ইসলামবিরোধীদের প্রতি জবাব

জান্নাতে চিরকিশোরদের কি সমকামের জন্য রাখা হবে?

নিজেদের যৌন বিকৃতি আর কতভাবে প্রচার করবে অমুসলিমরা?

ইসলামকিউ এ প্রশ্নোত্তর নং ১৭৪৬৯১
আরবি ফাতওয়ার তারিখঃ 21/10/2011
ইংরেজি ফাতওয়ার তারিখঃ 04/10/2015

প্রশ্নঃ …আমি জান্নাতের চিরকিশোর বালকদের সম্পর্কে জানতে চাই যাদের সম্পর্কে আল-হুর আল-আইনের পাশাপাশি কুরআন কথা বলে। এটা কি সম্ভব যে আমার রব তাদের (জান্নাতীদের) এই পৃথিবীতে তাদের ধৈর্য্য এবং পাপ থেকে বিরত থাকার পুরস্কার হিসাবে সমকামীদের মধ্যে যৌন আকাঙ্ক্ষা মেটানোর জন্য তাদের সৃষ্টি করেছেন? নাকি সুন্দর ছেলেদের বিশেষ করে সমকামীদের জন্য এরা ছাড়া অন্য কোন দল আছে? এই প্রশ্নটি রসিকতা নয়; বরং এটি একটি সিরিয়াস কোশ্চেন এবং আমি যথাযথ সম্মান ও পেশাদারিত্বের সাথে উত্তর আশা করি।…

উত্তরঃ

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।

আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি কিছু নাস্তিক প্রচার করে বেড়াচ্ছে যে, ইসলাম আরবদের এবং সমকামীদেরকে এই বলে আকৃষ্ট করেছিল যে, “জান্নাতে তাদের জন্য সুন্দর সুন্দর বালকেরা থাকবে যাদের সাথে অশ্লীল কাজ করা যাবে” – আল্লাহ নিষেধ করেছেন। [নাস্তিকদেরকে] যৌন লালসা অন্ধ করে দিয়েছে, বিকৃত মানবপ্রকৃতি এবং ইসলামের প্রতি বিদ্বেষের ফলে তারা এই অবস্থানে এসেছে। তারা সীমালংঘনের দুনিয়ায় অন্ধভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাই তারা পবিত্র কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করতে শুরু করেছে, তারা ভেবেছিল ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে  তারা যে অপপ্রচার চালাচ্ছে কুর’আনের আয়াতগুলো তাদের সেই জালিয়াতিকে সমর্থন করবে! এরা যে মিথ্যাবাদী ও জালিয়াত তাতে কোন সন্দেহ নেই এবং ইসলাম পবিত্রতা ও শুদ্ধতা ব্যাতীত অন্য কিছু আনেনি এবং এসব বিকৃতি [সমকামিতা] কেবল সেই সমাজেই বিদ্যমান যে সমাজ কলুষিত হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা তাদের পূর্বসূরিদেরকে (যেমন লুত (আঃ)-এর সম্প্রদায়কে) এমনভাবে শাস্তি দিয়েছিলেন যেভাবে তিনি অন্য কোন জাতিকে শাস্তি দেননি।

ইসলাম যৌন বিকৃতি (যেমনঃ সমকামিতা) কে কবিরা গুনাহ হিসাবে বিবেচনা করে। লুত (আঃ)-এর কওম যারা এই জঘন্য পাপ করেছিল তাদের সীমালঙ্ঘনকারী এবং অজ্ঞ লোক হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে, যারা তাদের পাপাচারের সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছিল, কারণ তারা এমন কাজ করেছিল যা ফিতরাতের পরিপন্থী। পড়ুন, মহান আল্লাহ তা’আলা, লুত (আঃ) সম্পর্কে কি বলেছেন যখন তিনি তাঁর লোকদেরকে উদ্দেশ্য করে বলছিলেন,

اَتَاۡتُوۡنَ الذُّکۡرَانَ مِنَ الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۱۶۵﴾ۙ وَ تَذَرُوۡنَ مَا خَلَقَ لَکُمۡ رَبُّکُمۡ مِّنۡ اَزۡوَاجِکُمۡ ؕ بَلۡ اَنۡتُمۡ قَوۡمٌ عٰدُوۡنَ ﴿۱۶۶﴾ ‘সৃষ্টিকুলের মধ্যে তোমরা কি কেবল পুরুষদের সাথে উপগত হও’? আর তোমাদের রব তোমাদের জন্য যে স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন তাদেরকে তোমরা ত্যাগ কর, বরং তোমরা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়’। সূরা শু’আরা ২৬:১৬৫-১৬৬

 وَ لُوۡطًا اِذۡ قَالَ لِقَوۡمِهٖۤ اَتَاۡتُوۡنَ الۡفَاحِشَۃَ وَ اَنۡتُمۡ تُبۡصِرُوۡنَ ﴿۵۴﴾اَئِنَّکُمۡ لَتَاۡتُوۡنَ الرِّجَالَ شَهۡوَۃً مِّنۡ دُوۡنِ النِّسَآءِ ؕ بَلۡ اَنۡتُمۡ قَوۡمٌ تَجۡهَلُوۡنَ
‘স্মরণ কর লূতের কথা, সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিল- তোমরা দেখে-শুনে কেন অশ্লীল কাজ করছ, তোমরা কি কাম আসক্তি মিটানোর জন্য নারীদের বাদ দিয়ে পুরুষদের নিকট গমন কর? তোমরা এমন এক জাতি যারা মূর্খের আচরণ করছ।’সূরা নামল ২৭:৫৪-৫৫

وَ لُوۡطًا اِذۡ قَالَ لِقَوۡمِهٖۤ اَتَاۡتُوۡنَ الۡفَاحِشَۃَ مَا سَبَقَکُمۡ بِهَا مِنۡ اَحَدٍ مِّنَ
الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۸۰﴾اِنَّکُمۡ لَتَاۡتُوۡنَ الرِّجَالَ شَهۡوَۃً مِّنۡ دُوۡنِ النِّسَآءِ ؕ بَلۡ اَنۡتُمۡ قَوۡمٌ مُّسۡرِفُوۡنَ (۸۱) وَ مَا کَانَ جَوَابَ قَوۡمِهٖۤ اِلَّاۤ اَنۡ قَالُوۡۤا اَخۡرِجُوۡهُمۡ مِّنۡ قَرۡیَتِکُمۡ ۚ اِنَّهُمۡ اُنَاسٌ یَّتَطَهَّرُوۡنَ ﴿۸۲﴾فَاَنۡجَیۡنٰهُ وَ اَهۡلَهٗۤ اِلَّا امۡرَاَتَهٗ ۫ۖ کَانَتۡ مِنَ الۡغٰبِرِیۡنَ ﴿۸۳﴾ وَ اَمۡطَرۡنَا عَلَیۡهِمۡ مَّطَرًا ؕ فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُجۡرِمِیۡنَ ﴿۸۴﴾
‘আর (প্রেরণ করেছি) লূতকে। যখন সে তার কওমকে বলল, ‘তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সৃষ্টিকুলের কেউ করেনি’?‘তোমরা তো নারীদের ছাড়া পুরুষদের সাথে কামনা পূর্ণ করছ, বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী কওম’।আর তার কওমের উত্তর কেবল এই ছিল যে, তারা বলল, ‘তাদেরকে তোমরা তোমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও। নিশ্চয় তারা এমন লোক, যারা অতি পবিত্র হতে চায়’।তাই আমি তাকে ও তার পরিবারকে রক্ষা করলাম তার স্ত্রী ছাড়া। সে ছিল পেছনে থেকে যাওয়া লোকদের অন্তর্ভুক্ত। আর আমি তাদের উপর বর্ষণ করেছিলাম বৃষ্টি। সুতরাং দেখ, অপরাধীদের পরিণতি কিরূপ ছিল।’
সূরা আল আ’রাফ ৭:৮০-৮৪

সমকামিতা নামক এই গুনাহের জঘন্যতা এবং এর উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আমরা ইতোপূর্বে আলোচনা করেছি, এর শাস্তি যে মৃত্যুদণ্ড তাও আমরা উল্লেখ করেছি। উদাহরণস্বরূপ দেখুনঃ ইসলামকিউএ প্রশ্নোত্তর ৩৮৬২২, ৮৪১৪০ এবং ২৭১৭৬। নারীদের সমকামিতা (লেসবিয়ানিজম) সম্পর্কে আলোচনা পাবেন ইসলামকিউএ প্রশ্নোত্তর ১০০৫০ তে।

এমনটা কি আদৌ সম্ভব যে, যে ব্যক্তি এ ধরনের গুরুতর পাপ করেছে, আল্লাহ তায়ালা তার জন্য এমন বালক প্রস্তুত করে রাখবেন যাদের দিয়ে সে তার বিকৃত কামনা চরিতার্থ করতে পারবে?! (আল্লাহ তায়ালা) কি মুসলিমদের এটা বলতে পারেন যে: তোমরা বিকৃত কামনাকে বাধা দিয়ে ধৈর্য ধারণ কর যাতে তোমরা জান্নাতে সেগুলো পূরণ করতে পারো?! এই নাস্তিকরা জানে যে ইসলাম পবিত্রতা ও শুদ্ধতার দ্বীন, এবং তারা জানে যে ইসলাম এসব বিকৃতিকে অনুমোদন দেয় না, সেটা পৃথিবীতে হোক কিংবা জান্নাতে। তবে তারা শয়তান এবং নাস্তিকতার পথের পথিক, তাই তারা ইসলাম সম্পর্কে মিথ্যাচার করার সময় কোনোকিছুর পরোয়া করে না, কারণ বিজ্ঞানী, ডাক্তার এবং সরকারী মন্ত্রীসহ সাধারন মানুষেরা দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করায় তারা ক্ষিপ্ত। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়, তাই তারা এই দ্বীনের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট কথা ছড়ায়। কিন্তু তাদের মিথ্যা ও বানোয়াট কথা যতই মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে, ততই তারা (মানুষেরা) ইসলামের অনুসরণ করে এবং মানুষ জানে যে নাস্তিকরা এবং এই পবিত্র দ্বীনের শত্রুরা সবধরণের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত।
আল্লাহ তা’য়ালা ঘোষণা করেছেন যে, তার জান্নাতে কোন অসার বা পাপবাক্য শোনা যাবে না, তাহলে পাপ কাজ করার প্রশ্ন কীভাবে আসে?!  তিনি(আল্লাহ তা’য়ালা) বলেন :

لَا یَسۡمَعُوۡنَ فِیۡهَا لَغۡوًا وَّ لَا تَاۡثِیۡمًا ﴿ۙ۲۵﴾اِلَّا قِیۡلًا سَلٰمًا سَلٰمًا ﴿۲۶﴾
সেখানে তারা শুনবেনা কোন অসার অথবা পাপ বাক্য, এমন কথা ছাড়া যা হবে শান্তিময়, নিরাপদ।কুরআন ৫৬:২৫-২৬

সমকামী প্রবণতা প্রাকৃতিক বা সহজাত নয়;  বরং এটি একটি রোগ যা এমন ব্যাক্তিকে সংক্রমিত করে, যে সুস্থ মানুষের ফিতরাতের বিরুদ্ধে যায় এবং যে তার আচরন ও কাজে পবিত্রতা থেকে অনেক দূরে সরে যায়। এটি নারীর প্রতি পুরুষের স্বাভাবিক আকর্ষনের বিপরীত । তাই মহান আল্লাহ পাক দুনিয়াতে আমাদের জন্য বিবাহের বিধান দিয়েছেন এবং তিনি মুসলিমদেরকে পরকালে হুর আল-আইনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।  ইসলাম এটা ব্যাতীত অন্যকিছু শিক্ষা দেয়না।

নাস্তিক ও ইসলামের শত্রুরা যে আয়াতগুলোকে প্রমাণ হিসেবে উদ্ধৃত করেছে,
যে আয়াতগুলোতে সেই অমর বালক বা চিরকিশোরদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, নিম্নে সে আয়াতগুলো উল্লেখ করা হলোঃ

وَ یَطُوۡفُ عَلَیۡهِمۡ غِلۡمَانٌ لَّهُمۡ کَاَنَّهُمۡ لُؤۡلُؤٌ مَّکۡنُوۡنٌ ﴿۲۴﴾
“আর তাদের সেবায় চারপাশে ঘুরবে বালকদল; তারা যেন সুরক্ষিত মুক্তা।”সূরা তূর ৫২:২৪

وَ یَطُوۡفُ عَلَیۡهِمۡ وِلۡدَانٌ مُّخَلَّدُوۡنَ ۚ اِذَا رَاَیۡتَهُمۡ حَسِبۡتَهُمۡ لُؤۡلُؤًا
مَّنۡثُوۡرًا ﴿۱۹﴾
তাদেরকে পরিবেশন করবে চির কিশোরগণ, তাদেরকে দেখে মনে হবে তারা যেন বিক্ষিপ্ত মুক্তা।
সূরা ইনসান ৭৬:১৯

یَطُوۡفُ عَلَیۡهِمۡ وِلۡدَانٌ مُّخَلَّدُوۡنَ ﴿ۙ۱۷﴾بِاَکۡوَابٍ وَّ اَبَارِیۡقَ ۬ۙ وَ کَاۡسٍ مِّنۡ مَّعِیۡنٍ ﴿ۙ۱۸﴾لَّا یُصَدَّعُوۡنَ عَنۡهَا وَ لَا یُنۡزِفُوۡن ﴿ۙ۱۹﴾ وَ فَاکِهَۃٍ مِّمَّا یَتَخَیَّرُوۡنَ ﴿ۙ۲۰﴾وَ لَحۡمِ طَیۡرٍ مِّمَّا یَشۡتَهُوۡنَ ﴿ؕ۲۱﴾
তাদের সেবায় ঘোরাফিরা করবে চির কিশোরেরা।পান-পাত্র, কুজা ও প্রস্রবন নিঃসৃত সুরাপূর্ণ পেয়ালা নিয়ে।তা পানে না তাদের মাথা ব্যথা করবে, আর না তারা মাতাল হবে। আর (ঘোরাফেরা করবে) তাদের পছন্দমত ফল নিয়ে। আর পাখির গোশ্‌ত নিয়ে, যা তারা কামনা করবে।

সূরা ওয়াকিয়া ৫৬:১৭-২১

এই আয়াতগুলো জান্নাতবাসীদের সেবকদের কথা বর্ণনা করেছে। মহান আল্লাহ তাদেরকে এই উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন সবচেয়ে সুন্দরতম আকৃতিতে, কিন্তু এই মিথ্যাবাদীরা যে অপবাদ দিয়েছে তা তাদের কাজের অংশ নয়;  বরং, আল্লাহ (সুবহান তা’য়ালা) কুরআনে তাদের কর্ম সম্পর্কে আমাদের বলেছেন, যেখানে তিনি বলেছেন যে তারা জান্নাতবাসীদের সেবা করবে এবং তাদের কাছে খাবার ও পানীয় নিয়ে ঘুরবে, এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।
আত-তাবারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেছেন:

“তাদের সেবায় ঘোরাফিরা করবে চির কিশোরেরা” (আল-ওয়াকিয়াহ ৫৬:১৭) এর অর্থ হলোঃ যারা ঈমানের দিক থেকে অগ্রগণ্য ছিল তাদের চারপাশে তারা ঘুরে বেড়াবে, যাদেরকে আল্লাহ তা’য়ালা আনন্দময় জান্নাতে (তাঁর) নিকটবর্তী করবেন, এই ছেলেরা একই বয়সী এবং [যাদের] কখনোই পরিবর্তন হবেনা কিংবা মারা যাবে না।

“পান-পাত্র, কুজা নিয়ে।” (এখানে পানপাত্র হিসাবে অনুবাদ করা শব্দটির আসল আরবিটি প্রশস্ত গলাবিশিষ্ট এবং স্পাউটবিহীন পাত্রকে বোঝায়)

“এবং প্রস্রবন নিঃসৃত সুরাপূর্ণ পেয়ালা নিয়ে।” – এটি প্রবাহিত ঝর্ণা থেকে সুরাপূর্ণ একটি পেয়ালাকে বোঝায়।

“তা পানে না তাদের মাথা ব্যথা করবে” অর্থাৎ এ সুরা পান করার ফলে তাদের মাথাব্যথা হবে না।

“আর না তারা মাতাল হবে।” অর্থাৎ সেটা (সুরা) পান করার ফলে তারা মাতাল হবে না, জ্ঞান ছাড়া হয়ে যাবে না।

”আর [ঘোরাফেরা করবে] তাদের পছন্দমত ফল নিয়ে।” অর্থাৎ, সেই চির কিশোররা তাদের মধ্যে ঘুরে বেড়াবে যারা ঈমানে অগ্রগণ্য ছিল, তারা (চির কিশোররা) ফল নিয়ে ঘুরে বেড়াবে যেখান থেকে জান্নাতবাসীরা তাদের ইচ্ছেমতো জান্নাতের যেকোনো ফল নিজেদের জন্য পছন্দ করবে।

“এবং পাখীর মাংস যা তারা কামনা করবে” অর্থাৎ তারা  সেই পাখির মাংস নিয়ে ঘুরে বেড়াবে যেটা জান্নাতবাসীরা পছন্দ করবে।❞

তাফসীরুত-তাবারী, ২৩/১০১-১০৫

তাদেরকে পরিবেশন করবে চির কিশোরগণ, তাদেরকে দেখে মনে হবে তারা যেন বিক্ষিপ্ত মুক্তা।” (সূরা ইনসান ৭৬:১৯)
ইমাম ইবনে কাসীর রাহিমাহুল্লাহ এই আয়াতের তাফসীরে বর্ণনা করেন যেঃ

এই নিয়ামতরাজির সাথে সাথে জান্নাতীদের জন্যে রয়েছে সুন্দর, সুশ্রী অল্প বয়স্ক কিশােরগণ, যারা তাদের খিদমতের জন্যে সদা প্রস্তৃত থাকবে। এই জান্নাতী বালকরা চিরকাল এক বয়সেরই থাকবে। তাদের বয়সের কোন পরিবর্তন ঘটবে না। এমন নয় যে, তারা বয়স্ক হয়ে যাবার ফলে তাদের আকৃতি বিকৃত হবে।( যারা এটির ব্যাখ্যা করেছেন যে তারা তাদের কানে দুল পরবে, তারা কেবল এইজন্য করেছেন কারণ এটি এমন কিছু যা শুধুমাত্র অল্প বয়স্ক কিশোরদের জন্য উপযুক্ত, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নয়)। তাদেরকে দেখে মনে হবে তারা যেন বিক্ষিপ্ত মুক্তা। তারা মূল্যবান পােশাক ও অলংকার পরিহিত। বিভিন্ন কাজে এদিক ওদিক ছুটাছুটি করবে। এ কারণেই মনে হবে যে তারা ছড়ানাে মণি-মুক্তা। এরচেয়ে বড় উপমা তাদের
জন্যে আর কিছু হতে পারে না। তারা এরূপ সৌন্দর্য, মূল্যবান পােশাক পরিচ্ছদ এবং অলংকারাদি নিয়ে তাদের জান্নাতী মনিবদের খিদমতের জন্যে সদা এদিক
ওদিক দৌড়াদৌড়ি ও ছুটাছুটি করবে।”
তাফসীরে ইবনে কাসীর খন্ড ৭, পৃ ৭৭৭

কোন কোন আলেম মনে করেন যে, চির কিশোরগন তারাই যারা ঈমানদার ও মুশরিক উভয়ের সন্তানদের মধ্যে শৈশবেই মারা যায়, তবে এ মতটি সঠিক নয়। বরং সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি হলো, যা আমরা উপরে উল্লেখ করেছি যে, তাদেরকে জান্নাতবাসীদের সেবা করার জন্য বিশেষভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে।  আরও তথ্যের জন্য, অনুগ্রহ করে ৪৩১৯১ নং প্রশ্নের উত্তর দেখুন।

অবশেষে: এটাই হলো আপনার প্রশ্নের জবাব। আমরা আশা করি এর মাধ্যমে আপনি উপকৃত হবেন, এবং আল্লাহ আপনার অন্তরকে ইসলামের প্রতি উন্মুক্ত করে দেবেন, যাতে আপনি (ইসলামের) অনুসারীদের একজন হয়ে যান এবং তাদের একজন হয়ে যান যারা মিথ্যাবাদী ও  প্রতারকদের ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচার থেকে নিজেকে বিরত রাখে। আমাদের এই উত্তরে আপনি যদি উপকৃত না হন, তাহলে হয়তো অন্যরা এর দ্বারা উপকৃত হবে এবং তা থেকে শিখবে যে, ইসলাম পবিত্রতা ও শুদ্ধতার ধর্ম এবং এই মিথ্যবাদীরা যে মিথ্যাচার করেছে জান্নাতবাসীদের সেবক সৃষ্টির পেছনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তা নিয়ে আসা এটির পক্ষে সম্ভব নয় ।  আমরা তাফসীরকারদের থেকে উদ্ধৃত দিয়েছি, ইসলামের আলেমদের থেকে এই বিষয়ে ভিন্নমত পাওয়া যায়নি।

আল্লাহই ভালো জানেন।

[প্রাসঙ্গিক অংশ অনুবাদ এবং সম্পাদনাঃ মাহফুজ আলম, তাহসিন আরাফাত]

    Show More

    ইসলামকিউএ

    www.islamqa.info(এই একাউন্টটি ফ্রম মুসলিমস-এর এডমিন প্যানেল দ্বারা চালিত। ইসলামকিউএ থেকে বিভিন্ন অনুবাদকৃত লেখা এখানে পাবেন।)
    0 0 votes
    Article Rating
    Subscribe
    Notify of
    guest
    0 Comments
    Inline Feedbacks
    View all comments
    Back to top button