হিন্দুধর্মের মূল গ্রন্থসমূহের পরিচিতি

আসুন জেনে নিই হিন্দুদের কোন গ্রন্থ কোন বিষয়ের উপর

হিন্দু_ধর্মের মূলগ্রন্থসমূহের পরিচিতি :

বেদ ৪ টি-মন্ত্র সংখ্যা- ২০,৪৩৪
১.ঋগবেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ১০,৫৮৯
২.সামবেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ১,৮৯৩
৩.যজু:বেদ. মন্ত্র সংখ্যা- ১,৯৭৫
৪.অথর্ববেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ৫,৯৭৭

উপবেদ ৪ টি.
১. আয়ুর্বেদ.
২.ধনুর্বেদ.
৩.গন্ধর্ববেদ.
৪.অর্থশাস্ত্র.

বেদাঙ্গ -৬ টি.
১.শিক্ষা- পাণিনী
২.কল্প- বিভিন্ন ঋষি সম্প্রদায়
৩.ব্যাকরণ- পাণিনী.
৪.নিরুক্ত- যাস্ক.
৫.ছন্দ- পিঙ্গলাচার্য.
৬.জ্যোতিষ- গর্ণ.

বেদের উপাঙ্গ-৪টি.
১.পুরাণ.
২.মীমাংসা.
৩.ন্যায়.
৪.ধর্মশাস্ত্র

বেদেরজ্ঞানকাণ্ড – ২ টি.
১.আরণ্যক.
২.উপনিষদ.

আরণ্যক – ৪ টি.
১.ঐতেরেয়.
২.কৌষীতকী
৩.শতপথ ব্রহ্মণ.
৪.ছান্দোগ্য.

উপনিষদ -১২ টি.
১.বৃহদারণ্যক মন্ত্র- ৪৩৫.
২.ছান্দোগ মন্ত্র- ৬৬৮
৩.তৈত্তিরীয় মন্ত্র- ৬৮.
৪.ঐতরেয় মন্ত্র- ৩৩
৫.ঈশোপনিষ মন্ত্র- ১৮
৬.কেন উপনিষদ- ৩৫য়
৭.কঠো উপনিষদ- ১১৯.
৮.প্রশ্ন উপনিষদ- ৬৭
৯.মুণ্ডকোপনিষদ-৬৫.
১০.মাণ্ডুক্যউপনিষদ- ১২
১১.শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ. মন্ত্র. – ১১৩. ১২.কৌষীতকী উপনিষদ মন্ত্র. – ৪৯.

ষড় দর্শন -৬ টি.
১.সাংখ্যা দর্শন – মহর্ষি কপিল.
২.যোগ দর্শন- পাতঞ্জলি.
৩.ন্যায় দর্শন – গৌতম.
৪.বৈশেষিক দর্শন-কণাদ.
৫.পূর্ব মীমাংসা – জৈমিনী.
৬.উত্তর মীমাংসা বেদান্ত দর্শন- ব্যাসদেব.

মীমাংসা – ২ টি.
১.কর্ম মীমাংসা
২.ব্রহ্ম মীমাংস বা বহ্মসূত্র.

স্মৃতি সংহিতা(সমাজ ব্যবস্থাপক শাস্ত্র) ২০টি ১.মনু সংহিতা
২.অত্রি সংহিতা.
৩.বিষ্ণু সংহিতা.
৪.হরিত সংহিতা.
৫.যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতা.
৬.পরাশর সংহিতা.
৭.ব্যাস সংহিতা.
৮.উশনা সংহিতা.
৯.অঙ্গিরা সংহিতা.
১০.যম সংহিতা.
১১.অপস্তম্ভ সংহিতা
১২.সম্বর্ত সংহিতা.
১৩.কাত্যায়ন সংহিতা.
১৪.বৃহস্পতি সংহিতা.
১৫.শঙ্খ সংহিতা
১৬.লিখিত সংহিতা.
১৭.দক্ষ সংহিতা.
১৮.গৌতম সংহিতা.
১৯.শতাতপ সংহিতা.
২০.বশিষ্ট সংহিতা.

পুরাণ – ২ টি.
১.মহাপুরাণ.
২.উপ-পুরাণ.

মহা পুরাণ -১৮টি.
১.ব্রহ্ম পুরাণ মন্ত্রসংখা-১০,০০০.
২.শিব পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৪,০০০.
৩.পদ্ম পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৫৫,০০০.
৪.বিষ্ণু পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৩,০০০.
৫.ভাগবত পুরাণ মন্ত্রনংখ্যা-১৮,০০০.
৬.মার্কণ্ডেয় পুনাণ মন্ত্রসংখ্যা-৯,০০০.
৭.অগ্নি পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৫,৪০০.
৮.ভবিষত পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৪,৫০০.
৯.ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৮ ,০০০.
১০.মৎস পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৪,০০০.
১১.লিঙ্গ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১১,০০০.
১২.বরাহ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৪,০০০.
১৩.কুর্ম্ম পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৭,০০০.
১৪.গরুড় পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৯,০০০.
১৫.ব্রহ্মা পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১২,০০০.
১৬.নারদীয় পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৫,০০০
১৭.স্কন্ধ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৮১,১০১.
১৮.বামন পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১০,০০০.

উপপুরাণের নিম্নোক্ত তালিকাটি পাওয়া যায়
আদি পুরাণ
আদিত্য পুরাণ
বৃহন্নারদীয় পুরাণ
নারদীয় পুরাণ
নন্দীশ্বর পুরাণ
বৃহন্নন্দীশ্বর পুরাণ
সাম্ব পুরাণ
ক্রিয়াযোগসার
কালিকা পুরাণ
ধর্ম পুরাণ
বিষ্ণুধর্মোত্তর পুরাণ
শিবধর্ম পুরাণ
বিষ্ণুধর্ম পুরাণ
বামন পুরাণ
বরুণ পুরাণ
নরসিংহ পুরাণ
ভার্গব পুরাণ
বৃহদ্ধর্ম পুরাণ

মহাপুরাণগুলির মতো অধিকাংশ উপপুরাণও উপকরণগত দিক থেকে সাম্প্রদায়িক চরিত্রের। উপপুরাণগুলিকে সম্প্রদায়ভেদে বৈষ্ণব, শাক্ত, শৈব, সৌর, গাণপত্য ও অসাম্প্রদায়িক – এই কয়টি ভাগে ভাগ করা যায়।

বৈষ্ণব উপপুরাণ সম্পাদনা
বৈষ্ণব উপপুরাণগুলির মধ্যে প্রধান: বিষ্ণুধর্ম পুরাণ, বিষ্ণুধর্মোত্তর পুরাণ, নরসিংহ পুরাণ, বৃহন্নারদীয় পুরাণ ও ক্রিয়াযোগসার।

শাক্ত উপপুরাণ সম্পাদনা
শাক্ত উপপুরাণগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য দেবী পুরাণ, কালিকা পুরাণ, মহাভাগবত পুরাণ, দেবীভাগবত পুরাণ, ভগবতী পুরাণ, চণ্ডী পুরাণ (বা চণ্ডিকা পুরাণ) ও সতী পুরাণ।

শৈব উপপুরাণ সম্পাদনা
শৈব উপপুরাণগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল শিব পুরাণ, সৌর পুরাণ, শিবধর্ম পুরাণ, শিবধর্মোত্তর পুরাণ, শিবরহস্য পুরাণ, একাম্র পুরাণ, পরাশর পুরাণ, বশিষ্ঠলৈঙ্গ পুরাণ ও বিখ্যাদ পুরাণ।

শিবধর্ম পুরাণ-এ শুধুমাত্র ধর্মীয় ক্রিয়াকাণ্ডের উল্লেখ আছে। এটি একটি ধর্মশাস্ত্র হিসেবে উল্লিখিত হয়েছে।

সৌর উপপুরাণ সম্পাদনা
সাম্ব পুরাণ হল একমাত্র সৌর উপপুরাণ।

গাণপত্য উপপুরাণ সম্পাদনা
মুদগল পুরাণ ও গণেশ পুরাণ হল দুটি গাণপত্য উপপুরাণ।

অসাম্প্রদায়িক পুরাণ সম্পাদনা
ভবিষ্যোত্তর পুরাণ, কপিল পুরাণ ও বৃহদ্ধর্ম পুরাণ কোনো বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত নয়।

ইতিহাস :
রামায়ণ
মহাভারত

পঞ্চম বেদ রামায়ণকেও বলা যায়। রামায়ণেও শিক্ষা বা জ্ঞানের কমতি নেই কোনোভাবেই। তবে মহাভারতে যেহেতু রামায়ণের অনেকটাই বর্ণিত আছে, তাই মহাভারতকে পঞ্চম বেদ বললে রামায়ণকেও একেবারে বলা হয়ে যায়।

মহাভারতকে প্রথমবার পঞ্চম বেদ-এর স্বীকৃতি দিতে দেখা যায় ছান্দোগ্য উপনিষদে (৭.১.২)।

এইখানে পঞ্চম বেদ বলতে ইতিহাসকে নির্দেশ করা হয়েছে। যেহেতু রামায়ণ ও মহাভারত এই ইতিহাস শ্রেণিরই গ্রন্থ- তাই এগুলোকে পঞ্চম বেদ বলা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন পুরাণে (বিশুদ্ধ) ইতিহাসকে পঞ্চম বেদ বলা হয়েছে।

দেবী ভগবত(শক্ত সম্প্রদয়)
শ্রীমদ্ভাগবদ (বৈষ্ণব সম্প্রদায়)
চৈতন্য চরিতামৃত.
শ্রীমদ্ভাগবত গীতা মন্ত্রসংখ্যা-৭০০
শ্রীশ্রী চণ্ডী মন্ত্রসংখ্যা-৭০০

ষড়দর্শন: হিন্দু ধর্মে মোক্ষ অনুসরণের উদ্দেশ্যে ষড়দর্শনের ব্রহ্ম, জীবজগৎ ইত্যাদি তথ্যের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এই ষড়দর্শন মূলত সংখ্যা, যোগ, ন্যায়, বৈদিক
সূত্রি, মীমাংসা, উত্তর মীমাংসার বেদান্ত দর্শন। অর্থাৎ এ ছয় দর্শন মিলেই ষড়দর্শন।
. উপনিষদ: উপনিষদ মূলত বেদেরই একটি অংশ। যে গ্রন্থ পাঠে ব্রহ্মবিদ্যা লাভ করা যায়, তাকে উপনিষদ বলে। উপনিষদ সংখ্যায় অনেক। বর্তমানে ১১২
খানা উপনিষদের নাম জানা গেছে।
তন্মধ্যে  ১. বৃহদারণ্যক, ২. শ্বেতাশ্বেতরো, ছন্দোগ্য, ৪. কেন এবং ৫. কব উল্লেখযোগ্যl

এছাড়াও মুক্তিকোপনিষদে ১০৮খানি উপনিষদের নাম পাওয়া যায়। তবে ভগবান শঙ্করাচায্যর্ যে ১১খানা উপনিষদের ভাষ্য রচনা করে গেছেন সেগুলোই সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট, প্রাচীন এবং সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য। সে ১১খানা উপনিষদ ব্রহ্মোপনিষদ নামে পরিচিত। ঐ ১১খানা উপনিষদ হল— ঈশ, কেন, কঠ, প্রশ্ন, মুণ্ডক, মাণ্ডূক্য, তৈত্তিরীয়, ঐতরেয়, শ্বেতাশ্বতর, বৃহদারণ্যক ও ছান্দোগ্য।

সর্বোপরি হিন্দুদের মূল ধর্মগ্রন্থ হলো বেদ।

বেদের তাফসির হলো বিভিন্ন উপবেদ,যেমন:- আয়ুর্বেদ,ধনুর্বেদ ইত্যাদি।

অতিরিক্ত জ্ঞান হলো উপনিষদ।

হাদিস এবং ইতিহাসগ্রন্থ হলো রামায়ণ, মহাভারত।

ফিকাহর কিতাব হলো বিভিন্ন স্মৃতিগ্রন্থ,যেমন:- মনুসংহিতা,যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতা,পরাশর সংহিতা ইত্যাদি।

উসুলের কিতাব হলো অষ্টাদশ পুরাণ।

Exit mobile version