হিন্দুধর্ম

নিয়োগ প্রথা – ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

Contents Hide

নিয়োগ প্রথা কী?

‘নিয়োগ’ বলতে বোঝায় কোনো বিবাহিত নারী কিংবা বিধবাকে কোনো বিশেষ পুরুষের কাছে যৌন মিলনের জন্য পাঠানো যাতে সে পুত্রসন্তানের মা হতে পারে। হিন্দুধর্মের এই প্রথার ইঙ্গিত ঋগ্বেদেও পাওয়া যায়। ‘নিয়োগ’ প্রথায় কখনও কখনও নারীকে অন্য পুরুষের সঙ্গে যৌন মিলনে বাধ্য করা হতো। হিন্দুধর্মের ‘দেবতা, ঋষি, মুনি’ ও ‘ব্রাহ্মণ’ তাদের কাম-বাসনা চরিতার্থ করার জন্য ‘নিয়োগে’ অংশগ্রহণ করতেন।

নিয়োগ পদ্ধতিতে একজন মহিলা এগারোজন পর্যন্ত পুরুষের সাথে যৌন মিলন করতে পারেন, এবং পুরুষরাও সন্তান উৎপাদনের জন্য এগারোজন পর্যন্ত মহিলাদের (একের পর এক) সাথে যৌন মিলন করতে পারেন। কোনো বিবাহিত দম্পতির মধ্যে স্বামী যদি সুস্থ হয়, আর স্ত্রী কোনো রোগে ভুগে থাকে, তাহলে ঐ স্বামী অপর মহিলার সাথে সেক্স করে সন্তান উৎপাদন করতে পারবে। আবার স্ত্রী যদি গর্ভবতী থাকে, এবং এই দীর্ঘসময়টা যদি স্বামী তার উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ না করতে পারে, তাহলে সে নিয়োগে যুক্ত হয়ে অপর কোনো মহিলার সাথে যৌন সহবাস করে ঐ মহিলাকে গর্ভবতী করতে পারবে।

দয়ানন্দ স্বরস্বতীর বর্ণনায় নিয়োগ প্রথা

আর্যসমাজ নামক সংঘের প্রতিষ্ঠাতা দয়ানন্দ স্বরস্বতী তার ‘সত্যার্থ প্রকাশ’ নামক বইয়ের চতুর্থ অধ্যায়ে নিয়োগ প্রথার উপর উনার অবস্থান জানিয়েছেন।

পুনর্বিবাহ নিষিদ্ধ

দয়ানন্দ স্বরস্বতী ক্ষতযোনী (Non-virgin) নারী-পুরুষের পুনর্বিবাহের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

মনে করুন, আজকে বিয়ে দিলেন আপনার বোনকে। বাসররাত কাটিয়ে পরেরদিন আপনার বোনের স্বামী মারা গেলো। এখন যেহেতু আপনার বোন এক রাত কাটিয়ে ক্ষতযোনী (Non-virgin) হয়েছে, তাই সে আর বিবাহ করতে পারবে না বলে মত দিয়েছেন দয়ানন্দ।[1]সত্যার্থ প্রকাশ, চতুর্থ সমুল্লাস, সংস্করণ-৫, পৃ ১১৬-১১৭

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্তনিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

পুনর্বিবাহের বিরুদ্ধে দয়ানন্দের যুক্তি

পুনর্বিবাহের বিরুদ্ধে যেসব যুক্তি দেখিয়েছেন দয়ানন্দ স্বরস্বতী সেগুলো হলো,[2]সত্যার্থ প্রকাশ, চতুর্থ সমুল্লাস, সংস্করণ-৫, পৃ ১১৬-১১৭

১. স্ত্রী পুরুষের প্রেমের ন্যুনতা ঘটে।

২. সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ হবে।

৩. অনেক ভদ্র পরিবারের নামচিহ্নও থাকবে না।

৪. পতিব্রত ও স্ত্রীব্রত নষ্ট হয়ে যাবে!

দেখুন দয়ানন্দ স্বরস্বতী কি প্রো ম্যাক্স লেভেল লজিক দিচ্ছে।

সমাধানঃ নিয়োগ

এখন পুনর্বিবাহও করতে পারবে না! তাহলে করবে টা কী? সমাধান দিচ্ছেন দয়ানন্দ স্বরস্বতী। সমাধান হচ্ছে নিয়োগ।[3]সত্যার্থ প্রকাশ, চতুর্থ সমুল্লাস, সংস্করণ-৫, পৃ ১১৬-১১৭

অপরের সাথে সেক্স করে সন্তান উৎপাদন করতে হবে।

পুনর্বিবাহ এবং নিয়োগের পার্থক্য

দয়ানন্দ স্বরস্বতী এই সম্পর্কে লিখলেন,[4]সত্যার্থ প্রকাশ, চতুর্থ সমুল্লাস, সংস্করণ-৫, পৃ ১১৬-১১৭

১. বিয়ের পর মেয়ে স্বামীর ঘরে বাস করে, পিতার সাথে তেমন বিশেষ সম্পর্ক থাকে না। কিন্তু নিয়োগ প্রথায় এটি নেই।

২. বিবাহিতা স্ত্রীর পুত্র সেই মহিলার স্বামীর সম্পদের উত্তরাধিকারী হয়, কিন্তু নিয়োগে উৎপন্ন পুত্র সেই বীর্যদাতার উত্তরাধিকার পায় না।

৩. বিবাহিত জামাই-বউ সংসারে একে অপরের সেবা ও প্রতিপালন করে। কিন্তু নিয়োগে এটি করতে হয় না।

৪. বিবাহিত স্ত্রী-পুরুষের আমরণ সম্পর্ক থাকে। কিন্তু নিযুক্ত স্ত্রী-পুরুষের সম্পর্ক কাজশেষে ছিন্ন হয়ে যায়।

৫. বিবাহিত স্ত্রী-পুরুষ পরস্পর মিলে ঘরের কাজ করে। কিন্তু নিযুক্ত স্ত্রী-পুরুষ নিজেদের ঘরের কাজ করে।

নিয়োগের সাথে পতিতাবৃত্তির মিলসমূহ

কিছুই না, শুধু উপরের ৫টি পয়েন্টের সাথে পতিতাবৃত্তির কিছু মিল পেলাম।

১. পতিতারাও ঐ পুরুষের (যে পতিতার সাথে যৌনসম্পর্ক করেছে) বাড়িতে থাকে না।

২. পতিতার সন্তান (যদি হয়) ঐ পুরুষের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয় না।

৩. পতিতার সাথে সংসার হয় না, তাই পরস্পর সেবা ও পালনের ঝামেলা নেই।

৪. পতিতার সাথেও কাজ শেষে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।

৫. পতিতা পতিতার জায়গায়, আর সেই পুরুষ সেই পুরুষের জায়গায় কাজ করে।

ব্যভিচার এবং নিয়োগ আলাদা দেখানোর চেষ্টা

নিয়োগ হল সন্তান উৎপাদনের উদ্দেশ্যে “বিপরীত লিঙ্গের কারও সাথে অস্থায়ী যৌনমিলন”…[5]Satyarth Prakash, pg 731 (PDF page 482), Link

দয়ানন্দ স্বরস্বতী এরপর বেদের থেকে নিজের করা ভাষ্য দলিল হিসেবে উপস্থাপন করলেন নিয়োগের দলিল হিসেবে।দয়ানন্দ সরস্বতী ঋগ্বেদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন,

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

হে (মীঢ্ব, ইন্দ্ৰ ) বীৰ্য্যসিঞ্চনে সমর্থ ঐশ্বৰ্য্যশালী পুরুষ। তুমি এই বিবাহিতা স্ত্রী বা বিধবা স্ত্রীকে শ্রেষ্ঠ পুত্রের মাতা এবং সৌভাগ্যবতী কর। বিবাহিতা স্ত্রীতে দশ পুত্র উৎপন্ন কর এবং স্ত্রীকে একাদশ বলিয়া মনে কর। হে স্ত্রী! তুমিও বিবাহিত বা নিযুক্ত পুরুষ কর্তৃক দশটি সন্তান উৎপন্ন কর এবং পতিকে একাদশ বলিয়া মনে কর।[6]ঋগ্বেদ ১০/৮৫/৪৫[7]সত্যার্থ প্রকাশ, বঙ্গানুবাদ, সংস্করণ-৫, পৃ. ১১৮

দয়ানন্দ স্বরস্বতীর বিজ্ঞানানুসারে কারও ১০জনের বেশি সন্তান হলে ১০ এর পরের সন্তানগুলো দুর্বল নির্বুদ্ধি ও স্বল্পায়ু হয়! (বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন ছিলেন ১৯ সন্তানের মধ্যে ১৫তম)

তো এরপর দয়ানন্দ চেষ্টা করলেন বোঝাতে কীভাবে নিয়োগ আর ব্যভিচার আলাদা।

১. যেমন বিধিসঙ্গত বিয়েকে ব্যভিচার বলা যায় না, সেহেতু বিধিসম্মত নিয়োগকেও ব্যভিচার বলা যাবে না।

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

২. বিয়ের পর যেহেতু ব্যভিচার, পাপ, লজ্জা হয়ে না। সেহেতু বেদভিত্তিক নিয়োগেও ব্যভিচার, পাপ, লজ্জা হয় বলে মনে করা উচিত না।

৩. নিয়োগে বাধাদান করলেই পাপ হয়।

পবিত্র গণিকাবৃত্তি

দয়ানন্দের উপরের যুক্তির ভিত্তিতে আমি বরং বিধিবদ্ধ ব্যভিচার, ধর্মীয় পতিতাবৃত্তি, পবিত্র গণিকাবৃত্তি বলতে পারি। যেহেতু এটা হিন্দুধর্মীয় নিয়মের অধীনে।

বেদাদিশাস্ত্রের বহু প্রমাণ

তারপর দয়ানন্দ স্বরস্বতী নিয়োগের পক্ষে আবারও তার ধর্মগ্রন্থের রেফারেন্স টেনেছেন।

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্তনিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

দয়ানন্দ এখানে ঋগ্বেদ ১০/৪০/২ এবং ১০/১৮/৮ এর রেফারেন্স টেনেছেন। (উল্লেখ্য, রমেশচন্দ্র দত্ত ঋগ্বেদ ১০/১৮/৮ এর দলিলকে নিয়েছেন পুনর্বিবাহ হিসেবে[8]রমেশচন্দ্রের অনুবাদের নিচে ফুটনোট দেখুন – Link, আর দয়ানন্দ নিয়েছেন নিয়োগের দলিল হিসেবে) দয়ানন্দ স্বরস্বতী আরো লিখেছেনঃ

হে ( অশ্বিনা ) স্ত্রীপুরুষ! যেমন ( দেবরং বিধবের) বিধবা দেবরের সহিত এবং (যোষা মৰ্য্যন্ন:) বিবাহিতা স্ত্রী স্বীয় পতির সহিত ( সধস্থে ) এক স্থান ও শয্যায় একত্র হইয়া সন্তান (আ, ক্বণুতে) সর্বপ্রকারে উৎপন্ন করে, সেইরূপ তোমরা উভয়ে স্ত্রী পুরুষ (কুহম্বিদ্দোষাঃ) কোথায় রাত্রিতে এবং ( কুহ বস্তুঃ) কোথায় দিবসে একত্র বাস করিতেছিলে ? (কুইভিপিত্বম্ ) কোথায় পদার্থ লাভ ( করতঃ ) করিয়াছিলে ? এবং ( কুহোষতুঃ) কোন সময়ে কোথায় বাস করিতেছিলে ( কো বাং শযুত্রা) তোমাদিগের শয়নস্থান কোথায় ? তোমরা কে এবং কোন দেশবাসী? এতদ্বারা সিদ্ধ হইল যে দেশ বিদেশে স্ত্রী পুরুষ সঙ্গেই থাকিবে এবং বিধবা স্ত্রীও নিযুক্ত পতিকে বিবাহিত পতির ন্যায় গ্রহণ করিয়া সন্তানোৎপত্তি করিবে।

দেবর – বিধবার দ্বিতীয় বর

দেবর নামটার অশ্লীল ইতিহাস, যারা জানেন না! দেবর নামটা এসেছে এই নিয়োগপ্রথা থেকেই।বিধবা নারী তার যার সাথে নিয়োগের মাধ্যমে রাত কাটায় তাকেই দ্বিতীয় বর বা, দেবর বলে হয়। আমাদের দয়ানন্দ নিরুক্তের রেফারেন্স টেনেছেনঃ

বিধবার দ্বিতীয় পতিকে দেবর বলে। পতির কনিষ্ঠ বা জ্যেষ্ঠ ভ্রাতাই হউক
অথবা স্ববর্ণ বা নিজ অপেক্ষা উত্তম বর্ণ হউক, যাহার সহিত নিয়োগ হইবে
তাহারই নাম দেবর।[9]নিরুক্ত ৩/১৫

দয়ানন্দ স্বরস্বতী উরফে মুল শঙ্কর ত্রিবেদী এই দেবরের সাথে নিয়োগের প্রমাণ হিসেবে অথর্ববেদের দলিল দিয়েছেন,

হে নারী! (অপতিঘ্ন্যদেবৃঘ্নি) তুমি পতি এবং দেবরের দুঃখদাত্রী নও। তুমি (ইহ) এই গুহাশ্রমে (পশুভ্যঃ) পশুদের জন্য (শিবা) কল্যাণকারিণী, (সুযমাঃ) উত্তমরূপে ধর্মের নিয়মপালনকারিণী, (সুবর্চ্চাঃ) রূপবতী এবং সর্বশাস্ত্রে বিদূষী, (প্রজাবতী ) উত্তম পুত্রপৌত্রাদিযুক্তা, (বীরসূঃ )
শূরবীর পুত্রের জননী, ( দেবৃকামা ) দেবরের কামনাকারিণী, (স্যোনা) সুখদায়িনী,
পতি বা দেবরকে (এধি) প্রাপ্ত হইয়া (ইমম্‌) এই ( গার্হপত্যম্‌) গৃহস্থ সম্বন্ধীয়
( অগ্নিম) অগ্নিহোত্র ( সপর্য্য ) সেবন কর।[10]অথর্ববেদ ১৪/২/১৮

এগারো (১১) জনের সাথে নিয়োগ

একজন পুরুষ এগারোজন (১১) মহিলার (একের পর এক) সাথে নিয়োগ করতে পারে, ঠিক যেমন একজন মহিলা এগারোজন (১১) পুরুষের (একের পর এক) সাথে নিয়োগের মাধ্যমে যৌনসম্পর্ক করতে পারে এবং সন্তান উৎপাদন করতে পারে।

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

দয়ানন্দ স্বরস্বতীর ঋগ্বেদের উদ্ধৃতি দিয়েছেন,

হে স্ত্রি ! (তে) তোমার যে ( প্রথমঃ) প্রথম বিবাহিত (পতিঃ) পতি তোমাকে ( বিবিদে) প্রাপ্ত হয় তাহার নাম (সোমঃ) সুকুমারতা প্রভৃতি গুণযুক্ত বলিয়া সোম। যে দ্বিতীয়বার নিয়োগ দ্বারা তোমাকে ( বিবিদে ) প্রাপ্ত হয় সে (গন্ধর্ব্বঃ) এক স্ত্রীর সহিত সম্ভোগ করিয়াছে বলিয়া গন্ধর্ব্ব। যে (তৃতীয় উত্তরঃ) দুই পতির পরবর্ত্তী তৃতীয় পতি সে (অগ্নিঃ) অতি উষ্ণতাযুক্ত হওয়ায় অগ্নিসংজ্ঞক, এবং যাহারা (তে) তোমার (তুরীয়ঃ) চতুর্থ হইতে একাদশ পর্যন্ত নিযুক্ত পতি তাহারা (মনুষ্যজাঃ) মনুষ্য নামে অভিহিত হয়।[11]ঋগ্বেদ ১০/৮৫/৪০

যেমন ( ইমাং ত্বমিন্দ্র ) এই মন্ত্র দ্বারা স্ত্রী একাদশ পুরুষ পর্য্যন্ত নিয়োগ করিতে পারে, সেইরূপ পুরুষও একাদশ স্ত্রী পর্যন্ত নিয়োগ করিতে পারে ।[12]সত্যার্থ প্রকাশ, পৃ ১২২-১২৩

স্বামী বেঁচে থাকতে স্ত্রীর নিয়োগ

স্বামী বেঁচে থাকলেও স্ত্রী অন্য পুরুষের সাথে নিয়োগ পদ্ধতিতে রাত কাটিয়ে সন্তান জেনারেট করতে পারবে।

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্তনিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

এখানে মুল শঙ্কর উরফে দয়ানন্দ স্বরস্বতী মহাভারতের কাহিনির নিয়োগের কথা এনেছেন।[13]সত্যার্থ প্রকাশ, পৃ ১২৪-১২৫ আমরা তা সামনে দেখবো।

স্ত্রী গর্ভবতী হলে কামচরিতার্থ করার উপায় নিয়োগ

বউ প্রেগন্যান্ট হলে সেই দীর্ঘ সময়টায় যৌন উত্তেজনা হলে নিয়োগের মাধ্যমে অন্যের গর্ভে সন্তান দেওয়ার পরামর্শ দিলেন দয়ানন্দ স্বরস্বতী।[14]সত্যার্থ প্রকাশ, পৃ ১২৬

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

মজার ব্যাপার হলো দয়ানন্দের কিছু মুরিদ তাদের উস্তাদের উপরে আরেক কাঠি! নিয়োগকেই অনেকে সাধারণ সামাজিক প্রথা হিসেবে চালিয়ে দিচ্ছে, এবং বলছে তাদের শাস্ত্রে এসব উল্লেখ নেই।

নিয়োগ প্রথা কি রহিত হয়ে গিয়েছে? – হিন্দুদের অন্তর্দ্বন্দ্ব

এই অশ্লীল প্রথাটা বর্তমানে রহিত হয়ে গিয়েছে কিনা সেটা নিয়েও হিন্দুদের মধ্যে মারামারি আছে। পরাশরসংহিতার টীকায় পঞ্চানন তর্করত্ন লিখেছেন,[15]পরাশরসংহিতা, অধ্যায় ৪, ঊনবিংশতি সংহিতা, সংস্করণ-২, পৃ. ৩৬১-৩৬২, অনুবাদঃ তর্কানন পঞ্চরত্ন

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্তনিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

অর্থাৎ, কলিযুগের আইনশাস্ত্র পরাশরসংহিতা অনুসারে নিয়োগ প্রথা, বিধবা বিবাহ ইত্যাদি নিষিদ্ধ এই বর্তমান যুগে।

কিন্তু এই দিকে দয়ানন্দ স্বরস্বতী এই শ্লোক অস্বীকার করেছেন এবং বর্তমানকালেও নিয়োগ নামক অশ্লীল প্রথাটির সমর্থন দিয়েছেন,[16]সত্যার্থ প্রকাশ, পৃ ১২৬-১২৭

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্তদয়ানন্দের জন্ম নিয়ে সংশয়

একদিকে দয়ানন্দের সময়কালে বাকি সব পণ্ডিত নিয়োগপ্রথা কলিযুগে নিষিদ্ধ বলছেন, আর এদিকে দয়ানন্দ স্বরস্বতী বলছেন নিয়োগ প্রথা হালাল, এবং তা বেদের নিয়মানুসারে।

কিন্তু কেন?

উত্তরটা দয়ানন্দ স্বরস্বতীর জন্মেই লুকিয়ে আছে। দয়ানন্দের জীবনী যারা পড়েছেন তারা জানেন, দয়ানন্দ স্বরস্বতীর বাবা-মার দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ কোনো সন্তান হয় নি। তখন তার বাবা উনার শালীকে বিবাহ করার চিন্তাভাবনা করছিলেন। ঠিক এই সময়েই হঠাৎ, দয়ানন্দের মা গর্ভবতী হয়। জন্ম হয় দয়ানন্দ স্বরস্বতীর।[17]দেখুন Swami Dayanand Saraswati (Hindi Edition) by Madhur Athaiya

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

সংশয়ঃ দয়ানন্দ স্বরস্বতী কি নিজেই নিয়োগের ফসল? তাই কি নিজের জন্মের বৈধতা প্রমাণের জন্য কট্টরভাবে নিয়োগপ্রথার সমর্থন নিয়ে গেছেন নিয়োগানন্দ?

নিয়োগ প্রথার ব্যাপারে অন্যান্য ঐতিহাসিকদের লেখা

বেদের সময়ে নিয়োগ প্রথা ছিলো কিনা, পৌরাণিক সময়ে নিয়োগপ্রথা ছিলো কিনা সেটাও বিভিন্ন হিন্দু, বৈদিক ঐতিহাসিকদের বক্তব্য দেখে নেওয়া যাকঃ

চিরকিশোর ভাদুড়ীর বক্তব্য

প্রাচীন ভারতে নিয়োগ প্রথা নিয়ে চিরকিশোর ভাদুড়ীর বক্তব্য উঠে এসেছে ইতিহাস অনুসন্ধান বইয়ে। তিনি বিভিন্ন ঐতিহাসিকদেরও বক্তব্য তুলে ধরেছেন, এবং দেখিয়েছেন বৈদিক ভারতেও এই প্রথা প্রচলিত ছিলো। আসুন হুবহু দেখে নেওয়া যাক।[18]ইতিহাস অনুসন্ধান-১৫, পৃ ১৩১-১৩৫, বৈদিক ভারতে নিয়োগ প্রথার অবস্থিতি by চিরকিশোর ভাদুড়ি, সম্পাদনাঃ গৌতম চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশকঃ ফার্মা কে এল এম প্রাইভেট … See Full Note

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

অর্থাৎ, বৈদিক ভারতেও এই প্রথা প্রচলিত ছিলো। বহিরাগত আর্যরা এই বিচিত্র দেশে আসার পর নিজেদের বংশ টিকিয়ে রাখতে এই প্রথার আশ্রয় নিয়েছিলো। তাই এসব কিছু তাদের লেখা গ্রন্থগুলোতে যেমন ঋগ্বেদে পাওয়া যায়।

মধুসূদন তত্ত্ববাচস্পতির বক্তব্য

মধুসূদনের মতে পৌরাণিক যুগেও নিয়োগ প্রথা চালু ছিলো,[19]গৌড়ীয়-বৈষ্ণব ইতিহাস, সংস্করণ-২, পৃ. ৯২, প্রিন্টঃ ১৯২৬ https://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.338774

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

স্বামী ভূমানন্দের সমর্থন

স্বামী ভূমানন্দ তার সনাতন ধর্ম্ম বইতে নিয়োগ প্রথার সমর্থণ করেছেন।[20]সনাতম ধর্ম্ম, প্রথম খণ্ড, পৃ ৯৭-৯৮, উদ্বোধন কার্যালয়, কলকাতা, প্রিন্ট ১৯২৮ https://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.336600 আবার অন্য জায়গায় নিয়োগের বিরোধিতাকারীদের ধুয়ে দিয়েছেন।[21]প্রাগুক্ত, পৃ ১২৭

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্তনিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

অন্যত্র লিখেছেন,[22]প্রাগুক্ত, পৃ ১০২-১০৩

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্তনিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

তিনি পুরুবংশের বংশতালিকাও তৈরি করেছেন,[23]প্রাগুক্ত, পৃ ১১২

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

হিন্দুশাস্ত্রে নিয়োগপ্রথা

এতোক্ষন আমরা আসলে ঐতিহাসিক আলোচনা করেছি, শাস্ত্র থেকে হালকা পাতলা দেখেছেন। এবার আরো দেখতে চলেছি হিন্দুশাস্ত্র থেকে।

বেদের দলিল

ঋগ্বেদে আছে,

হে অশ্বিদ্বয়! তোমরা দিবাভাগে, কি রাত্রিকালে কোথায় গতিবিধি কর? কোথায় বা কালযাপন কর? যেরূপ বিধবা রমণী শয়নকালে দেবরকে সমাদর করে, অথবা কামিনী নিজ কান্তকে সমাদর করে, যজ্ঞস্থলে তদ্রুপ সমাদরের সহিত কে তোমাদিগকে আহ্বান করে?[24]ঋগ্বেদ ১০/৪০/২, রমেশচন্দ্র দত্ত

অন্যত্র আছে,

হে নারি! সংসারের দিকে ফিরিয়া চল, গাত্রেত্থান কর, তুমি যাহার নিকট শয়ন করিতে যাইতেছ, সে গত অর্থাৎ মৃত হইয়াছে। চলিয়া এস। যিনি তোমার পাণিগ্ৰহণ করিয়া গর্ভাধান করিয়াছিলেন, সেই পতির পত্নী হইয়া যাহা কিছু কর্তব্য ছিল, সকলি তোমার করা হইয়াছে।[25]ঋগ্বেদ ১০/১৮/৮, রমেশচন্দ্র

ঋগ্বেদ ১০/৮৫/৪০ এ দয়ানন্দ স্বরস্বতী ‘নিয়োগ’সম্পন্ন অনুবাদ করেছেন।[26]আগে উল্লেখিত হয়েছে, সত্যার্থ প্রকাশ দেখুন

অথর্ববেদেও এর উল্লেখ আছে।[27]অথর্ববেদ ১৪/২/১৮, সত্যার্থ প্রকাশ বইয়ে দয়ানন্দ স্বরস্বতীর অনুবাদ দেখুন

বেদের দলিল নিয়ে ইখতিলাফ

বেদের উপস্থাপিত দলিলগুলো নিয়ে হিন্দুদের মাঝে ইখতিলাফ আছে।

১. দয়ানন্দ স্বরস্বতী এই সবগুলো দলিল নিয়োগপ্রথার পক্ষে উপস্থাপন করেছেন।

২. চিরকিশোর ভাদুড়ি এবং স্বামী ভূমানন্দ ঋগ্বেদ ১০/১৮/৮ কে সতীদাহের এবং বিধবাবিবাহের দলিল হিসেবে নিয়েছেন। বাকিগুলোকে নিয়োগের দলিল হিসেবে নিয়েছেন।

৩. ড. অতুল সুর এই কোনোটাকেই নিয়োগপ্রথার দলিল হিসেবে নেন নি। তিনি বরং এই মন্ত্রগুলো এবং ধর্মসূত্রকে একসাথে করে উপস্থাপন করেছেন এগুলো আসলে প্রমাণ করে যে, “নারীদেরকে কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে না, বরং পরিবারের কাছে বিয়ে দেওয়া হতো। ঐ পরিবারের সবাই ঐ মহিলার সাথে সেক্স করতে পারতো। নিয়োগপথা বরং আরও পরে চালু হয়, মহাভারতের যুগে। স্মৃতিযুগের শেষের দিকে এই নিয়োগপ্রথা পরিত্যক্ত হয়।

তার মতে আর্যরা যখন এদিকে অনুপ্রবেশ করে তখন তাদের মেয়ে কম ছিলো, বংশের বিশুদ্ধতা রক্ষার জন্য তারা একই মেয়েকে এক পরিবারের কাছে বিয়ে দিতো, এবং সপরিবারে সেই মেয়েকে সম্ভোগ করতো।”।[28]ভারতে বিবাহের ইতিহাস, ড. অতুল সুর, পৃ ১৫-১৮,২৯, শঙ্খ প্রকাশন, প্রিন্টঃ ১৯৬০ https://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.266522

এ বিষয় নিয়ে আরেকদিন বিস্তারিত আলাপ হবে। আজকে নিয়োগেই থাকি।

মনুসংহিতার দলিল

মনুসংহিতায় অনেক জায়গাতেই নিয়োগের কথা এসেছে।

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

সন্তানের পরিক্ষয়ে অর্থাৎ সন্তান-উৎপত্তি না হওয়ায় বা সন্তান জন্মানোর পর তার মৃত্যু হওয়ায় বা কন্যার জন্ম হ’লে তাকে পুত্রিকারূপে গ্রহণ না করায় নারী শ্বশুর-শাশুড়ী-পতি প্রভৃতি গুরুজনদের দ্বারা সম্যকভাবে নিযুক্ত হ’য়ে দেবর (অর্থাৎ স্বামীর জ্যেষ্ঠ বা কনিষ্ঠ ভ্রাতা) অথবা সপিন্ডের (স্বামীর বংশের কোনও পুরুষের) সাহায্যে অভিলষিত সন্তান  লাভ করবে।[29]মনুসংহিতা ৯/৫৯, অনুবাদঃ মানবেন্দু বন্দোপাধ্যায়

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

ঔরস (legitimate son of the body’) ক্ষেত্রজ (son begottlen on a wife of another), দত্তক ( adopted son), কৃত্রিম (a son made; মাতাপিতাহীন বালক, যাকে কেউ টাকা – জমি প্রভৃতির লোভ দেখিয়ে পুত্ররূপে গ্রহণ করেছে ), গুঢ়োৎপন্ন (son secretly bor), এবং অপবিদ্ধ ( a son cast off; যে পুত্র মাতা-পিতাকর্তৃক পরিত্যক্ত এবং অন্যের দ্বার পুত্ররূপে গৃহীত), – এই ছয় প্রকারে পুত্র গোত্রদায়াদ এবং বান্ধব ( six heirs and kinsmen)[30]মনুসংহিতা ৯/১৫৯

ক্ষেত্রজ পুত্র হলো নিয়োগ প্রথার মাধ্যমে জন্মানো পুত্রঃ[31]মনুসংহিতা ৯/১৬৭

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

আসুন আরো বিধান দেখিঃ

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

(স্বামী) ধর্মানুষ্ঠানের জন্য প্রবাসে গেলে (স্ত্রী তার) জন্য আট বৎসর, বিদ্যার্জন বা যশ লাভের জন্য গেলে ছয় বৎসর এবং (অপর স্ত্রী সম্ভোগরূপ) কামের জন্য গেলে তিন বৎসর প্রতীক্ষা করবেন ; (তৎপর পতি সকাশে যাবেন)।[32]মনুসংহিতা ৯/৭৬, অনুবাদঃ সুরেশচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়, প্রকাশকঃ আনন্দ পাবলিশার্স

দয়ানন্দ স্বরস্বতী বলেছেন এই অপেক্ষার পর নিয়োগের মাধ্যমে সন্তান জেনারেট করতে হবে।

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

নারী বন্ধ্যা হ’লে আদ্য ঋতুদর্শন থেকে অষ্টম বৎসরে অন্য একটি বিবাহ করবে মৃতবৎসা হলে দশম বৎসরে, কেবল কন্যাসন্তান প্রসব করতে থাকলে একাদশ বৎসরে এবং অপ্রিয়বাদিনী হলে সদ্য সদ্যই অন্য বিবাহ করবে।[33]মনুসংহিতা ৯/৮১, মানবেন্দু বন্দোপাধ্যায়

যদিও এখানে মানবেন্দুর অনুবাদে বিবাহের কথা এসেছে, কিন্তু দয়ানন্দ স্বরস্বতী এটার অনুবাদে বলেছেন “নিয়োগ করে সন্তান উৎপাদন করিবে”।

শুধু শুধুই ভারতে দয়ানন্দকে নিয়োগানন্দ ডাকা হয় না।

যাজ্ঞবল্ক্য স্মৃতির দলিল

যাজ্ঞবল্ক্য স্মৃতির প্রথম অধ্যায়েই নিয়োগের কথা এসে পড়েছে।[34]যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা ১/৬৭-৭০

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

অন্যত্র এই নিয়োগের ফসলের সম্পত্তির উত্তরাধিকারের কথাও এসেছে যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতায়,[35]যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা ২/১৩০

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

গৌতম ধর্মসূত্রের দলিল

গৌতম ধর্মসূত্রেও স্বামীর অনুপস্থিতিতে দেবরের সাথে রাত কাটিয়ে সন্তান উৎপাদনের প্রসঙ্গ এসেছে,[36]গৌতমসংহিতা ১৮/৩-৪

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

গৌতম ঋষিও বলে দিচ্ছেন যে, দেবর ছাড়া অন্যদের থেকে উৎপন্ন সন্তান ধনভাগী হবে না।[37]গৌতমসংহিতা অধ্যায় ২৯

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্তনিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

বসিষ্ঠ ধর্মসূত্রের দলিল

এখানেও নিয়োগের বিধান এসেছে,[38]বসিষ্ঠসংহিতা ১৭/৫৬

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

বিষ্ণুস্মৃতির দলিল

বিষ্ণুস্মৃতিতেও ক্ষেত্রজ পুত্রের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে,[39]বিষ্ণুসংহিতা ১৫/১-৩

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

নারদ স্মৃতির দলিল

নারদ স্মৃতি বা, নারদীয় মনুসংহিতায় নিয়োগ প্রথার কিছু কট্টর নিয়ম দেখা যায়,[40]নারদ স্মৃতি, দ্বাদশ ব্যবহারপদ, শ্লোক ৮০-৮৭

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

কিন্তু এই নিয়ম দয়ানন্দ স্বরস্বতী উল্লেখ করেন নি। কারণ তিনি নারদ স্মৃতি মানেন না, মনুসংহিতা ছাড়া অন্যান্য স্মৃতি মানেন না, সেগুলোকে প্রক্ষিপ্ত বলেন।[41]সত্যার্থ প্রকাশ, পৃ ১২৬-১২৭

আমরাও এই নিয়মের বিপরীতে হিন্দুশাস্ত্র দেখবো। তো যাই হোক, হিন্দু ক্ষেত্রজ ভাইয়েরা, ভাবুন তো, আপনার মা এবং আপনার চাচা সারা শরীরে ঘৃত মেখে আছে। আর রাত্রে আপনার চাচা আপনার মায়ের যোনীতে নিজের লিঙ্গ প্রবেশ করিয়ে দিচ্ছে। আর সেটার ফলাফল আপনি!

পুরাণের দলিল

পুরাণেও বহু জায়গায় নিয়োগের মাধ্যমে বাচ্চা উৎপাদনের কথা পাওয়া যায়। আসুন আমরা তার কয়েকটি দেখে নিই।

শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণের দলিল

শ্রীমদ্ভাগবত-এর স্কন্দ ৯ এ এসেছে,[42]শ্রীমদ্ভাগবত ৯/৬/২-৩, প্রভুপাদ, বঙ্গানুবাদঃ ভক্তিচারু স্বামী

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

ইস্কনের প্রতিষ্ঠাতা শীল প্রভুপাদ স্পষ্ট করে নিয়োগ প্রথা বুঝিয়ে দিয়েছেন।

গরুড়পুরাণের দলিল

গরুড় মহা পুরাণেও এই নিয়োগের দ্বারা সন্তান উৎপাদনের কথা এসেছে,[43]গরুড়পুরাণ, পূর্বখণ্ড, অধ্যায় ৯৫, শ্লোক ১৬-১৭, রসিকমোহন

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

দেবী ভাগবত পুরাণের দলিল

দেবীভাগবতে বিচিত্র‍্যবীর্য্যের দুই স্ত্রী অম্বিকা, অম্বালিকা এবিং অম্বিকার দাসীর সাথে ব্যাসদেবের নিয়োগের কথা এসেছে,[44]দেবীভাগবতম্, স্কন্দ ১, অধ্যায় ২০, শ্লোক ৫০-৭৪

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

একই ঘটনা স্কন্দ-৬ এও এসেছে,[45]দেবীভাগবতম্, ৬/২৫/১-২১, অনুবাদঃ পঞ্চানন তর্করত্ন, নবভারত পাব্লিশার্স

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

অনেকে বলেন নিয়োগের সেক্সে কামভাব থাকে না, তারা যেন এটি দেখে, ইচ্ছামতো উপভোগ, যথেচ্ছ ক্রীড়া করা হয়েছে এখানে।

২য় স্কন্দে এই ঘটনা স্বীকার করা হয়েছে যে, ধৃতরাষ্ট্র ব্যাসদেবের বীর্যতে জন্মেছেন,[46]দেবী ভাগবত পুরাণ, ২/৬/২

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

বিষ্ণুপুরাণের দলিল

রাজার প্রার্থনানুসারে বসিষ্ঠ (নিয়োগের মাধ্যমে) ময়দন্তীকে গর্ভবতী করলেন।[47]বিষ্ণুপুরাণ ৪/৪/৩৮, অনুবাদঃ পঞ্চানন তর্করত্ন

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

মহাভারতের দলিল

মহাভারতেও একাধিক চরিত্রের নিয়োগের কথা আছে।

কুন্তী এবং মাদ্রী X দেবতা

পাণ্ডুর স্ত্রী কুন্তী এবং মাদ্রী দেবতাদের সাথে পালাক্রমে সঙ্গম করে ৩+২=৫টি সন্তান উৎপাদন করলেন।[48]মহাভারত, আদিপর্ব, অধ্যায় ৯৫, কালীপ্রসন্ন সিংহ

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

সত্যাবতীর পুত্রবধূ X ব্যাসদেব

সত্যাবতীর নিয়োগের ঘটনা আদিপর্বের ১০৩ এবং ১০৫ পর্বে বিস্তারিত এসেছে। সত্যাবতী প্রথমে ভীষ্মকে প্রস্তাব দেয় তার পুত্রবধূকে সন্তান উৎপাদন করার জন্য। পরে ভীষ্ম রাজি হয় না, এবং ব্যাসদেবের মাধ্যমে ব্যবস্থা করে দেয়। সত্যাবতী পরে ব্যসদেবকে বলেন অন্য নারীদেরও বাচ্চা জন্মিয়ে দিতে।[49]মহাভারত আদিপর্ব, অধ্যায় ১০৩[50]মহাভারত আদিপর্ব, অধ্যায় ১০৫

অধ্যায় ১০৩,

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

অধ্যায় ১০৫,

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

ভীষ্মের মুখের বর্ণনা

সত্যাবতী আর ব্যাসদেবের লীলায় মাঝখানের অংশটা আমরা দেখাই নি। সেটা এখন দেখি চলুন, এখানে ভীষ্ম কর্তৃক একাধিক নিয়োগের বর্ণনা এসেছে,[51]মহাভারত, আদিপর্ব, অধ্যায় ১০৪

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

অম্বিকার দাসী এবং অম্বালিকা X ব্যাসদেব

সত্যাবতীর পুত্রবধূ অম্বিকার সাথেও সহবাস করেছেন। তার দাসীর সাথেও। মহাভারতের রাজা পাণ্ডুর, ধৃতরাষ্ট্র এবং বিদুরের আসল জন্মদাতা বাপও ব্যাসদেব।[52]মহাভারত, আদিপর্ব, অধ্যায় ১০৬

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

কুন্তীর নিয়োগের বিস্তারিত

রাজা পাণ্ডু এক ঋষির অভিশাপের কারণে সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা হারান। তাই বিভিন্নভাবে তার স্ত্রী কুন্তীকে বলেন, বোঝান পরপুরুষের সাথে সেক্স করে সন্তান উৎপাদন করে দিতে। কুন্তী প্রথমে রাজি হয় না, অন্য এক ঘটনা শেয়ার করে বোঝানোর চেষ্টা করে পাণ্ডু মৃত্যু থেকে উঠে এসেও তার সাথে সঙ্গম করে সন্তান উৎপাদন করে দিতে পারে। কিন্তু পাণ্ডু তা পারবে না বলে দেয়। বরং বোঝানোর চেষ্টা করে ঋতুকাল ব্যতীত মেয়েরা ইচ্ছামতো যার সাথে খুশি শুতে পারে, পাপ হয় না। এ প্রসঙ্গে এই পোস্ট দেখুনঃ

স্বামী যদি স্ত্রীকে বাচ্চা উৎপাদনের জন্য নিয়োগ করে, তাহলে তা না মানলে স্ত্রীর পাপ হয়, অর্থাৎ স্ত্রী বাধ্য। স্বামী যাইই আদেশ করুক, তা ধর্ম হোক আর অধর্ম হোক স্ত্রী তা পালন করতে বাধ্য।

পরে কুন্তী রাজি হয়, এবং ছোটবেলায় পাওয়া মন্ত্রের সাহায্যে দেবতাদের সাথে সহবাস করে। এই পোস্টটিও দেখুনঃ

মহাভারতের বর্ণনাঃ[53]মহাভারত, আদিপর্ব, অধ্যায় ১২০[54]প্রাগুক্ত, অধ্যায় ১২১[55]প্রাগুক্ত, অধ্যায় ১২২

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

বাকিটুকু অধ্যায় ১২৩ থেকে পড়ে নেবেন চিন্তাশীল পাঠকেরা।

রামায়ণের দলিল

বাল্মিকী রামায়ণে ‘বীর’-কে কেসরীর ক্ষেত্রজ এবিং বায়ু (Vayu)-র ঔরসজাত পুত্র বলা হয়েছে। অর্থাৎ, বায়ুর শুক্রাণুতেই তার জন্ম।[56]বাল্মিকী রামায়ণ, কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড, সর্গ ৬৬, শ্লোক ২৮, হেমচন্দ্রের অনুবাদ

নিয়োগ প্রথা - ধর্মীয় পতিতাবৃত্তির ইতিবৃত্ত

বর্তমান হিন্দুসমাজে নিয়োগ প্রথা

উদাহরণ স্বরূপঃ অনেক বছর সন্তান না হওয়ায় ভণ্ড বাবার কাছে স্বামী তার স্ত্রীকে তুলে দেন। সেই ভণ্ড সাধুবাবা রাতভর ধর্ষণলীলা চালায়। পরদিন স্ত্রী স্বামীর সাহায্য চাইলে স্বামী কিছু বলে না। বিষয়টি বুঝতে পেরে স্ত্রী আইনের সাহায্য নেয়।[57]https://www.sabguru.com/news/woman-alleges-rape-by-guru-in-jaipur-after-her-husband-left/

হিন্দুদের জন্ম নিয়ে সংশয়

আপনি কি হিন্দু? এই শাস্ত্রগুলো জানার পরে একটু ভেবে দেখবেন, আপনি যাকে বাবা বলে জানেন, তিনিই আপনার আসল বাবা কিনা। আপনার কাকা থাকলে উনার চেহারার সাথে নিজের চেহারা মিলিয়ে দেখবেন। এলাকার ব্রাহ্মণদের সাথে আপনার চেহারা মিলিয়ে দেখেবন। নিজের আসল বাবার অনুসন্ধান করুন, বিষয়টা অনেক অ্যাডভেঞ্চারাস হবে।


ভাবুন আপনিও

    Footnotes

    Footnotes
    1, 2, 3, 4সত্যার্থ প্রকাশ, চতুর্থ সমুল্লাস, সংস্করণ-৫, পৃ ১১৬-১১৭
    5Satyarth Prakash, pg 731 (PDF page 482), Link
    6ঋগ্বেদ ১০/৮৫/৪৫
    7সত্যার্থ প্রকাশ, বঙ্গানুবাদ, সংস্করণ-৫, পৃ. ১১৮
    8রমেশচন্দ্রের অনুবাদের নিচে ফুটনোট দেখুন – Link
    9নিরুক্ত ৩/১৫
    10অথর্ববেদ ১৪/২/১৮
    11ঋগ্বেদ ১০/৮৫/৪০
    12সত্যার্থ প্রকাশ, পৃ ১২২-১২৩
    13সত্যার্থ প্রকাশ, পৃ ১২৪-১২৫
    14সত্যার্থ প্রকাশ, পৃ ১২৬
    15পরাশরসংহিতা, অধ্যায় ৪, ঊনবিংশতি সংহিতা, সংস্করণ-২, পৃ. ৩৬১-৩৬২, অনুবাদঃ তর্কানন পঞ্চরত্ন
    16, 41সত্যার্থ প্রকাশ, পৃ ১২৬-১২৭
    17দেখুন Swami Dayanand Saraswati (Hindi Edition) by Madhur Athaiya
    18ইতিহাস অনুসন্ধান-১৫, পৃ ১৩১-১৩৫, বৈদিক ভারতে নিয়োগ প্রথার অবস্থিতি by চিরকিশোর ভাদুড়ি, সম্পাদনাঃ গৌতম চট্টোপাধ্যায়, প্রকাশকঃ ফার্মা কে এল এম প্রাইভেট লিমিটেড, ২৫৭ বি, বিপিন বিহারী গাঙ্গুলী স্ট্রীট, কলিকাতা  – ৭০০ ০১২, প্রিন্টঃ ২০০১ https://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.266814/page/n141/mode/1up
    19গৌড়ীয়-বৈষ্ণব ইতিহাস, সংস্করণ-২, পৃ. ৯২, প্রিন্টঃ ১৯২৬ https://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.338774
    20সনাতম ধর্ম্ম, প্রথম খণ্ড, পৃ ৯৭-৯৮, উদ্বোধন কার্যালয়, কলকাতা, প্রিন্ট ১৯২৮ https://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.336600
    21প্রাগুক্ত, পৃ ১২৭
    22প্রাগুক্ত, পৃ ১০২-১০৩
    23প্রাগুক্ত, পৃ ১১২
    24ঋগ্বেদ ১০/৪০/২, রমেশচন্দ্র দত্ত
    25ঋগ্বেদ ১০/১৮/৮, রমেশচন্দ্র
    26আগে উল্লেখিত হয়েছে, সত্যার্থ প্রকাশ দেখুন
    27অথর্ববেদ ১৪/২/১৮, সত্যার্থ প্রকাশ বইয়ে দয়ানন্দ স্বরস্বতীর অনুবাদ দেখুন
    28ভারতে বিবাহের ইতিহাস, ড. অতুল সুর, পৃ ১৫-১৮,২৯, শঙ্খ প্রকাশন, প্রিন্টঃ ১৯৬০ https://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.266522
    29মনুসংহিতা ৯/৫৯, অনুবাদঃ মানবেন্দু বন্দোপাধ্যায়
    30মনুসংহিতা ৯/১৫৯
    31মনুসংহিতা ৯/১৬৭
    32মনুসংহিতা ৯/৭৬, অনুবাদঃ সুরেশচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়, প্রকাশকঃ আনন্দ পাবলিশার্স
    33মনুসংহিতা ৯/৮১, মানবেন্দু বন্দোপাধ্যায়
    34যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা ১/৬৭-৭০
    35যাজ্ঞবল্ক্যসংহিতা ২/১৩০
    36গৌতমসংহিতা ১৮/৩-৪
    37গৌতমসংহিতা অধ্যায় ২৯
    38বসিষ্ঠসংহিতা ১৭/৫৬
    39বিষ্ণুসংহিতা ১৫/১-৩
    40নারদ স্মৃতি, দ্বাদশ ব্যবহারপদ, শ্লোক ৮০-৮৭
    42শ্রীমদ্ভাগবত ৯/৬/২-৩, প্রভুপাদ, বঙ্গানুবাদঃ ভক্তিচারু স্বামী
    43গরুড়পুরাণ, পূর্বখণ্ড, অধ্যায় ৯৫, শ্লোক ১৬-১৭, রসিকমোহন
    44দেবীভাগবতম্, স্কন্দ ১, অধ্যায় ২০, শ্লোক ৫০-৭৪
    45দেবীভাগবতম্, ৬/২৫/১-২১, অনুবাদঃ পঞ্চানন তর্করত্ন, নবভারত পাব্লিশার্স
    46দেবী ভাগবত পুরাণ, ২/৬/২
    47বিষ্ণুপুরাণ ৪/৪/৩৮, অনুবাদঃ পঞ্চানন তর্করত্ন
    48মহাভারত, আদিপর্ব, অধ্যায় ৯৫, কালীপ্রসন্ন সিংহ
    49মহাভারত আদিপর্ব, অধ্যায় ১০৩
    50মহাভারত আদিপর্ব, অধ্যায় ১০৫
    51মহাভারত, আদিপর্ব, অধ্যায় ১০৪
    52মহাভারত, আদিপর্ব, অধ্যায় ১০৬
    53মহাভারত, আদিপর্ব, অধ্যায় ১২০
    54প্রাগুক্ত, অধ্যায় ১২১
    55প্রাগুক্ত, অধ্যায় ১২২
    56বাল্মিকী রামায়ণ, কিষ্কিন্ধ্যাকাণ্ড, সর্গ ৬৬, শ্লোক ২৮, হেমচন্দ্রের অনুবাদ
    57https://www.sabguru.com/news/woman-alleges-rape-by-guru-in-jaipur-after-her-husband-left/

    ইন্দো আর্য

    ফাইভ পাশ, হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটি, ইন্ডিয়া Join: t.me/HinduDhormo
    5 1 vote
    Article Rating
    Subscribe
    Notify of
    guest
    4 Comments
    Oldest
    Newest Most Voted
    Inline Feedbacks
    View all comments
    Mahfuzz Alam
    1 year ago

    ভালো হইসে

    Sadi
    Sadi
    1 year ago

    ছিঃ! কি অশ্লীল ব্যাপার, এটা নাকি আবার একটা ধর্ম। আপনাদের ওয়েবসাইট থেকে হিন্দুধর্ম সম্পর্কে অনেক ভিতরে বিষয় জানতে পারি। ধন্যবাদ আপনাদের চালিয়ে যান!

    প্রেমা
    প্রেমা
    1 year ago

    সনাতন ধর্মের জুড়ি নাই

    Ashraful Nafiz
    1 year ago

    ভাইরে ভাই, হিন্দু ধর্মেত অস্থির অস্থির আজব ধরনের বিধান আছে, আগেত জানতামও না

    Back to top button
    FromMuslims We would like to show you notifications for the latest updates.
    Dismiss
    Allow Notifications