বৌদ্ধধর্মের শেষ বুদ্ধ এবং নবী মুহাম্মদ ﷺ

বৌদ্ধধর্ম একটা খুবই পরিচিত ও চিরচেনা ধর্ম। বৌদ্ধধর্ম সাধারনত স্পষ্ট ঈশ্বরবাদী ধর্ম নয়, ইব্রাহিমী ধর্ম হওয়া তো অনেক দূরের কথা। তারপরেও এই ধর্মেও শেষ বুদ্ধের আগমনের কথা বলা হয়েছে। বৌদ্ধরা নিজেদের ধর্মকে ও ধর্মীয় মনিষী বিশেষ করে সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধকে অনেক বেশি বিশ্বাস করে, ভক্তি করে। বৌদ্ধদের মতে বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক সিদ্ধার্থ গৌতম বুদ্ধ বা গৌতম বুদ্ধ হিসেবে যাকে জানা হয় তিনি নাকি অনেক জ্ঞানী ছিলেন, অনেক কিছু জানতেন। সেহেতু তারা তার সব কথাকেই বিশ্বাস করবে এটাই স্বাভাবিক বিষয়।

তাই তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের বিষয় হিসেবে বুদ্ধের বাণী থেকে দেখব বৌদ্ধ ধর্মে শেষ বুদ্ধ সম্পর্কে কি লিখা আছে। যাই লিখা থাকুক, বৌদ্ধরা যেহেতু নিজের ধর্মকে প্রকৃত ধর্ম, সত্য ধর্ম, বুদ্ধের বাণীকে বাস্তব, সঠিক ও সত্য বাণী হিসেবে বিশ্বাস করে সেহেতু এখানে তাদের ধর্মগ্রন্থ হতে যা উল্লেখ করব তা আশা করি তারা অস্বীকার বা অবিশ্বাস করবে না।

শেষ বুদ্ধ বা নবী (ﷺ) এর আগমনবার্তা

গৌতমের কথা সকলের আগে সর্বোত্তম বাক্য, যার কারনে তা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়। ত্রিপিটকে বলা হয়েছে,

“বুদ্ধ যে ক্ষেম বা মঙ্গল বাক্য বলেন তা নির্বাণপ্রাপ্তির জন্য দুঃখের অন্তসাধনের জন্য করে থাকেন তা অবশ্যই সর্বোত্তম বাক্য।”[1]সূত্রত্রিপিটক, সংযুক্তনিকায় (সগাথাবর্গ), ৮নং বঙ্গীস, সংযুক্ত, ৫নং সুভাষিত সূত্র, শ্লোক-২১৩; ত্রিপিটক অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ

গৌতম শেষ বুদ্ধ নন ও শেষ বুদ্ধের আগমনী বার্তা

গৌতম বুদ্ধ বলেছিলেন,

“আমি জানি, অতীতে বুদ্ধগণ সকলেই চিত্তের উপক্লেশ প্রজ্ঞা দূর্বলকারী পঞ্চ নীবরণ পরিহার করিয়া, চর্তুবিধ স্মৃতি প্রস্থানে চিত্তকে সুপ্রতিষ্ঠিত করিয়া, সপ্ত বোধ্যাঙ্গ যথারূপে অনুশীলনপূর্বক অনুত্তর সম্যক সম্বোধিপ্রাপ্ত হইয়াছিলেন। যাহারা ভবিষ্যতে বুদ্ধ হইবেন তাহারা সকলে ওই একই মার্গ অবলম্বন করিয়া সম্বোধি প্রাপ্ত হইবেন। বর্তমান ভগবানও ঐ মার্গই অবলম্বন করিয়া সম্যুকসম্বুদ্ধ হইয়াছেন।”[2]ত্রিপিটক, সূত্রপিটক, দীর্ঘনিকায়, মহাপরিনির্বাণ সূত্রান্ত, প্রথম অধ্যায়, শ্লোক ১৪৬

এছাড়া একই ধরনের কথা অনেক যায়গায় উল্লেখ রয়েছে। যেমন তিনি প্রথম বুদ্ধ নন, তিনি শেষ বুদ্ধ নন। তার আগেও অনেক বুদ্ধ এসেছিলেন তার পরেও অনেক বুদ্ধ আসবেন। সবাই এক কথার বা এক ধর্মের প্রচার করবে।[3]ত্রিপিটক, দীর্ঘনিকায় ২য় খন্ড, মহাপরিনির্বাণ সূত্রান্ত, প্রথম অধ্যায়, শ্লোক ১৭; ৩য় খন্ড, সম্প্রাস্মরনীয় সূত্রান্ত, শ্লোক ২ সহ ত্রিপিটকের প্রায় ২০ যায়গায় … See Full Note

তিনি আরো এক স্থানে বলেছেন,

“জগতে আমার যেই ঋদ্ধি প্রদর্শিত হচ্ছে, ইহা কি আশ্চর্য! ইহার চেয়ে আরো অনেক আশ্চর্য ও অদ্ভুত এবং লৌমহর্ষক ঋদ্ধি ভবিষ্যতে আসবে।”[4]বুদ্ধবংশ, রতন চক্রমন কান্ড, পৃষ্ঠা ১৬

শেষ বুদ্ধ মৈত্রেয়

গৌতম বুদ্ধ শেষ বুদ্ধের আগমনের কথা বলেছেন যার নাম- “মৈত্রেয়”[5]পল কারাস, গসপেল অফ বুদ্ধ, পৃষ্ঠা ২১৭-৮ যার অর্থ-করুণাময়, করুণা। এটিও কোরানে বর্নিত নবী (ﷺ) এর আল্লাহর প্রদত্ত নাম- “রহমাতাল্লিল আলামীন”[6]সূরা আম্বিয়া আয়াত ১০৭ এর অর্থ বিশ্বজগতের করুণা।

মৈত্রেয় বিষয়ে গৌতম তার শিষ্যদের মধ্যকার কথোপকথনঃ-

Ananda, suppressing his tears, said to the Blessed One: “Who shall teach us when thou art gone?” And the Blessed One replied: “I am not the first Buddha who came upon earth, nor shall I be the last. In due time another Buddha will arise in the world, a Holy One, a supremely enlightened One, endowed with wisdom in conduct, auspicious, knowing the universe, an incomparable leader of men, a master of angels and mortals. He will reveal to you the same eternal truths which I have taught you. He will preach his religion, glorious in its origin, glorious at the climax, and glorious at the goal, in the spirit and in the letter. He will proclaim a religious life, wholly perfect and pure; such as I now proclaim.” Ananda said: “How shall we know him?” The Blessed One said: “He will be known as , which means ‘he whose name is kindness.”[7]চক্কবতি সিংহনাথ সুত্রান্ত, ডি ১১১৭৬; Gospel of Buddha, Translater: Paul Carus, Ch.Metteyya, Page:117-118; https://www.sacred-texts.com/bud/btg/btg97.htm

আনন্দ অশ্রু চেপে রেখে বুদ্ধকে জিজ্ঞেস করলেন, “বুদ্ধ! আপনার মৃত্যুর পর আমাদেরকে কে উপদেশ দান করবে?” বুদ্ধ বললেন, “আমিই একমাত্র পৃথিবীতে আগমনী প্রথম বুদ্ধ নই কিংবা শেষ বুদ্ধও নই। যথাসময়ে একজন বুদ্ধ আসিবেন। আমার চেয়েও তিনি পবিত্র ও অধিকতর আলোকপ্রাপ্ত। অশেষ ন্যায়পরায়ণ আচরনসমৃদ্ধ, শুভকামনাময়, মহাবিশ্বের বুদ্ধিমান, অনুপম মানবনেতা, স্বর্গীয় বার্তাবাহক এবং নৈতিকতার গুরু। তিনি তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন-একই অনন্ত সত্য যা আমি দিয়েছি। তিনি প্রচার করবেন তার ধর্ম। যার শুরুটাই ছিলো মহিমান্বিত, অধিক মহান এবং রয়েছে তার মহান উদ্দেশ্য যা আধ্যাত্নিক ও পরলৌকিক। তিনি পূর্ণাংগ ধর্মমতে প্রচার করবেন, যা পুরোটাই চমৎকার এবং বিশুদ্ধ।যেমনটা এখন আমি এখন প্রচার করছি। আনন্দ বললেন, “আমরা তাকে কিভাবে চিনবো?” বুদ্ধ জবাব দিলেন, “তাকে মৈত্রেয় নামে জানতে পারবে। যার অর্থ -যিনি করুণাময়।“

শেষ বুদ্ধের বৈশিষ্ট্য, গুণ ও মর্যাদা

গৌতম বুদ্ধ শেষ বুদ্ধকে নরশ্রেষ্ঠ দাবি করেছেন। নরশ্রেষ্ঠ গুণাবলিগুলোর সাথে নবী (ﷺ) এর অনেক মিল পাওয়া যায়। ত্রিপিটকে বলা আছে-

৮৫৪. কী রকম দৃষ্টি ও শীলসম্পন্নকে ‘উপশান্ত’ বলা হয়। হে গৌতম, আমি আপনাকে নরশ্রেষ্ঠের বিষয় জিজ্ঞাসা করিতেছি, আপনি তা প্রকাশ করুন-

৮৫৫. ভগবান গৌতম বলিলেন, দেহত্যাগের পূর্বে যিনি বীততৃষ্ণ হইয়াছেন, যাঁর নিকট অতীত, বর্তমান, সব বিষয় অনিশ্রিত, অনুৎপন্নযোগ্য; তাঁর অনুরাগ (পরিখা) থাকে না।

৮৫৬. যিনি অক্রোধী, ভয়হীন, নিরহংকারী, অনুশোচনাহীন, বাক-কুশলী, অনুদ্ধত এবং যার বাক্য সংযত, তিনিই মুনি।

৮৫৭. যিনি ভবিষ্যৎ বিষয়ে অনাসক্ত হইয়া অতীতকে নিয়া অনুশোচনা করেন না। তিনি স্পর্শ ও দৃষ্টিসমূহে বিবেকদর্শী হইয়া চালিত হন না।

৮৫৮. তিনি অসংলগ্ন, অকুহক, অলোভী, অকৃপণ, অচঞ্চল, ঘৃণারহিত, এবং পৈশুন্যমুক্ত।

৮৫৯. তিনি আনন্দজনক বিষয়সমূহে (পঞ্চকামগুণে) নিরানন্দিত এবং অতিমানে যুক্ত নন। তিনি শান্ত (সণ্হো), প্রতিভাবান (প্রত্যুৎপন্নমতি); (তিনি) অনুরক্তও নন, আবার স্বয়ং অনাগ্রহও দেখান না।

৮৬০. যেই ব্যক্তি লাভের ইচ্ছায় শিক্ষা করেন না এবং অলাভে কুপিত হন না। তিনি তৃষ্ণার দ্বারা অনুরক্ত না হইয়া রসেও অতিলোভী বা লোভপরায়ণ হন না।

৮৬১. তিনি উপেক্ষক, সদা স্মৃতিমান। জগতে তিনি অন্যজনের সমান, অন্যজনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বা অন্যজনের চেয়ে নীচ মনে করেন না। তাঁর কোনো অহমিকা (উৎসদ) নাই।

৮৬২. যাঁহার কোনো নিশ্রয় নাই, ধর্ম জানিয়া যিনি অনিশ্রিত, ভবের প্রতি বা বিভবের প্রতি যাঁর কোনো তৃষ্ণা বিদ্যমান নাই।

৮৬৩. যিনি কামে নিরপেক্ষ, তাঁকে আমি উপশান্ত বলি। যাঁহার কোনো গ্রন্থি বিদ্যমান নাই, সেই ব্যক্তি তৃষ্ণা অতিক্রমকারী।

৮৬৪. তাঁর পুত্র, পশু, ক্ষেত্র ও বস্তু (জায়গা) কিছুই নাই। আত্মা বা নিরাত্মা তাঁহার কিছুই উপলব্ধ বা অনুভব হয় না।

৮৬৫. পৃথগ্‌জন (সাধারণ লোক) এবং শ্রমণ-ব্রাহ্মণেরা যাহার দ্বারা তাঁহাকে দোষযুক্ত (পাপী) মনে করিয়া থাকে; তাহা (সেই বিষয়) তাঁহার ভক্তির বিষয় নয়, সেই কারণে তিনি বাদানুবাদে উত্তেজিত হন না।

৮৬৬. বীতলোভ, মাৎসর্যহীন মুনি নিজেকে উচ্চ শ্রেণীভুক্ত, সমশ্রেণিভুক্ত কিংবা নিম্ন শ্রেণিভুক্তও বলেন না বা মনে করেন না (এবং) তিনি কল্প ও অকল্পকে গ্রহণ করেন না।

৮৬৭. এই জগতে নিজের বলে যাঁহার বা অর্হতের কোনো কিছু নাই, তিনি বিপরিণত বিষয় নিয়া অনুশোচনা করেন না এবং বিভিন্ন ধর্মের মতানুসরণ করেন না। তিনি “শান্ত” বলে বিবেচিত হন।[8]ত্রিপিটক, সূত্রপিটক, খুদ্দনিকায়, সূত্রনিপাত, অষ্টক বর্গ, ১০নং পুরাভেদ, শ্লোক ৮৫৪-৮৬৭

এসব গুণাবলি, বৈশিষ্ট্য হুবহু নবীজীর (ﷺ) এর সাথে মিলে যায়। এজন্য আল্লাহ বলেন-আপনি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী।[9]কুরআনের সূরা আল-কলম, আয়াত ৪; মহানবী (ﷺ) এর সিরাত, বংশ পরিচয়, গুনাবলি, বৈশিষ্ট্য, ধর্ম প্রচার ইত্যাদি পড়লেই মিল থাকার প্রমান পেয়ে যাবেন

গৌতম বুদ্ধ বুদ্ধদের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলেছেন যে, দুইটি বিষয়কে কেন্দ্র করে বা উপলক্ষে একজন বুদ্ধের চেহারা স্পষ্ট এবং অতি উজ্জ্বল হয়ে ওঠেঃ[10]Gospel of Buddha, Translater: Paul Carus, Ch.Metteyya, Page:116-117; https://www.sacred-texts.com/bud/btg/btg96.htm

  1. যে রাতে সর্বোচ্চ এবং নিখুঁত অন্তর্দৃষ্টি বা জ্ঞান প্রাপ্ত হন।
  2. যে রাতে তিনি শেষ পর্যন্ত সেই অকাল মৃত্যুতে চলে যান যা তার পার্থিব অস্তিত্বের কিছুই অবশিষ্ট রাখে না।

১ম পয়েন্টের ক্ষেত্রে আমরা জানি মহানবী (ﷺ) এর প্রেক্ষাপটে ১ম আলো, উজ্জ্বলতা, স্পষ্টতা হল নবুয়ত প্রাপ্তির মাধ্যমে পবিত্র কোরআনের ওহি পাওয়া। নবীজী প্রথম ওহী পেয়েছিলেন রমজানের কদরের রাতে।[11]সূরা দুখানের আয়াত ২,৩; সূরা কদর আয়াত ১; https://www.hadithbd.com/books/detail/?book=43&chapter=6082

এর পরে ২য় পয়েন্টে রাতে অকাল মৃত্যু বা অস্বাভাবিক মৃত্যুকে নির্দেশ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে পার্থিব অস্তিত্বের কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। আমরা জানি আমাদের নবীজী স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরন করেছেন।[12]রাসুলুল্লাহ(ﷺ) এর মৃত্যু যেহেতু তিনি স্বাভাবিক মৃত্যু বরণ করেছেন সেহেতু রাত ও দিনের কোন প্রশ্নই আছে না। কিন্তু মৃত্যুর আগে নবীজীর চেহারা ঠিকই আগের তুলনায় আরো বেশি স্পষ্ট ও উজ্জ্বল হয়ে ওঠেছিল[13]https://www.hadithbd.com/books/link/?id=5749, এবং এখানে ‘তার পার্থিব অস্তিত্বের কিছুই অবশিষ্ট রাখে না’ বলতে সাধারনত ইহকাল ত্যাগ করে পরলোক গমন করাকেই বুঝাচ্ছে কিন্তু যদি আক্ষরিক অর্থ নিই তাহলেও দেখা যায় নবীজীর পার্থিব জীবনেও কিছুই ছিলনা বলা যায় উনার মৃত্যুর আগে ও পরে, শুধু সাধারন জীবন যাপন করার মত যা প্রয়োজন তা ছাড়া, এমনকি তিনি মৃত্যু আগেই বলে গিয়েছিলেন, “আমরা (নবীগণ) কাউকে উত্তরাধিকারী রেখে যাই না, আমরা যা কিছু রেখে যাই সবই সদাকাহ[14]সহিহ মুসলিম ১৭৫৮-১৭৬১; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=51555

এখানে একটা বিষয় খেয়াল করা জরুরি। এখানে বলা হয়নি যে, সব বুদ্ধের বেলায় এদুটো জিনিস ঘটবেই। যেহেতু মহানবী (ﷺ) এর সাধারন মৃত্যু ঘটেছে ও তিনি রাতে মারা যান নি সেহেতু তার মুখ উজ্জ্বল হওয়ার কথা না বুদ্ধের কথা অনুসারে, কিন্তু আমরা এর বিপরীত দেখতে পাচ্ছি আমাদের নবীর বেলায়, অর্থাৎ তিনি রাতে মারা যান নি, অস্বাভাবিক বা একদম কম বয়সেও মৃত্যুবরন করেন নি, তারপরও মৃত্যুর আগে উনার চেহারা কোরআনের নূরের ন্যায় জ্বলজ্বল করছিল। এই থেকেই চিন্তা করুন যে মহানবী (ﷺ) কতটা স্পেশাল ও উনার মর্যাদা কত বেশি ছিল!

আবার আরেক স্থানে গৌতম বুদ্ধ বলেছিলেন,

“একজন মৈত্রেয় আসবেন যার বেশ কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য আর গুন থাকবে, তিনি হাজার হাজার মানুষকে নেতৃত্ব দিবেন যেখানে আমি নেতৃত্ব দিয়েছি মাত্র কয়েকশো মানুষকে।”[15]সেক্রেড বুকস অফ দ্যা ইস্ট ৩৫/২২৫

এটাত কোন প্রমান ছাড়াই সবার জানার কথা যে নবীজী (ﷺ) নবুয়ত পাওয়া হতে শুরু করে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সত্য দ্বীন প্রচারের কারনে ও সেটার মাধ্যমে অসংখ্য অনুসারী অর্থাৎ সাহাবী পেয়েছিলেন। সাহাবী হলেন সেই ব্যক্তি যিনি মুহাম্মদ (ﷺ) এর প্রতি ঈমান সহকারে তার সাক্ষাৎ লাভ করেছেন এবং ইসলামের ওপরই মৃত্যুবরণ করেছেন। সাহাবিদের সংখ্যা একদম নিশ্চিত নন কেউ, তারপরও প্রায় লক্ষাধিক সাহাবি ছিল এটা নিশ্চিত এবং নবীজী সেই লক্ষাধিক সাহাবির নেতা ছিলেন।[16]সাহাবিদের সংখ্যা –  https://islamqa.info/ar/answers/108008/

গৌতম বুদ্ধ আরো বলেছেন যে,

“ভাইয়েরা, অতীতের দীর্ঘ যুগে অরহৎ-বুদ্ধ হয়েছে, সেখানে আশীর্বাদপুষ্টদের প্রতি অনুগত সেবক ছিল যেমন আনন্দ আমার প্রতি। এবং ভাইয়েরা, ভবিষ্যতের দীর্ঘ যুগে যে কেউ অরাহত-বুদ্ধ হবেন, সেখানে সেই আশীর্বাদপুষ্টদের প্রতি অনুগত সেবক থাকবেন যেমন আনান্দ আমার কাছে ছিল।”[17]সেক্রেড বুক অব দ্যা ইস্ট, ১১/৯৭, মহাপরিনির্বাণ সুত্তা, ৫ অধ্যায়, ৩৬-৩৭ অনুচ্ছেদ

আমরা জানি রাসূল (ﷺ) এরও সেবক ছিল, তার মধ্যে অন্যতম ছিলে আনাস (রা)। আনাস (রা) খুব ছোট প্রায় ৮ বছর বয়স থেকে মহানবী (ﷺ) এর সঙ্গে সব প্রায় সব সময় থাকতেন, যুদ্ধে, দুঃখে, আনন্দে, জয়ে, শান্তিতে, নিরাপত্তায়, বিপদে প্রায় সব ক্ষেত্রে। এমনকি গৌতম বুদ্ধ ও আনন্দের মধ্যে সম্পর্ক যেমন ছিল তার চেয়ে বেশি গভির, মধুর, ভালোবাসাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল নবীজী (ﷺ) ও আনাস (রা) এর মধ্যে। আনাস (রা) এর সাথে তিনি নিজের সন্তানের মত আচরন করতেন। আনাস (রা) জ্ঞান অর্জন, জিহাদ, আচরন, এবাদত বন্দেগি, আনুগত্যের দিক দিয়ে আনন্দের থেকে অনেকটা এগিয়ে ছিলেন বলা যায়।[18]https://at-tahreek.com/article_details/6791

গৌতম বুদ্ধের ধর্ম ১ হাজার বছর পর বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া

একবার গৌতম বুদ্ধ একটা ঘটনা ঘটার পর বলেছিলেন, এমন না করলেও আগামী এক হাজার বছর পর আমার ধর্ম বিলুপ্ত হয়ে যেত।[19]ত্রিপিটক, অঙ্গুত্তর নিকায়া, ৪র্থ খন্ড, অষ্টক নিপাত, দ্বিতীয় পঞ্চাশক, গৌতমি বর্গ, গৌতমি সুত্রক, অনেচ্ছেদ ৯, শ্লোক ৫১; ত্রিপিটক, চুল বর্গ, ভিক্ষুনি স্কন্দ, … See Full Note

আমরা জানি, আনুমানিকভাবে গৌতম বুদ্ধের সময়কালটা ছিলো খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ থেকে ৫ম শতক।[20]Gethin, Rupert, M.L. (1998), Foundations of Buddhism, Oxford University Press, pp 5, 9, 10, 14 আবার মুহাম্মদ (ﷺ) এর জন্ম ৫৭০-৫৭১ খ্রিষ্টাব্দে এবং মৃত্যু ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে।[21]https://islamqa.info/bn/answers/147601/ আপনারা খেয়াল করলেই দেখবেন দুজনের সময়ের পৃথিবীতে আগমনের সময়কাল প্রায় ১ হাজার বছর। ত্রিপিটকে বুদ্ধের এই কথাও কিন্তু হুবহু মিলে যায় মহানবী (ﷺ) এর আগমনের সাথে।

গৌতমের শিক্ষার সাথে মৈত্রেয় তথা নবী (ﷺ) এর সাদৃশ্য

একেশ্বরবাদী

গৌতম বলেন- সেই মহিমাময় ব্রহ্মা, মহাব্রহ্মা, অভিভূ, অনভিভূত, সর্বদর্শী, সর্বশক্তিমান, ঈশ্বর, কর্তা, নির্মাতা, শ্রেষ্ঠ স্রষ্টা, ভূত ও ভক্ষ্যের শক্তিমান পিতা, যাহা কর্তৃক আমরা সৃষ্ট হইয়াছি, তিনি নিত্য, ধ্রুব, শাশ্বত, অবিপরিণাম-ধর্ম, তিনি অনন্তকাল ওইরূপে অবস্থান করিবেন। কিন্তু সেই ব্রহ্মা কর্তৃক সৃষ্ট আমরা অনিত্য, অধ্রুব, অল্পায়ুক, পরিবর্তনশীল হইয়া এই লোকে আগমন করিয়াছি।” বন্ধুগণ, ইহাই আপনাদের শিক্ষানুসারে বস্তুসমূহের প্রারম্ভরূপে কথিত ঈশ্বর অথবা ব্রহ্মার লীলা।

তদুত্তরে তাহারা বলেন, “সৌম্য গৌতম, আপনি যাহা বলিতেছেন, আমরাও তাহাই শুনিয়াছি।” ভগ্গব, বস্তুসমূহের প্রারম্ভ আমি অবগত আছি, শুধু তাহাই নয়, তাহা অপেক্ষাও অধিক আমার বিদিত, কিন্তু ওই জ্ঞান আমাকে স্ফীত করে না, উহা দ্বারা অস্পৃষ্ট হইয়া আমি স্বীয় অন্তরে মুক্তি অনুভব করি, যে অনুভূতির নিমিত্ত তথাগত দুঃখে নিপতিত হন না।
[22]ত্রিপিটক, সূত্রপিটকে দীর্ঘনিকায় পাথিক-বর্গ, ১. পাথিক সূত্রান্ত, শ্লোক-৪০

নবী (ﷺ) একেশ্বরবাদী ছিলেন। উনার প্রচার করা আল্লাহর কিতাব পবিত্র কোরআনে অসংখ্য বার এক ঈশ্বরের প্রতি আহ্বান করা হয়েছে।

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রাসূল (ﷺ) বলেনঃ তিনটি গুণ যার মধ্যে থাকে, সে ঈমানের স্বাদ পায় (১) যার কাছে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল অন্য সব কিছু থেকে প্রিয়; (২) যে একমাত্র আল্লাহ্‌রই জন্য কোন বান্দাকে মুহব্বত করে এবং (৩) আল্লাহ্ তা’আলা কুফর থেকে মুক্তি দেওয়ার পর যে কুফর-এ ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতোই অপছন্দ করে।[23]সহিহুল বুখারী, হাদিস ২১; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=23

পৌত্তলিকতা, মূর্তি নিষিদ্ধ

ত্রিপিটকে বলা হয়েছে,

“কারণবশত লোকেরা সেবা করে পূজা করে, বিনা কারনে মনে মিত্র লাভ দূর্লভ।কলুষিত নর স্বীয় লাভের জন্য সেবা, (বস্তুর) পূজা করে। তা খড়গবিষাণে একাকি ন্যায় বিচরন করে।”[24]ত্রিপিটক, সূত্রপিটক, খুদ্দকনিকায়, চূলনির্দেশ, খড়গবিষাণ সূত্র, চতুর্থ বর্গ শ্লোক-১৬১

[গৌতম বুদ্ধ মূর্তিপূজক ছিলেন, এরকম বিবরণ ত্রিপিটকে নেই।]

রাসুল (ﷺ) ছিলেন ইসমাইল (আঃ) এর বংশধর। তিনি ইব্রাহীম (আঃ) এর প্রচারিত ধর্ম পালন করতেন। তিনি জীবনে কখনো মূর্তিপূজা করেননি এমনকি মূর্তি স্পর্শও করেননি। নবুয়্যতের আগে, শিশুকাল থেকেই তিনি মূর্তিপূজা অপছন্দ করতেন।[25]আমাদের এই পোস্টটি পড়ুনঃ নবুয়্যতের পূর্বে মুহাম্মদ ﷺ কোন ধর্মে ছিলেন?

স্বর্গ নরক বিশ্বাস

গৌতম স্বর্গ ও নরকের বিশ্বাসী ছিলেন।[26]ত্রিপিটক, সূত্রপিটক দীর্ঘনিকায়, শীল স্কন্ধবর্গ, ৮নং কস্পপ সীহনাদ সূত্র, শ্লোক-৩৮২

নবী (ﷺ) ও জান্নাত ও জাহান্নামে বিশ্বাসী ছিলেন।[27]বুখারী হাদিস ৩৪৩৫; মুসলিম ২৮; আহমাদ ২২৭৩৮; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=27774

বর্ণ জাতপাত দূরীকরণ

গৌতম জাতপাত দূর করেছিলেন। তিনি বলেন,

“ব্রাহ্মাণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শুদ্র এই চারি বর্ণের লোকেরা গৌতমকে গ্রহন করলে গোত্রীয় নাম পরিত্যাগ করিয়া, শাক্যপুত্রীয় শ্রমণ হিসেবে বিবেচিত হবে।[28]ত্রিপিটক, বিনয়পিটক, চূলবর্গ, ৯নং প্রতিমোক্ষ, স্থতিকরন অধ্যায়, শ্লোক-৩৮৫

নবী (ﷺ) ও একই কথা বিদায়ী হজ্জের ভাষণে বলেছেন –

“হে লোক সকল! শোনো, তোমাদের প্রতিপালক এক, তোমাদের পিতা এক। শোনো, আরবীর উপর অনারবীর এবং অনারবীর উপর আরবীর, কৃষ্ণকায়ের উপর শ্বেতকায়ের এবং শ্বেতকায়ের উপর কৃষ্ণকায়ের কোন শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা নেই। শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা আছে তো কেবল ’তাক্বওয়ার’ কারণেই” [29]হাদিস সম্ভার, হাদিস ১৯৫; আহমাদ ২৩৪৮৯; শুআবুল ঈমান, বাইহাক্বী ৫১৩৭; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=63440

জ্ঞান প্রচার করা

গৌতম বুদ্ধের ক্ষেত্রে তাঁর কোন গুপ্ত অথবা প্রকাশ্য শিক্ষা ছিল না, তিনি বলেন,

“আমি সত্য প্রচার করেছি, প্রকাশ্য ও গোপন বিষয়ের মধ্যে কোন পার্থক্য না করেই। হে আনন্দ, সত্যের ক্ষেত্রে তথাগত শিক্ষকদের বদ্ধ মুষ্টি বলতে কোন জিনিস নেই। এমন কেউ থাকা উচিৎ যে এমন চিন্তাকে লালন করে, ‘আমিই ভ্রাতৃত্বের নেতৃত্ব দেব’ অথবা, ‘আদেশ আমার উপর নির্ভরশীল’”[30]সেইক্রেড বুকস অফ দ্যা ইস্ট, ১১/৩৬; মহাপরিনির্বাণ সুত্তা, ২য় অধ্যায়ের ৩২ অনুচ্ছেদ

আমরা জানি মুহাম্মদ (ﷺ) ওহী হিসেবে যা পেয়েছিলেন তাহা সঙ্গে সঙ্গে সবার কাছে প্রচার করেছেন, আল্লাহ উনাকে যা শিখিয়েছেন, যা করতে বলেছেন, যা আদেশ-নিষেধ করতে বলেছেন, যেভাবে করতে বলেছেন এমন সব মুহাম্মদ (ﷺ) প্রচার করেছেন। আর সাহাবীগণকে বলেছেন এগুলো মানুষের কাছ থেকে লুকিয়ে রেখো না, এগুলো প্রচার করো। এই ভবিষ্যদ্বাণীতে বলা হয়েছে এখানে প্রকাশ্য বা গুপ্ত কিছুই নেই এখানে সব কিছুই প্রকাশ করতে হবে। এমনকি তিনি নিজের সাহাবীগণদেরকে এটা বলেছেন যে, আমার কথা পৌঁছিয়ে দাও, তা যদি এক আয়াতও হয়। মহানবী কে যত জ্ঞান দিয়েছিলেন আল্লাহ তিনি সব প্রচার করেছেন কোন কিছুই বাদ দেন নি। [31]সহীহ বুখারি ৩৪৬১; সূরা মায়েদার ৬৭ নম্বর আয়াতের তাফসির, https://www.hadithbd.com/quran/error/?id=736 আল্লাহ কোরআনে বলেছেন,

হে রাসূল, তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার নিকট যা নাযিল করা হয়েছে, তা প্রচার কর, আর যদি তুমি না কর তবে তুমি তাঁর রিসালাত পৌঁছালে না।[32]সূরা মায়েদা আয়াত ৬৭

গৌতম বুদ্ধ বলেছেন,

“সকলের প্রতি যারা তাকে পাপ থেকে বিরত রাখতে পারে, বা পারে তাকে সঠিক উপদেশ দিতে।’[33]দ্যা সেক্রেটবুক অব দ্যা ইস্ট ১০/৬৮

মহানবী বহু হাদিসে বলেছেন, সাধ্যমত মানুষকে খারাপ কাজ হতে বিরত রাখার চেষ্টা করতে, উপদেশ দিতে, আদেশ করতে, আহ্বান করতে, নিষেধ করতে।[34]সহীহ মুসলিম ৪৯, ৫০, ২০১, ১৮৫৪; মুসনাদে আহমাদ ৪৩৬৬; বুখারি ২২৮২; ইবনু মা-জাহ ১২৭৫; তিরমিজি ৬১৭, ২১৬৯, ২১৭২, ২২৬৫, ৪৭৬০ পবিত্র কোরআনে বহু যায়গায় আল্লাহ বলেছেন, উপদেশ দিতে, অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে বলতে, পাপ করতে বারন করতে, মন্দকে প্রতিহত করতে, ভালো কাজে আহ্বান করতে ও খারাপ কাজে নিষেধ করতে।[35]সূরা আল-মায়িদা, আয়াত ৭৯; সুরা মুমিনুন আয়াত ৯৬; সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১০৪; সূরা নিসা আয়াত ৭৬; সূরা নিসা আয়াত ১৪৮; সূরা আত-তাওবা, আয়াত ৭১, সূরা আল-গাশিয়ার ২১

মৈত্রয়ের ধর্মীয় গুণাবলি

বুদ্ধ সন্নাসী ভগবান ভান্তে নাগসেন বলেন,

“হে আনন্দ! বুদ্ধ মনে কখনো চিন্তা হয়না যে,আমি ভিক্ষুসংঘ পরিচালিত করিব অথবা আমার উদ্দেশ্যে ভিক্ষুসংঘ চলিবে।আবার মৈত্রেয় বুদ্ধের স্বাভাবিক গুণাগুণ প্রকাশ করিতে গিয়া এইরূপ বলিয়াছেন- বর্তমানে আমি যেমন অনেক শত ভিক্ষু সংঘ পরিচালিত করিয়াতেছি,তিনিও সেইরূপ বহু সহস্র ভিক্ষুসংঘ পরিচালিত করিবেন।”[36]ত্রিপিটক, সূত্রপিটকে, খুদ্দকনিকায়, মিলিন্দ প্রশ্ন, শ্লোক-২২

বৌদ্ধ উপাসানালয়কে ভিক্ষুসংঘ বলা হয়। ঠিক একইভাবে নবী (ﷺ) তথা মৈত্রেয় অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা পরিচালনা করছেন এবং সফর। যেমনঃ মসজিদে নববী,বাইতুল আকসা ইত্যাদি।

বৌদ্ধ স্কলার সেয়াদ বলেন,

“অনাগত মৈত্রেয় বুদ্ধ তার প্রবর্তিত ধর্ম এবং তৎপ্রতিষ্ঠিত সংঘ ও অনুরূপভাবে বহু মানুষের পূন্যপারমীয় উৎপত্তি জন্য প্রকৃতি উপনিশ্রয় প্রত্যয় হয়।”[37]পটঠানুদ্দেস দীপনী ৯নং উপনিশ্রয় প্রত্যয়, লেখক-লেডী সেয়াদ, বাংলা অনুবাদক-করুণা বংশ ভিক্ষু

আমরা জানি নবী (ﷺ) মক্কার শান্তির প্রতিষ্ঠায় যুবক/কৈশোরে হিফজুল ফুজুল নামক শান্তি সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন এছাড়াও মক্কা বিজয়ের পর অসংখ্য মসজিদ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় যা জনগনের পরলৌকিক ও দুনিয়াবী উপকার সাধিত হয়।

মৈত্রেয়ের বাবা-মার এর পরিচয়

এ বিষয়ে স্কলার ভদন্তাচরিয় বলেন,

“ভবিষতে মৈত্রেয় ভগবান ব্রাহ্মাণবংশ উৎপন্ন হইবেন। সুব্রহ্মা নামে ব্রাহ্মাণ তার পিতা হইবেন।ব্রহ্মাবতী নামক তার মাতা হইবেন।”[38]বিশুদ্ধ মার্গ, ১৩নং অভিজ্ঞতা নির্দেশ, লেখকঃ-ভদন্তাচরিয় বুূ্ূূদ্ধ ঘোষ, বাংলা অনুবাদকঃ জ্ঞানশান্ত ভিক্ষু

বিশ্লেষণঃ মক্কার বিখ্যাত বংশ কুরাইশ বংশ, তৎকালীন পৌত্তলিকরা এটাকে ব্রাহ্মাণ তথা প্রধান বংশ ভাবতো। সুব্রহ্মা যার অনুবাদ আসে-ব্রহ্মার দাস, আরবিতে আব্দুল্লাহ। ব্রহ্মাবতী অর্থ – ব্রহ্মা অনুরাগী। যা আমেনা নির্দেশ করে। আব্দুল্লাহ ও আমেনা উভয়ে নবী (ﷺ) এর পিতা-মাতা। কুরাইশ বংশে আদি পিতা ইবরাহীম (আঃ) ও ইসমাইল (আঃ) এবং নবী (ﷺ) এর পিতা আব্দুল্লাহ পৌত্তলিক ছিলেন না।

বৌদ্ধধর্মে মহানবী (সা) এর আগমণের ভবিষ্যদ্বাণী বা বৌদ্ধধর্মে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা) এর আগমনবার্তা সম্পর্কে আরো অনেক তথ্য রয়েছে, এখানে তো অল্প কিছু উল্লেখ করলাম মাত্র। গৌতম বৌদ্ধ শেষ বুদ্ধের যে বর্ণনা দিয়েছেন, যে বৈশিষ্ট্য বলেছেন, যে পরিচিতি দিয়েছেন, যে আগমনবার্তা দিয়েছিলেন তার সাথে হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এর প্রায় ৯০ ভাগ বা তার চেয়ে বেশি মিল পাওয়া যায়।

তাহলে আমাদের বৌদ্ধ ধর্মের ভাই-বোনেরা কি নিজের ধর্মে বলা এই কথাগুলো কি বিশ্বাস করবে? যেহেতু তারা বিশ্বাস করে তাদের ধর্মগ্রন্থ সত্য? প্রশ্ন রইল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ভাই-বোনদের কাছে।


লেখকঃ হাবিব

সম্পাদনাঃ Ashraful Nafiz

Footnotes

Footnotes
1 সূত্রত্রিপিটক, সংযুক্তনিকায় (সগাথাবর্গ), ৮নং বঙ্গীস, সংযুক্ত, ৫নং সুভাষিত সূত্র, শ্লোক-২১৩; ত্রিপিটক অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ
2 ত্রিপিটক, সূত্রপিটক, দীর্ঘনিকায়, মহাপরিনির্বাণ সূত্রান্ত, প্রথম অধ্যায়, শ্লোক ১৪৬
3 ত্রিপিটক, দীর্ঘনিকায় ২য় খন্ড, মহাপরিনির্বাণ সূত্রান্ত, প্রথম অধ্যায়, শ্লোক ১৭; ৩য় খন্ড, সম্প্রাস্মরনীয় সূত্রান্ত, শ্লোক ২ সহ ত্রিপিটকের প্রায় ২০ যায়গায় এই ধরনের কথা এসেছে
4 বুদ্ধবংশ, রতন চক্রমন কান্ড, পৃষ্ঠা ১৬
5 পল কারাস, গসপেল অফ বুদ্ধ, পৃষ্ঠা ২১৭-৮
6 সূরা আম্বিয়া আয়াত ১০৭
7 চক্কবতি সিংহনাথ সুত্রান্ত, ডি ১১১৭৬; Gospel of Buddha, Translater: Paul Carus, Ch.Metteyya, Page:117-118; https://www.sacred-texts.com/bud/btg/btg97.htm
8 ত্রিপিটক, সূত্রপিটক, খুদ্দনিকায়, সূত্রনিপাত, অষ্টক বর্গ, ১০নং পুরাভেদ, শ্লোক ৮৫৪-৮৬৭
9 কুরআনের সূরা আল-কলম, আয়াত ৪; মহানবী (ﷺ) এর সিরাত, বংশ পরিচয়, গুনাবলি, বৈশিষ্ট্য, ধর্ম প্রচার ইত্যাদি পড়লেই মিল থাকার প্রমান পেয়ে যাবেন
10 Gospel of Buddha, Translater: Paul Carus, Ch.Metteyya, Page:116-117; https://www.sacred-texts.com/bud/btg/btg96.htm
11 সূরা দুখানের আয়াত ২,৩; সূরা কদর আয়াত ১; https://www.hadithbd.com/books/detail/?book=43&chapter=6082
12 রাসুলুল্লাহ(ﷺ) এর মৃত্যু
13 https://www.hadithbd.com/books/link/?id=5749
14 সহিহ মুসলিম ১৭৫৮-১৭৬১; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=51555
15 সেক্রেড বুকস অফ দ্যা ইস্ট ৩৫/২২৫
16 সাহাবিদের সংখ্যা –  https://islamqa.info/ar/answers/108008/
17 সেক্রেড বুক অব দ্যা ইস্ট, ১১/৯৭, মহাপরিনির্বাণ সুত্তা, ৫ অধ্যায়, ৩৬-৩৭ অনুচ্ছেদ
18 https://at-tahreek.com/article_details/6791
19 ত্রিপিটক, অঙ্গুত্তর নিকায়া, ৪র্থ খন্ড, অষ্টক নিপাত, দ্বিতীয় পঞ্চাশক, গৌতমি বর্গ, গৌতমি সুত্রক, অনেচ্ছেদ ৯, শ্লোক ৫১; ত্রিপিটক, চুল বর্গ, ভিক্ষুনি স্কন্দ, নারী ভিক্ষুনি তথ্য লাভ অধ্যায়
20 Gethin, Rupert, M.L. (1998), Foundations of Buddhism, Oxford University Press, pp 5, 9, 10, 14
21 https://islamqa.info/bn/answers/147601/
22 ত্রিপিটক, সূত্রপিটকে দীর্ঘনিকায় পাথিক-বর্গ, ১. পাথিক সূত্রান্ত, শ্লোক-৪০
23 সহিহুল বুখারী, হাদিস ২১; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=23
24 ত্রিপিটক, সূত্রপিটক, খুদ্দকনিকায়, চূলনির্দেশ, খড়গবিষাণ সূত্র, চতুর্থ বর্গ শ্লোক-১৬১
25 আমাদের এই পোস্টটি পড়ুনঃ নবুয়্যতের পূর্বে মুহাম্মদ ﷺ কোন ধর্মে ছিলেন?
26 ত্রিপিটক, সূত্রপিটক দীর্ঘনিকায়, শীল স্কন্ধবর্গ, ৮নং কস্পপ সীহনাদ সূত্র, শ্লোক-৩৮২
27 বুখারী হাদিস ৩৪৩৫; মুসলিম ২৮; আহমাদ ২২৭৩৮; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=27774
28 ত্রিপিটক, বিনয়পিটক, চূলবর্গ, ৯নং প্রতিমোক্ষ, স্থতিকরন অধ্যায়, শ্লোক-৩৮৫
29 হাদিস সম্ভার, হাদিস ১৯৫; আহমাদ ২৩৪৮৯; শুআবুল ঈমান, বাইহাক্বী ৫১৩৭; https://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=63440
30 সেইক্রেড বুকস অফ দ্যা ইস্ট, ১১/৩৬; মহাপরিনির্বাণ সুত্তা, ২য় অধ্যায়ের ৩২ অনুচ্ছেদ
31 সহীহ বুখারি ৩৪৬১; সূরা মায়েদার ৬৭ নম্বর আয়াতের তাফসির, https://www.hadithbd.com/quran/error/?id=736
32 সূরা মায়েদা আয়াত ৬৭
33 দ্যা সেক্রেটবুক অব দ্যা ইস্ট ১০/৬৮
34 সহীহ মুসলিম ৪৯, ৫০, ২০১, ১৮৫৪; মুসনাদে আহমাদ ৪৩৬৬; বুখারি ২২৮২; ইবনু মা-জাহ ১২৭৫; তিরমিজি ৬১৭, ২১৬৯, ২১৭২, ২২৬৫, ৪৭৬০
35 সূরা আল-মায়িদা, আয়াত ৭৯; সুরা মুমিনুন আয়াত ৯৬; সুরা আলে ইমরান, আয়াত ১০৪; সূরা নিসা আয়াত ৭৬; সূরা নিসা আয়াত ১৪৮; সূরা আত-তাওবা, আয়াত ৭১, সূরা আল-গাশিয়ার ২১
36 ত্রিপিটক, সূত্রপিটকে, খুদ্দকনিকায়, মিলিন্দ প্রশ্ন, শ্লোক-২২
37 পটঠানুদ্দেস দীপনী ৯নং উপনিশ্রয় প্রত্যয়, লেখক-লেডী সেয়াদ, বাংলা অনুবাদক-করুণা বংশ ভিক্ষু
38 বিশুদ্ধ মার্গ, ১৩নং অভিজ্ঞতা নির্দেশ, লেখকঃ-ভদন্তাচরিয় বুূ্ূূদ্ধ ঘোষ, বাংলা অনুবাদকঃ জ্ঞানশান্ত ভিক্ষু
Exit mobile version