শয়তানের বায়ু ত্যাগ, পশ্রাব, আজানের সময় কুকুরের ডাক

প্রশ্নোত্তর (Q&A)Category: ইসলামশয়তানের বায়ু ত্যাগ, পশ্রাব, আজানের সময় কুকুরের ডাক
MD King khan asked 7 months ago
বুখারী 608 no হাদীস এ আযানের সময় শয়তান বায়ু ছাড়ে মর্মে উল্লেখ আছে, এটি কি আক্ষরিক অর্থেই নাকি রূপক ভাবে যৌক্তিক explanation দিবেন আরেকটি হাদীসে আছে নামাজ না পড়লে শয়তান মানুষের কানে মুত্র ত্যাগ করে  আবার আযানের সময় কুকুর চিৎকার করে, কেউ কেউ বলছেন যে কুকুর শয়তান দেখে এগুলো কি আক্ষরিক অর্থেই ঘটে? তাহলে আমরা অনুভব করতে পারি না কেন? 
1 Answers
Ashraful Nafiz Staff answered 7 months ago

শয়তান বায়ু ছাড়ে মর্মে হাদিসটির উত্তর দিয়েছিলেন আমাদের একজন লেখক [ হাদীস নিয়ে শংসয় ]

নামাজ না পড়লে মূত্র ত্যাগ এটা সবার জন্য বলা হয় নি। হাদিসে এসেছে একজন সকালে সালাত না পড়ে ঘুমিয়েছিল, পরে তার কানে শয়তান প্রশাব করে দিয়েছিল। সবার ক্ষেত্রেই এমন হয় এমন কিছু হাদিসে বলা হয় নি। এছাড়া ঘটনাটিতে এই কাজ আক্ষরিক অর্থেও বুঝিয়ে থাকতে পারে আবার রূপক অর্থেও হতে পারে। আল্লাহই ভালো জানেন। [ https://at-tahreek.com/article_details/4250 ]

আজানের সময় কুকুর ডাকার বিষয়ে কোন হাদিস বর্ণিত হয় নি। কুকুর ও গাদার ডাকের বিষয়ে যে হাদিস বর্ণিত হয়েছিল তা গভির বা রাতের নির্দিষ্ট একটা সময়ের কথা বলা হয়েছে। সেই হাদিসের ব্যাখ্যা বলা হয়েছে,

 

(مِنَ اللَّيْلِ) দ্বারা উদ্দেশ্য রাতের কোন এক অংশে। আর হাকিম-এর বর্ণনায় إِذَا سَمِعْتُمْ نُبَاحَ الْكِلَابِ যখন তোমরা কুকুরের আওয়াজ শুনবে।

(فَإِنَّهُنَّ يَرَيْنَ مَا لَا تَرَوْنَ) তারা যা দেখে তোমরা তা দেখতে পাও তা হলো তারা শয়তানকে দেখতে পায়। আর আবূ হুরায়রা -এর বর্ণনায় এসেছে যা বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত-

وَإِذَا سَمِعَ صِيَاحَ الدِّيَكَةِ، فَلْيَسْأَلِ اللهَ مِنْ فَضْلِه ; فَإِنَّهَا رَأَتْ مَلَكًا যখন কোন মুরগীর আওয়াজ শুনবে সে যেন আল্লাহর কাছে অনুগ্রহ চায়, কেননা সে মালাক (ফেরেশতা)-কে দেখেছে।

কাযী ‘ইয়ায (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ কারণ হলো মালায়িকার (ফেরেশতাগণের) ‘আমীন’ দু‘আতে তাদের ক্ষমা প্রার্থনা কামনা তাদের শাহাদাত বিনয়-নম্রপূর্ণ এবং একনিষ্ঠতা। আর তাতে সৎলোকেদের উপস্থিতির সময় দু‘আ কামনা করা ভালো।

অনুরূপ দু‘আ করা ভালো যালিম ও ফাসিককে দর্শনের সময়। মদ্য কথা হলো, নেককার ও ফাসিকদেরকে দেখা ওয়া‘দা ও শাস্তির নিদর্শন শুনার পর্যায়। এমনটি হলে প্রথমে চাইবে দ্বিতীয়তে আশ্রয় প্রার্থনা করবে। যেমন অন্য সহীহ হাদীসে এসেছে,

إِذَا سَمِعْتُمْ أَصْوَاتَ الدِّيَكَةِ فَاسْأَلُوا اللهَ مِنْ فَضْلِه؟ فَإِنَّهَا رَأَتْ مَلَكًا، وَإِذَا سَمِعْتُمْ نَهِيقَ الْحَمِيرِ فَتَعَوَّذُوا بِاللهِ مِنَ الشَّيْطَانِ؟ فَإِنَّهَا رَأَتْ شَيْطَانًا.
যখন তোমরা মোরগের আওয়াজ শুনবে আল্লাহর নিকট অনুগ্রহ কামনা করবে, কারণ সে মালাক (ফেরেশতা)-কে দেখ আর যখন গাধার আওয়াজ শুনবে আল্লাহর কাছে শয়তান হতে আশ্রয় চাইবে, কেননা সে শয়তানকে দেখেছে। (মিরক্বাতুল মাফাতীহ) [মিশকাতুল মাসাবিহ ৪৩০২ হাদিসের ব্যাখ্যা]

 

কিছু ওলামা আজানের সময় শয়তানের বায়ু ত্যাগ করে পলায়ন, কুকুরের ডাক এই হাদিসগুলোকে মিলিয়ে কানেকশন তৈরি করে একটা ব্যখ্যা দাড় করানোর চেষ্টা করে। কিন্তু এটার কোন প্রয়োজন ও যৌক্তিকতা আছে বলে আমার মনে হয় না। কারন দুটোর কোন কানেকশন থাকলে হাদিসে শুধু রাতে কুকুরের ডাকের কথা বলা হত বলে মনে হয় না।

আর আজানের সময় সব কুকুর সব সময় ডাকাডাকি করেও না, এছাড়া অন্যন্যা আরো অনেক কিছুর আওয়াজ শুনে কুকুর চিৎকার চেচামেচি করে বলে প্রমান রয়েছে। তাই হতে পারে অন্য আওয়াজের মত আজানের আওয়াজ শুনেও কিছু কিছু কুকুর ডাকাডাকি করতে পারে। আবার তারা শয়তান দেখে বিধায় ডাকাডাকি করে এমনটাও হতে পারে। কারন হাদিসে বলা হয়েছে তারা শয়তানকে দেখতে পায়, আর আজানের সময় যেহেতু তারা পালায় সেহেতু তাদেরকে দেখে চিৎকার করলেও করতে পারে, আল্লাহই ভালো জানেন।

আর আমরা কেন দেখিনা বা অনুভব করি না প্রশ্নের উত্তর হল আল্লাহ আমাদেরকে সেই ক্ষমতা দেন নি। আমরাদের দেখার, শোনর ক্ষমতার একটা লিমিটেশন রয়েছে, যেমন মানুষের দৃশ্যমান আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৩৮০-৭৮০ ন্যানোমিটার এবং এর চেয়ে কম বা এর চেয়ে বেশি তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলোর কিছু মানুষের পক্ষে দেখা সম্ভব না। মানুষের শ্রবণশক্তির সীমা হল ২০-২০,০০০ হার্জ। এর চেয়ে কম বা এর চেয়ে বেশি হার্জ এর কোন শব্দই মানুষের পক্ষে শুনা সম্ভব না। বহু প্রাণী এই রেন্জের কম বেশিতে দেখতে ও শুতে পায়।

আশা করি উত্তরটি পেয়েছেন।

Back to top button