ইসলামইসলামবিরোধীদের প্রতি জবাব

উটের মূত্র নিয়ে করা সমস্ত অভিযোগের পোস্টমর্টেম

উটের মূত্র খাওয়া কি জায়েজ?

উটের মূত্র একটি মহাবিতর্কের নাম। অনেক আগ থেকেই মুসলিম-অমুসলিম সবার মধ্যে এটা নিয়ে বিতর্ক চলে আসছে। কিছু মানুষ উটের মূত্র খাওয়া জায়েজ, উটের মূত্র খাওয়া সুন্নত বলে হাসিঠাট্টা ও অভিযোগ করে আসছে। এই আর্টিক্যালটি সম্পূর্ণ পড়লে আমি এতুটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারব যে, আপনি যদি আসলেই সত্য জানতে এসে থাকেন তাহলে উটের মূত্র নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ ও মিথ্যাচারগুলোর বাস্তবতা এবং সন্তুষ্টমূলক উত্তর পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।

উটের মূত্র যাকে, যখন এবং যে কারণে খেতে বলা হয়েছিল

প্রথমেই বলে রাখা ভাল যে ইসলামে সকল প্রকার অপবিত্র জিনিস হারাম। আমাদের নবি ﷺ কয়েকজনকে উটের মুত্র পান করতে বলেছিলেন কিন্তু এর পিছনেও অনেক বড় কারণ আছে। কিন্তু অনেক ভণ্ড ইসলামবিদ্বেষীরা সেই কারনটাকে ইগনোর বা না দেখার ভান করে হাদিসটা প্রচার করে। আসলে হাদিসটা হল –

আনাস (রা) হতে বর্ণিত যে, “উকল/উরায়না” গোত্রের কিছু মানুষের একটি দল রসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট আসলো। তারা রসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে ইসলামের উপর বাই’আত করল। অতঃপর মদীনার আবহাওয়া তাদের প্রতিকূল হওয়ায় তাদের কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পরে, অন্য বর্ণনায় এসেছে তাদের পেটে ব্যথা শুরু হয়, পেট ফেঁপে উঠে ও তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কাঁপতে থাকে। এ ব্যাপারে তারা রসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট অভিযোগ করল। নবি ﷺ বললেনঃ তোমরা কি আমাদের রাখালের সাথে গমন করে উটের মূত্র এবং দুগ্ধ পান করতে পারবে? তখন তারা বলল, জী- হ্যাঁ, অন্য বর্ণায় এসেছে তারা নিজেরাই অনুরোধ করেছিল। এরপর তারা বের হয়ে গেলে এবং এর (উটের) মূত্র ও দুগ্ধ পান করল। এতে তারা সুস্থ হয়ে গেল অতঃপর তারা রাখালকে হত্যা করে উটগুলো হাঁকিয়ে নিয়ে গেলে। এ সংবাদ রসূলুল্লাহ ﷺ এর নিকট পৌছল। তিনি তাদের পিছনে লোক পাঠালেন। তারা তাদেরকে পাকড়াও করে নিয়ে এল। তাদের প্রতি শাস্তির নির্দেশ জারি করা হল। …[1]সহিহ বুখারি ১৫০১, ৩০১৮, ৫৬৮৫-৬, ৬৮০২-৪, ৬৮৯৯; সহিহ মুসলিম ১৬৭১, ৫৭২৭; সুনানে নাসায়ী ৩০৬, ৪০২৪-৩২; ইবনু মাজাহ ৩৫০৩, ২৫৭৮; তিরমিজি ৭২, ১৮৪৫, ২০৪২; আল মুসনাদুল জামে … See Full Note

হাদিস থেকেই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে, লোকগুলো অসুস্থ হয়ে গিয়েছিল তাই মহানবি ﷺ তাদেরকে উটের মুত্র ও দুধ ওষুধ হিসেবে খেতে বলেছিলেন।[2]আরদাহ আল-আহওয়াদী ৮/১৯৭; আল মুহাল্লা ১/১৭৫; ইসলামওয়েব ফতোয়া নং ৮৫৯৪৪; শারহুল উমাদাত, উসামা সুলেমান অনুচ্ছেদ ৬৫, পৃ. ২৪ এছাড়া অন্য হাদিসে দেখা যায় যে কিছু মুসলিম উটের মূত্র চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার করতেন।[3]সহিহুল বুখারী ৫৭৮১ কিন্তু একটা বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি যে, এখানে শুধু উটের মুত্র পান করতে বলা হয়নি বরং উটের মূত্র ও দুধ মিক্স করে তারপর সেই মুনাফিকদেরকে খেতে বলেছিলেন রাসূল ﷺ। বর্তমানেও যে স্কলারগণ উটের মূত্র খাওয়াকে জায়েজ বলেছে ঔষধ হিসাবে তারাও সরাসরি উটের মূত্র খেতে বলেন নি, বরং উটের দুধ ও মূত্র মিক্স করে খেতে বলেছে হাদিসের মত করে।

এমন ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ কেন দিয়েছিলেন মহানবি সেটা আরো বিস্তারিত ব্যাখ্যায় আলেমরা বলেছেন, রাসূল ﷺ অন্য সাধারণ মানুষদের মত ছিলেন না, তিনি ওহির মাধ্যমে জানতে পেরেছিলেন যে লোকগুলোর অসুস্থতার নিরাময় শুধু উটের দুধ ও মূত্রেই রয়েছে, আর কোন কিছুর মধ্যে নেই। আবার অনেক আলেম এটাও বলেছেন যে, মহানবি হয়ত ওহির মাধ্যমে এটাও জানতে পেরেছিলেন যে তারা মুনাফিক, তাই তিনি তাদেরকে তা খেতে বলেছিলেন। কারণ মুনাফিকরা বাস্তবে মুসলিম না, যার কারণে তাদের জন্য হালাল ও হারাম তেমন মেটার করে না।[4]উমদাত আল- কারি ৩/৩৩-৩৪; আল-হিদায়া ১/১০২; ইমাম নববী, শরহে মুসলিম ৩/৯১৫; দারুল ইফতা: জামিয়া উলূম ইসলামিয়া আল্লামা মুহাম্মদ ইউসুফ বানুরী টাউন, ফতোয়া নং: … See Full Note

আবার অনেকে হাদিসের কিছু বর্ণনা থেকে ধারণা করেন যে সেই মুনাফিকদের অনুরোধের কারণেই মহানবি ﷺ তাদেরকে উটের দুধের সাথে মূত্রও পান করার অনুমতি দিয়েছিলেন। কারণ তাদের মধ্যে আগ থেকে প্রচলন ছিলে উটের মূত্র ও দুধ একসাথে করে খাওয়ার।[5]ইবনে মনজুর: লিসান আল আরব ৬/৪৩০১; আল-জুবাইদি: ক্রাউন অফ দ্য ব্রাইড ৯/৭০ – মাওম; আওন আল-বারি ১/৪৩৪; ইমাম নববী, শরহে মুসলিম খণ্ড ৬ হাদিস ২৬০১; সহিহ বুখারী ১৫০১, … See Full Note

যাইহোক এই হাদিসটা ছাড়া আর কোন সহিহ বা হাসান হাদিস নেই যেখান থেকে কেউ প্রমাণ দেখাতে পারবে উটের মুত্র খাওয়া ইসলামে জায়েজ। অবশ্যই হাদিসটিতে যাদেরকে উটের মূত্র খেতে বলা হয়েছিল তারা কোন মুসলিম ছিল না বরং তারা মুনাফিক ছিল, কারণ উটের দুধ ও মুত্র খেয়ে সুস্থ হওয়ার পর তারা মহানবির সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করে ধর্মত্যাগ করেছিল, সাহাবি রাখালকে হত্যা করেছিল ও উট গুলো চুরি করেছিল। তাই সেই মুনাফিকদেরকে হত্যা করার শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। এই বিষয়ে আবূ কিলাবা (রহ) বলেন, “এরা চুরি করেছিল, হত্যা করেছিল, ঈমান আনার পর কুফরি করেছিল এবং আল্লাহ্ ও তার রাসূল ﷺ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল।”[6]বুখারি ২৩৩, ৬৮৯৯; মুসলিম ১৬৭১; উটের দুধ ও মূত্র পান করার হাদিসটির সম্পূর্ণ বর্ণনা দেখলেই প্রমাণ পেয়ে যাবেন অর্থাৎ কাদেরকে উটের মুত্র পান করতে বলা হয়েছিল? উত্তর – একজন সাহাবির হত্যাকারী, চোর বা ডাকাত, বিশ্বাসঘাতক, ইসলাম ত্যাগকারী, মহানবি ﷺ এর অবমাননাকারী, অপরাধ করে পলায়নকারী।

ইসলাম বিদ্বেষীরা ইসলামকে ক্রিটিসাইজ করে আরো বলে থাকে যে ইসলামে উটের মুত্র পান করা সুন্নত। কিন্তু বাস্তবে ইসলাম সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান না থাকার কারণেই হয়ত তারা এমন মন্তব্য করে কিংবা তাদের আসলেই মনোরোগগত সমস্যা আছে। কারণ কোন কিছুকে মহানবি ﷺ এর সুন্নত বলতে গেলে আগে অবশ্যই মহানবি সেটা এক বা একাধিকবার করেছেন অথবা তিনি নিজের সাহাবিদেরকে করতে বলেছেন এমন সহিহ হাদিস থাকতে হবে। আবার কোন কিছুকে সাহাবিদের সুন্নত বলতে গেলেও একই রকম প্রমাণ থাকতে হবে যে সাহাবিরা সেটা করেছে বা অন্যদেরকে করতে বলেছেন।

অথচ মহানবি ﷺ নিজের পুরো জীবন দশাতে কখনো উটের মূত্র পান করেন নি, নিজের কোন সাহাবিকে উটের মূত্র পান করতে বলেন নি, কোন সাহাবিও উটের মূত্র পান করেছেন বা পান করার উপদেশ দিয়েছে এমন সহিহ বর্ণনা পাওয়া যায় না। তাবেঈদের থেকেও এমন কোন সহিহ বর্ণনা পাওয়া যায় না। আমাদের নবি বা সাহাবি বা তাবেঈ বা তাবে তাবেঈনদের কেউ অযথা কোন কারণ ছাড়া উটের মূত্র পান করেছেন এমন কোন সহিহ বা হাসান হাদিস পাওয়া যায় না। এই থেকেই বুঝা যাচ্ছে যে যারা বলে ইসলামে উটের মূত্র পান করা সুন্নত তাদের এই মন্তব্যটা আসলে তাদের জ্ঞানহীনতা ও অজ্ঞতার পরিচয় ছাড়া কিছুই না।

অবশ্যই একটি হাদিস আছে যেখানে বলা হয়েছে উটের মূত্রে ও দুধে অনেক বেশি উপকারিতা রয়েছে, অনেক রোগের নিরাময় এগুলা। কিন্তু মুহাদ্দিসগণ বলেছেন এই হাদিসটা অনেক বেশি দুর্বল অর্থাৎ যয়িফের শেষ স্তরে এটার অবস্থান।[7]আল-তাবারানী ৩/১৮৫; সিলসিলাহ আল-দাইফাহ ওয়া আল-মাউদু ৩/৫৯৫ আরেকটা হাদিস আছে যেখানে বলা হয়েছে উটের, গরুর, ছাগলের, ভেড়ার মুত্র পান করাও জায়েজ। অবশ্যই মুহাদ্দিসদের মতে এই হাদিসটাও অতিরিক্ত দ্বইফ।[8]আল-ওয়াসাইল ২/১০১২ হাদিস ১৫; আল-বাহরানী, আল-হাদায়েক ১৮/৭৬; আল-ওয়াসাইল ২৫/১১৩; আল-কাফি ২/৩৩৮, আল-তাহদীব ১/২৮৪; আল-ওয়াফি ২০/৬৮৭ এছাড়া এরকম বেশ কিছু হাদিস শিয়াদের থেকে পাওয়া যায়, আর শিয়াদের সংকলন করা হাদিসগুলো নিয়ে আশা করি বিস্তারিত বলার প্রয়োজন নেই, কারণ কম বেশি সবাই জানে তাদের হাদিসগুলো কতটা গ্রহণযোগ্য।

উটের মূত্রকে কেন্দ্র করে বিশেষ করে হিন্দুরা লাফালাফি করে বেশি। উপরের আলোচনায়ত আশা করি বেশ কিছু জিনিস পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। এখনোত আরো কিছু অভিযোগের জবাব দেওয়া বাকি আছে। সেগুলার আগে হিন্দুদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলি। হিন্দুদের ধর্মে গরুর মল ও মূত্রকে নিয়ে অনেক কিছুই লিখা আছে, সেগুলা আপাতত উল্লেখ করছি না কারণ সেসব সম্পর্কে কম বেশি সবাই জানে। যাইহোক কিন্তু ইসলামের উটের মূত্র নিয়ে এসব কিছু বলা হয় নি, কোরআন বা হাদিসে আল্লাহ বা মহানবি বলেন নি যে, সবাই উটের মলমূত্র খাও, উটের মূত্র পবিত্র, উটের মলমূত্র খেলে পুণ্য হবে, উটের মলমূত্র খেলে পাপ দূর হবে, উটের মলমূত্র দিয়ে গোসল কর, উটের মলমূত্র দিয়ে নিজেকে ও পরিবেশকে পবিত্র কর, উটের মল-মূত্রের অনেক উপকারিতা আছে, উট আমাদের মা, উট আমাদের বাবা, উটকে হত্যা করা যাবে না, উটকে পূজা কর, উট দেবী ও দেবতা, উট মানুষের উপকার করতে পারে, উটের আশীর্বাদ নাও, উট আল্লাহর বাহন ইত্যাদি। এমন একটা কথাও কোরআনে বা সহিহ হাদিসে নেই। কিন্তু অপর দিকে ঠিক একই ধরনের কথাগুলো হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায় গরুর ক্ষেত্রে। তাই উটের মূত্রকে নিয়ে লাফালাফি একেবারেই পাগলামি ছাড়া কিছু না।

এই ধরনের ঔষধ কখন ব্যবহার করা যাবে

বিখ্যাত হানাফি ফকিহ আল্লামা বদরুদ্দিন আল আইনি (রহ) উটের মূত্র এবং দুগ্ধ পান করার হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন,

“হারাম জিনিস দিয়ে চিকিৎসা তখনই হালাল হবে যখন তার মধ্যে আরোগ্য আছে এটা জানা যাবে এবং অন্য ঔষধ থাকবে না। এটি সেই অবস্থার মত, যখন খাবারের এবং পানির অভাবে মৃত্যু সময় যথাক্রমে হারাম মাংস হালাল এবং মদ পান করা হালাল হয়ে যায়।”[9]উমদাতুল কারী, ২/৬৪৯, ৩/৩৪

ইমাম ইমাম তাহাবী (রহ) বলেন,

“উটের প্রস্রাব পান করার জন্য নবির অনুমতি ছিল চিকিৎসার প্রয়োজনে। এ থেকে প্রমাণিত হয় না যে, প্রয়োজন ছাড়া এটা জায়েয।” [10]শারহে আল-মাআনী আল-আসার আত ত্বহাবীঃ ১/১০৮-১০

ইবনে হাযম (রহ) বলেন,

“আল্লাহর রসূল ﷺ অরিনা গোত্রের লোকদের জন্য উটের প্রস্রাব ও দুধের অনুমতি দিয়েছেন অসুস্থতার চিকিৎসা হিসাবে এবং এটা চিকিৎসায় প্রয়োজনের বিকল্প। যখন আমরা কোন হারাম জিনিস ব্যবহার করতে বাধ্য হই, তখন তা আমাদের জন্য আর হারাম থাকবে না, বরং হালাল হয়ে যাবে এবং আরোগ্য হয়ে যাবে।”[11]আল মুহাল্লা ১/১৭৪, ১৭৫ 

আল শাওকানী (রহ) বলেন,

“হারাম দিয়ে চিকিৎসা করা জায়েজ নেই কিন্তু বাধ্য ও নিরুপায় হয়ে গেলে ভিন্ন কথা। তেমনই প্রয়োজনের বিবেচনায় উটের প্রস্রাব দিয়ে চিকিৎসা করার অনুমতি আছে, যদিও তা হারাম।”[12]মাজমা আল-যাওয়াইদ ৫/৮৮; মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক ৯/২৫৯; ফাতহুল বারি ১০/১৪৩, নীল আল আওতার ১/৬১, ৯/৯৪; আল মুজামুল কবির ১২/২৩৮

বুখারির বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার ইবনে হাজার আসকালানী (রহ) উটের মূত্র পানের হাদিসের ব্যাখ্যায় লিখেছেন,

“এরকম ঔষধের ব্যবহার শুধু মাত্র তখনই হালাল হবে যখন অন্য কোন চিকিৎসা থাকবে না।[13]ফাতহুল বারি ১/৪৪১

ইমাম নববী (রহ) উটের প্রস্রাব ব্যবহার করে ওষুধ দেওয়ার জন্য কয়েকটি শর্ত বেঁধে দেন, শর্তগুলো হল,

(১) তাকে অবশ্যই মেডিসিনে দক্ষ হতে হবে (২) মুসলিম চিকিৎসক যদি অদক্ষ হয় তাহলে একজন দক্ষ অমুসলিম চিকিৎসা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী হতে হবে।[14]ইমাম নববি, মাজমু আল ফাতাওয়া ৯/৫০, ৫১

সাম্প্রতিক সময়ের একজন বিখ্যাত আলেম শায়েখ উসাইমিন (রহ) লিখেছেন,

“কারণ প্রতিটি অপবিত্র হারাম কিন্তু সব হারাম অপবিত্র নয়।…

আমরা প্রশ্ন করি, “আপনি কী বলেন উটের মূত্র পান করা সম্বন্ধে? তারা বলে যে শুধু মাত্র ওষুধ ব্যতীত এটি পান করা জায়েজ নয়, অন্যথায় এটি নিষিদ্ধ এবং উটের প্রস্রাব পবিত্র নাকি অপবিত্র?”

(তিনি উত্তর দেন) কফ পবিত্র, প্রয়োজন ছাড়া এটি খাওয়া নিষিদ্ধ। তবুও আপনি একে অপবিত্র বলছেন না, আপনি বলছেন এটি হালাল এবং অন্যরাও বলে যে বলেছে যে এটি গিলে ফেলা রোজাদার এবং অন্যদের জন্য নিষিদ্ধ কারণ কেননা কফ ঘৃণিত জিনিস, হতে পারে কফের মধ্যে এমন কিছু রোগ রয়েছে যা শরীর থেকে নিঃসরিত হয়েছিল এবং তবুও তারা বলে যে এটি পবিত্র এবং অপবিত্র নয়, তাই (পবিত্র হওয়া সত্ত্বেও) এটি (কফ গিলে ফেলা) অবৈধ বলে প্রমাণিত হয়।

যুক্তি যদি প্রমাণিত হয় যে অনুমানটি অবৈধ এবং যুক্তিটি অবৈধ, তবে সমস্যাটি প্রমাণ বা যুক্তি ছাড়াই রয়ে গেছে, তাই আমরা মূলটিতে ফিরে আসি, যা হল জিনিসগুলির উত্স বিশুদ্ধতা যতক্ষণ না অপবিত্রতার প্রমাণ পাওয়া যায় এবং নিষেধের জন্য অপবিত্রতার প্রয়োজন হয় না[15]কিতাব তালিকাত ইবনে উসাইমিন আলাল কাফি লি ইবনে কুদামা ১/২৪৭

[এই কথা বলার পর ইবনে উসাইমিন (রহ) আরো দলিল ও যুক্তি পেশ করে প্রমাণ করেন যে পবিত্র হলেই যে কোন কিছু জায়েজ হয়ে যায় না। পবিত্র হওয়ার পরও অনেক কিছু হারাম, এর মাধ্যমে তিনি উটের মূত্র যে পবিত্র হলেও সাধারণ ভাবে খাওয়া জায়েজ নেই সেটাকেও ইঙ্গিত করেছেন]

ইমাম আবু দাউদ (রহ) বলেন,

আমি ইমাম আহমেদকে বলতে শুনেছি, তাকে উটের মূত্র পান করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল? তিনি বললেন, “হে যাদের অসুখ-বিসুখ রয়েছে, কিন্তু একজন সুস্থ মানুষের জন্য উটের মূত্র পান করা আমি পছন্দ করি না।[16]কিতাব মাসায়েল ইমাম আহমেদ রিওয়ায়েত আবি দাউদ আল সিজস্তানি, পৃ. ৩৪৯, হাদিস ১৬৬৮

ইসলামে হানাফি ও শাফেঈ ফিকহ অনুসারে সব প্রাণীর মলমূত্র নাপাক, অপবিত্র ও হারাম। হানাফি ও শাফেঈ ওলামাগণ বলেছেন উটের প্রস্রাব শুধু মাত্র ঐ সময়ের হালাল হবে যখন নিরুপায় হয়ে পড়ে কোন গুরুতর রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হবে ও ঔষধ তৈরিতে ব্যবহার হবে।[17]আল-মাবসুত ১/৫৩; আল-হাওইয়ুল কাবির ২/২৪৮; ফাতহুল বারি ১/৪৪১; উমদাত আল-কারী শরহ সহিহ আল-বুখারী ৩/৩৩, ৩৪, ১৫৪; নাতাইজ আল আফকার ৮/৮১; দারুল উলুম দেওবন্দ (উর্দূ), … See Full Note

আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ) সাধারণ ভাবে ছাড় দিয়ে ওষুধ হিসেবেই খাওয়ার কথা বলেছেন, কিন্তু নিরুপায় হওয়ার, বা গুরুতর কোন অসুস্থতা হলেই খাওয়া যাবে এই জাতীয় শর্ত আরোপ করেন নি, হয়ত তিনি সাধারণ ভাবে যে কোন রোগের ওষুধ হিসেবে খাওয়ার ব্যাপারেই ছাড় দিয়েছে।[18]কিতাবুল জামেউল উলুম আল ইমাম আহমেদ, ১৩/২৮০ হানাফি, শাফেঈ মাযহাবের সাথে ইমাম আহমদের এই ক্ষেত্রেই পার্থক্যটা শুধু দেখা যায়। এছাড়া তিনি সাধারণ ভাবে যে কোন সময়, কোন কারণ ছাড়া, এমনিতেই সুস্থ মানুষের জন্য উটের মূত্র খাওয়া জায়েজ, এই জাতীয় কিছু বলেছেন এমন কোন ধরনের বর্ণনা আমরা খুঁজে পাইনি, বরং এর বিপরীতটা খুঁজে পেয়েছি যা উল্লেখও করা হয়েছে উপরে।

যদিও হাম্বলি মাযহাবে সাধারণ ভাবে উটের মূত্র খাওয়া জায়েজ ফতুয়া রয়েছে, কিন্তু হাম্বলি মাযহাবের স্কলারদের মধ্যে, অনেক বড় একটা দল সাধারণ ভাবে সুস্থ ব্যক্তির জন্য উটের মুত্র খাওয়াকে মাকরুহ সাব্যস্ত করেছেন। একদল উটের মূত্রকে সাধারণ ভাবে খাওয়াকে অপছন্দ করেছেন, আবার অনেকে সরাসরি বলেছেন সাধারণ ভাবে প্রয়োজন ছাড়া উটের মূত্র খাওয়া জায়েজ নেই, যদিও তা পবিত্র।[19]কিতাবুল জামেউল উলুম আল ইমাম আহমেদ, ১৩/২৮০; কিতাবুল তালিকাত আল কাবিরাত – আবু ইয়ালা – মিন আল সালাত লিল জানাইজ, ২/১১; কিতাব তালিকাত ইবনে উসাইমিন আলাল কাফি … See Full Note

ঔষধ হিসেবেও ব্যবহারের অনুমতি কেন রয়েছে?

সাধারণত কোন মাযহাবেই হারাম ও অপবিত্র জিনিস দিয়ে চিকিৎসা করা জায়েজ নেই। কিন্তু হালাল প্রতিষেধক না পেয়ে বাধ্য ও নিরুপায় হয়ে পরলে তাহলেই সেগুলা জায়েজ হবে। মালেকি মাযহাব অনুযায়ী[20]আল-মাওসুআহ আল-ফিকহিয়্যাহ ১১/১১৯, হানাফি মাযহাব অনুযায়ী[21]উমদাতুল কারী, ২/৬৪৯, ৩/৩৪; রাদ্দ আল-মুহতার ৪/২১৫, শাফেঈ মাযহাব অনুযায়ী[22]আওনুল মা‘বূদ ৭/৩৮৬৬; ফাতহুল বারি ১/৪৪১ এছাড়া অন্য আরো আলেমদের মত অনুসারে[23]আল-মাজমু ‘শরহুল-মুহাযহাব আন-নাওয়াবী, ৪/৩৩০, ৯/৫০-৫৪; নিল আল আওতার ১/৪৯-৫০; মুহাম্মদ শামস আল-হক, আউন আল-মাবুদ ১০/৩৫২; মুগনি আল-মুহতাজ ১/৩০৭, ৪/১৮৮; আল-মুহাল্লা … See Full Note হারাম অপবিত্র জিনিসের মধ্যে মদ জাতীয় জিনিস ছাড়া বাদবাকি অন্য অপবিত্র ও হারাম জিনিস দিয়ে চিকিৎসা করা যাবে, কিন্তু শর্ত হল বাধ্য ও নিরুপায় হয়ে গেলে। ইসলামের একটা নীতি হল তীব্র প্রয়োজন হারামকে হালাল করে দেয়।[24]কাওয়ায়েদুল ফিক্বহ, কায়দা ১৭০ এমন ফতোয়ার দেওয়া হয়েছে কোরআনের আয়াত ও হাদিসে কিছু দলিলের উপর ভিত্তি করে, বিস্তারিত দলিল –

কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, “যে কেউ অবাধ্য না হয়ে এবং সীমালঙ্ঘন না করে নিরুপায় হয়ে তা (হারাম খাদ্য) গ্রহণে বাধ্য হয়েছে, তবে নিশ্চয় আপনার রব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”[25]আন‘আম আয়াত ১৪৫ কোরআনে আরেক স্থানে বলা হয়েছে, “অতঃপর কেউ পাপের দিকে না ঝুঁকে ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হলে (হারাম খাদ্য গ্রহণে) তবে নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”[26]সূরা মায়েদা আয়াত ৩ একই ধরনের কথা কোরআনে আরো কয়েক স্থানে রয়েছে।[27]সূরা বাকারাহ আয়াত ১৭৩, আন‘আম আয়াত ১১৯

মাসরূক (রা) থেকে বর্ণিত: যে ব্যক্তি রক্ত, শুকরের গোশত খাওয়ার উপর নিরুপায় হয়ে যায়, অতঃপর তা না খেয়ে মারা যায়, তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।[28]আল-বায়হাকি, আল-সুনান আল-কুবরা ১৪৩৮২

সাধারণত পুরুষের জন্য রেশমি পোষাক পরিধান করা হারাম, নারীদের জন্য হালাল।[29]সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৪০৫৭; মুসনাদে আহমাদ-১/৯৬; সুনানে ইবনে মাজা, হাদিস ৩৫৯৫; জামে তিরমিযী; হাদিস ১৭২০; মুসনাদে আহমাদ-৪/৩৪৯, ৪০৭; সুনানে নাসায়ী-৮/১৬০; শারহু … See Full Note কিন্তু আমরা এও দেখতে পাই যে, সহিহ হাদিসে হযরত আনাস (রা) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ ﷺ হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আওফ এবং হযরত যুবাইর বিন আওয়াম’ (রা)-কে তাঁদের উভয়ের (এক প্রকার) খোঁচ-পাঁচড়া (জাতীয় চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়া)র কারণে রেশমি কামিছ পরিধান করার অনুমতি দিয়েছিলেন।[30]সহিহ বুখারী, হাদিস ২৯১৯; সহিহ মুসলীম, হাদিস ২০৭৬; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৪০৫৬; সুনানে ইবনে মাজা, হাদিস ৩০৯২; সুনানে তিরমিযী, হাদিস ১৭২২; সুনানে নাসায়ী-৮/২০২

সাধারণত পুরুষদের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার হারাম।[31]সহিহ বুখারী, ৫৮৬৪; সহিহ মুসলিম, ২০৯০; মুসনাদে আহমাদ, ৬৯৪৭, ২২২৪৮; নানে নাসায়ী, ৫১৮৮ কিন্তু আরফাজা ইবনু আসআদ (রা) এর নাক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াতে উনাকে স্বর্ণের নাক ও আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে উবাই (রা) এর একটি দাঁত ভেঙ্গে যাওয়ায় তাকে স্বর্ণের দাঁত ব্যবহার করতে বলেছিলেন মহানবি ﷺ।[32]সুনান আত তিরমিজী ১৭৭০; মুসনাদে বাযযার, মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদিস: ৮৭১৩

উমর (রা) এর জামানায় এক নারী যিনা করেছিল, প্রথমে তাকে শাস্তির রায় দেওয়া হয়েছিল কিন্তু আলি (রা) এর কথায় মহিলাটিকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে নারীটি বলে, নারীটি এক লোকের সাথে একত্রে পশু চরাত। পুরুষটির কাছে পানি ও দুধ ছিল কিন্তু তার কাছে পানি ও দুধ ছিল না। নারীটি পিপাসার্ত হয়ে পুরুষটির কাছে পানি চাইলে সে বললে- নারীটি পুরুষটিকে নারীটিকে ভোগ করতে দিলে সে পানি দিবে। নারীটি ৩বার অস্বীকার করে কিন্তু পড়ে তীব্র পিপাসা সহ্য করতে না পেরে তখন সে পুরুষটির শর্তে রাজি হয়ে যিনায় লিপ্ত হয়। বিনিময়ে সে নারীটিকে পানি পান করায়। এই কথা শুনে নারীটিকে শাস্তি দেওয়ার রায় প্রত্যাহার করা হল। [33]আত-তুরুকুলহুকমিয়্যা” গ্রন্থে ১৮ পরিচ্ছেদ

চোরের হাত কাঁটার বিধান থাকা শর্তেও কেউ ক্ষুধার তাড়নায় চুরি করলে তার হাত কাটা যায় না।[34]মুহাম্মদ রওয়াস কালাজী, মাভসুআতু ফিকহি উমর ইবনুল খাত্তাব, পৃ. ৩৮২; আবু দাউদ, জিহাদ, ৮৫; ইবনে মাজাহ, তিজারাত, ৬৭; ইবনে কাইয়্যিম আল-জাওযিয়া, … See Full Note আবার ঘুষ দিয়ে চাকরি নেওয়া হারাম[35]সহিহ আবু দাঊদ ৩৫৮০; মিশকাত ৩৭৫৩ কিন্তু হকদার তার হক রক্ষা করার জন্য ঘুষ দিলে তা ঘুষ হবে না, তখন তিনি মাজলুম বলে গণ্য হবেন।[36]হাশিয়া মিশকাত (দেওবন্দ ছাপা), উপরিউক্ত হাদিসের আলোচনা দ্র:; বায়হাক্বী হা/২০৯৮৬

উমর (রা) এর জামানায় একবার এক নারীকে এক পুরুষ ধর্ষণ করার চেষ্টা করলে নারীটি নিজের আত্মরক্ষার্থে আক্রমণ করায় পুরুষটি মারায় যায়। হত্যা করা হারাম হওয়া শর্তেও উমর (রা) বলেছিলেন নারীটিকে কোন শাস্তি দেওয়া হবে না কারণ সে নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে এমনটি করেছিল, আর এমন পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষা করা তার উপর ওয়াজিব।[37]আল-মুগনি ৮/৩৩১; আল-মুফাসসাল ফি আহকামিল মারা ৫/৪২-৪৩

রাসুলুল্লাহ ﷺ এর বহু হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, স্বাভাবিক অবস্থায় বাড়িতে ও নিজের সাথে কুকুর রাখা বা পোষা শরিয়তের দৃষ্টিতে নাজায়েয ও গুনাহের কাজ।[38]সহিহ মুসলীম, হাদিস ২১০৬; সহিহ বুখারী, হাদিস ৩২২৫, ২১৪৫; সুনানে ইবনে মাজা, হাদিস ৩৬৪০; মুসনাদে বাযযার, হাদিস ৮৮০; শারহু মাআনিল আছার, ত্বাহাবী, হাদিস ৬৪০৬; … See Full Note তবে গবাদিপশু রক্ষাকারী কুকুর কিংবা শিকারি কুকুর অথবা ফসল রক্ষাকারী কুকুর রাখার অনুমতি খোদ রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর হাদিস থেকেই প্রমাণিত হয়।[39]সহিহ মুসলীম ১৫৭৩-১৫৭৬; বুখারী ২৩২২

আমাদের কম বেশি সবারই জানা রয়েছে বর্তমান সময়ে ঔষধ তৈরিতে অনেক ধরনের হারাম জিনিসের উপাদান ব্যবহার করতে হয়। হয় সরাসরি, না হয় সেই জিনিসের কোন না কোন বিশেষ উপাদান। বর্তমান সময়েতো এমন বহু ঔষধ রয়েছে যার প্রতি মানুষ নিরুপায় হয়ে পরে, খেতে বাধ্য হয়ে পরে, না খেলে মানুষের জন্য অনেক বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়, না হয় জীবন নাশেরও আশঙ্কা থাকে।

এসবের উপর ভিত্তি করে ৪ মাযহাবের বর্তমানের বিখ্যাত আলেমরা বলেছেন জিলাটিন বা গ্লিসারিন ও অ্যালকোহল যুক্ত ঔষধ হালাল হবে যদি এর বিকল্প না পাওয়া যায় ও যদি একজন সচ্চরিত্র ডাক্তার ঔষধটি সেবনের পরামর্শ দিয়ে থাকে। [40]মক্কা মুকাররমাস্থ ফিকাহ একাডেমি এর সিদ্ধান্ত বলি, পৃষ্ঠা-৩৪১; অ্যাকাডেমির ম্যাগাজিন, সংখ্যা-৩, ৩/১০৮৭; ওয়াশিংটনস্থ ‘ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক থট’ এর … See Full Note

আর উটের মূত্র ঔষধ হিসেবে গ্রহণ করার পিছনেরও বেশ ভালোই যুক্তি-প্রমান রয়েছে। যেমন মধ্যযুগে আরবি উটের মুত্র কিছু কার্যকরী ও উপকারী ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহৃত হতো। মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ চিকিৎসাবিজ্ঞানী ইবন সিনাসহ আরো অনেকে এটা বলেছেন। এছাড়াও উটের মূত্র ও দুধের অনেক উপকারিতা রয়েছে যা ম্যাডিক্যালি প্রমাণিত।[41]আল-কানুন ফিত-তিব্ব ১/৪১২-৪১৩, ৩/১৮০ ও ২/২৩৬; আত-তিববুন নববী, পৃঃ ৯০-৯২; মুখতাসার যাদুল মা’আদ ৪/৪৭-৪৮; আল-সুন্নাহ আল-মুতাহারাহ ৭৯; আল-তিব আল-আরাবি,  ১/২৭৮; … See Full Note

সুদীর্ঘকাল ধরেই প্রথাগত চিকিৎসা হিসেবে উটের মূত্র ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আপনারা “camel urine as medicine” লিখে খুঁজলেই অনেক পিয়ার রিভিউড ও নন-পিয়ার রিভিউড রিসার্চ পেপার পেয়ে যাবেন অনলাইনে।

অবশ্যই সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে উটের মুত্র সরাসরি গ্রহণে উপকারের তুলনায় ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনাটাই বেশি। তাই এটার সরাসরি গ্রহণ উপকারের তুলনায় অপকারই বেশি। যেমন সাপের বিষ, বিচ্ছু, ফানেল-ওয়েব মাকড়সা, শঙ্খ শামুকসহ বিভিন্ন বিষযুক্ত প্রাণীর বিষ, ঘোড়ার বীর্য, নারী ঘোরাসহ আরো কিছু প্রাণীর মূত্র ইত্যাদি সরাসরি গ্রহণ করলে উপকারের তুলনায় অপকারই বেশি হবে, কিন্তু বর্তমানে সেগুলোকে প্রক্রিয়া জাত করে অনেক ধরনের রোগের ঔষধ তৈরি করা হচ্ছে যা আসলেই মানুষের জন্য অনেক বেশি উপকারী, ঠিক তেমনই উটের মূত্রের ক্ষেত্রেও।

হালাল পশুর মলমূত্র পবিত্র নাকি অপবিত্র তা নিয়ে বিতর্ক

কিছু এখতেলাফি বিষয়ে বলে নেওয়া যাক। সাধারণত দুনিয়ার সব মাযহাব ও তরিকার আলেমরা একমত যে, যেসব প্রাণী খাওয়া হারাম সেই প্রাণীর মল ও মূত্র অপবিত্র ও হারাম। কিন্তু সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে হালাল পশু নিয়ে।

হাম্বলি ও মালেকি মাযহাবে কিছু হাদিসের উপর ভিত্তি করে যে প্রাণীদেরকে খাওয়া হালাল সেই প্রাণীগুলোর মল ও মূত্রকে পাক ও পবিত্র বলা হয়েছে।[42]আল-নওয়াবী, আল-মিনহাজ: শারহ সহিহ মুসলিম, ৬/১৫৫-১৫৬; আল লাজনাহ আদ দায়েমাহ ৬/৪১৪; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২১; নুযুলুল আবরার মিন ফিকহিন নাবিয়্যিল মুখতার ১/৪৯; … See Full Note হানাফি ও শাফেঈ ফিকহ ও অন্যান্য মাযহাবের কিছু আলেমরা কিছু হাদিসের উপর ভিত্তি করে বলেছেন, সব প্রাণীর মল-মূত্র নাপাক, অপবিত্র ও হারাম।[43]আল-মাবসুত ১/৫৩; আল-হাওইয়ুল কাবির ২/২৪৮; ফাতহুল বারি ১/৪৪১; উমদাত আল-কারী শরহ সহিহ আল-বুখারী ৩/৩৩, ৩৪, ১৫৪; নাতাইজ আল আফকার ৮/৮১; দারুল উলুম দেওবন্দ (উর্দূ), … See Full Note

আহলে হাদিস আলেমদেরও বেশির ভাগ আলেমদের মত হচ্ছে হালাল পশুর মল-‍মূত্র পাক কিন্তু সেগুলা খাওয়া জায়েজ নেই। শুধু ঔষধ হিসেবে খাওয়া হয় তাহলে তা জায়েজ হবে। কারণ সব পাক বা পবিত্র জিনিসই খাওয়ার জন্য উপযোগী নয় বা হালাল নয়।[44]ভিডিয়ো লেকচার দেখুনঃ আবু বকর জাকারিয়া , মতিউর রহমান মাদানী , মতিউর রহমান মাদানী ২য় পর্ব , আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাজ্জাক , আবু সাইফ

বিদেশি স্কলারদের মতামত বিশ্লেষণ ও অন্যান্য সম্ভবনা

প্রথমে কিছু বিষয়ে বলে নি। সারাবিশ্বে মুসলিমদের প্রায় ৯০% হচ্ছে সুন্নি মুসলিম, যার মধ্যে মধ্যে শুধু হানাফি ও শাফেঈ মাযহাবের অধীনেই প্রায় ৬০% মুসলিম রয়েছে। তারপর জাহেরি, হাম্বলি, মালেকি ও আহলে হাদিস যারা উটের মূত্রকে শুধু ঔষধ হিসেবে খেলেই জায়েজ বলেছেন তাদেরকেও যদি হিসাবে আনা হয় তাহলে ৭০/৭৫% এমনিতেই হয়ে যায়। এই থেকে বুঝা যাচ্ছে প্রায় ৮০% মুসলিমদের মতে শুধু ঔষধ হিসেবে উটের দুধ ও মূত্র একত্র করে খেলেই জায়েজ হবে অন্যথায় তা সাধারণ ভাবে সুস্থ অবস্থায় খাওয়া বৈধ নয়, অর্থাৎ মেজরিটি মুসলিম, জমহুর ওলামা উটের মূত্রকে ঔষধ হিসেবে ছাড়া সাধারণ ভাবে খাওয়াকে বৈধ বলেনি।

যাইহোক, যদি হানাফি ও শাফেঈ মাযহাব অনুসারে সব প্রাণীর মল ও মূত্রকে নাপাক ও অপবিত্র ধরেনি তাহলে এটা সরাসরি হারাম, যার মানে কোন বিশেষ কারণ ছাড়া এসব খাওয়া যাবে না, কারণ সব অপবিত্র জিনিসই হারাম।[45]সূরা আনআম আয়াত ১৪৫; সূরা আরাফ আয়াত ১৫৭ আর হাম্বলি ও মালেকি মাযহাব অনুসারে শুধু হালাল পশুর মল ও মূত্রকে যদি পাক ও পবিত্র ধরে নি তাহলেও এটা প্রমাণিত হয় না যে এসব খাওয়া জায়েজ। কারণ সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণা থেকে দেখা যায় যে পশুপাখির মল ও মূত্রে অনেক ক্ষতিকারক উপাদান ও জীবাণু থাকে যা মানুষের অনেক বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম। আর মানুষের সাস্থ্যের ও জীবনের জন্য ক্ষতিকারক সব জিনিসই খাওয়া বা ব্যবহার হারাম।[46]সুরা বাকারা আয়াত ১৯৫; সুরা নিসা আয়াত ২৯; বুখারী ১৩৬৩, ১৩৬৪, ৬০৪৭, ৬১০৫, ৬৬৫২; মিরকাতুল মাফাতিহ ৮/৩১৫৬; ইসালুস সালিক ফি উসুলিল ইমাম মালিক, পৃষ্ঠা ৬৪; যাদুল … See Full Note এটার উপর ভিত্তি করে মানুষের সাস্থ্যের ক্ষতি হয় বলে আলেমরা মাটি, কয়লা, পাথর, ইট ইত্যাদি খাওয়াকেও হারাম বলেছেন।[47]নববী, আল-মাজমূ‘ ৯/৩৭; রওযাতুত ত্বালেবীন ৩/২৯১; ইবনু কুদামাহ, মুগনী ৯/৪২৯; আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়া ৫/১২৫

এখানে যে জিনিসটা খাওয়ার কারণে বা ব্যবহারের কারণে মানুষের ক্ষতি হতে পারে সেটা খাওয়া বা ব্যবহার হারাম কিন্তু সেটা সাধারণ ভাবে হারাম না, মানে সেটাকে যেভাবে খেলে বা ব্যবহার করলে ক্ষতি হবে সেভাবে যদি না খাওয়া হয় বা না ব্যবহার করা হয় বরং অন্যকোনো কাজে ব্যবহার করা হয় বা যেভাবে খেলে বা ব্যবহার করলে হারাম হবে না সেভাবে যদি খাওয়া হয় বা ব্যবহার করা হয় তাহলে সেটা হারাম না। যেমন খেজুর বা কিশমিশের কথাই বলি, সাধারণত খেজুর বা কিশমিশ সরাসরি খেলে অনেক উপকারিতা রয়েছে, এইটা উত্তমও বটে অনেক ওষধি গুণও রয়েছে এতে, এটা নরমালি খেলে নেশা হয় না কিন্তু যখন কিছু বিশেষ প্রক্রিয়া (নাবীয বানিয়ে) করে খাওয়া হয় তখনই নেশা হয়। তাই খেজুর বা কিশমিশ যখন যেভাবে খাওয়ার কারণে নেশা হয় সেভাবে গেলে তা হারাম, নাহয় সাধারণত তা হারাম না। একই রকম পবিত্র হলেও হারাম এমন আরো ‍কিছু হচ্ছে বিষ, সিগারেট, তামাক, মদ ইত্যাদি।

আবার হাম্বলি ও মালেকি মাযহাবের কিছু আলেমদের মত অনুসারে যদি ধরেও নেই যে সেগুলো খাওয়া জায়েজ তারপরও এসব খাওয়া সুন্নত বা বাধ্যতা মূলক নয়। যেমন অনেক কিছুই জায়েজ খাওয়া কিন্তু সেগুলো মানুষ খায়না বা কারণ সেগুলো রুচি সম্মত নয়। ইসলামে এমন অনেক ঔষধের কথাই পাওয়া যায়, কিন্তু সেগুলো খাওয়া বা না খাওয়া রোগীর উপর নির্ভর করে। যদি সে (অসুস্থ ব্যক্তি) খেতে চায় তাহলে খেতে পারে, যদি তার কাছে সেটা রুচি সম্মত না হয়, মানে যদি সে খেতে না চায় তাহলে এটা বাধ্যতামূলক নয় তাকে খাওয়ানো।[48]HUDATV , আত-তাহরিক , মিজানুর রহমান আজহারি এর দলিল হিসেবে পেশ করা হয় যে মহানবি ﷺ ও সাহাবিরা এমন অনেক জিনিসই খেতেন না যেগুলো জায়েজ কিন্তু উনাদের পছন্দ নয় বা উনাদের কাছে রুচিসম্মত ছিল না। যেমন কাঁচা পেঁয়াজ ও রুসন, গুঁইসাপ ইত্যাদি হালাল হওয়ার পরও মাহনবি ﷺ এর পছন্দনীয় ছিল না তাই তিনি খেতেন না।[49]তাহাবী শরীফ, ২০১; মিশকাত ৭৩৬; ৪১১০-১১; বুখারী ৫৩৯১, ৫৪০০, ৫৪৫২, ৫৫৩৬; মুসলিম ১৯৪৬-৪৪, সহিহ মুসলিম (১৯৪৩)-৩৯, (১৯৪৩)-৪০, (১৯৪৩)-৪১, ২০৫৩; নাসায়ী ৪৩৯৬, ৪৮২৮, ৪৩১৪-১৫; … See Full Note এছাড়া আরো কিছু দলিল আছে এই বিষয়ে।[50]সূরা মায়েদা আয়াত ৬; মিশকাত ২৭৬২; সহিহুল জা’মে ১০৬৭; বুখারী ৫২; মুসলিম ১৫৯৯; তিরমিযী ১২০৫; আবূ দাঊদ ৩৩৩০; আহমাদ ১৮৩৭৪; দারিমী ২৫৭৩; সহিহ আত্ তারগীব ১৭৩১

আবার প্রশ্ন আসতে পারে যে আরব দেশেতো অনেকে উটের মূত্র খায়, তাহলে কি তারা হারাম খাচ্ছে!? এই প্রশ্নের উত্তরও খুব সহজ। তারা আসলে উটের মূত্রকে ঔষধ মনে করে সরাসরি খাচ্ছে, এর উপর তাদের কিছু আলেম বলেছে সাধারণ ভাবেও উটের মূত্র খাওয়া জায়েজ।

এই ক্ষেত্রেত সাধারণ মানুষের দোষ নেই, তারা না জেনেই খাচ্ছে তাই তাদের হয়ত কোন গুনাহ হবে না, কিন্তু যারা জেনেশুনে সুস্থ থাকার পরও ঔষধ মনে করে খাচ্ছে তাদের কবিরাহ গুনাহ না হলেও সগিরাহ গুনা হতে পারে (আল্লাহই ভালো জানেন)। কবিরাহ গুনাহ না হওয়ার কারণ হচ্ছে তাদের মতে হালাল পশুর মল-মূত্র অপবিত্র না, আবার অনেকে ইসলামের কোন কোন বিষয়ে পশ্চিমাদের কথাগুলো বিশ্বাস করে না বিধায় তাদের বলা অপকারিতাগুলোকেও পাত্তা দেয় না বা বিশ্বাস করে না, তারপর হাদিস এসেছে মুনাফিকদেরকে উটের মূত্র খেতে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, আবার উটের মূত্রে মেডিক্যালি অনেক উপকার পাওয়া যায়, আর হাম্বলি ও মালেকি মাযহাবের জন্য উটের মূত্র হারাম হচ্ছে সরাসরি কোরআন হাদিস অনুসারে না বরং ইজতিহাদি কারণে, তাই তাদের কবিরা গুনা হবে না এটাই স্বাভাবিক বিষয়।

অনেকে ড. জাকির নায়েক, হাম্বলি ও মালেকি মাযহাবের কিছু আলেমের ভিডিও দেখিয়ে দাবি করে তারাত যখন তখন উটের মূত্রকে খাওয়াকে জায়েজ বলেছে তাহলে আমরা কেন উলটা বলছি। আসলে এখানে ড. জাকির নায়েক (হাফি) এর মতকে ইখতেলাফি বিষয়গুলোতে সরাসরি গ্রহণ করা সম্ভব না, কারণ তিনি ফিকহি বিষয়ে অনেক সময় ভুল করে থাকেন। এছাড়া এই আলেমগুলা উটের মূত্র নিয়ে ভিডিওতে উটের মূত্রের উপকারিতা সম্পর্কে অনেকগুলো রেফারেন্স দিয়ে থাকেন আর কম বেশি সবগুলোই সত্য। কিন্তু তারা (সবাই নয়, অল্প কিছু আলেম) একচেটিয়া এটাকে হালাল বলেন যা সঠিক নয়। কারণ দুনিয়াতে মেজরিটি আলেমের মত হল যদি হালাল পশুর মল ও মূত্র পাক ও পবিত্রও হয় তাহলেও এসব সরাসরি খাওয়া জায়েজ না। কিন্তু যদি নির্ভরযোগ্য কোন ডাক্তার বলে সরাসরি খেতে তাহলে বা সেগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে ঔষধ তৈরি করা হলে তখন সেগুলা জায়েজ হবে।

    Footnotes

    Footnotes
    1সহিহ বুখারি ১৫০১, ৩০১৮, ৫৬৮৫-৬, ৬৮০২-৪, ৬৮৯৯; সহিহ মুসলিম ১৬৭১, ৫৭২৭; সুনানে নাসায়ী ৩০৬, ৪০২৪-৩২; ইবনু মাজাহ ৩৫০৩, ২৫৭৮; তিরমিজি ৭২, ১৮৪৫, ২০৪২; আল মুসনাদুল জামে ২/৫৯-৬৭; আহমাদ ১২৯৩৫, ১৪১১৮
    2আরদাহ আল-আহওয়াদী ৮/১৯৭; আল মুহাল্লা ১/১৭৫; ইসলামওয়েব ফতোয়া নং ৮৫৯৪৪; শারহুল উমাদাত, উসামা সুলেমান অনুচ্ছেদ ৬৫, পৃ. ২৪
    3সহিহুল বুখারী ৫৭৮১
    4উমদাত আল- কারি ৩/৩৩-৩৪; আল-হিদায়া ১/১০২; ইমাম নববী, শরহে মুসলিম ৩/৯১৫; দারুল ইফতা: জামিয়া উলূম ইসলামিয়া আল্লামা মুহাম্মদ ইউসুফ বানুরী টাউন, ফতোয়া নং: 144012201206
    5ইবনে মনজুর: লিসান আল আরব ৬/৪৩০১; আল-জুবাইদি: ক্রাউন অফ দ্য ব্রাইড ৯/৭০ – মাওম; আওন আল-বারি ১/৪৩৪; ইমাম নববী, শরহে মুসলিম খণ্ড ৬ হাদিস ২৬০১; সহিহ বুখারী ১৫০১, ৩০১৮, ৫৬৮৫, ৬৮০৪; সুনান আন নাসায়ী ৪০৩০-১ ইত্যাদি
    6বুখারি ২৩৩, ৬৮৯৯; মুসলিম ১৬৭১; উটের দুধ ও মূত্র পান করার হাদিসটির সম্পূর্ণ বর্ণনা দেখলেই প্রমাণ পেয়ে যাবেন
    7আল-তাবারানী ৩/১৮৫; সিলসিলাহ আল-দাইফাহ ওয়া আল-মাউদু ৩/৫৯৫
    8আল-ওয়াসাইল ২/১০১২ হাদিস ১৫; আল-বাহরানী, আল-হাদায়েক ১৮/৭৬; আল-ওয়াসাইল ২৫/১১৩; আল-কাফি ২/৩৩৮, আল-তাহদীব ১/২৮৪; আল-ওয়াফি ২০/৬৮৭
    9উমদাতুল কারী, ২/৬৪৯, ৩/৩৪
    10শারহে আল-মাআনী আল-আসার আত ত্বহাবীঃ ১/১০৮-১০
    11আল মুহাল্লা ১/১৭৪, ১৭৫
    12মাজমা আল-যাওয়াইদ ৫/৮৮; মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক ৯/২৫৯; ফাতহুল বারি ১০/১৪৩, নীল আল আওতার ১/৬১, ৯/৯৪; আল মুজামুল কবির ১২/২৩৮
    13ফাতহুল বারি ১/৪৪১
    14ইমাম নববি, মাজমু আল ফাতাওয়া ৯/৫০, ৫১
    15কিতাব তালিকাত ইবনে উসাইমিন আলাল কাফি লি ইবনে কুদামা ১/২৪৭
    16কিতাব মাসায়েল ইমাম আহমেদ রিওয়ায়েত আবি দাউদ আল সিজস্তানি, পৃ. ৩৪৯, হাদিস ১৬৬৮
    17আল-মাবসুত ১/৫৩; আল-হাওইয়ুল কাবির ২/২৪৮; ফাতহুল বারি ১/৪৪১; উমদাত আল-কারী শরহ সহিহ আল-বুখারী ৩/৩৩, ৩৪, ১৫৪; নাতাইজ আল আফকার ৮/৮১; দারুল উলুম দেওবন্দ (উর্দূ), ফতোয়াঃ ৮৫৩-৮৫১ /N= ৯/১৪৩৮, উত্তর নং ১৫০৮৪৬, ফতোয়া আইডি: 1283-1280/N=11/1435-U, উত্তর ৫৫০৪০; শারহু মুখতাসারিত তাহাওই ২/৩৮; বিদায়াতুল মুবতাদি ৪/৪১২; আল-হিদায়াহ ১/১০২, ৪/৪১২; তাবিঈনুল হাকাইক ৬/১০; আলবাহরুর রাইক ৮/১৮২; আল-ওয়াসিত ফিল মাযহাব ১/১৫৬; আল-ফাদিল আল-হিন্দী কাশফ আল-লিথাম ৯/২৯০; রাদ্দ আল মুহতার ৫/২১৫, ২১৬; আল বায়ান ওয়া আল তাহসিল ওয়া আল তাওজিহ ১৮/৩২৩; নববি, মাজমু আল ফাতাওয়া ৯/৫০, ৫১; রওদাত আল-তালিবীন ৩/২৮৫; মুসান্নাফ আব্দুল রাজ্জাক ৯/২৫৯; কাশফ আল কিনা ৬/১৮৯-২০০; আল-শেরবিনি, মুগনিল-মুহতাজ ৪/১৮৮; আল আনওয়ার লি আমান আল আবরা ২/৫১৮; আল মুহাল্লা ১/১৭৫, ২২২; আওন আল-বারি ১/৪৩৬; আল সিরাজী, আল মুহাদযাব ১/৪৬; শরিয়া ফতোয়া, দুবাইতে ফতোয়া ও গবেষণা বিভাগ ৫/৩১৬-২০; কিতাব মাওসুয়াতুল সিনাইয়াত আল হালাল ৩/২৩০; নাতাইজ আল আফকার ৮/৮১; আল শাওকানি, নিল আল-আওতার ১/৫০, ৯/৯৩
    18কিতাবুল জামেউল উলুম আল ইমাম আহমেদ, ১৩/২৮০
    19কিতাবুল জামেউল উলুম আল ইমাম আহমেদ, ১৩/২৮০; কিতাবুল তালিকাত আল কাবিরাত – আবু ইয়ালা – মিন আল সালাত লিল জানাইজ, ২/১১; কিতাব তালিকাত ইবনে উসাইমিন আলাল কাফি লি ইবনে কুদামা ১/২৪৭; কিতাবুল ইনসাফ ফি মারিফাত আল রাজিহ মিনাল খালফ – তি আল ফিকি ১/৩৪০; আল শাওকানি, নিল আল-আওতার ১/৫০, ৯/৯৩; শারহ জাদ আল-মুস্তাকনি ২৩/৮, ৯
    20আল-মাওসুআহ আল-ফিকহিয়্যাহ ১১/১১৯
    21উমদাতুল কারী, ২/৬৪৯, ৩/৩৪; রাদ্দ আল-মুহতার ৪/২১৫
    22আওনুল মা‘বূদ ৭/৩৮৬৬; ফাতহুল বারি ১/৪৪১
    23আল-মাজমু ‘শরহুল-মুহাযহাব আন-নাওয়াবী, ৪/৩৩০, ৯/৫০-৫৪; নিল আল আওতার ১/৪৯-৫০; মুহাম্মদ শামস আল-হক, আউন আল-মাবুদ ১০/৩৫২; মুগনি আল-মুহতাজ ১/৩০৭, ৪/১৮৮; আল-মুহাল্লা ৭/৪২৬
    24কাওয়ায়েদুল ফিক্বহ, কায়দা ১৭০
    25আন‘আম আয়াত ১৪৫
    26সূরা মায়েদা আয়াত ৩
    27সূরা বাকারাহ আয়াত ১৭৩, আন‘আম আয়াত ১১৯
    28আল-বায়হাকি, আল-সুনান আল-কুবরা ১৪৩৮২
    29সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৪০৫৭; মুসনাদে আহমাদ-১/৯৬; সুনানে ইবনে মাজা, হাদিস ৩৫৯৫; জামে তিরমিযী; হাদিস ১৭২০; মুসনাদে আহমাদ-৪/৩৪৯, ৪০৭; সুনানে নাসায়ী-৮/১৬০; শারহু মাআনীল আছার, ত্বাহাবী-৪/২৫১
    30সহিহ বুখারী, হাদিস ২৯১৯; সহিহ মুসলীম, হাদিস ২০৭৬; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৪০৫৬; সুনানে ইবনে মাজা, হাদিস ৩০৯২; সুনানে তিরমিযী, হাদিস ১৭২২; সুনানে নাসায়ী-৮/২০২
    31সহিহ বুখারী, ৫৮৬৪; সহিহ মুসলিম, ২০৯০; মুসনাদে আহমাদ, ৬৯৪৭, ২২২৪৮; নানে নাসায়ী, ৫১৮৮
    32সুনান আত তিরমিজী ১৭৭০; মুসনাদে বাযযার, মাজমাউয যাওয়ায়েদ, হাদিস: ৮৭১৩
    33আত-তুরুকুলহুকমিয়্যা” গ্রন্থে ১৮ পরিচ্ছেদ
    34মুহাম্মদ রওয়াস কালাজী, মাভসুআতু ফিকহি উমর ইবনুল খাত্তাব, পৃ. ৩৮২; আবু দাউদ, জিহাদ, ৮৫; ইবনে মাজাহ, তিজারাত, ৬৭; ইবনে কাইয়্যিম আল-জাওযিয়া, ইলামুল-মুওয়াক্কিইন, ৩/১০-১২
    35সহিহ আবু দাঊদ ৩৫৮০; মিশকাত ৩৭৫৩
    36হাশিয়া মিশকাত (দেওবন্দ ছাপা), উপরিউক্ত হাদিসের আলোচনা দ্র:; বায়হাক্বী হা/২০৯৮৬
    37আল-মুগনি ৮/৩৩১; আল-মুফাসসাল ফি আহকামিল মারা ৫/৪২-৪৩
    38সহিহ মুসলীম, হাদিস ২১০৬; সহিহ বুখারী, হাদিস ৩২২৫, ২১৪৫; সুনানে ইবনে মাজা, হাদিস ৩৬৪০; মুসনাদে বাযযার, হাদিস ৮৮০; শারহু মাআনিল আছার, ত্বাহাবী, হাদিস ৬৪০৬; মুসতাদরাকে হাকিম, হাদিস ৬১৬; হাদিস; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস ১৯৯৫৩
    39সহিহ মুসলীম ১৫৭৩-১৫৭৬; বুখারী ২৩২২
    40মক্কা মুকাররমাস্থ ফিকাহ একাডেমি এর সিদ্ধান্ত বলি, পৃষ্ঠা-৩৪১; অ্যাকাডেমির ম্যাগাজিন, সংখ্যা-৩, ৩/১০৮৭; ওয়াশিংটনস্থ ‘ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক থট’ এর জিজ্ঞাসার পরিপ্রেক্ষিতে ‘ওআইসি’ এর অধিভুক্ত ‘ইসলামি-ফিকাহ-একাডেমি’ এর সিদ্ধান্ত নং: ২৩(৩/১১); নিহায়াতুল মুহতাজ ৮/১২; ফিকহি মাকালাত ১/২৫৫; আল-মাওসুআহ আল-ফিকহিয়াহ ৩/২১৩; আল-ফুরুক ২/২০৭
    41আল-কানুন ফিত-তিব্ব ১/৪১২-৪১৩, ৩/১৮০ ও ২/২৩৬; আত-তিববুন নববী, পৃঃ ৯০-৯২; মুখতাসার যাদুল মা’আদ ৪/৪৭-৪৮; আল-সুন্নাহ আল-মুতাহারাহ ৭৯; আল-তিব আল-আরাবি,  ১/২৭৮; আল-ইজাজ আল-ইলমি ফি সুন্নাহ নাবাবিয়া, ৮৩৩; ১৯৩৮ সালের ২৫ সাফার ১৪২৫ হিজরি, ১৫ এপ্রিল ২০০৪ খ্রিস্টাব্দের সংখ্যায় “আল-দাওয়াহ” ম্যাগাজিন; আল ইত্তিহাদ, সংখ্যা ১১১৭২, রবিবার, ৬ মুহাররম ১৪২৭ হি, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দ; আল-জাজিরাহ আল-সৌদিয়া, ১০১৩২ নং, রবিবার, রবি’আল-আউয়াল ১৪২১ পত্রিকা; দ্য মুসলিম সোলজার ম্যাগাজিন, সংখ্যা ১১৮, ২০ যুল-কা’দাহ ১৪২৫ হি, ১/১/২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ
    42আল-নওয়াবী, আল-মিনহাজ: শারহ সহিহ মুসলিম, ৬/১৫৫-১৫৬; আল লাজনাহ আদ দায়েমাহ ৬/৪১৪; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/২১; নুযুলুল আবরার মিন ফিকহিন নাবিয়্যিল মুখতার ১/৪৯; আল-মুহাল্লা বিল’আছার ১/১৭০; আল মুগনি ২/৪৯২; আল মাজমুইল ফাতওয়া ২১/৫৪২-৫৮৬; আল-জামি লিউলুমে ইমাম আহমাদ ফিকহ ১৩/২৭৯-২৮০; মাসাইল আবি দাউদ পৃ ১৬৬৮; মাসাইল ইবন হানিই পৃ ১৮০৮, ১৮১৫; মাসাইল হারব পৃ ৩০৫, ২৯৩; আন-নাওয়াদির ওয়ায যিয়াদাত ১/৮৬; আল আরাফ আল ফিকহিয়্যা আল মাকাসিদ আল মুহাররম ১/৪৭; নিল আল-আওতার ১/৪৯; শারহ জাদ আল-মুস্তাকনি ২৩/৯; ইবনে রুশদের বিদয়াত আল-মুজতাহিদ ১/৮২
    43আল-মাবসুত ১/৫৩; আল-হাওইয়ুল কাবির ২/২৪৮; ফাতহুল বারি ১/৪৪১; উমদাত আল-কারী শরহ সহিহ আল-বুখারী ৩/৩৩, ৩৪, ১৫৪; নাতাইজ আল আফকার ৮/৮১; দারুল উলুম দেওবন্দ (উর্দূ), ফতোয়াঃ ৮৫৩-৮৫১ /N= ৯/১৪৩৮, উত্তর নং ১৫০৮৪৬, ফতোয়া আইডি: 1283-1280/N=11/1435-U, উত্তর ৫৫০৪০; শারহু মুখতাসারিত তাহাওই ২/৩৮; বিদায়াতুল মুবতাদি ৪/৪১২; আল-হিদায়াহ ১/১০২, ৪/৪১২; তাবিঈনুল হাকাইক ৬/১০; আলবাহরুর রাইক ৮/১৮২; আল-ওয়াসিত ফিল মাযহাব ১/১৫৬; আল-ফাদিল আল-হিন্দী কাশফ আল-লিথাম ৯/২৯০; রাদ্দ আল মুহতার ৫/২১৫, ২১৬; আল বায়ান ওয়া আল তাহসিল ওয়া আল তাওজিহ ১৮/৩২৩; নববি, মাজমু আল ফাতাওয়া ৯/৫০, ৫১; রওদাত আল-তালিবীন ৩/২৮৫মুসান্নাফ আব্দুল রাজ্জাক ৯/২৫৯; কাশফ আল কিনা ৬/১৮৯-২০০; আল-শেরবিনি, মুগনিল-মুহতাজ ৪/১৮৮; আল আনওয়ার লি আমান আল আবরা ২/৫১৮; আল মুহাল্লা ১/১৭৫, ২২২; আওন আল-বারি ১/৪৩৬; আল সিরাজী, আল মুহাদযাব ১/৪৬; শরিয়া ফতোয়া, দুবাইতে ফতোয়া ও গবেষণা বিভাগ ৫/৩১৬-২০; কিতাব মাওসুয়াতুল সিনাইয়াত আল হালাল ৩/২৩০; নাতাইজ আল আফকার ৮/৮১; আল শাওকানি, নিল আল-আওতার ১/৫০, ৯/৯৩
    44ভিডিয়ো লেকচার দেখুনঃ আবু বকর জাকারিয়া , মতিউর রহমান মাদানী , মতিউর রহমান মাদানী ২য় পর্ব , আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রাজ্জাক , আবু সাইফ
    45সূরা আনআম আয়াত ১৪৫; সূরা আরাফ আয়াত ১৫৭
    46সুরা বাকারা আয়াত ১৯৫; সুরা নিসা আয়াত ২৯; বুখারী ১৩৬৩, ১৩৬৪, ৬০৪৭, ৬১০৫, ৬৬৫২; মিরকাতুল মাফাতিহ ৮/৩১৫৬; ইসালুস সালিক ফি উসুলিল ইমাম মালিক, পৃষ্ঠা ৬৪; যাদুল মাআদ ৪/১৪১
    47নববী, আল-মাজমূ‘ ৯/৩৭; রওযাতুত ত্বালেবীন ৩/২৯১; ইবনু কুদামাহ, মুগনী ৯/৪২৯; আল-মাওসূ‘আতুল ফিক্বহিয়া ৫/১২৫
    48HUDATV , আত-তাহরিক , মিজানুর রহমান আজহারি
    49তাহাবী শরীফ, ২০১; মিশকাত ৭৩৬; ৪১১০-১১; বুখারী ৫৩৯১, ৫৪০০, ৫৪৫২, ৫৫৩৬; মুসলিম ১৯৪৬-৪৪, সহিহ মুসলিম (১৯৪৩)-৩৯, (১৯৪৩)-৪০, (১৯৪৩)-৪১, ২০৫৩; নাসায়ী ৪৩৯৬, ৪৮২৮, ৪৩১৪-১৫; ইবনু মাজাহ ৩২৪১, ৩২৪৫; আহমাদ ৪৫৬২, ১৬৮৬১; আল মু‘জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ৩১৩০, ৩৭২৭; তিরমিযী ১৭৯০, সহিহুল জামি‘ ৩৮৯৮, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাজ্জাক ৮৬৭৩; সহিহ ইবনু হিব্বান ৫২৬৩; আবূ দাঊদ ৩৭৯৪, ৩৮২২-৩৮২৮; ইরওয়া ২৪৯৮; মা‘রিফাতুস্ সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাক্বী ৫৯২৬; মুয়াওত্ত্বা মালিক ৩৫৫০
    50সূরা মায়েদা আয়াত ৬; মিশকাত ২৭৬২; সহিহুল জা’মে ১০৬৭; বুখারী ৫২; মুসলিম ১৫৯৯; তিরমিযী ১২০৫; আবূ দাঊদ ৩৩৩০; আহমাদ ১৮৩৭৪; দারিমী ২৫৭৩; সহিহ আত্ তারগীব ১৭৩১
    0 0 votes
    Article Rating
    Subscribe
    Notify of
    10 Comments
    Oldest
    Newest Most Voted
    Inline Feedbacks
    View all comments
    Abu Sayed
    Abu Sayed
    2 years ago

    আসলেই অসাধারন একটা লিখা। আমি এই বিষয়ে বেশ কয়েকটা আর্টিক্যাল পরেছি, কিন্তু এত বিস্তর আোচনা দেখিনি

    Tahsin Arafat
    Reply to  Abu Sayed
    2 years ago

    জাজাকাল্লাহ খাইরান।
    আপনি এই লেখাটি কয়েকজনের সাথে শেয়ার করে সাদাকায়ে জারিয়ায় অংশ নিতে পারেন। আপনার শেয়ার থেকে যতদিন মানুষ সংশয় থেকে মুক্ত হবে ততদিন আপনার সাওয়াব লিখিত হতে থাকবে।
    সাথে মূল লেখকও উপকৃত হবেন।

    হামিদ
    হামিদ
    2 years ago

    লিখাটা বেশ বড় কিন্তু অসাধান ও বিপুল তথ্যবহুল হয়েছে

    Tahsin Arafat
    Reply to  হামিদ
    2 years ago

    জাজাকাল্লাহ খাইরান, শেয়ার করে ছড়িয়ে দিয়ে লেখককে উৎসাহিত করুন.

    Sumon
    Sumon
    7 months ago

    হানাফি ও শাফেয়ী মাজহাবে দেখালেন সুস্পষ্ট হারাম বলা হয়েছে। হাম্বলি মাযহাবে ইমাম আহমদ নিজেই সুস্থ মানুষের জন্য মাকরুহ বলেছেন। কিন্তু মালেকি মাজহাবে কি কেউ হারাম বলে নি? তারা কি খাওয়া হালাল হওয়ার পক্ষে সকলে একমত?

    Sheikh Prince Akash
    Sheikh Prince Akash
    2 months ago

    হায় যে হাস্যকর যুক্তি আপনার!! উটের মুত্র খেতে বলা পর্যন্ত ঠিক ছিল। একটাই ভুল হতো তাতে, কিন্তু যুক্তির খাতিরে আপনার এই পেঁচানো যুক্তিগুলো যদি আলোচোনার টেবিলে নেয়া হয়, আপনি তো পুরাই মাঠে মারা।

    প্রথম দুয়েক প্যারা পড়েই ধৈর্য্য হারিয়েছি, এতটা হাস্যকর যুক্তি দিলে তা পড়ব কিভাবে? প্রথমত আপনি যে কোনো একটা বলবেন দুমুখো আচরণ না করে। উটের মুত্রের মধ্যে ওষুধি গুণ আছে কি নেই? যদি থাকে, তাহলে আপনা রাসুল ঠিক, বাকি শুধু তা ল্যাবে পরীক্ষা করা, যদি ওষুধি গুণ থাকে, তাহলে নবী পাশ করে গেল, আর যদি না থাকে, তাহলে ভণ্ডামি বেরিয়ে গেল। কিন্তু আপনার এত ত্যানা প্যাঁচানোর কী আছে??

    প্বরথমে অন্ধভাবে বলতে চাইলেন ওষুধি গুণ আছে, পরেই আবার গুণ না থাকার সন্দিহানে বললেন রাসুল সাধারণ মানুষ ছিল না, ওহিতে জানা গেছে মুত্র খেলে ভালো হবে। তো কথা হচ্ছে: আল্লার যদি ভালো করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে বিষ্ঠা খেয়ে ভালো করার পরামর্শ দিবে কেন? আল্লাহ ওরে এমনি ভালো করে দিলেও তো হতো, বিষ্ঠা খেয়ে ইসলামের বদনামটা হতো না। আল্লাহ কি জানতো না যে পরবর্তীতে মুহাম্মদের থেকে জ্ঞানী লোক আসবে, এসব পাগলামার্কা কথার ভিত্তি পাবে না, এবং অন্ধের মতো জ্বি হুজুর জ্বি হুজুর করবে না। বড়ই হাস্যকর রে ভাই।

    এরপর আসুন, এই বিষয়টা ঠিক হিন্দুদের মতো হয়ে গেল কিনা,,,, বস্তু ঈশ্বরে বিশ্বাসের মতো কাহিনী। আল্লার বিশেষত্ব এখানে পুরাই বিলুপ্ত। এবং হুবহু মিলকরণও বটে, ওরা গো মুত্র খেলে দোষ, আর আপনারা উটমুত্র খেলে সোয়াব। হায় রে মুহাম্মদের মতো অশিক্ষিত উম্মত, স্যরি, উন্মাদ।

    On behalf of the authors
    Reply to  Sheikh Prince Akash
    2 months ago

    হাদিসে সরাসরি উল্লেখ আছে ওরা মূত্র খেয়ে ভাল হইছিল।

    আল্লাহ কেন বিষ্ঠা খেতে বলছেন এবং কেন তাদের এমন্তেই ভাল করেন নাই বোঝা খুবই স্বাভাবিক। আল্লাহ জানতেন ওরা কাফের তাই তিনি তাদের রক্ষা করেন নাই। কিন্তু এখানেই আল্লাহর রহমত ও দয়া নিহিত যে তিনি ওদেরকে ওদেরই প্রচলিত পদ্ধতিতে সুস্থ হবার একটা সুযোগ দিয়েছেন। আল্লাহ কাফেরদের রক্ষা করেন না।

    আল্লাহ কি ভয় পাবেন হায় হায় মানুষ আমার সিদ্ধান্তে কি ভাববে বা কেমন ভাবে রিএক্ট করবে বা তাদের ভাল লাগা বা মন্দ লাগার বেসিসে তিনি ডিশিসন দেবেন বা তিনি পরোয়া করবেন যে অমুক কাজটা করলে হয়ত ইসলামের বদনাম হবে তাই আমাকে পৃথিবীর মানুষের ভাল লাগা মন্দ লাগা অনুযায়ী ডিসিশন দিতে হবে ? অর্থাৎ আল্লাহ কি মানুষের “কেমন লাগবে” এটার উপর নির্ভরশীল হয়ে তার কর্ম পরিচালনা করবেন, না আল্লাহ এমন নন। তিনি অমুখাপেক্ষী। কারো কোন ফিলিংসে তার কিছু যায় আসে না। তিনি যা চান তা হুকুম দেন ও করেন কারণ আল্লাহ বলেন:

    নিশ্চয়ই আল্লাহ যা ইচ্ছা তাই করেন। (কুরআন – 2:253; 22:14; 85:16)

    তিনি যা করেন সে সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় না, তবে তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে। (কুরআন 21:23)

    আপনারা সাপ খোপের বিষ, নোংরা প্রাণি শূকর ইত্যাদি থেকে ক্যান্সারের ঔষধ ও ভ্যাকসিন বানান৷ অথচ বিষ্ঠা দেখলে নাক শিটকান। এইটা একটু দ্বিচারিতা। অথচ এই আপনারাই মুসলিমরা যদি শুকরের জেলাটিনের ভ্যাকসিন নিতে আপত্তি জানায় তখন হাসাহাসি করেন। তো ভাই ঔষধ যেটাতেই পাওয়া যাক ইসলাম সেটা ব্যবহারের অনুমতি দেয়। এই থেকেই দলিল সাব্যস্ত হয়, ঘৃণ্য কোন বস্তুতে বা হারাম কোণ বস্তুতে ঔষধী গুনাগুন থেকে থাকলে তা ব্যবহার করা যাবে। ইসলাম মানুষের উপর তার ক্ষমতার বাহিরে বোঝা চাপায় না। কাজেই ইসলাম বিভিন্ন জিনিস ব্যবহারের মাধ্যেমে মানুষকে সুযোগ দেয় সুস্থ হবার। আপনাদের কেবলা ইউরোপের খ্রিস্টান চার্চের পাদ্রীরা যা করত যে মানুষকে চিকিতসা করতে দিত না। ইসলাম তা করেনা। কারণ আল্লাহ বলেছেন, “এমন কোন রোগ নেই যার ঔষধ আমি বানাইনি”

    আর এটাও বলবেন যদি বলেন আরকি, যে উটের মূত্র দ্বারা চিকিতসা এটা ইসলামের নব্য কোন আবিষ্কার না। এটা আরবদের প্রচলিত চিকিতসা পদ্ধতি। ইসলাম keeps windows open, to get relief from sickness. আল্লাহ অবশ্যই জানতেন তিনি পরবর্তীতে আরো জ্ঞানী লোক সৃষ্টি করবেন যারা নতুন চিকিতসা পদ্ধতি উদ্ভাবন করবে। এইজন্যই তো তিনি আগে থেকে মানুষকে inform করে দিয়ে হাদিসের মাধ্যমে বলে দিয়েছিলেন যে, ” এমন কোন রোগ নাই যার ঔষধ আমি সৃষ্টি করি নাই”৷ এই হাদিস থেকেই মানুষ বুঝতে পারে যে ঔষধ প্রকৃতিতে আল্লাহ যেকোন বস্তুর মধ্যেই রেখে দিয়েছেন, শুধু খুজে বের করাই মানুষের দায়িত্ব। ইসলামিক গোল্ডেন এইজে বাগদাদ ও স্পেনের চিকিতসকেরা শুধু এই একটা হাদিসের উপর ভিত্তি করেই চিকিতসা বিদ্যার উন্নয়ন সাধণ করেছিলেন, কেউই রোগব্যাধির চিকিতসায় উটের মূত্রেই আটকে থাকেনাই, তখন কেউ এসব চিকিতসা পদ্ধতি উন্নয়ন করার জন্য বাধাপ্রাপ্তও হয়নি, এমনটা কেউই বলেনি আমাদের তো ঐশ্বরিক উটের মূত্র আর দুধ নামক মহাঔষধ আছেই আমরা কেন অন্য চিকিতসা খুজতে যাব? কারণ এইটাই ইসলামি আকিদা, যে তা মানুষকে অনুসন্ধান করতে অনুপ্রেরণা দেয়, সমস্যার সমাধান খুজতে বলে। এইজন্যই ঊটের মূত্র ব্যবহারকে ফরজ করা হয়নি। এমন কোন বিধানও নাই যে চিকিতসা শুধুমাত্র এবং শুধুমাত্র উটের মূত্র দিয়াই করতে হবে অন্য কিছু দিয়ে করা যাবেনা। এইজন্যই উলামারা অনুমোদন দিয়েছেন উটের মূত্রের চেয়ে উত্তম চিকিতসা থাকলে উত্তম চিকিতসাটাই গ্রহণ করতে হবে। ইসলাম নতুন চিকিতসা ব্যবহারে বাধা দেয়না যেমন ইতিহাস দেখুন তাইলেই বুঝবেন:

    “Koranic injunction on the need to heal the sick, meanwhile, spurred enormous gains in medicine and the creation of advanced hospitals, complete with such innovations as specialised wards, regular doctors’ rounds, free health care for indigent patients, and humane treatment of the insane. Grounding their work in Greek learning initially passed along by Nestorian Christians fleeing Byzantine religious persecution, the Arabs went on to develop new medicines and new methods for preparing the active ingredients of these drugs. They made important discoveries in the field of vision and optics and advances in surgery. Revealing an early and growing recognition of germs and other disease pathways, the authorities chose to base Baghdad’s main hospital at a site where tests had shown that raw meat putrefied most slowly.

    Major medical schools were established in Damascus, Baghdad, Cordoba, and Cairo… Unlike the medieval Christian West, which tended to view illness and disease as divine punishment, the Arab physicians looked for imbalances or other physical causes that could be treated as part of their religious mission.”

    — JONATHAN LYONS, THE HOUSE OF WISDOM: HOW ARAB LEARNING TRANSFORMED WESTERN CIVILIZATION; CHAPTER 4 (BLOOMSBURY PUBLISHING)

    দ্বিতীয়ত, আপনি হিন্দুদের সাথে তুলনা দিয়েছেন, হিন্দুরা যদি শুধুমাত্র জীবনরক্ষা কারী ঔষধ হিসাবে গোমূত্র ব্যবহার করত, আমাদের কোনই আপত্তি ছিল না। কিন্তু বেচারা পাজিতদের ব্যাপারটা সম্পূর্নই ভিন্ন, আপনি কখনো কোন মুসলিমকে উটের মূত্র দ্বারা ওযু বা গোসল করতে দেখেছেন? না।বা আপনি জাস্ট একটা হাদিস দেখান এই মর্মে “হে মুমিন গণ তোমরা উটের মূত্র পান কর, কারণ এতে বরকত, সমৃদ্ধি, পরকালের মুক্তি রয়েছে”. দেখাতে পারবেন না আশা করি। কিন্তু হিন্দুদের বিশ্বাস গোমূত্র সম্পর্কে সম্পূর্নই bizarre যেমন এখানে উল্লেখ আছে, যে শুধুমাত্র অতীব জরুরি জীবনরক্ষাকারী চিকিতসা নয় কিছু আলতু ফালতু কাজ যেমন পবিত্রতা অর্জন, পাপমুক্তি, পুন্যার্জন ইত্যাদিতেও ঢালাও ভাবে গোবর ও গোমূত্র খাওয়াটা হিন্দু ধর্মীয় বিধান যা অত্যন্ত অযৌক্তিক। কারণ কোথায় জীবন বাচানো, আর কোথায় পাপ পুন্য নাশ তাও নোংরা বস্তু দিয়ে।

    জীবন বাচাতে তো আপনারা শূকরের ভ্যাকসিন নিতে যেহেতু আপত্তি করেন না তাহলে এরকম কোন ঔষধ থেকে থাকলে এগুলাতে আপত্তি হওয়া উচিত না কারণ আপনাদের নাস্তিকদের জন্য তো পাপ পুন্য পবিত্রতা, এক্সিস্ট করে না যা এক্সিস্ট করে তা হইল এই পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী জীবনের ভোগ আর বস্তুবাদ এবং আপনাদের জন্য বেচে থাকাটা হইল যক্ষের ধন কাজেই রোগীর জীবনরক্ষার গুরুত্ব আপনাকে আর বুঝাতে হবেনা আশা করি, সেই হিসাবেই বললাম। দ্বিতীয়ত উটের মূত্রের হাদিসগুলায় কোথাও যমযম কূপের পানির মতন ঢালাও ভাবে ফযীলত অর্জনের জন্য তা পান করতে বলা হয়নি বা এমন কোন বা সাধারণ কোন উতসাহও নেই, মূত্র টা ব্যবহারের অনুমতি আছে কিছু special circumstance এ। হিন্দুদের গোমূত্র নিয়ে অদ্ভুদ বিশ্বাস নিম্মরূপ:

    https://www.frommuslims.com/%e0%a6%b9%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a6%e0%a7%81-%e0%a6%a7%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ae%e0%a7%87-%e0%a6%97%e0%a7%8b%e0%a6%ae%e0%a7%82%e0%a6%a4%e0%a7%8d%e0%a6%b0-%e0%a6%96%e0%a6%be%e0%a6%93/#f+3031+3+18

    তৃতীয়ত উটের মূত্র দিয়ে চিকিতসা করার বিধান হিন্দু ধর্মেও পাওয়া যায়:

    আয়ুর্বেদ হতে:
    Ustramūtram (Urine of a Camel) (83)
    शोफकुष्ठोदरोन्मादमारुतकृमिनाशनम् ॥ ४६४
    अर्शोघ्न कारभं मूत्रं विजानीयाच्चिकित्सकः ॥
    S.S.Su. 45. 228.
    The urine of a camel is useful in oedema (anasarca), skin disorders,ascites, ummada (psychological disorders), pacifies vatadosa, worms and
    piles.
    শুধুমাত্র উটের মূত্রই নয় হিন্দুরা কতপ্রকারের মূত্র ব্যবহার করে দেখুন :

    Gomutram (Cow’s Urine) (77)
    गोमूत्र गोजलं गोम्भो गोपानीयं च गोस्रवः ॥
    गवापो गोकीलालं च गोनीरं सुरभीजलम् ॥ ४५७
    गोमूत्र कटु तिक्तोष्णं सक्षारं लेखन सरम् ॥
    लघ्वग्निदीपनं मेध्यं पित्तलं कफवातजित् ॥ ४५८
    मूत्रप्रयोगसाध्येषु गव्यं मूत्रं प्रयोजयेत् ॥ S.S.Su. 45.221
    गोमूत्र (Gomutram), गोजलं (Gojalam), गोम्भः (Gombhah), गोपानीयं
    (Gopaniyam), गोस्रवः (Gosravah), गवापः (Gavāpah), गोकीलाल (Gokilalam),
    गोनीर (Goniram), सुरभीजलम् (Surabhijalam) are synonymous.
    Gomitra is pungent, bitter and salty in taste. It pacifies kapha and vata dosas and aggravates pitta dosa. It is salty, slimming, mild laxative,laghu, stimulates digestive capacity and promotes intellect. When urine isto be prescribed as a medicine gomutra should be used.

    -Ajāmūtram (She goat’s urine)
    कासश्वासापहं शोफकामलापाण्डुरोगनुत् ॥ ४५९
    कटुतिक्तान्वितं द्वागमीषन्मारुतकोपनम् ॥
    S.S.Su. 45. 223.
    Ajamutra (she goat’s urine) is pungent and bitter in taste and slightlyaggravates vatadosa. It is useful in cough, dyspnoea. oedema, jaundice
    and anaemia.
    Mesimutram (Ewe’s urine) (79)
    Q
    Dhanvantari Nighanțu
    कासप्लीहोदरश्वासशोषवर्चो ग्रहे हितम् ॥ ४६०
    सक्षारं कटुकं तित्तमुष्णं वातघ्नमाविकम् ॥ S.S.Su. 45.224.
    Meşimutra is pungent, bitter and salty in taste, usnavirya, pacifies
    vatadosa. It is useful in cough, disorders of spleen, ascites, dyspnoea, con-
    sumption and constipation.

    Mahişimutram (Urine of a she buffalo) (80)
    दुर्नामोदरश्लेषु कुष्ठमेहादिव्याधिषु ॥ ४६१
    आनाहशोफगुल्मेषु पाण्डुरोगे च माहिषम् ॥
    S.S.Su. 45.222.
    “Jrine of a she buffalo is useful in piles, ascites, colics, skin disorders,
    polyuria (including diabetes melliuts), tympanites, anasarca, tumours
    (diverticulosis) and anaemia.
    Gajamutram (Urine of an elephant) (81)
    सतित्तं लवणं भेदि वातघ्नं पित्तकोपनम् ॥ ४६२
    तीक्ष्णं क्षारं किलासे च नागमूत्रं प्रयोजयेत् ॥
    S.S.Su. 45. 226.
    Gajamutra is bitter and salty in taste, purgative, pacifies vatadosa
    and aggravates pittadosa. It is sharp and salty and used in white patches
    on the skin.
    अश्वमूत्रं
    Aswamutram (Urine of a horse) (82)
    दीपनं कटुतिक्तोष्णं वातचेतोविकारनुत् ॥ ४६२
    आश्यं कफहरं मूत्र कृमिदद्वषु शस्यते ॥
    S.S.Su. 45.225.
    The urine of a horse is pungent and bitter in taste, usnavirya, pacifyvata kapha dosas, psychological disorders, and is useful in worms and dadru. (a skin disorder with itching)

    এগুলা বৈজ্ঞানিক কি অবৈজ্ঞানিক এই তর্কে আমাদের জড়ানোর কোন ইচ্ছা নাই। ওরা যদি এগুলা ব্যবহার করে করুক আমাদের কোনই সমস্যা নাই। আশা করি আপনি দুইটা পক্ষের এই মূত্র ব্যবহার সংক্রান্ত পার্থক্য গুলা বুঝতে সক্ষম হবেন।

    চতুর্থত, আপনাকে উপরের কমেন্টে নাফিজ ভাই কিছু বৈজ্ঞানিক প্রমাণও দিয়েছে, বিশ্বাস করা বা না করা আপনার ব্যাপার কিন্তু আমি কিছু বলি, উটের মূত্রের হাদিস গুলাতে দেখা যায় নবী (সা) মদিনা থেকে দূরবর্তী একটা “নির্দিষ্ট” স্থানের কিছু “নির্দিষ্ট” “যাকাতের” উটের দুধ ও মূত্র পানের অনুমতি কিছু “কাফের” লোককে দিয়েছিলেন। এখন এক্ষেত্রে এমন হওয়াটা খুব অস্বাভাবিক নয় যে উক্ত উট গুলো বিশেষ কোন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন উট এবং উক্ত উটের মূত্র ও দুধে আল্লাহ প্রদত্ত “বিশেষ বা execeptional কোন properties” ছিল । এই দাবি আপনি যেমন একেবারেই নাকচ করতে পারেন না। যেহেতু লোকগুলা উক্ত জিনিস পানে সুস্থতা লাভ করেছিল। এমন হওয়াটা খুবই অস্বাভাবিক নয় যে উক্ত চিকিতসা খালি উক্ত লোকগুলোর জন্যই উক্ত বিশেষ স্থানে উক্ত উটগুলোর মাধ্যমেই বরাদ্দ ছিল উক্ত চিকিতসার কার্যকরীতা সার্বজনীন ভাবে কাজ করবে এমন কোন indication উক্ত হাদিসে নাই। তাছাড়া মডার্ন মেডিসিনের কত ঔষধই তো সার্বজনীন ভাবে ও সমানভাবে সবার জন্য universally, absolutely and similarly কাজ করেনা। কারণ হাদিসে এমন কিছু নেই যে উক্ত মূত্র কোন মহা ঔষধ টাইপের কিছু এমন কোন গুণাগুন বর্ণিত নাই। আর আরবে যারা ব্যবহার করত তারা ইসলাম আরবে আসার আগে থেকেই ব্যবহার করত তারা উপকার না পাইলে ব্যবহার কেন করত? এই চিকিতসা ইসলামের নব্য কোন আবিষ্কার না। ইসলাম শুধু এধরণের চিকিতসাগুলা ব্যবহারের অনুমতি দেয় যখন অন্য কোন ঔষধ ব্যবহারের উপায় না থাকে। দেওয়ার পেছনের যৌক্তিকতা এই যে মুসলিমরা যেন জীবন রক্ষাকারী যেকোন ঔষধ তা সেটা নাপাক,হারাম, বিষাক্ত বা নোংরা বস্তু দিয়েই তৈরি হোক না কেন ততক্ষণাত বিকল্প উপায় না পাওয়া গেলে তা গ্রহণ করতে hesitate না করে ও বাধার সম্মুখীন না হয় যাতে প্রাণহানী না হয় । উলামারা এভাবেই দলিল নিয়েছেন। উপরে নাফিজ ভাই বদরউদ্দিন আইনি (রহ) এর ফতোয়া উল্লেখ করেছেন এরকমই। আর বর্তমানের কথা যদি বলেন বর্তমানে উলামাদের অভিমত এটাই যেহেতু এখন বিকল্প ঔষধ পাওয়া যাচ্ছে সেহেতু এখন উটের মূত্র ব্যবহারের কোন প্রয়োজনীয়তা নাই। কারণ উটের মূত্র তখনই ব্যবহার জায়েজ যখন অন্য বিকল্প ঔষধ না থাকে। চিকিতসা উটের মূত্র দিয়েই করতে হবে, বা এটা ব্যবহার করা ফরজ এমন তো কিছুনা। নিছক জায়েজ মাত্র, তাও বিপদে পড়লে। আর এটা অই ঘটনায় তো স্পষ্টই যে কাফেররা আগেও উটের মূত্র খাইত তাদের তাই ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হইছে। সিম্পলি ধরে নেন মুসলিম দেশে বসবাসকারী কোন খ্রিস্টান যদি বলে brandy নামক মদ খেলে আমার সর্দি জ্বর সারে ও মুসলিম শাসক যদি তাকে তা খাবার অনুমতি দেয় তাতে অন্যায়ের তো কিছু নাই।

    পঞ্চমত, আপনার বক্তব্য ছিল, যেটা আমি আগেও উল্লেখ করছি, আপনি বললেন যে কেন আল্লাহ হাদিসে উল্লেখিত উক্ত লোকেদের “এমনি এমনি” ভাল করে দিলেন না। Hold on ভাই, ওরা আল্লাহর এতটাও দয়া পাবার যোগ্য ছিল না, ওরা একে তো মিথ্যুক, ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে মিথ্যা বলছিল, দ্বিতীয়ত ওদের পরবর্তী কর্মকান্ড সম্পর্কে আল্লাহ আগে থেকেই অবশ্যই অবগত ছিলেন। ওরা সুস্থ হবার পর কি কি অপরাধ করছিল তা হাদিসগুলাতেই বর্ণিত আছে। তারপরেও এটাই ওদের প্রতি আল্লাহর দয়া যে ওদের মুনাফিকি ও মিথ্যাচারের ও সুস্থ হবার পরবর্তী অবশ্যম্ভাবী অপরাধ জানবার পরেও আল্লাহ ওদের ততক্ষণাত অসুস্থাবস্থাতেই গজব দিয়ে ধ্বংস করেন নাই, চাইলেই হয়ত করতে পারতেন, বরঞ্চ তিনি ওদেরকে দয়া করে ওদের ওদেরই নিজস্ব প্রচলিত চিকিতসা পদ্ধতি ইউজ করেই সুস্থ হবার একটা সুযোগ দিয়েছেন, ছাড় দিয়েছেন। কিন্তু ওরা তাতেও সংশোধন হয়নি। উপরন্তু নারকীয় কতিপয় অপরাধ করে বসল। প্রথমেই ওদের “এমনি এমনি” সুস্থ করে দেওয়াটা আসলে ওরা deserve করত না।

    এই ঘটনা দ্বারাই মুসলিমরা দলিল নেয় যে জীবন রক্ষাকারী চিকিতসার প্রয়োজনে যেকোন কিছু ব্যবহার করা জায়েজ। জীবনের মূল্যটাই বেশি ও জীবন রক্ষা করা ফরজ। এই ঘটনা না ঘটলে হয়ত আজকে মুসলিমরা কোন ঔষধ গ্রহণ করতেই হেজিটেট করত যেমন । হাদিস শাস্ত্রে কোথাও এমন কথা নেই যে উটের মূত্র পানে কোন না কোন ধার্মিক ও পরকালীন উন্নতি আছে, আর সুন্নাত সুন্নাত চিল্লাবেন না ভাই। সুন্নাত তখনই সাব্যস্ত হয় যখন রাসূলুল্লাহ স্বয়ং কোন কাজ করে থাকেন এবং নিজে তা এপ্লাই করেন নিজের উপর। উটের মূত্র দ্বারা চিকিতসা ইসলাম পূর্ব আরবের প্রথা ছিল, মানুষ যদি বেনিফিট না পেত তাহলে তা ইউজই করত না। আপনি বড়জোর এতটুক বলতে পারেন ইসলাম কেন মানুষকে উটের মূত্র খেতে বারণ করেনি। করেনি কেন আশা করি তা বুঝতেই পারছেন, কারণ ইসলাম চিকিতসার সবগুলা উপায় খোলা রাখতে চায়। সে চায় মানুষ সুস্থ হোক। কারণ নবী সা বলেছেন ” তোমরা ঔষধ গ্রহণ কর। কারণ আল্লাহ এমন কোন রোগ নেই যার ঔষধ সৃষ্টি করেন নাই”. ঔষধটা খুজে নেবার দায়িত্ব মানুষের। কারণ আল্লাহ বলেছেন, “যে জাতি নিজেদের সাহায্য করেনা আল্লাহও তাদের সাহায্য করেনা”। ইসলাম মানুষকে সুস্থ হবার সুযোগটা দেয় তা যা দিয়েই হউক, আপনাদের জান্নাত ইউরোপের পাদ্রীরা তো সেসময় কারো রোগ ব্যাধি হইলে তারে এক ঘরে করে রাখত তাকে চিকিতসা করতে দিত না। আশা করি পার্থক্যটা বুঝতে পারছেন। হিন্দুদের সাথে তো আমাদের তুলনাই হয়না। ওদের গোমূত্র ওদের ইবাদত বা প্রার্থনা বা পরিশুদ্ধির একটা মেইন অঙ্গ। ইসলামে এমন কিছু নেই। উটের মুত্র পানে বরকত সওয়াব পবিত্রতা অর্জন এমন কিছুই নেই।

    এখন আপনি হয়ত বলবেন, আল্লাহ কেন সুন্দর সুন্দর জিনিসে নিরাময় রাখলেন না এটার উত্তর খুবই স্বাভাবিক। কারণ আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন, তিনি কারো মুখাপেক্ষী নয়”

    তিনি এও বলেন:
    “وَعَسَىٰٓ أَن تَكۡرَهُواْ شَيۡ‍ٔٗا وَهُوَ خَيۡرٞ لَّكُمۡۖ وَعَسَىٰٓ أَن تُحِبُّواْ شَيۡ‍ٔٗا وَهُوَ شَرّٞ لَّكُمۡۚ وَٱللَّهُ يَعۡلَمُ وَأَنتُمۡ لَا تَعۡلَمُونَ٢١٦﴾ [البقرة: ٢١٦]

    “এবং হতে পারে কোন বিষয় তোমরা অপছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর হতে পারে কোন বিষয় তোমরা পছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য অকল্যাণকর। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ২১৬]”

    – উত্তর দিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরমিলা হবু ডাক্তার ভাই

    মণিহারা ফণী
    মণিহারা ফণী
    Reply to  On behalf of the authors
    2 months ago

    একদম Anti venom উত্তর ভাই।

    Back to top button