ইসলামবিরোধীদের প্রতি জবাব

কুরআন থেকেই জঙ্গিবাদের অভিযোগ রদ

সকল প্রশংসা একমাত্র মহান আল্লাহর জন্য। আজ আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কলম ধরেছি তা হলো কুরআন কি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ কে সমর্থন করে নাকি এ সকল কর্মকাণ্ডকে কুরআন চরমভাবে নিন্দা করে।

Contents Hide
4 সমাজের উগ্রবাদী কাফেরদের কিছু মিথ্যাচারের জবাব

ভূমিকা

সমাজের বেশিরভাগ নাস্তিক, হিন্দু ও খ্রিস্টানরা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে থাকে, কুর’আন  নাকি জঙ্গিবাদের বই। তো তাদের এসব ভ্রান্ত ধারণা দূর করার জন্য আজ আমার এ লেখনী। আশা করি এতে সমাজের মুসলিমদের সুবিধা হবে ও পাশাপাশি কিছু বিভ্রান্তকারী গোষ্ঠীর ধারণা চেঞ্জ হবে৷ তো আসুন আমরা কুর’আন থেকে প্রথমে দুইটি আয়াত দেখবোঃ

  ۬ؕ  قَدۡ جَآءَکُمۡ مِّنَ اللّٰہِ نُوۡرٌ وَّکِتٰبٌ مُّبِیۡنٌ ⊕ یَّہۡدِیۡ بِہِ اللّٰہُ مَنِ اتَّبَعَ رِضۡوَانَہٗ سُبُلَ السَّلٰمِ وَیُخۡرِجُہُمۡ مِّنَ الظُّلُمٰتِ اِلَی النُّوۡرِ بِاِذۡنِہٖ وَیَہۡدِیۡہِمۡ اِلٰی صِرَاطٍ مُّسۡتَقِیۡمٍ  ۙ

অর্থঃ আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে উজ্জ্বল জ্যোতি ও সুস্পষ্ট কিতাব। এর মাধ্যমে যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি সন্ধান করে থাকে। তাদের কে শান্তির পথ প্রদর্শন করে এবং তাদের কে অন্ধকার থেকে আলোর পথে বের করে আনে ও সরল পথে পরিচালিত করে।
সুরা মায়িদাহ, আয়াত ১৫ ও ১৬

উপরের আয়াত থেকে আমরা পাঁচটি পয়েন্ট পেয়ে থাকি যেমনঃ

  1. কুর’আন উজ্জ্বলময় ও সুস্পষ্ট কিতাব।
  2. কুর’আনের মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টির উপায় অনুসন্ধান করে থাকে।
  3. এ কুর’আন মানুষকে শান্তির পথ প্রদর্শন করে।
  4. কুর’আন মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে বের করে আনে।
  5. এ কুর’আন মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করে।

তো দেখুন উপরের পাঁচটি পয়েন্ট থেকে সম্পূর্ণ পরিষ্কার যে কুর’আন মানুষ কে জঙ্গি ও সন্ত্রাস বানায় না বরং কুর’আন মানুষ কে শান্তির পথে আহ্বান করে। এখন আসুন আমরা কুর’আন থেকে কিছু রেফারেন্স দেখবো যেখানে কুর’আন সরাসরি পৃথিবীর বুকে বা সমাজের মধ্যে হাঙ্গামা দাঙ্গা বা চরমপন্থি ও সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি করতে নিষিদ্ধ করেছে ও চরমভাবে হুঁশিয়ার করেছে। তার আগে আমাদের জঙ্গিবাদের বা সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা জানতে হবে যে জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসবাদ কাকে বলে ও তা আসলে কিঃ

জঙ্গি বা সন্ত্রাস কি?

শাইখ আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম (হাফি) উল্লেখ করেছেন,

যে কোনো কারণে ও উদ্দেশ্যে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, জান-মালের ক্ষতি সাধন, দেশে ও সমাজে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি, শান্তি ও নিরাপত্তা ক্ষুণ্ন, স্থাপনা ও স্থাপত্ত ধবংস ও সর্বস্তরের নাগরিকদের আতঙ্কিত করে এবং দেশের স্বাধীনতা ও সর্বভৌমত্বকে হুমকির সম্মুখীন করে তাকেই জঙ্গি বা সন্ত্রাস বলে।[1]ইসলামের দৃষ্টিতে চরমপন্থা,জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসঃ অধ্যায়ঃ ১, পরিচ্ছেদঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ৪২
লেখকঃ শাইখ আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম
[2]মাসিক আল ফুরকান, আরবী ম্যাগাজিন আর, আই, এইচ, এস কুয়েত। সংখ্যা-৯৭ মে ১৯৯৮, পৃ ৬[3]আল কিত্বাউল খায়রী ওয়া দাওয়াইল ইরহাব, পৃ ১১০

জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিভিন্নরুপ

  1. মুসলিম ও অমুসলিম বিভিন্ন দেশে স্থাপনা ও কুটনৈতিক এলাকা ও ভবনে বোমা বিস্ফোরণ।
  2. শাসকদের আনুগত্য হতে বেরিয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা।[4]এখানে মূলত সালাত আদায়কারী মুসলিম শাসকের কথা বোঝানো হয়েছে, দেখুনঃ মাসিক আত তাহরীক, জানুয়ারি ২০১৩, প্রশ্ন (৩২/১৫২) https://at-tahreek.com/article_details/6953 – প্রবন্ধ সম্পাদক
  3. গোপন হত্যা। (নিজ উদ্যেগে, রাষ্ট্রীয় হুকুম ব্যতিত)
  4. আত্মঘাতি হামলা চালানো।
  5. বিমানসহ অন্যান্য যানবাহন ছিনতাই ইত্যাদি ইত্যাদি।[5]ইসলামের দৃষ্টিতে চরমপন্থা,জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসঃ অধ্যায়ঃ ১, পরিচ্ছেদঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ৪৩, লেখকঃ শাইখ আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম

আসুন আমরা কুর’আন থেকে কিছু রেফারেন্স দেখবো যেখানে গণহত্যা করা তো দূরের কথা বরং কুর’আন সরাসরি বলেছে বিনা কারণে মানুষকে হত্যা করাই হারাম ও পৃথিবীর বুকে বা সমাজের মধ্যে হাঙ্গামা দাঙ্গা বা চরমপন্থি ও সন্ত্রাসবাদ সৃষ্টি করতে নিষিদ্ধ করেছে ও চরমভাবে হুঁশিয়ার করেছে।

জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কুরআনের তিরস্কার ও হুঁশিয়ার

ফিতনা ফাসাদ কাকে বলে আগে আমাদেরকে সেটা বুঝতে হবে। শুধু ফিতনা দ্বারা শিরক, কুফর, অরাজকতা, মারামারি, পুড়ানো, রাষ্ট্রদ্রোহ, মুনাফিকি ইত্যাদি বুঝাতে পারে।[6]islamqa.info 22899 আর শুধু ফাসাদ ও ফিতনা ফাসাদ দ্বারা সন্ত্রাসীমুলক, ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড, অশান্তি, রাহাজানি, বিশৃঙ্খলা, দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করা ইত্যাদি বুঝিয়ে থাকে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ এসব আসলে ফিতনা ফাসাদেরই অন্তর্ভূক্ত।

  1. বিনা কারণে কাউকে হত্যা করা যাবে না।

    ○ وَلَا تَقۡتُلُوا النَّفۡسَ الَّتِیۡ حَرَّمَ اللّٰہُ اِلَّا بِالۡحَقِّ ؕ

    অর্থঃ আর তোমরা সেই নাফ্সকে হত্যা করো না, যা আল্লাহ হারাম করেছেন, সঙ্গত কারণ ছাড়া।…[7]সুরা বানী-ইসরাঈলঃ ৩৩, সুরা আনআমঃ ১৫১, সুরা ফুরকানঃ ৬৮

  2. নিজেকে বা নিজেদের মধ্যে কাউকে হত্যা করা যাবে না।

    ○  ۟ وَلَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ

    অর্থঃ …আর তোমরা নিজেরা নিজদেরকে হত্যা করো না।[8]সুরা নিসাঃ ২৯; এই আয়াত দ্বারা বহু মুফাস্সিরগণ আত্মহত্য ও অন্য মুসলিম কাউকে হত্যা করা দুটোই বুঝানো হয়ে থাকতে পারে বলে মত দিয়েছেন

  3. বিনা কারণে কাউকে হত্যা করা হলো সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করার সামিল।

    ○ اَنَّہٗ مَنۡ قَتَلَ نَفۡسًۢا بِغَیۡرِ نَفۡسٍ اَوۡ فَسَادٍ فِی الۡاَرۡضِ فَکَاَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِیۡعًا ؕ

    অর্থঃ যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করা কিংবা যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করা ছাড়া যে কাউকে হত্যা করল, সে যেন সব মানুষকে হত্যা করল।…[9]সুরা মায়িদাহঃ ৩২

  4. মুসলিম জাতিকে কল্যাণের জন্য বের করা হয়েছে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের জন্য না।

    ○کُنۡتُمۡ خَیۡرَ اُمَّۃٍ اُخۡرِجَتۡ لِلنَّاسِ تَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَتَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَتُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ ؕ وَلَوۡ اٰمَنَ اَہۡلُ الۡکِتٰبِ لَکَانَ خَیۡرًا لَّہُمۡ ؕ

    অর্থঃ তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত,যাদেরকে মানুষের জন্য বের করা হয়েছে। তোমরা ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে বারণ করবে।…[10]সুরা ইমরানঃ ১১০

  5. মুসলিম জাতি মানুষ কে কল্যাণের দিকে আহবান করে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের দিকে না।

    ○ یُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَالۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَیَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَیَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَیُسَارِعُوۡنَ فِی الۡخَیۡرٰتِ ؕ وَاُولٰٓئِکَ مِنَ الصّٰلِحِیۡنَ

    অর্থঃ তারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে এবং তারা ভাল কাজের আদেশ দেয় ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা কল্যাণকর কাজে দ্রুত ধাবিত হয় এবং তারা নেককারদের অন্তর্ভুক্ত।[11]সুরা ইমরানঃ ১১৪

  6. মুসলিম জাতি হলো মানুষ কে শান্তির পথে আহবানকারী দল।

    ○ وَلۡتَکُنۡ مِّنۡکُمۡ اُمَّۃٌ یَّدۡعُوۡنَ اِلَی الۡخَیۡرِ وَیَاۡمُرُوۡنَ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَیَنۡہَوۡنَ عَنِ الۡمُنۡکَرِ ؕ وَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ

    অর্থঃ আর তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা উচিত যারা আহবান জানাবে সৎকর্মের প্রতি, নির্দেশ দেবে ভাল কাজের এবং বারণ করবে অন্যায় কাজ থেকে, আর তারাই হলো সফলকাম।[12]সুরা ইমরানঃ ১০৪

  7. কুর’আন মানুষ কে ন্যায়পরায়ণ হতে বলে কিন্তু জঙ্গি ও সন্ত্রাস হতে বলে না।

    ○ یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا کُوۡنُوۡا قَوّٰمِیۡنَ لِلّٰہِ شُہَدَآءَ بِالۡقِسۡطِ ۫ وَلَا یَجۡرِمَنَّکُمۡ شَنَاٰنُ قَوۡمٍ عَلٰۤی اَلَّا تَعۡدِلُوۡا ؕ اِعۡدِلُوۡا ۟ ہُوَ اَقۡرَبُ لِلتَّقۡوٰی ۫ وَاتَّقُوا اللّٰہَ ؕ اِنَّ اللّٰہَ خَبِیۡرٌۢ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ

    অর্থঃ হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর জন্য ন্যায়ের সাথে সাক্ষদানকারী হিসেবে সদা দন্ডায়মান হও। কোন কওমের প্রতি শত্রুতা যেন তোমাদেরকে কোনভাবে প্ররোচিত না করে যে, তোমরা ইনসাফ করবে না। তোমরা ইনসাফ কর, তা তাকওয়ার নিকটতর এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত।[13]সুরা মায়িদাহঃ ৮, সুরা নিসাঃ ১৩৫, সুরা নাহলঃ ৯০

  8. জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করা তো দূরের কথা কুর’আন ফিতনা-ফাসাদই নিষিদ্ধ করেছে।

    ○ وَالۡفِتۡنَۃُ اَشَدُّ مِنَ الۡقَتۡلِ ۚ

    অর্থঃ …আর ফিতনা হত্যার চেয়ে কঠিনতর (অপরাধ)।[14]সুরা বাকারাঃ ১৯১, সুরা বাকারাঃ ২১৭

  9. পৃথিবীর বুক থেকে ফিতনা দূর না হওয়া পর্যন্ত একনিষ্ঠ ভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।

    ○ وَقٰتِلُوۡہُمۡ حَتّٰی لَا تَکُوۡنَ فِتۡنَۃٌ وَّیَکُوۡنَ الدِّیۡنُ لِلّٰہِ ؕ

    অর্থঃ আর তোমরা তাদের সাথে লড়াই কর, যে পর্যন্ত না ফেতনার অবসান হয় এবং আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়।…[15]সুরা বাকারাঃ ১৯৩, সুরা আনফালঃ ৩৯

    (এই আয়াতের এক সাহাবির রেওয়ায়েত হতে ফিতনা দ্বারা কুফর ও শিরক বুঝানো হয়েছে, আবার অন্য বেশ কিছু সাহাবির রেওয়ায়েত হতে ফিতনা বলতে মক্কায় মুসলিমদের উপর হওয়া দুঃখ দুর্দশা, নির্যাতন, বিপদকে বুঝিয়েছে, সেসময়ে ততক্ষন লড়াই করতে বলা হয়েছে যতক্ষণ না এমন পরিবেশ তৈরি হয় যেখানে কোনো মুসলমান নির্যাতিত না হয় যাতে সে তার ধর্ম ত্যাগ করে, আর এটা একমাত্র সম্ভব হয়েছিল ইসলাম কায়েমের মাধ্যমে। আবার ফিতনার অন্য যে অর্থ  আছে সেগুলোকে বুঝানো হয়ে থাকতে পারে। এই আয়াত দ্বারা শুধুমাত্র সশস্ত্র লড়াইকেই বুঝানো হয়নি অন্য আরো সম্ভ্যাব্য সকল কৌশল-পথই এই আয়াতের অন্তর্ভূক্ত। আবার, কুফর ও শিরকের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াইয়ের ব্যপারে এই আয়াত জাযিরাতুল আরবের কাফের মুশরিকদের জন্য খাছ এমন মতও অনেকে দিয়েছে, আর যারা খাছ বলেন নি তারাও বলেছেন এই আয়াতের লড়াই জিহাদের সকল শর্ত পূরন করেই করা হবে, যেমন জিহাদের একটি শর্ত হল দেশে ৩ প্রকারের কাফেরের সাথে জিহাদ বৈধ নয়, জিম্মী, মুয়াহাদ, মুস্তামান। আর হারবি কাফেরদের মাঝে নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও যারা মুসলিমদের সাথে যুদ্ধ করতে অক্ষম তাদেরকে হত্যা করা বৈধ নয়, তাদের বিরুদ্ধে অযথা অস্ত্র তুলা বৈধ নয়।)[16]তাফসিরে জাকারিয়া, তাফসিরে মারেফুল কুরআন, তাফসির ইবনে কাসির, সূরা আনফাল আয়াত ২৯ এর তাফসির; আল-মাওসুয়াতুল ফিকহিয়াতুল কুয়েতিয়াহ ৪২/১৯৮; আল-বাহরুর রাইক ৫/৮৪; … See Full Note

  10. পৃথিবীর বুকে অশান্তি সৃষ্টি করা যাবে না।

    ○ وَلَا تَعۡثَوۡا فِی الۡاَرۡضِ مُفۡسِدِیۡنَ

    অর্থঃ …যমীনে ফাসাদকারী রূপে ঘুরে বেড়িয়ো না।[17]সুরা বাকারাঃ ৬০, সুরা আরাফঃ ৭৪, সুরা হুদঃ ৮৫, সুরা শুআরাঃ ১৮৩

  11. পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার পরে অশান্তি সৃষ্টি করা যাবে না।

    ○ وَلَا تُفۡسِدُوۡا فِی الۡاَرۡضِ بَعۡدَ اِصۡلَاحِہَا وَادۡعُوۡہُ خَوۡفًا وَّطَمَعًا ؕ اِنَّ رَحۡمَتَ اللّٰہِ قَرِیۡبٌ مِّنَ الۡمُحۡسِنِیۡنَ

    অর্থঃ দুনিয়ায় শান্তি শৃংখলা স্থাপনের পর বিপর্যয় ও বিশৃংখলা সৃষ্টি করনা, আল্লাহকে ভয়-ভীতি ও আশা আকাংখার সাথে ডাক, নিঃসন্দেহে আল্লাহর রাহমাত সৎকর্মশীলদের অতি সন্নিকটে।[18]সুরা আরাফঃ ৫৬, সুরা আরাফঃ ৮৫

  12. পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করা থেকে সবাই কে বিরত রাখতে হবে।

    ○ فَلَوۡلَا کَانَ مِنَ الۡقُرُوۡنِ مِنۡ قَبۡلِکُمۡ اُولُوۡا بَقِیَّۃٍ یَّنۡہَوۡنَ عَنِ الۡفَسَادِ فِی الۡاَرۡضِ اِلَّا قَلِیۡلًا مِّمَّنۡ اَنۡجَیۡنَا مِنۡہُمۡ ۚ

    অর্থঃ অতএব তোমাদের পূর্বের প্রজন্মসমূহের মধ্যে এমন প্রজ্ঞাবান কেন হয়নি, যারা যমীনে ফাসাদ করা থেকে নিষেধ করত? অল্প সংখ্যক ছাড়া, যাদেরকে আমি তাদের মধ্য থেকে নাজাত দিয়েছিলাম।…[19]সুরা হুদঃ ১১৬

  13. মহান আল্লাহ পৃথিবীর বুকে ফাসাদকারীকে পছন্দ করে না।

    ○  ؕ وَاللّٰہُ لَا یُحِبُّ الۡمُفۡسِدِیۡنَ

    অর্থঃ …আর তারা যমীনে ফাসাদ করে বেড়ায় এবং আল্লাহ ফাসাদকারীদের ভালবাসেন না।[20]সুরা মায়িদাহঃ ৬৪, সুরা বাকারাঃ ২০৫

  14. পৃথিবীর বুকে অশান্তি সৃষ্টিকারীদের অনুসরণ করা যাবে না।

    ○ وَاَصۡلِحۡ وَلَا تَتَّبِعۡ سَبِیۡلَ الۡمُفۡسِدِیۡنَ

    অর্থঃ …সংশোধন কর এবং ফাসাদকারীদের পথ অনুসরণ করো না।[21]সুরা আরাফঃ ১৪২

  15.  যারা পৃথিবীর বুকে অশান্তি সৃষ্টি করে তাদের উপর মহান আল্লাহর অভিশাপ।

    ○ وَیُفۡسِدُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ ۙ اُولٰٓئِکَ لَہُمُ اللَّعۡنَۃُ وَلَہُمۡ سُوۡٓءُ الدَّارِ
    অর্থঃ …যমীনে ফাসাদ সৃষ্টি করে, তাদের জন্যই লা‘নত আর তাদের জন্যই রয়েছ আখিরাতের মন্দ আবাস।[22]সুরা রাদঃ ২৫

  16. যারা পৃথিবীর বুকে অশান্তি সৃষ্টি করে তাদের জন্য জঘন্য শাস্তি আছে৷

    ○ اَلَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا وَصَدُّوۡا عَنۡ سَبِیۡلِ اللّٰہِ زِدۡنٰہُمۡ عَذَابًا فَوۡقَ الۡعَذَابِ بِمَا کَانُوۡا یُفۡسِدُوۡنَ

    অর্থঃ যারা কাফের হয়েছে এবং আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করেছে, আমি তাদেরকে আযাবের পর আযাব বাড়িয়ে দেব। কারণ, তারা অশান্তি সৃষ্টি করত।[23]সুরা নাহলঃ ৮৮

  17. মহান আল্লাহ আমাদের আগে কত জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের ধবংস করেছে পৃথিবীর বুকে অশান্তি সৃষ্টির কারণে তা আমাদের দেখতে বলে ও শিক্ষা অর্জন করতে বলে।

    ○ فَانۡظُرۡ کَیۡفَ کَانَ عَاقِبَۃُ الۡمُفۡسِدِیۡنَ

    অর্থঃ …অতএব দেখ, ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের পরিণাম কেমন হয়েছিল।[24]সুরা নমলঃ ১৪, সুরা আরাফঃ ৮৬ ও ১০৩, সুরা মুহাম্মাদঃ ১০, সুরা মুমিনঃ ২১ ও ৮২, সুরা ফাতিরঃ ৪৪

  18. পৃথিবীর মধ্যে যারা শান্তি নষ্ট করে অশান্তি সৃষ্টি করে তারা পাপী।

    ○ اَمۡ نَجۡعَلُ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ کَالۡمُفۡسِدِیۡنَ فِی الۡاَرۡضِ ۫ اَمۡ نَجۡعَلُ الۡمُتَّقِیۡنَ کَالۡفُجَّارِ

    অর্থঃ যারা ঈমান আনে ও নেক আমল করে আমি কি তাদেরকে যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের সমতুল্য গণ্য করব? নাকি আমি মুত্তাকীদেরকে পাপাচারীদের সমতুল্য গণ্য করব?[25]সুরা ছোয়াদঃ ২৮

  19. অভাবের কারণেও নিজ সন্তানকে হত্যা করা বড় অপরাধ।

    ○  ؕ نَحۡنُ نَرۡزُقُہُمۡ وَاِیَّاکُمۡ ؕ اِنَّ قَتۡلَہُمۡ کَانَ خِطۡاً کَبِیۡرًا

    অর্থঃ অভাব-অনটনের ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। আমিই তাদেরকে রিয্ক দেই এবং তোমাদেরকেও। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ।[26]সুরা বনী-ইসরাঈলঃ ৩১

  20. কুর’আনে অন্যায়ভাবে রক্তপাত করাকে নিষিদ্ধ করেছে।

    ○ وَاِذۡ اَخَذۡنَا مِیۡثَاقَکُمۡ لَا تَسۡفِکُوۡنَ دِمَآءَکُمۡ وَلَا تُخۡرِجُوۡنَ اَنۡفُسَکُمۡ مِّنۡ دِیَارِکُمۡ ثُمَّ اَقۡرَرۡتُمۡ وَاَنۡتُمۡ تَشۡہَدُوۡنَ

    অর্থঃ যখন আমি তোমাদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিলাম যে, তোমরা পরস্পর খুনাখুনি করবে না এবং নিজেদেরকে দেশ থেকে বহিস্কার করবে না, তখন তোমরা তা স্বীকার করেছিলে এবং তোমরাই তা সাক্ষ্য দিচ্ছিলে।[27]সুরা বাকারাঃ ৮৪

  21. যারা পৃথিবীর মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করে তাদের শাস্তি সরাসরি মৃত্যু দন্ড।

    ○ اِنَّمَا جَزٰٓؤُا الَّذِیۡنَ یُحَارِبُوۡنَ اللّٰهَ وَ رَسُوۡلَهٗ وَیَسۡعَوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ فَسَادًا اَنۡ یُّقَتَّلُوۡۤا اَوۡ یُصَلَّبُوۡۤا اَوۡ تُقَطَّعَ اَیۡدِیۡہِمۡ وَاَرۡجُلُہُمۡ مِّنۡ خِلَافٍ اَوۡ یُنۡفَوۡا مِنَ الۡاَرۡضِ ؕ

    অর্থঃ যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং যমীনে ফাসাদ করে বেড়ায়, তাদের আযাব কেবল এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলে চড়ানো হবে কিংবা বিপরীত দিক থেকে তাদের হাত ও পা কেটে ফেলা হবে অথবা তাদেরকে দেশ থেকে বের করে দেয়া হবে।[28]সুরা মায়িদাহঃ ৩৩

  22. যারা পৃথিবীর মধ্যে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও অশান্তি সৃষ্টি করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করে শাস্তি দিতে হবে।

    ○ اِنَّمَا السَّبِیۡلُ عَلَی الَّذِیۡنَ یَظۡلِمُوۡنَ النَّاسَ وَیَبۡغُوۡنَ فِی الۡاَرۡضِ بِغَیۡرِ الۡحَقِّ ؕ اُولٰٓئِکَ لَہُمۡ عَذَابٌ اَلِیۡمٌ

    অর্থঃ শুধু তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবলম্বন করা হবে, যারা মানুষের উপর অত্যাচার চালায় এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করে বেড়ায়। তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।[29]সুরা শূরাঃ ৪২

  23. যারা পৃথিবীর মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকে ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করে তাদের জন্য আছে শুভ পরিণাম।

    ○ تِلۡکَ الدَّارُ الۡاٰخِرَۃُ نَجۡعَلُہَا لِلَّذِیۡنَ لَا یُرِیۡدُوۡنَ عُلُوًّا فِی الۡاَرۡضِ وَلَا فَسَادًا ؕ وَالۡعَاقِبَۃُ لِلۡمُتَّقِیۡنَ

    অর্থঃ এটা আখেরাতের সে আবাস যা আমরা নির্ধারিত করি তাদের জন্য যারা যমীনে উদ্ধত হতে ও বিপর্যয় সৃষ্টি করতে চায় না। আর শুভ পরিণাম মুত্তাকীদের জন্য।[30]সুরা কাসাসঃ ৮৩

  24. যারা পৃথিবীর মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করার মাধ্যমে কাউকে নিপাত করতে চায় মহান আল্লাহ তাকে চরম ভাবে ঘৃণা করে।

    ○ وَاِذَا تَوَلّٰی سَعٰی فِی الۡاَرۡضِ لِیُفۡسِدَ فِیۡہَا وَیُہۡلِکَ الۡحَرۡثَ وَالنَّسۡلَ ؕ وَاللّٰہُ لَا یُحِبُّ الۡفَسَادَ

    অর্থঃ আর যখন সে ফিরে যায়, তখন যমীনে প্রচেষ্টা চালায় তাতে ফাসাদ করতে এবং ধ্বংস করতে শস্য ও প্রাণী। আর আল্লাহ ফাসাদ ভালবাসেন না।।[31]সুরা বাকারাঃ ২০৫

  25. অত্যাচারী বা জালিমকে মহান আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না।

    ○ وَجَزٰٓؤُا سَیِّئَۃٍ سَیِّئَۃٌ مِّثۡلُہَا ۚ فَمَنۡ عَفَا وَاَصۡلَحَ فَاَجۡرُہٗ عَلَی اللّٰہِ ؕ اِنَّہٗ لَا یُحِبُّ الظّٰلِمِیۡنَ

    অর্থঃ আর মন্দের প্রতিফল তো অনুরূপ মন্দই। যে ক্ষমা করে ও আপোষ করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে; নিশ্চয় তিনি অত্যাচারীদেরকে পছন্দ করেন নাই।[32]সুরা শূরাঃ ৪০

  26. যারা ফাসাদ সৃষ্টিকারী তাদের সাথে থাকা উচিত না।

    ○ لَوۡ خَرَجُوۡا فِیۡکُمۡ مَّا زَادُوۡکُمۡ اِلَّا خَبَالًا وَّلَا۠اَوۡضَعُوۡا خِلٰلَکُمۡ یَبۡغُوۡنَکُمُ الۡفِتۡنَۃَ ۚ وَفِیۡکُمۡ

    অর্থঃ যদি তারা তোমাদের সাথে বের হত, তবে তোমাদের মধ্যে ফাসাদই বৃদ্ধি করত এবং তোমাদের মাঝে ছুটোছুটি করত, তোমাদের মধ্যে ফিতনা সৃষ্টির অনুসন্ধানে। [33]সুরা তাওবাহঃ ৪৭

তো দেখুন আমি উপরে ২৬ টি পয়েন্ট দেখিয়ে দিলাম সরাসরি কুর’আন থেকে যার মাধ্যমে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে যে কুর’আন কখনোই উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদ কে সাপোর্ট করে না।

সমাজের উগ্রবাদী কাফেরদের কিছু মিথ্যাচারের জবাব

আসুন এবার আমরা কিছু মিথ্যাচার খণ্ডন করবো ইনশাআল্লাহ। কারণ আমরা সমাজের দিকে তাকালে দেখতে পায় কুর’আন নিয়ে কিছু উগ্রবাদী মানুষের অ্যালার্জি। বিশেষ করে হিন্দু, নাস্তিক ও খ্রিস্টানদের অ্যালার্জি একটু বেশিই। তো আসুন আজ আমরা তাদের অ্যালার্জিতে মলম লাগাই দলিলভিত্তিক সমাধান দেওয়ার মাধ্যমে, ইনশাআল্লাহ।

সুরা তাওবাহ – ৫ নং আয়াত জঙ্গিবাদ প্রচার করে?

জবাবঃ না! সুরা তাওবাহ ৫ নাম্বার আয়াত কখনোই জঙ্গিবাদ শিক্ষা দেয় না বরং এটা শিক্ষা দেয় কি ভাবে উগ্রবাদীদের দমন করতে হবে। কারণ যারা সুরা তাওবাহ ৫ নং আয়াত নিয়ে বাড়াবাড়ি করে তারা এ আয়াতের আগের আয়াতের কথাগুলো জানে না, আরো সাথে জানে না এ আয়াত নাযিলের উদ্দেশ্য। সূরা তাওবা আয়াত ৫ এ বলা হয়েছে,

فَاقۡتُلُوا الۡمُشۡرِکِیۡنَ حَیۡثُ وَجَدۡتُّمُوۡهُمۡ

তোমরা মুশরিকদেরকে যেখানেই পাও হত্যা কর

তো আসুন আজ আমরা সুরা তাওবাহ ৫ নাম্বার আয়াতের সমীক্ষা টানবো তা ছাড়া কেউ বুঝতে পারবেন না, যেমনঃ

  1. মুশরিকরা মুসলিমদের সাথে সন্ধি করেছিলো যার নাম হলো হুদাইবিয়া সন্ধি।[34]আর রাহীকুল মাকতুম, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, অধ্যায় ৩০৭, পৃষ্ঠা ৩৯২
  2. সেই সন্ধিতে চারটি দফা ছিল।[35]আর রাহীকুল মাকতুমঃ অধ্যায় ৩০৭,  পৃষ্ঠা ৩৯২
  3. সেই চারটি দফার মধ্যে দুই নং দফা ছিল শান্তির যে মুশরিকরা মুসলিমদের সঙ্গে ১০ বছর যুদ্ধ করবে না ও মুসলিমরা মুশরিকদের সাথে ১০ বছর যুদ্ধ করবে না।[36]আর রাহীকুল মাকতুমঃ অধ্যায় ৩০৭, পৃষ্ঠা ৩৯২
  4. মুশরিক নেতাদের পক্ষ থেকে সন্ধি করতে এসেছিল ও স্বাক্ষর করেছিলো সুহাইল বিন আমর।[37]আর রাহীকুল মাকতুমঃ অধ্যায় ৩০৭, পৃষ্ঠা ৩৯২
  5. কিন্তু মুশরিক নেতারা ১০ বছর না শেষ হতেই সন্ধি বা চুক্তি ভঙ্গ করেছিলো নিজেদের স্বার্থের জন্য।[38]সুরা তাওবাহঃ ১২ ও ১৩, আর রাহীকুল মাকতুমঃ অধ্যায় ৩২১, পৃষ্ঠা ৩৯৬ ও ৩৯৭, অধ্যায় ৩৮৩,  পৃষ্ঠা ৪৫২ ও ৪৫৩
  6. কিন্তু যে সকল মুশরিকরা এ সন্ধি বা চুক্তি ভঙ্গ করে নাই বা চুক্তি ভঙ্গকারী নেতাদের সাথে যুক্ত ছিল না তাদের কিছু করা হবে না কারণ তারা নির্দোষ।[39]সুরা তাওবাহঃ ৪, তাফসির ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ৬০৭
  7. শুধু মাত্র যে সকল মুশরিক নেতারা সর্বপ্রথম সন্ধি বা চুক্তি ভঙ্গ করেছিলো শুধু মাত্র তাদের শাস্তি দিতে হবে।[40]সুরা তাওবাহঃ ৫ ও ৬
  8. মক্কার মুশরিকরা সর্বপ্রথম চুক্তি ভঙ্গ করেছিলো ও তারাই প্রথম মুহাম্মাদ সাঃ ও তার অনুসারীদের উপর জঘন্য আক্রমণ করেছিলো।[41]সুরা তাওবাহঃ ১২, ১৩ ও ১৪; ইবনে কাছির, খন্ডঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ৬১৫-৬১৮

তো দেখুন আমি উপরে ৮টি পয়েন্ট দাড় করিয়েছি তাতে আমরা দেখতে পাচ্ছি এতে সম্পূর্ণ দোষ মুশরিকদের। কারণ তারাই চুক্তি করেছে, তারাই চুক্তি ভঙ্গ করেছে ও তারাই মুসলিমদের আগে আক্রমণ করেছে কিন্তু মহান আল্লাহ যখন মুসলিমদের বাঁচানো জন্য ও জঙ্গি মুশরিকদের দমন করার জন্য আয়াত নাজিলও করেছে, তাই নাকি দোষের। আসলে কথায় আছে জাতে মাতাল তালে ঠিক। তাও দেখুন মহান আল্লাহ কিন্তু সুস্পষ্ট ভাবে বলেছে একই আয়াতে যে তারা ভুল বুঝতে পেরে তাওবা করে সালাত ও যাকাত আদায় করলে তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে ও ছেড়ে দেওয়া হবে।[42]সুরা তাওবাহঃ ৫ ও ৬ এ প্রসঙ্গে আরো দেখুনঃ

সূরা বাকারা আয়াত ১৯১ তেও বলা হয়েছে যেখানে পাও সেখানে হত্যা কর। কিন্তু এর আগের আয়াতেই বলা হয়েছে,

وَ قَاتِلُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ الَّذِیۡنَ یُقَاتِلُوۡنَکُمۡ وَ لَا تَعۡتَدُوۡا ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا یُحِبُّ الۡمُعۡتَدِیۡنَ

আর তোমরা আল্লাহর রাস্তায় তাদের বিরুদ্ধে লড়াই কর, যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং সীমালঙ্ঘন করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।

এই আয়াতে সুস্পষ্ট করেই বরা হয়েছে যারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের সাথে যুদ্ধ করতে এবং এর পরের আয়াতে তাদেরকেই যেখানে পাবে সেখানে হত্যা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাফেরদেরকে যেখানে পাও হত্যা কর সম্পর্কিত সমস্ত আয়াত দ্বারা সব অমুসলিমকে বুঝানো হয় নি, বরং এই আয়াতে সেই অমুসলিমদের কথা বলা হয়েছে যাদের সাথে যুদ্ধ করা বৈধ, যারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, করছে।[43]আহকাম আল-কুরআন ৪/১৭৭; মাজমু’আল-ফাতাওয়া ১৯/২০

সুরা বাকারা – ২৫৬ নাম্বার আয়াত রহিত হয়ে গিয়েছে?

জুমহুর ওলামার মতে সুরা বাকারাঃ ২৫৬ রহিত হয়নি। মানে “দ্বীন গ্রহণের ব্যাপারে জবরদস্তি নেই” – এ আয়াত কখনোই রহিত হয়নি সেটা আমরা বিখ্যাত বিখ্যাত তাফসির থেকে সুস্পষ্ট ভাবে জানতে পারি ও দেখতে পারি যেমনঃ

  • তাফসিরে তাবারীঃ খন্ডঃ ৫, পৃষ্ঠাঃ ৪২
  • তাফসিরে জালালাইনঃ খন্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ৫৪০
  • তাফসিরে ফাতহুল মাজীদঃ খন্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ২৩১
  • তাফসিরে আবু বকর যাকারিয়াঃ সুরা বাকারাঃ ২৫৬ নং আয়াতের তাফসির দেখুন।

ইমাম তাবারী রহঃ বলেছেন, যারা বলে সুরা বাকারাঃ ২৫৬ রহিত হয়ে গিয়েছে তাদের এ মত পুরোপুরি বাতিল।[44]তাফসিরে তাবারীঃ খন্ডঃ ৫, পৃষ্ঠাঃ ৪৩ আরো পড়ুনঃ

সুরা তাওবাহ – ২৯ নাম্বার আয়াতে জিযিয়া দিতে বলে না দিলে যুদ্ধ করবে তা একধরনের “সন্ত্রাসবাদ ও টেন্ডারবাজি”?

জবাবঃ মোটেও না। কারণ আপনাদের কাছে এসব টেন্ডারবাজি মনে হতে পারে কিন্তু সকলের কাছে না। তো আজ থেকে একটি কাজ করুন তাহলে এখন থেকে আর কোনো প্রকার বাংলাদেশ সরকার কে ট্যাক্স বা কর দিবেন না দেখুন তো সরকার আপনার বাড়ি-ঘড় রাখে নাকি বাজেয়াপ্ত করে। তেমনই মুসলিমদের রাষ্ট্রে থাকতে হলে ট্যাক্স, কর বা জিযিয়া দিতে হবে। আর জিযিয়া টা কেন চালু হলো আর কিসের জন্য সেটাও উগ্রবাদী হিন্দু, নাস্তিক ও খ্রিস্টানরা দেখে না তো আসুন আমরা কিছু তথ্য তুলে ধরিঃ

  1. জিযিয়া মানে হলো রাষ্ট্রীয় ভাবে নির্ধারিত কিছু অর্থ।[45]তাফসিরে ফাতহুল মাজীদঃ খন্ডঃ ১,পৃষ্ঠাঃ ৭৭২
  2. শুধু মাত্র বছরে একবার করে এ জিযিয়া বা ট্যাক্স দিতে হবে।[46]তাফসিরে ফাতহুল মাজীদঃ খন্ডঃ ১,পৃষ্ঠাঃ ৭৭২
  3. জিযিয়া বা ট্যাক্স দেওয়ার কারণে তারা রাষ্ট্রের কাছে নিরাপদ থাকবে ও সকল সুযোগ সুবিধা পাবে। [47]তাফসিরে ফাতহুল মাজীদঃ খন্ডঃ ১,পৃষ্ঠাঃ ৭৭২
  4. জিযিয়া, ট্যাক্স বা কর শুধু মাত্র স্বাধীন পুরুষ ও যোদ্ধাদের দিতে হবে ও তাদের কাছে থেকে নেওয়া হবে।[48]তাফসিরে ফাতহুল মাজীদঃ খন্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ৭৭৩
  5. আর আহলে কিতাবীদের থেকে জিযিয়া নেওয়ার কারণ হলো তারা মুশরিকদের পক্ষ নিয়েছিলো ও বিনা কারণে মুসলিমদের দমন করতে মুশরিকদের সাহায্য করেছিলো।[49]আর রাহীকুল মাকতুমঃ অধ্যায় ১৫০, পৃষ্ঠা ২৪১

তো দেখুন আমি রেফারেন্স ভিত্তিক সমাধান দিয়ে দিলাম যে তারা প্রথম অন্যায় করেছে পরে তাদের উপর ট্যাক্সের বা জিযিয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে এতে দোষী কারা, অবশ্যই আহলে কিতাবরা। আর জিযিয়ার নিয়ম আমি উপরে সুন্দরভাবে তাফসিরের আলোকে উপস্থাপন করেছি আশা করি এর পরে আর কারো কোনো অ্যালার্জি থাকবে না। জিযিয়া করের ব্যাপারে আরেকটি আর্টিকেল পড়ুনঃ

সুরা আহযাব – ৬১ নাম্বার আয়াতে নিকৃষ্ট ভাবে হত্যা করতে বলা কি জঙ্গিবাদ?

জবাবঃ এটা সম্পূর্ণ ১০০% ভেজাল মুক্ত মিথ্যা কথা। কারণ এই আয়াতে বলা মুনাফিকরা তাদের নিজেদের দোষে তারা শাস্তি পাবে এতে জঙ্গিবাদের কি আসলো। যেমন বাংলাদেশে বসবাস করে কেউ যদি সরকারের বিরুদ্ধে জঘন্য ভাবে নোংরা কথা বলে ও সংবিধান লঙ্ঘন করে তাহলে কি রাষ্ট্র তাকে শাস্তি দিলে এটা অন্যায় নাকি হিন্দু ও নাস্তিকদের চোখে। তেমনই সুরা আহযাবঃ ৬১ নাম্বার আয়াতের পিছনেও কিছু কাহিনি আছে যা নাস্তিক ও হিন্দুদের চোখে পরে না। তো আসুন আমরা সে সম্পর্কে কিছু পয়েন্ট দেখবো যেমনঃ

  1. রাসুলুল্লাহ সাঃ যখন মদিনার প্রধান তখন মুনাফিকেরা রাসুলুল্লাহ সাঃ কে গালাগালি করতো ও বিভিন্ন ভাবে কষ্ট দিতো।[50]সুরা আহযাবঃ ৫৭
  2. মুনাফিকেরা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর পুরুষ ও নারী সাহাবিদের নিয়ে জঘন্য নোংরা কথা বলতো ও গালাগালি, মিথ্যা অপবাদ রটনা করতো।[51]সুরা আহযাবঃ ৫৮, ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ১৫, পৃষ্ঠাঃ ৮৩৯
  3. সে সকল অপরাধীদের কুর’আন নামক সংবিধান দিয়ে বার বার সাবধান করার পরেও এ সকল নোংরা কাজ-কর্ম থেকে বিরত থাকতো না তাই তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির আয়াত নাযিল হয়েছে।[52]সুরা আহযাবঃ ৬০ এবং বলা হয়েছে তারা সাবধান না হলে তাদেরকে পাকড়াও করা হবে ও হত্যা করা হবে।[53]সুরা আহযাবঃ ৬০-৬১ ও এই আয়াতের তাফসির সমূহ

তো দেখুন সকল অপরাধ করলো অপরাধীরা কিন্তু বর্তমানের হিন্দু ও নাস্তিকদের চোখে এতোটাই কম পরে যে, তারা কুর’আনের উপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছে যা কিনা সম্পূর্ণ হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই না। কারণ অপরাধ করলে শাস্তি ভোগ করতে হবে এটাই নিয়ম।

সুরা নিসা – ৮৯ নাম্বার আয়াতে যেখানে পাও সেখাই হত্যা করো বরা কি উগ্রপন্থা?

জবাবঃ কখনোই না। এখানে উগ্রবাদীতার কি দেখলেন আমি বুঝলাম না। আমি একজন সাধারণ মানুষ হওয়ার কারণে চানতে মন চায় এ সকল নাস্তিক ও হিন্দুরা কি আসলেই পড়াশোনা করে নাকি খালি কলস বাজে বেশি। দেখুন বাংলাদেশের সাথে যদি বাংলাদেশের কোনো সরকারি পর্যায়ে থাকা লোক যদি বেইমানি করে ও রাষ্ট্রদ্রোহিতা করে তাহলে কি দেশের সরকার কি তাকে ছেড়ে দিবে নাকি ব্রাশ ফায়ার করবে। তেমনই সুরা নিসাঃ ৮৯ নাম্বার আয়াত হচ্ছে কিছু বেইমান ও রাষ্ট্রদ্রোহীদের জন্য আসুন আমরা তা সুন্দরভাবে তুলে ধরিঃ

  1. প্রথম কথা হচ্ছে সুরা নিসাঃ ৮৯ নাম্বার আয়াত হচ্ছে উহুদ যুদ্ধের কাহিনি।[54]ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ২, পৃষ্ঠাঃ ৪২১
  2. উক্ত আয়াতে মুনাফিকদের কথা বলা হয়েছে যারা কিনা যুদ্ধ করার বদলে পালিয়ে গিয়েছিলো।[55]ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ২,পৃষ্ঠাঃ ৪২১, আর রাহীকুল মাকতুমঃ অধ্যায় ২১৪, পৃষ্ঠা ২৯৬
  3. তারা নিজেদের দল কে যুদ্ধের ময়দানে সাহায্য না করে শত্রু দলকে সাহায্য করেছিলো।[56]ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ২, পৃষ্ঠাঃ ৪২২
  4. কিন্তু তারা যে নিজেদের দলের সঙ্গে বেইমানি করেছে ও রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করেছে এর পরেও যদি তারা তাদের ভুল বুঝতে পারে, সন্ধি করে ও হিজরত করে তাহলে তাদের ক্ষমা করা হবে।[57]সুরা নিসাঃ ৯০, ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ২, পৃষ্ঠাঃ ৪২২
  5. তারা সন্ধি করলে তাদের সাথে আর যুদ্ধ করা হবে না।[58]ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ২,পৃষ্ঠাঃ ৪২৩

তো দেখুন ইসলাম কত উদার ও মানবিক। তাদের কত বড় ভুল কিন্তু ইসলাম তাদের ক্ষমার অপশন দিয়েছে। এর পরেও যদি কেউ বলে যে এ আয়াত জঙ্গিবাদ বহন করে তাহলে আমি বলবো তাদের এ সভ্য ও সুস্থ সমাজে থাকার আগে পাবনার মেন্টাল হসপিটালে ভর্তি হওয়া দরকার। আসলে কথা হচ্ছে এদের কোনো পড়াশোনা নেই। জীবনে তাফসির তো দূরের কথা আমার বিশ্বাস এরা কুর’আন টাই পড়ে নাই। এরা মানুষ কে এতো বিভ্রান্ত তথ্য দেয় পড়াশোনা না করে তা অনেক দুঃখের বিষয়।

সুরা তাওবাহ – ১২৩ নাম্বার আয়াতে কাছের বা আশেপাশের শত্রুদের সাথে আগে যুদ্ধ করতে বলে – এখানেও সমস্যা?

জবাবঃ জি। কুর’আন ঠিকই তো বলেছে এতে সমস্যা কোথায় বুঝলাম না। ধরুন বাংলাদেশের সাথে ভারত ও আমেরিকা বাংলাদেশের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত। এখন কি বাংলাদেশের মানুষের উচিত না আগে ভারত কে দমন করা? কারণ ভারত আমার তুলনামূলক কাছে। তার পরে অ্যামেরিকা। তেমনই সুরা তাওবাহঃ ১২৩ নাম্বার আয়াতে সে কথা বলা হয়েছে যে যারা কাছে থেকে শত্রুতা করে ও যুদ্ধের জন্য উসকানি দেয় তাদের আগে দমন করো।[59]ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ৭৭১

সুরা তাওবাহ – ১ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ ও তার নবী আগে চুক্তি ভঙ্গ করেছে?

জবাবঃ আপনাদের এ কথা শুনে শয়তান পর্যন্ত হাসতে শুরু করেছে আর এটা সম্পূর্ণ ডাহা মিথ্যা কথা। মহান আল্লাহ কখনোই আগে চুক্তি ভঙ্গ করে নাই। বরং মুশরিকরা প্রথমে চুক্তি ভঙ্গ করেছিলো ও তারা বার বার মুহাম্মাদ সাঃ ও তার অনুসারীদের উপর আক্রমণ করতে ছিল তখনই মহান আল্লাহ সে সকল মুশরিক নেতাদের সাথে চুক্তি ভঙ্গ করেছে যারা আগে চুক্তি ভঙ্গ করেছিলো ও আগে আক্রমণ করেছিলো। কিন্তু যারা চুক্তি ভঙ্গ করে নাই মহান আল্লাহও তাদের সাথে চুক্তি ভঙ্গ করে নাই যেমনঃ

  1. মুশরিক উগ্রবাদী নেতারা আগে চুক্তি ভঙ্গ করেছিলো।[60]সুরা তাওবাহঃ ১২ ও ১৩, আর রাহীকুল মাকতুমঃ অধ্যায় ৩২১, পৃষ্ঠা ৩৯৬ ও ৩৯৭, অধ্যায় ৩৮৩, পৃষ্ঠা ৪৫২ ও ৪৫৩
  2. মুশরিকরা আগে চুক্তি ভঙ্গ করে আগে আক্রমণ করেছে।[61]সুরা তাওবাহঃ ১২,১৩ ও ১৪; ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ৩,পৃষ্ঠাঃ ৬১৫ – ৬১৮
  3. তারপরে এসে মহান আল্লাহ ও তার রাসুল সাঃ চুক্তি ভঙ্গ করেছে তাও শুধু মাত্র তাদের ক্ষেত্রে যারা চুক্তি ভঙ্গ করেছিলো।[62]সুরা তাওবাহঃ ১
  4. আর যারা চুক্তি করে নাই ও মুশরিক নেতাদের পক্ষ নেয়নি তাদের কে নিরাপদ রাখা হয়েছে।[63]সুরা তাওবাহঃ ৪

এতো রেফারেন্স দেওয়ার পরেও যদি নাস্তিক ও হিন্দুরা না বুঝে তাহলে আর কি করার আছে। আমার তো মনে হয় এদের মাথা তো মাথাই না যেন কম্পিউটার। না আছে এদের পড়াশোনা আর না আছে এদের বুঝার শক্তি জ্ঞান। এদের এটুকুই আছে তাহলো ইসলাম বিদ্বেষ করা ও বিদ্বেষ ছড়ানো।

সূরা আনফাল – আয়াত ১২ তে কুর’আন কাফেরদের গর্দানে আঘাত করতে বলে – এতে সমস্যা?

জবাবঃ এতে কি সমস্যা? আর গর্দানে আঘাত কখন করতে বলেছে সেটা বলেন না কেন। নাকি তিন বেলার খাবারের মধ্যে দুই বেলার খাবার বন্ধ হয়ে যাবে সে ভয়ে সত্য টা বলতে সংকোচ হয়? কুর’আন কি বলেছে যে কোনো মুসলিমের বাড়ির পাশে দিয়ে কাফের হেঁটে গেলে তোমরা সে কাফেরের গর্দানে আঘাত করো? না এ রকম কিছুই বলে নাই। যেমন একটি উদাহরণ বলি তাহলো ভারতের সাথে বাংলাদেশের যুদ্ধ লাগলে আমরা কি যুদ্ধের ময়দানে হাতে চুরি পড়ে দাঁড়িয়ে থাকবো ও তাদের আদর করবো নাকি তাদের কেউ পালটা আঘাত করবো। তেমন সুরা আনফালঃ ১২ নাম্বার আয়াতে যুদ্ধ চলা অবস্থায় যুদ্ধের ময়দানের কথা বলা হচ্ছে যে তারা যেমন তোমাদের আগে আঘাত করেছে তেমনই তোমরাও তাদের ঘাড়ে বা গর্দানে আঘাত করো। কারণ মুসলিমেরা কোনো যুদ্ধেই আগে আঘাত বা হামলা করে নাই সব যুদ্ধে আঘাত হামলার স্বীকার হয়েছে ও আক্রান্ত হয়েছে তার পরে আঘাত করেছে।[64]সুরা বাকারাঃ ১৯০, সুরা বাকারাঃ ১৯১, সুরা বাকারাঃ ১৯৪, সুরা ইমরানঃ ১১১

আসলে আমি নাস্তিক ও হিন্দুদের আমার পক্ষ থেকে একটি ফ্রি উপদেশ দিবো তা হলো একটু পড়াশোনা করুন। পড়াশোনা না করে ইসলামের কোনো বিষয় নিয়ে মিথ্যাচার ও সমালোচনা করা চরম ভাবে লজ্জাজনক ও হাস্যকর।

তো আজ এ পর্যন্তই রাখলাম আগামীতে আরো খণ্ডন আসবে ইনশাআল্লাহ। তবে আমাদের মুসলিম ভাই ও বোনদের কেও বলবো আপনারাও পড়াশোনা করুন। কারণ ইসলাম এমন এক জ্ঞানের সমুদ্র তার গভীরতা বের করা যাবে না। আর বর্তমান সময়ে পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই। তো সবার উপর মহান আল্লাহর শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক এবং মহান আল্লাহ আমাদের সকল প্রকার অন্যায় কাজ থেকে বিরত রেখে ন্যায়বান মানুষ হতে সাহায্য করুক।

আমিন।

    Footnotes

    Footnotes
    1ইসলামের দৃষ্টিতে চরমপন্থা,জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসঃ অধ্যায়ঃ ১, পরিচ্ছেদঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ৪২
    লেখকঃ শাইখ আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম
    2মাসিক আল ফুরকান, আরবী ম্যাগাজিন আর, আই, এইচ, এস কুয়েত। সংখ্যা-৯৭ মে ১৯৯৮, পৃ ৬
    3আল কিত্বাউল খায়রী ওয়া দাওয়াইল ইরহাব, পৃ ১১০
    4এখানে মূলত সালাত আদায়কারী মুসলিম শাসকের কথা বোঝানো হয়েছে, দেখুনঃ মাসিক আত তাহরীক, জানুয়ারি ২০১৩, প্রশ্ন (৩২/১৫২) https://at-tahreek.com/article_details/6953 – প্রবন্ধ সম্পাদক
    5ইসলামের দৃষ্টিতে চরমপন্থা,জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসঃ অধ্যায়ঃ ১, পরিচ্ছেদঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ৪৩, লেখকঃ শাইখ আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালাম
    6islamqa.info 22899
    7সুরা বানী-ইসরাঈলঃ ৩৩, সুরা আনআমঃ ১৫১, সুরা ফুরকানঃ ৬৮
    8সুরা নিসাঃ ২৯; এই আয়াত দ্বারা বহু মুফাস্সিরগণ আত্মহত্য ও অন্য মুসলিম কাউকে হত্যা করা দুটোই বুঝানো হয়ে থাকতে পারে বলে মত দিয়েছেন
    9সুরা মায়িদাহঃ ৩২
    10সুরা ইমরানঃ ১১০
    11সুরা ইমরানঃ ১১৪
    12সুরা ইমরানঃ ১০৪
    13সুরা মায়িদাহঃ ৮, সুরা নিসাঃ ১৩৫, সুরা নাহলঃ ৯০
    14সুরা বাকারাঃ ১৯১, সুরা বাকারাঃ ২১৭
    15সুরা বাকারাঃ ১৯৩, সুরা আনফালঃ ৩৯
    16তাফসিরে জাকারিয়া, তাফসিরে মারেফুল কুরআন, তাফসির ইবনে কাসির, সূরা আনফাল আয়াত ২৯ এর তাফসির; আল-মাওসুয়াতুল ফিকহিয়াতুল কুয়েতিয়াহ ৪২/১৯৮; আল-বাহরুর রাইক ৫/৮৪; ফাতহুল উদুদ ৩/১২২; আল-মুগনী ১৩/১৭৫-১৮০
    17সুরা বাকারাঃ ৬০, সুরা আরাফঃ ৭৪, সুরা হুদঃ ৮৫, সুরা শুআরাঃ ১৮৩
    18সুরা আরাফঃ ৫৬, সুরা আরাফঃ ৮৫
    19সুরা হুদঃ ১১৬
    20সুরা মায়িদাহঃ ৬৪, সুরা বাকারাঃ ২০৫
    21সুরা আরাফঃ ১৪২
    22সুরা রাদঃ ২৫
    23সুরা নাহলঃ ৮৮
    24সুরা নমলঃ ১৪, সুরা আরাফঃ ৮৬ ও ১০৩, সুরা মুহাম্মাদঃ ১০, সুরা মুমিনঃ ২১ ও ৮২, সুরা ফাতিরঃ ৪৪
    25সুরা ছোয়াদঃ ২৮
    26সুরা বনী-ইসরাঈলঃ ৩১
    27সুরা বাকারাঃ ৮৪
    28সুরা মায়িদাহঃ ৩৩
    29সুরা শূরাঃ ৪২
    30সুরা কাসাসঃ ৮৩
    31সুরা বাকারাঃ ২০৫
    32সুরা শূরাঃ ৪০
    33সুরা তাওবাহঃ ৪৭
    34আর রাহীকুল মাকতুম, তাওহীদ পাবলিকেশন্স, অধ্যায় ৩০৭, পৃষ্ঠা ৩৯২
    35আর রাহীকুল মাকতুমঃ অধ্যায় ৩০৭,  পৃষ্ঠা ৩৯২
    36, 37আর রাহীকুল মাকতুমঃ অধ্যায় ৩০৭, পৃষ্ঠা ৩৯২
    38সুরা তাওবাহঃ ১২ ও ১৩, আর রাহীকুল মাকতুমঃ অধ্যায় ৩২১, পৃষ্ঠা ৩৯৬ ও ৩৯৭, অধ্যায় ৩৮৩,  পৃষ্ঠা ৪৫২ ও ৪৫৩
    39সুরা তাওবাহঃ ৪, তাফসির ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ৬০৭
    40, 42সুরা তাওবাহঃ ৫ ও ৬
    41সুরা তাওবাহঃ ১২, ১৩ ও ১৪; ইবনে কাছির, খন্ডঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ৬১৫-৬১৮
    43আহকাম আল-কুরআন ৪/১৭৭; মাজমু’আল-ফাতাওয়া ১৯/২০
    44তাফসিরে তাবারীঃ খন্ডঃ ৫, পৃষ্ঠাঃ ৪৩
    45, 46, 47তাফসিরে ফাতহুল মাজীদঃ খন্ডঃ ১,পৃষ্ঠাঃ ৭৭২
    48তাফসিরে ফাতহুল মাজীদঃ খন্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ৭৭৩
    49আর রাহীকুল মাকতুমঃ অধ্যায় ১৫০, পৃষ্ঠা ২৪১
    50সুরা আহযাবঃ ৫৭
    51সুরা আহযাবঃ ৫৮, ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ১৫, পৃষ্ঠাঃ ৮৩৯
    52সুরা আহযাবঃ ৬০
    53সুরা আহযাবঃ ৬০-৬১ ও এই আয়াতের তাফসির সমূহ
    54ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ২, পৃষ্ঠাঃ ৪২১
    55ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ২,পৃষ্ঠাঃ ৪২১, আর রাহীকুল মাকতুমঃ অধ্যায় ২১৪, পৃষ্ঠা ২৯৬
    56ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ২, পৃষ্ঠাঃ ৪২২
    57সুরা নিসাঃ ৯০, ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ২, পৃষ্ঠাঃ ৪২২
    58ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ২,পৃষ্ঠাঃ ৪২৩
    59ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ৭৭১
    60সুরা তাওবাহঃ ১২ ও ১৩, আর রাহীকুল মাকতুমঃ অধ্যায় ৩২১, পৃষ্ঠা ৩৯৬ ও ৩৯৭, অধ্যায় ৩৮৩, পৃষ্ঠা ৪৫২ ও ৪৫৩
    61সুরা তাওবাহঃ ১২,১৩ ও ১৪; ইবনে কাছিরঃ খন্ডঃ ৩,পৃষ্ঠাঃ ৬১৫ – ৬১৮
    62সুরা তাওবাহঃ ১
    63সুরা তাওবাহঃ ৪
    64সুরা বাকারাঃ ১৯০, সুরা বাকারাঃ ১৯১, সুরা বাকারাঃ ১৯৪, সুরা ইমরানঃ ১১১
    Show More
    0 0 votes
    Article Rating
    Subscribe
    Notify of
    guest
    0 Comments
    Inline Feedbacks
    View all comments
    Back to top button