জাপানি ভাষায় নাযিল হতো তাহলে তারা কুরআনের বানী প্রচার তো দূরের কথা তারা নিজেরাই বুঝতো না যে এ কুরআনে কি বলা হয়েছে। আর আমরা মুসলমানেরা জানি আপনাদের দাবি হচ্ছে মুহাম্মাদ সাঃ কেন আরবি ভাষাতে আসলো ও তার উপরে কেন কুরআন আরবি ভাষাতে নাযিল হলো। সে কেন অন্য ভাষাতে আসলো না ও তার উপর কুরাআন কেন অন্য ভাষাতে নাযিল হলো না। আপনাদের এ সকল ভিত্তিহীন ও ভ্রান্ত দাবির সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেনঃ

আমি যদি একে অনারব ভাষায় কোরআন করতাম, তবে অবশ্যই তারা বলত, এর আয়াতসমূহ পরিস্কার ভাষায় বিবৃত হয়নি কেন? কি আশ্চর্য যে, কিতাব অনারব ভাষায় আর রসূল আরবী ভাষী! বলুন, এটা বিশ্বাসীদের জন্য হেদায়েত ও রোগের প্রতিকার। যারা মুমিন নয়, তাদের কানে আছে ছিপি, আর কোরআন তাদের জন্যে অন্ধত্ব। তাদেরকে যেন দূরবর্তী স্থান থেকে আহবান করা হয়।[36]সূরা ফুসছিলাতঃ ৪৪

আর যেহেতু আপনারা আমাদের কুরআন নিয়ে ও মুহাম্মাদ সাঃ কে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সে কারনে আমরাও আপনাদের কাছে কিছু প্রশ্ন রেখে গেলাম।

খ্রিস্টানদের কাছে পাল্টা প্রশ্ন

১. বাইবেল কেন দুইটি ভাষাতে হিব্রু ও গ্রীকে?
২. নতুন নিয়ম কেন হিব্রুতে না হয়ে গ্রীকে হলো?
৩. পুরো বাইবেলটা কেন হিব্রু বা গ্রীকে হলো না?
৪. যিশুর ভাষা ছিলো হিব্রু ও আরামিক কিন্তু তার গসপেল কেন গ্রীকে?
৫. যিশু কি গ্রীক ভাষায় চারটি গসপেল নামক কিছু চিনতো?
৬. আমাদের এসব দাবী অনুযায়ী আরো জোরালো ভাবে প্রমান হয় যে বাইবেল সর্বজনীন না। এটা কি আপনারা মানবেন?

    Footnotes

    Footnotes
    1সূরাঃ আত-তাকভীরঃ ২৭
    2সূরা তাকভীরঃ ২৭
    3সূরা মুদ্দাস্সিরঃ ৩১
    4সূরা হাক্কাহঃ ৪৮
    5সূরা কলমঃ ৫২
    6সূরা মুমিনঃ ৫৪
    7সূরা যুমারঃ ২১
    8সূরা ছোয়াদঃ ৪৩
    9সূরা আনকাবুতঃ ৫১
    10সূরা ইউসুফঃ ১০৪
    11সূরা ইউনুসঃ ৫৭
    12সূরা আনআমঃ ৯০
    13সূরা ইমরানঃ ১৩৮
    14সূরা ইউনুসঃ ১০৮
    15সূরা নিসাঃ ১৭৪
    16সূরা বাকারাঃ ১৫৯
    17সূরা বাকারাঃ ১৮৫
    18সূরা বাকারাঃ ১৮৭
    19সূরা নিসাঃ ১০৫
    20সূরা নিসাঃ ১৭০
    21সূরা আনকাবুতঃ ৪৩
    22সূরা রুমঃ ৫৩
    23সূরা যুমারঃ ২৭
    24হিব্রু  ৮.৮-১০
    25হিব্রু ৮.১৩
    26যেরিমায়াঃ ৩১. ৩১-৩৩
    27সূরা মরিয়মঃ ৯৭
    28সূরা ইব্রাহিমঃ ৪
    29সূরা দুখানঃ ৫৮
    30সূরা যুখরুফঃ ৩
    31সূরা ত্বহাঃ ১১৩
    32সূরা ইউসুফঃ ২
    33সূরা শূরাঃ ৪৮
    34সূরা আনআমঃ ১৯
    35সূরা মায়িদাহঃ ৬৭
    36সূরা ফুসছিলাতঃ ৪৪
    Show More
    0 0 votes
    Article Rating
    Subscribe
    Notify of
    guest
    0 Comments
    Inline Feedbacks
    View all comments
    Back to top button