নারীর সম্মান রক্ষার জন্য নয়, উপভোগ করতেই ১৬,০০০+ বিবাহ করেছিলেন কৃষ্ণ
শ্রীকৃষ্ণ কর্তৃক ১৬,০০০+ নারীকে বিবাহের প্রকৃত কারণ
ভূমিকা
মাঝে মধ্যেই হিন্দুদেরকে দেখা যায় ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করতে। শীর্ষে থাকা অভিযোগ গুলোর একটি হলো ইসলামে বহুবিবাহের অনুমোদন সম্পর্কে। যদিও আমরা জানি ইসলামে বহুবিবাহ বাধ্যতামূলক নয় এবং তা কেবল তখনই করা যেতে পারে যখন একাধিক বিবাহ করলেও স্ত্রীগণের মাঝে সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয় [1]কুরআন ৪:৩। তারা অনেকটা এভাবে বলে থাকেন, “ইসলামে একজন পুরুষের চার জন স্ত্রী থাকতে পারে। এটা কখনোই নৈতিক নয়।” অথবা, “নবী মুহাম্মদ এগারো জন নারীকে বিয়ে করেছেন। এটা কি কোনো নবীর চরিত্রের সাথে যায়?” ইত্যাদি।
বহুবিবাহ যৌক্তিক হওয়ার পরও তারা যখন বিষয়টি মানতে চান না, তখন কোনো কোনো দ্বীনিভাই হয়তো শ্রীকৃষ্ণের ১৬,১০৮ নারীকে বিবাহের প্রসঙ্গ আনেন। তখন হিন্দু দাদাদের স্রেফ একটাই যুক্তি, “নরকাসুর নামক এক অসুর ১৬,১০০ জন কুমারীদের বন্দী করে রেখেছিল। তখন শ্রীকৃষ্ণ নরকাসুরকে বধ করে সেই ১৬,১০০ জন কুমারীকে মুক্ত করেছিলেন। সমাজে তাদের পুনরায় স্বীকৃতি দিতেই কৃষ্ণ সেই সকল কুমারীকে বিবাহ করেছিলেন। তিনি তাদের সম্মান পুনরুদ্ধার করে প্রকৃত ভগবান হওয়ার প্রমাণ দিয়েছেন।” যাই হোক, যেহেতু তারা আল্লাহর রাসূলের চরিত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, তাই শ্রীকৃষ্ণের চরিত্র পাঠকের কাছে প্রকাশ করতে বাধ্য হলাম।
১৬,০০০+ বিবাহের কারণ কি সম্মানের পুনরুদ্ধার নাকি উপভোগ ?
এ প্রসংঙ্গে হিন্দু দাদাদের যুক্তির সাথে তাদের শাস্ত্র প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে দ্বিমত পোষণ করছে।
লিঙ্গ পুরাণের বক্তব্য (প্রত্যক্ষ)
হিন্দুদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ গুলোর মধ্যে ১৮ মহাপুরাণ অন্যতম। আর লিঙ্গ পুরাণ এই ১৮ মহাপুরাণেরই একটি। লিঙ্গ পুরাণ অনুযায়ী কৃষ্ণ সেই ১৬,০০০+ নারীকে বিবাহ করেছিলেন যাতে করে তিনি তাদেরকে উপভোগ করতে পারেন [2]লিঙ্গ পুরাণ: পূর্বভাগ: অধ্যায়: ৬৯: শ্লোক: ৭০-৮৩, Bangla Translation ; English Translation।
“…শ্রীকৃষ্ণ দেবাংশসম্ভূত দৈত্যরাজ নরককে হনন করিলেন। শ্রীকৃষ্ণ অবলীলাক্রমে মহাত্মা বায়ু এবং নারদের অনুগ্রহে অতুলবিক্রম একশত ষোড়শসহস্র নিজের উপভোগ্য কন্যাসমূহ গ্রহণ করিলেন।”লিঙ্গ পুরাণ: পূর্বভাগ: অধ্যায়: ৬৯: শ্লোক: ৭০-৮৩
দিল্লি থেকে ১৯৫১ সালে প্রকাশিত লিঙ্গ পুরাণের ইংরেজি অনুবাদেও একই ধরনের কথা দেখা যায়।
“…He killed the leading Daitya Naraka born of Devas…The excessively strong one, of unequalled exploit, Kṛṣṇa took up sixteen thousand one hundred girls for his own pleasure…”Linga Purana: Section:1 : Chapter: 69 : Verse: 70-83
ইংরেজি অনুবাদও পরিষ্কার, “…Kṛṣṇa took up sixteen thousand one hundred girls for his own pleasure…”। অনুবাদে ‘Pleasure’ শব্দটিকে ব্যবহার করা হয়েছে। আশা করি এর অর্থ বলে দিতে হবে না। এটি চেনা এবং প্রায়ই ব্যবহৃত হয় এমন শব্দ। তবুও একবার মনে করিয়ে দিই। ইংরেজি শব্দ ‘Pleasure’ এর সাধারণ অর্থ ভোগসুখ, আমোদ-প্রমোদ, ইন্দ্রিয়তৃপ্তি, আনন্দ, খুশি ইত্যাদি [3]https://www.english-bangla.com/dictionary/pleasure। অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণ নিজস্ব উপভোগের জন্য ১৬,১০০ কন্যাকে গ্রহণ করেছিলেন।
পাঠক, চিন্তা করুন! যেখানে হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ বলছে কৃষ্ণ সেই ১৬,১০০ নারীকে বিবাহ করেছিলেন, তাদেরকে উপভোগ করতে, সেখানে দাদাদের যুক্তি কীভাবে চলে? শাক দিয়ে মাছ ঢাকার বৃথা চেষ্টা।
উপভোগ অনেকেই করে। তাই বলে উপভোগ করতে ১৬,০০০+ নারীকে বিবাহ! হিন্দু দাদাদের কাছে আমার প্রশ্ন, এটা কি কোনো ভগবানের চরিত্রের সাথে যায়? যদিও এসব প্রশ্ন করে লাভ নেই। কেননা তাদের ও আমাদের মাঝে পার্থক্য হলো আমরা গান গাই, “নবী মোর পরশ মনি, নবী মোর সোনার খনি…” আর তারা গায় “…কলঙ্কিনী রাধা কদম ডালে বসিয়া আছে কানু হারামজাদা মা তুই জলে না যাইও.. ”। যারা এভাবে ফুর্তি করে গান গেয়ে নিজেদের ভগবানকে হারামজাদা আর দেবীকে কলঙ্কিনী বলতে পারে তাদের কাছে কী আর উত্তর পাবো?
শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণের বক্তব্য (পরোক্ষ)
শ্রীকৃষ্ণের ১৬,০০০+ বিবাহ যে সেই নারীদের সম্মান রক্ষার জন্য নয় বরং উপভোগের জন্যই ছিল তার প্রমাণ তো হিন্দুদের ধর্মগ্রন্থ থেকে দেখা গেল। যেখানে প্রত্যক্ষ ভাবে হিন্দু দাদাদের ধর্মগ্রন্থ তাদের শাক দিয়ে মাছ ঢাকার যুক্তির সাথে দ্বিমত পোষণ করছে। এবার শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ থেকে দেখা যাক শ্রীকৃষ্ণের ১৬,০০০+ নারীকে বিবাহের কারণ কী ছিল।
শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণও হিন্দুদের ১৮ মহাপুরাণের একটি। শ্রীকৃষ্ণের ১৬,০০০+ নারীকে বিবাহের কারণ কী ছিল, এই বিষয়ে শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ প্রত্যক্ষ ভাবে অর্থাৎ সরাসরি কিছু না বললেও পরোক্ষ ভাবে বলেছে। শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী শ্রীকৃষ্ণের প্রত্যেক স্ত্রী থেকে ১০ জন করে পুত্রের জন্ম হয়েছিল [4]শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণ: স্কন্ধ:১০: অধ্যায়:৬১: শ্লোক:১, Bangla Translation ; English Translation। এখানে প্রশ্ন হলো, যদি তিনি ১৬,০০০+ নারীকে সমাজে পুনরায় স্বীকৃতি দিতেই বিয়ে করে থাকতেন তাহলে তাদের প্রত্যেকের থেকে ১ টি নয় ২ টি নয় একেবারে ১০ টি করে সন্তানের জন্ম কেন দিলেন? এতেই প্রমাণ হয় তিনি তাদেরকে উপভোগ করতেই বিবাহ করেছিলেন।
“ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পত্নীগণের প্রত্যেকে দশ জন পুত্রের জন্ম দান করেছিলেন, যাঁরা প্রত্যেকেই তাঁদের পিতার সকল নিজস্ব ঐশ্বর্য সমন্বিত হওয়ায়, তাঁদের পিতার থেকে তাঁরা কেউ হীনগুণ হয়নি।”শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ: স্কন্ধ: ১০: অধ্যায়:৬১: শ্লোক:১
যে অনুবাদটি দেখলেন সেটি শ্রীমদ্ ভক্তিচারু স্বামী করেছেন। যা ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা স্বামী প্রভুপাদের শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণের ইংরেজি অনুবাদের বাংলা অনুবাদ। ধারনা করুন তো একবার শ্রীকৃষ্ণের পুত্রদের সংখ্যা কত! শ্রীকৃষ্ণের স্ত্রী মোট ১৬,১০৮ জন (৮ জন প্রধানা স্ত্রী এবং ১৬,১০০ জন নরকাসুরকে বধ করে লাভ করা) প্রত্যেকের থেকে ১০ জন করে পুত্র জন্মালে মোট পুত্রের সংখ্যা দাঁড়ায় (১৬,১০৮ × ১০) জন = ১,৬১,০৮০ জন । এটি শ্রীমদ্ ভক্তিচারু স্বামীও শ্লোকটির তাৎপর্যে নিম্নোক্ত ভাবে লিখেছেনঃ
শ্রীকৃষ্ণের ১৬,১০৮ জন পত্নী ছিলেন, আর তাই এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, শ্রীভগবান ১৬১,০৮০ জন পুত্র উৎপন্ন করেছিলেন।
একই ভাবে তার ৮ জন প্রধানা স্ত্রী ব্যতীত কেবলমাত্র নরকাসুরের থেকে যে ১৬,১০০ নারীকে মুক্ত করেছিলেন তাদের থেকে জন্ম দেওয়া পুত্রের সংখ্যা (১৬,১০০ × ১০) জন = ১,৬১,০০০ জন (একলক্ষ একষট্টি হাজার জন)।
এগুলো দেখে মনে প্রশ্ন জাগে, যদি তিনি ১৬,০০০+ নারীকে সমাজে পুনরায় স্বীকৃতি দিতে, তাদের সম্মান রক্ষা করতেই বিয়ে করে থাকতেন, তাহলে তাদের থেকে ১,৬১০০০ জন পুত্রের জন্ম তিনি কেন দিয়েছিলেন? এর উত্তর একটাই, তার উদ্দেশ্য সেই নারীদেরকে নরকাসুরের থেকে মুক্ত করা নয় বরং নরকাসুর থেকে ডাকাতি করে নিয়ে গিয়ে উপভোগ করা। এভাবে শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণও পরোক্ষ ভাবে বলছে শ্রীকৃষ্ণের ১৬,০০০+ নারীকে বিবাহের কারণ হলো উপভোগ। এই কিনা ভগবানের চরিত্র? এত এত সন্তানকে বড় করার জন্য তো পুরো একটা জেলার প্রয়োজন হবে।
শ্রীকৃষ্ণকে বিবাহ করে তাদেরকে যে মাশুল দিতে হয়েছিল
শ্রীকৃষ্ণ যে সেই ১৬,০০০+ নারীকে উপভোগ করতেই বিবাহ করেছিলেন তা তো দেখা গেল। এবার আরও কিছু দেখা যাক চলুন।
শ্রীকৃষ্ণকে বিবাহ করে নরকাসুরের কবল থেকে সাময়িক ভাবে মুক্তি পেলেও সেই নারীরা শ্রীকৃষ্ণের উপভোগ্য পণ্যে পরিণত হন। শ্রীকৃষ্ণ তাদেরকে বাচ্চা উৎপাদনের মেশিনে পরিণত করেন। তাদের প্রত্যেকের থেকে তিনি ১০টা ১০টা করে মোট ১,৬১,০০০ জন পুত্রের জন্ম দেন। এতটাই যৌনপিপাসু ছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। যা কিছুক্ষণ আগেই দেখতে পেলেন। যিনি সব থেকে বেশি বাচ্চার পিতা হয়ে রেকর্ড গড়েছেন তিনিও হয়তো শ্রীকৃষ্ণের এই রেকর্ড ভাঙ্গতে পারেননি। শ্রীকৃষ্ণ শুধু সেই ১৬,০০০+ নারীকে নিজের উপভোগ্য পণ্যে পরিণত করেননি বরং তারা যেন ব্রাহ্মণদেরও উপভোগ্য পণ্য হতে পারেন সে ব্যবস্থা করে দিয়ে গিয়েছিলেন। কীভাবে? চলুন দেখা যাক।
মৎস্য পুরাণে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শ্রীকৃষ্ণের পুত্র সাম্বকে দেখে তার স্ত্রীগণ কামনা অনুভব করবেন। শ্রীকৃষ্ণ এ ব্যাপারে জেনে গেলে তিনি তাদেরকে অভিশাপ দেবেন যে, দস্যুরা যেন তাদেরকে হরণ করে নিয়ে যায়। তারপর ঠিক এমনটাই হবে। দস্যুরা তাদেরকে হরণ করে নিয়ে গিয়ে ভোগ করবে। তখন দাল্ড্যমুনি তাদেরকে অনঙ্গব্রত নামক এক প্রকার ব্রত পালন করতে বলবেন। এই ব্রত অনুযায়ী ১৩ মাস যাবৎ প্রত্যেক রবিবারে বিশেষ বিধি পালন করে ব্রাহ্মণের সাথে যৌনমিলন করতে হবে। আর সেই ব্রাহ্মণ যা করতে বলবেন তাদেরকে তাই করতে হবে এবং পুরোপুরি ব্রাহ্মণের কাছে নিজেকে সঁপে দিতে হবে [5]মৎস্য পুুরাণ: অধ্যায়: ৭০: শ্লোক:১-৬৪ Bangla Translation ; English Translation । শ্রীযুক্ত পঞ্চানন তর্করত্ন সম্পাদিত এবং শ্রী তারাকান্ত দেবশর্ম্মা কব্যতীর্থের অনুবাদ করা মৎস্য পুরাণ থেকে এ ব্যাপারে মূল শ্লোক গুলো দেখুন।
“…কৃষ্ণকামিনীরা সম্মিলিতভাবে একান্ত পানাসক্ত হইলে ঐ সময় তাহাদিগের সমীপস্থ পথ দিয়া কুরঙ্গনয়ন শ্রীমান্ শাম্ব মালতীমালায় মস্তক মণ্ডিত করিয়া⸻দিব্যালঙ্কারে অলঙ্কৃত ও রূপে যেন সাক্ষাৎ কন্দর্পের ন্যায় সুশোভিত হইয়া গমন করিবেন। তখন কৃষ্ণললনাগণ অনঙ্গশরে জর্জ্জরিত হইয়া তাঁহার প্রতি সাভিলাষ দৃষ্টিনিক্ষেপ করিবেন। তাঁহাদের হৃদয়ে মন্মথালাগ্নি উদ্দীপিত হইয়া উঠিবে। জগন্নাথ শ্রীকৃষ্ণ ধ্যাননেত্রে তাঁহাদিগের সেই স্মরবিকৃত ভাব দর্শন করিয়া তাঁহাদিগকে এইরূপ অভিসম্পাত করিবেন যে, আমার অপ্রত্যক্ষে তোমরা যখন কাম-লোলতা নিবন্ধন ঈদৃশ অসঙ্গতাচরণ করিয়াছ, তখন দস্যুগণ তোমাদিগকে হরণ করিয়া লইবে।…দস্যুগণ জলধিপ্রান্তে লইয়া গিয়া তাহাদিগকে সম্ভোগ করিবে।…তাহারা এইরূপ দুরবস্থায় সন্তপ্ত হইয়া অবস্থান করিলে, একদা যোগাত্মা মহাতপা দাল্ড্যমুনি তথায় আগমন করিবেন। তখন সেই সকল কৃষ্ণকামিনীরা অর্ঘ্য দ্বারা তাঁহাকে পুজা ও বার বার প্রণাম করিয়া অশ্রুপূর্ণ নয়নে তাঁহাদের সেই সেই পূর্ব্বতন বিপুল ভোগ সকল, সেই সেই দিব্য দিব্য মাল্যানুলেপন, সেই অনন্ত অপরাজিত জগৎপতি ভর্ত্তা, সেই স্বর্গীয় পুরী দ্বরকা, সেই সেই নানারত্নখচিত গৃহশ্রেণী, এবং সেই সেই দ্বরকাবাসী দিব্য দিব্য কুমারদিগকে স্মরণ করিয়া কাঁদিতে কাঁদিতে ঋষির সম্মুখে আসিয়া এইরূপ প্রশ্ন করিবেন যে, হে ভগবন্! দস্যুদল আমাদিগকে বলপূর্ব্বক উপভোগ করিয়াছে।…হে ব্রহ্মন্! আপনি আমাদের শরণ হউন। পুরাকালে ধীমান্ কেশব আপনাকেই আমাদের উদ্ধারের উপায় বলিতে আদেশ করিয়া ছিলেন। অতএব হে তপোধন! আমরা কি জন্য ঈশ্বর সহ সংযোগপ্রাপ্ত হইয়াও বেশ্যা হইলাম!…যাহা হউক আমি তোমাদিগকে অন্য ব্রত উপদেশ দিতেছি তোমরা বিনা বিচারে সকলেই তাহা অনুষ্ঠান করিবে।…কোন বেদপরাগ ধর্ম্মজ্ঞ অবিকলাঙ্গ ব্রাহ্মণকে আহ্বান করিয়া গন্ধপুষ্পাদি দ্বারা পূজাপূর্ব্বক ঘৃতপাত্র সহ এক প্রস্থ শালেয় তণ্ডুল প্রদান করিবে। দানকালে বলিবে⸻মাধব প্রীত হউন। পরে সেই বিপ্রকে যথেষ্ট আহার দিয়া রতির নিমিত্ত ‘এই দ্বিজোত্তমই সাক্ষাৎ কামদেব’ মনে মনে এইরূপ অবধারণ করিবে। অনন্তর সেই ব্রাহ্মণ যাহা যাহা ইচ্ছা করেন, সেই ব্রতচারিণী বিলাসিনী তাহাই করিবে। স্মিত-পূর্ব্ব-ভাষিণী কামিনী তাহার নিকট সর্ব্বপ্রকারে আত্মসমর্পণ করিবে।…তখন হইতে যে ব্রাহ্মণ রতিনিমিত্ত রবিবারে গৃহাগত হইবে, তাহার প্রতি সম্মান দেখাইবে। এইরূপ ত্রয়োদশ মাস যাবৎ দ্বিজোত্তমদিগকে যথাকাম সন্তুষ্ট করিবে।…এক্ষণে তোমরা এ ব্রত অনুষ্ঠান করো। যে কালাণিনী নারী অখণ্ডিতভাবে এই ব্রত আচরণ করে, মাধবলোকে তাহার বাস হয়। সে দেবগণ কর্ত্তৃক পূজিতা হইয়া আনন্দপ্রদ বিষ্ণুভবন প্রাপ্ত হইয়া থাকে। ভগবান্ কহিলেন,⸻তপোধন দাল্ড্য সেই অঙ্গনাদিগকে অনঙ্গব্রত উপদেশ দিয়া স্বস্থানে গমন করিবেন এবং সেই অঙ্গনারাও তাঁহার উপদেশ মত সম্পূর্নরূপে ব্রতাচারণ করিবে।”
[মৎস্য পুুরাণ: অধ্যায়: ৭০: শ্লোক:১-৬৪]
এই অনুবাদটি বুঝতে সমস্যা হলে ইংরেজি অনুবাদ দেখুন (লিংক Footnotes এ দেওয়া আছে)। এখানে ‘রতি’ অর্থ সহবাস বা যৌনমিলন। অর্থাৎ ১৩ মাস পর্যন্ত প্রতি রবিবার ব্রাহ্মণের সাথে বিছানায় যেতে হবে। এমনকি নিজেকে সেই ব্রাহ্মণের কাছে সঁপে দিতে হবে, সে যা বলবে তাই করতে হবে। শ্রীকৃষ্ণের দেওয়া অভিশাপের ফলে এভাবেই তারা ব্রাহ্মণদের পতিতায় পরিণত হয়েছিলেন। অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণ নিজেও যেমন তাদেরকে উপভোগ করেছেন তেমনি ব্রহ্মণরাও যেন তাদেরকে উপভোগ করতে পারেন সে ব্যবস্থা তিনি করে দিয়ে গিয়েছিলেন। আর তা তিনি করেছিলেন অভিশাপ দেওয়ার মাধ্যমে।
হিন্দু দাদারা হয়তো এখন যুক্তি দিতে পারেন, “তিনি তো আর বিনা অপরাধে অভিশাপ দেননি। কৃষ্ণের পুত্র সাম্বকে দেখে তাদের মনে কামভাব জাগার কারণেই তো তিনি তাদেরকে অভিশাপ দিয়েছিলেন। স্বামীর পুত্র নিজেরও পুত্র। সুতরাং নিজের পুত্রের প্রতি যারা কামনা অনুভব করে তাদের তো অভিশাপই প্রাপ্য!”
বেশ! নিজেদের ধর্মগ্রন্থ চর্চা না করার ফল যাকে বলে আরকি! ইসলামের পেছনে না লেগে যদি নিজেদের ধর্মগ্রন্থ দাদারা চর্চা করতেন, তাহলে আর এমন হাস্যকর যুক্তি দিতেন না। কেননা এটা সরাসরি তাদের শাস্ত্রের বিরুদ্ধে যায়। কীভাবে? চলুন দেখা যাক।
নারীদের স্বভাব সম্পর্কে হিন্দুধর্ম কী বলে?
হিন্দুধর্ম মতে নারী মানেই কামুক। তারা নাকি স্বভাবতই যৌনমিলনপ্রিয়। পুরুষের সঙ্গ তাদের যতটা প্রিয় দেবতার সঙ্গও নাকি তাদের কাছে ততটা প্রিয় নয়। এমনকি যখন তাদের কামনা জাগে তখন তারা বাবা, পুত্র, ভাই, দেবর কিছুই বিচার করে না। হিন্দুধর্ম অনুযায়ী এটাই তাদের সহজাত প্রবৃত্তি। মহাভারত থেকে জানা যায় বৃদ্ধার বেশে উত্তরদিক মহর্ষি অষ্টাবক্রকে এগুলো জানিয়েছিলেন [6]মহাভারত: অনুশাসন পর্ব: অধ্যায়:১৯ Bangla Translation ; English Translation।
“…তখন বৃদ্ধা কহিল, ভগবন্! স্ত্রীলোকেরা স্বভাবতই রতিপ্রিয়! পুরুষসংসর্গ উহাদিগের যেমন প্রীতিকর, অগ্নি, বরুণ প্রভৃতি দেবতারাও উহাদের তাদৃশ প্রীতিপ্রদ নহেন।…যখন উহাদিগের কামপ্রবৃত্তি প্রবৃদ্ধ হয়, তৎকালে উহারা পিতা, মাতা, ভ্রাতা, ভর্ত্তা, পুত্র ও দেবরের কিছুমাত্র অপেক্ষা করে না। আপনার অভিলাষ পূর্ণ করিতেই ব্যতিব্যস্ত হইয়া থাকে। হে তপোধন! প্রজাপতি স্ত্রীজাতিসংক্রান্ত যে সমস্ত দোষের কথা উল্লেখ করিয়াছেন, এই আমি আপনার নিকট তৎসমুদায় অবিকল কীর্ত্তন করিলাম।”
[মহাভারত: অনুশাসন পর্ব: অধ্যায়:১৯]
নারীজাতিকে কী জঘন্য অপমান! হিন্দু দাদারা, আপনার মা, বোন, কন্যা তারা কি যৌনমিলনপ্রিয়? দেবতার সঙ্গ থেকে পুরুষ সঙ্গই কি তাদের কাছে বেশি প্রিয়? তাদের যৌনমিলনের ইচ্ছা হলে তারা কি বাবা, পুত্র, ভাই, দেবর কিছুই বিচার করেন না এবং নিজের সেই ইচ্ছাকেই গুরুত্ব দেন? দয়া করে উত্তরে না বলবেন না। কেননা আপনাদের ধর্মগ্রন্থ তো বলছে নারীরা স্বভাবতই এমন। এছাড়া স্কন্দ পুরাণ মতে একজন নারী সাধকই হোক না কেন, সুন্দর পুরুষ দেখলেই তার যোনিরস ক্ষরিত হয় [7]স্কন্দ পুরাণ: প্রভাস খণ্ড: প্রভাসক্ষেত্র মাহাত্ম্য: অধ্যায়: ১০১: শ্লোক: ২০-৩৭ Bangla Translation English Translation ।
“…রমণী ব্রহ্মচারিণীই হৌক বা যোগিনীই হৌক, সুন্দর পুরুষ দর্শনে প্রমাদবশতঃ তাহার বরাঙ্গ ক্লিন্ন হইয়া থাকে।…”
[স্কন্দ পুরাণ: প্রভাসখণ্ড: প্রভাসক্ষেত্র মাহাত্ম্য: অধ্যায়: ১০১: শ্লোক: ২০-৩৭]
এখানে ‘বরাঙ্গ’ অর্থ যোনি এবং ‘ক্লিন্ন’ অর্থ ‘আর্দ্র’ বা ‘ভেজা’। অর্থাৎ স্কন্দ পুরাণ মতে সুন্দর পুরুষ দেখলে নারীদের যোনি ভিজে যায়। এই হলো হিন্দুর্ধমে নারীর সম্মান। স্কন্দ পুরাণ থেকে আরও একটি তথ্য পাওয়া যায়। মেয়েরা নাকি সবসময়ই যৌনমিলন করার জন্য পাগল হয়ে থাকে। তবে বিশেষ করে পিরিয়ডের সময় [8]স্কন্দ পুরাণ: আবন্ত্য খণ্ড: রেবা খণ্ড: অধ্যায়: ১২১: শ্লোক: ৭-৯ Bangla Translation ; English Translation।
“…রমণীগণের কামবাসনা সততই প্রবল থাকে, বিশেষতঃ ঋতুকাল সমুত্থিত হইলে তাহারা স্মরশয়ে সমধিক পীড়িত হইয়া থাকে।…”
[স্কন্দ পুরাণ: আবন্ত্য খণ্ড: রেবা খণ্ড: অধ্যায়: ১২১: শ্লোক: ৭-৯]
অনুবাদে ব্যবহৃত ‘স্মরশয়’ শব্দটি দু’টি সংস্কৃত শব্দের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে। সেগুলো হলো ‘স্মর’ যার অর্থ ‘কামনা’ [9]https://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.31959/page/n1310/mode/1up এবং ‘শয়’ যার অর্থ ‘তীর’ [10]https://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.31959/page/n1245/mode/1up। অর্থাৎ নারীরা সবসময় যৌনমিলন করতে পাগল হয়ে থাকে। বিশেষ করে ঋতুস্রাব চলাকালীন তারা আরও বেশি কামের তীরে যন্ত্রণা পায়।
মহাভারত এবং স্কন্দ পুরাণ থেকে আমরা পেলাম— নারীরা সবসময়ই যৌনমিলন করার জন্য পাগল হয়ে থাকে। দেবতার সঙ্গ থেকে পুরুষ সঙ্গই তাদের কাছে বেশি প্রিয়, এমনকি তারা বাবা, ভাই, পুত্রের সাথেও যৌনতা করতে চায়, কোনো সুন্দর পুরুষ দেখলেই তাদের যোনিরস ক্ষরিত হয়ে যোনি ভিজে যায়। হিন্দুধর্ম অনুযায়ী নারীরা স্বভাবতই এমন বা এটাই তাদের সহজাত প্রবৃত্তি অর্থাৎ একজন স্বাভাবিক নারীর মাঝে এই বৈশিষ্ট্য গুলো থাকবে। এবার মূল কথায় ফিরি।
যদি নারীরা স্বাভাবিক ভাবেই এমন হয়ে থাকে, তবে সাম্বের প্রতি যৌনাকর্ষণ অনুভব করা জন্য শ্রীকৃষ্ণের স্ত্রীদেরকে কি দোষ দেওয়া যায়? নিশ্চয়ই না। কারণ হিন্দুধর্ম তো বলছে নারীদের বৈশিষ্ট্যই এমন। মানে এটাই তাদের সহজাত প্রবৃত্তি। বুঝিয়ে বলি; নবজাতক শিশুরা স্বভাবিক ভাবেই যে কারো কোলে মূত্রত্যাগ করে দিতে পারে। সে তার বাবা হোক, মা হোক বা কেউ হোক না কেন। এর জন্য তো তাকে দোষ দেওয়া যায় না। কারণ এটাই নবজাতক শিশুদের সহজাত প্রবৃত্তি। একই ভাবে হিন্দুধর্ম মতে নারীদের সহজাত প্রবৃত্তি হলো তারা বাবা, ভাই, পুত্র, দেবরের প্রতি যৌনাকর্ষণ অনুভব করে। তাই এই কাজের জন্য নারীদেরকে তো দোষ দেওয়া যায় না। তাহলে শ্রীকৃষ্ণ যে নিজের পুত্রের প্রতি কামনা অনুভব করায় তার স্ত্রীদেরকে অভিশাপ দিলেন এটা কি যৌক্তিক হয়েছে? নিশ্চয়ই না। কারণ তবে তো পৃথিবীর সমস্ত নারীকেই অভিশাপ দিতে হবে। যেহেতু হিন্দুধর্ম মতে এটাই নারীদের সহজাত প্রবৃত্তি। অর্থাৎ পৃথিবীর সমস্ত নারীই এমন।
হিন্দু দাদারা, দয়া করে এটা বলতে আসবেন না যে শ্রীকৃষ্ণ নারীদের এই সহজাত প্রবৃত্তির কথা জানতেন না। কারণ আপনাদের মতে তিনি তো ভগবান! ভগবান জানেন না এমন কোনো বিষয় আছে নাকি? শ্রীকৃষ্ণ এই কথা জানতেন এটা বুঝতে কোনো প্রমাণের দরকার পরে না। তাকে ভগবান বিশ্বাস করলে, তিনি জানতেন এটাও বিশ্বাস করতে হবে। তবুও শাস্ত্র থেকে জানা যায় তিনি আসলেই নারীদের সম্পর্কে এসব জানতেন। বরাহ পুরাণে উল্লেখ করা হয়েছে যে ঐ ঘটনা ঘটার পর কৃষ্ণ নিজেই নারদকে নারীদের স্বভাব কেমন তা বলেছিলেন [11]বরাহ পুরাণ: অধ্যায়: ১৭৭: শ্লোক:১৮-২২ English Translation। আর মনে রাখবেন শাস্ত্রে যদি এমনটা নাও লেখা থাকতো তবু আপনাদেরকে বিশ্বাস করতে হতো তিনি এসব বিষয় জানতেন। করণ তিনি তো ভগবান আপনাদের মতে।
“He then told Nārada in detail about the nature of women and their conduct leading to sin. “They have no consideration of time, of secerecy of what they do. Still they pass to be virtuous. Women irrespective of their age, whether they be girls, teenagers, middle-aged or advanced in age, get their passion excited at the sight of a handsome man. O great sage, this is nature to them. As for Sāmba, he is dignified, bright, virtuous and good. His excitement is only because of his beauty.”
[Varaha Purana: Chapter: 177: Verse:18-22]অর্থাৎ তিনি তখন নারদকে বিস্তারিত ভাবে নারীদের স্বভাব এবং তাদের পাপের পথে অগ্রসরকারী চরিত্র সম্পর্কে বললেন। “তাদের কোনো সময় জ্ঞান নেই, তাদের কর্মের গোপনীয়তা নেই। তবুও তারা পুণ্যবতী হওয়ার জন্য উত্তীর্ণ। নারীরা তাদের বয়স সম্বন্ধে উদাসীন, তারা বালিকা, কিশোরী, মধ্যবয়স্কা কিংবা বয়স্কাই হোক না কেন, একজন সুদর্শন পুরুষকে দেখলে তারা কামনায় উত্তেজিত হয়। হে মহর্ষি, এটিই তাদের স্বভাব। সাম্ব মহৎ, উজ্জ্বল, পূণ্যবান এবং উত্তম। তার উত্তেজনার কারণ কেবল তার সৌন্দর্য।”
অভিশাপ দেওয়ার কারণ তবে কী?
মনে একটি প্রশ্ন জাগতে পারে। শ্রীকৃষ্ণ যখন জানতেন যে নারীরা স্বভাবত কেমন, তাহলে শুধু শুধু জেনে বুঝে নিজের স্ত্রীদেরকে অভিশাপ দিয়েছিলেন কেন? এই অযৌক্তিক কাজ তিনি করেছিলেন কেন?
উত্তর খুবই সহজ। তিনি তাদেরকে ব্রাহ্মণদের উপভোগ্য পণ্য বানাতে চাইতেন। কিন্তু সরাসরি তাদেরকে ব্রাহ্মণদের কাছে যেতে বলাটা আপত্তিকর এবং লোকলজ্জার বিষয়। কিন্তু ব্রাহ্মণের উপভোগের জন্য স্ত্রীদেরকে তো তার পাঠাতেই হবে। তাই ঐ ঘটনাকে তিনি অজুহাত বানিয়েছিলেন। মানে তার স্ত্রীরা শাম্বের প্রতি যৌনাকর্ষণ অনুভব করলো, হোক সেটা নারীদের সহজাত প্রবৃত্তির জন্য। কিন্তু এই সুযোগে সেটাকে বাহানা বানিয়ে তিনি তাদেরকে অভিশাপ দিলেন। যেন তার স্ত্রীদেরকে ব্রাহ্মণদের উপভোগ্য পণ্য বানানোর লক্ষ্য তিনি পূর্ণ করতে পারেন। এই হলো শ্রীকৃষ্ণের চরিত্র! তিনি নিজে যেমন উপভোগের জন্য ১৬০০০+ নারীকে বিবাহ করেছিলেন, ঠিক তেমনি ব্রাহ্মণদের জন্যও উপভোগ করার ব্যবস্থা করে দিয়ে গিয়েছিলেন। তবে এ কাজ করে তার কী লাভ হয়েছিল জানেন?
তিনি হয়তো মনে করে ছিলেন, যে ১৬০০০+ নারীকে তিনি উপভোগ করতে বিবাহ করলেন, তার মৃত্যুর পর তাদেরকে কে উপভোগ করবে? তার মৃত্যুর পর যদি ব্রাহ্মণরা এই ১৬০০০+ নারীকে উপভোগ করে তা বরং এত বড় উপভোগ্য পণ্য পড়ে থেকে নষ্ট হওয়ার থেকে ভালো। তাছাড়া ব্রাহ্মেণকে এত বড় দান দেওয়াতে নাহয় কিছু পূণ্যপ্রাপ্তিও হলো। সব মিলিয়ে মৃত্যুর পরও উপভোগ্য সম্পদের বিশাল সদ্ব্যবহার করা যাবে।
ব্রাহ্মণদেরকে উপভোগ করার সুযোগ দেওয়ার ফলে তিনি কত পুণ্য কামিয়েছেন ভাবতেও পারবেন না! দেবীভাগবত পুরাণে কী উল্লেখ করা আছে দেখা যাক[12]দেবীভাগবত পুরাণ: স্কন্ধ: ৯: অধ্যায়:৩০: শ্লোক: ২১-৩০,
“…যিনি ভারতে ব্রাহ্মণকে সবস্ত্রা, অলঙ্কৃতা পতিব্রতা সুন্দরী ভোগ্যা কন্যা দান করেন, তিনি চতুর্দ্দশ ইন্দ্র পর্য্যন্ত চন্দ্রলোকে বাস করিয়া দিবানিশি স্বর্গবেশ্যার সহিত আনন্দে কাল যাপন করেন। হে সতি! পরে তিনি গন্ধর্ব্বলোকে অমৃত বর্ষ দিবারাত্র সকৌতুকে উর্ব্বশীকে লইয়া আনন্দভোগ করেন। তাহার পর সহস্র জন্ম সৌভাগ্যশালিনী সতী সুন্দরী কোমলাঙ্গী প্রিয়বাদিনী প্রিয়ালাভে সমর্থ হন।”
[দেবীভাগবত পুরাণ: স্কন্ধ: ৯: অধ্যায়:৩০: শ্লোক: ২১-৩০]
শ্রীকৃষ্ণ নিশ্চয়ই এগুলোও জানতেন। কারণ তিনি তো ভগবান আপনাদের মতে। কী পরিকল্পনাই না করেছিলেন তিনি! পৃথিবীতে যেমন উপভোগ করেছেন স্বর্গে গিয়েও তেমনি উপভোগ করার ইচ্ছা! দেবীভাগবত পুরাণ মতে ব্রাহ্মণকে ভোগ করার জন্য সুন্দরী কন্যা দান করলে চন্দ্রলোকে দিনরাত স্বর্গবেশ্যার সাথে আনন্দ করা যাবে। বেশ্যার সাথে কী আনন্দ করা হয় তা পাঠকগণ দয়া করে নিজেরাই বুঝে নেবেন। শুধু তাই নয়! উর্ব্বশীকে নিয়েও আনন্দ উপভোগ করা যাবে (উর্ব্বশী একজন অপ্সরা বা স্বর্গবেশ্যা এবং হিন্দুধর্মে উল্লিখিত অন্যতম অপ্সরাদের একজন)। আর তিনি তো ১টি ২টি নারী দান করেননি। করছিলেন ১৬,০০০+ ! স্বর্গে গিয়ে স্বর্গবেশ্যার সাথে তার আনন্দের লেভেলটা কী হবে ভাবতে পারছেন?
শ্রীকৃষ্ণের চরিত্রের পরিচয় হয়তো আর দিতে হবে না। তিনি প্রথমে নরকাসুরের কাছ থেকে নিজে উপভোগ করার জন্য ডাকাতি করে ১৬,০০০+ নারী নিয়ে এলেন। এরপর মরার আগে ব্রাহ্মণদের জন্যও উপভোগ করার ব্যবস্থা করে দিয়ে গেলেন। যেন তিনি স্বর্গে গিয়েও তার এই উপভোগের নেশা টিকিয়ে রাখতে পারেন। মানে পৃথিবীতে যেমন নারী উপভোগ করেছেন তেমনি স্বর্গে গিয়েও যেন নারী উপভোগ করতে পারেন (স্বর্গবেশ্যার সাথে যেন দিনরাত আনন্দ করতে পারেন)। এটা কি কোনো ভগবানের চরিত্রের সাথে যায়?
উপভোগের জন্য ১৬,০০০+ বিবাহ করলে, নিজে উপভোগ করার পর ব্রাহ্মণদেরকে উপভোগ করতে দিলে চরিত্র খুব ভালো থাকে। কিন্তু মাত্র ১১ টি বিবাহ করলে সেটা নবীর চরিত্রের সাথে যায় না? তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ, আমি আজ চোর বটে? হিন্দু দাদারা মনে রাখবেন, মুসলিমদেরকে কঞ্চি দিয়ে খোঁচা দিলে আমরা আপনাদের ঘাড়ে পুরো বাঁশ বাগান তুলে দেবো ইনশাআল্লাহ!
উপসংহার
শ্রীকৃষ্ণ সেই ১৬,০০০+ নারীর সম্মান রক্ষা করতেই তাদেরকে বিয়ে করে ছিলেন— হিন্দু দাদাদের এই অপপ্রচারের ফলে এটি গুজবের মতো সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে। দয়া করে কেউ গুজবে কান দেবেন না। অন্যকেও এই গুজব এড়াতে এই পোস্টটি বেশি বেশি শেয়ার করুন এবং FromMuslims.com এর পাশে থাকুন।
Footnotes
⇧1 | কুরআন ৪:৩ |
---|---|
⇧2 | লিঙ্গ পুরাণ: পূর্বভাগ: অধ্যায়: ৬৯: শ্লোক: ৭০-৮৩, Bangla Translation ; English Translation |
⇧3 | https://www.english-bangla.com/dictionary/pleasure |
⇧4 | শ্রীমদ্ভাগবত মহাপুরাণ: স্কন্ধ:১০: অধ্যায়:৬১: শ্লোক:১, Bangla Translation ; English Translation |
⇧5 | মৎস্য পুুরাণ: অধ্যায়: ৭০: শ্লোক:১-৬৪ Bangla Translation ; English Translation |
⇧6 | মহাভারত: অনুশাসন পর্ব: অধ্যায়:১৯ Bangla Translation ; English Translation |
⇧7 | স্কন্দ পুরাণ: প্রভাস খণ্ড: প্রভাসক্ষেত্র মাহাত্ম্য: অধ্যায়: ১০১: শ্লোক: ২০-৩৭ Bangla Translation English Translation |
⇧8 | স্কন্দ পুরাণ: আবন্ত্য খণ্ড: রেবা খণ্ড: অধ্যায়: ১২১: শ্লোক: ৭-৯ Bangla Translation ; English Translation |
⇧9 | https://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.31959/page/n1310/mode/1up |
⇧10 | https://archive.org/details/in.ernet.dli.2015.31959/page/n1245/mode/1up |
⇧11 | বরাহ পুরাণ: অধ্যায়: ১৭৭: শ্লোক:১৮-২২ English Translation |
⇧12 | দেবীভাগবত পুরাণ: স্কন্ধ: ৯: অধ্যায়:৩০: শ্লোক: ২১-৩০ |
ভাই অসম্ভব রকম ভালো হইছে।