ইসলামবিরোধীদের প্রতি জবাব

রাসূল ﷺ আলীকে (রাঃ) দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি দেন নি কেন?

রাসূলুল্লাহ ﷺ আলীকে ২য় বিয়ে করার অনুমতি দেন নি কেন? মহানবী নিজে ১১ বিবাহ করলেন কিন্তু আলীকে ২য় বিয়ে করার অনুমতি দিলেন না, এইটা কি দ্বিমুখিতা নয়? (নাউজুবিল্লাহি মিন জালিক) – এ জাতীয় বিভিন্ন অসার কথাবার্তা প্রচার করে বেড়ায় মালাউনরা। সেই সব মিথ্যাচার ও মূর্খতাপূর্ণ কথাবার্তারই জবাব নিয়ে লিখা আজকের এই পোস্ট। অনুমতি না দেওয়ার প্রকৃত কারণ এই পোস্টের মাধ্যমেই জানতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।

কাফিরদের অপপ্রচার বনাম হাদিস থেকে সাধারণ বুঝ

সাধারণত কাফেররা যে হাদিস উপস্থাপন করে এই কথাগুলো বলে থাকে সেই হাদিসটি হল,

মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ ﷺ-কে মিম্বরে বসে বলতে শুনেছি যে, বনি হিশাম ইবনু মুগীরাহ, ‘আলী ইবনু আবূ তালিবের কাছে তাদের মেয়ে বিয়ে দেবার জন্য আমার কাছে অনুমতি চেয়েছে; কিন্তু আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, যতক্ষণ পর্যন্ত না ’আলী ইব্নু আবূ তালিব আমার কন্যাকে তালাক দেয় এবং এর পরেই সে তাদের মেয়েকে বিয়ে করতে পারে। কেননা, ফাতিমা হচ্ছে আমার কলিজার টুকরা এবং সে যা ঘৃণা করে, আমিও তা ঘৃণা করি এবং তাকে যা কষ্ট দেয়, তা আমাকেও কষ্ট দেয়।[1]সহীহ বুখারী হাদিস ৫২৩০; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=29793

কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে,

“যা তাকে সম্মানহানি করে তা আমাকেও সম্মানহানি করে, তাকে যা কষ্ট দেয়, আমাকেও তা কষ্ট দেয়।” বা “ফাতিমাহ আমারই অংশবিশেষ, তাকে যা কষ্ট দেয় তা আমার প্রতিও কষ্টদায়ক।”[2]সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী), হাদিস নং ৬২০১- ৬২০২; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=53300

এই হাদিসটি তারা উপস্থাপন করে ঠিকই কিন্তু এ সম্পর্কিত অন্য হাদিসগুলো তারা লুকিয়ে যায়। অন্য হাদিসে আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ হতে পাই যে,

একবার ‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) ফাতিমাহ (রাঃ) থাকা অবস্থায় আবূ জাহল কন্যাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দেন। আমি তখন আল্লাহর রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে তাঁর মিম্বারে দাঁড়িয়ে লোকদের এ খুত্বা দিতে শুনেছি, আর তখন আমি সাবালক। আল্লাহর রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, ‘ফাতিমা আমার হতেই। আমি আশঙ্কা করছি সে দ্বীনের ব্যাপারে পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে পড়ে।’ অতঃপর আল্লাহর রাসূলুল্লাহ ﷺ বানূ আবদে শামস গোত্রের এক জামাতার ব্যাপারে আলোচনা করেন। তিনি তাঁর জামাতা সম্পর্কে প্রশংসা করেন এবং বলেন, সে আমার সঙ্গে যা বলেছে, তা সত্য বলেছে, আমার সঙ্গে যে ওয়াদা করেছে, তা পূরণ করেছে। আমি হালালকে হারামকারী নই এবং হারামকে হালালকারী নই। কিন্তু আল্লাহর কসম! আল্লাহর রাসূলের মেয়ে এবং আল্লাহর দুশমনের মেয়ে একত্র হতে পারে না।[3]সহীহুল বুখারী, হাদিস ৩১১০; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=27449

আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) ….. মিসওয়ার ইবনু মাখরামাহ্ (রাঃ) হতে রিওয়ায়াত করেন, আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) নবী-তনয় ফাতিমাকে ঘরে রেখেই আবূ জাহলের কন্যাকে বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ফাতিমাহ্ (রাঃ) যখন এ খবর শুনলেন তখন রসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট এসে বললেন, লোকেরা কথোপকথন করে যে, আপনি আপনার কন্যাদের সম্বন্ধে রাগ প্রকাশ করেন না। আর এই যে ’আলী (রাঃ) আবূ জাহলের কন্যাকে বিবাহ করতে যাচ্ছেন। মিসওয়ার (রাঃ) বললেন, তখন নবী ﷺ দাঁড়ালেন। এ সময় আমি শুনলাম, তিনি তাশাহুদ পড়লেন এবং বললেনঃ আমি আবূল আস ইবনু রাবী’র নিকট বিয়ে দিয়েছি, সে আমাকে যা বলেছে তা বাস্তবে পরিণত করেছে। আর মুহাম্মাদ কন্যা ফাতিমাহ আমারই একটা টুকরা, আমি অপছন্দ করি যে, লোকে তাকে ফিতনায় ফেলুক। আল্লাহর শপথ আল্লাহর রসূলের মেয়ে ও আল্লাহ শত্রুর মেয়ে কোন লোকের নিকট কক্ষনো একসাথে মিলিত হতে পারে না। মিসওয়ার (রাঃ) বলেন, তারপর ’আলী (রাঃ) প্রস্তাব প্রত্যাহার করেন।[4]সহীহ মুসলিম হাদিস ২৪৪৯; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=53303

আরেক বর্ণনায় বলা হয়েছে, “ফাতিমা আমার অংশ, এবং আমি ভয় পাই যে তার ধর্মীয় প্রতিশ্রুতির বিষয়ে তাকে বিচারের সম্মুখীন করা হবে।”

তো সাধারণভাবেই আমরা পরবর্তী হাদিসগুলো থেকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে কেন নবী করিম ﷺ আলি (রাঃ)-এর বিবাহে অনুমতি দেননি। কিন্তু তারপরেও কিছু বিষয় পরিষ্কার করে দেওয়া দরকার।

রাসূলুল্লাহ ﷺ সরাসরি বলে দিয়েছেন আল্লাহর শত্রুর কন্যা ও আল্লাহর নবীর কন্যা একসাথে মিলিত (এক স্বামীর গৃহে সতিন হিসেবে) হতে পারে না। এখন “কেন” সেটার উত্তরে সোজা কথায় বলা যায় এটা একদম বেমানান, (লেখকের ব্যক্তিগত মত) এছাড়া এর পিছনে অনেক কারণ, দর্শন, যুক্তি, মতামত উপস্থাপন করা সম্ভব যা একটু পর উল্লেখ করছি।

দুইটি আলাদা প্রস্তাব নাকি শুধুমাত্র একটি প্রস্তাব ছিলো?

অনেকে আবার উপরের হাদিসগুলোকে বলে যে সেগুলো নাকি ২টা আলাদা বিয়ের প্রস্তাব। তারা যুক্তি দেখায় এক জায়গায় আবু জাহল লেখা আছে আরেক জায়গায় বনি হিশাম ইবনু মুগীরাহ লেখা, কিন্তু মুর্খ কাফেররা হয়ত একটু কষ্ট করে তাহকিক খুঁজে দেখারও চেষ্টা করে না। তারা দাবি করে বনি হিশাম ইবনু মুগীরাহর নাম দিয়ে যে হাদিস এসেছে সেটা নাকি অন্য কাউকে বোঝাচ্ছে! অথচ এই বিয়ের হাদিস নিয়ে যত কিতাবে যত কথা বলা হয়েছে, প্রায় সকল কিতাবেই এই সংক্রান্ত সবগুলো হাদিসকে আবু জাহলের কন্যার বিয়ের প্রস্তাব ছিল বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে। কারনটা হচ্ছে আসলে সেটা আবু জাহলেরই আসল নাম বা তার পিতার নাম, ‘আবু জাহল’ তো উপাধি পেয়েছিলো! সীরাতে ইবনে হিশামের ইসলামিক সেন্টারের অনুবাদে ফুটনোটে দেওয়া আছে যে,

…আবুল হাকাম আবু জাহলের উপনাম বা উপাধি। তার নাম আমর ইবনে হিশাম ইবনে মুগীরা ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে উমার ইবনে মাখযুম…[5]সীরাতে ইবনে হিশাম, অনুবাদঃ আকরাম ফারুক, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, পৃ ৬৭ https://archive.org/details/20210627_20210627_0911/সীরাতে%20ইবনে%20হিশাম%20-%20ইবনে%20হিশাম%20%28রহঃ%29/page/n66/mode/1up

দুনিয়ার কোনো আলেমই কখনো বলেন নি এগুলো আলাদা ঘটনা, যেমন ধরুন ইবনুল মুলকিনও (রহঃ) বনি হিশাম ইবনু মুগীরাহর নাম দিয়ে যে হাদিসটি এসেছে সেটিকে আবু জাহলের কন্যার বিবাহের প্রস্তাব হিসেবেই ধরেছেন।[6]কিতাবুল তাওহীদ লি-শারহুল জামি’উল সহীহ, খণ্ড ২৫, পৃ ১২০-১২২ https://shamela.ws/book/13252/14942#p1 এখানে একটা বিষয় পরিষ্কার করে দেওয়া ভালো যে আবু জাহল বলতে তার পরিবারের পক্ষ হতে প্রস্তাব এসেছিল বুঝানো হয়েছে, আবু জাহল হতে প্রস্তাব এসেছিল বুঝানো হয়নি। আবু জাহেলের মেয়ে হওয়ায় রাসূল আবু জাহেলের বা তার পিতার নাম নিয়ে তাদের সম্প্রদায় বা পরিবারকে কে বুঝিয়েছেন। যেমন প্রথম হাদিসটিতে ‘বনি হিশাম ইবনু মুগীরাহ’ বলা হয়েছে যার অর্থ হিশাম ইবনু মুগীরাহর সন্তান এবং হিশাম ইবনু মুগীরাহ ছিল মূলত আবু জাহলের পিতার নাম।[7]মুহাম্মদ ইবনে সাদ, তাবাকাত আল কাবির খন্ড ৮ পৃষ্ঠা ২০৯

যা হোক রাসূলুল্লাহ ﷺ এর এ কথাটা একটু মনোযোগ সহকারে খেয়াল করুন,

“আমি হালালকে হারামকারী নই এবং হারামকে হালালকারী নই”

এই কথার দ্বারা এটা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে আলি (রাঃ) একাধিক বিয়ে করলে তা হারাম হতো না, এই কথার দ্বারা বোঝা যায় আলির (রাঃ) একাধিক বিবাহের উপর রাসূলুল্লাহ ﷺ সরাসরি কোন প্রকারের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন নি। কারণ কুরআন ও হাদিস দ্বারা সর্বোচ্চ ৪ বিবাহ জায়েজ সেটা স্পষ্টই প্রমাণিত। এই বিষয়ে স্কলারদের বিস্তারিত মতামত একটু পড়ে উল্লেখ করছি।

কিন্তু ফাতেমা (রাঃ) জীবিত থাকা অবস্থায় বিবাহ করলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। বিভিন্ন কারণ ছিল যার থেকে বলা যায় মহানবী ﷺ যেগুলোর কারণে বিয়েতে অনুমতি না দেওয়াটাই অধিক যৌক্তিক ছিল। হাদিস থেকে আমরা যে কারণ গুলো স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি সেগুলো হল-

  • বিয়ের প্রস্তাব আবু জাহলের কন্যার সাথে ছিল
  • ফাতিমা (রাঃ) এর কষ্ট
  • ফাতিমা (রাঃ) শয়তানের প্ররোচনায় হিংসাবশত কোন ভুল না করে বসে, যার ধরুন তাকে জবাবদিহিতা করতে হতে পারে যা একজন জান্নাতের নেত্রীর জন্য শোভনীয় নাও হতে পারে

আলিমগণ যেসব সম্ভাব্য কারণ উপস্থাপন করেছেন

আলেম-ওলামাগণ এ বিষয়ে তাদের বেশ কিছু মতামত বা সম্ভবনা উল্লেখ করেছেন।

প্রস্তাব আবু জাহলের কন্যার সাথে ছিল

প্রথমে আবু জাহল ও তার পরিবার নিয়ে কিছু জানা যাক। আবু জাহল ছিল ইসলামের চরম শত্রু, সে সব দিক দিয়ে মুসলিমদেরকে কষ্ট দিত, ইসলাম ও মুসলিমদের ক্ষতি করার চেষ্টা করত। রাসূলুল্লাহ ﷺ ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে তার ষড়যন্ত্রের অভাব ছিল না। অনেক মুসলিমকে সে হত্যা করেছিল, মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল, নওমুসলিমদের উপর অত্যাচার করেছিল। রাসূলকে নামে মিথ্যাচার ও অপবাদ দেওয়া সহ না জানি আরো কত কি করেছিল সে।[8]মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা ৩৪৫৭০; বায়হাক্বী, দালায়েলুন নবুয়ত ২/২৮২; আল-বিদায়াহ ৩/৫৯; ইবনু হিশাম ১/২৯৮-৩০০, ৩১৯-২০; তাবাকাত-২/১৫-১৭; সুবুলুল হুদা ২/৩৬২; সীরাতে … See Full Note সে রাসূল ﷺ কে গালি দিত ও উনাকে আঘাতও করেছিল[9]রহমাতুল্লিল আলামীন ১/৫৩; ইবনে হিশাম ১/২৯১-২৯২, সে রাসূল ﷺ কে হত্যা করার জন্য বেশ কয়েকবার সরাসরি আক্রমনও করতে গিয়েছিল যখন তিনি সালাতে ছিলেন[10]মুসলিম ২৭৯৭; মিশকাত ৫৮৫৬; ইবনে হিশাম ১/২৯৮-২৯৯, আবু জাহলের পুত্রও অনেকটা এই রকম ছিল। তাদের দুজনের প্রতি আল্লাহ ও তার রাসূল চরম অসন্তুষ্ট ছিলেন।[11]সুরা আদ-দুখান-৪৩-৪৬; ইবন হিশাম, ১/৩৩৩, ৩৩৫, ২/২২, ১২৬, ১৩২; তারাজিমু সায়্যিদাতি বায়ত আন-নুবুওয়াহ-৬১৯-২০; তাবাকাত-২/১৫-১৭, ৬৯

এরকম এক পরিবারের কন্যা যদি রাসূলের কন্যার সতিন হয়, তাহলে তা কি কখনো যুক্তিসম্মত হতে পারে? আমার স্বাভাবিক বিবেকবুদ্ধি এর বিপক্ষেই সায় দেয়। আলি আবু জাহলের কন্যাকে বিয়ে করলে পরিবারে সেই কন্যার পরিবারের অতীতের একটা প্রভাব থাকতোই, যার ধরুন পরিবারে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হত। শুধু পারিবারিকই নয়, সামাজিকও একটা প্রভাব থাকত মুসলিমদের মাঝে ও কাফেরদের মাঝে, কারণ কোন সাহাবি বা অন্য মুসলিমের কাছে এটা মানানসই হত না যে ইসলামের এত বড় শত্রুর কন্যা ইসলামের রাসূলের সবচেয়ে প্রিয় মেয়ের সতিন হোক, আবার অপর দিকে কাফেররাও খোছাখুচি করত যে বাবাকে মেরে মেয়েকে বিয়ে করছে ইত্যাদি। যাইহোক, আমিতো আমার নিজের মত অনুসারে বললাম, চলুন আলিমগণের মতামত দেখে নিই।

ইমাম নববী (রহঃ) বলেন,

“এখানে বলা হয়েছে যে, তাদের একত্রিত হওয়া নিষেধ নয়, বরং যা বোঝানো হয়েছে তা হলঃ আমি আল্লাহর রহমতে জানি যে তারা একত্রিত হবে না।

এর অর্থও এটাও বোঝা যেতে পারে যে, তাদের একত্র করা হারাম ছিল… তাই বিয়ের ব্যাপারে যে বিষয়গুলো হারাম তার মধ্যে অন্যতম একটি হল, একই সাথে আল্লাহর নবীর কন্যা এবং আল্লাহর শত্রুর কন্যা উভয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া।”[12]শরহে সহীহ মুসলিম, ৮/১৯৯; ইসলামকিউএ ফাতাওয়া Why did the Prophet (s.a.w) not allow ‘Ali ibn Abi Taalib to take a second wife when he was married to Faatimah?

ইবনুল কাইয়্যিম (রহঃ) বলেছেন,

আলীকে (রাঃ) ফাতিমা (রাঃ) এবং আবু জাহেলের কন্যাকে সহ-স্ত্রী হিসাবে একত্রিত করতে অনুমতি না দেওয়ার পিছনে ছিল মহান হিকমত; কেননা একজন নারী তার স্বামীকে অনুসরণ করবে এবং জান্নাতে তার সমপর্যায়ে হবে। কিন্তু সে তার স্বামীর পাশাপাশি তার নিজের যোগ্যতার গুণে উচ্চ স্তরের হওয়ার যোগ্য হতে পারে। এটি ফাতিমা ও আলীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

কিন্তু মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা আবু জাহেলের কন্যাকে ফাতিমা (রাঃ) এর মতো সমান মর্যাদার অধিকারী করবেন না, তার নিজের যোগ্যতায় হোক বা তার স্বামীর, যখন তাদের মধ্যে এত বড় পার্থক্য ছিল। তার জন্য বিশ্বের নারীদের নেত্রীর সতিন হওয়া শরিয়তের দিক থেকে বা ঐশী আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত বিষয় না।

রাসূলুল্লাহ ﷺ ইঙ্গিত করেছেন যে, যখন বলেছিলেন: “আল্লাহর কসম, আল্লাহর রাসূলের কন্যা এবং আল্লাহর শত্রুর কন্যা এক জায়গায় মিলিত হবে না।” এটি পরকালকেও নির্দেশ করতে পারে।[13]যাদুল মা‘আদ, ৫/১০৮ https://shamela.ws/book/21713/1996

আল্লামা নুরুদ্দিন কাসানি (রহঃ) বলেন,

কিছু ওলামা এই যুক্তিও উল্লেখ করেছেন যে, মহানবী ﷺ আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহীর মাধ্যমে জানতেন যে, এ দুটি একত্রিত হতে পারে না, তাই তিনি তা নিষেধ করেছেন।[14]বাদায়েউস সানায়ি ২/৩৩২; دوسری شادی کےلیے پہلی بیوی سے اجازت لینے کاحکم

কিতাব মাউসুয়াত মাহাসিন আল ইসলাম ওয়া রাদ্দ সুবহান আল ইসলাম-এ বলা হয়েছে,

রাসূলুল্লাহ ﷺ আলীকে বহুবিবাহ থেকে বাধা দেননি, বরং তাকে আবু জাহেলের কন্যাকে বিয়ে করতে বাধা দিয়েছেন।[15]কিতাব মাউসুয়াত মাহাসিন আল ইসলাম ওয়া রাদ্দ সুবহান আল ইসলাম, ১১/২৮৬; https://shamela.ws/book/146418/6435

মুল্লা আল কারী আল হানাফী (রহঃ) বলেছেন,

এটি বলা হয়েছিল যে, এটি তাদের বিয়েকে হারাম ঘোষণার উদ্দেশ্যে নয়, বরং এর অর্থ হল আল্লাহ তার রহমতের জ্ঞান থেকে [জানিয়েছেন] যে, তাদের বিয়ে হওয়া সম্ভব নয়, যেমন আনাস বিন আল-নাদর বলেছেন এবং আল্লাহ বসন্তের ভাঁজ ভাঙেন না এবং এটি সম্ভব যে তাদের বিয়েতে ইচ্ছাকৃতভাবে নিষেধ করার মানে হলো “আমি হালালকে হারাম করি না”, অর্থ অর্থাৎ “আমি আল্লাহর বিধানের পরিপন্থি কিছু বলি না, তিনি যা হালাল করেন আমি তা হারাম করি না, তিনি যা নিষেধ করেন আমি তাঁর অনুমতি দেই না এবং নীরবও থাকি না। কারণ আমার নীরবতা সেটার একটি অনুমতি [মৌনসম্মতি] এবং এই বিবাহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত একটি হারাম হলো আল্লাহর নবীর কন্যা এবং শত্রুর কন্যাকে একত্রিত করা।”[16]মারকাতুল মাফাতিহ শরহ মিশকাতুল মাসাবিহ ৪/১৮; darulifta.info হতে

আরো অনেকে এই কথা বলেছেন যে আবু জাহলের কন্যার প্রস্তাব ছিল বিধায় রাসূলুল্লাহ ﷺ এই বিয়েতে আপত্তি করেছিলেন। যেমন বিন বায (রহঃ)[17]خصوصية عدم الزواج على بنت النبي ﷺ, আব্দুল হোসেন আল আবদ (রহঃ)[18]https://shamela.ws/book/37052/6770, আরো কিছু ওলামাগণ[19]https://shamela.ws/book/16521/7601 এবং আরো অনেকে।

কোন এক কাফের একটি ব্লগে এই বিষয়ে দাবি তুলেছিলো যে,

“কেউ কেউ দাবী করবেন, আলীকে মুহাম্মদ আরেকটি বিয়ে করতে নিষেধ করেছিলেন কারণ আলীর বিয়ের প্রস্তাবটি এসেছিল কাফেরদের পরিবার কাছ থেকে। এই তথ্যটিও সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ আলী ফাতিমার মৃত্যু পর্যন্ত আর একটি বিয়েও করতে পারেননি, নবীর এই নিষেধাজ্ঞার জন্য।”

আমরা তার প্রথম মিথ্যাচার বা মূর্খতাটিতো হাদিস ও ওলামাদের বক্তব্যের আলোকে মিথ্যা প্রমাণিত হতে দেখেছি। এখন আসি ২য় বক্তব্যে, মহানবীর নিষেধাজ্ঞার কারণে যে আলি (রাঃ) অন্য কোন মুসলিম নারীকেও বিবাহ করেননি এর কোন প্রমাণই নেই। আর রাসূলুল্লাহ ﷺ আলি (রাঃ)-কে তো এমন কোন কথা বলেননি যে, আলি আর বিবাহই করতে পারবে না! আলী-কে তো রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছিলেন, আমি অনুমতি দিব না, আর কেন দিবেন না সেটাও তিনি বলে দিয়েছিলেন, এই থেকেই বুঝা যায় রাসূলুল্লাহ ﷺ আলির দ্বিতীয় বিয়েকে হারাম করেন নি। এই ঘটনার প্রায় ৩ বছরের মাথায় ফাতিমা (রাঃ) মারা গিয়েছিলেন, কাফেরদের কথা অনুযায়ী মনে হচ্ছে আলি (রাঃ) এই ৩ বছরে আরো অনেক জনকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন কিন্তু রাসূলুল্লাহর বার বার নিষেধের কারণে আলী বিবাহ করতে পারেন নি, কিন্তু এমন কোন বর্ণনার অস্তিত্বও আমরা খুঁজে পাই না।

ফাতেমা (রাঃ) মারা যাওয়ার পর তিনি বিবাহ করেছিলেন এটা সত্য, কিন্তু ফাতেমা (রাঃ) জীবিত থাকা অবস্থায় যে আলি (রাঃ) অন্য কাউকে (কাফেরের মেয়েটি ছাড়া) বিবাহ করতে চেয়েছিলেন (কাফেরের মেয়ের সাথে বিবাহে মহানবীর অনুমতি না দেওয়ার আগে বা পরে) এর পক্ষে সহিহতো দূরে থাক যয়িফ ও জাল ঘটনাও আমার চোখে পরেনি। আর মহানবীর নিষেধাজ্ঞার কারণে যে তিনি বিয়ে করেন নি, বা অন্য কাউকে বিয়ে করতে চান নি এটাও কোন কোরআন হাদিসের বা কোন আলেমের কথা নয় বরং কাফেরদের নিজেদের মন মত বানানো কথা।

এই বিয়ে ফাতিমার (রাঃ) জন্য কষ্টকর হতে পারে

ইবনে আত-তিন (রহঃ) বলেছেন,

এই ঘটনাটি ব্যাখ্যা করার সবচেয়ে সঠিক উপায় হল যে, নবী ﷺ আলীকে (রাঃ) একই সাথে তার কন্যা এবং আবু জাহেলের কন্যার সাথে বিয়ে করতে নিষেধ করেছিলেন, কেননা তিনি এর কারণ হিসেবে দিয়েছেন যে, এটা তারকে কষ্ট দিতে পারে এবং তাঁকে কষ্ট দেওয়া সর্বসম্মতিক্রমে হারাম।

ফাতিমার সাথে তার বিয়ে না হলে এটা তার জন্য জায়েজ হত; কিন্তু একই সাথে তাদের উভয়ের সাথে বিয়ে করা, যা নবী ﷺ-এর জন্য কষ্টদায়ক হবে কারণ এতে ফাতিমাহ (রাঃ) কষ্ট পেতেন, অর্থাৎ এটা জায়েয নয়।[20]ফাতহুল বারী, ৯/৩২৮; islamqa.info হতে

ইমাম নববী (রহঃ) বলেন,

কারণ এতে ফাতিমাকে (রাঃ) কষ্ট দেয়া হতো, সেক্ষেত্রে এটা নবী ﷺ-কেও কষ্ট দিত এবং যে তাঁকে কষ্ট দেয় সে ধ্বংস হয়ে যায়। সে কারণে তিনি তাকে তা করতে নিষেধ করেছিলেন, আলী এবং ফাতিমার প্রতি ভালোবাসার কারণে।[21]শরহে সহীহ মুসলিম, ১৬/৩; islamqa.info হতে

ইবনুল কাইয়্যিম বলেছেন,

তাঁর অন্য জামাই (আবুল-আস ইবন আর-রাবী) এর কথা উল্লেখ করে, এবং সত্য কথা বলা ও তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণ করার জন্য তাঁর প্রশংসা করে তিনি আলী (রাঃ)-কে ইঙ্গিত করলেন, এবং তাকে তার উদাহরণ অনুসরণ করতে উৎসাহিত করেছেন। এটি এই ধারণা দেয় যে, তিনি তাকে একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তিনি তাকে বিরক্ত করবেন না বা তাকে কষ্ট দিবেন না, তাই তিনি তাকে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে উৎসাহিত করেছিলেন, যেমন তার অন্য জামাই তার দেওয়া একটি প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছিলেন।[22]যাদুল মাআদ, ৫/১০৭-১০৮ https://shamela.ws/book/21713/1995

আল্লামা নুরুদ্দিন কাসানি (রহঃ) উল্লেখ করেছেন,

যদিও তিনি (আবু জাহলের কন্যা) বিয়ের সময় মুসলিম ছিলেন, কিন্তু তিনি ছিলেন আল্লাহর শত্রু আবু জাহেলের কন্যা, যার ইসলাম ও মুসলমানদের সাথে শত্রুতা স্পষ্ট ছিল, তাই নবী করীম ﷺ এ ব্যাপারে উদ্বিগ্ন ছিলেন। তাঁর পিতার ইসলাম বিদ্বেষের লক্ষণ যেন তাদের উভয়ের গৃহজীবনে প্রভাব না ফেলে, যা হজরত ফাতিমার জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াবে, যা রাসূলুল্লাহ ﷺ-এরও কষ্টের কারণ হবে। আর আলী (রাঃ)-এর কারণে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর কষ্ট পাওয়া হজরত আলী (রাঃ)-এর জন্য কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য ছিল না, তাই নবী ﷺ হজরত আলী (রাঃ)-এর প্রতি সমবেদনা থেকে তা নিষেধ করেছিলেন। হাদিস শরীফের শেষে উল্লিখিত শব্দ দ্বারাও এ ব্যাখ্যার সমর্থন পাওয়া যায়: “আর হারামকে হালাল আর হালালকে হারাম করতে পারি না, তবে আল্লাহর কসম, আল্লাহর রাসূলের কন্যা এবং আল্লাহর শত্রুর কন্যা এক ঘরে একত্রিত হতে পারে না।”[23]বাদায়েউস সানায়ি ২/৩৩২; darulifta.info হতে

এ হাদিসের ব্যাখ্যায় আলেমগণ আরো বলেছেন,

রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে সকল ক্ষেত্রে এবং সকল ভাবে কষ্ট দেওয়া হারাম, এমনকি যদি তিনি জীবিত থাকা অবস্থায় যা [সাধারণভাবে] হালাল ছিল তা থেকে এমন কষ্ট হয় [তাহলেও হারাম] এবং এই ব্যাপারটি অন্যদের থেকে আলাদা। রাসূলুল্লাহ ﷺ আবু জাহলের কন্যার সাথে আলী (রাঃ)-এর সাথে বিয়ের বৈধতা সম্পর্কে জানতেন, যা তাঁর এই কথার দ্বারা প্রকাশ পায় “আমি হালালকে হারামকারী নই”, কিন্তু তিনি তাদেরকে একত্রকরণে নিষেধ করেছেন দু’টি কারণে, তার মধ্যে একটি হলো, তা ফাতিমা (রাঃ)-কে কষ্ট দিবে, আর তাতে রাসূলুল্লাহ ﷺ-ও কষ্ট পাবেন, আর যে তাঁকে কষ্ট দেবে সে ধ্বংস হয়ে যাবে। আলী ও ফাতিমার প্রতি তার সহানুভূতির পরিপূর্ণতা থেকেই রাসূলুল্লাহ ﷺ সেই নিষেধ করেছেন। এবং দ্বিতীয় কারণটি ছিল, ঈর্ষার কারণে তার উপর বেপরোয়া কিছু করে ফেলার আশংকা।…[24]মারকাতুল মাফাতিহ শরহ মিশকাতুল মাসাবিহ ৪/১৮; darulifta.info হতে

আশংকা যে এটি ফাতিমাকে তার দ্বীনী ওয়াদার বিষয়ে বিচারের মুখোমুখি করবে

এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে ফাতেমা (রাঃ) কষ্ট কেন পাবেন? তিনি কি বহু বিবাহের বিপক্ষে ছিলেন? তিনি কি বহু বিবাহকে ঘৃণা করতেন? (আস্তাগফিরুল্লাহ) এমন কিছুই নয়। ফাতেমা (রাঃ) এমনিতেই উত্তরাধিকার সূত্রে জান্নাতের নেত্রী হয়ে যাননি, বরং তিনি নিজের যোগ্যতায় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করার মাধ্যমে জান্নাতের সর্দারনি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। তো এখানেই কমনসেন্সের বিষয় চলে আসে যে, তাহলে জান্নাতের নারীদের সর্দারনি কীভাবে কোরআনের বিধানের বিপক্ষে যেতে পারে বা তাকে ঘৃণা করতে পারে! এছাড়া শরীয়তে মুহাম্মদ ﷺ এর আগেও বহুবিবাহ ছিল একটা আম বিষয়, যার কারনে তখন নারীদের কাছে বিষয়গুলো ঘৃণিত মনে হত না। তাই তিনি বহু বিবাহকে ঘৃণা করতেন বা তার বিপক্ষে ছিলেন এমন ধারণা নিছক বোকামি ছাড়া কিছুই না।

তাহলে প্রশ্ন আসে তিনি কেন কষ্ট পাবেন? এর বেশ কয়েকটা কারন থাকতে পারে। প্রথমত আবু জাহেলের সাথে সম্পর্কিত এক দুঃসহ স্মৃতি রয়েছে ফাতিমা (রাঃ) এর। তিনি দেখেছিলেন ইসলামের দাওয়াত দিতে যেয়ে রাসূল ﷺ এর উপর আবু জাহল কতটা নির্যাতন চালিয়েছে, কি না করেছে সে রাসূলের বিরুদ্ধে। আলী (রাঃ) এর স্ত্রী হিসেবে তিনি অনেক ছোট ছিলেন। স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে সেই মেয়েকে মেনে নেয়া যার বাবা ও ভাই আল্লাহর রাসূলের কষ্টের কারন ছিল! মুখে বলা যতটা সহজ বাস্তবে তা ততটা সহজ ছিল না। বরং এটা তার মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হওয়ার কারন হয়ে দাড়াত।

আবার ঈর্ষা মহিলাদের মধ্যে একটি স্বাভাবিক বিষয়, এটা প্রাকৃতিক বলা যায়। ফাতিমা (রাঃ) ও মানুষই ছিলেন, যদিও তিনি জান্নাতে নারীদের নেত্রী কিন্তু তিনিত মানুষ, তিনিত আর ফেরেশতা বা অনুভূতিহীন কোন জীব ছিলেন না, তাই ঈর্ষা থাকাটা স্বাভাবিক বিষয় (এখানে খেয়াল রাখা দরকার যে ঈর্ষা ও হিংসা এক জিনিস না)।

ফাতিমা (রাঃ) নিজের আম্মাজানকে এবং তারপরে নিজের বোনদেরকে একের পর এক হারিয়েছিলেন, তাই তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার মত কেউ ছিল না এবং তার জন্য জিনিসগুলি সহজ করতে সাহায্য করার মত, অথবা যদি সে ঈর্ষান্বিত হয় তবে তার উদ্বেগের কথা শুনার মত কেউ ছিল না। নবী ﷺ আশঙ্কা করেছিলেন যে ঈর্ষা তাকে এমন কিছু করতে প্ররোচিত করবে যা তার মর্যাদার সাথে মানানসই নাও হতে পারে, কারণ তিনি দুনিয়ার নারীদের নেত্রী।

ইব্রাহিম বিন আবদুল্লাহ আল-মুদায়েশ (রহঃ) বলেন,

শাবানের (৯ হিজরি) পরে, অর্থাৎ তার সমস্ত বোনের মৃত্যুর পরে, তাই রাসূলুল্লাহ ﷺ নির্দিষ্ট করে তাকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য মিম্বরে থাকাকালীন বিষয়টা (আলির বিবাহের) বলেছিলেন, কারণ তিনি তখন একাকী এবং দুঃখের মধ্যে ছিলেন, এবং তিনি নিজের সম্পর্কে ও আলী বিন আবি তালিবের বিবাহ করার পর কি কি কষ্ট সইবেন করবেন এ সম্পর্কে কাউকে বলার মত কেউ ছিল না। [25]কিতাব ফাতিমা বিনতে নাবী ﷺ – সিরাত, ফাদায়েল, মুসনাদ, ৪/১৭৫; https://shamela.ws/book/50/1782

ইবনে হাজার আসকালানী (রহঃ) বলেন,

এই ঘটনাটি ঘটেছিল মক্কা বিজয়ের পর, যে সময়ে তিনি ছাড়া নবী ﷺ-এর কন্যাদের মধ্যে কেউ বেঁচে ছিলেন না, মাকে হারানোর পর, তিনি নিজের বোনদের হারিয়েছিলেন, তাকে সান্ত্বনা দেওয়া মত কেউ ছিল না, যার মাধ্যমে বিষয়টি সহজ হবে। এবং তাকে ঈর্ষান্বিত হওয়ার কারণ দেওয়া (সেই মুহূর্তে) তার দুঃখকে আরও বাড়িয়ে তুলত।[26]ফাতহুল বারি, ৭/৮৬; islamqa.info হতে

এমনিতেই আগ থেকে বিভিন্ন দুঃখের মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত হচ্ছিল ফাতিমা (রাঃ) এর, তখন যদি আলি (রা) বিবাহ করতেন তাহলে হয়ত ফাতিমা ঈর্ষা বসত বা আবু জাহলের কন্যার কারনে কোন ভুল করে ফেলতে পারতেন যা একজন জান্নাতের নেত্রী হিসেবে তার কাছ হতে কাম্য নয়। এছাড়া এসবের কারনে ফাতিমা কষ্টও পেতেন আর ফাতিমা (রাঃ) বিষয়টা রাসূল থেকেতো আর লুকিয়ে থাকতো না, যা রাসূলের জন্যও কষ্ট দায়ক (নিজের চোখের মনির কষ্টের কারনে) হত (যদিও তিনি কিছু না বলতেন তারপরও মনেতো কষ্ট থাকতো), যা আলি (রাঃ) এর জন্য উপকারি কিছু হত না, কারন রাসূলকে কষ্ট দেওয়া কবিরা গুণাহ। [27]https://shamela.ws/book/37052/6770 ; https://shamela.ws/book/148095/5449 ; دوسری شادی کےلیے پہلی بیوی سے اجازت لینے کاحکم ; توضيح رفض النبي صلى الله عليه وسلم زواج عليّ على فاطمة ; سبب نهي النبي علياً عن تزوج بنت أبي جهل على فاطمة ;  ابوجہل کی بیٹی کو حضرت … See Full Note

ফাতিমার সম্মান ও মর্যাদা জন্য

নবী কন্যা ফাতেমা (রাঃ) ছিলেন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ চারজন সম্মানিতা নারীদের মধ্যে অন্যতম একজন।[28]তিরমিযী ৩৮৭৮; মুসনাদে আহমাদ ২৬৬৩; সিলসিলা সহীহাহ ১৫০৮ তাঁকে রাসূলুল্লাহ ﷺ ‘জান্নাতী মহিলাদের নেত্রী’ বলেছেন।[29]বুখারী ৩৬২৪ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে ফাতেমা (রাঃ) এর সবচেয়ে বেশি সাদৃশ্যপূর্ণতা ছিল[30]তিরমিজী ৩৮৭২; আবু দাউদ ৫২১৭, ফাতিমা ও তার পরিবার ছিলেন আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত, যাদের জন্য রাসূলুল্লাহ দোয়া করে গিয়েছেন, যাদের মর্যাদা অনেক বেশি।[31]সূরা আহযাব আয়াত ৩৩; তিরমিজি ৩৮৭১, মুনসাদ আহমদ-৪/১০৭; সহীহ মুসলিম, ২৪০৪, ২৪২৪; মুখতাসার তাফসির ইবন কাসির ১/২৮৭-২৮৯; উসুদুল গাবা, জীবনী নং-৭১৭৫; আদ-দুররুল … See Full Note আর ফাতিমা (রা) ছিলেন রাসূলের সবচেয়ে প্রিয় কন্যা।

ফাতেমা (রা) সব দিক দিয়েই সম্মানিত ও অনেক বেশি মর্যাদার অধিকারী। তিনি খাদিজা (রা) ও রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সবচেয়ে প্রিয় কন্যা হওয়ায় যেমন মর্যাদার অধিকারী ছিলেন তেমনই নিজের আমল ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাধ্যমে জান্নাতের নেত্রী ও সর্বশ্রেষ্ঠ নারীদের তালিকায় স্থান পাওয়ার যোগ্যতাও অর্জন করেছিলেন, তিনি আবার জান্নাতের যুবকদের নেতা হাসান (রা) ও হোসাইন (রা) এর গর্ভধারিণী মা, তেমনই আবার মূসা (আ) এর মত রাসূলের ﷺ কাছে হারুন (আ) এর সমান আলী (রা) এর স্ত্রী ছিলেন তিনি।

ইবনে হিব্বান (রহঃ) বলেন,

যদি আলী (রাঃ) এই কাজটি করতেন তবে এটি জায়েয হত, কিন্তু নবী ﷺ ফাতিমা (রাঃ) এর সম্মানের জন্য এটি অপছন্দ করেছেন, কারণ এই কাজটি হারাম ছিল না।[32]সহীহ ইবনে হিব্বান, ১৫/৪০৭; islamqa.info হতে

হাফিজ ইবনে হাজার (রহঃ) বলেছেন,

প্রসঙ্গটি নির্দেশ করে যে এটি (বিয়ে) আলীর জন্য জায়েজ ছিল, কিন্তু নবী ﷺ ফাতিমার অনুভূতির প্রতি খেয়াল রেখে তা নাকচ করে দিয়েছিলেন এবং ‘আলী রাসুলুল্লাহ ﷺ এর নির্দেশের আনুগত্যের জন্য এটি গ্রহণ করেছিলেন। সুতরাং এটা আমার কাছে মনে হয় যে, নবী ﷺ-এর অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি হল এই যে, তাঁর জামাইরা অন্য স্ত্রীদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতেন না যখন তারা রাসূলের মেয়েদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতেন। অথবা এমনও হতে পারে যে, এটি এমন কিছু যা শুধুমাত্র ফাতিমা (রাঃ)-এর জন্য প্রযোজ্য।[33]ফাতহুল বারী, ৯/৩২৯; islamqa.info হতে

এখানে একটা বিষয় না বললেই নয়, আমি বেশ কিছু জায়গায় দেখেছি ফাতহুল বারীর রেফারেন্স দিয়ে বলা হচ্ছে যে নবীর কন্যাদের জন্য নাকি খাস ছিল যে তাদের কোন সতিন হবে না। আসলে এই কথাটা সম্পূর্ণ ভুল কারণ ইবনে হাজার আসকালানি (রহঃ) এমন কিছুই বলেননি। যারা এমনটা প্রচার করে বেড়াচ্ছে তারা মূলত আরবি থেকে নিজে নিজে অনুবাদ করতে গিয়ে এই ভুলটা করেছে।
অতীতে নবিদের কন্যাগণের সতিন ছিল এটা একটা চরম বাস্তবতা যা কম বেশি সবারই জানা রয়েছে। আর ফাতহুল বারীতে এই বিষয়ে যা বলা হয়েছে তা হল উপরে ফাতহুল বারীর যে রেফারেন্সটি ব্যবহার করেছি সেটা। ইবনে হাজার (রহঃ) সরাসরি বলেননি যে নবীদের কন্যাদের সতিন হবে না বরং তিনি নিজের একটা মত প্রকাশ করেছেন, তাও মতটি হল রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কন্যাদের বিষয়ে, বিশেষ করে ফাতিমা (রাঃ) এর বিষয়ে। আর এই অনুবাদটা আমার নিজের করা নয় বরং Islamqa.info এর আলেমদের দ্বারা করা অনুবাদ, সেহেতু এই অনুবাদটাই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য। আর ইবনে হাজার (রহঃ) কথাটা বিশেষ করে ফাতিমা (রাঃ) এর জন্য বলেছেন, কারণ ফাতিমা (রাঃ) দুনিয়া ও আখিরাতে নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী। যদি আরবি ইবারত দেখতে চান তাহলে এখানে পেয়ে যাবেন।[34]https://shamela.ws/book/1673/5298

আরেক স্থানে কিছু ওলামা বলেছেন যে,

এই ঘটনাটি ইঙ্গিত করে যে, নবী ﷺ আলীকে নিষেধ করেছিলেন, আবু জাহেলের কন্যার সাথে তার কন্যাকে একত্রিত করতে, এ কারণেই মহানবী ﷺ বলেছেন, ‘আল্লাহর রাসূলের মেয়ে এবং আল্লাহর দুশমনের মেয়ে একত্র হতে পারে না।’ এর অর্থ হল সহ-স্ত্রী তার সহ-স্ত্রীর মতো একই অবস্থানে থাকবে এবং আবু জাহেলের কন্যা ফাতিমার সাথে একই স্তরে থাকা উপযুক্ত নয়।[35]কিতাবু ফাতওয়া ওয়াসতিসারাতীল ইসলামিল ইয়াওমা, ৩/৪৫; https://shamela.ws/book/894/1067

ইসলামে বিবাহ করলে সব স্ত্রীকে সমান অধিকার, সমান ভালোবাসা, সমান ভরন পোষণ, সমান দৃষ্টিতে দেখতে হয় অর্থাৎ সব ক্ষেত্রে সব বিষয়ে সম্পূর্ণ সমতা রাখতে হয়, অন্তত সর্বোচ্চ চেষ্টাটুকু করতে হয়। আর ফাতিমা (রাঃ) ছিলেন জান্নাতে নারীদের নেত্রী, ওনার সাথে কারো সমতা বেমানান, এটা সম্ভবই না। যেখানে দুনিয়াতে একজন প্রেসিডেন্ট ও একজন সাধারণ মানুষ সমান হতে পারে না কখনো, সেখানে বিয়ের কারণেত আখিরাতেও একসাথে থাকতে হয় তাহলে সেখানে ফাতিমা (রাঃ) এর সমান কোন সাধারণ নারী কি করে থাকতে পারে!

উপসংহার

আপনি দয়া করে সেই হাদীসটি স্মরণ করুন যেখানে আল্লাহর রাসূল ﷺ ফাতিমা (রা) এর নাম নিয়ে বলেছিলেন, এই চুরিটি সে করে থাকলে অবশ্যই তার শাস্তি হবে। তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যদন্ড দেয়া হবে এবং শাস্তিটি বাস্তবায়ন করবেন রসূলে কারীম ﷺ স্বয়ং। এটি পরিষ্কারভাবে ইঙ্গিত দেয় যে নবী কারও প্রতি তাঁর আত্মীয়তা এবং ভালবাসার জন্য ন্যায় বিচারের আদেশ করা থেকে বিরত ছিলেন না। এই থেকেই বুঝা যায় রাসূল নিছক নিজের কন্যা ঈর্ষাবোধ করবে এই চিন্তা করে আলিকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে নিষেধ করেন নি, বরং অনেক গুলো কারন ছিল নিষেধ কারন পিছনে।

যা হোক, উপরে আমরা দেখতে পেলাম যে আলি (রাঃ)-কে রাসূলুল্লাহ ﷺ বিবাহে অনুমতি না দেওয়ার পিছনে কি হিকমাহ ও রহস্য লুকায়িত ছিল। এখন উপরের তথ্যের আলোকে দেখা যাচ্ছে আবু জাহলের কন্যার বিয়ের প্রস্তাব আসার ঘটনাটি ছিল মক্কা বিজয়ের পর আনুমানিক ৯ হিজরিতে। আমরা জানি ফাতিমা (রাঃ) মৃত্যুবরণ করেন ১১ হিজরিতে।[36]আল-বিদায়াহ ৫/২৬৭-৭০; রহমতুল্লিল ‘আলামীন ২/৯৫-১১১; দ্রঃ সীরাতুর রাসূলুল্লাহ ৭৯ পৃ; আব্দুর সাত্তার শায়খ, ফাতিমাতুয যাহরা (দারুল কলম), ৩৫২, ৩৫৭-৩৫৮ পৃ.; আনসাব … See Full Note তার মানে সেই ঘটনা ও ফাতিমা (রাঃ) এর মৃত্যুর সময়ের ব্যবধান প্রায় ৩ বছরের কাছাকাছি। আর আমরা হাদিসে দেখেছি যে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছিলেন তাঁর পরিবার-পরিজনের মাঝে সর্বপ্রথম ফাতিমা (রাঃ)-ই তাঁর সাথে মিলিত হবেন।[37]সহীহ বুখারী ৩৬২৩-২৪, ৪৪৩৩, ৪১৭০; তাওহিদ পাবলিকেশন

এখন আমার (লেখকের) ব্যক্তিগতভাবে যা মনে হয় সেটা হল, রাসূলুল্লাহ ﷺ হয়তোবা আল্লাহর ওহির মাধ্যমে জানতে পেরেছিলেন যে ফাতিমা (রাঃ) বেশিদিন জীবিত থাকবেন না, তাই সব সম্ভবনা, কারণ চিন্তা ভাবনা করেই আলি (রাঃ)-কে আবু জাহলের কন্যাকে বিবাহ করার অনুমতি দেন নি।

আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।

    Footnotes

    Footnotes
    1সহীহ বুখারী হাদিস ৫২৩০; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=29793
    2সহীহ মুসলিম (হাদীস একাডেমী), হাদিস নং ৬২০১- ৬২০২; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=53300
    3সহীহুল বুখারী, হাদিস ৩১১০; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=27449
    4সহীহ মুসলিম হাদিস ২৪৪৯; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=53303
    5সীরাতে ইবনে হিশাম, অনুবাদঃ আকরাম ফারুক, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার, পৃ ৬৭ https://archive.org/details/20210627_20210627_0911/সীরাতে%20ইবনে%20হিশাম%20-%20ইবনে%20হিশাম%20%28রহঃ%29/page/n66/mode/1up
    6কিতাবুল তাওহীদ লি-শারহুল জামি’উল সহীহ, খণ্ড ২৫, পৃ ১২০-১২২ https://shamela.ws/book/13252/14942#p1
    7মুহাম্মদ ইবনে সাদ, তাবাকাত আল কাবির খন্ড ৮ পৃষ্ঠা ২০৯
    8মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বা ৩৪৫৭০; বায়হাক্বী, দালায়েলুন নবুয়ত ২/২৮২; আল-বিদায়াহ ৩/৫৯; ইবনু হিশাম ১/২৯৮-৩০০, ৩১৯-২০; তাবাকাত-২/১৫-১৭; সুবুলুল হুদা ২/৩৬২; সীরাতে ইবনে ইসহাক ১/১৯১
    9রহমাতুল্লিল আলামীন ১/৫৩; ইবনে হিশাম ১/২৯১-২৯২
    10মুসলিম ২৭৯৭; মিশকাত ৫৮৫৬; ইবনে হিশাম ১/২৯৮-২৯৯
    11সুরা আদ-দুখান-৪৩-৪৬; ইবন হিশাম, ১/৩৩৩, ৩৩৫, ২/২২, ১২৬, ১৩২; তারাজিমু সায়্যিদাতি বায়ত আন-নুবুওয়াহ-৬১৯-২০; তাবাকাত-২/১৫-১৭, ৬৯
    12শরহে সহীহ মুসলিম, ৮/১৯৯; ইসলামকিউএ ফাতাওয়া Why did the Prophet (s.a.w) not allow ‘Ali ibn Abi Taalib to take a second wife when he was married to Faatimah?
    13যাদুল মা‘আদ, ৫/১০৮ https://shamela.ws/book/21713/1996
    14বাদায়েউস সানায়ি ২/৩৩২; دوسری شادی کےلیے پہلی بیوی سے اجازت لینے کاحکم
    15কিতাব মাউসুয়াত মাহাসিন আল ইসলাম ওয়া রাদ্দ সুবহান আল ইসলাম, ১১/২৮৬; https://shamela.ws/book/146418/6435
    16মারকাতুল মাফাতিহ শরহ মিশকাতুল মাসাবিহ ৪/১৮; darulifta.info হতে
    17خصوصية عدم الزواج على بنت النبي ﷺ
    18https://shamela.ws/book/37052/6770
    19https://shamela.ws/book/16521/7601
    20ফাতহুল বারী, ৯/৩২৮; islamqa.info হতে
    21শরহে সহীহ মুসলিম, ১৬/৩; islamqa.info হতে
    22যাদুল মাআদ, ৫/১০৭-১০৮ https://shamela.ws/book/21713/1995
    23বাদায়েউস সানায়ি ২/৩৩২; darulifta.info হতে
    24মারকাতুল মাফাতিহ শরহ মিশকাতুল মাসাবিহ ৪/১৮; darulifta.info হতে
    25কিতাব ফাতিমা বিনতে নাবী ﷺ – সিরাত, ফাদায়েল, মুসনাদ, ৪/১৭৫; https://shamela.ws/book/50/1782
    26ফাতহুল বারি, ৭/৮৬; islamqa.info হতে
    27https://shamela.ws/book/37052/6770 ; https://shamela.ws/book/148095/5449 ; دوسری شادی کےلیے پہلی بیوی سے اجازت لینے کاحکم ; توضيح رفض النبي صلى الله عليه وسلم زواج عليّ على فاطمة ; سبب نهي النبي علياً عن تزوج بنت أبي جهل على فاطمة ;  ابوجہل کی بیٹی کو حضرت علیؓ کا پیغامِ نکاح
    28তিরমিযী ৩৮৭৮; মুসনাদে আহমাদ ২৬৬৩; সিলসিলা সহীহাহ ১৫০৮
    29বুখারী ৩৬২৪
    30তিরমিজী ৩৮৭২; আবু দাউদ ৫২১৭
    31সূরা আহযাব আয়াত ৩৩; তিরমিজি ৩৮৭১, মুনসাদ আহমদ-৪/১০৭; সহীহ মুসলিম, ২৪০৪, ২৪২৪; মুখতাসার তাফসির ইবন কাসির ১/২৮৭-২৮৯; উসুদুল গাবা, জীবনী নং-৭১৭৫; আদ-দুররুল মানসুর -৬/৬০৫; নিসা‘ মুবাশশারাত বিল জান্নাহ্-২১৯; আ‘লাম আন-নিসা’- ৪/১২৫
    32সহীহ ইবনে হিব্বান, ১৫/৪০৭; islamqa.info হতে
    33ফাতহুল বারী, ৯/৩২৯; islamqa.info হতে
    34https://shamela.ws/book/1673/5298
    35কিতাবু ফাতওয়া ওয়াসতিসারাতীল ইসলামিল ইয়াওমা, ৩/৪৫; https://shamela.ws/book/894/1067
    36আল-বিদায়াহ ৫/২৬৭-৭০; রহমতুল্লিল ‘আলামীন ২/৯৫-১১১; দ্রঃ সীরাতুর রাসূলুল্লাহ ৭৯ পৃ; আব্দুর সাত্তার শায়খ, ফাতিমাতুয যাহরা (দারুল কলম), ৩৫২, ৩৫৭-৩৫৮ পৃ.; আনসাব আল-আশরাফ-১/৪০২, ৪০৫; আল-ইসতী‘আব- ৪/৩৬৭, ৩৬৮
    37সহীহ বুখারী ৩৬২৩-২৪, ৪৪৩৩, ৪১৭০; তাওহিদ পাবলিকেশন
    Show More
    0 0 votes
    Article Rating
    Subscribe
    Notify of
    guest
    1 Comment
    Oldest
    Newest Most Voted
    Inline Feedbacks
    View all comments
    Fahim Khan
    9 months ago

    মাশাল্লাহ। এই জিনিসের উত্তর অনেক দিন ধরে খুজছিলাম। আল্লাহ আপনার জ্ঞান আরো বাড়িয়ে দিক। ইসলামফোবিকদের মুখে আরেকটা থাপ্পড়। 
    জাজাকাল্লাহ খাইরুন। 

    Back to top button