মানুষ জান্নাতের প্রলোভনের জন্যে ইসলাম পালন করছে?

প্রশ্নোত্তর (Q&A)Category: ইসলামমানুষ জান্নাতের প্রলোভনের জন্যে ইসলাম পালন করছে?
আহমেদ আবির asked 12 months ago

আমার প্রশ্ন হলো,
নামায পড়লে জান্নাত, রোজা রাখলে আরেকটি জান্নাত, হজ্জ্ব, ওমরাহ, যাকাত, সদকাহ, আরও যতো ইসলামিক কাজ আছে যা করলে আরেকটি জান্নাত, প্রশ্ন হচ্ছে সঠিকভাবে মানুষ কোন মাধ্যমে জান্নাতে যাবে ? এবং মানুষ জান্নাতের প্রলোভনের জন্যে ইসলাম করছে ?

1 Answers
Ashraful Nafiz Staff answered 12 months ago
দেখেন আল্লাহ ভালো করেই জানেন মানুষকে শুধু শুধু ভালো কাজ করতে বললে সে করবে না। তাই আল্লাহ ভালো কাজের বিনিময় সরুপ জান্নাতের নেয়ামতের কথা বলেছেন তেমনই খারাপ কাজ করলে জাহান্নামের আজাবের কথা বলেছেন। ভয় ও প্রলোভন দুটোই দেখিয়েছেন।

কেউ যদি জাাহান্নামে না যাওয়ার জন্য, জাহান্নামের আজাব থেকে বাচার জন্য খারাপ কাজ হতে বিরত থাকে ও ইসলামের বিধিবিধানের আদেশ অনুসারে চলে তাহলেও যেমন ঠিক আছে তেমনই আবার জান্নাত পাওয়ার জন্যও যদি ভালো কাজ করে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে তাহলেও ঠিক আছে।

দুনিয়ায় আমি অপরাধ করলে যেমন শাস্তি ডিজার্ব করি তেমনই ভালো কাজ করলে প্রশংসা ও পুরষ্কার ডিজার্ব করে। ঠিক একই কন্সেপ্ট আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাও রেখেছেন, আল্লাহর আদেশ অনুসারে চললে জান্নাত ডিজার্ব করি আর আল্লাহর আদেশ না মানলে জাহান্নাম ডিজার্ব করি। তাই কেউ যদি ভালো কাজ করে ও খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে তাহলে সেটা যে কারনেই করুক সেটা জান্নাতের লোভে করুক আর জাহান্নামে আজবের ভয়েই করুক না কেন সেটা মেটার করে না, সে যে ভালো কাজ করছে ও অপরাধ থেকে দূরে থাকছে সেটাই মুখ্য বিষয়।

আর ভাই জান্নাত এত সোজাও না আবার এত কঠিনও না, সেটা মানুষের উপর ডিপেন্ড করে। আপনি যদি মনে করেন যে নামাজ পড়লে, রোজা রাখলে, হজ করলে, যাকাত দিলেই জান্নাত পেয়ে যাবেন তাহলে এটা নিছকই ভুল ধারনা। জান্নাত পেতে হলে আল্লাহ সন্তুষ্টি ও আল্লাহর অনুগ্রহ প্রয়োজন। [সহিহ বুখারি ৫৬৭৩, ৬৪৬৩; সহিহ মুসলিম ২৮১৬-২৮১৮]

আর আল্লাহর অনুগ্রহ, রহমত, সন্তুষ্টি পেতে হলে আল্লাহ যা যা বলেছেন সেগুলো সব কিছুই করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। এখন যদি আপনি এক দিকে সুদ খান, মদ খান, মানুষের সম্পত্তি আত্মসাৎ করেন, মানুষ হত্য করেন, জিনা করেন এবং আরেক দিকে সালাত পড়েন, রোজা রাখে, যাকাত দেন, দান করেন তাহলে কোন লাভ নেই, খারাপ কাজ যেগুলো করেছেন সেগুলোর হিসাবতো অবশ্যই দিতে হবে। যদি আপনি খাঁটি মনে তাওবা করেন, ও ওয়াদা করেন এসব থেকে ফিরে আসবেন এবং সর্বোচ্চ চেষ্টাও করেন তাহলে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন। কিন্তু বান্দার হক আল্লাহ মাফ করেন না, যতক্ষন না যার হক নষ্ট করেছেন সে মাফ না করে ততক্ষন আল্লাহ ক্ষমা করবেন না।

আর বান্দার হক খেয়ে যদি কেউ মারা যায় তাহলে কেয়ামতের দিন সে যার উপর জুলুম করেছেন, হক নষ্ট করেছে তাকে জালিমের আমল নামা হতে আমল দিয়ে সেই হক মিটানো হবে, যখন জালিমের আমল নামায় আমল শেষ হয়ে যাবে তখন মাজলুমের গুনাগুলো জালিমের উপর দেওয়া হবে। [বুখারী ৬৫৩৪; মুসলিম ২৫৮১; মিশকাত ৫১২৭; আহমাদ ১৬০৪২; আল-আদাবুল মুফরাদ ৯৭০; ছহীহুত তারগীব ৩৬০৮]
Back to top button