পশুকাম কী?
পশুকাম হলো পশুর সাথে যৌনতা। কেউ যদি তার যৌন চাহিদা কোনো পশুর সাথে মেটায়, পশুর সাথে সঙ্গম করে সেটাই পশুকাম। ইসলামে পশুকাম হারাম এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
ইসলামে পশুকামের নিষিদ্ধতা
ইসলামে পশুকামের বিপরীতে প্রচুর দলিল উপস্থাপন করা যায়। কুরআন এবং সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত যে পশুকাম হারাম, এ মর্মে কোনো ইখতিলাফ নেই।
কুরআনের দলিল
আল্লাহু ﷻ বলেছেন,
আর যারা নিজেদের যৌনাঙ্গসমূহের হিফাযতকারী, তাদের পত্নী অথবা অধিকারভুক্ত দাসী ছাড়া, এতে তারা নিন্দনীয় হবে না, তবে কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা হবে সীমালঙ্ঘনকারী…[1]কুরআন ৭০:২৯-৩১
বেশিরভাগ আলেম এই আয়াত থেকে দলিল নিয়েছেন যে ইসলামে স্ত্রী এবং অধিকারভুক্ত দাসী ছাড়া সকল প্রকার যৌনাচার যেমন হস্তমৈথুন (হাতের সাথে যৌনমিলন) নিষিদ্ধ।[2]কুরতুবি, আল জামি’ই লি আহকাম আল-কুরআন
একই কথা সূরা মু’মিনুনেও এসেছে,
(সফলকাম) যারা নিজেদের যৌন অঙ্গকে সংযত রাখে। নিজেদের পত্নী অথবা অধিকারভুক্ত দাসী ব্যতীত; এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। সুতরাং কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা হবে সীমালংঘনকারী।[3]কুরআন ২৩:৫-৭
এই আয়াতের ব্যাখ্যায়ও আলেমগণ বলেছেন, স্ত্রী এবং অধিকারভুক্ত দাসী ছাড়া বাকি সব অবৈধ,[4]তাফসীরে মা’আরিফুল কুরআন http://www.islamicstudies.info/quran/maarif/maarif.php?sura=23[5]তাফসীরে জালালাইন https://www.altafsir.com/Tafasir.asp?tMadhNo=0&tTafsirNo=74&tSoraNo=23&tAyahNo=7&tDisplay=yes&UserProfile=0&LanguageId=2হস্তমৈথুন হারাম, পশুকাম হারাম।[6]তাফসীরে মাওদূদী http://www.englishtafsir.com/Quran/23/index.html#sdfootnote7sym
আল্লাহ ﷻ অশ্লীলতা থেকে দূরে থাকার আদেশ করেছেন,
…প্রকাশ্যে হোক কিংবা গোপনে হোক, অশ্লীল কাজের ধারে-কাছেও যাবে না…[7]কুরআন ৬:১৫১
ক্যাটেগরিলি হারাম
১. যেহেতু ইসলাম কোনো পশুর সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক সমর্থন করে না, সেহেতু পশুর সাথে সেক্সের কথাও আসবে না। সেটা অটো বাতিলের খাতায়।
২. বিপদে পড়লেও পশুকাম সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ এবং পরিত্যাজ্য। কেউ যদি প্রশ্ন করেন যে, খুব বিপদে পড়লে, যেখানে নিজের যৌনাচার নিয়ন্ত্রণই করা যাচ্ছে না, সামনে একটা পশু ব্যতীত কোনো অপশন দেখা যাচ্ছে না, সেখানেও কি পশুকাম নিষিদ্ধ হবে?
এর উত্তর হলো হ্যা। কারণ, ইসলাম বিপদের মুহূর্তে একাধিক অপশনের মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিকর অপশনটাই বেছে নিতে বলে। আর এক্ষেত্রে সেই অপশনটা হলো হস্তমৈথুন।
তবে হস্তমৈথুন সুস্পষ্ট হারাম। বিপদের সময়ও হস্তমৈথুন হালাল হয়ে যাবে না, হালাল মনে করা যাবে না। বিপদে বাধ্য হয়ে এর আশ্রয় নিলেও এটাকে হারামই মনে করতে হবে। তবে আল্লাহ্ ﷻ চাইলে ক্ষমা করে দিতে পারেন।[8]শাঈখ ইউসুফ ওয়েলচ যেমনটা আল্লাহ ﷻ কুরআনে বলেছেন,
নিশ্চয় তিনি তোমাদের উপর হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোশ্ত এবং যা গায়রুল্লাহর নামে যবেহ করা হয়েছে। সুতরাং যে বাধ্য হবে, অবাধ্য বা সীমালঙ্ঘনকারী না হয়ে, তাহলে তার কোন পাপ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।[9]কুরআন ২:১৭৩
তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত প্রাণী, রক্ত ও শূকরের গোশত এবং যা আল্লাহ ভিন্ন কারো নামে যবেহ করা হয়েছে; গলা চিপে মারা জন্তু, প্রহারে মরা জন্তু, উঁচু থেকে পড়ে মরা জন্তু অন্য প্রাণীর শিঙের আঘাতে মরা জন্তু এবং যে জন্তুকে হিংস্র প্রাণী খেয়েছে- তবে যা তোমরা যবেহ করে নিয়েছ তা ছাড়া, আর যা মূর্তি পূঁজার বেদিতে বলি দেয়া হয়েছে এবং জুয়ার তীর দ্বারা বণ্টন করা হয়, এগুলো গুনাহ। যারা কুফরী করেছে, আজ তারা তোমাদের দীনের ব্যাপারে হতাশ হয়ে পড়েছে। সুতরাং তোমরা তাদেরকে ভয় করো না, বরং আমাকে ভয় কর। আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের উপর আমার নিআমত সম্পূর্ণ করলাম এবং তোমাদের জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করলাম ইসলামকে। তবে যে তীব্র ক্ষুধায় বাধ্য হবে, কোন পাপের প্রতি ঝুঁকে নয় (তাকে ক্ষমা করা হবে), নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।[10]কুরআন ৫:৩
বল, ‘আমার নিকট যে ওহী পাঠানো হয়, তাতে আমি আহারকারীর উপর কোন হারাম পাই না, যা সে আহার করে। তবে যদি মৃত কিংবা প্রবাহিত রক্ত অথবা শূকরের গোশ্ত হয়- কারণ, নিশ্চয় তা অপবিত্র কিংবা এমন অবৈধ যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য যবেহ করা হয়েছে। তবে যে ব্যক্তি নিরুপায় হয়ে অবাধ্য ও সীমালঙ্ঘনকারী না হয়ে তা গ্রহণে বাধ্য হয়েছে, তাহলে নিশ্চয় তোমার রব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।[11]কুরআন ৬:১৪৫
তিনি তো তোমাদের উপর হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোশ্ত এবং যে জন্তুর যবেহকালে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও নাম নেয়া হয়েছে। তবে যে নিরুপায় হয়ে, ইচ্ছাকৃত অবাধ্যতা ও সীমালঙ্ঘন ব্যতীত, (প্রয়োজন মুতাবেক গ্রহণ করবে) তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।[12]কুরআন ১৬:১১৫
হাদিসের দলিল
পশুকামের নিষিদ্ধতা এবং শাস্তি সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তার কয়েকটি উল্লেখ করছি।
…”যে মানুষ পশুর সাথে কুকর্ম করে সেও অভিশপ্ত”…[13]আহমদ (1875, 2915, 2916 ও 2917), তিরমিযী (1456), ইবনে হিব্বান (4417), আবদুর রাজ্জাক (13494 ও 13495), মুস্তাদরাক (8052), ধম্ম আল মালাহি (156), কুবরা আল নাসাঈ (727) , কুবরা আল বায়হাকী (17017,17018), আল কবির … See Full Note
হাদিসের মানঃ হাসান (দারুসসালাম)[14]https://sunnah.com/tirmidhi:1456, সহিহ (আহমেদ শাকির)[15]https://shamela.ws/book/98139/994, হাসান (শু’আয়েব আরনা’উত)[16]https://shamela.ws/book/25794/1373
হুবহু উক্ত হাদিসটি যঈফ সনদেও এসেছে।[17]মুস্তাদরাক আল-হাকিম (8053), শুয়াব আল-ইমান (5059), মাসাউই আল-আখলাক (415).
রাসুল (ﷺ) বলেছেন, “চারজন ব্যক্তি রাতে ও দিনে আল্লাহর গজব লাভ করে। জিজ্ঞেস করা হলো, আল্লাহর রাসূল তারা কারা? তিনি উত্তর দিয়েছিলেন, “হিংসাপরায়ণ পুরুষ এবং পুরুষের বেশধারী নারী, পশুদের সাথে ব্যভিচারী এবং পায়ুকামী।”[18]আল আউসাত (6854), শুয়াবুল ঈমান(4976).
হাদিসের মানঃ যঈফ[19]শায়েখ আলবানী (রহঃ), যঈফ আত তারগীব ১৪৪৯
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি পশুর সঙ্গে সঙ্গম করলে তাকে এবং পশুটিকেও তার সঙ্গে হত্যা করো। তিনি (ইকরিমা) বলেন, আমি তাকে (ইবনু আব্বাসকে) বললাম, পশুটির অন্যায় কি? তিনি বলেন, আমার মতে যে পশুর সঙ্গে সঙ্গম করা হয়েছে নিশ্চয়ই তিনি তার গোশত খাওয়া অপছন্দ করেছেন। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, এটি তেমন শক্তিশালী হাদীস নয়। [20]সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৪৬৪
হাদিসের মান: হাসান সহিহ(আলবানী রহঃ), সহিহ (আহমেদ শাকির)[21]https://shamela.ws/book/98139/1222, হাসান (শোয়াইব আরনাউত), হাসান (সামীর আমীন যিহরী)[22]https://shamela.ws/book/9111/1189
ইবনু আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি মাহরাম আত্মীয়ের সাথে সঙ্গম করে তোমরা তাকে হত্যা করো এবং যে ব্যক্তি পশুর সাথে সঙ্গম করে তোমরা তাকেও হত্যা করো এবং পশুটিও হত্যা করো।
তাহকীক আলবানীঃ ২য় অংশ ব্যতীত দঈফ কারণ, ২য় অংশটি সহিহ।[23]সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ২৫৬৪, ihadis.com
ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা যে মানুষকে পশুর সাথে কু-কর্মে লিপ্ত দেখ, তাকে এবং পশুটিকে হত্যা কর।[24]হাসান সহীহ্, ইবনু মা-জাহ (২৫৬৪), জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ১৪৫৫
হাদিসের মান: হাসান সহিহ, হাসান[25]https://sunnah.com/urn/2115030
ইজমাহ-র দলিল
ইবনে হাযম (রহঃ) তাঁর মারাতিবুল ইজমাহ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন,
وَاتَّفَقُوا أَن اتيان الْبَهَائِم حرَام
এই মর্মে ঐক্যমত্য (ইজমা) রয়েছে যে, পশুর সাথে সঙ্গম করা হারাম।[26]https://shamela.ws/book/12446/126
মালিকী মাজহাবের একজন ঈমাম ইবনে ক্বিতান রহঃ (মৃত্যু ১২৩০ ঈসায়ী) তাঁর মাসাইল-ই-ইজমা গ্রন্থেও একই কথা বলেছেন।[27]মাসাইল-ই-ইজমা ৩৬৬৩ https://shamela.ws/book/13624/597
ফিক্বহুস সুন্নাহতে বলা হচ্ছে,
أجمع العلماء على تحريم إتيان البهيمة
সকল আলেম পশুকামের নিষিদ্ধতার ব্যাপারে একমত।[28]http://shamela.ws/book/9486/1189
পশুকামের শাস্তি (ফীক্বহী আলাপ)
এটা স্পষ্ট যে ইসলামে পশুকাম হারাম। কিন্তু এর শাস্তি কী হবে? শাস্তির ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট সহিহ হাদিস না থাকায়, এই মর্মে আলেমদের ৩ ধরণের ফীক্বহী ইখতিলাফ দেখা যায়।
একমাত্র মৃত্যুদণ্ড
ইসলামওয়েবের ফতোয়ায় বলা হয়েছে ইসলামে পশুকামের শাস্তি সরাসরি মৃত্যুদণ্ড।[29]https://www.islamweb.net/en/fatwa/278869/
ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) এই মত গ্রহণ করেছেন।[30]ইবনে কাইয়্যিম (রহঃ) এর বিস্তারিত বর্ণনা http://www.kalamullah.com/spiritual-disease.html page 205-206 আর শাফিঈ ফক্বীহদের একাংশের অভিমত এটি।
আমি (পোস্টলেখক)-ও এই মতের অনুসারী।
আমাদের অন্যান্য আব্রাহামিক ধর্মেও পশুকাম হারাম। ইহুদিধর্মে পশুকাম হারাম, (বিকৃত) তাওরাতে অবশিষ্ট আছে,
কোন পশুর সংগে যদি কেউ ব্যভিচার করে তবে অবশ্যই তাকে মেরে ফেলতে হবে।[31]যাত্রাপুস্তক 22:19 SBCL https://bible.com/bible/155/exo.22.19.SBCL
কোন পশুর সংগে কেউ যদি দেহে মিলিত হয় তবে তাকে ও সেই পশুটাকে মেরে ফেলতে হবে। কোন স্ত্রীলোক যদি কোন পশুর সংগে দেহে মিলিত হবার চেষ্টা করে তবে সেই স্ত্রীলোক ও সেই পশুটাকে মেরে ফেলতে হবে। তাদের মেরে ফেলতেই হবে। তারা নিজেদের মৃত্যুর জন্য নিজেরাই দায়ী।[32]লেবীয় পুস্তক 20:15-16 SBCL https://bible.com/bible/155/lev.20.15-16.SBCL
আমাদের আলিমগণ কুরআনের এই দুই আয়াতও দলিল হিসেবে পেশ করে থাকেন,
আর (প্রেরণ করেছি) লূতকে। যখন সে তার কওমকে বলল, “তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সৃষ্টিকুলের কেউ করেনি’? “তোমরা তো নারীদের ছাড়া পুরুষদের সাথে কামনা পূর্ণ করছ, বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী কওম’।[33]কুরআন ৭:৮০-৮১
নারীদের ছাড়া পুরুষের সাথে সঙ্গম (সমকামিতা) সীমালঙ্ঘন, তাই পশুর সাথে সঙ্গমও সীমালঙ্ঘন।
জিনার শাস্তি (হদ্দ)
২য় মত হচ্ছে এর শাস্তি সাধারণ জিনার মতোই হবে। অপরাধী বিবাহিত হলে মৃত্যুদণ্ড[34]সহিহুল বুখারী ৬৮৭৮, আর অবিবাহিত হলে ১০০ ঘা বেত এবং (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) এক বছর দেশান্তর।[35]কুরআন ২৪:২ এটা শাফিঈ এবং কিছু মালিকী ফক্বীহদের অভিমত।[36]https://shamela.ws/book/9849/1952
তা’জির
বাকি আলিমদের মত হলো, সমকামিতার শাস্তি নির্দিষ্ট নয়। এই মর্মেও একটা হাসান হাদিস আছে,
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, পশুর সঙ্গে সঙ্গমকারী হাদ্দের আওতাভুক্ত নয়। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, ‘আত্বা-ও এরূপই বলেছেন। হাকাম বলেন, আমি মনে করি তাকে বেত্রাঘাত করা উচিত; কিন্তু তা হাদ্দের সীমা (১০০ বেত্রাঘাত) পর্যন্ত পৌছা উচিৎ নয়। হাসান বাসরী (রহঃ) বলেন, সে যেনাকারীর সমতুল্য। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, ‘আসিম কর্তৃক বর্ণিত হাদীস ‘আমা ইবনু আবূ ‘আমর কর্তৃক বর্ণিত হাদীসকে দুর্বল প্রামাণিত করে।[37]সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৪৬৫
হাদিসের মান: হাসান হাদিস
সে ক্ষেত্রে তা’জিরের বিধান রয়েছে। অর্থাৎ, বিচারক তার বুঝমতো শাস্তি নির্ধারণ করবে।
তা’জির দুই ভাগে বিভক্ত:
প্রথমটি: অনুশাসন এবং শিক্ষার জন্য তিরস্কার করা, যেমন একজন পিতার তার সন্তানের প্রতি শাসন, তার স্ত্রীর প্রতি স্বামীর শাসন, তার চাকরের প্রতি গুরুর শাসন এবং তার শিষ্যদের জন্য একজন শিক্ষকের শাসন[38]ফাতহুল বারী- ইবন হাজার আসকালানী, খণ্ড ১২, পৃষ্ঠা ১৮৫ – এটি দশটি চাবুকের বেশি হতে পারে না।
আবু বুরদা আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আমি নবী (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি:
আল্লাহর নির্ধারিত হদ্দ সমুহের কোনো হদ্দ ব্যতিত অন্য ক্ষেত্রে দশ কশাঘাতের ঊর্ধ্বে দণ্ড প্রয়োগ করা যাবে না।[39]সহিহুল বুখারী (ইফা) ৬৩৮৪ http://www.hadithbd.com/hadith/link/?id=7127
দ্বিতীয়টি: পাপের তিরষ্কার হিসাবে তা’জির।
শাসকের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী এবং গুনাহের আকার ও অশ্লীলতা, এর কম-বেশি প্রভাব ও ক্ষতির পরিমাণ অনুযায়ী বৃদ্ধি করা জায়েয এবং এর কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই।[40]http://www.al-eman.com/الكتب/موسوعة%20الفقه%20الإسلامي/مقدار%20عقوبة%20التعزير:/i582&d921377&c&p1 পশুকামের শাস্তি তা’জিরের এই ক্যাটেগরির মধ্যে পড়ে।
তা’জিরের শাস্তি হদ্দের কম বেশি হতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাহাবীদের সময়ে হদ্দের দ্বিগুণ শাস্তি তা’জির হিসেবে দেওয়ার প্রমাণ মিলে। অপরাধের মাত্রানুযায়ী তা নির্ধারিত হয়। কিছু ফক্বীহ ৩০০ বেত্রাঘাতের কথা পর্যন্ত বলেছেন।[41]https://www.islamweb.net/en/fatwa/366016/ কিন্তু তা’জিরের শাস্তি হাদ্দের শাস্তির বেশি হওয়া উচিত নয়।
পশুকামের ক্ষেত্রে তা’জিরের বিধান হানাফী-হাম্বলী-মালিকী ফক্বীহদের একাংশের মত।[42]https://shamela.ws/book/9849/1952
বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রের সংবিধানে পশুকাম
বাংলাদেশ সংবিধানে পশুকামকে আন-ন্যাচারাল অফেন্স ধরা হয়। এজন্য ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।[43]The Penal Code, 1860 ( ACT NO. XLV OF 1860 ), Section 377 http://bdlaws.minlaw.gov.bd/act-11/section-3233.html
ঐতিহাসিকভাবে একই আইনে পাকিস্তানেও ২-১০ বছরের কারাদণ্ড।[44]Sec 377 https://pakistani.org/pakistan/legislation/1860/actXLVof1860.html#f156
গাম্বিয়াতে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড।[45]Criminal Code 1965>> PART II – CRIMES>> Chapter XV – Offences against Morality http://www.oit.org/dyn/natlex/natlex4.detail?p_lang=en&p_isn=75289&p_country=GMB&p_count=43&p_classification=01.04&p_classcount=8
ফিলিস্তিনেও ১০ বছর পর্যন্ত জেল।[46]The British Mandate Criminal Code Ordinance, No. 74 of 1936>> Section 151 https://www.nevo.co.il/law_html/law21/PG-e-0633.pdf
সিরিয়ায় ৩ বছর পর্যন্ত কারাবাস হতে পারে।[47]Law No. 148/1949 on the Syrian Penal Code>> https://wipolex.wipo.int/en/legislation/details/10918
جَزَاكَ ٱللَّٰهُ خَيْرًا
মাশাআল্লাহ, ভাই। বেশ কয়েকদিন যাবত চিন্তা করছিলাম এই বিষয় নিয়ে কিছু একটা করতে হবে। যাক আমাকে আর কষ্ট করে এই বিষয়ের উপর কোন গভেষনা, খোজাখুজি, লেখালিখি ইত্যাদি করতে হবে না। আল্লাহ কবুল করুক আপনার পরিশ্রম ও চেষ্টাকে।
جَزَاكَ ٱللَّٰهُ خَيْرًا
অনেকদিন ধরেই Drafts এ ফেলে রেখেছিলাম। অনেকদিন ইসলামে সময় দেওয়া হয় নি।
এই লেখা কীভাবে ইম্প্রুভ হতে পারে সেটার ফীডব্যাকের আশায় রইলাম।
পরিচ্ছেদঃ ২৮. পশুর সাথে সংগম করলে তার শাস্তি সস্পর্কে।
৪৪০৬. আহমদ ইবন ইউনুস (রহঃ) …. ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ পশুর সাথে সংগমকারীর কোন শাস্তি নেই।
(সুনানে আবু দাউদ, ৪৪০৬)
এখানে যে উনি বলছেন কোনো শাস্তিই নেই??
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এখানে অনুবাদে ভুল করেছে। হুবহু এই হাদিসটি তো আমরা পোস্টেই উল্লেখ করলাম!
কিন্তু এটা অন্যদের বুঝাবো কিভাবে? কেউ তো বুঝবে না যে এটা ভুল। এখন তাদেরকে বুঝানোর একটাই উপায়, আর সেটা হলো ঠিক এই হাদিসের আরো হাসান বা সহিহ বর্ণনা পেশ করা।
আপনি কি দয়া করে আরো কিছু দলিল দিতে পারবেন?
এই পোস্টটির লিংক দিয়ে দেবেন, তাহলেই যথেষ্ট। এখানে আরবিতে রয়েছে “হদ্দ”, যার অর্থ নির্ধারিত শাস্তি। শুধু শাস্তি নয়। নির্ধারিত শাস্তি না থাকলে বিচারক নিজের বিবেচনামতো শাস্তি দিতে পারেন।
https://www.frommuslims.com/qna/%e0%a6%aa%e0%a6%b6%e0%a7%81%e0%a6%b0-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%a5%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a6%82%e0%a6%97%e0%a6%ae%e0%a6%95%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%b6%e0%a6%be/
قَالَ لَيْسَ عَلَى الَّذِي يَأْتِي الْبَهِيمَةَ حَدٌّ – এই বাক্যে সবার শেষে যে حَدٌّ শব্দটি রয়েছে এটারই কি ইসলামি ফাউন্ডেশন ভুল অনুবাদ করেছে?
তাহলে সাধারণ শাস্তির আরবি অনুবাদ কি?
একটু পরিষ্কার করে বলবেন।
যেই অপরাধের জন্য শরীয়ত নির্ধারিত শাস্তি নেই, বিচারক বুঝমতো দেন সেটাকে বলে তা’জির। আর হদ্দ হলো নির্ধারিত শাস্তি।
قَالَ لَيْسَ عَلَى الَّذِي يَأْتِي الْبَهِيمَةَ حَدٌّ – এখানে حَدٌّ বলতেই কি হদ্দ (১০০ বেত্রাঘাত) বোঝানো হয়েছে? তাহলে আরবিতে শাস্তির অনুবাদ কি হবে? একটু পরিষ্কার করে বলবেন।