শূদ্রের বেদ পাঠের অনধিকার – স্ববিরোধী দয়ানন্দ

শূদ্রের কি বেদ পড়ার অধিকার আছে? এ প্রসঙ্গে হিন্দুসমাজে বহু ইখতিলাফ থাকলেও আর্যসমাজ নামক সংগঠনের সদস্যরা দাবি করে থাকে শূদ্রের বেদ পাঠের অধিকার রয়েছে। আজকে দালিলীক বিশ্লেষণ করবো না, আজকে আসুন দেখি তাদের প্রতিষ্ঠাতা দয়ানন্দ স্বরস্বতী উরফে মুল শঙ্কর ত্রিবেদীর অবস্থান…

শূদ্রের বেদাধিকার আছে – দয়ানন্দ স্বরস্বতী

দয়ানন্দ স্বরস্বতী তার লেখা বই ‘সত্যার্থ প্রকাশ’ বইয়ের ৩য় সমুল্লাসে যজুর্বেদের উপর নিজের করা ভাষ্য উপস্থাপন করে বললেন,

“শূদ্রের বেদাধিকার আছে”।

শূদ্রের বেদ পাঠের অনধিকার - স্ববিরোধী দয়ানন্দ

শূদ্র কাকে বলে?

এর পরের পাতাতেই আছে,

শূদ্রের বেদ পাঠের অনধিকার - স্ববিরোধী দয়ানন্দ

যে স্থলে নিষেধ আছে সে স্থলে নিষেধের অভিপ্রায় এই যে, যাহাকে পড়াইলেও কিছুই শিখিতে পারে না, সে নির্ব্বোধ ও মূর্খ হওয়ায় তাকে ‘শূদ্র’ বলা হয় ৷ তাহার পড়া ও তাহাকে পড়ান নিষ্ফল। দয়ানন্দ স্বরস্বতী

শূদ্রের বেদাধিকার নেই – দয়ানন্দ স্বরস্বতী

আসুন, একই বইয়ের বিপরীত রূপ দেখা যাক।

দয়ানন্দ স্বরস্বতী কিন্তু ৩য় সমুল্লাসের প্রথম দিকেই সুশ্রুতসংহিতা থেকে প্রমাণ নিয়ে শূদ্রের জন্য একটা শর্ত দেখিয়েছেন।

শূদ্রের বেদ পাঠের অনধিকার - স্ববিরোধী দয়ানন্দ

শূদ্র কুলীন ও শুভ লক্ষণযুক্ত হইলে তাহাকে মন্ত্রসংহিতা ব্যতীত সকল শাস্ত্র পড়াইবে। দয়ানন্দ

অর্থাৎ, শূদ্র যদি শুভ লক্ষণযুক্ত হয় তাহলে তাকে মন্ত্রসংহিতা বাদে বাকি শাস্ত্র পড়ানো যাবে।

এর দ্বারা বোঝা যায়, শূদ্রের শুভ লক্ষণ না থাকলে সেটাও পড়ানো যাবে না। কিন্তু —

মন্ত্রসংহিতা কী?

এ প্রসঙ্গে একই বইয়ের ৭ম সমুল্লাসে আছে,

শূদ্রের বেদ পাঠের অনধিকার - স্ববিরোধী দয়ানন্দ

যে সংহিতা/বইয়ে মন্ত্র থাকে তাই-ই মন্ত্রসংহিতা। এখানে এই চারটি বেদকে দয়ানন্দ স্বরস্বতী মন্ত্রসংহিতা বললেন। এর মানে দাঁড়ালো, এগুলো শূদ্রকে পড়ানো যাবে না।

সত্যার্থ প্রকাশ, পঞ্চম সংস্করণ PDF https://archive.org/stream/in.ernet.dli.2015.357387#mode/1up

Exit mobile version