কুরআনইসলামবিরোধীদের প্রতি জবাব

রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর জীবদ্দশায় পবিত্র কুরআন সংরক্ষণ

পবিত্র কুরআনের ক্ষেত্রে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপিত হয়: ‘এটি কতটা ভালোভাবে সংরক্ষিত ছিল?’ এটি কেবল ইসলামের শত্রুদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয় যারা এই সুন্দর বার্তা অস্বীকার করতে চায়, তবে এটি মুসলমানদের জন্যও খুব তাৎপর্যপূর্ণ। ইসলাম যদি আপনার দ্বীন হয়, তাহলে আপনার জানতে চাওয়া উচিত কীভাবে আপনার (বিশ্বাস করা) ঐশী বাণী বছরের পর বছর ধরে হেফাজত করে রাখা হয়েছে, কারণ আপনি জানতে চান যে আপনি যা পড়ছেন তা আসলেই আপনার পালনকর্তা আল্লাহর বাণী কিনা। উপরন্তু, কিছু দাবি এমন রয়েছে যে কুরআন নাকি রাসূলের জীবনের বহু বছর পরে সংকলিত হয়েছিল, তবে এটি একটি ভুল ধারণা যা পরিষ্কার করা হবে যে এটি কেবল রাসূলের জীবদ্দশায় সংকলিত হয়নি, বরং এটি তাঁর তত্ত্বাবধানেই করা হয়েছিল। এই আর্টিকেলটিতে আল্লাহর বাণী সংরক্ষণের বিষয়ে উত্থাপিত কিছু সংশয়কে কভার করা হবে এবং নিঃসন্দেহে প্রমাণ করা হবে যে কুরআন প্রকৃতপক্ষে আল্লাহরই বাণী, যা বছরের পর বছর ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে।

মূল আর্টিকেল – https://www.icraa.org/quran-preservation-efforts-prophets-lifetime/

ভূমিকা

কেউ কেউ কুরআনের অনবদ্য সংরক্ষণ সম্পর্কে বিভ্রান্তি তৈরি করার জন্য এর বিরুদ্ধে কথা বলেছে। এখানে আমরা মহানবী (ﷺ)- এর জীবদ্দশায় কুরআন সংরক্ষণ ও সংকলনের প্রক্রিয়া সংক্ষিপ্তভাবে অধ্যয়ন করব।

মুখস্তকরণ: কুরআন সংরক্ষণের প্রাথমিক পদ্ধতি

কুরআন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে এটি লেখার চেয়ে স্মৃতির মাধ্যমে বেশি সংরক্ষণ করা হয়েছিল, এর মধ্যে মহান প্রজ্ঞা ছিল এবং আছে। আমরা দেখতে পাই যে পূর্ববর্তী নবীদের ক্ষেত্রে যাদের শিক্ষা স্মৃতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল না তাদের শিক্ষা হারিয়ে গেছে। কখনও আক্রমণকারীরা পাণ্ডুলিপিগুলি ধ্বংস করেছিল এবং কখনও কখনও লেখকরা নিজেরা ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুল করেছিলেন। সুতরাং কুরআনের ক্ষেত্রেও একই পরিণতি এড়ানোর জন্য, এর মুখস্থকরণের উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল, যদিও এটি লিখিতভাবেও সংরক্ষণ করা হয়েছিল।

আমরা সহীহ মুসলিমে দেখি যে, মহান আল্লাহ তা’আলা রাসূল (ﷺ)-কে বলেছেনঃ

وأنزلت عليك كتابا لا يغسله الماء

“তোমার প্রতি আমি এমন কিতাব অবতীর্ণ করেছি যা পানি কখনো ধুয়ে-মুছে ফেলতে পারবে না।”[1]মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ, আস-সহীহ, অনুবাদ করেছেন নাসিরউদ্দিন আল-খাত্তাব (রিয়াদ: মাকতাবা দার-উস-সালাম, ২০০৭) হাদিস ৭২০৭

এর অর্থ এই যে, কুরআন কেবল পাণ্ডুলিপিতে সংরক্ষণ করা হবে না, বরং অন্য কোনও মাধ্যমেও সংরক্ষণ করা হবে। শুরু থেকেই মুসলমানরা কুরআন মুখস্থ করার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছিল, কেবল নবী (সঃ) নিজেই নন, বরং তাঁর অসংখ্য সাহাবী হৃদয় দিয়ে সম্পূর্ণ কুরআন শিখেছিলেন। এদের মধ্যে আবু বকর, উমর, উসমান, আলী, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ, তালহা, সা’দ, হুযাইফা, উবাই ইবনে কাব, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস, আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের, আবদুল্লাহ ইবনে সায়েব, যায়েদ ইবনে সাবিত, আবু হুরায়রা, আবু আদ-দারদা, মুয়ায বিন জাবাল, আনাস ইবনে মালিক, আবু মুসা আল-আশারি, মুয়াবিয়া, সাইয়্যিদা আয়শাহ, সাইয়্যিদা উম্মে সালমাহ, সাইয়্যিদা হাফসা (রাঃ) সহ আরো অনেকে।[2]এই সকল সাহাবীগণ এবং অন্যান্য সাহাবীগণ যারা তাদের স্মৃতিতে সম্পূর্ণ কুরআন ধারণ করেছেন তাদের নাম আল-জাজরির আন-নাশর ফিল কিরাত আল-আসর এবং জালাল উদ্দিন … See Full Note

মহানবী (ﷺ) এর জীবদ্দশায় লিখে সংরক্ষণ

তখন কুরআন মুখস্থকরণের মধ্যে জোর দেওয়া হয়েছিল বেশি, তবুও কুরআন সঠিকভাবে লিখে রাখাও হয়েছিল মহানবী (ﷺ) এর জীবদ্দশায়। কুরআনের পরবর্তী সকল সংকলন মহানবী (ﷺ) কর্তৃক নির্দেশিত বিষয়ের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছিল। আমরা শীঘ্রই বিস্তারিত দেখব।

কুরআন বারবার নিজেকে “আল-কিতাব” অর্থাৎ ‘এমন কিছু যা লিখিত’ বলে অভিহিত করে। প্রকৃতপক্ষে এটি কোরআনের শুরুতেই বলা হয়েছে।

ذَلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِلْمُتَّقِينَ

এটা ঐ (মহান) কিতাব যাতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য পথনির্দেশ। [সূরা বাকারাহ আয়াত ২]

আব্দুল মাজিদ (রহঃ) বলেন, “কুরআন শুরুতে নিজেকে একটি লিখিত ওহী হিসাবে ঘোষণা করেছে, মৌখিক নয়, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে কেবল মুখ থেকে মুখে চলে আসছে। এটি অপরিহার্যত ‘কিতাবই’, দুর্ঘটনাক্রমে নয়।”[3]আবদুল মজিদ দরিয়াবাদী, তাফসীর-উল-কুরআন- পবিত্র কুরআনের অনুবাদ ও ভাষ্য, (লখনও: একাডেমি অব ইসলামিক রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশনস, ২০০৭) খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৭, নং ৩০

হিজরতের পূর্বে মক্কায়

কুরআন শুরু থেকেই লিখিতভাবে সংরক্ষিত ছিল। খালিদ বিন সাঈদ ছিলেন ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম কয়েকজন ব্যক্তির মধ্যে একজন এবং তিনি রাসূলের প্রথম ওহি লেখক ছিলেন।[4]জামাল উদ্দিন ইবনে হাদিদাহ আল-আনসারী, মিসবাহ আল-মুদি ফি কুত্তুব আন-নাবী আল-উম্মি, (বৈরুত: আলম আল-কুতাব, এন.ডি.) খণ্ড ১, পৃ. ৯০

তাঁর কন্যা উম্মে খালিদ বর্ণনা করেন:

أبي أول من كتب بسم الله الرحمن الرحيم

‘আমার বাবাই প্রথম যিনি ‘বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম’ লিখেছিলেন।[5]ইবনে আবি দাউদ আস-সিজিস্তানী, আল-বাথ ওয়াল নুসুর, (কায়রো: মাকতাবা আল-তুরাত আল-ইসলামী, ১৪০৬ হিজরি) বর্ণনা ১০

এছাড়াও আমরা উমর (রাঃ)- এর প্রত্যাবর্তনের (ইসলামে) ঘটনা জানি। তিনি অশুভ পরিকল্পনা নিয়ে রাসূল (ﷺ) কাছে যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলেন। পথে উনার সাথে নুয়াইম ইবনে আবদুল্লাহর দেখা হয়, যিনি তাকে যে কোন দুঃসাহসিক কর্মকাণ্ড করা হতে সতর্ক করেছিলেন এবং তার মনোযোগ ঘোরানোর জন্য তাকে তার নিজের বোন এবং বোনের স্বামীর বিষয়ে কিছু ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন যারা ইসলাম গ্রহণ করেছিল।

فرجع عمر عائدا إلى أخته فاطمة، وعندها خباب بن الأرت معه صحيفة فيها ” طه ” يقرئها إياها.

অতঃপর উমর (রাঃ) তার বোন ফাতিমার কাছে ফিরে গেলেন, যেখানে খাব্বাব বিন আল-আরাত ছিলেন; তাঁর কাছে সূরা তাহার একটি পাণ্ডুলিপি ছিল যা তিনি তাকে (উমরের বোনকে) পড়ে শোনাচ্ছিলেন।[6]আবুল-ফিদা ইমাদুদ্দীন ইবনে কাসির, আল-সিরাহ আল-নাবাবিয়া, অনুবাদঃ ট্রেভর লে গ্যাসিক, (গারনেট পাবলিশিং, ২০০৬) খণ্ড ২, পৃ. ২১

অন্যান্য রেওয়ায়েতে বলা হয়েছে যে পাণ্ডুলিপিতে সূরা আত-তাকবীরও ছিল।[7]আবুল কাসেম আবদুর রহমান আস-সুহাইলি, রাউদ আল-উনুফ ফি শারহ সীরাত আল-নববিয়া লি-ইবনে হিশাম, (বৈরুত: দার ইহিয়া আল-তুরাত আল-আরবি, ২০০০) খণ্ড ৩, পৃ. ১৬৭

মুসলমানরা সম্মিলিতভাবে চাপের মুখে থাকা সত্ত্বেও মক্কায় যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছিল তা লিখিতভাবে লিপিবদ্ধ করে রেখে ছিলেন। ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন:

إذا نزلت فاتحة سورة بمكة فكتبت بمكة

“যখন মক্কায় কোন একটি সূরা অবতীর্ণ হত, তখন তা মক্কায় লিখা হত।[8]ইবনে আদ-দুরাইস, ফাদাইল আল-কুরআন, (দামেস্ক: দার আল-ফিকর, ১৯৮৭) রেওয়ায়েত ৩৩

প্রকৃতপক্ষে হিজরতের (মদিনায় অভিবাসন) পূর্বে যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছিল তা লিখিতভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে বলে সুস্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে।

আয-জুবায়ের ইবনে বক্করের আখবার আল-মদিনা ইবনে হাজার আল-আসকালানি (মৃত্যু ৮৫২ হিজরি) থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে উমর ইবনে হানজালা বর্ণনা করেছেন,

وأنّ رافع بن مالك لما لقي رسول اللَّه صلّى اللَّه عليه وآله وسلّم بالعقبة أعطاه ما أنزل عليه في العشر سنين التي خلت، فقدم به رافع المدينة، ثم جمع قومه فقرأ عليهم في موضعه

রাফি’ ইবনু মালিক যখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর সাথে আল-আকাবায় সাক্ষাৎ করলেন, তখন তিনি পূর্ববর্তী দশকে যা অবতীর্ণ হয়েছে তা তাঁর কাছে হস্তান্তর করলেন। রাফি (রাঃ) মদিনায় তা নিয়ে গেলেন, সেগুলোকে তাদের জায়গায়মত একত্র করলেন এবং তাদের (মদিনাবাসীদের) কাছে তা পাঠ করলেন।[9]ইবনে হাজর আসকালানী, আল-ইসাবাহ ফি তামাইয আস-সাহাবা, (বৈরুত: দারুল কুতুব আল-ইলমিয়াহ, ১৪১৫ হিজরি) খণ্ড ২, পৃ. ৩৭০

এটা অবশ্যই লক্ষ করা উচিত যে এটা যদি এমন একটি শহরে সম্ভব হয় যেখানে পুরো ধর্ম প্রচারের কাজ বরং গোপনীয় ছিল এবং মুসলমানদের দমন ও নিপীড়ন করা হচ্ছিল, তাহলে মদিনায় পরে আরও কত কিছু করা গিয়েছে যেখানে মুসলমানরা স্বাধীন ও সার্বভৌম ছিল।

এই লিপিবদ্ধকৃত প্রকৃত ঘটনা হতে যে কেউ বুঝতে পারে যে জেফেরির দাবি কতটা অযৌক্তিক যে,

সেই ওহিলেখকদের দ্বারা কোনও একটি সময়ে কুরআনের বিশেষাংশ লেখানো একেবারেই অসম্ভব কিছু নয়। [জেফেরির দাবি][10]Jeffery, Arthur, Materials for the History of the Text of the Qur’an, (Leiden: E.J. Brill, 1937) 6 n.1 [Emphasis Mine]

যদি সকল আয়াত পুরো যুগ ধরে নাযিল হয় এবং লিখিত রেকর্ডে সংরক্ষণ করা হয়, তাহলে কীভাবে এই মন্তব্য কীভাবে সমর্থিত হতে পারে যে ওহিলেখকদের ডাকা হয়েছিলো “নির্দিষ্ট সময়ে”, এবং শুধুমাত্র কুরআনের “বিশেষাংশ” লেখানোর জন্য?

পাশাপাশি জেফারির এই স্টেইটমেন্ট দেখার মতো। তার এই বাক্যাংশ “একদম অসম্ভব নয়” দ্বিধাগ্রস্থভাবেও well recorded fact এর স্বীকৃতি দেয় না। Positive statement দেওয়া এড়ানোর জন্য এটি সত্যিই একটি ‘আশ্চর্যজনক’ টেকনিক এমনকি যখন পজিটিভ স্টেইটমেন্ট দেওয়া অপরিহার্য। পরবর্তী প্রাচ্যবিদেরা বিশেষ করে ওয়াট তো এরকম ইচ্ছাকৃতভাবে চালাকি করে কথার অর্থ বদলে দেওয়ার দিকে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে!

মদিনায় হিজরতের পর

রাসূল (ﷺ) যখন মদিনায় হিজরত করেন এবং একটি নগর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন, তখন কুরআন লেখার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়, যখন কোন আয়াত অবতীর্ণ হবে তখনের জন্য।

মদিনায় বিভিন্ন হাদীস থেকে দেখা যায় প্রাথমিকভাবে এর দায়িত্ব ছিল মূলত অভিবাসীদের (মুহাজিরিন) উপরে। আত-তাবারী (মৃত্যু: ৩১০ হিজরি) বর্ণিত রেওয়ায়েতে এসেছে,

على بن ابى طالب و عثمان بن عفان، كانا يكتبان الوحي، فإن غابا كتبه أبي بن كعب وزيد بن ثابت

হযরত আলী ইবনে আবি তালিব ও উসমান ইবনে আফফান (রাঃ) আয়াতসমূহ লিপিবদ্ধ করতেন। এবং যদি তারা উভয়ই অনুপস্থিত থাকত তবে উবাই ইবনে কা’ব এবং যায়েদ ইবনে সাবিত (রাঃ) এটি লিখতেন।[11]আবু জাফর ইবনে জারির আত-তাবারী, তারিখ আল-রুসুল ওয়াল মালুক, (বৈরুত: দারুল তুরাত, ১৩৬৭ হিজরি) খণ্ড ৬, পৃ. ১৭৯

মদিনার আনসারদের মধ্যে উবাই ছিলেন রাসূল (ﷺ)-এর প্রথম ওহি লেখক।[12]ইবনে সাইয়্যেদ আন-নাস, ‘উয়ুন আল-আতহার, (বৈরুত: দার আল-কালাম, ১৯৯৩) খণ্ড ২, পৃ. ৩৮২

মহানবী (ﷺ)-এর ৪০ জনেরও বেশি সাহাবী ছিলেন যারা সাধারণত ওহি লেখক হিসেবে কাজ করতেন। বিভিন্ন গ্রহণযোগ্য গ্রন্থে এই সাহাবীদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।[13]মুহাম্মদ মুস্তাফা আল-আজমীর কুত্তুব আন-নাবী বইটি এই বিষয়ে বিস্তৃত কাজ। এতে তিনি মহানবী (ﷺ)-এর ৪৮ জন ওহি লেখক সম্পর্কে প্রচুর তথ্য দিয়েছেন- তাদের সবার … See Full Note

ব্যবস্থাটি এতটাই বিশেষ ছিল যে একজন ব্যক্তি যে নিয়মিত লেখক তার অনুপস্থিতিতে তাকে প্রতিস্থাপন করার ব্যবস্থাও গ্রহন করা হয়। আল-জাহশরী (মৃত্যু: ৩৩১ হিজরি) লিখেছেন,

و كان حنظلة بن الربيع خليفة كل كاتب من كتاب النبى إذا غاب عن عمله

“হানজালা ইবনে রাবি রাসূল (ﷺ)-এর প্রতিটি লেখকের স্থলাভিষিক্ত ছিলেন যখন কেউ লেখার জন্য উপলব্ধ থাকতেন না।[14]আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ আল-জাহশারী, আল-উজারা ওয়াল কুত্তাব, (বাগদাদ: মাকতাবা আল-আরাবিয়া, এন.ডি.) পৃ. ৯

এই সুস্পষ্ট ঐতিহাসিক প্রমাণের বিরোধিতা করে এ. জেফেরি বলেছিলেন, “এই থিওরি আসলে মানা কঠিন যে যখনই কোনও ওহি নাযিল হতো তখন কোনও না কোনও ওহিলেখকের দল সেটার জন্য অপেক্ষারত ছিলো।”[15]Jeffery, Arthur, Materials for the History of the Text of the Qur’an, 6 n.1

যদিও কেউ দাবি করে না যে সর্বদাই (রাসূলের পাশে) কোনও দল লেখার সামগ্রী নিয়ে অবস্থান করতেন, তবুও একজন অনুপস্থিত লেখকের প্রস্তুত প্রতিস্থাপন হিসাবে কাউকে মনোনীত করার বিষয়টি দেখায় যে এটি আসলেই কোনও এলোমেলো/হেলাফেলাময় ব্যবস্থা ছিল না, ওহিলেখকদের কেউ নয়।

মদিনায় প্রাথমিক বছরগুলির পরে জায়েদ বিন সাবিত ধীরে ধীরে নবীর প্রাথমিক লেখকের মর্যাদায় উন্নীত হয়েছেন বলে দেখা যায়। তিনি নবীর আশেপাশে কোথাও থাকতেন এবং যখনই কোন ওহী আসতো তখনই তাকে ডাকা হত। তিনি নিজেই বর্ণনা করেছেন যে,

كنت جار رسول الله صلى الله عليه وسلم فكان إذا نزل الوحي أرسل إلي فكتبت الوحي

“আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর প্রতিবেশী ছিলাম। যখনই কোন বাণী অবতীর্ণ হত, তিনি আমাকে ডাকতেন এবং আমি তা লিখে রাখতাম।[16]ইবনে আবু দাউদ আস-সিজিস্তানী, আল-মাসাহিফ, (বৈরুত: দার আল-বাশার আল-ইসলামিয়া, ২০০২) হাদিস ৫-৬। আরও দেখুন, ক) ইবনে সা’দ, কিতাব আল-তাবাকাত আল-কবির – অনুবাদ … See Full Note

নবীর নির্দেশনা ও তদারকিতে লিখায় ভুল-ত্রুটি আছে কিনা নিশ্চিত করা হয়েছিল

কুরআন কীভাবে লিখে রাখা হয়েছিল এবং রাসূল (ﷺ) কীভাবে তা যাচাই করেছেন তা নিম্নোক্ত উদাহরণ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়,

عن زيد بن ثابت قال: كنت أكتب الوحي لرسول الله صلى الله عليه وسلم، وكان إذا نزل عليه أخذته برحاء شديدة، وعرق عرقا شديدا مثل الجمان، ثم سري عنه ، فكنت أدخل عليه بقطعة الكتف أو كسرة، فأكتب وهو يملي علي، فما أفرغ حتى تكاد رجلي تنكسر من ثقل القرآن، وحتى أقول: لا أمشي على رجلي أبدا، فإذا فرغت قال: «اقرأه» ، فأقرؤه، فإن كان فيه سقط أقامه، ثم أخرج به إلى الناس

প্রধান ওহি লেখকদের মধ্যে একজন জায়েদ ইবনে সাবিত (রাঃ) বর্ণনা করেন: “আমি নবী (ﷺ)-এর জন্য ওহী লিখে রাখতাম। যখন তাঁর কাছে আয়াত আসতো তখন তিনি তীব্র তাপ অনুভব করতেন এবং ঘামের ফোঁটাগুলো মুক্তার মতো তার দেহে প্রবাহিত হত। যখন এই অবস্থা শেষ হত তখন আমি কাঁধের হাড় বা অন্য কিছুর টুকরো নিয়ে আসতাম (জায়েদ রাসূলের কাছে থাকলে)। তিনি নির্দেশ দিয়ে যেতেন এবং আমি এটি লিখে রাখতাম। যখন আমি লিখা শেষ করতাম তখন ট্রান্সক্রিপশনের নিখুঁত ওজন আমার কাছে এমন অনুভব হত যেন আমার পা ভেঙে যাবে এবং আমি আর হাঁটতে পারব না। যাই হোক, আমি যখন লিখা শেষ করতাম, তখন তিনি বলতেন, ‘পড়!’ এবং আমি এটি তাকে পড়ে শোনাতাম। যদি কোনো ভুল বা ত্রুটি থাকে তবে তিনি তা সংশোধন করতেন এবং তারপর তা জনগণের সামনে নিয়ে আসতেন।[17]আত-তাবারানী, মু’জাম আল-আউস্ত, (দারুল হারামাইন, কায়রো, ১৪১৫ হিজরি) হাদিস ১৯১৩; আল-হাইতামী কর্তৃক মাজমা’আয-জাওয়াইদ, হাদিস ১৩৯৩৮-এ প্রমাণিত

এটি সুস্পষ্ট প্রমাণ যে সাহাবীগণ মহানবী (ﷺ) এর তত্ত্বাবধানে কুরআন লিখতেন এবং তা জনসমক্ষে প্রকাশ করার আগে তাঁর কাছ থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিতেন।

একটি ওহীকে জনসমক্ষে প্রকাশ করাও হাইলাইট করার যোগ্য কারণ এটি নিশ্চিত যে লোকেরা অবিলম্বে তা মুখস্থ করত এবং তাদের ব্যক্তিগত মাসাহিফে লিপিবদ্ধ করত।

জায়েদ একমাত্র রাসূল (ﷺ) কর্তৃক নির্দেশিত ব্যক্তি ছিলেন না। উসমানের সময়ে কুরআন সংকলন প্রচেষ্টা সম্পর্কে একটি বর্ণনায় আমরা জানতে পারি;

وكان الرجل يجيء بالورقة والأديم فيه القرآن، حتى جمع من ذلك كثرة، ثم دخل عثمان فدعاهم رجلا رجلا فناشدهم لسمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم وهو أملاه عليك؟ فيقول: نعم

“লোকেরা একটি চামড়া বা চামড়ার টুকরো নিয়ে আসত, যার উপরে কুরআনের অন্তত একটি আয়াত থাকত, যতক্ষণ পর্যন্ত না সেখানে প্রচুর পরিমাণে সংগ্রহ হয়। উসমান একের পর এক তাদেরকে প্রশ্ন করতেন, ‘তোমরা রাসূল (ﷺ)-কে এই আয়াত পাঠ করতে শুনেছ যখন তিনি তোমাদের কে নির্দেশ দিয়েছিলেন? তারা জবাব দিত যে, এমনটাই হয়েছে”।[18]ইবনে আবু দাউদ আস-সিজিস্তানী, আল-মাসাহিফ, হাদিস ৮২। ইবনে কাসীর ফাদাইল আল-কুরআন, ৮৪ এ এটিকে সহীহ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছেন

এটি দেখায় যে রাসূল ব্যক্তিগতভাবে এত বেশি নির্দেশ দিয়েছিলেন যে একটি “বড় ভাণ্ডার” জড়ো হয়েছিল এবং তিনি যাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন তাদের সংখ্যা কম ছিল না।

এখানে উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে উপরের বর্ণনাটির অনুবাদটি জন বার্টন দ্বারা করা হয়েছে[19]Burton, John, The Collection of the Qur’an, 145 যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে যে তিনি উপরে উল্লিখিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাক্যাংশটি বাদ দিয়েছিলেন। যদিও বার্টন যে শব্দগুলি অনুবাদ করেননি তা এ জেফেরির সংস্করণের কিতাব আল-মাসাহিফের[20]Jeffery, Arthur (editor), Kitab al-Masahif, 24 পৃষ্ঠায় রয়েছে যা তিনি উল্লেখ করেছিলেন[21]Burton, John The Collection of the Qur’an, (Cambridge: Cambridge University Press, 2010) 242, 254, তবে এটি একটি প্রকৃত অর্থেই ভুল হিসাবে গ্রহণ করা কঠিন।

কুরআন লিখা ও সংকলন

এমন প্রমাণ রয়েছে যে, মানুষ কেবল স্বতন্ত্রভাবে নবীর সামনে কুরআন লিপিবদ্ধ করত না, বরং এমন অনেক অধিবেশন হত যেখানে বিপুল সংখ্যক লোক রাসূলের উপস্থিতিতে কুরআনের পাঠ্য অনুলিপি ও সংকলন করত।

عن ابن عباس قال: ” كانت المصاحف لا تباع، كان الرجل يأتي بورقة عند النبي صلى الله عليه وسلم فيقوم الرجل فيحتسب فيكتب، ثم يقوم آخر فيكتب حتى يفرغ من المصحف “

ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, “মাসাহিফ বিক্রি করা হযত না। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট একজন ব্যক্তি চামড়াপত্র নিয়ে আসতেন এবং কেউ না কেউ দাঁড়িয়ে স্বেচ্ছায় তার জন্য লিখতেন। তারপর আরেকজন উঠে দাঁড়াতেন এবং মুসহাফ শেষ না হওয়া পর্যন্ত লিখতেন।[22]আবু বকর আল-বায়হাকী, সুনান আল-কুবরা, (বৈরুত: দারুল কুতুব আল-ইলমিয়াহ, ২০০৩) খণ্ড ৬, পৃ. ২৭, হাদিস ১১০৬৫

অন্য একটি রেওয়ায়েতে আমরা দেখি,

عن زيد بن ثابت، قال: كنا عند رسول الله صلى الله عليه وسلم نؤلف القرآن من الرقاع

জায়েদ ইবনে সাবিত বলেন: “আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে কাপড়ের টুকরোতে করে কুরআন সংগ্রহ করছিলাম।[23]আবু ঈসা আত-তিরমিজী, আল-জামী, অনুবাদ করেছেন আবু খালিল, (রিয়াদ: মাকতাবা দারুস সালাম, ২০০৭) হাদিস ৩৯৫৪; আল-আলবানী কর্তৃক সহীহ (শব্দ) হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ

এখানে একাধিক সাহাবার কথাকে খেয়াল করুন। এখানে দেখা যাচ্ছে, একাধিক ব্যক্তি রাসূলের সান্নিধ্যে বসে কুরআনের আয়াতগুলো চামড়াপত্রে লিপিবদ্ধ করতেন।

উপরন্তু, এগুলো আমাদের জানায় যে আয়াতগুলি কেবল অবতীর্ণ হওয়ার সাথে সাথে লেখা হয়নি; বরং এগুলো রাসূলের নির্দেশে তাদের নির্দিষ্ট ক্রমেও সংকলিত হয়েছিল। আল-বায়হাকি লিখেছেন;

وإنما أراد تأليف ما نزل من الآيات المتفرقة، في سورتها وجمعها فيها بإشارة من النبي صلى الله عليه وسلم

যা বুঝানো হয়েছে তা হল, বিভিন্ন নাজিলকৃত আয়াত সমূহকে (সঠিক ক্রমানুসারে) সূরায় সংকলন ও লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল রাসূল (ﷺ) এর নির্দেশনা অনুযায়ী।[24]আবু বকর আল-বায়হাকী, শুআব আল-ঈমান, (রিয়াদ: মাকতাবা আল-রুশদ, ২০০৩) খণ্ড ১, পৃ. ৩৪২

কুরআন লিপিবদ্ধ করা প্রতি নবীর উৎসাহ

বিপুলসংখ্যক মানুষ রাসূলের কাছে বসে কুরআনের আয়াতসমূহ লিপিবদ্ধ করা (অবতীর্ণ হওয়ার সময় পর্যন্ত) এবং অন্যদের জন্য স্বেচ্ছায় এর অনুলিপি তৈরি করার কারণ হ’ল রাসূল (ﷺ) মানুষকে তাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য এটি লিখে রেখে যাওয়ার জন্য কুরআন লিখতে উৎসাহিত করেছিলেন। নিম্নলিখিত বর্ণনাটি খেয়াল করুন,

عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: إن مما يلحق المؤمن من عمله وحسناته بعد موته علما علمه ونشره، وولدا صالحا تركه، ومصحفا ورثه، أو مسجدا بناه، أو بيتا لابن السبيل بناه، أو نهرا أجراه، أو صدقة أخرجها من ماله في صحته وحياته، يلحقه من بعد موته

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, “একজন মুমিনের মৃত্যুর পর যে সৎকর্মের সওয়াব তার কাছে পৌঁছাবে, সেগুলো হলো: জ্ঞান যা সে শিখিয়েছে এবং ছড়িয়ে দিয়েছে; একজন দ্বীনদার পুত্র যাকে সে রেখে গেছে; কুরআনের একটি অনুলিপি যা সে উত্তরাধিকার হিসাবে রেখে গেছে; একটি মসজিদ যা সে নির্মাণ করেছিল; একটি বাড়ি যা সে পথিকদের জন্য তৈরি করেছিল; একটি খাল যা সে খনন করেছিল; বা দাতব্য সংস্থা যা সে তার জীবদ্দশায় দিয়েছিল যখন সে সুস্থ ছিল। এই আমলগুলো তার মৃত্যুর পর তার কাছে পৌঁছাবে।’’[25]মুহাম্মদ ইবনে ইয়াজিদ ইবনে মাজাহ, আস-সুনান, অনুবাদ করেছেন নাসিরউদ্দিন আল-খাত্তাব (রিয়াদ: মাকতাবাত দার-উস-সালাম, ২০০৭) হাদিস ২৪২; আল-আলবানী কর্তৃক হাসান … See Full Note

সুতরাং এটা স্পষ্ট যে, মহানবী (ﷺ) এর সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য ছিল কেবল সম্পূর্ণ কুরআন লিপিবদ্ধ করাই নয়, বরং মানুষকে কুরআনের পাণ্ডুলিপি তৈরি ও সংগ্রহ করা এবং উত্তরাধিকারী হিসাবে তাদের পিছনে রেখে যাওয়ার জন্য। এমন ব্যবস্থা হতে এখন কী অর্জিত হয়েছে তা দেখার বিষয়।

রাসূল (ﷺ) এর জীবদ্দশায় কুরআনের মাসাহিফ ভালোভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল

সমগ্র কুরআন লিপিবদ্ধ করার জন্য রাসূল (ﷺ) এর প্রচেষ্টা ব্যাপকভাবে সফল হয়েছিল। যদিও কুরআনের কোন আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পূর্ণ অনুলিপি ছিল না তবুও অনেক সাহাবীর ব্যক্তিগত বিভিন্ন আকারের মাসাহিফ ছিল। এমনকি কুরআনের মাসাহিফ রাসূল (ﷺ) এর যুগে এতটাই প্রচলিত হয়ে উঠেছিল যে, তাকে এ সম্পর্কে বিশেষ ‍নির্দেশনা জারি করতে হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ:

عن عبد الله بن عمر رضي الله عنهما: أن رسول الله صلى الله عليه وسلم نهى أن يسافر بالقرآن إلى أرض العدو

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কুরআনের অনুলিপি নিয়ে শত্রু দেশে ভ্রমণ করতে নিষেধ করেছেন।[26]মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল আল বুখারী, আস-সহীহ, অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ মুহসিন খান (রিয়াদ: মাকতাবাত দার-উস-সালাম, ১৯৯৭) হাদিস ২৯৯০

অনুরূপভাবে, কুরআনের পাণ্ডুলিপির সম্পর্কে বিশেষ নির্দেশনার প্রমাণ পাওয়া যায় যখন রাসূল (ﷺ) হাকিম বিন হিজামকে গভর্নর হিসেবে ইয়েমেনে প্রেরণ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন,

لا تمس القرآن إلا وأنت طاهر

পবিত্র অবস্থায় থাকা ছাড়া কুরআনকে স্পর্শ কর না।[27]আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম, আল-মুস্তাদ্রাক, (বৈরুত: দারুল কুতুব আল-ইলমিয়াহ, ১৯৯০) হাদিস ৬০৫১; আল-হাকিম এটিকে সহীহ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছিলেন এবং আয-যাহাবী … See Full Note

এক পর্যায়ে কুরআনের পাণ্ডুলিপি এতটাই বিস্তৃত হয়েছিল যে, রাসূল (ﷺ) মুখস্থ ও অনুশীলনে ক্ষেত্রে শিথিলতার বিরুদ্ধে মানুষকে সতর্ক করেছিলেন।

عن أبي أمامة رضي الله عنه يبلغ به النبي صلى الله عليه وسلم قال لا تغرنكم هذه المصاحف المعلقة إن الله تعالى لا يعذب قلبا وعى القرآن

আবু উমামা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ “এই ঝুলন্ত মাসাহীফগুলো যেন তোমাদেরকে প্রতারিত না করে। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তায়ালা যে হৃদয় কুরআন মুখস্থ করেছে তাকে শাস্তি দেন না”[28]আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম তিরমিযী, নাওয়াদির আল-উসুল ফি আহাদিস আল-রসুল, (কায়রো: মাকতাবা ইমাম আল-বুখারী, ২০০৮) হাদিস ১৩৩৯ আদ-দারিমি একই রিপোর্ট দিয়েছেন, … See Full Note

রাসূল (ﷺ) এর জীবনের শেষের দিকে কুরআন লিপিবদ্ধ করা এতটাই বিস্তৃত হয়ে পড়েছিল যে লোকেরা ভাবছিল যে মাসাহিফ থাকা অবস্থায় কীভাবে তাদের কাছ থেকে জ্ঞান কেড়ে নেওয়া হবে!

শেষ খুতবার প্রাক্কালে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন মানুষকে জ্ঞান “কেড়ে নেয়ার পূর্বে” জ্ঞান অর্জন করতে বললেন, তখন একজন বেদুইন জিজ্ঞেস করল;

يا نبي الله، كيف يرفع العلم منا وبين أظهرنا المصاحف وقد تعلمنا ما فيها، وعلمنا نساءنا وذرارينا وخدمنا؟

“হে আল্লাহর রাসূল! মাসাহিফ যখন আমাদের সাথে আছে এবং আমরা তার বিষয়বস্তু শিখি এবং আমাদের নারী, শিশু ও দাসদের তা শিক্ষা দেই, তাহলে তখন কীভাবে আমাদের কাছ থেকে জ্ঞান কেড়ে নেওয়া হবে?[29]আদ-দারিমির বর্ণনায় “যখন আল্লাহর কিতাব আমাদের সাথে রয়েছে” এই শব্দগুলি রয়েছে। দেখুন, হাদীস নং ২৪৬; হুসাইন সেলিম আসাদ কর্তৃক প্রমাণিত।[30]আহমাদ বিন হাম্বল, আল-মুসনাদ, (কায়রো: দার আল-হাদীস, ১৯৯৫) খণ্ড ১৬ হাদিস ২২১৯১; হামজা আহমাদ আল-জাইন কর্তৃক হাসান (ভাল) হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ

এখানে আরেকটি বিষয় পর্যবেক্ষণীয় হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে যে, একজন বেদুঈন যখন বলেছিল যে, “মাসাহিফ আমাদের সাথে আছে” এই থেকে আমরা দেখি যে কুরআন লিপিবদ্ধ করার প্রথা মদিনার বাইরেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং মুহাজিরিন এবং আনসার ব্যতীত অন্যান্য লোকেরাও এতে অভ্যস্ত ছিল।

সম্পূর্ণ কুরআন কোন প্রকার ত্রুটি ছাড়াই সংরক্ষিত ছিল

এই সমস্ত ব্যবস্থা এবং পদ্ধতি কোন প্রকার ত্রুটি ছাড়াই সম্পূর্ণ কুরআন সংরক্ষণ নিশ্চিত করেছিল। মহানবী (ﷺ) এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন সাহাবী কর্তৃক লিপিবদ্ধকৃত খণ্ডিত কুরআনের পাণ্ডুলিপিগুলো পরবর্তীতে অফিসিয়াল মাসাহিফের ভিত্তি হয়ে উঠে যা সমগ্র মুসলিম সম্প্রদায় কর্তৃক সর্বসম্মতিক্রমে অনুসরণীয় মানদণ্ডে পরিণত হয়। এখানে রাসূলের এক ঘনিষ্ঠ সাহাবীর সাক্ষ্য রয়েছে –

عن عبد العزيز بن رفيع، قال: دخلت أنا وشداد بن معقل، على ابن عباس رضي الله عنهما، فقال له شداد بن معقل: أترك النبي صلى الله عليه وسلم من شيء؟ قال: «ما ترك إلا ما بين الدفتين» قال: ودخلنا على محمد ابن الحنفية، فسألناه، فقال: «ما ترك إلا ما بين الدفتين»

’আবদুল আযীয ইবনু রুফাই’ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং শাদ্দাদ ইবনু মা’কিল ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট উপস্থিত হলাম। শাদ্দাদ ইবনু মা’কিল তাকে জিজ্ঞেস করলেন, নবী (ﷺ) কুরআন বাদে অন্য কিছু রেখে যাননি? ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) উত্তর দিলেন, নবী (ﷺ) দুই মলাটের মাঝে যা কিছু আছে অর্থাৎ কুরআন ছাড়া অন্য কিছু রেখে যাননি। ’আবদুল আযীয বললেন, আমরা মুহাম্মাদ ইবনুল হানাফিয়ার নিকট গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনিই বললেন যে, দুই মলাটের মাঝে (যা আছে তা) ব্যতীত আর কিছু রেখে যাননি।[31]সহিহ বুখারি হাদিস ৫০১৯

কুরআন সম্পূর্ণরূপে নবীর আমলে লিখিত হয়নি এই দাবি

কেউ কেউ দাবী করে যে, মহানবী (ﷺ) এর জীবদ্দশায় কুরআন সম্পূর্ণরূপে লিখিত হয়নি, কিন্তু এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা কারণ সমগ্র কুরআন প্রকৃতপক্ষে রাসূল (ﷺ)-এর তত্ত্বাবধানে লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল, যদিও এটি একটি পূর্ণ সংগ্রহে (কিতাব আকারে) সংকলিত হয়নি। রাসুলের প্রধান ওহি লেখকদের একজন জায়েদ বিন সাবিতের বক্তব্যের দ্বারা এটি প্রমাণিত হয় –

قبض النبي صلى الله عليه وسلم ولم يكن القرآن جمع في شيء

“রাসূল (ﷺ) মৃত্যুবরণ করেছেন, অথচ পবিত্র কুরআন তখনো কোন কিছুতে একত্রিত হয়নি।[32]ইবনে হাজার আল-আসকালানি, ফাতহুল বারী, (বৈরুত: দার আল-মা’রিফাহ, ১৩৭৯ হিজরি) খণ্ড ৯, পৃষ্ঠা ১২

স্পষ্টতই এখানে ব্যবহৃত শব্দটি হল জুমিয়া যার অর্থ ‘লিখিত’ নয় বরং ‘একত্রিত’। এই কথার পিছনের প্রজ্ঞা বা উদ্দেশ্যে আল-খাত্তাবী (মৃত্যু: ৩৩৮ হিজরি) ব্যাখ্যা করেছেন যে, মহানবী (ﷺ) এর জীবদ্দশায় কুরআন সম্পূর্ণরূপে লিখিত হলেও এক জায়গায় সংকলিত হয়নি। তিনি বলেন:

إنما لم يجمع القرآن في المصحف لما كان يترقبه من ورود ناسخ لبعض أحكامه أو تلاوته فلما انقضى نزوله بوفاته ألهم الله الخلفاء الراشدين ذلك وفاء بوعده الصادق بضمان حفظه على هذه الأمة فكان ابتداء ذلك على يد الصديق بمشورة عمر

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কুরআনকে মুসহাফে একত্রিত করেননি, কারণ কিছু হুকুম বা তিলাওয়াত বাতিল হওয়ার সম্ভবনা ছিল তাই তাকে অপেক্ষা করতে হতো, কিন্তু যখন তিনি মারা গেলেন এবং ওহী বন্ধ হয়ে গেল (এবং এভাবে রহিত হওয়ার বিষয়টাও বাতিলও হয়ে গেল); আল্লাহ তা’আলা এই উম্মাহর জন্য সত্য (কুরআনের) সংরক্ষণের অঙ্গীকার পূরণের জন্য এই চিন্তাকে ধার্মিক খলিফাদের অন্তরে স্থাপন করে দিয়েছিলেন। অতঃপর হযরত উমর (রাঃ) এর পরামর্শে আবু বকর (রাঃ) এই মহৎ কাজটি করেন।[33]জালাল উদ্দীন আস-সুয়ুতি, আল-ইতিকান ফিল উলুম আল-কুরআন, (মিশর: হাইয়া আল-মাসরিয়াহ আল-আমাহ লিল-কিতাব, ১৯৭৪) খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২০২

নিঃসন্দেহে এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, মহানবী (ﷺ)-এর জীবদ্দশায় কুরআন সংরক্ষিত ও সংকলিত হয়েছে- তাঁর উপর মহান আল্লাহর সালাম ও বরকত রয়েছে।

    Footnotes

    Footnotes
    1মুসলিম ইবনে হাজ্জাজ, আস-সহীহ, অনুবাদ করেছেন নাসিরউদ্দিন আল-খাত্তাব (রিয়াদ: মাকতাবা দার-উস-সালাম, ২০০৭) হাদিস ৭২০৭
    2এই সকল সাহাবীগণ এবং অন্যান্য সাহাবীগণ যারা তাদের স্মৃতিতে সম্পূর্ণ কুরআন ধারণ করেছেন তাদের নাম আল-জাজরির আন-নাশর ফিল কিরাত আল-আসর এবং জালাল উদ্দিন আস-সুয়ুতির আল-ইতিকান ফি উলুম আল-কুরআনে পাওয়া যায়
    3আবদুল মজিদ দরিয়াবাদী, তাফসীর-উল-কুরআন- পবিত্র কুরআনের অনুবাদ ও ভাষ্য, (লখনও: একাডেমি অব ইসলামিক রিসার্চ অ্যান্ড পাবলিকেশনস, ২০০৭) খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৭, নং ৩০
    4জামাল উদ্দিন ইবনে হাদিদাহ আল-আনসারী, মিসবাহ আল-মুদি ফি কুত্তুব আন-নাবী আল-উম্মি, (বৈরুত: আলম আল-কুতাব, এন.ডি.) খণ্ড ১, পৃ. ৯০
    5ইবনে আবি দাউদ আস-সিজিস্তানী, আল-বাথ ওয়াল নুসুর, (কায়রো: মাকতাবা আল-তুরাত আল-ইসলামী, ১৪০৬ হিজরি) বর্ণনা ১০
    6আবুল-ফিদা ইমাদুদ্দীন ইবনে কাসির, আল-সিরাহ আল-নাবাবিয়া, অনুবাদঃ ট্রেভর লে গ্যাসিক, (গারনেট পাবলিশিং, ২০০৬) খণ্ড ২, পৃ. ২১
    7আবুল কাসেম আবদুর রহমান আস-সুহাইলি, রাউদ আল-উনুফ ফি শারহ সীরাত আল-নববিয়া লি-ইবনে হিশাম, (বৈরুত: দার ইহিয়া আল-তুরাত আল-আরবি, ২০০০) খণ্ড ৩, পৃ. ১৬৭
    8ইবনে আদ-দুরাইস, ফাদাইল আল-কুরআন, (দামেস্ক: দার আল-ফিকর, ১৯৮৭) রেওয়ায়েত ৩৩
    9ইবনে হাজর আসকালানী, আল-ইসাবাহ ফি তামাইয আস-সাহাবা, (বৈরুত: দারুল কুতুব আল-ইলমিয়াহ, ১৪১৫ হিজরি) খণ্ড ২, পৃ. ৩৭০
    10Jeffery, Arthur, Materials for the History of the Text of the Qur’an, (Leiden: E.J. Brill, 1937) 6 n.1 [Emphasis Mine]
    11আবু জাফর ইবনে জারির আত-তাবারী, তারিখ আল-রুসুল ওয়াল মালুক, (বৈরুত: দারুল তুরাত, ১৩৬৭ হিজরি) খণ্ড ৬, পৃ. ১৭৯
    12ইবনে সাইয়্যেদ আন-নাস, ‘উয়ুন আল-আতহার, (বৈরুত: দার আল-কালাম, ১৯৯৩) খণ্ড ২, পৃ. ৩৮২
    13মুহাম্মদ মুস্তাফা আল-আজমীর কুত্তুব আন-নাবী বইটি এই বিষয়ে বিস্তৃত কাজ। এতে তিনি মহানবী (ﷺ)-এর ৪৮ জন ওহি লেখক সম্পর্কে প্রচুর তথ্য দিয়েছেন- তাদের সবার উপর আল্লাহর রহমত ও সালাম বর্ষিত হোক; এছাড়া আরো রয়েছে ইবনু হাজার, ফাতহুল বাড়ি, ৮/৬৮৩, ৯/২২; সুবহী আস-সালিহ, মাবাহিস ফী উলুমিল কুরআন (বৈরুতঃ দারুল ‘ইলম লিল মালাঈন ১৯৯৯), ৬৯; হায়াতুল হায়াওয়ান পৃষ্ঠা ১৩০
    14আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ আল-জাহশারী, আল-উজারা ওয়াল কুত্তাব, (বাগদাদ: মাকতাবা আল-আরাবিয়া, এন.ডি.) পৃ. ৯
    15Jeffery, Arthur, Materials for the History of the Text of the Qur’an, 6 n.1
    16ইবনে আবু দাউদ আস-সিজিস্তানী, আল-মাসাহিফ, (বৈরুত: দার আল-বাশার আল-ইসলামিয়া, ২০০২) হাদিস ৫-৬। আরও দেখুন,

    ক) ইবনে সা’দ, কিতাব আল-তাবাকাত আল-কবির – অনুবাদ করেছেন এস মঈনুল হক (নয়াদিল্লি: কিতাব ভবন, ২০০৯) খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ৪২৮

    খ) আবুল কাসেম সুলেমান আত-তাবারানী, মু’জাম আল-কবির, (কায়রো: মাকতাবা ইবনে তাইমিয়া, ১৯৯৪) হাদিস ৪৮৮২।

    আল-হাইথমি মাজমা’আল-জাওয়াইদ (হাদিস ১৪১৯৯) গ্রন্থে এটিকে হাসান (উত্তম) হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছেন।

    17আত-তাবারানী, মু’জাম আল-আউস্ত, (দারুল হারামাইন, কায়রো, ১৪১৫ হিজরি) হাদিস ১৯১৩; আল-হাইতামী কর্তৃক মাজমা’আয-জাওয়াইদ, হাদিস ১৩৯৩৮-এ প্রমাণিত
    18ইবনে আবু দাউদ আস-সিজিস্তানী, আল-মাসাহিফ, হাদিস ৮২। ইবনে কাসীর ফাদাইল আল-কুরআন, ৮৪ এ এটিকে সহীহ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছেন
    19Burton, John, The Collection of the Qur’an, 145
    20Jeffery, Arthur (editor), Kitab al-Masahif, 24
    21Burton, John The Collection of the Qur’an, (Cambridge: Cambridge University Press, 2010) 242, 254
    22আবু বকর আল-বায়হাকী, সুনান আল-কুবরা, (বৈরুত: দারুল কুতুব আল-ইলমিয়াহ, ২০০৩) খণ্ড ৬, পৃ. ২৭, হাদিস ১১০৬৫
    23আবু ঈসা আত-তিরমিজী, আল-জামী, অনুবাদ করেছেন আবু খালিল, (রিয়াদ: মাকতাবা দারুস সালাম, ২০০৭) হাদিস ৩৯৫৪; আল-আলবানী কর্তৃক সহীহ (শব্দ) হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ
    24আবু বকর আল-বায়হাকী, শুআব আল-ঈমান, (রিয়াদ: মাকতাবা আল-রুশদ, ২০০৩) খণ্ড ১, পৃ. ৩৪২
    25মুহাম্মদ ইবনে ইয়াজিদ ইবনে মাজাহ, আস-সুনান, অনুবাদ করেছেন নাসিরউদ্দিন আল-খাত্তাব (রিয়াদ: মাকতাবাত দার-উস-সালাম, ২০০৭) হাদিস ২৪২; আল-আলবানী কর্তৃক হাসান (ভাল) হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ
    26মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল আল বুখারী, আস-সহীহ, অনুবাদ করেছেন মুহাম্মদ মুহসিন খান (রিয়াদ: মাকতাবাত দার-উস-সালাম, ১৯৯৭) হাদিস ২৯৯০
    27আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম, আল-মুস্তাদ্রাক, (বৈরুত: দারুল কুতুব আল-ইলমিয়াহ, ১৯৯০) হাদিস ৬০৫১; আল-হাকিম এটিকে সহীহ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছিলেন এবং আয-যাহাবী তার সাথে একমত ছিলেন
    28আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম তিরমিযী, নাওয়াদির আল-উসুল ফি আহাদিস আল-রসুল, (কায়রো: মাকতাবা ইমাম আল-বুখারী, ২০০৮) হাদিস ১৩৩৯

    আদ-দারিমি একই রিপোর্ট দিয়েছেন, কিন্তু তিনি কেবল আবু উমামার সাথে এর সনদ খুঁজে পেয়েছেন। দেখুন,

    আদ-দারিমি, আবু মুহাম্মদ আবদুল্লাহ, আল-মুসনাদ, (রিয়াদ: দার আল-মুগনি, ২০০০) হাদিস ৩৩৬২; হুসাইন সেলিম আসাদ কর্তৃক সহীহ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে

    29আদ-দারিমির বর্ণনায় “যখন আল্লাহর কিতাব আমাদের সাথে রয়েছে” এই শব্দগুলি রয়েছে। দেখুন, হাদীস নং ২৪৬; হুসাইন সেলিম আসাদ কর্তৃক প্রমাণিত।
    30আহমাদ বিন হাম্বল, আল-মুসনাদ, (কায়রো: দার আল-হাদীস, ১৯৯৫) খণ্ড ১৬ হাদিস ২২১৯১; হামজা আহমাদ আল-জাইন কর্তৃক হাসান (ভাল) হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ
    31সহিহ বুখারি হাদিস ৫০১৯
    32ইবনে হাজার আল-আসকালানি, ফাতহুল বারী, (বৈরুত: দার আল-মা’রিফাহ, ১৩৭৯ হিজরি) খণ্ড ৯, পৃষ্ঠা ১২
    33জালাল উদ্দীন আস-সুয়ুতি, আল-ইতিকান ফিল উলুম আল-কুরআন, (মিশর: হাইয়া আল-মাসরিয়াহ আল-আমাহ লিল-কিতাব, ১৯৭৪) খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২০২
    Show More
    3 1 vote
    Article Rating
    Subscribe
    Notify of
    guest
    0 Comments
    Inline Feedbacks
    View all comments
    Back to top button