খ্রিস্টধর্মইসলাম

বাইবেল, কুরআন-সুন্নাহর আলোকে কে সর্বজনীন? মুহাম্মদ (সাঃ) নাকি যিশু?

কুরআন ও হাদিসের আলোকে মুহাম্মাদ সাঃ সর্বজনীন

আলহামদুলিল্লাহ, সকল প্রশংসা একমাত্র মহান আল্লাহর জন্য।

মহান আল্লাহ বলেনঃ

یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ قَدۡ جَآءَکُمُ الرَّسُوۡلُ بِالۡحَقِّ مِنۡ رَّبِّکُمۡ فَاٰمِنُوۡا خَیۡرًا لَّکُمۡ.

হে মানবজাতি! তোমাদের পালনকর্তার যথার্থ বাণী নিয়ে তোমাদের নিকট রসূল এসেছেন, তোমরা তা মেনে নাও যাতে তোমাদের কল্যাণ হতে পারে।[1]সূরা নিসা ৪.১৭০

আজ আমি আপনাদের সামনে লেখার মাধ্যমে তুলে ধরবো যে মুহাম্মাদ সাঃ কি সর্বজনীন নাকি শুধু মাত্র আরবদের জন্য। এ বিষয়ে আমার কলম ধরার কারণ হলো আমাদের সমাজের সাধারণ মুসলমানেরা প্রতিনিয়ত খ্রিস্টান মিশনারিদের এ প্রশ্নের সম্মুখীন হয় যে তোমাদের নবী মুহাম্মাদ সাঃ কি সর্বজনীন যে তুমি বাংলাদেশের অধিবাসী হয়ে আরবদের নবীকে অনুসরণ করো ইত্যাদি ইত্যাদি।

তো আমার লেখার প্রধান কারণ হলো এটাই যে সকল সহজ সরল মুসলমান যেন খ্রিস্টানদের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে পারে ও চোখে যেন আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারে যে মুহাম্মাদ সাঃ শুধু আরবদের কাছে প্রেরিত হননি ও তিনি শুধু আরবদের জন্য না বরং তিনি পুরো বিশ্ববাসীর জন্য রহমত, সুসংবাদদাতা, সতর্ককারী হিসাবে প্রেরিত হয়েছে।

আজ আমরা মুহাম্মাদ সাঃ যে সর্বজনীন এ লেখাকে দু’ভাবে বা দু’পন্থায় উপস্থাপন করবো।

  • কুরআনের আলোকে
  • সুন্নাহ বা হাদিসের আলোকে

তো আসুন আমরা আর বেশি দেরি করবো না সরাসরি আমাদের মূল আলোচনাতে প্রবেশ করি।

আপনারা যদি কুরআনের প্রতি একটু ভালো ভাবে লক্ষ্য করেন তাহলে অনেক আয়াত দেখতে পারবেন যেঃ

  1. (হে নবী তুমি) বলে দাও, হে মানব জাতি। তোমাদের সবার প্রতি আমি আল্লাহ প্রেরিত রসূল, সমগ্র আসমান ও যমীনে তার রাজত্ব।[2]সূরা আরাফঃ ৭.১৫৮

  2. আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যে সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী রূপে পাঠিয়েছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।[3]সূরা আস-সাবাঃ ৩৪.২৮

  3. আর আমি আপনাকে পাঠিয়েছি মানবজাতির প্রতি আমার পয়গামের বাহক হিসাবে। আর আল্লাহ সব বিষয়েই যথেষ্ট – সববিষয়ই তাঁর সম্মুখে উপস্থিত।[4]সূরা আন-নিসাঃ ৪.৭৯

  4. হে মানবজাতি! তোমাদের পালনকর্তার যথার্থ বাণী নিয়ে তোমাদের নিকট রসূল এসেছেন, তোমরা তা মেনে নাও যাতে তোমাদের কল্যাণ হতে পারে।[5]সূরা আন-নিসাঃ ৪.১৭০

  5. আলিফ-লাম-রা; এটি একটি গ্রন্থ, যা আমি আপনার প্রতি নাযিল করেছি-যাতে আপনি মানবজাতিকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন-পরাক্রান্ত, প্রশংসার যোগ্য পালনকর্তার নির্দেশে তাঁরই পথের দিকে।[6]সূরা ইব্রাহিমঃ ১৪.১

  6. পরম কল্যাণময় তিনি যিনি তাঁর বান্দার প্রতি ফয়সালার গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন, যাতে সে (মুহাম্মাদ সাঃ) বিশ্বজগতের জন্যে সতর্ককারী হয়।[7]সূরা ফুরকানঃ ২৫.১

  7. (হে নবী ) আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি।[8]সূরা আম্বিয়াঃ ২১.১০৭

আরো রেফারেন্সঃ

  • সূরা ইউনুসঃ ১০.২, ১০.১০৪

তো আলহামদুলিল্লাহ উপরে আমরা কুরআন থেকে অনেক রেফারেন্স উপস্থাপন করেছি যা থেকে প্রমাণিত হয় যে মুহাম্মাদ সাঃ পুরো পৃথিবীর জন্য বা পুরো বিশ্ববাসীর ও পুরো মানবজাতির জন্য শুধু মাত্র আরবদের জন্য না।

এখন আসুন আমরা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর হাদিস বা সুন্নতের আলোকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো যে মুহাম্মাদ সাঃ কি সর্বজনীন কিনা। তবে আমি হাদিস থেকে রেফারেন্স উপস্থাপন করার সময় সে হাদিসে কি আছে সেটা আনবো না। আমি শুধু সে হাদিসে যেটা আছে সেটার টাইটেল লিখে নিচে রেফারেন্স উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ। তো আপনারা যদি দেখেনঃ

রাসুলুল্লাহ সাঃ কে সকলের জন্য রহমত করে পাঠানো হয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ

  1. সুনানে আদ-দারেমী – অধ্যায়ঃ ভূমিকা, হাদিসঃ ১৫
  2. তাখরীজ বাযযারঃ ৩. ১১৪ ও ২৩৬৯
  3. তাবারানী আস-সগীরঃ ১.৯৫
  4. আল-আওসাতঃ ৫.৩০
  5. মুসনাদুশ শিহাবঃ ১১৬০ ও ১১৬১
  6. বাইহাকী দালাইলঃ ১.১৫৮

রাসুলুল্লাহ সাঃ কে সকলের জন্য শিক্ষক করে পাঠানো হয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ

  1. মিশকাতুল মাসাবীঃ ১৩. ৩২৪৯
  2. সহীহ্ মুসলিমঃ ১৪৭৮
  3. সিলসিলাতুল সহীহাঃ ৩৫৩০
  4. সহীহ্ আল জামিঃ ১৮০৬

রাসুলুল্লাহ সাঃ কে জ্বিন জাতি ও মানব জাতির জন্য পাঠানো হয়েছে।

তথ্যসূত্রঃ

  1. সুনানে আদ-দারেমীঃ অধ্যায়ঃ ভূমিকা, হাদিসঃ ৪৭
  2. তাখরীজ হাকিমঃ ২.৩৫০
  3. বাইহাকী দালাইলঃ ৫.৪৮৬ ও ৪৮৭
  4. তাবারানী কাবীরঃ ১১. ২৩৯ ও ২৪০ ও ১১৬১০

তো আলহামদুলিল্লাহ রাসুলুল্লাহ সাঃ যে সর্বজনীন সেটা আমরা যথাযথ কুরআনের আয়াত ও হাদিসের আলোকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আশা করি এর পরে আমাদের সকল মুসলমান ভাইদের আর কোনো সমস্যা হবে না। যে সকল খ্রিস্টানরা আমাদের মুসলমান ভাইদের পথভ্রষ্ট ও গোমরাহি করতে চাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলে যে মুহাম্মাদ সাঃ কি সর্বজনীন আমার সে সকল ভাই যেন এ সকল রেফারেন্সের উপর ডিফেন্স করে তাদের কাউন্টার দেয়। মহান আল্লাহ আমাদের সকল মুসলমান ভাইদের কে সকল পথভ্রষ্ট খ্রিস্টানদের ফাঁদ থেকে বাঁচার তৌফিক দান করুক,, আমিন,,।

যিশু কি সর্বজনীন? বাইবেল ও কুরআন কি বলে?

তো আসুন এবার আমরা পবিত্র বাইবেল ও কুরআনের আলোকে দেখবো যে যিশু কি সর্বজনীন নাকি শুধু মাত্র বনী ইসরায়েলের জন্য। আসলে বাইবেল ও কুরআনের আলোকে যিশু হলো শুধু মাত্র বানী ইসরায়েলের জন্য। এটা আমার নিজের কথা না এটা হলো বাইবেল ও কুরআনের কথা। তো আসুন আমরা অতিরিক্ত কথা না বলে সরাসরি রেফারেন্স গুলো উপস্থাপন কি।

কুরআনের আলোকে যিশু শুধু বনী ইসরায়েলের জন্য

  1. আর বণী ইসরাঈলদের জন্যে রসূল হিসেবে তাকে মনোনীত করবেন। তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে এসেছি নিদর্শনসমূহ নিয়ে।[9]সূরা আলে-ইমরানঃ ৪৯

  2. অতঃপর ঈসা (আঃ) যখন বণী ইসরায়ীলের কুফরী সম্পর্কে উপলব্ধি করতে পারলেন, তখন বললেন, কারা আছে আল্লাহর পথে আমাকে সাহায্য করবে?[10]সূরা আলে-ইমরানঃ ৫২

  3. বনী-ইসলাঈলের মধ্যে যারা কাফের, তাদেরকে দাউদ ও মরিয়মতনয় ঈসার মুখে অভিসম্পাত করা হয়েছে। এটা একারণে যে, তারা অবাধ্যতা করত এবং সীমালঙ্ঘন করত।[11]সূরা মায়িদাহঃ ৭৮

  4. স্মরণ কর, যখন মরিয়ম-তনয় ঈসা (আঃ) বললঃ হে বনী ইসরাইল! আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর প্রেরিত রসূল, আমার পূর্ববর্তী তওরাতের আমি সত্যায়নকারী এবং আমি এমন একজন রসূলের সুসংবাদদাতা, যিনি আমার পরে আগমন করবেন। তাঁর নাম আহমদ। অতঃপর যখন সে স্পষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে আগমন করল, তখন তারা বললঃ এ তো এক প্রকাশ্য যাদু।[12]সূরা আস-সাফঃ ৬

তো দেখুন আমি আপনাদের সামনে কুরআন থেকে সরাসরি চারটি আয়াত তুলে ধরেছি, যে গুলো আয়াত দেখলে সুস্পষ্ট বুঝা যায় যে যিশু শুধু মাত্র বনী ইসরায়েলদের জন্য। কারন সূরা ইমরানঃ ৪৯ তে সরাসরি বলা হয়েছে তাকে ইসরায়েলদের রাসুল করেই পাঠানো হবে। এতেই শেষ, খ্রিস্টানদের সকল প্রতারণা বন্ধ।

তো এবার আসুন আমরা বাইবেলের আলোকে দেখবো যে যিশু কি সর্বজনীন নাকি শুধুমাত্র বনী ইসরায়েলদের জন্য।

বাইবেলের আলোকে যিশু শুধু মাত্র বনী ইসরায়েলের জন্য

যিশু বললেন, “আমাকে কেবল ইস্রায়েল-বংশের হারানো মেষদের কাছেই পাঠানো হয়েছে।[13]মথিঃ ১৫.২৪

দেখুন যিশুও এখানে সরাসরি নিজের মুখে বলছে যে আমি শুধু মাত্র বানী ইসরায়েলের জন্য বা আমাকে পাঠানো হয়েছে। যে ব্যক্তিকে নিয়ে আমি লেখতে বসেছি সে নিজেই দাবি করতাছে যে সে শুধু মাত্র বানী ইসরায়েলের জন্য সেখানে আমি আর কি বলবো বা লেখবো।

তো আসুন আমরা আরো রেফারেন্স উপস্থাপন করি।

সেই স্ত্রীলোকটি কিন্তু যীশুর কাছে এসে তাঁকে প্রণাম করে বলল, “প্রভু, আমার এই উপকারটা করুন।” যীশু বললেন, “ছেলেমেয়েদের খাবার নিয়ে কুকুরের সামনে ফেলা ভাল নয়।”[14]মথিঃ ১৫. ২৫ ও ২৬

যিশু যে শুধু মাত্র বানী ইসরায়েলদের জন্য সে কারণেই তিনি সামেরীয় অ-ইহুদী স্ত্রী লোকের মেয়েকে সুস্থ করতে অস্বীকার করেছেন। কারণ তার সমস্ত অলৌকিক কাজ ছিলো যিহুদা বা ইহুদিদের জন্য। যা দিয়ে সে ইহুদিদের কে সাহায্য করতো এ কারণেই সে অইহুদী মহিলাকে সাহায্য করতে অস্বীকার করেছিলো।

যীশু সেই বারোজনকে এই সব আদেশ দিয়ে পাঠালেন, “তোমরা অযিহূদীদের কাছে বা শমরীয়দের কোন গ্রামে যেয়ো না, বরং ইস্রায়েল জাতির হারানো মেষদের কাছে যেয়ো।[15]মথিঃ ১০. ৫-৬

তো দেখুন যিশু কিন্তু তার শিষ্যদের বার বার বলতে ছিলো যে তোমরা সুসংবাদ প্রচারের জন্য যিহুদা জাতির কাছে যেও কিন্তু অযিহুদাদের কাছে যাবে না। এর মাধ্যমেও প্রমাণিত হয় যে যিশু সর্বজনীন না শুধু মাত্র বানী ইসরায়েলদের জন্য প্রেরিত।

যিশু যে শুধু মাত্র বানী ইসরায়েলদের জন্য ও সে যে সর্বজনীন না এ সম্পর্কে আরো রেফারেন্সঃ

  1. মথিঃ ১.২১, ২.২, ৪.২৩, ৯.৩৫, ১২.৯, ২১.১২ ও ২৩, ২৪.১
  2. মার্কঃ ১.২১, ৩.১, ৬.২, ১১.১৫, ১২.৩৫ ও ৪১
  3. লূকঃ ২.৪৬, ৪. ১৫ ও ১৬, ৬.৬, ২০.১, ২১.১-৩
  4. যোহনঃ ২.১৩, ৬.৫৯, ৭.১৪, ১০.২৩

আমরা যথাযথ ভাবে কুরআন ও বাইবেল থেকে রেফারেন্স উপস্থাপন করে প্রমান করেছি যে যিশু সর্বজনীন না। এরপরও যদি খ্রিস্টান নামক কিছু পথভ্রষ্টরা এ বিষয় নিয়ে মিথ্যাচার করে তাহলে আমরা বলবো যেঃ

তারা দেখেও দেখে না বুঝেও বুঝে না শুনেও শুনে না…[16]মথিঃ ১৩.১৩[17]ইসাইয়াঃ ৪২.২০[18]লুকঃ ৮.১০[19]প্রেরিতঃ ১৭.৩০[20]রোমীয়ঃ ১১.৮

কুরআনের দুইটি আয়াত নিয়ে খ্রিস্টানদের একটি মিথ্যাচার ও তার খণ্ডন

খ্রিস্টানদের দাবিঃ আপনারা মুসলমানেরা বলেন যে মুহাম্মাদ সাঃ নাকি সর্বজনীন বা পুরো বিশ্ববাসীর জন্য ও পুরো মানবজাতির জন্য। কিন্তু কুরআনের দুইটি আয়াতে বলা হয়েছে যে মুহাম্মাদ সাঃ শুধু,, মক্কা ও তার চতুর্থদিকের মানুষের জন্য

  • সূরা আনআমঃ ৬.৯২
  • সূরা শূরাঃ ৪২.৭

তো আপনারা মুসলমানেরা এখন কি বলবেন যে নবী মুহাম্মাদ সাঃ কি পুরো মানবজাতির জন্য নাকি শুধু মক্কা ও তার চতুর্থদিকের মানুষের জন্য এটার যথাযথ জবাব চাই।

জবাবঃ আলহামদুলিল্লাহ। জি আপনাদের অনেক ধন্যবাদ যে এতো সুন্দর ভাবে প্রশ্ন করার জন্য ও তার সমাধান চাওয়ার জন্য। আসলে আপনে যে দুই আয়াত উল্লেখ করে প্রশ্ন করেছেন তাহলোঃ

  • সূরা আনআমঃ ৬.৯২
  • সূরা শূরাঃ ৪২.৭

আর এ আয়াত দুইটি যে আরবি ব্যবহার হয়েছে তাহলোঃ

لِّتُنۡذِرَ اُمَّ الۡقُرٰی وَمَنۡ حَوۡلَہَا

উচ্চারণঃ লাতুনযিরা উম্মাল কুরা ওয়া মান হাওলাহা

সাধারণত এখানে আমরা দুইটা জিনিস পাচ্ছি সেগুলো হলো

  • উম্মাল কুরা
  • হাওলাহা

আসুন আমরা সরাসরি বিখ্যাত বিখ্যাত মুফাসসিরদের তাফসীর থেকে এ উম্মাল কুরা ওয়া মান হাওলাহা এর ব্যাখ্যা জানবো। যে তারা এর সম্পর্কে কি মতামত দিয়েছে।

১. বিখ্যাত মুফাসসির তাবারী (রঃ)। তাবারী এ দুইটি আয়াতের তাফসীর করতে গিয়ে বলেনঃ

عن علي بن أبي طلحة, عن ابن عباس قوله: ” ولتنذر أم

القرى ومن حولها “، يعنى ب ” أم القرى “، مكة =” ومن حولها “، من القرى إلى المشرق والمغرب.13551- حدثني محمد بن سعد قال، حدثني أبي قال، حدثني عمي قال، حدثني أبي, عن أبيه, عن ابن عباس قوله: ” ولتنذر أم القرى ومن حولها “، و ” أم القرى “، مكة =” ومن حولها “، الأرض كلها.13552

উচ্চারণঃ আন আলি ইবনু আবু তলহাতিন আন ইবনু আব্বসীন রাঃ কওলিহিঃ- ওয়াতুনযিরু উম্মুল কুরা ওয়া মান হাওলাহা ইয়ানাবিন উম্মুল কুরা মাক্কাতা ওয়া হাওলাহা মানিল কুড়ায়ি ইলাল মাশরিকি ওয়াল মাগরিব

অর্থঃ আলি ইবনু আবু তালহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন ইবনে আব্বাস রাঃ বলেছেন যে মুহাম্মাদ সাঃ কে উম্মুল কুরা ও তার চতুর্থদিকের মানুষের জন্য পাঠানোছে। আর এ উম্মুল কুরা হলো মক্কা এবং হাওলাহা হলো কুরা মানে মক্কা থেকে পূর্ব ও পশ্চিম। অর্থাৎ মক্কা ও তার চতুর্থদিকে মানে মুহাম্মাদ সাঃ কে পুরো পৃথিবীর জন্য পাঠানো হয়েছে (الأرض كلها)[21] তাফসীরে তাবারীর সূরা আনআমঃ ৬.৯২ আয়াতের তাফসীর

আসলে তাবারীর তাফসির আমাদের কে জানাচ্ছে যে মুহাম্মাদ সাঃ কে মক্কা ও তার চতুর্থদিকের মানুষের জন্য পাঠানো হয়েছে মানে মক্কা থেকে পূর্ব যত দূর ও মক্কা থেকে পশ্চিম যত দূর অর্থাৎ মাশরিকি ওয়াল মাগরিবাইন ততদূর পর্যন্ত তার নবুওয়ত। কিন্তু তাবারী শেষের দিকে বলেছে পুরো পৃথিবীর মানুষের জন্য (الأرض كلها)। আসলে আমরা হাওলাহা বা মক্কার চতুর্থদিকে বলতে মক্কা থেকে মদিনা বা মক্কা থেকে মিশর,ফিলিস্তিন, বাহরাইন, জর্ডান এসব বুঝবো না। আর এতো টুকু সীমানার জন্য মুহাম্মাদ সাঃ কে পাঠানো হয়নি বরং মক্কার চতুর্থদিকে বলতে মক্কা থেকে পূর্ব ও পশ্চিম বুঝিয়েছে। কারন মহান আল্লাহ এখানে ফিতা দিয়ে মেপে দেয়নি যে হে মুহাম্মাদ সাঃ আমি তোমাকে মক্কা থেকে ১০০ কিঃমিঃ বা ১০০০ কিঃমিঃর জন্য পাঠিয়েছি। তো আশা করি আপনারা যথাযথ আয়াত দুইটির সমাধান পেয়েছেন।

আপনারা সবাই এ দুইটি সূরার আয়াতের ব্যাখ্যা জানার জন্য দেখুন যেখানে ইমাম তাবারীর পাশাপাশি আরো বিখ্যাত বিখ্যাত মুফাসসিরগণ বলেছেন মক্কা ও তার চতুর্থদিকে বলতে মাশরিকি ওয়াল মাগরিবি মানে মক্কা থেকে পূর্ব যত দূর ও মক্কা থেকে পশ্চিম যত দূর ততদূর পর্যন্ত মুহাম্মাদ সাঃ কে পাঠানো হয়েছে মানে পুরো পৃথিবীর জন্য।

  1. তাফসীর ইবনে কাছিরঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ- পৃষ্ঠাঃ ৮৩৯
  2. তাফসীর ইবনে কাছিরঃ তাওহীদ পাবলিকেশন্সঃ খন্ডঃ ৮,পৃষ্ঠাঃ ১৩১
  3. তাফসীরে জালালাইনঃ খন্ডঃ ২,পৃষ্ঠাঃ ২৮০
  4. তাফসীরে ফাতহুল মাজীদঃ খন্ডঃ ১,পৃষ্ঠাঃ ৫৮১
  5. তাফসীরে আবু বকর যাকারিয়াঃ খন্ডঃ ১,পৃষ্ঠাঃ ৬৬৮
  6. তাফসীরে ফি যিলালিল কুরআনঃ খন্ডঃ ৫, পৃষ্ঠাঃ ২৫৪
  7. তাফসীরে মা’আরেফুল কোরআনঃ পৃষ্ঠাঃ ১২১০

আসল কথা হলো এখানে কোথাও বলা হয় নি যে, কুরআন শুধুমাত্র মক্কা আর তার আশেপাশের জন্য নাযিলকৃত। সারাবিশ্বের সাবসেটে মক্কাও পড়ে।

    Footnotes

    Footnotes
    1সূরা নিসা ৪.১৭০
    2সূরা আরাফঃ ৭.১৫৮
    3সূরা আস-সাবাঃ ৩৪.২৮
    4সূরা আন-নিসাঃ ৪.৭৯
    5সূরা আন-নিসাঃ ৪.১৭০
    6সূরা ইব্রাহিমঃ ১৪.১
    7সূরা ফুরকানঃ ২৫.১
    8সূরা আম্বিয়াঃ ২১.১০৭
    9সূরা আলে-ইমরানঃ ৪৯
    10সূরা আলে-ইমরানঃ ৫২
    11সূরা মায়িদাহঃ ৭৮
    12সূরা আস-সাফঃ ৬
    13মথিঃ ১৫.২৪
    14মথিঃ ১৫. ২৫ ও ২৬
    15মথিঃ ১০. ৫-৬
    16মথিঃ ১৩.১৩
    17ইসাইয়াঃ ৪২.২০
    18লুকঃ ৮.১০
    19প্রেরিতঃ ১৭.৩০
    20রোমীয়ঃ ১১.৮
    21 তাফসীরে তাবারীর সূরা আনআমঃ ৬.৯২ আয়াতের তাফসীর
    Show More
    0 0 votes
    Article Rating
    Subscribe
    Notify of
    guest
    0 Comments
    Inline Feedbacks
    View all comments
    Back to top button