নারীবাদ

আশ-শিফা (রাঃ)-কে কি বাজারের কাজে রাখা হয়েছিলো?

হিজাবী ফেমিনিস্টদের অপপ্রচার খণ্ডন

হিজাবী ফেমিনিস্টদের আরেকটি দাবি হলো উমর (রাঃ) নাকি মহিলা সাহাবী আশ-শিফা (রাঃ)-কে মদিনার বাজার পরিচালনার কাজে নিযুক্ত করেছেন। আর তাতে নাকি নারী নেতৃত্ব প্রমাণ হয়ে যায়। অনেকে এখান থেকে হিজাবের শিথিলতা প্রমাণ করতে চায়। এই কাজে হাত মিলিয়েছেন মডারেট মুফতিরা। আমরা ধাপে ধাপে বিষয়টি দেখছি চলুন।

মডারেট শায়েখ আবু আমিনা ইলিয়াসের এদিক সেদিক

একজন পশ্চিমা শায়েখ আবু আমিনা ইলিয়াস নিজের ওয়েবসাইটে ‘নারী নেতৃত্ব'[1]প্রসঙ্গ যখন ‘ইসলাম বনাম নারী নেতৃত্ব’ হালাল প্রমাণ করার জন্য ইংরেজি ভাষায় জাল-যঈফ হাদিসের সমাহারে একটি লেখা লিখেছেন। যার মাধ্যমে আমাদের উম্মাহ বিভ্রান্ত হচ্ছে, সে কনটেন্টগুলো কাজে লাগাচ্ছে হিজাবী ফেমিনিস্টরা। আবু আমিনা ইলিয়াসের লেখা থেকে খণ্ডিতাংশ দেখুনঃ

 

আশ-শিফা (রাঃ)-কে কি বাজারের কাজে রাখা হয়েছিলো?

খেয়াল করে দেখুন, তিনি এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যাতে মনে হয় সামরাহ বিনতে নাহিককে (রাঃ) বাজারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আর উমর (রাঃ) বাজারে গেলে সামরাহ বিনতে নাহিকের (রাঃ) সাথে দেখা করতেন।

প্রথমত, আমরা আগেই দেখিয়েছি যে এটা প্রমাণিত নয় যে সামরা বিনতে নাহিক (রাঃ) কে বাজারের কাজে নিযুক্ত করা হয়েছিলোঃ

দ্বিতীয়ত, উমর (রাঃ) সামরা বিনতে নুহাইক (রাঃ) এর সাথে নয়, বরং সাহাবী আশ-শিফা (রাঃ) এর সাথে দেখা করতে যেতেন। আমরা ক্রস চেক করে তাই পেয়েছি। তিনি ইবনুল জাউযির (রহঃ) বর্ণিত হাদিসটির একটি অংশ কাটছাঁট করে বসিয়েছেনঃ

وكان عمر رضي الله عنه إذا دخل السوق ودخل عليها
“ওমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) যখন বাজারে যেতেন, তখন তার (এখানে তার শব্দটি স্ত্রীলিঙ্গের) কাছে যেতেন।”

আসুন পূর্ণ হাদিসটি দেখি…। হাদিসটি বর্ণিত আছে…

  • ইবনুল জাউওযির ‘মানাকিব’ কিতাবে।[2]মানাকিব, পৃ ৫৯
  • ইবনে সা’দের তাবাক্বাতে[3]তাবাক্বাতে ইবনে সা’দ ৩/২৮১
  • ইবনুল মুবাররাদের ‘কিতাব মাহদ আলসাওয়াব ফী ফাদায়িল আমির আলমুমিনীন উমার বিন আলখাতাব’ কিতাবে।[4]কিতাব মাহদ আলসাওয়াব ফী ফাদায়িল আমির আলমুমিনীন উমার বিন আলখাতাব ১/৩১১ https://shamela.ws/book/12062/288
  • ইবনুল আনবারির ‘কিতাব আলজাহির ফী মায়ানী কালিমাত আলনাস’ কিতাবে।[5]কিতাব আলজাহির ফী মায়ানী কালিমাত আলনাস ২/২৩০ https://shamela.ws/book/5644/746
  • আল বুখারির ‘কিতাবুল তারিখুল আওসাত’-এ।[6]كتاب التاريخ الأوسط ১/৫৩ https://shamela.ws/book/5782/53
  • ইবনুল আছির ও আবু আল হাসানের ‘কিতাবুল আসাদ আল-গ্বাবাত ফি মারেফাত আলসাহাবাতুল ফিকর’ কিতাবে।[7]‘كتاب أسد الغابة في معرفة الصحابة ط الفكر’ ৩/৬৬৭ https://shamela.ws/book/23700/1753
  • ইমাম বুখারীর ‘আদাবুল মুফরাদ’ [8]আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ৫৭০ https://shamela.ws/book/9647/562 ; বঙ্গানুবাদে হাদিস নং ১০৩৩ এ http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=46417

মূল হাদিসটি দেখি চলুন। [9]Umar ibn al-Khattab – His Life and Times, Dr. ‘Ali Muhammad as-Sallabi, Translated by Nasiruddin al-Khattab, Vol 1, page 228 https://www.kalamullah.com/Books/Umar-Ibn-Al-khattab-Volume-1.pdf

আশ-শিফা (রাঃ)-কে কি বাজারের কাজে রাখা হয়েছিলো?

আদাবুল মুফরাদের বাংলা অনুবাদ থেকেঃ

❝…আবু বাকর ইবনে সুলায়মান ইবনে আবু হাসমা (রাঃ)-এর দাদী আশ-শিফা (রাঃ) প্রথম মুহাজিরদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) বাজারে গেলে তার সাথে অবশ্যই সাক্ষাত করতেন।…❞[10]https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=46417

আশ-শিফা (রাঃ) ও তার ছেলে সুলাইমান বিন আবু হাসামাহ বিন হুযাইফা (রাঃ) উভয়েই সাহাবী ছিলেন। এতটুকু প্রমাণ হয়ে গেলো যে উমর রাঃ কোনোভাবেই সামরাহ বিনতে নুহাইক (রাঃ) এর সাথে নয় বরং দাদীর বয়সী আশ-শিফা (রাঃ) এর সাথে দেখা করতে যেতেন।

উমর (রাঃ) কেন আশ-শিফা (রাঃ) এর সাথে দেখা করতেন?

এখানে অনেকে প্রমাণ খুঁজতে পারে যে আশ-শিফা (রাঃ)-কে বাজারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো। মূল বিষয়টি তা নয়। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,

আবু বকর ইবন সুলায়মান ইবন আবি হাসমা (রহঃ) হইতে বর্ণিত, উমর ইবন খাত্তাব (রাঃ) একদিন সুলায়মান ইবন আবি হাসমাকে ফজরের নামাযে উপস্থিত পান নাই। উমর ইবন খাত্তাব (রাঃ) বাজারের দিকে গমন করিলেন। আর সুলায়মানের বাসগৃহ বাজার ও মসজিদের মাঝপথে অবস্থিত। তিনি সুলায়মানের জননী শিফা’-এর নিকট গমন করিলেন। তারপর তাহাকে বলিলেনঃ আমি ফজরের নামাযে সুলায়মানকে দেখিলাম না যে? তিনি (উত্তরে) বলিলেনঃ সে রাত্রে জাগ্রত থাকিয়া নামায পড়িয়াছিল, পরে ঘুমাইয়া পড়িয়াছে। (ইহা শুনিয়া) উমর (রাঃ) বললেনঃ ফজরের নামাযের জামাআতে হাজির হওয়া আমার নিকট সারারাত (নফল) নামায পড়া হইতে পছন্দনীয়।[11]মুয়াত্তা ইমাম মালিক [বঙ্গানুবাদ], হাদিস নং ২৮৭ https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=73180 ; মিশকাতুল মাসাবিহ ১০৮০ https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=55640 ; সহীহ আত্ তারগীব ৪২৩; মুসান্নাফে আব্দুর … See Full Note

অর্থাৎ, আশ-শিফা (রাঃ) এর বাড়ি ছিলো বাজার এবং মসজিদের মাঝপথে। সেজন্য তিনি দেখা করতেন।

আশ-শিফা (রাঃ) কে মদিনার বাজারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো?

বিদেশী অনেক জায়গাতেই বিভিন্নভাবে প্রচার চালানো হয়েছে, প্রথমে দেখি বাংলাভাষীরা কীভাবে দাবিগুলো করে…

হিজাবী ফেমিনিস্টদের দাবির নমুনা

একজন লেখিকার পেইজের পোস্টের চুম্বকাংশঃ

আশ-শিফা (রাঃ)-কে কি বাজারের কাজে রাখা হয়েছিলো?

আশ-শিফা (রাঃ)-কে কি বাজারের কাজে রাখা হয়েছিলো?

তিনি ভিন্ন ধরনের একটি কিতাবের মাধ্যমে জনপ্রিয় হলেও, তার জনপ্রিয়তাকে তিনি ভুল কাজে লাগাচ্ছেন, সেটা আমরা একটু পরেই দেখতে চলেছি।

একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটরের ভিডিয়োর বিশেষাংশঃ

আশ-শিফা (রাঃ)-কে কি বাজারের কাজে রাখা হয়েছিলো?

অর্থাৎ, এখানে যে উক্ত মহিলা অনলাইনের দুই লাইন ইংলিশ পড়েই ফতোয়া দিয়ে যাচ্ছেন সেটা কি খেয়াল করলেন? সে যাই হোক, কোনো কিছু আরবি কিতাবে লেখা থাকলেই সেটা সত্য হয়ে যায় না। দলিলের সনদ ও মতন যাচাই করে তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সনদ যাচাই

এই ঘটনা কোনোভাবেই প্রমাণিত নয়। অনেক আলেম এটার খণ্ডন করেছেন, অনেকে জাল পর্যন্ত বলেছেন।

সনদবিহীন বর্ণনা

এটি কোনো ‘সনদ ছাড়াই’ বর্ণনা করেছেন ইবনে আব্দুল বার, ইবনু সা’দ, আল হাফিজুল মাযী, আল হাফিজ ইবনে হাজার আসকালানী, আবু নাঈম আল আসবাহানী। সেই সনদবিহীন বর্ণনা গ্রহণযোগ্য নয়। যেমনঃ

ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ সনদবিহীনভাবে লিখেছেন,

সম্ভবত উমর (রাঃ) শিফাকে (রাঃ) বাজারের উপর কিছু কর্তৃত্ব দিয়েছিলেন।[12]আল ইসাবা (৪/১৪), তাহদীবুল তাহদীব (৮৯৭৩).

ইবনে আসাকার রহঃ বলেন:

কথিত আছে যে ওমর ইবনে আল-খাত্তাব তাকে বাজারের কাজে লাগিয়েছিলেন।”[13]তারিখে দামিষ্ক ২২/২১৬

এগুলোর কোনো চেইন অব ন্যারেশন নেই। এবং এগুলো আমাদের জন্য দলিলযোগ্য নয়। উপরন্তু তাঁরা শুধু কথিত আছে লিখেছেন।

সনদযুক্ত বর্ণনা

আমরা খুঁজতে খুঁজতে শুধুমাত্র একটি সনদযুক্ত বর্ণনা পেয়েছি এই ঘটনার। ইবনে আবু আসিম তাঁর ‘কিতাব আলহাদ ওয়ালমাথানি লিয়াবন আবি আসিম’ কিতাবে এটি বর্ণনা করেছেনঃ[14]‘কিতাব আলহাদ ওয়ালমাথানি লিয়াবন আবি আসিম’ এর খণ্ড ৬, পৃ ৪, হাদিস নং ৩১৭৯ এ https://shamela.ws/book/9196/4044

– حدثنا دحيم , عن رجل , سماه عن ابن لهيعة , عن يزيد بن أبي حبيب , أن عمر , رضي الله عنه استعمل الشفاء على السوق قال: ولا نعلم امرأة استعملها غير هذه

দাহিম আমাদেরকে বলেছেন, একজন ব্যক্তির কর্তৃত্বে, যিনি ইবনে লাহিয়ার কর্তৃত্বে, ইয়াজিদ বিন আবি হাবিবের কর্তৃত্বে বর্ণিত হয়েছে, উমর (রাঃ) শিফা নামক এক মহিলাকে বাজারের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের কাজে নিয়োগ দিয়েছিলেন। এটা ছাড়া অন্য কোনো মহিলাকে আমরা জানি না [যাকে এরকম কোনো কাজে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিলো]।

এই সনদ সম্পর্কে সাঈদ বিন ওয়াহফ আল-কাহতানি (রহঃ), শেহতা সাকার (রহঃ) আলোচনা করেছেন, আলেমগণের আলোচনা এনেছেন,[15]কিতাব আলখতিলাত বাইন আলরিজাল ওয়ালনিসা’ (সাঈদ বিন ওয়াহফ আল-কাহতানি), পৃ ১৮৩ https://shamela.ws/book/96456/182#p1[16]কিতাব আলখতিলাত বাইন আলরিজাল ওয়ালনিসা’ (শেহতা মুহাম্মদ সাকারের), ২/৬৩৮ https://shamela.ws/book/26006/635

  1. এখানে ইবনে লাহিয়া দুর্বল রাবী। সে কারণে এটি যঈফ হাদিস।
  2. ইরসাল – ইয়াযীদ বিন আবি হাবিব (রহঃ) ওমর বিন আল-খাত্তাবের (রাঃ) সাক্ষাৎ পান নি।[17]আলিয়াখতিলাত ‘আসল আলশারি ফী দামর আল’উমাম ওয়াল’আসর লিমুহামাদ বিন এবাদ আল্লাহ আল-আইমাম, পৃ ১৮৩ এই কারণেও এটি মুরসাল ও যঈফ হাদিস।
  3. দাহিম যার থেকে বর্ণনা করেছে সে মাজহুল/অজ্ঞাত রাবী। এই কারণেও এটি যঈফ।

উদ্ধৃতি সমাপ্ত।

অর্থাৎ, এটি যঈফ হওয়ার তিনটি কারণ রয়েছে। তাতে বোঝা যায়, এটি চরমভাবে দুর্বল সনদের। আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তারপর শেহতা সাকার (রহঃ) আরো বলেছেন,

  • প্রথমত, …এসব বর্ণনা দালিলীকভাবে প্রামাণ্য নয়….
  • দ্বিতীয়ত, এই বর্ণনাটি গ্রহণ করা যাবে না কারণ ওমর (রাঃ) ইসলাম এবং মুসলমানদের, বিশেষ করে মহিলাদের ব্যাপারে তার কঠোরতার জন্য পরিচিত। তিনি কীভাবে একজন মহিলাকে এমন একটি আদেশ দিতে পারেন যা তাকে পুরুষদের সাথে মিশতে এবং তাদের ভিড়ে থাকার কথা বলে?
    উমর (রাঃ) এরকম একটি সুন্নাহ বিরোধী কাজ করতেই পারেন না, কারণ রাসূল (ﷺ) বলেছেন: “কোনো জাতি কখনই সফল হবে না যদি তারা তাদের নেতা হিসাবে একজন মহিলাকে নিযুক্ত করে।” (বুখারী)
  • তৃতীয়ত, যদি এটি কোনোভাবে আমরা প্রামাণ্য বলে ধরে নিই, তাহলে এরকমই হতে পারে যে উমর (রাঃ) তাকে তার ছেলের কাছে বাজারের কিছু দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন, আর সেটার কোনো কাজের জন্য মহিলা দরকার ছিলো সেদিকেই নিযুক্ত করে ছিলেন।
    [بتصرف من (الاختلاط بين الواقع والتشريع، دراسة فقهية علمية تطبيقية في حكم الاختلاط وآثاره)، جمع وإعداد: إبراهيم بن عبد الله الأزرق، (ص ٦٠).] বর্ণনাটিকে সত্যি বলে ধরে নিলে, এটি শুধুমাত্র হিসাব নিকাশের সাথে সংশ্লিষ্ট।
    [انظر: حكم تولي المرأة الإمامة الكبرى والقضاء، للأمين الحاج محمد أحمد (٤٨).]
  • চতুর্থত, মূল ঘটনা হলো এই যে, আশ-শিফার বাড়ি ছিলো মসজিদ আর বাজারের মাঝামাঝি। একদিন সুলাইমান বিন আবি হাসামাহ জামাতে অনুপস্থিত থাকায় উমর (রাঃ) শিফা (রাঃ) এর কাছে তাদের বাড়িতে দেখা করেন।
    [মুয়াত্তা মালিক, আলবানী সহিহ বলেছেন]

উদ্ধৃতি সমাপ্ত।

ইসলামওয়েবের ফাতাওয়ায় এটিকে যঈফ বলা হয়েছে।[18]Islamweb.net – রবিবার 16 রবি’ আল-আউয়াল 1426 হিজরি – 4/24/2005 খ্রিস্টাব্দ https://www.islamweb.net/ar/fatwa/61388/ অপর ফাতাওয়াতে এটাকে যঈফ বলা হয়েছে, এবং তার সাথে এটি সহিহ ধরে সেক্যুলার এবং ফেমিনিস্টদের অপপ্রচার খণ্ডন করা হয়েছে।[19]Islamweb.net বুধবার 28 রমজান 1425 হিজরি – 10-11-2004 খ্রি. https://www.islamweb.net/ar/fatwa/55562/

হাদিস জালকারীদের ষড়যন্ত্র

কিছু আলিম আবার এটাকে জালও বলেছেন। যেমনঃ আবু বকর বিন আল-আরাবি আল-মালিকি (রহঃ) বলেছেন:

وقد روي أن عمر – رضي الله عنه – قدم امرأة على حسبة السوق، ولم يصح; فلا تلتفتوا إليه; فإنما هو من دسائس المبتدعة في الأحاديث
“এটি বর্ণিত হয়েছে যে ওমর (রাঃ) একজন মহিলাকে বাজারের হিসাবের/গণনার/অন্যান্য কাজে নিয়োগ দিয়েছিলেন এবং এটি সত্য নয়; সেদিকে মনোযোগ দেবেন না; সেটা হাদিস জালকারীদের ষড়যন্ত্র”।[20]আহকামুল কুরআন ৬/২১২ অথবা ৩/১৪৫৭ (أحكام القرآن، ٦/ ٢١٢), তাফসির আল-কুরতুবি (আল-জামি’ লি আহকাম আল-কুরআন 13/183).

অতএব আমরা বুঝতে পারলাম কীভাবে উম্মাহর নারীদেরকে ব্রেইনওয়াশের চেষ্টা চলছে প্রতিনিয়ত। নারীর স্বভাবসুলভ কাজ, জেন্ডার রোল এসব থেকে দূরে সরানোর জন্য কত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে!

মদিনার বাজারের দায়িত্বে আসলে কে ছিলো?

সহিহ সনদে আমরা জানতে পারি, সায়িব ইবনে ইয়াযিদ (রাঃ) এবং আব্দুল্লাহ ইবনে উতবা ইবনে মাসউদ (রাঃ) এই দুইজন উমর (রাঃ) এর খেলাফতকালে মদিনার বাজারের দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। হাদিসে আছে,

সায়িব ইবন ইয়াযিদ (রহঃ) বলেন, উমর ইবন খাত্তাব (রাঃ)-এর খিলাফতকালে আবদুল্লাহ্ ইবন উতবা ইবন মাসউদ (রাঃ)-এর সহিত আমিও মদীনার বাজারে কর আদায়কারী কর্মচারী হিসাবে নিযুক্ত ছিলাম। আমরা তখন নবতী অমুসলিম বাসিন্দাদের নিকট হইতে এক-দশমাংশ কর আদায় করিতাম।[21]মুয়াত্তা ইমাম মালেক [বঙ্গানুবাদ] ৬০৯ https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=73504 ; সুনানুল কুবরা আল বায়হাক্বী ১৮৭৬৭ https://shamela.ws/book/7861/21357 ; মুসনাদে আল-শাফেঈ, পৃ ২১০; সহিহ ١ / ٢٨١ في الزكاة، باب عشور … See Full Note

ভিন্ন মতনে সহিহ সনদেও এটি উল্লেখ আছে যে আব্দুল্লাহ ইবনে উতবাকে মদিনার বাজারে নিযুক্ত করা হয়েছিলো।[22]তাবাকাতে ইবনে সাদ ৭/৬২; ইকমাল তাহদীবুল কামাল ৮/৫৩

এই বিষয়ে আরো পড়তে পারেন এখানেঃ

আল্লাহ হিদায়াত দান করুক, আমিন।

    Footnotes

    Footnotes
    1প্রসঙ্গ যখন ‘ইসলাম বনাম নারী নেতৃত্ব’
    2মানাকিব, পৃ ৫৯
    3তাবাক্বাতে ইবনে সা’দ ৩/২৮১
    4কিতাব মাহদ আলসাওয়াব ফী ফাদায়িল আমির আলমুমিনীন উমার বিন আলখাতাব ১/৩১১ https://shamela.ws/book/12062/288
    5কিতাব আলজাহির ফী মায়ানী কালিমাত আলনাস ২/২৩০ https://shamela.ws/book/5644/746
    6كتاب التاريخ الأوسط ১/৫৩ https://shamela.ws/book/5782/53
    7‘كتاب أسد الغابة في معرفة الصحابة ط الفكر’ ৩/৬৬৭ https://shamela.ws/book/23700/1753
    8আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ৫৭০ https://shamela.ws/book/9647/562 ; বঙ্গানুবাদে হাদিস নং ১০৩৩ এ http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=46417
    9Umar ibn al-Khattab – His Life and Times, Dr. ‘Ali Muhammad as-Sallabi, Translated by Nasiruddin al-Khattab, Vol 1, page 228 https://www.kalamullah.com/Books/Umar-Ibn-Al-khattab-Volume-1.pdf
    10https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=46417
    11মুয়াত্তা ইমাম মালিক [বঙ্গানুবাদ], হাদিস নং ২৮৭ https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=73180 ; মিশকাতুল মাসাবিহ ১০৮০ https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=55640 ; সহীহ আত্ তারগীব ৪২৩; মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক ১/৫২৬; শুআবুল বায়হাক্বী ২৬১৭; হাদিসের মানঃ সহিহ
    12আল ইসাবা (৪/১৪), তাহদীবুল তাহদীব (৮৯৭৩).
    13তারিখে দামিষ্ক ২২/২১৬
    14‘কিতাব আলহাদ ওয়ালমাথানি লিয়াবন আবি আসিম’ এর খণ্ড ৬, পৃ ৪, হাদিস নং ৩১৭৯ এ https://shamela.ws/book/9196/4044
    15কিতাব আলখতিলাত বাইন আলরিজাল ওয়ালনিসা’ (সাঈদ বিন ওয়াহফ আল-কাহতানি), পৃ ১৮৩ https://shamela.ws/book/96456/182#p1
    16কিতাব আলখতিলাত বাইন আলরিজাল ওয়ালনিসা’ (শেহতা মুহাম্মদ সাকারের), ২/৬৩৮ https://shamela.ws/book/26006/635
    17আলিয়াখতিলাত ‘আসল আলশারি ফী দামর আল’উমাম ওয়াল’আসর লিমুহামাদ বিন এবাদ আল্লাহ আল-আইমাম, পৃ ১৮৩
    18Islamweb.net – রবিবার 16 রবি’ আল-আউয়াল 1426 হিজরি – 4/24/2005 খ্রিস্টাব্দ https://www.islamweb.net/ar/fatwa/61388/
    19Islamweb.net বুধবার 28 রমজান 1425 হিজরি – 10-11-2004 খ্রি. https://www.islamweb.net/ar/fatwa/55562/
    20আহকামুল কুরআন ৬/২১২ অথবা ৩/১৪৫৭ (أحكام القرآن، ٦/ ٢١٢), তাফসির আল-কুরতুবি (আল-জামি’ লি আহকাম আল-কুরআন 13/183).
    21মুয়াত্তা ইমাম মালেক [বঙ্গানুবাদ] ৬০৯ https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=73504 ; সুনানুল কুবরা আল বায়হাক্বী ১৮৭৬৭ https://shamela.ws/book/7861/21357 ; মুসনাদে আল-শাফেঈ, পৃ ২১০; সহিহ

    ١ / ٢٨١ في الزكاة، باب عشور أهل الذمة، وإسناده صحيح.

    [تعليق أيمن صالح شعبان – ط دار الكتب العلمية] إسناده صحيح: أخرجه مالك «الموطأ» (٦٢٦) قا: عن ابن شهاب، عن السائب بن يزيد، فذكره.
    22তাবাকাতে ইবনে সাদ ৭/৬২; ইকমাল তাহদীবুল কামাল ৮/৫৩
    Show More
    4 1 vote
    Article Rating
    Subscribe
    Notify of
    guest
    0 Comments
    Inline Feedbacks
    View all comments
    Back to top button