নীলনদের উৎপত্তি জান্নাতে?

প্রশ্নোত্তর (Q&A)Category: ইসলামনীলনদের উৎপত্তি জান্নাতে?
Hridoy asked 4 months ago
নীলনদ সিদরাতুল মুনতাহা থেকে হলে আমরা পানি আকাশ থেকে নীলনদে আছড়ে পড়তে দেখিনা কেন? এই সংক্রান্ত হাদিসটি বুঝিয়ে বলবেন।
1 Answers
Ashraful Nafiz Staff answered 4 months ago
  1. ইবনু মালিক (রহিমাহুল্লাহ) নীল এবং ফুরাত নদীকে জাহিরী নদী হিসেবে উল্লেখ করার সম্ভাব্য তিনটি কারণ উল্লেখ করেছেন।
  • উভয়টির পানি সিদরাতুল মুনতাহা থেকে বের হয়ে এসেছে, কিন্তু তার পদ্ধতি অজানা।
  • স্বাদ এবং হজম শক্তির ক্ষেত্রে জান্নাতের দু’টি নহরের সাথে এই দু'টি নদীর কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে।
  • ফুরাত ও নীল নামে জান্নাতেও দু’টি নহর আছে। [মিশকাতুল মাসাবিহ ৫৮৬২ নাম্বার হাদিসের ব্যাখ্যা]

ইবনে উসাইমিন (রহ) বলেছেন: “কিছু পণ্ডিত বলেছেন: এটি সত্যই জান্নাতের একটি নদী, কিন্তু যখন এটি এই পৃথিবীতে নেমে আসে, তখন এটি এই বিশ্বের নদীগুলির প্রকৃতি গ্রহণ করে এবং এটি এই বিশ্বের নদীগুলির মধ্যে একটি হয়ে যায়। পণ্ডিতদের থেকে এর ব্যাখ্যা রয়েছে:

  • এটি সত্যিই জান্নাতের নদীগুলির মধ্যে একটি, কিন্তু যখন এটি পৃথিবীতে নেমে আসে তখন এটি এই বিশ্বের নদীর মতো হয়ে যায়।
  • প্রকৃতপক্ষে এটি জান্নাতের একটি নদী নয়, বরং এটি সবচেয়ে সুন্দর এবং তাদের মধ্যে সর্বোত্তম, তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মর্যাদা বৃদ্ধি ও প্রশংসা করার জন্য এর এই বর্ণনা উল্লেখ করেছেন। [শারহে রিয়াদ আস সলীহিন ৬/৬৭৪]

ইমাম নববী (রহ) বলেন, "এর অর্থ হল নদীগুলো সেই (জান্নাতের) উৎস থেকে বের হয়ে আসে, অতঃপর তারা সেখানে চলে যায় যেখানে আল্লাহ তা'আলা চান তারা মাটি থেকে বের হয়ে আসুক এবং তাতে চলাফেরা করুক। [শরহে মুসলিম ইমাম নববী ২/২২৫]

ইবনে কাসির (রহ) বলেন,

সম্ভবত এর দ্বারা পরিচ্ছন্নতা, স্বাদ ও প্রবাহের ক্ষেত্রে এ নদীগুলো জান্নাতের নদ-নদীর সাথে সাদৃশ্য রাখে বলে বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ। এ ব্যাখ্যার যৌক্তিকতা আবূ হুরায়রা সূত্রে ইমাম তিরমিযী (র) বর্ণিত ও তাঁর দ্বারা সহীহ বলে আখ্যায়িত- হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সেই হাদীসে রয়েছে যাতে তিনি বলেছেনঃ

العجوة من الجنة وفيها شفاء من السم.

"আজওয়া (উন্নতমানের এক প্রকার খেজুর) জান্নাতী খেজুর এবং তাতে বিষ-এর উপশম রয়েছে।" অর্থাৎ-আজওয়া জান্নাতের ফল-ফলাদির সাথে সাদৃশ্য রাখে। এর অর্থ এ নয় যে, এটি জান্নাত থেকে আহরণ করে নিয়ে আসা হয়েছে। কেননা, বাস্তবে এর বিপরীতটিই পরিলক্ষিত হয়। সুতরাং এটা যে শাব্দিক অর্থে ব্যবহৃত হয়নি, তা স্পষ্ট। অনুরূপ অন্য হাদীসে তিনি বলেছেন:

الحمي من فيح جهنم فأبردوها بالماء.

অর্থাৎ- জ্বর হলো জাহান্নামের তাপ। কাজেই তাকে তোমরা পানি দ্বারা ঠাণ্ডা কর। অপর একটি হাদীসে আছেঃ

إذا اشتد الحمي فابردوها بالماء فإن شدة الحر من فيح جهنم. অর্থাৎ- জ্বর তীব্র আকার ধারণ করলে তাকে তোমরা পানি দ্বারা ঠাণ্ডা করে নিও। কেননা গরমের তীব্রতা জাহান্নামের তাপ বিশেষ।

তদ্রূপ এসব নদ-নদীর মূল উৎসও পৃথিবীতেই।[আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১/৮৩]

Back to top button