দাসীকে বিয়ে করার বিষয়ে মুসলিমদের কেমন মনোভাব ছিল?
আগের খিলাফতে/সুলতানি আমলে অনেক দাসী এরকম ছিল যাদের একাধিক জায়গায় বিক্রি করা হয়েছিল অর্থাৎ সেই দাসীদের সাথে একাধিক মালিক আযলের সাথে সহবাস করেছিল। দেখা গেছে হঠাৎ একদিন একপর্যায়ে এক মালিক তাকে স্বাধীন করে দেয় অথচ সে(সেই প্রাক্তন দাসী) এখনো উম্মে ওয়ালাদ হয়নি। সেই প্রাক্তন দাসীকে বিয়ে করতে মুসলিম পুরুষরা কি ঘৃণা বা অন্য মনোভাব প্রকাশ করতো? যেহেতু সেই মেয়ে দাসী থাকা অবস্থায় একাধিক পুরুষের বিছানায় গিয়েছিল। বর্তমানে যেহেতু আমাদের সারা বিশ্বের মুসলিম সমাজ ননভার্জিন মেয়ের কাছে ছেলে বিয়ে দিতে চায়না। কারণ আল্লার রাসুল বেশি বেশি কুমারী মেয়ে বিয়ে করতে বলেছে কারণ তাদের যোনী অনেক উষ্ণ এবং তাদের মুখ অধিক মিষ্টি এবং তারা অধিক সন্তান ধারণকারী। এই সব কারণে ইরানে সতীত্ব পরীক্ষা করা হয় এবং ননভার্জিন মেয়েরা সহজে বিয়ে করতে পারেনা তাদের অনেক সমস্যা হয়। তাই এই প্রশ্ন। ঐতিহাসিক দলিল সহ উত্তর দিবেন কারন আমার প্রশ্ন নবীর যুগ থেকে শুরু করে উসমানীয় ইসলামী খিলাফত যতদিন ছিল সেই পর্যন্ত মুসলমানদের এরকম অধিক সহবাসকারীনী প্রাক্তন দাসীদের সাথে যাদের বিবাহ হয়নি এমন পুরুষদের অর্থাৎ সতী পুরুষের সাথে বিয়ে করা বিষয়ে অবস্থা সম্পর্কে। ধন্যবাদ।
একই প্রশ্ন বিয়ের ক্ষেত্রেও এসে যায়। মানুষ বহু স্বামীর সংসার করা নারীদেরকে বিয়ে করাকে কোন দৃষ্টিতে দেখে? কারন তারাতো একাধিক পুরুষের বিছানায় গিয়েছিল। একাধিক স্বামী আযলের সাথে সহবাস করেছিল তাদের সাথে। দেখা গেছে হঠাৎ একদিন একপর্যায়ে স্বামী তাকে তালাক দিয়ে দেয় বা সে নিজেই নিয়ে নেয়, কিন্তু এখনো সন্তান হয়নি। সেই নারীকে বিয়ে করতে মুসলিম পুরুষরা কি ঘৃণা বা অন্য মনোভাব প্রকাশ করে? একই প্রশ্ন পুরুষের ক্ষেত্রেও আসে।
উপপত্নী স্ত্রীর কাছাকাছি স্তরের, একজন স্ত্রী যেমন, উপপত্নীও সেরকম। স্ত্রীকে তালাক দেওয়া যায়, উপপত্নীকে মুক্ত করা যায়। স্ত্রীর সাথে যেমন আচরন করতে বলা হয়েছে দাসীর সাথে যেমন আচরন করতে বলা হয়েছে, বিস্তারিত জানতে চাইলে এই দুটো আর্টিক্যাল পড়ে দেখতে পারেন -
১. ইসলামে দাসী-স্ত্রী এবং যৌন বিশুদ্ধতা
২. ইসলামে ক্রীতদাসি ও যুদ্ধবন্দিনীর সাথে যৌন সম্পর্কের বৈধতার স্বরূপ
এছাড়া ইসলামে দাসীকে মুক্ত করে তাকে বিবাহ করার প্রতি উৎসাহ প্রধান করা হয়েছে, এবং এতে দ্বিগুণ সওয়াব থাকার কথাও পাওয়া যায়। [বুখারি ৯৭, ২৫৪৪, ২৫৪৭, ২৫৫১, ৩০১১, ৩৪৪৬, ৫০৮৩; মুসলিম ১৫৪: তিরমিজি ১১১৬; Mufti Muhammad Shafi’, Ma’ariful Qur’an- Translation by Muhammad Ishrat Husain, Karachi, n.d. vol.6 pp.423-424]
আপনি হয়তো জেনেই থাকবেন যে রাসুলের ১১ স্ত্রীর মাঝে ১ জন ছাড়া আর কেউই কুমারি ছিলেন না। তাদের মধ্যে দাসী হয়ে এসেছিলেন ছিলেন ও আল্লাহর রাসূল রাসূল সা নিজে সেই নারী সাফিয়্যা বিনতে হুয়াই যে কিনা আগেই বিধবা ছিলেন তা হওয়া স্বত্তেও তাকে মুক্ত করে বিবাহ করছেন। [সহীহ বুখারী, খন্ড ১ অধ্যায় ৮ হাদীস নং ৭৬৩]
এছাড়া আপনি কুমারি মেয়েদের যৌনিপথ উষ্ণ বেশি সংক্রান্ত যে হাদিসটির কথা বলছেন সেটাও সহিহ নয়। [ মুহাম্মাদ ﷺ কি কুমারী মেয়েদের যোনীপথকে অধিক উষ্ণ বলেছেন? ] আর বাকি আপনি ইরানের যে উদাহরণটি টেনেছেন তাতে কিছুই যায় আসে না, কারন ইরান আমাদের কাছে দলিল নয়।
কোন মেয়ে অবৈধ ভাবে নিজের কুমারিত্ব নষ্ট করলে তাকে বিবাহ করতে যদি কারো ঘৃণা না লাগে তাহলে বৈধ ভাবে কুমারিত্ব নষ্ট হওয়ার কোন মেয়েকে বিয়ে করতে কেন ঘৃণা লাগবে? আরেক জনের স্ত্রীকে ভাগিয়ে বা অন্য কোন ভাবে প্রেম করে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে বিয়ে করতে যদি কারো ঘৃণা না লাগে তাহলে সাভাবিক ভাবে তালাক হওয়া ও মুক্ত হওয়া কোন নারীকে বিয়ে করতে কিসের ভিত্তিতে ঘৃণা লাগবে? দাসী মানে যাবে উপপত্নী হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে সে হল স্ত্রীর আরেকটি রূপ, তাহলে তাকে যদি উপপত্নী হিসেবে গ্রহণ করতে ঘৃণা না লাগে তাহলে বিয়ে করতে কেন ঘৃণা লাগবে?
নন-ভার্জিন কেউ যদি বৈধ ভাবে হয় তাতে আমাদের কারো কোন আপত্তি নেই, কিন্তু আপত্তি হচ্ছে যারা অবৈধ ভাবে নিজেদের ভার্জিনিটি হাড়িয়েছে। সেহেতু এসব চরিত্রহীন নারীদের সাথে তালাক প্রাপ্ত বা বিধবা বা দাসী হতে মুক্ত হওয়া চরিত্রবান নারী সাথে তুলনা আমাদের কাছে গ্রহনযোগ্য নয়। কারন অপবিত্র ও পবিত্র কখনো এক হয় না।
Please login or Register to submit your answer