অপরাধ করে আমল করলেই ক্ষমা পেয়ে যাবে?
ইবাদত দুই প্রকার। হুক্কুল ইবাদ এবং হুকুকুল্লাহ। একটা হল আল্লাহর হক ও আরেকটি হল বান্দার হক। বান্দার হকগুলো আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করেন না যতক্ষন না বান্দা ক্ষমা করছে। আর আল্লাহর হকগুলো আল্লাহ ক্ষমা করে দেন।
ফলে আইতুল কুরসি পড়ার ব্যপারটা কিংবা আইতুল কুরসি পড়ার যে নিয়মটা সেটা হচ্ছে ফরজ সালাত যারা পড়বে কোরআন শরিফের মধ্যে আসছে
اِنَّ الصَّلٰوةَ تَنْهٰی عَنِ الْفَحْشَآءِ وَ الْمُنْكَرِ.
নিশ্চয়ই সালাত অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে। - সূরা আনকাবূত (২৯) : ৪৫
এখন নামাজও পড়ে আবার গুনার কাজও করে হাদিস শরিফের মধ্যে আসছে যারা গুনা ত্যাগ করবে তাদের অন্তবে ইমানের মাধুর্যতা বাড়িয়ে দিবে, কোন হাদিসে এসেছে যে গুনা করতে চিন্তা করেও আল্লাহর ভয়ে করবে না তখন সেটা ভালো কাজ হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হবে, এই জাতীয় আরো বহু কথাই হাদিসে রয়েছে। বার বার কবিরা গুনা হতে বেছে থাকতে বলা হয়েছে কোরআন ও সুন্নায়।
কোরআনে আরো বলা হয়েছে,
اِنۡ تَجۡتَنِبُوۡا کَبَآئِرَ مَا تُنۡهَوۡنَ عَنۡهُ نُکَفِّرۡ عَنۡکُمۡ سَیِّاٰتِکُمۡ وَ نُدۡخِلۡکُمۡ مُّدۡخَلًا کَرِیۡمًا
তোমাদেরকে যা নিষেধ করা হয়েছে তার মধ্যে যা কবীরা গোনাহ তা থেকে বিরত থাকলে আমরা তোমাদের ছোট পাপগুলো ক্ষমা করব এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে প্রবেশ করাব। [সূরা নিসা আয়াত ৩১]
اَلَّذِیۡنَ یَجۡتَنِبُوۡنَ کَبٰٓئِرَ الۡاِثۡمِ وَ الۡفَوَاحِشَ اِلَّا اللَّمَمَ ؕ اِنَّ رَبَّکَ وَاسِعُ الۡمَغۡفِرَۃِ ؕ هُوَ اَعۡلَمُ بِکُمۡ
যারা বিরত থাকে গুরুতর পাপ ও অশ্লীল কাজ থেকে, ছোটখাট অপরাধ ব্যতীত৷ নিশ্চয় আপনার রবের ক্ষমা অপরিসীম; তিনি তোমাদের সম্পর্কে সম্যক অবগত [সূরা নাজম আয়াত ৩২]
কবিরা গুনা ও হারাম বিষয়ের ভয়াবহতা নিয়ে এই বইটি পড়ে দেখতে পারেন - https://www.hadithbd.com/books/section/?book=47
এই থেকে বুঝা যায় যে শুধু নেক আমল না, গুনা থেকে বেঁচে থাকার নামও ইবাদত। ফলে ইবাদতের মৌলিক বিষয় যে ব্যক্তি পুরন না করে সে ব্যক্তি কখনোই আল্লাহর হক পুরন করছে না। বান্দার হকতো দূরের কথা সে আল্লাহর হকই পূরন করছে না। যার ফলে শুধু আয়তুল কুরসি পড়ার কারনে সে জান্নাতি হয়ে যাবে এই কথাটা সকল বিষয় বিবেচনা করলে দেখা যায় আম ভাবে সঠিক হচ্ছে না। অর্থাৎ হাদিসের যায়গায় হাদিস ঠিক আছে হাদিসে বর্ণিত আমলটি তাদের জন্যই খাটবে যারা আল্লাহর হক পরিপূর্ণ আদায় করবে কবিরা গুনা থেকেও বেঁচে থেকে পাশাপাশি ঐ আমলটা করবে এবং বান্দার হক যারা আদায় করবে।
এই হচ্ছে মূল কথা। আর মৌলিক আরেকটি কথা হচ্ছে বান্দার হক তখনই ক্ষমা করেন আল্লাহ যখন বান্দার কাছে ক্ষমা চাওয়া হবে ও বান্দা ক্ষমা করবে। সুতনার মৌলিক বিষয়গুলো ঠিক রেখে আমল করতে হবে, মৌলিক বিষয় ঠিক না রেখে আমল করলে তা কার্যকরি হবে না। বান্দার হক নিয়ে আল্লাহর কঠোরতার একটি ছোট উদাহরণ দিয়ে আলোচনা শেষ করছি।
ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মু’মিনগণ যখন জাহান্নাম থেকে নাজাত পাবে, তখন জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝখানে এক পুলের উপর তাদের আটকে রাখা হবে। তখন পৃথিবীতে একের প্রতি অন্যের যা যা জুলুম ও অন্যায় ছিল, তার প্রতিশোধ গ্রহণের পরে যখন তারা পরিচ্ছন্ন হয়ে যাবে, তখন তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। সেই সত্তার কসম, যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ, নিশ্চয়ই তাদের প্রত্যেকে পৃথিবীতে তার আবাসস্থল যেরূপ চিনত, তার চাইতে অধিক তার জান্নাতের আবাসস্থল চিনতে পারবে। [বুখারি ২৪৪০]
উত্তর দিয়েছেন আমাদের ফ্রম মুসলিমস টিমের সাথে যুক্ত থাকা এক আলেম, হাফেজ সেলিম উদ্দিন (হাফি)
Please login or Register to submit your answer