কুরবানী কি স্বার্থপরতা নয়?
শুধু মাত্র নিজের স্বাদগ্রন্থি প্রশমিত করার জন্য প্রাণীহত্যা কি স্বার্থপরতা নয়? শুধু কুরবানী নয়, নরমালি প্রাণির গোশত খাওয়া কতখানিক যৌক্তিক ও কতখানিক ভাল? প্রাণীর গোস্তের ক্ষতিকর দিকও বেশি।
তাহলে কি শুধু মাত্র নিজের স্বাদগ্রন্থি প্রশমিত করার জন্য ছাড়া অন্য কারনে প্রাণীহত্যা কি স্বার্থপরতা নয়? পৃথিবীতে খাওয়ার জন্য ছাড়াও হাজার হাজার প্রাণীকে অসংখ্যা কারনে হত্যা করা হয় সেটা কি জানেন? সেই দিকে কি খেয়াল আছে!? জানা আছে!? খাওয়া ছাড়াও মানুষ যে অসংখ্যা প্রাণীকে ইচ্ছাকৃত অনিচ্ছাকৃত হত্যা করে সবসময় সেগুলো কি জানেন না? যদি জেনে থাকেন তাহলে আগে সেগুলো বন্ধ করেন তারপর না হয় খাওয়ার বিরোধীতা করিয়েন।
যাইহোক, আপনার যদি মন চায় যে কোন মাংস খাবেন না সেটা নিতান্তই আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার, ইসলামে গোস্ত খেতে বাধ্য করে নাই, মাংস না খেয়েও একজন মুসলিম শুধু সাধারন মুসলিম না, সে চাইলে মুমিন মুসলিমও হতে পারে।
কিন্তু তার মানে এই না যে যারা খায় তাদেরকে আপনি বাধ্য করবেন না খাওয়ার জন্য, কারন প্রত্যেকের আলাদা আলাদা ব্যক্তি স্বাধীনতা রয়েছে এই বিষয়ে।(মানুষের দৃষ্টি ও শরিয়ার দৃষ্টি উভয় দিক থেকে) যে মাংস খায় ও যে খায় না তাদের ফিলসফি এক হবে না এটাই স্বাভাবিক, তাই বলে আপনি নিজের মায়াকান্না আরেক জনের উপর চাপিয়ে দিতে পারেন না।
আপনি খান না বা খেতে চান না এতে আমাদের ও অন্য কারো কিছু যায় আসে না, কারন আমার মত অনেকেই খায়, আমারতো পছন্দও। যদিও দাম ও ওজনের দিক দিয়ে খেয়াল রাখতে হয় বিধায় নিয়ন্ত্রণে থেকে খেতে হয়। মাংসের মধ্যে আবার গরুর স্বাদই আলাদা, আমারতো নিয়ত আছে যত হালাল ও রুচিসম্মত মাংস আছে সব ট্রাই করার (আল্লাহ তৌফিক দিলে)
কোরআনে আল্লাহ বলেছেন,
তিনিই যমীনে যা আছে সব তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তারপর আসমানের প্রতি খেয়াল করলেন এবং তাকে সাত আসমানে সুবিন্যস্ত করলেন। আর সব কিছু সম্পর্কে তিনি সম্যক জ্ঞাত। [ আল-বাকারা আয়াত ২৯]
আর যা কিছু রয়েছে আসমানসমূহে এবং যা কিছু রয়েছে যমীনে, তার সবই তিনি তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন। চিন্তাশীল কওমের জন্য নিশ্চয় এতে নিদর্শনাবলী রয়েছে। [সূরা জাছিয়াহ ১৩]
তুমি কি লক্ষ্য করনি, নভোমণ্ডলে ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহ্ তা’আলা মানুষের কল্যাণের জন্যে নিয়োজিত করে রেখেছেন এবং তোমাদের প্রতি বাহ্যিক ও গোপনীয়- দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান নিয়ামতসমূহ উদারভাবে ঢেলে দিয়েছেন? [সূরা লোকমান ২০]
আর আমরা আসমান, যমীন ও এ দুয়ের মধ্যবর্তী কোন কিছুই অনর্থক সৃষ্টি করিনি। অনৰ্থক সৃষ্টি করার ধারণা তাদের যারা কুফরী করেছে, কাজেই যারা কুফরী করে তাদের জন্য রয়েছে আগুনের দুর্ভোগ [সূরা সোয়াদ আয়াত ২৭]
আল্লাহ যেখানে আমাদের জন্যই সেগুলো সৃষ্টি করেছেন এবং হালালও করেছেন খাওয়ার জন্য সেহেতু আর নিজের রুহকে কষ্ট দিয়ে না খাওয়ার কোন কারন দেখছি না। যদি আপনি নাস্তিক হন, তাহলেতো আর কথাই নেই, কারন মাংস খাওয়া মানুষের জন্য প্রাকৃতিক বিষয়, যদি এমন না হত তাহলে মানুষের কেন মাংস হজম করার ক্ষমতা রয়েছে!? মাংসাশী ও তৃণভোজী উভয় প্রাণীর মত দাঁত কেন রয়েছে!? মানুষ সর্বভুক প্রাণী হল কেন!? অন্য প্রাণীরা একে অপরকে খাচ্ছে, আর আমরাও তাদেরকে খাচ্ছি, সব কিছুই ফুড চেইনেরই অন্তর্ভূক্ত।
আর মাছ-মাংসের কি উপকারিতা আছে আর কি নেই তা আপনি অনলাইনে খুজলেই পেয়ে যাবেন, খুজলে হাজার হাজার পিয়ার রিভিউড জার্নালও পেতে পারে। তাই আমি আর বাড়তি কিছু বলছি না।
বেশি কিছু বলছি না, এই আর্টিক্যালটা পড়তে পারেন, এখানে আশা করি সব প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন -
কোরবানীর সময় নামধারী পশুপ্রেমীদের ভন্ডামির ও অপপ্রচারের জবাব
Please login or Register to submit your answer