সুষ্ঠ জ্ঞান, মানব স্বভাব ও মৌলিক শিক্ষার মানদণ্ডে হিন্দুধর্ম

  1. Home
  2. Docs
  3. সুষ্ঠ জ্ঞান, মানব স্বভাব ও মৌলিক শিক্ষার মানদণ্ডে হিন্দুধর্ম
  4. ১১। হিন্দুরা কি কার্যতই গরুকে পবিত্র মনে করেন?

১১। হিন্দুরা কি কার্যতই গরুকে পবিত্র মনে করেন?

হাদিয়া ও উৎসর্গ প্রদানের উৎস হিসেবে হিন্দুধর্মে গরুর একটি বিশেষ পবিত্র অবস্থান রয়েছে। আরেকটি বিষয় হল, আধুনিক যুগের হিন্দুরা মনে করেন যে, প্রভু তাঁর সৃষ্টি করা প্রাণীদের মধ্যে বাস করেন, যার মধ্যে গরুও রয়েছে, যা সর্বেশ্বরবাদ তথা ‘অস্তিত্বের একাত্মতা’ দর্শন নামে পরিচিত। সুতরাং, হিন্দুধর্মে গরুর পবিত্রতার বিষয়ে বিভিন্ন রূপ বিদ্যমান।
ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত গরুকে কেন্দ্র করে বিশেষ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। [৫২] এর বিপরীতে, বেদসমূহ সমস্ত বস্তুজগত এবং সমস্ত প্রাণীজগতের উপরে আল্লাহর (প্রভুর) পবিত্রতা এবং প্রতিটি বস্তু ও প্রতিটি মাখলুকের ওপর তা মহত্ব তুলে ধরেছেন।
ঋগবেদে বলা হয়েছে: “আমিই আল্লাহ (প্রভু), যিনি সবকিছুর আগে বিরাজমান, এবং আমি সমগ্র বিশ্বজগতের মালিক, এবং আমিই প্রকৃত অনুগ্রহকর্তা এবং সমস্ত অনুকম্পার পরম বাছাইকারী। তাই, সমস্ত আত্মার উচিত আমাকেই সাহায্য ও সহযোগিতার জন্য ডাকা উচিত।”[৫৩] এটি সূর্যের মতো একটি স্পষ্ট বর্ণনা, যা অস্তিত্বের একাত্মতার ধারণাকে নাকচ করে। সুতরাং আল্লাহ (প্রভু), তিনিই বিশ্বের স্রষ্টা এবং বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
এছাড়াও এ বর্ণনাটিতে বস্তুজগতকে পবিত্র মনে করা বা সৃষ্টবস্তুদের কাছ থেকে সাহায্য চাওয়ার বিরুদ্ধে একটি হুশিয়ারী রয়েছে, আর তাই, গরুর স্রষ্টা এবং সবকিছুর স্রষ্টা আল্লাহ ছাড়া কারো কাছেই সাহায্য চাওয়া যাবে না।
আর শুধুমাত্র আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের মতবাদই ইসলামী মতবাদের মূলকথা।
ইসলাম বলে যে, গরু এবং আমাদের চারপাশের সমস্ত বস্তুজগতের উপাদান আমাদের অধীন, আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন:
﴿وَسَخَّرَ لَكُم مَّا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِ جَمِيعٗا مِّنۡهُۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَأٓيَٰتٖ لِّقَوۡمٖ يَتَفَكَّرُونَ ١٣﴾ [الجاثية: 13] “আর তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন আসমানসমূহ ও যমীনের সমস্ত কিছু নিজ অনুগ্রহে, নিশ্চয় এতে অনেক নিদর্শনাবলী রয়েছে, এমন সম্প্রদায়ের জন্য যারা চিন্তা করে।” সূরা আল-জাছিয়াহ: ১৩।
এটাই ইসলামের বিশ্বাস, যা মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি।
হিন্দুরা কখনোই বেদে বর্ণিত তাওহীদ ও আল্লাহর আনুগত্যের দিকে ইসলাম কবুল করা ছাড়া ফিরে যেতে পারবে না। সুতরাং ইসলামই হচ্ছে বেদে বিদ্যমান সত্যকে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনাকারী। আর ইসলামই মানুষের সব ভ্রান্তিগুলো শুধরে দেয় এবং মানুষের ঐশ্বরিক আদেশ (অহী)-এর সব বিচ্যুতিসমূহ দূর করে দেয়।

    Was this article helpful to you? Yes No

    How can we help?