মানুষকে সন্তুষ্ট করতে আমল করলে মানুষ কীভাবে অসন্তুষ্ট হয়?
হাদিসঃ
"যে ব্যক্তি লোকেদেরকে অসন্তুষ্ট করেও আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করে, সে ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ সন্তুষ্ট হন এবং লোকদেরকেও তার প্রতি সন্তুষ্ট করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে লোকদেরকে সন্তুষ্টি অন্বেষণ করে, সে ব্যক্তির প্রতি আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এবং লোকদেরকেও তার প্রতি অসন্তুষ্ট করে দেন।’’ (ইবনে হিব্বান ২৭৬)
এখানে, আমরা সাধারণত দেখি, যাকে সন্তুষ্ট করার জন্য কাজ করা হয়, সে সন্তুষ্টই হয়। অসন্তুষ্ট হয় না। তাহলে এই হাদিসের ব্যাখ্যা কি হতে পারে?
মুনাফিকরা কি করে? বর্তমান সেকুলার, মডারেট, লিবারেল মুসলিমদের কর্মকান্ডগুলোতো দেখেছেনই আশা করি। তারা কি সকলের সন্তুষ্টি অর্জন করতে পেরেছে? না। তাদের মত যারা তাদের সন্তুষ্টিই হয়তো পেয়েছে, যদিও কিছুদিন পর পর তাদের নিজেদের মাঝেই বিভিন্ন কোন্দল দেখা দেয় এবং একে অপরকে এক্সপোজ করা শুরু করে।
বুঝানোর জন্য এই উদাহরণটা টানলাম। মানুষ অনেক কাজই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নয় বরং লোক দেখানো বা মানুষকে সন্তুষ্ট করতে করে। যেমন দান খয়রাত, আইন বানানো, অনৈসলামিক কাজ ইত্যাদি। বাস্তবে মানুষের পক্ষে অপর মানুষকে শতভাগ সন্তুষ্ট করা কখনোই সম্ভব না।
ইমাম শাফেয়ি (রহঃ) ইউনুস বিন আব্দুল আ'লাকে বলেন:
"হে আবু মুসা! আপনি যদি সকল মানুষকে সন্তুষ্ট করার সব ধরণের চেষ্টা করেন তবুও এর কোন উপায় নেই। অতএব, আপনি আপনার আমল ও নিয়তকে আল্লাহ্ তাআলার জন্যই একনিষ্ঠ করুন।" [ইমাম বাইহাকীর 'শুআবুল ঈমান' (৬৫১৮)]
ইমাম বাইহাকী তাঁর 'আল-যুহদুল কাবির' কিতাবে (১৮০) সহিহ সনদে হাসান বছরি (রহঃ) থেকে সংকলন করেছেন যে, তাকে জিজ্ঞেস করা হল:
"কিছু লোক আপনার মজলিসে আসে আপনার কোন একটি অসংলগ্ন কথা নিয়ে আপনার বিরুদ্ধে বিষোদগার করার জন্য। তখন তিনি বললেন: বিষয়টিকে হাল্কাভাবে নিন! আমি নিজেকে আল্লাহ্র নৈকট্যের প্রতি আগ্রহী করেছি; আমার আত্মা আগ্রহী হয়েছে। আমি নিজেকে জান্নাতের প্রতি আগ্রহী করেছি; আমার আত্মা আগ্রহী হয়েছে। আমি নিজেকে আয়তলোচন হুরদের প্রতি আগ্রহী করেছি; আমার আত্মা আগ্রহী হয়েছে। আমি নিজেকে মানুষ থেকে নিরাপদ থাকার প্রতি আগ্রহী করেছি; কিন্তু এর জন্য কোন উপায় পাইনি। আমি যখন দেখলাম মানুষ তার সৃষ্টিকর্তার প্রতি সন্তুষ্ট হয় না; তখন জানতে পারলাম তারা তাদের সমতুল্য মাখলুকের প্রতিও সন্তুষ্ট হবে না।"
Please login or Register to submit your answer