সুষ্ঠ জ্ঞান, মানব স্বভাব ও মৌলিক শিক্ষার মানদণ্ডে হিন্দুধর্ম

  1. Home
  2. Docs
  3. সুষ্ঠ জ্ঞান, মানব স্বভাব ও মৌলিক শিক্ষার মানদণ্ডে হিন্দুধর্ম
  4. ভূমিকা

ভূমিকা

আল্লাহর নামে শুরু করছি। সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্যই। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাঁর পরিবার-পরিজন, সাহাবীগণ এবং তাঁর অনুসারীদের উপর। অতঃপর:
হিন্দুধর্ম কখনো কখনো ধর্ম হলেও কিন্তু অতি সূক্ষ্ম দৃষ্টিকোণ থেকে এটি মুলত একটি পার্থিব পদ্ধতি।
বিশ্বে জনসংখ্যার আলোকে হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের সংখ্যা প্রায় ১৫%। পৃথিবীতে এর অনুসারীর সংখ্যা একশ বিশ কোটিরও বেশি।
যুগের পরিক্রমায় হিন্দুধর্ম বিক্রিত প্রায়।
বৈদিক যুগের পর থেকে হিন্দুধর্ম যৌক্তিক, জ্ঞানগত ও স্বভাবজাত প্রকৃতির দিক থেকে অসংখ্য প্রশ্নের সম্মুখীন । এ বইয়ে আমরা সেগুলোর কয়েকটি তুলে ধরব।
হ্যাঁ!
হিন্দুধর্ম বেদের মৌলিক শিক্ষাসমূহ (যা হিন্দুধর্মের মৌলিক উৎসসমূহের অন্যতম) থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। বরং তারা বিভিন্ন মানুষ, সন্ন্যাসী ও ভগবত গীতার শিক্ষার অনুসরণ করছে।
Bhagavad Gita भगवद्गीता গোপনীয় তন্ত্র Tantras
সুতরাং ছোট এ পুস্তিকাতে আমি যুক্তি, আধুনিক জ্ঞান, তর্কশাস্ত্র ও হিন্দুদের হাতে এ সময় পর্যন্ত বর্তমান থাকা বেদের মৌলিক শিক্ষার আলোকে বর্তমানে হিন্দুধর্মের অবস্থা নির্ণয় করার চেষ্টা করব। আর আমি এ ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাসী যে, এখন পর্যন্ত বেদে অবশিষ্ট থাকা সত্য এবং হিন্দুদের স্বভাবজাত প্রকৃতির মধ্যে যা রয়েছে, তা হিন্দুদেরকে নিরাপদে প্রকৃত সত্য দীন ইসলামে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
বেদ হচ্ছে: সার্বিকভাবে হিন্দুধর্মের সবচেয়ে পবিত্রতম গ্রন্থ।
স্বভাবজাত প্রকৃতি হচ্ছে: মানুষের অস্তিত্ব লাভের উদ্দেশ্য ও তার পরিণতির দিকে দৃষ্টিপাত করতে উদ্বুদ্ধকারী শক্তি। এ উদ্বুদ্ধকারী শক্তির মনোযোগ হচ্ছে, আল্লাহর প্রতি ঈমান এবং শরী‘আতসম্মত উপায়ে আল্লাহর দাসত্ব করা।
সত্য দীন হল, সেই বার্তা যা অন্তর্ভুক্ত করে বেদের মধ্যে থাকা অবশিষ্ট হককে (সত্য)। আর তা হলো, প্রকৃতির আহ্বান। আর সেটা জগতবাসীদের জন্য আল্লাহর অহী এবং উপনিষদে (Upanishad उपनिषद्) থাকা শিক্ষার আলোকে আল্লাহর তাওহীদের নিদর্শনসমূহের মাধ্যমে সুস্পষ্ট বার্তা।
এ ছোট পুস্তিকাতে আমি বৈদিক যুগের হিন্দুধর্ম ও বর্তমান যুগের হিন্দুধর্মের মধ্যে একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।
মনে রাখতে হবে হিন্দুধর্মে অসংখ্য পরিবর্তন ঘটেছে…
বেদে বর্ণিত সুস্পষ্ট ও পরিষ্কার তাওহীদের শিক্ষার অবশিষ্টাংশ থেকে হিন্দুধর্ম বহুদূরে সরে গেছে। ফলে বর্তমান হিন্দুধর্মে ওয়াহদাতুল উযূদ (সৃষ্টির সাথে স্রষ্টার একীভূত হওয়া) এর বিশ্বাস তুমি হিন্দু ধর্মে দেখত পাবে। যেখানে সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টবস্তুর সাথে একাকার হয়ে গেছে। ফলে সৃষ্টবস্তুই হুবহু সৃষ্টিকর্তা। এ অভিনব বিশ্বাস শুধু সুস্পষ্ট বৈদিক শিক্ষারই পরিপন্থী নয়; বরং এটি বিবেক-বুদ্ধিরও পরিপন্থী। কারণ, এটি কিভাবে সম্ভব যে, ইলাহ প্রতিটি বস্তুর মধ্যে বিস্তৃত। তারপর হে হিন্দুধর্মে বিশ্বাসী, তুমি তাঁর কাছে পৌঁছার বিভিন্ন ধরণের যোগ-সাধনা ও আরাধনার মাধ্যমে চেষ্টা কর; অথচ তিনি তোমার মধ্যেই রয়েছেন?
এটা কী একটি স্পষ্ট যুক্তিক প্রশ্ন নয়?
ওয়াহদাতুল উযূদ (সৃষ্টির সাথে স্রষ্টার একীভূত হওয়া) এর বিশ্বাস, বাস্তবতার নিরেখে এ কথার প্রতি আহবান করে যে, । প্রতিটি ধর্ম যাতে মূর্তি অথবা পাথরের পূজা করা হয়, সেটি শেষ পর্যন্ত ইলাহেরই ইবাদত। কেননা এ বিশ্বাস অনুযায়ী মূর্তি অথবা পাথর হচ্ছে ইলাহ। ধারনা মতে ইলাহ প্রতিটি বস্তুর মধ্যেই রয়েছেন, আর তিনিই [স্বয়ং] সকল বস্তু।
এ বাস্তবতার নিরিখে এটি লক্ষ্য ও মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দেয়, যা আমি এ পুস্তিকাতে স্পষ্ট করব।
ইতোপূর্বে যা বলা হয়েছে তার সাথে আমি আরও একটি বিষয় যোগ করব, তা হচ্ছে: বেদ সুস্পষ্টভাবে সে ইলাহের প্রতি ঈমানের দাওয়াত দেয়, যে ইলাহ মাখলুক থেকে আলাদা।এসব সৃষ্টবস্তু হচ্ছে আল্লাহর মাখলুকাত। আর আল্লাহর মাখলুকাতের (সৃষ্টিবস্তুর) এ ক্ষমতা কখনোই নেই যে, সেগুলো আল্লাহকে ধারণ করবে, যাতে তিনি তাদের মধ্যে অবস্থান করেন।
বেদ বলে, বিশেষত ঋগবেদ (ऋग्वेद) বলে: “হে আল্লাহ (ভগবান)! সূর্য ও বিশ্ব তাদের উভয়েরই এ ক্ষমতা নেই যে, তারা আপনাকে আয়ত্ব করবে এবং আপনাকে ধারণ করবে।” [১] সুতরাং ওয়াহদাতুল উযূদ (সৃষ্টির সাথে স্রষ্টা একাকার হওয়া) এর বিশ্বাসটি ভ্রান্ত প্রমাণিত হওয়ার ক্ষেত্রে বেদ থেকে এটি একটি সুস্পষ্ট দলিল। সুতরাং আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সৃষ্টি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
বর্তমান হিন্দুধর্মে তুমি আত্মার স্থানান্তরের (تناسخ الأرواح) বা পুনর্জন্মের বিশ্বাস দেখতে পাবে, যেখানে মানুষের আত্মা মৃত্যুর পরে অন্য নতুন কোন জীবিত প্রাণীর মধ্যে নতুন করে জন্ম নেওয়ার উদ্দেশ্যে অন্যান্য প্রাণীসমূহের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়। সুতরাং প্রাণ রয়েছে এমন প্রতিটি মানুষ [আত্মা] তার পূর্বে আসা অন্য কোন জীবিত প্রাণীর মধ্যে ছিল, এরকম। এ বিশ্বাস অনেক সমস্যার জন্ম দেয়। যদি আত্মার স্থানান্তর বা পুনর্জন্মের বিশ্বাস সঠিকই হয়ে থাকে, তবে দুগ্ধপোষ্য শিশুরা কেন প্রাপ্ত বয়ষ্কদের ন্যায় জ্ঞানগত ক্ষমতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে না? [২] তারপর, এ আত্মার স্থানান্তর বা পুনর্জন্মের বিশ্বাস যা বারংবার জন্মের ধারাবাহিকতার ওপর প্রতিষ্ঠিত। এটি কিভাবে হতে পারে, যখন আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে এটি সাব্যস্ত, জীবনের শুরু আছে, পৃথিবীর নিজেরও শুরু আছে, পৃথিবী আদি নয়।
তারপরও যদি পুনর্জন্মের ধারণা সঠিক হয়, তাহলে জরুরি হলো, বিশ্বজগতের সৃষ্টজীবের সংখ্যা নির্দিষ্ট; কেননা তাদের কতক কতকের মধ্যে স্থানান্তরিত। অথচ আজ পর্যন্ত এ কথা কেউ বলেনি!
এর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, বেদ পুনর্জন্মের কথা বলেনি। এমনকি হিন্দু পণ্ডিত শ্রী সত্যকাম বিদ্যালঙ্কার বলেছেন: “পুনর্জন্মের বিশ্বাস বেদসমূহে নেই। যারা আছে বলে দাবী করে, আমি তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করছি।” [৩] বিদ্যালঙ্কারের কথা সত্য হওয়ার সবচেয়ে বড় প্রমাণ হচ্ছে যে, হিন্দুরা একটি প্রাচীন ধর্মীয় আচার পালন করে যাকে বলা হয়: শ্রাদ্ধ (Śrāddha श्राद्ध), এবং এই আচারের উদ্দেশ্য হল: মৃতদের আত্মাকে শান্ত করা।
তাহলে কিভাবে আত্মার পুনর্জন্ম হয়; অথচ তারা মৃতদের আত্মাকে শান্ত করে দেয়?
হিন্দুধর্মের বর্তমান আর একটি বিশ্বাস হল: ‘কর্মফল’। যেহেতু মানুষ তাদের পূর্বের কর্মের ফলস্বরূপ কর্ম অনুসারে জন্মগ্রহণ করে, তাই যে ব্যক্তি ভ্রষ্ট, সে অন্য একটি নতুন জীবনে নিম্ন শ্রেণীতে বা বৃহত্তর দুর্দশার মধ্যে জন্মগ্রহণ করবে।
এর উপরে ভিত্তি করে, হিন্দুরা আক্রান্ত ব্যক্তিকে মনে করে যে, তার আক্রান্ত হওয়া অতীতের গুনাহসমূহের পরিণতি। এ বিকৃত ও অমুলক চিন্তা গোটা জীবনকে ধ্বংস করে দেয়। আর সে মানবতার কোন কাজেই আসেনা ; বরং সে এটি স্বীকৃতি দেয় যে, মানুষের উপরে আসা বিপদ হচ্ছে তার পূর্বের জীবনে করা পাপের প্রাকৃতিক শাস্তি। নিশ্চয় এটি এক ধরণের পশ্চাদপসরণ, জুলুম (নির্যাতন) ও শ্রেণি বৈষম্যের মিলন।
কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে: এ ‘কর্মফল’ নামক বিশ্বাসটি বেদের কোথায় রয়েছে?
বেদসমূহ স্পষ্ট করেছে যে, অবশ্যই জান্নাত (স্বর্গ) ও জাহান্নাম (নরক) রয়েছে, যা আল্লাহ মানুষের আমল অনুসারে প্রদান করবেন, আর অন্য কোন জীবের মধ্যে নতুন জন্ম নেওয়া বলে কিছু নেই।
ঋগবেদ বলছে: “আমাকে এমন স্থানে স্থায়ী করে দিন, যেখানে সব ধরনের উপভোগ্য বস্তু ও আনন্দ বন্টন করা হয়, আর যেখানে আত্মসমূহ যা কামনা করে তাই দেওয়া হয়।” [৪] এছাড়াও বর্তমান হিন্দুধর্মের মৌলিক বিশ্বাসগুলোর মধ্যে রয়েছে: বারবার জন্ম নেওয়া, ও পুনর্জন্ম থেকে মুক্তি পাওয়ার এবং এমন একটি পর্যায়ে পৌাঁছানোর প্রচেষ্টা করা, যাকে “মোক্ষ” (Moksha, मोक्ष) বলা হয়। এ পর্যায়ে মানুষ ঈশ্বরের সত্তার সাথে একত্রিত হয়ে যায়; কিন্তু এই ধারণাটির অস্তিত্ব সম্পূর্ণ নৈরাশ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত, তাই অস্তিত্বের লক্ষ্য হয়ে ওঠে অস্তিত্ব থেকে পরিত্রাণের প্রচেষ্টা!
এই ধারণাটি সমাজের জন্য বিপজ্জনক। কারণ এটি একজন ব্যক্তিকে ভয় থেকে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে।সুতরাং যখনই সে অশ্লীল কাজে লিপ্ত হবে, ততবারই সে নতুন করে জন্ম নেবে, আর তাতে করে সে সামনের জন্মে কোন একদিন অবশ্যই মুক্তি পাবে।
এটি বেদের শিক্ষার সম্পূর্ণ পরিপন্থী, যেখানে বলা হয়েছে যে, জুলুমকারী এবং পাপীদেরকে তাদের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় শাস্তি দেওয়া হয়, যেমন ঋগবেদ বলে: “একটি চূড়ান্ত গভীর স্থান, পাপীদের জন্য, যার গহ্বর অনেক দূরে।” [৫] বারবার জন্ম নেওয়ার মতবাদ থেকে এ অবস্থানটি তাহলে কোথায়?
তবে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে বর্তমান হিন্দুধর্মের সমস্যা হচ্ছে: বিশ্বজগত সৃষ্টি হওয়ার ব্যাপারে এর দৃষ্টিভঙ্গি। বর্তমান হিন্দুধর্মের বিশ্বাস হচ্ছে: বিশ্বজগত ধ্বংস হয়ে যাবে, তারপরে আবার তা সুগঠিত হবে, আর এভাবে সমাপ্তি না ঘটে চলতেই থাকবে। আর এটি একটি আশ্চর্যজনক ও স্পষ্ট ভুল যা জ্ঞান ও হাদীসের পরিপন্থী।
এটি সম্পূর্ণ জানা যে, বর্তমান বিজ্ঞান স্বীকার করে যে, এ বিশ্বজগতের একটি সূচনা রয়েছে, তার আগে অন্য জগতসমূহ অতীত হয়নি।
সুতরাং এ বিশ্বজগত পূর্বের কোন নমূনা ছাড়াই সৃষ্টবস্তু।
এটি একদিক দিয়ে বেদে থাকা বিশ্বাসেরই একই বিশ্বাস। বেদে রয়েছে: দুনিয়ার জীবন হঠাৎ করেই প্রকাশ পায়, আর সাথে সাথে রয়েছে আখিরাত। পরবর্তী পর্যায়ে আসা হিন্দুধর্মীয় দর্শন হলো,পুরানসমূহ (Puranas) এর সুস্পষ্ট ভাবে বিশ্বজগতের বারংবার অস্তিত্বে আসা ও তার চিরন্তনতা সম্পর্কে বক্তব্য এসেছে।
বর্তমান হিন্দুধর্মীয় ধর্ম-বিশ্বাস বেদের ধর্ম-বিশ্বাসের বিরোধিতা করে। বর্তমান বিজ্ঞানের বিরোধিতা করে। এছাড়াও বেদ ইসলামের বিরোধিতা করে যে ইসলাম সে সত্যকে বহন করে যা বেদে উল্লেখ করা হয়েছে।
মুসলিমদের ধর্ম-বিশ্বাস, যা আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে কারীমে অহী হিসেবে প্রেরণ করেছেন, তা হচ্ছে: এ বিশ্বজগত কোন ধরণের পূর্ব নমূনা ছাড়াই সৃষ্টি হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিতাবে বলেছেন:
﴿بَدِيعُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ وَإِذَا قَضَىٰٓ أَمۡرٗا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُۥ كُن فَيَكُونُ١١٧﴾ [البقرة: 117] “তিনি আসমান ও যমীনসমূহের নমূনাবিহীন সৃষ্টিকর্তা। আর তিনি যখন কোন বিষয়ের সিদ্ধান্ত দেন, তখন তিনি তাকে বলেন: হও, তখনই তা হয়ে যায়।” [সূরা আল-বাক্বারা: ১১৭]।
ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বজগত নমূনাবিহীন একটি সৃষ্টি, তথা এটি পূর্বের কোন নমূনা ছাড়াই প্রকাশিত হয়েছে।
বর্তমান বিজ্ঞান এ সিদ্ধান্ত পর্যন্তই পৌঁছেছে। আর এ সম্পর্কে সংবাদ দিয়েছেন ১৪০০ বছর আগে এমন একজন ব্যক্তি, যিনি ছাগল চরাতেন। যাকে ডাকা হত আব্দুল্লাহর পুত্র মুহাম্মাদ এবং তিনি ইসলামের নবী (মুহাম্মাদ) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।
এ বইয়ে আমি হিন্দুধর্মের অসংখ্য সমস্যা নিয়ে আলোচনা করব যে সমস্যাগুলোর সম্মুখিন তারা হয়ে থাকে। আর তার বিপরীতে বিশ্ব, জীবন, পুরস্কার, শাস্তি, অস্তিত্বের উদ্দেশ্য বিষয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি এবং যে সব বিষয়গুলো বেদের অবশিষ্টাংশ ও স্বভাবের সাথে সম্পূর্ণভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ সে গুলোও তুলে ধরব।
মানব জাতির জীবন যাপনের পদ্ধতি জানার জন্য মানবিক প্রয়োজন মিটানোর ক্ষেত্রে এবং মানুসের অস্তিত্বের অর্থ ও উদ্দেশ্য সমাধানে ইসলাম কতটা সুক্ষ্ণ, শক্তিশালী, মজবুত ও মডেল তা আলোচনা করব যা স্বভাব, জ্ঞান, বুদ্ধি ও বিবেকের সাথে সামঞ্জস্য হয়।
এই বইটি ইসলাম ধর্মের বিশুদ্ধতার ওপর কতক প্রমাণ এবং বেদ থেকে এ ধর্মের সুসংবাদসমূহকে পেশ করবে। কার্যত এ বেদসমূহ ইসলাম সম্পর্কে এবং রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে সুসংবাদ দিয়েছে এবং হিন্দুদেরকে তার প্রতি ঈমান আনার আহ্বান জানিয়েছে।
ইসলাম পৃথিবীতে অন্যান্য ধর্মের আওতাধীন কোন ধর্ম নয়; বরং এটি তাওহীদবাদী একক ধর্ম, যা দিয়ে আল্লাহ সমস্ত নবীকে পাঠিয়েছেন। সকল নবীই এসেছেন মানুষকে তাওহীদের দাওয়াত দিতে। আর এ বিশুদ্ধ তাওহীদের উপরে বর্তমানে ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম অবশিষ্ট নেই। অপর দিকে বাকি ধর্মসমূহে কম বেশি শির্ক রয়েছে।
আর আল্লাহ ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম মানুষের কাছে থেকে গ্রহণ করবেন না, যেমন আল্লাহ তা‘আলা তাঁর কিতাবে বলেছেন:
﴿وَمَن يَبۡتَغِ غَيۡرَ ٱلۡإِسۡلَٰمِ دِينٗا فَلَن يُقۡبَلَ مِنۡهُ وَهُوَ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِنَ ٱلۡخَٰسِرِينَ٨٥﴾ [آل عمران: 85] “আর যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্ম অন্বেষণ করবে, তার কাছ থেকে তা কখনোই গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে গণ্য হবে।” [সূরা আলে ইমরান: ৮৫]।
ইসলাম হল সেই ধর্ম যা সহকারে আল্লাহ সমস্ত নবী-রাসূল পাঠিয়েছেন।
ইসলামের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল: এতে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করা এবং একমাত্র আল্লাহর উপাসনা করার অর্থ রয়েছে। বর্তমান হিন্দুধর্মের মত মূর্তি বা প্রতিমাগুলোর মধ্যে আল্লাহর জন্য দেহ সাব্যস্থ করাকে অস্বীকার করে।
তারপরে বইটি শেষ করা হবে কিভাবে একজন ব্যক্তি আল্লাহর জন্য মুসলিম হবে তার বর্ণনা ও পাশাপাশি ইসলামের অর্থ এবং ইসলামের প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা দ্বারা।
তাহলে আল্লাহর বরকতে বইয়ের যাত্রা শুরু করলাম…

    Was this article helpful to you? Yes No

    How can we help?