ইসলামবিরোধীদের প্রতি জবাবকুরআন

কুরআনে ‘আলাকাহ’ শব্দের অর্থ আসলে কী?

কুর’আনে ব্যবহৃত علقة [আলাক্বাহ] শব্দটির অর্থের ব্যাপারে বহু তর্ক-বিতর্ক আলোচনা সমালোচনা হয়ে আসছে। এই লেখাটিতে আলাক্বাহর অর্থ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।


কুরআনের এই আয়াতকে ঘিরেই যত বিতর্ক হচ্ছেঃ

    خَلَقَ ٱلْإِنسَٰنَ مِنْ عَلَقٍ

[আল্লাহ] সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাকাহ’ হতে।[1]কুরআন ৯৬:২
Contents Hide

আলাকাহর অর্থ রক্তপিন্ড হওয়া প্রসঙ্গে

উলামাদের নিকট আলাকাহর যেই অর্থটি সবচেয়ে প্রসিদ্ধ তা হলো “রক্তপিন্ড”। এই পয়েন্টে আলাকাহর অর্থ রক্তপিন্ড হওয়ার ব্যাপারে আলোচনা করা হবে।

আলাক্বাহর অর্থ রক্তপিন্ড হওয়ার ব্যাপারে সালাফদের অবস্থান

সালাফদের অন্তর্ভুক্ত ব্যাক্তিদের মধ্য হতে শুধুমাত্র মুহাম্মদ বিন জারির আত-তাবারী হতে প্রমাণিত আছে যে তিনি আলাকাহর অর্থ রক্তপিন্ড বলেছেন[2]আত-তাবারী, জামিউল বায়ান (17/21).। এছাড়া সালাফদের অন্তর্ভুক্ত আর কেউ আলাকাহর অর্থ রক্তপিন্ড বলেছেন বলে প্রমাণিত হয়নি।

আলাকাহর অর্থ রক্তপিন্ড হওয়ার উপর ইজমা নেই

সকল আলেমের কোনো একটি বিষয়ের উপর একমত হওয়া ও কোনো মতভেদকারী না থাকাকে “ইজমা” বলা হয়। আর যেই বিষয়ের উপর ইজমা হয়ে যায় সেটা ধ্রুবসত্য [হিসেবে ইসলামে বিবেচিত হয়], সেটার বিরোধিতা করার কোনো সুযোগ নেই বরং সেটা মানতেই হবে।

ইজমা হওয়ার জন্য শর্ত হলো একজন মতভেদকারীও থাকতে পারবেনা, যদি একজন বা দুইজন মুজতাহিদও মতভেদ করেন; তাহলেই বাকিদের ঐক্যমত হওয়াকে ইজমা হিসেবে গণ্য করা হবে না।[3]আজ-জাইযানী, মাআলিমু উসুলিল ফিকাহ (পৃ/166) .[4]আল-খুযাইরী, আল-ইজমা ফিত তাফসির (পৃ/61). আলাকাহর অর্থ হিসেবে প্রায় সকল আলেমই বলেছেন যে এর অর্থ রক্তপিন্ড। কিন্ত আলেমদের একটা ক্ষুদ্র দল আলাকাহর অর্থ রক্তপিন্ড হওয়ার বিরোধিতা করেছেন ও বলেছেন যে আলাকাহ রক্তপিন্ড নয় বরং রক্তপিন্ড ও আলাকাহ পৃথক দুইটি বিষয়। আল-বাসিলী, আল-লাখমী, আল-মাতিতী, ইবন আরফাহ, আশহাব ও ফকিহদের একটি দল আলাকাহ ও রক্তপিন্ডকে দুটি আলাদা ভিন্ন পৃথক বিষয় হিসেবে গন্য করেছেন এবং বলেছেন যে আলাকাহ রক্তপিন্ড নয়।[5]মুহাম্মদ উলাইশ, মানহুজ জালিল (9/98); আল-বাসিলী,নুকত ওয়া তানবিহাত (2/321); শারহুয যুরকানী আলা মুখতাসারে খালিল (8/53); মুহাম্মদ আল-মাজলিসী,লাওয়ামিউদ দুরার (13/146)।

সুতরাং আলাকাহর অর্থ রক্তপিন্ড হওয়ার উপর ইজমা হয়নি।

বরং আলাকাহর অর্থ রক্তপিন্ড হওয়ার মতটি জুমহুর উলামাদের মত

আলাকাহর অর্থ রক্তপিন্ড হওয়ার উপর ইজমা নেই। আলেমদের একটা ক্ষুদ্র দল বাদে সবাই বলেছেন যে কুর’আনে আলাকাহ দ্বারা রক্তপিন্ড বুঝানো হয়েছে। সুতরাং আলাকাহর অর্থ রক্তপিন্ড হওয়ার মতটি জুমহুর (অধিকাংশ সংখ্যাক) উলামাদের মত।

জুমহুর উলামাদের মত ভুল হতে পারে, জুমহুররা ভুল করতে পারেন

প্রাথমিকভাবে সাধারণত জুমহুরদের মতকেই অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত সঠিক হিসেবে গণ্য করা হয় । কিন্ত এর অর্থ এই না যে, জুমহুরগন যা বলবেন তা সর্বদাই সঠিক হবে। এমন কোনো মুলনীতিও নেই যে জুমহুরদের সকল মত জুমহুরিয়তের (সংখ্যায় বেশি হওয়ার) কারনে সঠিক বা চুড়ান্ত হয়ে যাবে। বরং জুমহুরদের মতও ভুল হতে পারে, যদি দলিল-প্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয় যে জুমহুরদের কোনো একটা মত ভুল, তাহলে সেটা ভুলই হবে, সেক্ষেত্রে জুমহুরিয়ত (সংখ্যার আধিক্য) কোনো প্রভাব ফেলবেনা।

ইসলামী ফতোয়ার বিখ্যাত ওয়েবসাইট ইসলামওয়েবে বলা হয়েছে:

فقول الجمهور ليس دائما هو الصواب
জুমহুরদের মত সর্বদা সঠিক হয়না।[6]https://www.islamweb.net/amp/ar/fatwa/47787

শায়খ মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-উসাইমিন বলেছেন :

لكن إذا بان أن الحق في خلاف الجمهور، فالواجب عليك إتباع الحق
কিন্ত যখন এটা স্পষ্ট হবে যে হক্ব জুমহুরদের বিরুদ্ধেই রয়েছে, তাহলে আপনার উপর হক্বের অনুসরন করাটা ওয়াজিব।[7]আল-উসাইমিন,শারহুল আকিদাতিস সাফারিনিয়াহ (1/747).

হাসান আবুল-আশবাল আয-যুহাইরী বলেছেন :

ليس كل قول يذهب إليه الجمهور يكون صواباً
জুমহুরদের প্রদানকৃত প্রত্যেকটা মতই সঠিক হয়না।[8]আবুল-আশবাল,শারহু উসুলে ই’তিকাদি আহলিস সুন্নাহ (25/11).

যাকারিয়া বিন গোলাম ক্বাদির আল-বাকিস্তানী বলেছেন :

قول جمهور العلماء في مسألة من المسائل لا يعتبر حجة.الحجة إنما هو في الكتاب والسنة والإجماع، وقول الجمهور ليس بإجماع فلا يعتبر حجة على القول الآخر، ولو كان القائل بالقول الآخر

এবং কোনো মাসয়ালায় জুমহুর উলামাদের বক্তব্য হুজ্জত হিসেবে গন্য হবেনা, হুজ্জত রয়েছে শুধু কুরআন ও সুন্নাহ ও ইজমাতে, এবং জুমহুরদের বক্তব্য ইজমা নয় সুতরাং সেটাকে অপর মতের উপর হুজ্জত হিসেবে বিবেচনা করা হবেনা, এমনকি যদি অপর মতের পক্ষে শুধুমাত্র একজন থাকে তবুও না।[9]যাকারিয়া, উসুলুল ফিক্বাহ আলা মান-হাজে আহলিল হাদিস (পৃ/58).

ইবনুল কাইয়ুম তাঁর আল-ফুরুসিয়াতুল মুহাম্মাদিয়াহ গ্রন্থে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।[10]ইবনুল কাইয়ুম,আল-ফুরুসিয়াতুল মুহাম্মাদিয়াহ (1/237-242).

আলাকাহর অর্থ রক্তপিন্ড বলার ক্ষেত্রে জুমহুর উলামাগন ভুল করেছেন

❝চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রচুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও সরাসরি পর্যবেক্ষনের দ্বারা অকাট্যভাবে বাস্তব সত্য হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে যে মানবভ্রুণ কোনো সময়ই রক্তপিন্ড হয়না।❞

মুসলিমদের মধ্য হতে যারা চিকিৎসাশাস্ত্র সম্পর্কে ভালো জ্ঞান রাখেন তারা এ ব্যাপারটির সত্যতার সাক্ষ্য দিয়েছেন।[11]ড. লাইলা আল-আত্তার, আরাওয়ু ইবনিল যাওযি (পৃ/205).

মানবভ্রুণ যে কখনোই রক্তপিন্ড হয়না, সেটা প্রমাণের জন্য বিজ্ঞানের সাহায্যেরও প্রয়োজন নেই। গর্ভধারনের ৬ষ্ঠ সপ্তাহ হতে ১১তম সপ্তাহের মধ্যে অনেক মহিলার গর্ভপাত হয়ে থাকে,
এবং ইহাই ভ্রুণের আলাকাহ পর্যায়ে থাকার সময়সীমা। এখন কেউ যদি উক্ত সময়ের মাঝে গর্ভপাত হয়ে নির্গত হয়ে যাওয়া কোনো ভ্রুণকে ভালোমতো পরীক্ষা করে দেখে, তাহলে তার নিকট এটা সুস্পষ্ট হয়ে যাবে যে আলাকাহ পর্যায়ে থাকা ভ্রুণটি প্রকৃতপক্ষে রক্তপিন্ড নয়, বরং রক্তের আবরনের নিচে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের একটি বস্তু আছে।

যদি আলাকাহ দ্বারা কুর’আনে রক্তপিন্ডই উদ্দেশ্য হয়ে থাকে; তাহলে তা অকাট্যভাবে প্রমাণিত বাস্তব-সত্যের বিরুদ্ধে যাবে।

এইধরনের পরিস্থিতির ক্ষেত্রে –

ড. ফাহাদ বিন আব্দুর-রহমান আর-রুমী বলেছেন :

كان المسلمون كلهم متفقين على أن القرآن الكريم لم ولن يصادم حقيقة علمية؛ وإنما يقع التصادم عندما ندعي حقيقة علمية في الكون وهي ليست حقيقة علمية، أو ندعي حقيقة قرآنية وهي ليست حقيقة قرآنية

সকল মুসলিমরা এ ব্যাপারে একমত হয়েছে যে কুর’আনুল কারিম কখনোই বৈজ্ঞানিক বাস্তব সত্যকে আঘাত করেনি ও করবেনা; সংঘর্ষ তো তখনিই হবে যখন আমরা এমন কোনো কিছুকে প্রকৃতির বৈজ্ঞানিক বাস্তব সত্য বলে দাবি করব যা আসলে বৈজ্ঞানিক বাস্তব সত্য না, অথবা আমরা এমন কিছুকে কুরআনে বর্নিত বাস্তবতা হিসেবে দাবি করবো যা আসলে কুরআনে বর্নিত বাস্তবতা নয়।[12]ফাহাদ আর-রুমী,ইত্তিহাজাতুত তাফসির (2/603).

শায়খ মুহাম্মদ মুতাওয়াল্লা আশ-শা’রাওই বলেছেন :

التصادم بين القرآن والعلم اذن فالتصادم يحدث بين حقائق الكون والقرآن..إذا كان هناك تصادم..يوجد عندما ندعى حقيقة علمية في الكون..وهي ليست حقيقة علمية..أو ندعى حقيقة قرآنية وهي ليست حقيقة قرآنية لا يمكن أن يصدم أبدا بحقيقة علمية ثبتت بالتجربة

কুরআন ও বিজ্ঞানের মাঝে সংঘাত, তাহলে সেক্ষেত্রে সংঘাতটি সংঘটিত হবে প্রকৃতির বাস্তব সত্যসমুহ ও কুরআনের মাঝে …যদি সেক্ষেত্রে সংঘাত হয় …তাহলে পাওয়া যাবে যে আমরা যেটাকে প্রকৃতির বৈজ্ঞানিক বাস্তবসত্য বলে দাবি করছি…তা আসলে বৈজ্ঞানিক বাস্তব সত্য না …অথবা আমরা যেটাকে কুরআনে বর্নিত বাস্তবতা বলে দাবি করছি তা আসলে কুরআনে বর্নিত বাস্তবতা না। পরীক্ষার দ্বারা প্রমাণিত হওয়া বৈজ্ঞানিক বাস্তব সত্যের সাথে (কুরআনের) সংঘাত ঘটা কখনৌই সম্ভব না।[13]আশ-শা’রাওই, মুজিজাতুল কুর’আন (পৃ/47).

সুতরাং এক্ষেত্রে দুইটি সম্ভাবনা আছে ;

  1. হয় আলাকাহর রক্তপিন্ড না হওয়ার ব্যাপারটি কোনো বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত বাস্তব সত্য নয়। বরং আলাকাহ পর্যায়ে একটি ভ্রুণ আসলেই রক্তপিন্ড অবস্থায় থাকে।
  2. আর নাহয় আলাকাহ দ্বারা কুরআনে রক্তপিন্ড উদ্দেশ্য নয় এবং জুমহুর উলামাগন আলাকাহর অর্থ রক্তপিন্ড বলে এক্ষেত্রে ভুল করেছেন।

প্রথম সম্ভাবনাটি সত্য হওয়ার কোনো সুযোগ-সম্ভাবনা নেই, প্রথম সম্ভাবনাটি ভুল।

সুতরাং অবশ্যই দ্বিতীয় সম্ভাবনাটি সঠিক। অর্থাৎ আলাকাহর দ্বারা রক্তপিন্ড উদ্দেশ্য নয় ও জুমহুর উলামাগন আলাকাহর অর্থ রক্তপিন্ড বলে ভুল করেছেন।

অর্থাৎ প্রমাণিত হলো যে এক্ষেত্রে জুমহুর উলামাগন আলাকাহকে রক্তপিন্ড ধরে ভুল করেছেন, আলাকাহ দ্বারা কুরআনে রক্তপিন্ড উদ্দেশ্য নয় এবং এক্ষেত্রে আলেমদের সেই ক্ষুদ্র দলটিই সঠিক যারা বলেছেন যে আলাকাহ রক্তপিন্ড নয়।

আলাকাহ দ্বারা রক্তপিন্ড ব্যাতিত ভিন্ন কিছু উদ্দেশ্য

যদি কুরআনে আলাকাহ দ্বারা রক্তপিন্ড উদ্দেশ্য না হয়, তাহলে অবশ্যই এক্ষেত্রে কুরআনে আলাকাহ দ্বারা ভিন্ন কোনোকিছুকে বুঝানো হয়েছে।

কিন্ত জুমহুর উলামাগন কেন আলাকাহর অর্থ রক্তপিন্ড বললেন?

আলাকাহ পর্যায়ের স্থায়িত্বকাল হয় গর্ভধারনের ৪০ তম দিন হতে ৮০ তম দিন পর্যন্ত, এই সময়ের মাঝে গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ও কারো কারো ক্ষেত্রে গর্ভপাত হয়। গর্ভপাতের কারনে কিছু কিছু মহিলার গর্ভ হতে আলাকাহ পর্যায়ের অপরিনত ভ্রুণ নির্গত হয়ে যায়। যখন আলাকাহ পর্যায়ের ভ্রুণের গর্ভপাত হয়; ভ্রুণটি রক্তে রঞ্জিত থাকে, নির্গত ভ্রুণটির বাহিরের দিকটা সম্পূর্ণরুপে রক্তমাখা থাকে, এরফলে ভ্রুণটির দিকে তাকালে সেটাকে হুবহু একটি রক্তপিন্ড মনে হয়, কিন্ত ভ্রুণটি নিজেই রক্তপিন্ড হয়না।

গর্ভপাতের দরুন নির্গত হওয়া আলাকাহ পর্যায়ের ভ্রুণের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলেমরা আলোচনা করেছেন এবং সেসব আলোচনায় তারা আলাকাহকে রক্তপিন্ড হিসেবেই বিবেচনা করেছেন। নির্গত হওয়া আলাকাহ দেখতে হুবহু রক্তপিন্ড মনে হয়, কিন্ত তা আসলে রক্তপিন্ড নয়, আলেমরা বলেছেন তা রক্তপিন্ড; সুতরাং বলা যায় যে আলেমরা আলাকাহকে রক্তপিন্ড ধরে নিয়েছেন, কেননা আলাকাহ দেখতে হুবহু রক্তপিন্ডের মতো।

শায়খ মাহমুদ মুহাম্মাদ গারিব বলেছেন :

أن العلقة في الأيام الأولى لا يمكن رؤيتها بالعين المجردة ولكن يمكن رؤية الدم المحيط بها مما جعل القدامى يقولون إنَّ العلقة هى قطعة الدم الجامدة المتعلقة بجدار الرحم.

পূর্বেকার যুগে খালি চোখে আলাকাহকে দেখা যেতনা, কিন্ত আলাকাহর বাহিরের রক্তের আবরনটি দেখা যেত, এবং একারনেই পূর্ববর্তী আলেমরা বলেছেন যে আলাকাহ হলো একটি রক্তপিন্ডের অংশ যা গর্ভের দেয়ালে লেগে থাকে ।[14]মাহমুদ গারিব, সুরাতুল ওয়াকিয়াহ ওয়া মানহাজুহা (পৃ/195).

ডক্টর মুহাম্মাদ আলি আল-বার বলেছেন :

لماذا أصر المفسرون القدامى على أن العلقة هي الدم الغليظ … فالعلقة لا تكاد ترى بالعين المجردة، وهي مع ذلك محاطة بالدم من كل جهاتها، فتفسير العلقة بالدم الغليظ ناتج عن الملاحظة بالعين المجردة ،

কেন পূর্ববর্তী মুফাসসিররা আলাকাহর মানে রক্তপিন্ড হওয়ার ব্যাপারে অনড় ছিলেন?…মুলত আলাকাহকে খালিচোখে দেখার উপায় ছিলনা, এবং এর পাশাপাশি আলাকাহর প্রতিটা দিকই রক্ত দ্বারা বেষ্টিত ছিল, এবং আলাকাহকে রক্তপিন্ড বলে ব্যাখ্যা করার ব্যাপারটি হলো খালি চোখে আলাকাহকে পর্যবেক্ষন করার ফলাফল।[15]আল-বার,খালকুল ইনসান বাইনাত তিব্বি ওয়াল কুর’আন (পৃ/205-206).

শায়খ মুহাম্মাদ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ বলেছেনঃ

ومن ذكر من أهل التفسير الدم الجامد، فلمشابهته له في الشكل، فلم يكن في عصرهم من الأجهزة ما يمكنهم من سبر أغوارها

মুফাসসিরদের মধ্যে যারা (আলাকাহর অর্থ) রক্তপিন্ড উল্লেখ্য করেছেন, এরকারন হলো তার (আলাকাহর) সাথে তার (রক্তপিন্ডের) দৈহ্যিক সাদৃশ্যতা, উনাদের (পূর্ববর্তী মুফাসসিরদের) যুগে এমন সরঞ্জাম ছিলনা যাদ্বারা উনাদের পক্ষে তার (আলাকাহর) প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে জানা সম্ভব হতো।[16]https://islamqa.info/ar/348627

এখন প্রশ্ন হলোঃ আলেমদের কেউই কি এ ব্যাপারটা টের পান নি যে গর্ভপাতের দরুন নির্গত আলাকাহটি রক্তের আবরনে আবৃত ও সেই আবরনের নিচে ভিন্ন এক ধরনের বস্তু আছে?

এর উত্তরে বলবোঃ হ্যা, আলেমদের একটা ক্ষুদ্র দল এ ব্যাপারটা ধরতে পেরেছিলেন। নিম্নে এমন কিছু আলেমদের কথা উল্লেখ্য করা হলো যারা এ ব্যাপারটা ধরতে পেরেছিলেন।

আব্দুর-রহমান ইবনুল-কাসিম আল-উতাকী, তিনি এ ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিলেন যে গর্ভপাতের দরুন নির্গত আলাকাহটি শুধুই রক্তপিন্ড নয় বরং এর ভিতরে কিছু একটা আছে। গর্ভপাতের দরুন নির্গত রক্তপিন্ডটি ভ্রুণের রক্তপিন্ড নাকি শুধুই রক্তপিন্ড সেটা যাচাই করার জন্য তিনি গরম পানি ব্যবহারের কথা উল্লেখ্য করেছেন।[17]শারহুয যুরক্বানী আলা মুখতাসারি খালিল (8/53); মুহাম্মদ আল-মাজলিসী ,লাওয়ামিউদ দুরার (13/146). আবু-আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ আল-খারাশী,তিনিও ইবনুল-কাসিমের মতো ব্যাপারটা ধরতে পেরেছিলেন।[18]শারহুল খারাশী আলা মুখতাসারে খালিল (8/32). একই ঘটনা ঘটেছে আহমদ বিন মুহাম্মদ আদ-দারদির আল-খলওয়াতী এর সাথে।[19]হাশিয়াতুদ দাসুকী আলাশ শারহিল কাবির (2/474). মুহাম্মদ বিন আহমদ বিন আরফাহ আদ-দাসুকী, তিনিও তাদের অন্তর্ভুক্ত একজন যারা ব্যাপারটা ধরতে পেরেছেন।[20]হাশিয়াতুদ দাসুকী আলাশ শারহিল কাবির (4/268).

তাছারা আল-বাসিলী, ইবন আরফাহ, আশহাব, আল-লাখমী, আল-মাতিতী ও একদল ফকিহ তো একদম সরাসরি বলেই দিয়েছেন যে আলাকাহ রক্তপিন্ড না! বরং আলাকাহ ও রক্তপিন্ড দুটি আলাদা পৃথক ভিন্ন জিনিস।


আলাকাহর বিকল্প অর্থ – ❝এমন কিছু যা যুক্ত থাকে❞

আলাকাহর একটি অর্থ হয় “এমন কিছু যা যুক্ত থাকে”—

এর পক্ষে আরবি ভাষাবিদদের বক্তব্য উল্লেখ্য করা হলো,

আহমাদ ইবন ফারিস বলেনঃ

والعلق أن ينشب الشيء بالشيء

এবং আল-আলাক হলো কোনোকিছুর সাথে অপর কোনোকিছুর লেগে থাকা।[21]ইবন ফারিস, মুজমালুল লুগাহ (পৃ/626).

আহমাদ ইবন ফারিস, আল-খালিলের বক্তব্য নকল করে বলেন :

قَالَ الْخَلِيلُ: الْعَلَقُ أَنْ يَنَشِبَ الشَّيْءُ بِالشَّيْءِ

আল-খালিল বলেছেন : এবং আল-আলাক হলো কোনোকিছুর সাথে অপর কোনোকিছুর লেগে থাকা।[22]ইবন ফারিস, মাকাইসুল লুগাহ (4/126).

ইবন সিদাহ আল-মুরসী বলেছেনঃ

والعَلَقُ: كل مَا عُلِّق
এবং আল-আলাক : এমন যেকোনোকিছু যা ঝোলানো/লাগানো হয়েছে।[23]ইবন সিদাহ,আল-মুহকাম (1/210).[24]ইবন সিদাহ, আল-মুখাসসাস (4/37).

ইবন সিদাহর উক্ত বক্তব্যের অনুরূপ হুবহু একই কথা উল্লেখ্য করেছেনঃ আয-যুবাইদী, ইবন মানযুর ও আন-নববী।[25]আয-যুবাইদী,তাজুল উরুস (26/181); ইবন মানযুর,লিসানুল আরব (10/265); আন-নববী,তাহযিবুল আসমা ওয়াল লুগাত (4/38)।

আস-সামিন আল-হালবী বলেছেনঃ

والعلق الشيء النفيس الذي به يتعلق صاحبه

এবং আল-আলাক, উৎকৃষ্ঠ/সেরা/শ্রেষ্ঠ/মুল্যবান কোনোকিছু যার সাথে সেটার মালিক সম্পৃক্ত/সংযুক্ত থাকে।[26]আস-সামিন,উমদাতুল হুফফায (3/111).

আস-সাহিব বিন আব্বাদ বলেছেনঃ

وكذلك كل شيءٍ يُعلقُ به أو عليه شيء

এবং অনুরূপভাবে (আলাক মানে) এমন যেকোনোকিছু যার সাথে বা যার উপরে অপর কোনোকিছু সংযুক্ত থাকে/লেগে থাকে।[27]ইবন আব্বাদ,আল-মুহিত ফিল-লুগাহ (1/20).

আবু-বকর ইবন দুরাইদ বলেছেনঃ

العَلَق: الحُبّ
এবং আল-আলাক : ভালোবাসা/আকর্ষন/ঘনিষ্ঠতা।[28]ইবন দুরাইদ,জামহারাতুল লুগাহ (2/939).

আর-রাগিব আল-আসফাহানী বলেছেন :

العَلَقُ: التّشبّث بالشّيء
আল-আলাক : কোনোকিছুর দ্বারা/সাথে সংলগ্ন/যুক্ত হওয়া।[29]আর-রাগিব,আল-মুফরাদাত (পৃ/579).

এটাই হচ্ছে আলাকাহর মুল অর্থ

❝এমন কিছু যা যুক্ত থাকে❞ এই অর্থটি আলাকাহর কোনো সাধারন অর্থ নয়, বরং এটি আলাকাহর প্রকৃত অর্থ ও মুল সংজ্ঞা।

আস-সামিন আল-হালবী বলেছেনঃ

وأصل العلق: التشبت بالشيء
এবং আল-আলাকের মুল অর্থ হলো : কোনোকিছুর দ্বারা/সাথে সংলগ্ন/যুক্ত হওয়া।[30]আস-সামিন,উমদাতুল হুফফায (3/110).

আহমাদ ইবন ফারিস বলেছেন :

الْعَيْنُ وَاللَّامُ وَالْقَافُ أَصْلٌ كَبِيرٌ صَحِيحٌ يَرْجِعُ إِلَى مَعْنًى وَاحِدٍ، وَهُوَ أَنْ يُنَاطَ الشَّيْءُ بِالشَّيْءِ الْعَالِي

আইন, লাম ও ক্বফ, আছলুন কাবিরুন সহিহুন, এটি একটি অর্থের দিকে ফিরে যায়, এবং সেটা হচ্ছে কোনোকিছুর তার উপর দিকের অন্য কোনোকিছুর (উপর নির্ভর করা) / (সহিত যুক্ত হওয়া)।[31]ইবন ফারিস, মাকাইসুল লুগাহ (4/125).

আলাকাহর “রক্তপিন্ড” অর্থটি এই অর্থটির উপর ভিত্তি করেই এসেছে

আলাকাহর ‘এমন কিছু যা যুক্ত থাকে’ এই সংজ্ঞাটির উপর ভিত্তি করে বা এই সংজ্ঞাটিকে অনুসরন করে আলাকাহর “রক্তপিন্ড” অর্থটি অস্তিত্বে এসেছে। অর্থাৎ, যেই স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে আলাকাহর “রক্তপিন্ড” অর্থটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে, বিশুদ্ধতা অর্জন করেছে ও অস্তিত্ব লাভ করেছে, সেই স্তম্ভটিই হলো আলাকাহর ‘এমন কিছু যা যুক্ত থাকে’ এই সংজ্ঞাটি বা এই অর্থটি। আলাকাহ মানে এমন কিছু যা যুক্ত থাকে, যেহেতু তাজা বা ভেজা রক্তপিন্ড এমন একটি পদার্থ যা তার আঠালো বৈশিষ্টের দরুন নিজ আশেপাশের বস্তুর সাথে যুক্ত হয়ে লেগে থাকে বা থাকতে চায়; সেহেতু রক্তপিন্ডকে আলাকাহ নামকরন করা হয়েছে, এবং এভাবেই আলাকাহ শব্দটির “রক্তপিন্ড” অর্থটি অস্তিত্ব লাভ করেছে এবং প্রচলিত হয়েছে।

আহমাদ ইবন ফারিস বলেছেনঃ

وَالْعَلَقُ: الدَّمُ الْجَامِدُ، وَقِيَاسُهُ صَحِيحٌ، لِأَنَّهُ يَعْلَقُ بِالشَّيْءِ

এবং আল-আলাক, জমাটবদ্ধ রক্ত, এবং এর কিয়াস সঠিক, কেননা সেটা অপর জিনিসের সাথে যুক্ত হয়ে যায়।[32]ইবন ফারিস, মাকাইসুল লুগাহ (4/125).

আবুল-হাসান আলি আল-মাওরিদী বলেছেন :

والعلقة قطعة من دم رطب سميت بذلك لأنها تعلق لرطوبتها بما تمر عليه

এবং আলাকাহ, সিক্ত/ভেজা রক্তপিন্ডের অংশ, এটাকে এই নাম দেয়া হয়েছে কেননা এটা তার সিক্ততার কারনে তার নিকট দিয়ে গমন করা বস্তুর সহিত যুক্ত হয়ে যায়।[33]আল-মাওরিদী,আন-নুকত ওয়াল উয়ুন (6/304-305).

আল-মাওরিদীর উক্ত বক্তব্যের অনুরূপ হুবহু একই কথা উল্লেখ্য করেছেন : ইয-যুদ্দিন, আল-কুরতুবী,আন-নববী,ওহবাহ, ইবন আদিল,ইবন ফাওরাক, আদ-দামিরী, ইবনুল-যাওযি,আলি আস-সাবুনী, ইবনুল-মুলাক্কিন,আশ-শিরবিনী,আর-রমলী…[34]তাফসিরুল ইযয (3/469); তাফসিরুল কুরতুবী (20/119); আন-নববী,তাহযিবুল আসমা ওয়াল লুগাত (4/36-37); ওহবাহ,আত-তাফসিরুল মুনির (30/315); ইবন আদিল, আল-লুবাব (20/414); তাফসির ইবন ফাওরাক (3/245); … See Full Note

কুরআনে উল্লেখিত আলাকাহর অর্থ “এমন কিছু যা যুক্ত থাকে” ধরাটা গ্রহনযোগ্য

কুর’আনের কোনো একটা শব্দের ক্ষেত্রে যেকোনো অর্থ এমনেতেই বসিয়ে দেয়ার সুযোগ নেই। কুর’আনের আয়াতের কোনো একটি শব্দের একটি নির্দিষ্ট অর্থ তখনিই গ্রহনযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে যখন সেই অর্থটি নিম্নে উল্লেখিত ৫ টি শর্ত মান্য করবেঃ[35]আত-তাইয়ার, ফুসুল ফি উসুলিত তাফসির (পৃ/42-44).

  1. সেই অর্থটিকে ভাষাগতভাবে সঠিক হতে হবে,অর্থাৎ আরবি ভাষায় অর্থটির অস্তিত্ব থাকতে হবে।
  2. আরবি ভাষায় অর্থটিকে অধিক পরিচিত ও প্রচলিত হতে হবে। কম ব্যবহৃত কিংবা আরবদের নিকট অপরিচিত হলে হবেনা।
  3. অর্থটিকে প্রাসঙ্গিক হতে হবে, অর্থাৎ প্রসঙ্গের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে, প্রসঙ্গের অনুকূলে হতে হবে।
  4. মাঝে মাঝে কোনো একটি শব্দের অর্থের সাথে আয়াতের শানে নুযুল এর সম্পর্ক থাকে ও অর্থটি অনুধাবনের জন্য শানে নুযুল জানার প্রয়োজন হয়। সেসব ক্ষেত্রে শানে নুযুল এর সাথে অর্থের যে সম্পর্ক বিদ্যমান, সেই সম্পর্ক অনুযায়ি অর্থ নিতে হবে।
  5. শরঈ অর্থ ও ভাষাগত অর্থের মাঝে যদি ভিন্নতা দেখা দেয়, তাহলে শরঈ অর্থ অগ্রাধিকার পাবে

আলাকাহর “এমন কিছু যা যুক্ত থাকে” অর্থটি ভাষাগতভাবে সঠিক, এটি কম ব্যাবহৃত কিংবা অপরিচিত নয় বরং এটি যথেষ্ট প্রচলিত। উক্ত অর্থটি আয়াতগুলোর প্রসঙ্গের সাথে প্রাসঙ্গিক। অর্থাৎ আলাকাহর “এমন কিছু যা যুক্ত থাকে” অর্থটি প্রথম তিনটি শর্ত পুরন করেছে। তবে ৪র্থ ও ৫ম শর্তটি এক্ষেত্রে প্রসঙ্গের বাহিরে, এক্ষেত্রে এ’দুটি শর্ত প্রযোজ্য হওয়ার মত পরিস্থিতি প্রসঙ্গ নেই। সুতরাং কুরআনে যেই আলাকাহর কথা বর্নিত হয়েছে সেটাকে “এমন কিছু যা যুক্ত থাকে” ধরে নেয়াটা গ্রহনযোগ্য।

যদি বলা হয়ঃ লেখক তো কোনো মুফাসসির না, তার তো তাফসির করার যোগ্যতা নাই ; তাফসির করার জন্য যেই পূর্বশর্তগুলো দরকার হয় সেগুলোতো লেখকের মাঝে নাই, তাহলে লেখকের এই দাবি কেন মেনে নেয়া হবে?

এর উত্তরে বলবঃ বিংশ-শতাব্দির শ্রেষ্ঠ মুফাসসিরদের একজন মুহাম্মদ মুতাওয়াল্লা আশ-শা’রাওই এই অর্থটির দ্বারা আলাকাহর তাফসির করেছেন।[36]তাফসিরুশ শা’রাওই  (16/9979). এতটুকুই উক্ত প্রশ্নের জবাব হিসেবে যথেস্ট হবে বলে আমার মনে হয়।

তাছারা মাহমুদ মুহাম্মদ গারিব, মুহাম্মদ আলি আল-বার, লাইলা আল-আত্তার আলাকাহর রক্তপিন্ড অর্থটিকে ভুল হিসেবে গন্য করেছেন ও এই অর্থটিকে প্রাধান্য দিয়েছেন[37]মাহমুদ গারিব, সুরাতুল ওয়াকিয়াহ ওয়া মানহাজুহা (পৃ/195).[38]https://islamqa.info/ar/348627[39]ড. লাইলা আল-আত্তার, আরাওয়ু ইবনিল যাওযি (পৃ/205).। শায়খ মুহাম্মদ সালিহ আল-মুনাজ্জিদ বলেছেন যে পূর্বেকার আলেমরা আলাকাহর সাথে রক্তপিন্ডের সাদৃশ্যতা দেখতে পেয়ে ভুলবশত ধরে নিয়েছেন যে আলাকাহ রক্তপিন্ড[40]https://islamqa.info/ar/348627,এবং ‘এমন কিছু যা যুক্ত থাকে’ এটা হচ্ছে আলাকাহর গ্রহনযোগ্য একটা অর্থ।[41]শারহুয যুরক্বানী আলা মুখতাসারি খালিল (8/53); মুহাম্মদ আল-মাজলিসী ,লাওয়ামিউদ দুরার (13/146).


লেখকঃ সামিঈ আল-হাসান তবিব আল-ইনফিরাদী

جَزَاكَ ٱللَّٰهُ خَيْرًا

    Footnotes

    Footnotes
    1কুরআন ৯৬:২
    2আত-তাবারী, জামিউল বায়ান (17/21).
    3আজ-জাইযানী, মাআলিমু উসুলিল ফিকাহ (পৃ/166) .
    4আল-খুযাইরী, আল-ইজমা ফিত তাফসির (পৃ/61).
    5মুহাম্মদ উলাইশ, মানহুজ জালিল (9/98); আল-বাসিলী,নুকত ওয়া তানবিহাত (2/321); শারহুয যুরকানী আলা মুখতাসারে খালিল (8/53); মুহাম্মদ আল-মাজলিসী,লাওয়ামিউদ দুরার (13/146)।
    6https://www.islamweb.net/amp/ar/fatwa/47787
    7আল-উসাইমিন,শারহুল আকিদাতিস সাফারিনিয়াহ (1/747).
    8আবুল-আশবাল,শারহু উসুলে ই’তিকাদি আহলিস সুন্নাহ (25/11).
    9যাকারিয়া, উসুলুল ফিক্বাহ আলা মান-হাজে আহলিল হাদিস (পৃ/58).
    10ইবনুল কাইয়ুম,আল-ফুরুসিয়াতুল মুহাম্মাদিয়াহ (1/237-242).
    11, 39ড. লাইলা আল-আত্তার, আরাওয়ু ইবনিল যাওযি (পৃ/205).
    12ফাহাদ আর-রুমী,ইত্তিহাজাতুত তাফসির (2/603).
    13আশ-শা’রাওই, মুজিজাতুল কুর’আন (পৃ/47).
    14, 37মাহমুদ গারিব, সুরাতুল ওয়াকিয়াহ ওয়া মানহাজুহা (পৃ/195).
    15আল-বার,খালকুল ইনসান বাইনাত তিব্বি ওয়াল কুর’আন (পৃ/205-206).
    16, 38, 40https://islamqa.info/ar/348627
    17, 41শারহুয যুরক্বানী আলা মুখতাসারি খালিল (8/53); মুহাম্মদ আল-মাজলিসী ,লাওয়ামিউদ দুরার (13/146).
    18শারহুল খারাশী আলা মুখতাসারে খালিল (8/32).
    19হাশিয়াতুদ দাসুকী আলাশ শারহিল কাবির (2/474).
    20হাশিয়াতুদ দাসুকী আলাশ শারহিল কাবির (4/268).
    21ইবন ফারিস, মুজমালুল লুগাহ (পৃ/626).
    22ইবন ফারিস, মাকাইসুল লুগাহ (4/126).
    23ইবন সিদাহ,আল-মুহকাম (1/210).
    24ইবন সিদাহ, আল-মুখাসসাস (4/37).
    25আয-যুবাইদী,তাজুল উরুস (26/181); ইবন মানযুর,লিসানুল আরব (10/265); আন-নববী,তাহযিবুল আসমা ওয়াল লুগাত (4/38)।
    26আস-সামিন,উমদাতুল হুফফায (3/111).
    27ইবন আব্বাদ,আল-মুহিত ফিল-লুগাহ (1/20).
    28ইবন দুরাইদ,জামহারাতুল লুগাহ (2/939).
    29আর-রাগিব,আল-মুফরাদাত (পৃ/579).
    30আস-সামিন,উমদাতুল হুফফায (3/110).
    31, 32ইবন ফারিস, মাকাইসুল লুগাহ (4/125).
    33আল-মাওরিদী,আন-নুকত ওয়াল উয়ুন (6/304-305).
    34তাফসিরুল ইযয (3/469); তাফসিরুল কুরতুবী (20/119); আন-নববী,তাহযিবুল আসমা ওয়াল লুগাত (4/36-37); ওহবাহ,আত-তাফসিরুল মুনির (30/315); ইবন আদিল, আল-লুবাব (20/414); তাফসির ইবন ফাওরাক (3/245); আদ-দামিরী, আন-নাজমুও ওয়াহহাজ (1/416); ইবনুল যাওযি,আত-তাবসারাহ(2/150) & যাদুল মাসির (3/223) & কাশফুল মুশকিল (1/291); আস-সাবুনী,সফওয়াতুত তাফাসির (3/554); ইবনুল-মুলাক্কিন,আত-তাওদ্বিহ (2/303); আশ-শিরবিনী,মুগনিউল মুহতাজ (1/235); আর-রমলী,নিহায়াতুল মুহতাজ (1/246)।
    35আত-তাইয়ার, ফুসুল ফি উসুলিত তাফসির (পৃ/42-44).
    36তাফসিরুশ শা’রাওই  (16/9979).
    Show More
    5 1 vote
    Article Rating
    Subscribe
    Notify of
    guest
    0 Comments
    Inline Feedbacks
    View all comments
    Back to top button