মুসলিম নারীদের দাসী বানালে কেমন হবে?
ধরুন ডিসলাম নামে কোন ধর্মে আগমন হলো তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল। যুদ্ধে আপনার বড় ভাই বাবা চাচাকে হত্যা করে আপনার বাড়ির মা বোন সবাইকে বন্দী দাসী বানিয়ে এবার তাদের সাথে *** করছে। অযুহাত হিসাবে তাদের নবীর নির্দেশ দেখিয়েছে। দেখলেন ইসলামেও একই রকম নির্দেশ আছে। আপনার পরিবারের পুরুষদের হত্যা করে নারীদের অযুহাতে বন্দী বানিয়ে তাদের সাথে জোড় করে সহবাস করলে সেটা আপনি ও আপনার পরিবারের নারীর ভালো ভাবে নিবেন কিনা। শুধু এটাই বলেন।
যখন আপনি শুধু দাসী বানানো পর্যন্ত চিন্তা করবেন তখন তা অমানবিকই মনে হবে। কিন্তু যখন আপনি ইসলামে এই বিষয়ে সকল বিধি বিধান দেখবেন তখন আর অমানবিক মনে হবে না। একটা ছোট উদাহরণ দিয়ে বলি।
আপনি একটা ঘটনা দেখলেন, সেটা দেখে সবার এসে তার একটা অংশ বর্ণনা করছেন। আপনি বললেন, “সেই ছেলেটা বা নাফিজ (আমি) ঐ কুকুরটাকে মেরে ফেলছে, আর বলছে এটা নাকি বৈধ বরং এটাই নাকি প্রয়োজন ছিল। এখন যদি আমি তার পালা কুকুর বা বিড়াল কিছু একটাকে মেরে ফেলি তখন কেমন লাগবে তার!”
এই গল্প দেখে অন্যরা নিশ্চয় মনে করছে নাফিজ অর্থাৎ আমি অনেক জালিম, নির্দয়, পশু নির্যাতনকারী ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু একটা বিষয় খেলায় করেন, আপনি কিন্তু বলছেন না আমি কেন, কখন, কিভাবে, কি কারণে কুকুরটাকে হত্যা করেছি। খুজে দেখলে দেখা যায় আমি নিজের মত করে যাচ্ছিলাম তখন কুকুরটা আক্রমণ করে, আর নিজেকে রক্ষা করতে যেয়ে কুকুরটাকে মেরে ফেলি। আমি না মেরে পালিয়ে যেতে পারতাম, কিন্তু হয়তো তারপর কুকুরটা অন্য কাউকে কামড়ে কবরে পাঠিয়ে দিত। এখন যখন অন্যরা যখন সব কিছু জানলো তখন দেখা যাচ্ছে দোষটা আসলেই আমার না, আমার উপর যদি একচেটিয়া কুকুর হত্য অবৈধ করা হত তাহলে নির্যাতিত আমিই হতাম শুধু, কষ্ট আমিই পেতাম শুধু, হয়তো একটা সময় কবরে চলে যেতাম কষ্ট সহ্য করতে করতে।
ঠিক হুবহু বিষয়টাও এই দাসী বানানোর ক্ষেত্রেও ঘটেছে। আপনি ইতিহাস খুলে দেখেন দেখবেন বহু বার বন্ধি সবাইকে ক্ষমা করা হয়েছে, কখনো কোন কিছুর বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, কখনো শর্ত সাপেক্ষে মুক্ত করা হয়েছে, কখনো ইসলাম কবুল করায় মুক্ত করা হয়েছে আবার কখনো দয়া দেখানো হয় নি বরং দাস দাসী বানানো হয়েছে। এখন যদি আপনি একচেটিয়া কেন এটা বৈধ করল কেন করল করেন তাহলে অজ্ঞতাটা আপনারই। কারন ইসলাম বাস্তব পরিস্থিতির আলোকে সবচেয়ে যোগ্য যে সমাধান তা দিয়েছে, ইসলাম এমন কোন বিধান দেয় নি যার কারনে দয়া দেখাতে যেয়ে মুসলিমদেরকেই বিলিন হয়ে যেতে হবে। আপনি যদি সব সময় দয়া দেখিয়ে ছেড়েই দিয়ে আসেন, সব সময় শুধু ক্ষমাই করেন তাহলে দ্বীন শেষে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিটা আপনাকেই ভোগ করতে হবে।
যাইহোক ইসলামে দাস দাসী নিয়ে বিস্তারিত এখানে লিখাগুলোতে পেয়ে যাবেন -
দাসপ্রথা -
1. বুলুগুল মারাম | পর্ব - ১৫ঃ দাস-দাসী মুক্ত করা (كتاب العتق)
2. ইসলামে দাস বিধি - IslamHouse.com
5. https://islamicauthors.com/
6. মুক্তচিন্তায় দাসপ্রথা VS ইসলামে দাস আইন
7. ইসলামের দাসপ্রথা বনাম নাস্তিকীয় অফেন্স
8. মানবাধিকার ও ইসলাম (৯ম কিস্তি) - শামসুল আলম
9. মানবাধিকার ও ইসলাম (৮ম কিস্তি) - শামসুল আলম
10. ইসলামে দাস প্রথা
দাসী -
11. https://at-tahreek.com/article_details/2208
12. https://www.frommuslims.com/?p=79261
13. ইসলামে ক্রীতদাসি ও যুদ্ধবন্দিনীর সাথে যৌন সম্পর্কের বৈধতার স্বরূপ
14. https://islamicauthors.com/view/
15. https://www.frommuslims.com/?p=339364
16. বনু মুস্তালিকের যুদ্ধবন্দিনীদের ধর্ষণ করা হয়েছিল?
17. নিজের দাসীকে যৌন নির্যাতন করে সহবাস ইসলামে বৈধ?
18. নবীর যুগের নারীরাও আপত্তি করতেন তার স্বামী যেন দাসীর সাথে সহবাস না করে?
19. https://www.frommuslims.com/?p=1039
20. রাসুল(ﷺ) কর্তৃক মারিয়া কিবতিয়া(রা.)কে উপহার হিসাবে গ্রহণ প্রসঙ্গ
বহুদিন আগে এক নাস্তিক আমাকে প্রশ্ন করেছিলো, “আপনার মা/বোনকে যদি ভিন্ন ধর্মাবলম্বী কেউ দাসী বানিয়ে তার সাথে সহবাস করতে চায়, আপনার কেমন লাগবে?…অতএব দাসপ্রথা খারাপ”
আমার উত্তর:
১. হ্যা খারাপ লাগবে। কা'ফে'রদেরও খারাপ লাগবে।
২. [তাহলে এর জাস্টিফিকেশন কী?] সিম্পলি একটা কথা মাথায় ঢুকিয়ে নেন, বিপদ মুমিন বান্দাদের জন্য পরীক্ষা এবং কা'ফে'রদের জন্য লাঞ্ছনা ও গজব। আল্লাহ্ তা’আলা তাদেরকে যে লাঞ্ছিত করবেন সেটা কুরআনে বারবারই বলা আছে (যেমনঃ সূরা আলে ইমরান: ১২৭ ইত্যাদি)। এবং সেটা দুনিয়াতেও কিয়ামতেও। কাফেরদেরকে দাস বানানো ওদেরকে আল্লাহর দেওয়া লাঞ্ছনারই একটা প্রকারভেদ।
৩. [তাহলে কা'ফে'রদের কি উচিত নয় মুসলিমদেরকে দাস বানানো?]
এই প্রশ্নটা যদি আমাদেরকে করা হয় —
একদম নয়, কারণ ইসলামই একমাত্র আল্লাহ্প্রদত্ত দ্বীন। এর বাইরে কোনোকিছুই জাস্টিফাইড নয়। বরং তাদের উচিত ইসলামে ফিরে আসা।
(জেনে রাখা ভালো) যুদ্ধে যদি মুসলিমদেরকে দাস বানানো হয় সেটা আমাদের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ। আমাদের যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে তাঁদের মুক্ত করার জন্য।
এছাড়া তারা যদি মুসলিম নারীদেরকে বন্ধি করে তাহলে তাদের যে ন্যূনতম রেহাই পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে তাহলে থাকবে না, তাদের যারা মুসলিমদের হাতে বন্ধি তারা মুক্ত হওয়ার সম্ভবনা অনেকাংশে হারিয়ে যাবে। এখন তারা নিজেদের পায়ে নিজেরা কুড়াল মারতে চাইলে তাদের ইচ্ছা।
আর দাস-দাসী হুট করে বেড়াতে যেয়ে তাদেরকে বুলিয়ে, ফুসলিয়ে এনে করা হয় না। যুদ্ধ হওয়ার বা সেই পরিস্থিতির মাধ্যমেই এটা হওয়া সম্ভব। এখন যুদ্ধ কি তাই যদি না বুঝেন তাহলে কিছু করার নেই। স্বাভাাবিক ভাবে মানুষ হত্যাও অন্যায়, কিন্তু যুদ্ধে উভয় পক্ষের মানুষও নিহত হয়। কেউ এটা বলে না যে আপনার দলের মানুষ মারা গেলে কেমন লাগবে, কারন যুদ্ধ খুশির ঠেলায় হয় না।
৪. [তাহলে এই জঙ্গী মনোভাবের ধর্ম কীভাবে সত্য হতে পারে? যে ধর্ম অপরকে দাস বানাতে বলে?]
এটা একটা রেড হেয়ারিং ফ্যালাসি। দাসপ্রথা থাকা না থাকা কোনো কিছুকে সত্য কিংবা মিথ্যা প্রমাণ করে না। এটা সব কালচারেরই ফিতরাহ যে অন্য কালচারকে ডমিনেট করতে চাওয়া। বরং ইসলামের দাওয়াহ হয় তাওহীদের মাধ্যমে, রিসালার মাধ্যমে।
এরপরেও এই দা'স সিস্টেমে ইসলাম সবচেয়ে বেশি সুবিধা দিয়েছে, সবচেয়ে বেশি উদারতা দিয়েছে। যা অন্য কোনো দ্বীন কিংবা সভ্যতায় নেই। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমরা অলরেডি লেখালেখি করেছি বহুত।
উত্তর দিয়েছেন - তাহসিন আরাফাত
Please login or Register to submit your answer