কুরআন অনুযায়ী চাঁদের আলো কি প্রতিফলিত আলো?

প্রশ্নোত্তর (Q&A)Category: কুরআনকুরআন অনুযায়ী চাঁদের আলো কি প্রতিফলিত আলো?
Mahfuj Alam asked 1 year ago
আসসালামু আলাইকুম,আমার প্রশ্ন হলো কুরআনে কি চাঁদের আলোকে তার নিজের আলো বলা হয়েছে? অনেকে উক্ত আয়াতে ব্যবহৃত “নূর বা মুনীর” শব্দের অনুবাদ প্রতিফলিত আলো বা ধার করা আলো করেন। এইরকম অনুবাদ করা কি সঠিক? সালাফদের থেকে বা কোনো প্রাচীন তাফসীর থেকে এইরকম অনুবাদ বা ব্যাখা দেখাতে পারবেন?
1 Answers
Best Answer
Tahsin Arafat Staff answered 1 year ago

ওয়া আলাইকুমুসসালাম
কুরআনে সূর্যকে বলা হয়েছে ‘সিরাজ’ যার অর্থ প্রদীপ। — কুরআন ৭১:১৬, ৭৮:১৩

সূর্যকে ‘দ্বীয়া’ও বলা হয়েছে যার অর্থ তেজোদ্দীপ্ত। — কুরআন ১০:৫

কিন্তু চাঁদকে বলা হচ্ছে ‘নূর’ যার অর্থ শুধু আলো। কোনো আলাদা বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় না এই শব্দে। — কুরআন ১০:৫, ৭১:১৬

এটাই স্বাভাবিক যে, যে প্রদীপ থেকে আলো উৎপাদন হয়। কিন্তু পাশাপাশি বিপরীতভাবে চাঁদ প্রদীপ নয়। তার থেকে আলোও উৎপন্ন হয় না। তাহলে চাঁদের আলোটা নিজের থেকে উৎপন্ন নয়, কারোর থেকে ধার করাই হতে হবে!
চাঁদ ও সূর্যের আলোর পার্থক্য নিয়ে তাফসীরে ইবনে কাসীরে সূরা ফুরক্বানের ২৫ নং আয়াতে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। প্রাচীন তাফসীরের মধ্যে, আরবি ভাষাবিদ সাহিত্যিক কবি, আবু-হিলাল আল-হাসান বিন আব্দুল্লাহ বিন সাহল বিন সাইদ বিন ইয়াহ-ইয়া বিন মাহরান আল-আসকারী (মৃত্যু ১০০৫ খ্রি) বলেছেনঃ

الفرق بين الضياء والنور : هما مترادفان لغة.وقد يفرق بينهما بأن الضوء: ما كان من ذات الشئ المضئ، والنور: ما كان.مستفادا من غيره.وعليه جرى قوله تعالى: ” هو الذي جعل الشمس ضياء والقمر نورا…
দ্বিয়া ও নুরের মাঝে পার্থক্য : এদুইটি শব্দ ভাষাগতভাবে একে অপরের সমার্থক, কিন্ত এদের মাঝে পার্থক্য করা হয় এই বলে যে :দ্বউয়ুন মানে হলো এমন আলোকিত কোনোকিছু যার নিজস্ব আলো আছে এবং নুর মানে হলো যা অন্যের সাহায্যে আলো পায়, এবং এবিষয়টা অনুযায়ী আল্লাহর বক্তব্য এসেছে ‘তিনিই সেই সত্তা যিনি সুর্যকে করেছেন দ্বিয়া ও চাঁদকে করেছেন নুর ‘। — মুজামুল ফুরুকিল লুগুইয়াহ (পৃ/৩৩২)

নাহবিদ ভাষাবিদ ফকিহ মুফাসসির, শিহাবুদ্দিন আবুল-আব্বাস আহমাদ বিন ইউসুফ বিন আব্দিদ-দাইম আস-সামিন আল-হালবী আন-নাহওই আশ-শিহাব (মৃত্যু-১৩৫৫ খ্রি) বলেছেনঃ

وجعل فيها سراجًا وقمرًا منيرًا . فأخبر أن الشمس بمنزلة السراج؛ والقمر بمنزلة النور المقتبس منه. وعليه: جعل الشمس ضياءً والقمر نورًا، لأن الضياء أقوى من النور،
এবং তিনি তাতে সিরাজ (সুর্য) সৃষ্টি করেছেন ও চাঁদ সৃষ্টি করেছেন মুনির স্বরুপ। আল্লাহ জানিয়ে দিচ্ছেন যে সুর্যের অবস্থান হলো সিরাজ (প্রদীপ) এবং চাদের অবস্থান হলো তা সুর্য হতে ধার করা আলো পায়। এবং সম্পর্কেই আরো বলা হয়েছে : ‘তিনি সুর্যকে করেছেন দ্বিয়া ও চাদ-কে করেছেন নুর ‘ কেননা দ্বিয়া হলো সুর্য অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী। — উমদাতুল হুফফায (১/২৬৮) https://shamela.ws/book/17829/232

এরকম আরও প্রচুর প্রমাণ রয়েছে, যার মাধ্যমে বোঝায় কুরআনে চাঁদকে প্রতিফলিত/ধারকৃত আলোই লিখা হয়েছে।
আরও দেখুনঃ https://al-maktaba.org/book/31871/20541
https://islamicauthors.com/view/6244a034622a5123fa6738e0/
https://quranpedia.net/ar/fatwa/954
https://www.islamweb.net/en/fatwa/131810/difference-between-dhiyaa-and-noor
আল্লাহই ভালো জানেন।

Back to top button