বনু কুরাইজা কিছুই করে নি?
নাস্তিকরা দাবি করে যে মহানবী সঃ অন্যায়ভাবে বনু কুরাইজা নির্মূল করেছেন তাদের বিশ্বাসঘাতকতা র প্রমাণ সিরাতে নেই এটি নিয়ে বলুন
1 Answers
খন্দকের যুদ্ধের পূর্বে আল্লাহর রাসূল ইহুদিদের ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পেরে তাদের সাথে সন্ধি করেছিলেন যেন তারা রাসূলের বিরুদ্ধে কোন কিছু না করে।
পরের দিন সকালে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদল সৈন্যসহ তাদের নিকট গিয়ে তাদেরকে অবরোধ করে বললেনঃ আল্লাহর শপথ! তোমরা আমার সাথে চুক্তিবদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আমি তোমাদের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত হবো না। কিন্তু তারা চুক্তিবদ্ধ হতে রাজি না হওয়ায় সেদিনই তিনি তাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করেন। পরের দিন তিনি সৈন্যবাহিনী নিয়ে বনূ নাযীরকে ছেড়ে বনূ কুরাইয়াকে অবরোধ করে তাদেরকে সন্ধির জন্য আহবান করেন। তারা তাঁর সাথে চুক্তিবদ্ধ হলো। অতঃপর সেখান থেকে ফিরে পরের দিন তিনি সৈন্যবাহিনী নিয়ে বনূ নাযীরের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরলেন। তারা দেশত্যাগ করতে সম্মত হয়ে দেশত্যাগ করে। তাদের উটের পিঠে ঘরের দরজা, চৌকাঠ ইত্যাটি যতটা মালামাল নেয়া সম্ভব নিলো। [সুনানে আবু দাউদ ৩০০৮]কিন্তু তারপরও বনু নাযীর সরাসরি চুক্তি ভঙ্গ করে যার কারনে তাদেরকে দেশান্তর করা হয় এবং বনু কুরাইজাকে থাকতে দেওয়া হয়, কিন্তু পরবর্তীতে বনু কুরাইজাও সন্ধি ভঙ্গ করে রাসূলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এমন এক মুহুর্তে যখন রাসূল শত্রুদের সাথে যুদ্ধরত অবস্থায় ছিলেন।
মুহাম্মাদ ইবনু রাফি ও ইসহাক ইবনু মানসূর (রহঃ) ..... ইবনু উমর (রা) হতে বর্ণিত যে, বানু নাযীর এবং বানু কুরাইযাহ্ গোত্র দুটির ইয়াহুদীরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বানু নাযীরকে দেশান্তর করেন। এবং বনু কুরাইযাকে সেখানে থাকার অনুমতি দিলেন এবং তিনি তাদের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করলেন। পরিশেষে বানু কুরাইযাও যুদ্ধ করল। ফলে তিনি তাদের পুরুষদেরকে হত্যা করলেন এবং তাদের নারী, শিশু ও সম্পদসমূহ মুসলিমদের মাঝে বন্টন করে দিলেন। কিন্তু তাদের কিছু সংখ্যক লোক যারা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মিলিত হয়েছিল তাদেরকে তিনি নিরাপত্তা প্রদান করেন। তখন তারা মুসলিম হয়ে গিয়েছিল। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনার সকল ইয়াহুদীকে দেশান্তর করেন। বানু কায়নুকা গোত্রের ইয়াহুদী (আবদুল্লাহ ইবনু সালামের ইয়াহুদী গোত্র), বানু হারিসাহর ইয়াহুদী এবং মদীনায় বসবাসরত সকল ইয়াহুদীকেই দেশ থেকে বহিষ্কার করেন। [সহীহ মুসলিম, আন্তর্জাতিক ১৭৬৬, হাদিস একাডেমী ৪৪৮৪]পরবর্তীতে বনু কুরাইজার বিরুদ্ধে অভিজান চালানো হলে তারা প্রাক্তন ইহুদি নেতা সাদ ইবনে মুয়াজ (রা) এর কাছে আত্মসমর্পন করেন এবং তার ফয়সালা মেনে নেওয়ার কথা জানান। তারপর সাদ ইবনে মুয়াজ (রা) ফয়সালা দেন ইহুদিদের কিতাব (Deuteronomy 20:12-14) অনুসারে যে, যোদ্ধাদের হত্যা করা হোক এবং নারী ও শিশুদেরকে বন্দী করা হোক।
আবূ বকর ইবনু আবূ শাইবাহ ..... আবূ সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) বলেন, বানু কুরাইযার অবরুদ্ধ লোকেরা সা’দ ইবনু মুআয (রাযিঃ) এর নির্দেশ মেনে নিতে সম্মত হলো। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সা’দ (রাযিঃ) এর নিকট লোক পাঠালেন। সুতরাং তিনি একটি গাধার উপর আরোহণ করে আসলেন। যখন তিনি মসজিদের কাছাকাছি আসলেন তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদেরকে বললেনঃ তোমরা তোমাদের নেতার অথবা বললেন, উত্তম ব্যক্তির দিকে উঠে যাও। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সমস্ত অবরুদ্ধ দুর্গবাসীরা তোমার নির্দেশ মান্য করতে সম্মত হয়েছে। তখন তিনি বললেন, তাদের মধ্যেকার যুদ্ধের উপযুক্ত (যুবক) লোকদেরকে হত্যা করা হোক এবং তাদের নারী ও শিশুদেরকে বন্দী করা হোক। তখন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী বিচার করেছ। বর্ণনাকারী কখনো বলেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তুমি রাজাধিরাজ আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী বিচার করেছ। বর্ণনাকারী ইবনু মুসান্না (রহঃ) কোন কোন সময় তিনি বলেছেনঃ তুমি রাজাধিরাজ আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী বিচার করেছো" কথাটি উল্লেখ করেননি। [সহীহ মুসলিম হাদিস একাডেমি ৪৪৮৭, আন্তর্জাতিক ১৭৬৮]এখানে রাসূল কারো শাস্তির ফয়সালা করেন নি, তিনি শুধু সম্মতি দিয়েছিলেন যে ফয়সালা সাহাবি দিয়েছিল ও ইহুদিরা মেনে নিয়েছিল তার উপর। এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত এবং সকল দলিল প্রমানসহ জানতে এই উত্তরটি দেখতে পারেন দেখতে পারেন -